পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ৮ | বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর: পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়টির ৮ম অধ্যায়টি হতে বেশ কিছু বর্ণনামূলক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন-১ : বেগম রোকেয়া কে ছিলেন? নারীদের লেখাপড়া ও নারীদের উন্নয়নের জন্য বেগম রোকেয়া কর্তৃক সম্পাদিতারটি কাজের নাম লেখ। [প্রা. শি. স. প. ’১৫]
উত্তর : বেগম রোকেয়া ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত। তিনি নারী শিক্ষার বিষয়ে সমাজে অসামান্য অবদান রাখেন। নারীদের লেখাপড়া ও নারীদের উন্নয়নে তার সম্পাদিতারটি কাজ হলো :
১. তিনি নারীদের শিক্ষার বিষয়ে সমাজের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করেন।
২. ১৯০৫ সালে তিনি ভাগলপুরে একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
৩. তিনি মেয়েদের স্কুলে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন।
৪. তিনি নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য কলম ধরেন।
প্রশ্ন-২ : বাংলাদেশের একজন মহীয়সী নারী ১৮৮০ সালে রংপুরে জন্মগ্রহণ করেন। মহীয়সী নারীটির নাম কী? নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে তারারটি অবদান লেখ। [মণিপুর স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
উত্তর : মহীয়সী নারীটির নাম বেগম রোকেয়া। নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে বেগম রোকেয়ারারটি অবদান হলো :
১. ১৯০৫ সালে বেগম রোকেয়া তার স্বামীর নামানুষারে ভাগলপুরে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
২. নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সমাজকে সচেতন করতে অসামান্য অবদান রাখেন।
৩. তিনি নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে সমাজে অসামান্য অবদান রাখেন।
৪. বেগম রোকেয়ার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে মেয়েরা ধীরে ধীরে শিক্ষার আলো দেখতে পায়।
প্রশ্ন-৩ : বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী-পুরুষের সমতা বিষয়টি সম্পর্কে তোমার নিজের মতামত প্রদান কর।
উত্তর : আমাদের দেশে নারী-পুরুষের সমতার বিষয়টি খুব গুরুত্বসহকারে আলোচিত হচ্ছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। সকল কাজে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ না থাকলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। নারী-পুরুষ একই রকম সুযোগ-সুবিধা না পেলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। এই কারণে বর্তমানে দেশে সকল কাজে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন-৪ : নারী নির্যাতন বন্ধে আমাদের করণীয় কী কী?
উত্তর : নারী নির্যাতন বন্ধে আমাদের করণীয় হলো :
১. সবক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
২. ছেলে ও মেয়ে এভাবে না দেখে সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে।
৩. কোনো কথা ছেলের বা মেয়ের বলে মনে করা যাবে না।
৪. কোনো মেয়ে যাতে নির্যাতিত না হয় সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
৫. পরিবার এবং পরিবারের বাইরে সকল মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
প্রশ্ন-৫ : নিউইয়র্কের পোশাক কারখানায় নারী শ্রমিকদের প্রথম আন্দোলনের ঠিক ৫১ বছর পর একই দিনে আরো একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশটি কত সালে সংঘটিত হয়? এতে কারা অংশ নেন? এই আন্দোলন সম্পর্কে তিনটি বাক্য লেখ।
উত্তর : প্রতিবাদ সমাবেশটি ১৯০৮ সালের ৮ই মার্চ সংঘটিত হয়। এতে নিউইয়র্কের গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়নের নারীরা অংশ নেন।
উক্ত আন্দোলন সম্পর্কে তিনটি বাক্য হলো :
১. কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম ও শিশুশ্রম বন্ধের দাবিতে তারা এ আন্দোলন করেন।
২. ১৪ দিন ধরে এই প্রতিবাদ সমাবেশলে এবং এতে প্রায় ২০, ০০০ নারী শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন।
৩. কর্মক্ষেত্রে এই আন্দোলন নারীদের ঐক্যবদ্ধতার একটি বড় উদাহরণ।
প্রশ্ন-৬ : নারী-পুরুষের সমতা রক্ষায় তুমি কী করতে পার?
উত্তর : ছোটবেলা থেকেই কাউকে ছেলে বা কাউকে মেয়ে এভাবে না দেখে সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখব। সমাজের উন্নতির জন্য বাড়িতে মা-বাবাকে সাহায্য করব। কোনো কাজ ছেলের বা কোনো কাজ মেয়ের বলে মনে করব না। পরিবারের মা-বোন ইত্যাদি মেয়ে সদস্যদের প্রতি এবং পরিবারের বাইরের মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হব। সহপাঠী ছেলে বা মেয়ে যেই হোক একসাথে পড়ালেখা করব, খেলা করব।
প্রশ্ন-৭ : ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘোষণার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১৮৫৭ সালের ৮ই মার্চ নিউইয়র্ক শহরের একটি সেলাইয়ের কারখানার নারী শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি ও আট ঘণ্টা শ্রমের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করেন। সে সময় তাদের অনেককে পুলিশ নির্যাতন ও গ্রেফতার করে। এই দিনটিকে সামনে রেখে ১৯০৮ সালে নিউইয়র্ক শহরে হাজার হাজার নারী শ্রমিক শিশুশ্রম বন্ধ ও নারীর ভোটাধিকারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। ১৯১০ সালে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমাজতাত্তি¡ক সম্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক ‘ক্লারা জেটকিন’ ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দেন। পরবর্তীতে জাতিসংঘ ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
প্রশ্ন-৮ : যৌতুক প্রথা প্রতিরোধে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে?
উত্তর : যৌতুক প্রথা প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নারীর সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারলে যৌতুক প্রথা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। কেননা নারীসমাজ শিক্ষিত হলে এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হলে তাদের সচেতনতা বাড়বে, যা যৌতুক প্রতিরোধে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করবে।
যৌতুক প্রথা প্রতিরোধে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা অপরিহার্য। নারী ও পুরুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা যৌতুক প্রথাকে নিরুৎসাহিত করবে। শিক্ষা মানুষকে সচেতন করে এবং উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে নারী-পুরুষ সকলেই দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হবে। তাই শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার ঘটলে যৌতুক আদান-প্রদান কমে যাবে।
প্রশ্ন-৯ : সবক্ষেত্রে নারী-পুরুষ কেমন অবদান রাখছে?
উত্তর : আমাদের সমাজে বিভিন্ন পেশা, শ্রেণি ও বয়সের মানুষ বাস করে। এরা সবাই মেয়েশিশু বা ছেলেশিশু হিসেবে পরিবারে বাস করছে এবং পরিবারকে সহযোগিতা করছে। সংসারসহ কর্মক্ষেত্রের প্রায় সব জায়গায় মহিলা ও পুরুষের অবদান অস্বীকার করা যাবে না। আবার, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুরুষ শিক্ষকের পাশাপাশি মহিলারাও অবদান রাখছে। এভাবে সমাজে নারী-পুরুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখছে।
প্রশ্ন-১০ : নারী দিবস সম্পর্কে কী জান? ৫টি বাক্যে লেখ।
উত্তর : নারী দিবস সম্পর্কে আমি যা জানি তা হলো :
১. ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
২. ১৯৫৭ সালের ৮ই মার্চ নিউইয়র্কে নারী পোশাক শ্রমিকেরা সর্বপ্রথম ন্যায্য মজুরি ও শ্রমের দাবিতে আন্দোলন করে।
৩. ১৯১০ সালে জার্মান সমাজতাত্তি¡ক ক্লারা জেটকিন নারী দিবস ঘোষণার দাবি জানান।
৪. ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ ৮ই মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ ঘোষণা করে।
৫. নারী দিবসে নারীর অধিকার নিশ্চিত করাসহ নানা বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোরেষ্টা করা হয়।
সাধারণ
প্রশ্ন-১১ : নারী নির্যাতনের কমপক্ষে পাঁচটি নেতিবাচক প্রভাব লিখ।
উত্তর : নারী নির্যাতনের পাঁচটি নেতিবাচক প্রভাব হলো :
১. নারী নির্যাতন হলে নির্যাতিত নারীর শারীরিক, মানসিক ক্ষতি হয়।
২. যেসব পরিবারে মায়েরা নির্যাতনের শিকার হয় সেসব পরিবারে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধা পায়।
৩. নির্যাতিত নারী সময়মতো কাজে যেতে পারে না, ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।
৪. নারী নির্যাতন মানুষ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর।
৫. নারীরা নানা হয়রানির শিকার হলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
প্রশ্ন-১২ : নারী নির্যাতনের পাঁচটি কারণ উল্লেখ কর।
উত্তর : নারী নির্যাতনের পাঁচটি কারণ হলো :
১. নারীদের নিম্ন সামাজিক মর্যাদা।
২. যৌতুক প্রথা।
৩. শিক্ষার অভাব।
৪. দারিদ্র্য।
৫. বিভিন্ন কুসংস্কার।
আরো পড়ুনঃ
-
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | প্রার্থনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ঘাসফুল কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ভাবুক ছেলেটি গল্প প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | অবাক জলপান নাটকটির প্রশ্ন উত্তর | PDF
প্রশ্ন-১৩ : নারী শিক্ষায় বেগম রোকেয়ার পাঁচটি অবদান লেখ।
উত্তর : নারী-পুরুষ সমতা ও নারী শিক্ষার বিষয়ে সমাজকে সচেতন করতে বেগম রোকেয়া অসামান্য অবদান রাখেন। তিনি নারী-পুরুষের মধ্যে বিভাজন নয় বরং সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। নারী শিক্ষার প্রসারে বেগম রোকেয়া ১৯০৫ সালে ভাগলপুরে একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আজীবন নারী শিক্ষার অগ্রগতি জন্যেষ্টাালিয়ে গেছেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই মেয়েরা ধীরে ধীরে শিক্ষার আলো পেতে থাকে।
প্রশ্ন-১৪ : বাংলাদেশের সমাজ উন্নয়নে নারীদের পাঁচটি অবদান লেখ।
উত্তর : বাংলাদেশের সমাজ উন্নয়নে নারীদের পাঁচটি অবদান হলো :
১. শিক্ষার মাধ্যমে নারীরা সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখছে।
২. পোশাক শিল্পে নারীরা কাজ করে সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখছে।
৩. বিদেশোকরি করে নারীরা সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখছে।
৪. নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নারীরা সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখছে।
৫. জনপ্রতিনিধিত্ব করে নারীরা সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখছে।
প্রশ্ন-১৫ : আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন কীভাবে শুরু হয়?
উত্তর : ১৮৫৭ সালের ৮ই মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে, কারাখানার নারী শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি ও আট ঘণ্টা শ্রমের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করেন। সে সময় তাদের অনেককে পুলিশ নির্যাতন ও গ্রেফতার করে। ঐ দিনটিকে সামনে রেখে ১৯০৮ সালে নিউইয়র্ক শহরের হাজার হাজার নারী শ্রমিক, শিশুশ্রম বন্ধ ও নারীর ভোটাধিকারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পরবর্তীতে জাতিসংঘের উদ্যোগে ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।