পঞ্চম শ্রেণি | বাংলা | পাঠ্যবই বহির্ভূত অনুচ্ছেদ ৭-৯ | PDF: পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বিষয়টির ব্যকরণ অংশ হতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ রচনা সমুহ নিয়ে আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
আরো দেখুন
অনুচ্ছেদ-০৭
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৫, ৬ ও ৭নং ক্রমিকের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
১৯৫২ সালের ২৬এ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন ঘোষণা করেছিলেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এই ঘোষণা ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা। ফলে ঢাকার ছাত্রসমাজ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে।
আওয়ামী মুসলিম লীগ, যুবলীগ. ও ছাত্রলীগসহ প্রগতিশীল রাজনৈতিক. ও সাংস্কৃতিক. সংগঠনগুলো মিলে তখন ‘সর্বদলীয় কর্মপরিষদ’ গঠন করে। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গঠন করে ‘বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ’। ২০এ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যায় নুরুল আমিন সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।
‘বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ’ ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২১এ ফেব্রæয়ারি তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ. করার জন্য সুশৃঙ্খলভাবে রাজপথে এগিয়ে যায়। এই সংগ্রামে বহু ছাত্রছাত্রী ও জনতা আহত হয়, গ্রেফতার-বরণ করেন এবং রফিকউদ্দিন, জব্বার ও আবুল বরকত শহিদ হন।
২২এ ফেব্রুয়ারি সমগ্র জাতি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ঢাকার রাজপথ হয়ে ওঠে উত্তাল। বহু হতাহতের সঙ্গে এই দিন শহিদ হন শফিকুর রহমান, আব্দুল আউয়াল, কিশোর অহিউল্লাহ। ২৩এ ফেব্রæয়ারি শহিদের স্মরণে শহিদ মিনার নির্মিত হয়। পুলিশ শহিদ মিনারটি ধ্বংস করে দেয়। আন্দোলন আরও বেগবান হয়। পরিশেষে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করে।
সঠিক. উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ।
০১। শেখ. মুজিবুর রহমান কীভাবে ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখেন?
ক. স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে
খ. ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ আহানের মাধ্যমে
গ. ১৪৪ ধারা ভাঙার মাধ্যমে
ঘ. অনশন পালনের মাধ্যমে
০২। কাকে ভাষাশহিদ বলা যায়?
ক. খাজা নাজিমউদ্দিনকে খ. মহিউদ্দিন আহমদকে গ. আব্দুল আউয়ালকে ঘ. শেখ. মুজিবুর রহমানকে
০৩। অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে
ক. ভাষা আন্দোলনের কথা
খ. মুক্তিযুদ্ধের কথা
গ. বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের কথা
ঘ. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের কথা
০৪। ২৩এ ফেব্রæয়ারির পর আন্দোলন তীব্রতর হয় কেন?
ক. পুলিশ গণহত্যা চালানো
খ. বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করায়
গ. খাজা নাজিমউদ্দিনের ঘোষণা
ঘ. শহিদ মিনার ভেঙে দেওয়ায়
০৫। আমরা বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছি। এটি কাদের অবদান?
ক. মুক্তিযোদ্ধাদের খ. পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর গ. রাজাকার-আলবদরদের ঘ. ভাষাশহিদদের
নিচে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া হলো। উপযুক্ত শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ কর।
শব্দ ————- অর্থ
বিশ্বাসঘাতকতা ————- বিশ্বাস ভঙ্গ. করা, প্রতারণা।
পরিশেষে ————- অবশেষে।
বেগবান ————- জোরদার
বিক্ষুব্ধ ————- অত্যন্ত দুঃখিত, বিচলিত।
উত্তাল ————- অত্যন্ত আলোড়িত।
মর্যাদা ————- সম্মান।
(ক) একপর্যায়ে আন্দোলন আরও ———— হলো।
(খ) পদ্মার ———— ঢেউ দেখলে বুকে কাঁপন লাগে।
(গ) মাতৃভ‚মির ————- রক্ষায় মুক্তিসেনারা প্রাণ দিয়েছেন।
(ঘ) ———— জনতা রাজপথে মিছিল করছে।
(ঙ) ———— একটি বড় অপরাধ।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।
(ক) খাজা নাজিমউদ্দিন কে ছিলেন? ‘সর্বদলীয় কর্মপরিষদ’ ও ‘বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ’ কারা গঠন করে?
উত্তর : খাজা নাজিমউদ্দিন ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী।
আওয়ামী মুসলিম লীগ, ছাত্রলীগ. ও অন্যান্য প্রগতিশীল রাজনৈতিক. ও সাংস্কৃতিক. সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত হয় ‘সর্বদলীয় কর্মপরিষদ’। আর ‘বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
(খ) ২১এ ফেব্রæয়ারি ছাত্র-জনতা কীভাবে আত্মত্যাগ. করে? পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : ২১এ ফেব্রæয়ারি ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের ঘটনা নিচে পাঁচটি বাক্যে লেখা হলো
‘বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ’ ২১এ ফেব্রæয়ারিতে ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে যায়। পুলিশ মিছিলে গুলি চালায়। সে সংগ্রামে পুলিশের গুলিতে শহিদ হন রফিকউদ্দিন, জব্বার ও আবুল বরকত। আরও অনেকে আহত হন ও গ্রেফতার-বরণ করেন।
(গ) খাজা নাজিমউদ্দিনের বক্তব্য শুনে ছাত্রসমাজ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে কেন? পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: খাজা নাজিমউদ্দিন ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৫২ সালের ২৬এ জানুয়ারি তিনি ঘোষণা করেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এটি ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা। কেননা পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় সব মানুষের মুখের ভাষা ছিল বাংলা। ছাত্রসমাজ তাই ঘোষণাটি শুনে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।
(ঘ) ২২ ও ২৩শে ফেব্রæয়ারি কী কী ঘটে? পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : পাঁচটি বাক্যে ২২ ও ২৩শে ফেব্রæয়ারির ঘটনা নিচে উল্লেখ. করা হলো
০১। ২১শে ফেব্রæয়ারির ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে সারা দেশ।
০২। ঢাকার রাজপথে ছাত্র-জনতার ঢল নামে।
০৩। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে অনেকে হতাহত হন।
০৪। ২৩শে ফেব্রুয়ারি শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনার নির্মিত হলে পুলিশ তা ভেঙে দেয়।
০৫। ফলে আন্দোলনের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়।
অনুচ্ছেদ-০৮
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৫, ৬ ও ৭নং ক্রমিকের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
তাঁত হচ্ছে এক. ধরনের যন্ত্র, যা দিয়ে তুলা বা তুলা হতে উৎপন্ন সুতার মাধ্যমে কাপড় বানানো যায়। সাধারণত তাঁত নামক. যন্ত্রটিতে সুতা কুণ্ডলী আকারে টানটান করে ঢুকিয়ে দেওয়া থাকে। যখন তাঁত চালু করা হয় তখন নির্দিষ্ট সাজ অনুসারে সুতা টেনে নিয়ে সেলাই করা হয়। তাঁতে কাপড় বোনা যার পেশা সে হলো তন্তুবায় বা তাঁতি।
তাঁতশিল্পের ইতিহাস থেকে জানা যায়, আদি বসাক. স¤প্রদায়ের তাঁতিরাই আদিকাল থেকে তন্তুবায়ী গোত্রের লোক। এদেরকে এক. শ্রেণির যাযাবর বলা চলে। শুরুতে এরা সিন্ধু অববাহিকা থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে এসে তাঁতের কাজ শুরু করে। কিন্তু সেখানকার আবহাওয়ায় শাড়ির মান ভালো না হওয়ায় চলে আসে বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে।
পরবর্তীকালে তারা নানা অংশে ভাগ. হয়ে ছড়িয়ে পড়ে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, ঢাকার ধামরাই ইত্যাদি এলাকায়। বাংলাদেশের মণিপুরী স¤প্রদায়ের তাঁতশিল্পের বেশ সুনাম রয়েছে। নিজেদের বস্ত্রের চাহিদা মেটাতে এরা দীর্ঘকাল ধরে তাঁতশিল্পের সাথে জড়িত। শাড়ি, ওড়না, তোয়ালে, গামছাসহ নানা রকম শৌখিন বস্ত্র তৈরি করে মণিপুরীরা। বর্তমানে তাদের তৈরি তাঁতের নানা জিনিসপত্র বাঙালি সমাজে বেশ জনপ্রিয়।
সঠিক. উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ।
০১। অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে
ক. তাঁতিদের জীবন যাপনের কথা
খ. তাঁতে তৈরি জিনিসপত্র সম্পর্কে
গ. বিভিন্ন আকারের তাঁত যন্ত্রের কথা
ঘ. তাঁতশিল্পের পরিচয় সম্পর্কে
০২। মুর্শিদাবাদ থেকে তাঁতিদের এদেশে আসার কারণ কী?
ক. যুদ্ধ শুরু হওয়া খ. প্রতিক‚ল আবহাওয়া গ. ঠিকঠাক. দাম না পাওয়া ঘ. সুতার দাম বেড়ে যাওয়া
০৩। মণিপুরীরা দীর্ঘদিন ধরে মূলত কেন তাঁতে কাপড় বুনে আসছেন?
ক. ব্যবসার জন্য
খ. নিজস্ব প্রয়োজন মেটাতে
গ. বাঙালিদের প্রয়োজন মেটাতে
ঘ. এটি তাঁদের আদি পেশা বলে
০৪। ‘সুনাম’ শব্দের বিপরীত শব্দ কোনটি?
ক. কুনাম খ. দুর্নাম গ. কুখ্যাত ঘ. আনাম
০৫। ‘আদি বসাক. স¤প্রদায়’- এখানে ‘আদি’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে
ক. নতুনত্ব বোঝাতে খ. প্রাচীনত্ব বোঝাতে গ. কর্মদক্ষতা বোঝাতে ঘ. বিশেষত্ব বোঝাতে
নিচে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া হলো। উপযুক্ত শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ কর।
শব্দ ————- অর্থ
যাযাবর————- যারা এক. স্থানে বেশিদিন থাকে না
বস্ত্র————- পরার কাপড়
চাহিদা————- প্রয়োজন
উৎপন্ন————- তৈরি হওয়া
গোত্র————- বংশ
কুন্ডলী————- গোলাকারে প্যাঁচানো অবস্থা
(ক) কুকুরটি ————- পাকিয়ে ঘুমিয়ে আছে।
(খ) দুঃখী লোকটির শীতের ————- নেই।
(গ) বেদেরা ————- ধরনের মানুষ।
(ঘ) আখ. থেকে চিনি ————- হয়।
(ঙ) দেশের ————- মিটিয়ে চিংড়ি বিদেশে রফতানি করা হয়।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।
(ক) মণিপুরীদের তাঁতশিল্পের চর্চা সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর : মণিপুরীরা দীর্ঘকাল ধরেই তাঁতশিল্পের চর্চা করে আসছেন। অতীতে মণিপুরীরা নিজেদের বস্ত্রের চাহিদা মেটাতে তাঁতে কাপড় বুনতেন। বর্তমানে মণিপুরীদের তাঁতে তৈরি নানা জিনিস বাঙালি সমাজেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মণিপুরীদের তাঁতশিল্প অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। মণিপুরীরা শাড়ি, ওড়না, তোয়ালে, গামছাসহ বিভিন্ন শৌখিন পোশাক-পরিচ্ছদ তৈরি করেন।
(খ) পাঁচটি বাক্যে বসাক. স¤প্রদায়ের পরিচয় তুলে ধর।
উত্তর : নিচে পাঁচটি বাক্যে বসাক. স¤প্রদায়ের পরিচয় তুলে ধরা হলো
০১। বসাক. স¤প্রদায়ের লোকজন তাঁতশিল্পের প্রাচীন ধারক. ও বাহক।
০২। এই স¤প্রদায়ের মানুষেরা সিন্ধু অববাহিকা থেকে মুর্শিদাবাদে এসে তাঁতের চর্চা শুরু করেছিলেন।
০৩। কাজের সুবিধার্থে মুর্শিদাবাদ থেকে একসময় তাঁরা বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে চলে আসেন।
০৪। বারবার স্থান পরিবর্তনের কারণে তাঁদেরকে যাযাবর শ্রেণির লোক. বলা যায়।
০৫। তাঁদের তৈরি করা তাঁত শিল্পজাত পণ্যসামগ্রী খুবই উন্নত মানের হয়।
(গ) বসাক. স¤প্রদায়কে যাযাবর শ্রেণির বলার কারণ তিনটি বাক্যে লেখ। তাঁতে তৈরি হয় এমন দুটি বস্ত্রের নাম লেখ।
উত্তর : বসাক. স¤প্রদায়ের মানুষেরা প্রথমে ছিলেন সিন্ধু অববাহিকা অঞ্চলে। সেখান থেকে তাঁরা প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েন। বারবার এমন স্থান পরিবর্তনের কারণেই তাঁদেরকে যাযাবর শ্রেণির বলা হয়েছে। তাঁতে তৈরি হয় এমন দুটি বস্ত্রের নাম হলো- শাড়ি ও লুঙ্গি।
(ঘ) তাঁত কী? এর সাহায্যে কীভাবে কাপড় তৈরি করা হয়?
উত্তর : যে যন্ত্রের সাহায্যে তুলা বা তুলা থেকে উৎপাদিত সুতার মাধ্যমে কাপড় বানানো যায় সে যন্ত্রকে তাঁত বলে।তাঁত যন্ত্রের সুতা কুন্ডলী আকারে টানটান করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তারপর নির্দিষ্ট সাজ অনুসারে সেলাই করে কাপড় তৈরি করা হয়।
অনুচ্ছেদ-০৯
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৫, ৬ ও ৭নং ক্রমিকের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীর নির্দিষ্ট একটা শ্রæতিসীমা রয়েছে। এই সীমা অতিক্রমকারী কোনো শব্দ আমাদের কানে এসে পৌঁছলে আমাদের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ বিষয়টিকেই আমরা শব্দদূষণ বলি। আমাদের পরিবেশে যদি অতিরিক্ত বা অবাঞ্ছিত শব্দ থাকে, তখন তাকে শব্দদূষণ বলা হয়।
যানবাহন, কলকারখানা, যন্ত্রপাতি, মানুষের চিৎকার চেঁচামেচি ইত্যাদি কারণে তীব্র শব্দ উৎপন্ন হয়ে শব্দদূষণ ঘটায়। বাড়িতে উচ্চ শব্দে সিডি, টেলিভিশন ইত্যাদি বাজলে শব্দদূষণ হয়। কান যেকোনো শব্দের ব্যাপারে যথেষ্ট সংবেদী। তাই যে তীব্র শব্দ কানের পর্দাতে বেশ জোরে ধাক্কা দেয় তা কানের পর্দাকে নষ্ট করেও দিতে পারে।
বিশেষ করে শিশুদের ওপর এর প্রভাব অনেক. বেশি। শব্দদূষণের কারণে মানুষের স্বাস্থ্য এবং আচার-আচরণ উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত শব্দের কারণে ব্যক্তির শারীরিক. ও মানসিক. স্বাভাবিক. কার্যকলাপ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
শব্দদূষণের ফলে দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চ রক্তচাপ, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাতসহ নানা ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। শব্দদূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ার জন্য আমাদের অনেক. দায়িত্ব আছে। অপ্রয়োজনে গাড়ির হর্ন না বাজানো, বাড়িতে নানা রকম যন্ত্রপাতি জোরে না চালানো, অকারণে হইচই না করা, রাস্তাঘাটে মাইক. না বাজানো ইত্যাদির প্রতি মনোযোগী হতে হবে। মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তাহলেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারবে।
সঠিক. উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ।
০১। শব্দদূষণ কখন ঘটে?
ক. যখন অপ্রয়োজনীয় ও অনেক. বেশি শব্দ সৃষ্টি হ
খ. যখন খুব কম শব্দ হয়
গ. যখন কোনো শব্দ শোনা যায় না
ঘ. যখন প্রয়োজনীয় ও সীমিত পরিমাণে শব্দ সৃষ্টি হয়
০২। ‘হ্রাস’ শব্দটির বিপরীত শব্দ কোনটি?
ক. কম খ. বৃদ্ধি গ. উঁচু ঘ. নিচু
০৩। অনুচ্ছেদে মূলত কী প্রকাশিত হয়েছে?
ক. শব্দদূষণের উপকারী দিক.
খ. শব্দদূষণের সমাধান
গ. শব্দদূষণের অপকারিতা
ঘ. শব্দদূষণের কারণ
০৪। শব্দদূষণ কমানোর জন্য সবচেয়ে জরুরি কোনটি?
ক. গাড়ি চলা বন্ধ করা খ. জনসচেতনতা সৃষ্টি গ. কলকারখানা বন্ধ করা ঘ. রাস্তায় বের না হওয়া
০৫। আমরা বাড়িতে উচ্চশব্দে গান বাজাব না। কেননা এতে
ক. গান ঠিকমতো বোঝা যায় না
খ. দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়
গ. পরিবেশ দূষিত হ
ঘ. সময় নষ্ট হয়
আরো পড়ুনঃ
-
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | প্রার্থনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ঘাসফুল কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ভাবুক ছেলেটি গল্প প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | অবাক জলপান নাটকটির প্রশ্ন উত্তর | PDF
নিচে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া হলো। উপযুক্ত শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ কর।
শব্দ ————- অর্থ
নির্দিষ্ট————- নির্ধারিত।
অবাঞ্ছিত————- অপ্রিয়, অনাকাক্সিক্ষত।
সংবেদী ————- অনুভতিপ্রবণ।
ব্যাঘাত————- বাধা, বিঘ্ন।
উগ্র————- অসহিষ্ণু।
উৎপন্ন————- সৃষ্ট, উৎপাদিত।
(ক) বৃষ্টি আসায় খেলায় ———— ঘটল।
(খ) অনুষ্ঠানের জন্য একটি দিন ———— করা হয়েছে।
(গ) ———— আচরণকারীদের সবাই অপছন্দ করে।
(ঘ) এ বছর দেশে প্রচুর ধান ———— হয়েছে।
(ঙ) কিছু ———— আসবাবের কারণে ঘরটির সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।
(ক) শব্দদূষণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : শ্রুতিসীমার চেয়ে উচ্চ মাত্রার শব্দ উৎপন্ন হলে তা আমাদের শ্রবণশক্তির ক্ষতি করতে পারে। এই বিষয়টির নামই শব্দদূষণ। পরিবেশে অতিরিক্ত বা অবাঞ্ছিত শব্দ থাকলে শব্দদূষণ সৃষ্টি হয়।
(খ) কীভাবে শব্দদূষণ ঘটে? পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : যেভাবে শব্দদূষণ ঘটে তা নিচে পাঁচটি বাক্যে লেখা হলো
০১।পরিবেশে যখন প্রয়োজনীয় শব্দের বাইরে অনেক. উচ্চ মাত্রার শব্দের উৎপত্তি হয় তখনই শব্দদূষণ ঘটে।
০২। মানুষের চিৎকার চেঁচামেচি শব্দদূষণ ঘটাতে পারে।
০৩। শব্দদূষণের জন্য মূলত যানবাহন, কলকারখানা, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি থেকে উৎপন্ন বিকট শব্দই দায়ী।
০৪। নানা ধরনের পশুপাখির বিরক্তিকর ডাক. শব্দদূষণ ঘটায়।
০৫। সিডি, টেলিভিশন, রেডিও, দরজার বেল ইত্যাদির উচ্চ আওয়াজে বাড়িতে শব্দদূষণ ঘটে।
(গ) শব্দদূষণের ফলে কী কী সমস্যা হতে পারে? পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : শব্দদূষণের ফলে যেসব সমস্যা হতে পারে তা নিচে উল্লেখ. করা হলো :
০১। শব্দদূষণের ফলে আমাদের কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
০২। এতে শ্রæতিশক্তি কমে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
০৩। বিশেষত শিশুদের ওপর এর প্রভাব মারাত্মক।
০৪। শব্দদূষণের ফলে মানুষের দুশ্চিন্তা, উচ্চ রক্তচাপ, ঘুমের ব্যাঘাতসহ নানা রকম শারীরিক. সমস্যা দেখা দিতে পারে।
০৫। মানসিক. জটিলতা ও নানা আচরণগত সমস্যার উৎপত্তি হতে পারে।
(ঘ) শব্দদূষণ নিরসনে তুমি কী ধরনের ভ‚মিকা রাখতে পার তা পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : শব্দদূষণ নিরসনে আমারও অনেক. কিছু করার আছে। যেমন-
০১। বাড়িতে টিভি, সিডি, কম্পিউটার ইত্যাদি উচ্চশব্দে চালাব না।
০২। বাড়িতে বা স্কুলে অকারণে হইচই করব না।
০৩। সাইকেল চালানোর সময় অপ্রয়োজনে হর্ন বাজাব না।
০৪। মাইক. ব্যবহার করে শব্দদূষণ ঘটাব না।
০৫। শব্দদূষণ বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কাজ করব।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।