পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ৬ | বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর: পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়টির ৬ষ্ট অধ্যায়টি হতে বেশ কিছু বর্ণনামূলক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
অধ্যায় ৬ জলবায়ু ও দুর্যোগ কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন-১ : দুর্যোগ কাকে বলে? একটি বন্যা তোমাদের এলাকায় ধেয়ে আসছে। এক্ষেত্রে তুমি এবং তোমার পরিবারের চারটি করণীয় লিখ।
উত্তর : দুর্যোগ : দুর্যোগ হচ্ছে একটি মারাত্মক পরিস্থিতি যা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী, সম্পদ এবং পরিবেশের অনেক ক্ষতি করে। একটি বন্যা আমাদের এলাকায় ধেয়ে আসলে আমি ও আমার পরিবারের করণীয় হলো :
১. উঁচু মাচা বা পাটাতন তৈরি করে তার উপর খাদ্যশস্য, বীজ ইত্যাদি সংরক্ষণ করব।
২. শুকনা খাবার যেমন চিড়া, মুড়ি, খৈ, গুড় এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বিশেষ করে খাবার স্যালাইন ঘরে মজুদ রাখব।
৩. গবাদি পশু ও হাঁস মুরগি উঁচু স্থানে সরিয়ে রাখব।
৪. নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রের খোঁজ রাখব।
প্রশ্ন-২ : করিম টেবিলে বসে বই পড়েছিল। হঠাৎ সে লক্ষ্য করল পড়ার টেবিলসহ ঘরের সকল আসবাবপত্রে এক ধরনের কাপুনি হচ্ছে। সে কোন ধরনের দুর্যোগ লক্ষ করল? উক্ত দুর্যোগের চারটি করণীয় লেখ।
করিম ভূমিকম্প নামক দুর্যোগটি লক্ষ্য করেছিল। ভূমিকম্পে চারটি করণীয় হলো :
১. কাঠের টেবিল বা শক্ত কোন আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নিতে হবে।
২. বিছানায় থাকলে বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে নিতে হবে।
৩. আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি করা যাবে না।
৪. প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা বাড়িতেই রাখতে হবে।
প্রশ্ন-৩ : নদী ভাঙনের পাঁচটি করণীয় উল্লেখ কর।
নদীভাঙনের পাঁচটি করণীয় হলো :
১. থাকার ঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া।
২. গোয়াল ঘর ও রান্না ঘর নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখা।
৩. ঘরের মূল্যবান সামগ্রী ও দলিলপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখা।
৪. হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল নিরাপদ স্থানে রাখা।
৫. নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করা।
প্রশ্ন-৪ : দুর্যোগের পূর্বপ্রস্তুতি সম্পর্কে যা জান লেখ।
উত্তর : দুর্যোগ মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি নিচে তুলে ধরা হলো :
১. প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বইখাতা, পোশাক নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করব।
২. বন্যা মোকাবিলার জন্য সাঁতার শেখা বা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য লাইফ জ্যাকেট, পুরনো টায়ার বা বাতাস ভর্তি টিউব ইত্যাদি সামগ্রী বাড়িতে রেখে দেব।
৩. আমরা সবাই যে অঞ্চলে বাস করি সেসব অঞ্চলের দুর্যোগের কারণ, ফলাফল বা প্রভাব সম্পর্কে জানব।
৪. সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, মাইক বা অন্যান্য প্রচারের মাধ্যমে দুর্যোগের বা আবহাওয়া বার্তা শুনব।
৫. বাড়ির আশেপাশে গাছ লাগাব।
প্রশ্ন-৫ : খরার ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়?
উত্তর : খরায় ক্ষয়ক্ষতি কমানো সহজ নয়। এজন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। যেমন :
১. ভূগর্ভস্থ পানির স্তর পরীক্ষা করে মাটির নিচ থেকে পানি উত্তোলন বন্ধ করে খরা মোকাবিলা করা যেতে পারে।
২. বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে, যাতে দরকারের সময় ব্যবহার করা যায়।
৩. ব্যাপক বনায়ন সৃষ্টি করা গেলে মাটি পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখতে পারবে এবং মাটির আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
৪. পানির অপচয় রোধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
৫. বন উজাড় বন্ধ করতে হবে।
প্রশ্ন-৬ : বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ কী? বাংলাদেশে ঘটে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর নাম লিখ।
উত্তর : বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেয়ার কারণগুলো হলো :
১. বঙ্গোপসাগরের ফানেল আকৃতির উপক‚লীয় এলাকা।
২. সীমান্তের বাইরে নদনদীর অবস্থান।
৩. দেশের উত্তর অংশ থেকে দক্ষিণ দিকে সমভূমির ক্রমনিম্ন ঢাল।
৪. বর্ষাকালে অতিবৃষ্টি এবং মাঝেমাঝে অনাবৃষ্টি ইত্যাদি।
বাংলাদেশে ঘটে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো হলো: বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, খরা, ভূমিকম্প ইত্যাদি।
প্রশ্ন-৭ : ভূমিকম্প মোকাবিলায় কোন কোন বিষয় মনে রাখতে হবে?
উত্তর : ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ভূমিকম্পের সময় আমাদের কতগুলো বিষয় মনে রাখতে হবে। যেমন :
১. ভূমিকম্পের সময় আমাদেরকে পুরোপুরি শান্ত থাকতে হবে।
২. কাঠের টেবিল বা শক্ত কোনো আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নিতে হবে।
৩. বারান্দা, আলমারি, জানালা বা ঝোলানো ছবি থেকে দূরে থাকতে হবে।
৪. প্রথম ভূকম্পন থেমে যাবার পর সারিবদ্ধভাবে ঘর থেকে বের হয়ে খালি জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে।
৫. প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বাড়িতেই রাখতে হবে।
সাধারণ
প্রশ্ন-৮ : বিভিন্ন দুর্যোগে শিশুদের লেখাপড়ায় কী কী সমস্যা হয় তা পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : বাংলাদেশে প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে। এ সময় শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। ফলে তাদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হয়। অনেক সময় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘরে পানি ওঠে, রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যায়। এতে করে শিশুরা লেখাপড়া করতে পারে না।
প্রশ্ন-৯ : ভূমিকম্পের সময় আমাদের করণীয় সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লিখ।
উত্তর : ভূমিকম্পের সময় আমাদের করণীয় হলো :
১. পুরোপুরি শান্ত থাকতে হবে।
২. আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি করা যাবে না।
৩. বিছানায় থাকলে বালিশ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখতে হবে।
৪. কাঠের টেবিল বা শক্ত কোনো আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নিতে হবে।
৫. পাকা দালানে থাকলে বিমের পাশে দাঁড়াতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
-
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | প্রার্থনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ঘাসফুল কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ভাবুক ছেলেটি গল্প প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | অবাক জলপান নাটকটির প্রশ্ন উত্তর | PDF
প্রশ্ন-১০ : ঘূর্ণিঝড়ের ফলে কী কী সমস্যা হয়?
উত্তর : ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয় তা নিচে দেওয়া হলো :
ঘূর্ণিঝড়ে মানুষ, পশুপাখি, মাছসহ অন্যান্য প্রাণী, ফসল, ঘরবাড়ি, গাছপালা, রাস্তাঘাট সবকিছুরই ক্ষতি হয়। এ সময় মানুষ আশ্রয়, পানি, খাদ্য, চিকিৎসা, কর্মসংস্থানের অভাবসহ বিভিন্ন সংকটে পড়ে। শিশুরাও বিদ্যালয়ে যেতে না পারায় তাদের লেখাপড়ার ক্ষতি হয়। অনেক সময় ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশয়কেন্দ্রে চলে যেতে হয়। সেখানে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
প্রশ্ন-১১ : খরার কারণে কী কী সংকট দেখা দেয়?
উত্তর : খরার কারণে কুয়া, খাল, বিল ইত্যাদির পানি শুকিয়ে যায়। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ কমে যায়। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়। মাটির আর্দ্রতা কমে যায়। মাঠের ফসল ফলাতে কষ্ট হয় এবং গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দেয়।
প্রশ্ন-১২ : বাংলাদেশে নদীভাঙনের কারণগুলো উলেখ কর।
উত্তর : বাংলাদেশের অসংখ্য নদী ও নদীর শাখা-প্রশাখা রয়েছে। বিভিন্ন কারণে নদীগুলোর পাড় ভেঙে যায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণ। প্রাকৃতিক কারণের মধ্যে প্রধান হলো বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদি। অন্যদিকে মানবসৃষ্ট কারণের মধ্যে রয়েছে অপরিকল্পিত নদী খনন, বালু উত্তোলন, নদী তীরবর্তী গাছপালা কেটে ফেলা ইত্যাদি।
প্রশ্ন-১৩ : ‘বাংলাদেশ নানা দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে’Ñএ সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর : প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে জলবায়ু পরিবর্তিত হয়ে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের দুর্যোগ সংঘটিত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে প্রতি বছর অতিবৃষ্টি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অনাবৃষ্টি প্রভৃতি দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে। একারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে সমতল ভূমিতে লবণাক্ততা ছড়িয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশে পরিণত হয়েছে।
প্রশ্ন-১৪ : বাংলাদেশের কোন অঞ্চলের জন্য খরা একটি মারাত্মক দুর্যোগ? এর কারণ কী?
উত্তর : বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের জন্য খরা একটি মারাত্মক দুর্যোগ। এসব অঞ্চলে খরা সৃষ্টির বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যেমন- এ অঞ্চলে দীর্ঘকাল ধরে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। এখানে অপর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া এ অঞ্চলে নদীর সংখ্যা কম।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।