পঞ্চম শ্রেণি | বাংলা ব্যকরণ | প্রবন্ধ রচনা ২৬-৩০ | PDF: পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বিষয়টির প্রবন্ধ রচনা অংশ হতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রচনা সমুহ নিয়ে আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
২৬/ ছাত্রজীবন
অথবা, ছাত্রজীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য
সূচনা : বিদ্যাশিক্ষার জন্য শিশুকাল থেকে শুরু করে যে সময়টুকু আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিবাহিত করি তাকেই ছাত্রজীবন বলে। ছাত্রজীবন হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়। ভবিষ্যত জীবনের সফলতার জন্য এ সময় থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়।
ছাত্রজীবনের গুরুত্ব : ভবিষ্যৎ জীবনের সুখ, সমৃদ্ধি ও উন্নতির বীজ ছাত্রজীবনেই বপন করতে হয়। ছাত্রজীবনের সুশিক্ষাই ভবিষ্যৎ জীবনের পাথেয়। আমাদের জীবনে সফলতা ছাত্রজীবনের সাধনার ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল।
ছাত্রজীবনের কর্তব্য : অধ্যয়ন করাই ছাত্রজীবনের প্রথম ও প্রধান কাজ। ছাত্রসমাজই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। এজন্য ছাত্রদের প্রধানতম সাধনা হলো শিক্ষা-দীক্ষায় সমৃদ্ধ ও আদর্শ জীবন গঠন করা। ছাত্রসমাজকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত এবং শারীরিক শক্তিতে ও মানসিক দক্ষতায় বলীয়ান হতে হবে। যোগ্যতাসম্পন্ন ও চরিত্রবান ছাত্রদের জাতি গঠনে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
লক্ষ্য নির্ধারণ : লক্ষ্যহীন জীবন হালবিহীন জাহাজের মতো। ছাত্রজীবনেই জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে হবে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।
চরিত্র গঠন : চরিত্র মানবজীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। ছাত্রজীবনই চরিত্র গঠনের উপযুক্ত সময়। ছাত্রদের চরিত্র গঠনে বিশেষ মনোযোগী হতে হবে। সৎ পথে চলা, সত্য কথা বলা, লোভ-লালসা থেকে বিরত থাকা, খারাপ কাজ ও কুসঙ্গ থেকে দূরে থাকা, ছোটদের স্নেহ করা ও বড়দের শ্রদ্ধা করা ইত্যাদি ভালো গুণগুলো ছাত্রজীবনেই চর্চা করতে হবে।
খেলাধুলা ও স্বাস্থ্য গঠন : পড়াশোনার পাশাপাশি শরীর গঠনের প্রতিও ছাত্রদের মনোযোগী হতে হবে। স্বাস্থ্য মানবজীবনের অমূল্য সম্পদ। সুস্থ শরীরেই সুস্থ মনের বাস। তাই ছাত্রজীবনে নিয়মিত খেলাধুলার মাধ্যমে স্বাস্থ্য গঠনে সচেষ্ট হতে হবে।
সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ : ছাত্রদের মানসিক বিকাশে সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।এক্ষেত্রে যার যে কাজ ভালো লাগে সে কাজে মনোযোগ দিতে হবে। বিতর্ক চর্চা, আবৃত্তি চর্চা, বই পড়া, ভ্রমণ, ছবি তোলা, বিজ্ঞান চর্চা, লেখালেখি ইত্যাদির মাধ্যমে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিকে আরও তীক্ষè করে তোলা সম্ভব।
জনসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ : ছাত্ররাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। তাই ছাত্রজীবনে সকলের উচিত জনসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করা। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ¡াস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসা ছাত্রদের কর্তব্য।
উপসংহার : ছাত্রজীবনই জীবনের সবেচেয় গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই এ সময় থেকেই ছাত্রদের নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে হবে। ছাত্ররাই ভবিষ্যতে দেশের সকল ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে। নিজেদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারলেই দেশ ও জাতির জন্য তারা গৌরব বয়ে আনতে সক্ষম হবে।
আরো দেখুন
২৭. মানুষের বন্ধু গাছপালা
অথবা, বৃক্ষরোপণ অভিযান
অথবা, গাছ লাগান-পরিবেশ বাঁচান
সূচনা : বৃক্ষ বা গাছপালা মানুষের অকৃত্রিম ও চিরস্থায়ী বন্ধু। মানব জাতির সামগ্রিক কল্যাণ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের অবদান অসামান্য। এ ব্যাপারে সমগ্র বিশ্বই আজ সচেতন। বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আমাদের দেশেও ¯েøাগান উঠেছে, ‘গাছ লাগান-পরিবেশ বাঁচান’।
বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা : আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে গাছের মতো অবদান আর কারও নেই। গাছ থেকেই আমরা পাই জীবনধারণের জন্য খাদ্য, বস্ত্র তৈরির তুলা, বাসগৃহ ও আসবাবপত্র নির্মাণের প্রয়োজনীয় কাঠ ইত্যাদি। বৃক্ষ আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য অক্সিজেন দেয় এবং বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে। বৃক্ষ থেকে আমাদের জীবনরক্ষাকারী নানারকম ওষুধ তৈরি হয়। গাছপালা প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে পৃথিবীকে বিভিন্ন দুর্যোগ থেকে বাঁচায়।
বাংলাদেশের বনাঞ্চল : একটি দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্যে দেশের মোট আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনভ‚মি থাকা আবশ্যক। কিন্তু বাংলাদেশে বনভ‚মি আছে মাত্র ১৭ ভাগ। যেটুকু রয়েছে তাও দ্রæতগতিতে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ী এবং লোভী বন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই মূলত প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসের জন্য দায়ী।
বৃক্ষরোপণ অভিযান : গাছ না লাগিয়ে যদি কেবল কেটে ফেলা হয় তাহলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে এবং পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হবে। এজন্য বৃক্ষরোপণে সমাজের সকল স্তরের লোকজনকে উৎসাহিত করতে হবে।
আমাদের করণীয় : বৃক্ষরোপণ অভিযান সফল করার জন্যে সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। বাড়ির আশেপাশে খালি জায়গাগুলোতে যথাসাধ্য গাছ লাগাতে হবে। বড়দের পাশাপাশি শিশুদের এ ব্যাপারে এখন থেকেই সচেতন করে তুলতে হবে। একটি গাছ কাটার প্রয়োজন হলে আগে কমপক্ষে দুটি গাছ লাগাতে হবে।
উপসংহার : মানুষ ও প্রাণীকুলের সুরক্ষিত ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্যে বৃক্ষরোপণ অভিযান অত্যন্ত জরুরি একটি পদক্ষেপ। এ অভিযান সফল হলে আমাদের জীবন সমৃদ্ধ হবে। দেশ ভরে উঠবে সবুজের প্রশান্তিতে।
২৮. স্বদেশপ্রেম
সূচনা : সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে
সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালোবেসে।
মানুষ যে স্থানে জন্মগ্রহণ করে, লালিত-পালিত হয় সেটাই তার স্বদেশ। আর তার প্রতি মমতা অনুভব করা মানুষের জন্মগত প্রবৃত্তি।
স্বদেশপ্রেম কী : স্বদেশপ্রেম বলতে বোঝায় নিজের দেশকে ভালোবাসা। নিজ দেশ ও জাতির প্রতি, মাতৃভাষার প্রতি সুতীব্র আকর্ষণ, অনুরাগ ও আনুগত্যকেই দেশপ্রেম বলে।
স্বদেশপ্রেমের স্বরূপ : স্বদেশের ভ‚মি এবং তার মানুষের প্রতি জীবন উৎসর্গ করাতেই স্বদেশপ্রেম প্রকাশ পায়। একজন দেশপ্রেমিক সকল অবস্থাতেই দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভ‚মিকা রাখতে প্রস্তুত। এজন্য তিনি প্রাণ দিতেও দ্বিধা করেন না। স্বদেশের বাইরে অবস্থান করলে দেশের জন্য আমাদের প্রাণ কাঁদে। এর কারণও স্বদেশের প্রতি আমাদের গভীর প্রেম।
স্বদেশেপ্রেমের প্রয়োজনীয়তা : ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে স্বদেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ। স্বদেশপ্রেম হচ্ছে এক প্রকার নৈতিক শক্তি যা প্রত্যেকটি কাজে উৎসাহ-উদ্দীপনা যোগায়। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও সার্বিক উন্নতি নির্ভর করে স্বদেশপ্রেমের ওপরেই।
ছাত্রজীবনে স্বদেশপ্রেম : ছাত্ররাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যদি স্বদেশপ্রেমের বীজ বপন করা যায় তা হলে পরবর্তীকালে তারাই দেশ ও জাতির উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারবে।
স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেম : বৃহত্তর দিক থেকে ভাবলে আমরা প্রত্যেকেই এই মহাবিশ্বের নাগরিক। তাই পৃথিবীর সমস্ত কিছুর প্রতিই আমাদের ভালোবাসা থাকতে হবে। তাই বলা যায় স্বদেশপ্রেম বিশ্বপ্রেমেরই অন্তর্ভুক্ত।
বাঙালির স্বদেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত : যুগে যুগে বাংলার মহান সন্তানেরা দেশের প্রতি তাঁদের গভীর ভালোবাসার প্রমাণ রেখেছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির আত্মত্যাগ তারই স্বাক্ষ্য বহন করে। তিতুমীর, ক্ষুদিরাম, মওলানা ভাসানী, এ.কে. ফজলুল হক, শহিদ সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অসংখ্য মহান ব্যক্তিগণ স্বদেশপ্রেমের কারণে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন।
উপসংহার : স্বদেশপ্রেম যেকোনো অনুভ‚তিসম্পন্ন মানুষের একটি বিশেষ ও অপরিহার্য গুণ। স্বদেশপ্রেমই মানবপ্রেমের ও বিশ্বেপ্রেমের পথ দেখায়। আমরা সবাই দেশকে ভালোবাসব। দেশের উন্নতির জন্য কাজ করব।
২৯. কম্পিউটার
অথবা, কম্পিউটার: বিজ্ঞানের বিস্ময়
সূচনা : যুগে যুগে বিজ্ঞানের কল্যাণে অনেক অভাবনীয় প্রযুক্তির সাথে মানুষের পরিচয় ঘটেছে। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো কম্পিউটার। আধুনিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রই কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণাধীন। বিচিত্র ও বহুমুখী সব কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার জীবনকে সহজ করে তুলেছে বহুগুণে।
উদ্ভাবন : আধুনিক কম্পিউটার উদ্ভাবনের সূত্রপাত হয় ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ গণিতবিদ চালর্স ব্যাবেজের গণকযন্ত্র অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন থেকে। চার্লস ব্যাবেজকে তাই কম্পিউারের জনক বলা হয়। প্রথমদিকের কম্পিউটারগুলো আকার ও আয়তনে ছিল বিশাল। কয়েকটি রুমে রাখতে হতো এর যন্ত্রপাতি। পরবর্তীকালে মাইক্রোপ্রসেসর আবিষ্কার হওয়ায় এর আকার ছোট হয়ে আসে। বর্তমানে হাতের তালুর আকারের কম্পিউটারও বাজারে পাওয়া যায়।
উপকারিতা : বাস্তবিক অর্থে কম্পিউটার পারে না এমন কোনো কাজ নেই। ঘরবাড়ি, অফিস, কলকারখানা সব জায়গাতেই অনেক বড় বড় কাজ নিমেষেই কম্পিউটারে করে নেওয়া যাচ্ছে। এতে অনেক দৈহিক ও মানসিক শ্রম সাশ্রয় হচ্ছে। চিকিৎসাক্ষেত্রে কম্পিউটার আশীর্বাদরূপে আবিভর্‚ত হয়েছে।
অনেক সূ² অস্ত্রোপচার, রোগ নির্ণয় ইত্যাদিতে এর ব্যবহার করা হচ্ছে। নকশা করা, গণনা করা, ছবি আঁকা, লেখা, পড়া, বিনোদন- এককথায় জীবন যাপনের সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি কাজেই কম্পিউটার আমাদের নিত্যসঙ্গী। কম্পিউটারে ইটারনেট ব্যাবহার করে মুহূর্তের মধ্যেই আমরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের সাথে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারছি। এভাবে কম্পিউটার পুরো বিশ্বটাকেই আমাদের হাতের মুঠোয় বন্দি করেছে।
কম্পিউটারের ক্ষতিকর দিক : কম্পিউটারের অসংখ্য উপকারি দিকের পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। এক কম্পিউটার একই সাথে অনেক মানুষের কাজ করে দেওয়ায় বেকারত্ব বাড়ছে। তাছাড়া অনেকে কম্পিউটারে কাজের বদলে গেমস খেলে বা অপ্রয়োজনীয় কাজ করে সময় নষ্ট করে। এটি শিশুদেরকে শারীরিক পরিশ্রম ও খেলাধুলা থেকে বিমুখ করছে।
উপসংহার : কিছু নেতিবাচক দিক থাকলেও আধুনিক জীবনে কম্পিউটারের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কম্পিউটার প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের বিকল্প নেই।
আরো পড়ুনঃ
-
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | প্রার্থনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ঘাসফুল কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ভাবুক ছেলেটি গল্প প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | অবাক জলপান নাটকটির প্রশ্ন উত্তর | PDF
৩০. বিজ্ঞানের অবদান
অথবা, দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
সূচনা : বিজ্ঞান মানবসভ্যতার এক বিশিষ্ট অবদান। বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। কাছে-দূরে যেদিকেই তাকাই না কেন সবখানে, সব কিছুতেই রয়েছে বিজ্ঞানের ছোঁয়া।
বিজ্ঞানের ক্রমোন্নতি : আগুন জ্বালানোর কৌশল ও ব্যবহার আবিষ্কার বিজ্ঞানের প্রথম সফলতা। মানুষের আগ্রহ ও প্রয়োজন বিজ্ঞানকে বর্তমানে আধুনিকতার শীর্ষে নিয়ে এসেছে। জল-স্থল আর আকাশের রহস্যময় জগৎও আজ মানুষের নিয়ন্ত্রণে।
আধুনিক সভ্যতায় বিজ্ঞান : বিজ্ঞান আবিষ্কৃত বিভিন্ন রকম যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে মানুষ আধুনিকতার চরম শিখরে পৌঁছে গেছে। বৈদ্যুতিক বাতি, পাখা, রেলগাড়ি, মোটরগাড়ি, বৈদ্যুতিক চুল্লি, গ্যাসের চুলা, হিটার, এয়ারকুলার, রেফ্রিজারেটর, টেলিফোন, টেলিগ্রাম, ফ্যাক্স, কম্পিউটার, মোবাইল ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে আমাদের জীবনযাত্রা সহজতর ও আরামদায়ক হয়ে উঠেছে।
মানবকল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান : মানুষের জীবনকে সুখী ও সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান সবচেয়ে বেশি। বিজ্ঞান মানবজীবনকে সহজ করেছে এবং স্বাচ্ছন্দ্য দিয়েছে।
যাতায়াত ও যোগাযোগে বিজ্ঞান : বিজ্ঞান দূরত্বকে জয় করেছে। বিমান, রেলগাড়ি, মোটরগাড়ির মাধ্যমে আমরা যে কোনো সময় যে কোনো স্থানে যাতয়াত করতে পারি। এর পাশাপাশি ইন্টারনেট, টেলিফোন, ফ্যাক্স ও মোবাইল ফোন-এর মাধ্যমে আমরা মুহূর্তের মধ্যে হাজার মাইল দূরের লোকের সাথে যোগাযোগ করতে পারি।
কৃষিকাজে বিজ্ঞান : আজ বিজ্ঞানের প্রভাবে কৃষিকাজ অনেক সহজ হয়েছে। জলসেচের ব্যবস্থা, উন্নত ধরনের বীজ, বীজ সংরক্ষণ, ভ‚মি সংরক্ষণ ইত্যাদির প্রভ‚ত উন্নতি কৃষিবিজ্ঞানের অবদান।
চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান : চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে বিভিন্ন সূ² যন্ত্রপাতি। যেগুলোর মাধ্যমে অনেক জটিল ও কঠিন রোগ সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে। আজকাল হৃদপিণ্ড, যকৃত ইত্যাদি প্রতিস্থাপনের মতো সূ² কাজও চিকিৎসকগণ আত্মবিশ্বাসের সাথে করতে পারছেন।
শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞান : কাগজ উৎপাদন ও বইপত্র সহজে পাওয়ার সুবিধার কারণে বিজ্ঞান আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সহজ করেছে। শিক্ষাগ্রহণের জন্য প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতাও বিজ্ঞানের কল্যাণে কমে গিয়েছে।
অপকারিতা : বিজ্ঞান যেমন আমাদের জীবনে আশীর্বাদ, তেমনি আবার অনেক ক্ষেত্রে অভিশাপও। পরমাণু বিজ্ঞানের আবিস্কৃত বিভিন্ন মারণাস্ত্র বর্তমান পৃথিবীর জন্যে হুমকিস্বরূপ। বিজ্ঞানের ধ্বংসাত্বক ব্যবহারে বিশ্বশান্তি নষ্ট হচ্ছে। অনেক মানুষ শারীরিক পরিশ্রমের প্রতি বিমুখ হয়ে পড়েছে।
উপসংহার : আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে বিজ্ঞানের অজস্র দান। বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়েই মানুষ আরও অনেক অজানা রহস্যের সমাধান করবে। তবে পৃথিবী থেকে অশান্তি, বিশৃঙ্খলা ও বৈষম্য দূরীকরণে বিজ্ঞানের এখনও অনেক কিছু করার আছে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।