সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা তোমরা যেহেতু এই আর্টিকেলটি পড়ছ তার মানে আমি ধরেই নিচ্ছ তোমরা স্কলারশিপ কি কেন এবং কিভাবে পাওয়া যায়? সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে তোমরা আগ্রহী!
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো স্কলারশিপ কি? স্কলারশিপ কেন প্রয়োজন? এবং স্কলারশিপ কিভাবে স্কলারশিপ পাওয়া যায়।
এই আর্টিকেলটি আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট সিরিয়াল আঁকারে সাজিয়েছি, যার মাধ্যমে আমরা স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবো।
স্কলারশিপ কি কেন এবং কিভাবে?
স্কলারশিপ কি? বা স্কলারশিপ কাকে বলে?
স্কলারশিপ বলতে মূলত বৃত্তি নিয়ে দেশের বাহিরে পড়াশোনা করতে যাওয়াকে বোঝায়। প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তাদের স্বপ্ন পূরনের লক্ষে স্কলারশিপ নিয়ে দেশের বাহিরে পড়তে যায়।
সারা বিশ্বে অনেক দেশ আছে যারা তাদের নিজস্ব বিভিন্ন উন্নতমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেশের বাহিরের শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অথবা অর্ধেক খরচে স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি দেশের বাহিরে সম্পূর্ণ নিজস্ব খরচে পড়াশোনা করলে তা কোনোভাবেই স্কলারশিপ হিসেবে বিবেচিত হবে না।
স্কলারশিপ কি কেন এবং কিভাবে?
স্কলারশিপ কেন প্রয়োজন?
উচ্চশিক্ষার জন্য যেহেতু অনেকেই বাহিরের দেশকে বিবেচনার প্রথমে রাখে সেহেতু বাহিরের দেশগুলোতে পড়াশোনা করার জন্য অনেক খরচ বহন করতে হয়। আর এ খরচ নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্তদের আওতার বাইরে, কারন যেহেতু বহির্বিশ্বে টাকার তুলনায় তাদের নিজস্ব ডলার, পাউন্ড কিংবা ইউরো এর দাম অনেক বেশি। স্বাভাবিক ভাবে আমরা উদাহরণ হিসেবে ধরতে পারি ডলারকে।
এখন আমি লেখার আগ পর্যন্ত ১ ডলার সমান বর্তমানে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১০৩.৬৩ টাকা।
আর যেহেতু বহির্বিশ্বের ভার্সিটি, কলেজ বা স্কুলের বিভিন্ন খরচ বাংলাদেশের তুলনায় অনেক মানে অনেকটাই বেশি সেহেতু কোন মধ্যবিত্তের পক্ষে ওইসব জায়গায় ছেলে মেয়েদের পড়ানোর খরচ চালানো একেবারেই অসম্ভব।
আমি সামান্য জাপানের ই উদাহরণ দেই, জাপানের সবচেয়ে নামীদামী ভার্সিটি হচ্ছে টোকিও ভার্সিটি যাতে বাংলাদেশের অনেক ছাত্রছাত্রী বর্তমানে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করে। তো এই টোকিও ইউনিভার্সিটির এডমিশন ফি হচ্ছে বাংলাদেশি টাকার ২ লাখ ২ হাজার ৯৬০ টাকা। এবং এই এমাউন্টেই যদি কেউ ইউরোপের দেশগুলোর কোন একটা ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যায় তাহলে তার এডমিশন ফি হবে বাংলাদেশি টাকার ৩০ লাখ ৭৯ হাজার ২০০ টাকা প্রায়।
স্কলারশিপ কি কেন এবং কিভাবে?
এই এতগুলো টাকা দিয়ে এডমিশন করানোর পর আরও তো অনেক খরচ আছে যেমন কোচিং ফি, থাকা-খাওয়া ইত্যাদি তো সব মিলিয়ে খুব কম মানুষই আছে যারা এতো টাকা খরচ করে তাদের বাচ্চাদের পড়াতে পারবে। আর এই জন্যই প্রয়োজন স্কলারশিপ। যদি আপনি ১০০% স্কলারশিপ পেয়ে যান তাহলে উক্ত ইউনিভার্সিটিকে কোন টাকাই আপনার দিতে হবে না। বরং তারাই আপনাকে মাসে মাসে একটা ভালো এমাউন্টের টাকা উপবৃত্তি হিসেবে দিয়ে থাকে।
স্কলারশিপ এর % অনুযায়ী শিক্ষার্থীর টাকা মাপ করা হয়। আশাকরি বুঝতেই পেরেছেন কেন স্কলারশিপ এর প্রয়োজন বা স্কলারশিপ বাহিরে পড়াশোনা করার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
স্কলারশিপ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের দৈনন্দিন আপডেটের সাথেই থাকুনঃ
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশিদের জন্য সেরা ১০টি স্কলারশিপ
স্কলারশিপ কি কেন এবং কিভাবে?
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা এবং স্কলারশিপ কিভাবে পাওয়া যায়?
স্কলারশিপ কিভাবে পাওয়া যায় এই প্রশ্ন এখনকার সময় দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থিরা চায় কিভাবে খুব সহজে বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়া যায়। তবে বিষয়টা এমন সহজ না। স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আপনাকে যোগ্য হতে হবে কারন কোন প্রতিষ্ঠান এমনি এমনি যোগ্যতা ছাড়াই আপনাকে ফ্রিতে পড়াবেনা বা শুধু শুধুই আপনার খরচ বহন করবে না। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি যোগ্যতা আপনার থাকতেই হবে।
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতাঃ
বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য যেসব যোগ্যতা আপনার থেকতেই হবে সেগুলোর বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো। মনযোগ দিয়ে পড়ুন এবং জেনে নিন বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে সকল কিছু।
ভাষা দক্ষতাঃ শুরুতেই আপনার যা লাগবে তা হচ্ছে ভাষার দক্ষতা। যে দেশের স্কলারশিপ নিতে চান সেই দেশের ভাষা জানা অত্যত্ন জরুরী। তবে বিশ্বের আন্তর্জাতিক ল্যাঙ্গুয়েজ যেহেতু ইংরেজী সেহেতু আপনার বাধ্যতামূলক ইংরেজীর উপরে দক্ষতা লাগবেই। এক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন হবে IELTS স্কোর। এটি একটি কোর্স যা আপনাকে করতে হবে এবং এর স্কোর মিনিমাম ৬ রাখতেই হবে তবে ৭-৮ কে স্টান্ডার্ড ধরা হয়ে থাকে।
স্কলারশিপ কি কেন এবং কিভাবে?
কিছু ক্ষেত্রে টোফেল স্কোর ৬০-১০০ পর্যন্ত বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি গুলো চেয়ে থাকে। এছাড়াও কোন কোন ক্ষেত্রে GRE (Graduate Record Examination) এবং GMAT (Graduate Management Admission Test) ইত্যাদির প্রয়োজন হয়ে থাকে।
ভালো ফলাফলঃ যদিও মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজন হয় না তবুও ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চাইলে ভালো ফলাফল করাটা জরুরী। আপনি যে প্রোগ্রাম বা কোর্সের জন্যই বিদেশ যান না কেন আপনার রেজাল্ট যত ভালো হবে, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার ভর্তি এবং স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ তত বেশি হবে।
ক্রিয়েটিভিটিঃ আপনি যখন এপ্লাই করবেন আপনার পছন্দ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য তখন অবশ্যই এপ্লিকেশনে আপনার ক্রিয়েটিভিটির কথা উল্লেখ্য করতে হবে। যেমন ধরেন, আপনি পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা বা কোন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন কিনা তা উল্লেখ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার এপ্লিকেশন বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।
স্কলারশিপ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের দৈনন্দিন আপডেটের সাথেই থাকুনঃ
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশিদের জন্য সেরা ১০টি স্কলারশিপ
স্কলারশিপ কি কেন এবং কিভাবে?
কিভাবে স্কলারশিপ পাওয়া যায়?
স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আপনাকে যা করতে হবে বা যেই কাগজপত্র ইত্যাদি তৈরি রাখতে হবে সেগুলো নিচে আমরা বিস্তারিত দেখব। এসব অবশ্যই রেডি রাখতে চেষ্টা করবেন। এখানের প্রত্যেকটি জিনিস অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর।
কোর্স বা প্রোগ্রাম নির্ধারণ করবঃ
কোর্স বা প্রোগ্রাম নির্ধারণ করার সময় বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখবেন।
আপনি কোন বিষয়ে পড়তে চান? বিশ্বের প্রেক্ষাপটে কোনটার চাহিদা বেশি? কি পড়লে সহজেই লক্ষে পৌঁছানো যাবে? মেয়াদ বা টিউশন ফি কত? সুযোগ সুবিধা কেমন?
এসব প্রশ্ন নিজেকে করুণ এবং উত্তর খোজার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে আপনার কোন পরিচিত ব্যক্তি যদি বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করে থাকে তাদের সাহায্য নিতে পারেন। মনে রাখবেন আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে এটি। কারন এটি নির্বাচনের উপর ভিত্তি করে ঠিক হবে আপনার ভবিষ্যৎ।
ক্রেডিট ট্রান্সফারঃ
আপনি দেশের কোন স্কুল কলেজ বা বিশববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন তা বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো জানতে খুব আগ্রহ প্রকাশ করে। সেক্ষেত্রে দেশে করা বিভিন্ন কোর্স এবং পড়ালেখার কাগজপত্রের কপি আপনাকে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার সময় নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রেরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে যা যা কাগজপত্র পাঠাতে পারেন তার একটা উদাহণ নিচে দেওয়া হলোঃ
- একাডেমিক সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট, প্রত্যয়নপত্র।
- কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় অনুষদ কতৃক সুপারিশনামা।
- কোর্স এসেসমেন্ট এর পদ্ধতি।
- গ্রেডিং সিস্টেম সংক্রান্ত তথ্য।
- পরীক্ষা, রচনা, প্রোজেক্ট ওয়ার্ক ইত্যাদি।
- কোর্সের আউটলাইন বা পাঠ্যতালিকা।
স্কলারশিপ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের দৈনন্দিন আপডেটের সাথেই থাকুনঃ
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশিদের জন্য সেরা ১০টি স্কলারশিপ
স্কলারশিপ কি কেন এবং কিভাবে?
সবকিছু ঠিক ঠাক থাকলে বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে খোজ খবর নিতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন কোন দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমন ফ্যাসিলিটি বা কোন বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সবচেয়ে ভালো হবে আপনার জন্য। আপনি যখন ঠিক করে নিতে পারবেন কোন বিশ্ববিদ্যালয় সেরা আপনার জন্য তখন আবেদন শুরু হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং নিজেকে গুছিয়ে তুলুন। তারপর নির্দিষ্ট সময় আসলে আবেদন করতে পারেন।
আশাকরি বুঝতে পেরেছেন স্কলারশিপ কি? স্কলারশিপ কাকে বলে? স্কলারশিপ কেন প্রয়োজন এবং স্কলারশিপ কিভাবে পাওয়া যায়? এছাড়াও আমি ধারণা দিয়েছি ফুল ফ্রি স্কলারশিপ কি?
স্কলারশিপ কি কেন এবং কিভাবে?
এমনি আরও সুন্দর ও ইনফরমেটিভ আপডেট পেতে অবশ্যই আপনাকে জাগরিক.কম এর সাথেই থাকতে হবে।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
Comments ১