৮ম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা বই | Class 8 Islam Shikkha | অধ্যায় ১ তাকদিরের প্রতি ইমান ২০২৪| সমাধান : অষ্টম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা এর প্রথম অধ্যায়টি হতে গুরুত্বপূর্ণ সব সমাধানগুলো গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
তাকদিরের প্রতি ইমান
তাকদির অর্থ ভাগ্য। মহান আল্লাহ এই মহাবিশ্বে যা কিছু ঘটবে তা পূর্বেই নির্ধারণ করেছেন। মানুষের জীবন-মৃত্যু, ধন-সম্পদ, হাসি-
আনন্দ, দুঃখ-বেদনা সবকিছুই পূর্ব নির্ধারিত । কাজেই ভালো কিছু পেলে শোকর করবে এবং খারাপ কিছু পেলে ধৈর্যধারণ করবে।
তাকদির দুই প্রকার। এক প্রকার তাকদির পরিবর্তন হয় না, যেমন— রিযক। আরেক প্রকার তাকদির হলো দোয়া, যা নেক আমল দ্বারা পরিবর্তন করা হয়। যেমন— বয়স। তবে আমরা কেউই জানি না আমাদের ভাগ্যে কী আছে? কাজেই আমরা যখন ভালো কাজ করবো, ভালো কাজে নিজেকে নিয়োজিত করবো তখন বুঝবো এটাই আমাদের ভাগ্য । আর নিষেধ করা সত্ত্বেও যখন আমরা খারাপ
কাজ করবো, খারাপ বুঝা সত্ত্বেও সে কাজ থেকে আমরা ফিরে আসবো না তখন বুঝতে হবে এটাই আমাদের ভাগ্য ।
কেউ যদি বলে আমার তাকদিরে জাহান্নাম লেখা থাকলে আমার দোষ কোথায়? এর জবাব হলো আমরা জানি না, আ জাহান্নামে যাবো না কি জান্নাতে যাবো? আল্লাহ আমাদের ভালোমন্দ বোঝার যোগ্যতা দিয়েছেন এবং ভালো বা মন্দ কাজ করার ক্ষমতা দিয়েছেন। সবকিছু জানার এবং ভালোমন্দ বিচার করে কাজ করার ক্ষমতা থাকার পরেও আমরা যদি মন্দ কাজটা করি তাহলে এর জন্য তো আমরাই দায়ী থাকবো তাই না?
কারণ আল্লাহ তো আমাদের জোর করে মন্দ কাজ করাননি। আমরা নিজের ইচ্ছাতেই করেছি। শুধুমাত্র আমরা কৃতকর্মের জন্যই আমরা আমাদের কাজের জন্য দায়ী হবো।
আমরা যদি ভালো কাজ করি তাহলে আল্লাহ তাতে সহযোগিতা করেন। আর এ কাজে যদি আমরা নিয়মিত হই তাহলে বুঝতে হবে এটাই আমাদের ভাগ্য। আর মানুষের ঘৃণা, নিন্দা, অভিশাপ, আল্লাহর শাস্তি ইত্যাদি জানার পরও আমরা যখন খারাপ কাজে লিপ্ত হই তখন বুঝতে হবে এটিই আমাদের ভাগ্য। অর্থাৎ আমাদের ভালোমন্দের ভাগ্য আমরা নিজেরাই তৈরি করি।
৮ম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা বই | Class 8 Islam Shikkha | অধ্যায় ১ তাকদিরের প্রতি ইমান ২০২৪
শাফাআত এবং শাফাআতের বিভিন্ন পর্যায়
শাফাআত অর্থ সুপারিশ করা। হাশরের ময়দানে ক্ষমা ও কল্যাণ লাভের জন্য মহান আল্লাহর নিকট নবি-রাসুল, ফেরেশতাগণ ও নেককার বান্দাগণের সুপারিশ করার নাম হলো শাফাআত ।
মহান আল্লাহ যখন মানুষের কৃতকর্মের হিসাব নিবেন তখন তিনি পুণ্যবানদের জন্য জান্নাত এবং পাপীদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারণ করবেন। তখন নবি-রাসুল এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ পাপী মুসলমান বান্দাদের গুনাহ মাপের জন্য সুপারিশ করবেন। হাশরের ময়দানের অবস্থা সেদিন অত্যন্ত ভয়াবহ হবে।
মানুষ নিজেদের পরিণতি নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে মুক্তির উপায় খুঁজতে থাকবে। এমতাবস্থায় মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম মহানবি (সা.)-কে শাফাআতের অনুমতি দিবেন। এরপর অন্যান্য নবি-রাসুল ও নেককার বান্দাগণ অনুমতি পাবেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, “যাকে অনুমতি দেওয়া হবে সে ব্যতীত আর কারো সুপারিশ আল্লাহর নিকট ফলপ্রসূ হবে না।
” (সূরা সাবা, আয়াত : ২৩) এ প্রসঙ্গে মহানবি (সা.) বলেছেন, “আমাকে শাফাআত করার অধিকার দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরো বলেন, “পৃথিবীতে যত ইট পাথর আছে আমি তার চেয়েও বেশি মানুষের জন্য কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবো।”
হাশরের ময়দানে মানুষ অসহনীয় দুঃখ-কষ্টে পতিত হবে। এ থেকে উত্তরণের জন্য হিসাব-নিকাশ শুরু করার বিষয়ে আল্লাহর নিকট অনুরোধ করার জন্য তারা যথাক্রমে হযরত আদম (আ.), হযরত নুহ (আ.), হযরত ইবরাহিম (আ.), হযরত মুসা (আ.) এবং ঈসা (আ.)-এর নিকট আসবে।
কিন্তু কেউই আল্লাহর নিকট অনুরোধ করতে সাহস না পাওয়ায় তাঁরা প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নিকট আসলে তিনি আল্লাহর নিকট হিসাব-নিকাশ শুরু করার অনুরোধ জানালে আল্লাহ হিসাব-নিকাশ শুরু করবেন। এর নাম হলো শাফাআতে কুবরা বা বড়ো সুপারিশ। এরপর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুপারিশ করা হবে।
যেমন- জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি প্রদানের জন্য, বিনা হিসাবে জান্নাত প্রদানের জন্য, জাহান্নামের উপযুক্ত মুমিনদের জন্য, জাহান্নামে প্রবেশ করা মুমিনদের জন্য, জান্নাতিদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য, পাপপুণ্য সমান এমন লোকদের (আরাফ) জন্য এবং কুরআন তিলাওয়াত ও সাওম পালনকারীদের জন্য। শাফাআত মহান আল্লাহর বিশেষ এক নিয়ামত । শাফাআত ছাড়া কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
শিরক
শিরক অর্থ অংশীদার সাব্যস্ত করা, সমতুল্য করা। আল্লাহর সাথে অন্য কিছুকে সমকক্ষ মনে করার নাম হলো শিরক শিরককারীকে মুশরিক বলে। শিরক তাওহিদের বিপরীত। শিরক হলো জঘন্যতম অপরাধ। শিরক তিন প্রকার-
১. “আল্লাহর সত্তা এবং তার অস্তিত্বে শিরক। যেমন— মহান আল্লাহর স্ত্রী, পুত্র, সন্তান আছে এরূপ বিশ্বাস করা । ২. ইবাদাতের ক্ষেত্রে শিরক। যেমন— আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করা, অন্যের ইবাদাত করা।
৩. আল্লাহর নাম ও গুণাবলিতে শিরক। যেমন— আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে জীবনদাতা, মৃত্যুদাতা ও রিজিকদাতা মনে করা । মহান আল্লাহর নিকট সবচেয়ে জঘন্যতম অপরাধ হলো শিরক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন, “নিশ্চয়ই শিরক চরম যুলুম।” (সূরা লুকমান, আয়াত : ১৩) মহান আল্লাহ আরো বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শিরক করার গুনাহ ক্ষমা করবেন না। এটা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবেন।
আরো দেখুন
বরিশাল ইতিহাস ঐতিহ্য
বরিশাল ইতিহাস ঐতিহ্য ।। বরিশাল বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। এর ইতিহাস ও সংস্কৃতি দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ। বরিশালকে বলা...
ফ্রী শিক্ষামূলক ভিডিও মেকার,শিক্ষামূলক ভিডিও কিভাবে করা যায়
ফ্রী শিক্ষামূলক ভিডিও মেকার,শিক্ষামূলক ভিডিও কিভাবে করা যায়।। শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করতে কিছু ধাপ অনুসরণ করা প্রয়োজন। এখানে কিছু ধাপ...
দাঁত ও দাঁতের মাড়ি সুস্থ রাখতে চাইলে যেসব কাজ গুলো করা জরুরী
প্রতিটি মানুষের সকল মন্ত্রের মূল চাবিকাঠী স্বাস্থ্য! স্বাস্থ্য ভালো থাকলে মন ভালো থাকে, কাজের অগ্রগতিও ভাড়ে, স্বাস্থ্য ভালো আপনার সব...
শান্তিগঞ্জের বগুলারকাড়া গ্রামের স্কুল মাঠে কাবাডি খেলা
শান্তিগঞ্জের বগুলারকাড়া গ্রামের স্কুল মাঠে কাবাডি খেলা।। সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি।। গ্রামবাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্য বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি(হা ডু ডু) খেলার ঐতিহ্য...
” (সূরা নিসা, আয়াত : ৪৮) মহান আল্লাহ আরও “যে আল্লাহর সাথে শিরক করবে তার জন্য আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম।” (সূরা আল মায়িদা, আয়াত : ৭১) মূলত সারা জীবন আল্লাহর সীমাহীন নিয়ামত ভোগ করার পরও তাঁর সাথে শিরক করা ভয়াবহ অন্যায়। এরপরও ভবিষ্যতে শিরক করবে না এরূপ অঙ্গীকার করে অতীতের গুনাহের জন্য আল্লাহর নিকট তওবা করলে মহান আল্লাহ অবশ্যই তা মাফ করে দেবেন ।
শিখনকালীন ও সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রস্তুতি : শিখে নিই
(মূল্যায়ন নির্দেশনার আলোকে পাঠ্যবই, শিক্ষক সহায়িকা, শিখনযোগ্যতা ও PI এর সূত্র সংবলিত)
প্রিয় শিক্ষার্থী, যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রমে এ শিখন অভিজ্ঞতাটির বিষয়বস্তু ভালোভাবে অনুশীলন কর। এরই আলোকে শিখনকালীন ও সামষ্টিক মূল্যায়ন উপযোগী কাজ, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট ও প্রতিবেদন নিচে উপস্থাপন করা হলো, যা তোমাকে শিখনযোগ্যতা অর্জনে সক্ষম করে গড়ে তুলবে।
অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনযোগ্যতা ও পারদর্শিতা সূচক (PI)
অভিজ্ঞতার শিরোনাম : আকাইদ জেনে ইসলামি আকিদাহ গড়ি, বাস্তবজীবনে (চেকলিস্ট অনুসারে) অনুশীলন করি।
শিখন অভিজ্ঞতা শেষে শিক্ষক সংশ্লিষ্ট শিখনযোগ্যতা মূল্যায়নের জন্য নির্ধারিত পারদর্শিতা সূচক বা (PI) ব্যবহার করে শিখনকালীন মূল্যায়নের রেকর্ড সংরক্ষণ করবেন। সামষ্টিক মূল্যায়নও সংশ্লিষ্ট PI এর ভিত্তিতে করা হয়ে থাকে।
শিক্ষক প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পারদর্শিতার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট PI এর জন্য প্রদত্ত তিনটি মাত্রা থেকে প্রযোজ্য মাত্রাটি নির্ধারণ করবেন এবং সে অনুযায়ী চতুর্ভুজ, বৃত্ত বা ত্রিভুজ (DOA) ভরাট করবেন ।
পারদর্শিতা সূচক | পারদর্শিতা সূচক | পারদর্শিতার মাত্রা | ||
D | O | Δ | ||
৯১.৮.১ ইসলামের মৌলিক জ্ঞান ও ভিত্তিসমূহ জেনে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে (কুরআন ও হাদিসের) নির্দেশনার আলোকে যেকোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব, বিভ্রান্তি দূর করে নৈতিকতার দৃঢ় থাকতে পারা। | ৯১.৮.১.১ ইসলামের মৌলিক জ্ঞান ও ভিত্তিসমূহ সম্পর্কে সচেতনতা প্রদর্শন করছে। | ধর্মের মৌলিক জ্ঞান ও ভিত্তি সম্পর্কে জানে। | নিজ জীবনে ধর্মের মৌলিক জ্ঞান ও ভিত্তিসমূহের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন। | ধর্মের মৌলিক জ্ঞান ও ভিত্তিসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করে দৈনন্দিন জীবনে তার প্রয়োগ সম্পর্কে সচেতন |
৯১.৮.১.২ যেকোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব, বিভ্রান্তি দূর করতে ইসলামের নির্দেশনা অনুসরণ করছে। | নিজের দ্বিধাদ্বন্দ্ব, বিভ্রান্তি দূর করতে ধর্মীয় নির্দেশনা জানার চেষ্টা করবে। | যেকোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব, বিভ্রান্তি দূর করতে ধর্মীয় উৎস সম্পর্কে সচেতন। | যেকোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব, বিভ্রান্তি দূর করতে ধর্মীয় নির্দেশনা অনুসরণ করছে। | |
৯১.৮.১.৩ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজেকে নৈতিকভাবে দৃঢ় রাখছে। | নিজের নৈতিক অবস্থান সম্পর্কে সচেতন। | দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে নিজের নৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে চেষ্টা করছে। | বিভিন্ন পরিস্থিতিতে / প্রেক্ষাপটে নিজেকে নৈতিকভাবে দৃঢ় রাখছে । |
৮ম শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা বই | Class 8 Islam Shikkha | অধ্যায় ১ তাকদি
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।