৫ম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ১১ | বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর: পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়টির ১১ তম অধ্যায়টি হতে বেশ কিছু বর্ণনামূলক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
অধ্যায় ১১ বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন-১ : গারো জাতিগোষ্ঠীর ভাষা, ধর্ম, খাদ্যাভ্যাস ও পোশাক সম্পর্কে লিখ।
উত্তর : গারো জাতিগোষ্ঠীর ভাষা, ধর্ম, খাদ্যাভ্যাস ও পোশাক সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
ভাষা : গারোদের ভাষা নাম আচিক।
ধর্ম : গারোদের অধিকাংশ বর্তমানে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী। তারা বড়দিনসহ খ্রিষ্টানদের অন্যান্য উৎসবাদি পালন করে। গারোদের সনাতনী ধর্মের নাম ‘সাংসারেক’।
খাদ্যাভ্যাস : গারোরা ভাতের সাথে মাছ, মাংস, শাকসবজি খায়। তাদের ঐতিহ্যবাহী একটি খাবারে হচ্ছে কচি বাঁশের কোড়ল দিয়ে তৈরিখাদ্য যা অনেক সুস্বাদু।
পোশাক : গারো নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হচ্ছে ‘দকবান্দা’ বা ‘দকসারি’ আর পুরুষদের পোশাক শার্ট, লুঙ্গি, ধুতি।
প্রশ্ন-২ : খাসিদের সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে কী জান? তাদের খাদ্য সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : খাসিদের সমাজব্যবস্থা বৈচিত্র্যময়। খাসি সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। মায়েদের সূত্র ধরেই তাদের দল, গোত্র ও বংশ গড়ে ওঠে। পারিবারিক সম্পত্তির বেশিরভাগের উত্তরাধিকারী হয় পরিবারের সবচেয়ে ছোট মেয়ে। তারা খুব সহজ সরল জীবনযাপন করে। সাধারণত কৃষিকাজ করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে। তারা প্রচুর মধু ও পানাষ করে।
খাসিদের প্রধান খাদ্যগুলো হলোÑ ভাত, মাংস, শুঁটকি মাছ, মধু ইত্যাদি। তারা পান-সুপারিকে খুবই পবিত্র মনে করে। কোনো অতিথি তাদের বাড়িতে বেড়াতে এলে পান-সুপারি ওা দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকে।
প্রশ্ন-৩ : গারো ও খাসিদের মধ্যে বৈসাদৃশ্য ছকেিিহ্নত কর।
উত্তর : গারো ও খাসিদের মধ্যে বৈসাদৃশ্য ছকেিিহ্নত করা হলো :
গারো খাসি
ক. গারো জাতিসত্তাদের বসবাস এদেশের বিভিন্ন স্থানে। ক. এদেশের বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় খাসি জনগোষ্ঠী বাস করে।
খ. গারোদের অধিকাংশই বর্তমানে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী। খ. খাসিরা বিভিন্ন দেবতার পূজা করে।
গ. গারো নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হচ্ছে ‘দকবান্দা’ আর পুরুষদের পোশাক শার্ট, লুঙ্গি, ধূতি। গ. খাসি মেয়েরা ‘কাজিম পিন’ নামক বøাউজ ও লুঙ্গি পরে। আর ছেলেরা পকেট ছাড়া জামা ও লুঙ্গি পরে যার নাম ‘ফুংগ মারুং’।
ঘ. এদেশের গারোরা ‘আচিক’ ভাষায় কথা বলে। ঘ. খাসিদের নিজস্ব ভাষা আছে যার নাম ‘মনখেমে’।
প্রশ্ন-৪ : বাংলাদেশে যেসব ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বসবাস করে একটি মানচিত্র এঁকে তাদেখাও।
উত্তর : বাংলাদেশে যেসব ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বসবাস করে একটি মানচিত্র এঁকে তাদেখানো হলো :
বাংলাদেশের কয়েকটি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অবস্থান
সাধারণ
প্রশ্ন-৫ : পাঁচটি বাক্যে গারোদের বাসস্থানের বর্ণনা দাও।
উত্তর : অতীতে গারোরা বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে অথবা নদীর ধারে তাদের বাড়িগুলো নির্মাণ করত। এই বাড়িগুলো সাধারণত দুচালা বিশিষ্ট দীর্ঘ আকারের হতো। এ ধরনের বাড়ির নাম ছিল ‘নকমান্দি’। বর্তমানে এ ধরনের বাড়িঘর দেখা যায় না। বর্তমানে তারা সমতল বাংলাদেশের স্বাভাবিক টিনেরাল বা অন্যান্য প্রচলিত বাড়ির মতোই বাড়ি তৈরি করে।
প্রশ্ন-৬ : গারো সমাজব্যবস্থা সম্পর্কেপাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর : গারো সমাজ মাতৃতান্ত্রিক অর্থাৎ মা পরিবারের প্রধান। মেয়েরা পারিবারিক সম্পত্তির উত্তরাধিকারী। আর বাবা পরিবারের দেখাশোনা করেন। বিয়ের পরে তিনি স্ত্রীর সাথে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন এবং তার কর্তব্য পালন করেন। তবে বর্তমানে মাতৃতান্ত্রিক প্রথাালু থাকলেও দেশের বাঙালি সমাজের মতো তাদের আচরণ ও অনুশীলন পরিবর্তিত হচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ
-
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | প্রার্থনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ঘাসফুল কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ভাবুক ছেলেটি গল্প প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | অবাক জলপান নাটকটির প্রশ্ন উত্তর | PDF
প্রশ্ন-৭ : ওঁরাওদের সমাজব্যবস্থার বর্ণনা দাও।
উত্তর : ওঁরাও সমাজব্যবস্থা পিতৃতান্ত্রিক। তাদের একজন গ্রাম প্রধান থাকে যিনি ‘মাহাতো’ নামে পরিচিত। তাদের নিজস্ব আঞ্চলিক পরিষদ আছে যা ‘পাহতো’ নামে পরিচিত। এই পরিষদে কয়েকটি গ্রামের প্রতিনিধিরা প্রতিনিধিত্ব করেন।
প্রশ্ন-৮ : বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আচার অনুষ্ঠানের সাথে গারোদের আচার অনুষ্ঠানের ৫টি পার্থক্য লেখ।
উত্তর : বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আচার অনুষ্ঠানের সাথে গারোদের আচার অনুষ্ঠানের পার্থক্য:
১. বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আচার-অনুষ্ঠানে তেমন বিশেষ কোনো সাজসজ্জা গ্রহণ করা হয় না। গারোরা বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে। যেমন- নারীদের ‘দকবান্দা’।
২. বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে আপন সংস্কৃতি লালন করে, গারোরা বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে বাজনা বাজাতে পছন্দ করে।
৩. বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ কৃষিজমিতে আপন ঐতিহ্যের ধারায়াষ করে, গারোরা কৃষিজমিতে অর্ঘ্য নিবেদন করে।
৪. বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ নবান্ন উৎসব পালন করে, গারোরা সূর্য দেবতাসামজং এর প্রতি নতুন শস্য উৎসর্গ করে।
৫. বাংলাদেশের সাধারণ মানুষেরা বৈশাখী উৎসব ও বিভিন্ন জাতীয় উৎসব পালন করে, গারোদের ঐতিহ্যবাহী উৎসবের নাম ‘ওয়াংগালা’।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।