সপ্তম শ্রেণী | বাংলা ২য় | শব্দের শ্রেণি ও বাক্যের শ্রেণি | PDF : সত্তম শ্রেণীর বাংলা ২য় পত্রের ১ম পরিচ্ছেদ হতে শব্দের শ্রেণি ও বাক্যের শ্রেণি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পাবেন এই পোস্টে সুতরাং মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়তে থাকুন ।
শব্দের শ্রেণিবিভাগ:
বাক্যের মধ্যে থাকা শব্দগুলোকে মোট ৮ ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হচ্ছে-
১. বিশেষ্য: যেসব শব্দ দিয়ে ব্যক্তি, প্রাণী, স্থান, বস্তু, ধারণা ও গুণের নাম বোবায়, সেগুলোকে বিশেষ্য বলে। যেমন: নজরুল, বাঘ, ঢাকা, ইট, ভোজন, সততা।
২. সর্বনাম: বিশেষ্যের বদলে বাক্যে যেসব শব্দ বসে, সেগুলোকে সর্বনাম বলে। যেমন: ‘মুনিরা দাবা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তার জন্য স্কুলের সবাই গর্বিত।’ এখানে দ্বিতীয় বাক্যের ‘তার’ প্রথম বাক্যের মুনিরাকে বোবাচ্ছে। তাই ‘তার’ একটি সর্বনাম।
৩. বিশেষণ: যেসব শব্দ দিয়ে বিশেষ্য ও সর্বনামের গুণ, দোষ, সংখ্যা, পরিমাণ, অবস্থা ইত্যাদি বোবায়, তাকে বিশেষণ বলে। যেমন: সুন্দর ফুল, বাজে কথা, পঞ্চাশ টাকা, হাজার সমস্যা, তাজা মাছ।
৪. ক্রিয়া: বাক্যের উদ্দেশ্য বা কর্তা কী করে বা কর্তার কী ঘটে বা হয়, তা নির্দেশ করা হয় যেসব শব্দ দিয়ে সেগুলোকে ক্রিয়া বলে। যেমন: রাজীব খেলছে। বৃষ্টি হয়েছিল।
৫. ক্রিয়াবিশেষণ: যে শব্দ ক্রিয়ার অবস্থা, সময় ইত্যাদি নির্দেশ করে, তাকে ক্রিয়াবিশেষণ বলে। যেমন: ছেলেটি দ্রæত দৌড়ায়। মেয়েটি সকালে গান করে।
৬. অনুসর্গ: যেসব শব্দ কোনো শব্দের পরে বসে শব্দটিকে বাক্যের সাথে সম্পর্কিত করে, সেসব শব্দকে অনুসর্গ বলে। যেমন: সে কাজ ছাড়া কিছুই বোবে না। কোন পর্যন্ত পড়েছ?
৭. যোজক: শব্দ বা বাক্যের অংশকে যুক্ত করে যেসব শন্দ, সেগুলোকে যোজক বলে। যেমন: লাল বা নীল কলমটি আনো। জলদি দোকানে যাও এবং পাউরুটি কিনে আনো।
৮. আবেগ: মনের নানা ভাব বা আবগেকে প্রকাশ করা হয় যেসব শব্দ দিয়ে সেগুলোকে আবেগ শব্দ বলা হয়। যেমন: বাহ্! চমৎকার লিখেছ। উফ, আর পারি না!
শ্রেণি অনুযায়ী শব্দ আলাদা করি (মূল বইয়ের ২৭ নম্বর পৃষ্ঠা)
নিচের নমুনা থেকে চিহ্নিত করা বিশেষ্য, সর্বনাম, বিশেষণ, ক্রিয়াবিশেষণ, অনুসর্গ, যোজক ও আবেগ-এই আট শ্রেণির শব্দ নিচের ছকে লেখো।
বাংলাদেশের একেবারে দক্ষিণের জেলা কক্সবাজার। পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য এখানে রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র-সৈকত। প্রতিদিন অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক এই সৈকতে বেড়াতে আসেন। আর এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বলেন, “বাহ! কী সুন্দর!”
কক্সবাজার সমুদ্র-সৈকতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক এর ঢেউ। সবসময় বড়ো বড়ো ঢেউ তৈরি হয় সাগরে। আর সেই ঢেউ তীরে এসে জোরে জোরে আছড়ে পড়ে। অনেক মানুষ গা ভেজাতে সৈকতে নামে। তাদের কেউ কেউ ঢেউ দেখে আনন্দে লাফ দেয়। অনেকেই ভেজা বালি দিয়ে ঘর বানায়। ঢেউ এসে সেই ঘর ভেঙে দেয়। তবু তারা হাসিমুখে আবার ঘর বানাতে থাকে।
কক্সবাজার নামটি এসেছে ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের নাম থেকে। হিরাম কক্স ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন অফিসার। এর আগে কক্সবাজারের নাম ছিল পালংকি। হিরাম কক্স আঠারো শতকের শেষ দিকে পালংকির পরিচালক নিযুক্ত হন। তাঁর মৃত্যুর পর একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয়, যার নাম দেওয়া হয় কক্স সাহেবের বাজার।
পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে গড়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন সএখানে কয়েকটি মোটেল নির্মাণ করেছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে অনেক হোটেল তৈরি হয়েছে। সৈকতের কাছে ছোটো-বড়ো অনেক হোটেল আছে। পর্যটকদের জন্য এখানে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের দোকান। দোকানগুলোতে বাহারি জিনিসপত্র পাওয়া যায়।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে হিমছড়ি পর্যটন কেন্দ্র। পাহাড়ের কোল ঘেষে হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে যায়। কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি যাওয়ার পথটি সুন্দর ও রোমাঞ্চকর। কক্সবাজার ও আশেপাশের পর্যটন স্থানগুলোতে ঘোরার সময়ে কেবলই মনে হয়, আহা! কত সুন্দর আর বৈচিত্র্যময় আমাদের বাংলাদেশ।
বিশেষ্য |
সর্বনাম |
বিশেষণ |
ক্রিয়া |
ক্রিয়াবিশেষণ |
অনুসর্গ |
যোজক |
আবেগ |
বাক্যের শ্রেণি
ভাবপ্রকাশের ধরন অনুযায়ী বাক্যকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হচ্ছে-
১. বিবৃতিবাচক বাক্য: সাধারণভাবে কোনো বিবরণ প্রকাশ পায় যেসব বাক্যে, সেগুলোকে বিবৃতিবাচক বাক্য বলে। যেমন: একটি পাখি আমাদের কীঠাল গাছে বাসা বেঁখেছে।
২. প্রশ্নবাচক বাক্য: বক্তা কারও কাছ থেকে কিছু জানার জন্য যে ধরনের বাক্য বলে, সেগুলো প্রশ্নবাচক বাক্য। যেমন: কোন পাখি তোমাদের কাঁঠাল গাছে বাসা বেধেছে?
৩. অনুজ্ঞাবাচক বাক্য: আদেশ, নিষেধ, অনুরোধ, প্রার্থনা ইত্যাদি বোঝাতে অনুজ্ঞাবাচক বাক্য হয়। যেমন: কাঁঠাল গাছে একটি হাঁড়ি বেঁধে দাও।
৪. আবেগবাচক বাক্য: কোনো কিছু দেখে বা শুনে অবাক হয়ে যে ধরনের বাক্য তৈরি হয়, তাকে আবেগবাচক বাক্য বলে। যেমন: কী সুন্দর দেখতে সেই পাখিটা!
শ্রেণি অনুযায়ী বাক্য আলাদা করি (মূল বইয়ের ৩০ নম্বর পৃষ্ঠা)
নিচের নমুনা থেকে বিবৃতিবাচক, প্রশ্নবাচক, অনুজ্ঞাবাচক ও আবেগবাচক-এই চার রকমের বাক্য নিচের ছকে লেখো।
বিকাল সাড়ে চারটায় সবার মাঠে আসার কথা। আজ কোনো খেলা হবে না, জরুরি সভা হবে। ইমনদের পুরাতন ভিটায় একটা পোড়োবাড়ি আছে। সেখানে কয়েকদিন ধরে কিছু অপরিচিত লোকের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। কামাল বলছিল, ‘ওখানে গুপ্তধন থাকতে পারে।’ নিলয় খানিক কৌতুহলী হয়ে ইমনের দিকে তাকিয়ে বলেছিল, ‘কী রে ইমন, ওই বাড়িতে গুপ্তধন আছে নাকি?’ ইমন অবাক হয়ে বলেছিল, ‘তাই নাকি! আমি তো জানি না।’ আসলেই কোনো গুপ্তধন আছে কি না, তা যাচাই করার জন্য অভিযানের প্রস্তাব দিয়েছিল কামাল। বলেছিল, ‘চল, আমরাই খোঁজ করে দেখি। গুপ্তধন থাকলে ঠিক খুঁজে পাব’ ইমনদের পোড়োবাড়িতে কবে এবং কীভাবে অভিযান চালানো হবে, তা নিয়ে আলোচনার জন্যই আজকের সভা।
আমার অবশ্য খানিক ভয় ভয় করছে। কারণ, অপরিচিত লোকগুলো যদি ঠিক গুপ্তধন খুজতে আসে! আর যদি আমাদের সাথে ওদের দেখা হয়ে যায়! তবে ঠিক তারা প্রশ্ন করবে, ‘এখানে কী করছো তোমরা?’ তখন আমরা কী উত্তর দেবো? উত্তর ওদের পছন্দ না হলে বলতে পারে, ‘এখানে আর আসবে না। যাও, চলে যাও।’ তাছাড়া লোকগুলো হয়তো গুপ্তধন খুঁজতে আসেনি, অন্য কাজে এসেছে। তবু সেখানে যেতে আমার ভয় করবে। যে পুরাতন বাড়ি! বাড়ির চারপাশে কত বড়ো বড়ো গাছ! দিনের বেলাতেও বাড়ির ভিতরটা অন্ধকার হয়ে থাকে। সেখানে এমনিতেই সহজে কেউ ঢুকতে চায় না।
১. বিবৃতিবাচক বাক্য: |
২. প্রশ্নবাচক বাক্য: |
৩. অনুজ্ঞাবাচক বাক্য: |
৪. আবেগবাচক বাক্য: |
২য় পরিচ্ছেদ- শব্দের গঠন
নমুনা ১
রেলগাড়ি চলে রেললাইনের উপর দিয়ে। দেশে-বিদেশে যত রকম যানবাহন আছে, তার মধ্যে রেলগাড়ি সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয়। ছেলেবুড়ো সবাই এর কু-ঝিকবিক শব্দ শুনে মুগ্ধ হয়। নদী-নালা, পাহাড়- পর্বতের পাশ দিয়ে সাপের মতো এঁকেবেঁকে রেলগাড়ি ছুটে চলে। গাড়ির জানালা দিয়ে মুখ বাড়ালে মাঝে মাঝে দেখা যেতে পারে কুঁড়েঘর, ধানখেত, নীলাকাশ।
বাংলাদেশের রেলগাড়িতে অনেক সময়ে হকার দেখা যায়। তাঁরা ডিমসিদ্ধ, ঝালমুড়ি, চিড়াভাজা-সহ আরও কত কিছু যে বিক্রি করেন! অনেকে পত্র-পত্রিকা বিক্রির জন্যও রেলে ওঠেন। একবার একতারা হাতে একজনকে রেলগাড়িতে উঠতে দেখেছিলাম। তিনি পর্লিগীতি শুনিয়ে সবাইকে মুহ্ধ করেছিলেন। তাঁর গান শুনে সবার সাথে আমিও হাততালি দিয়েছিলাম।
রেল-ভ্রমণের আনন্দ অনেক। রেলগাড়িতে না উঠলে তা ঠিক বোঝা যাবে না।
নমুনা-১ থেকে আলাদা অর্থযুক্ত শব্দগুলো নিচের ছকে লেখা হল।
সমাস কী?
সমাস শব্দগঠনের অন্যতম একটি প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় নতুন শব্দ তৈরি করা যায়। যেসব শব্দের দুটো অংশই অর্থযুক্ত তাকে সমাস-সাধিত শব্দ বলে। যেমন-
সমাস যোগ | সমাস-সাধিত শব্দ | সমাস যোগ | সমাস সাধিত শব্দ |
ভাই + বোন | = ভাই-বোন | আসা + যাওয়া | =আসা-যাওয়া |
ভালো + মন্দ | = ভালোমন্দ | আলু + সিদ্ধ | = আলুসিদ্ধ |
টাক + মাথা | = টাকমাথা | চৌ+ রাস্তা | =চৌরাস্তা |
হাত + ঘড়ি | = হাতঘড়ি | কাজল + কালো | = কাজলকালো |
সমাস-সাধিত শব্দ তৈরি করি
বাম কলাম | ডান কলাম | সমাস-সাধিত শব্দ |
ফুল | বাগান | ফুলবাগান |
ফল | গাছ | ফলগাছ |
গোলাপ | জল | গোলাপজল |
জীব | বিজ্ঞান | জীববিজ্ঞান |
প্রাণী | জগৎ | প্রাণীজগৎ |
বই | খাতা | বইখাতা |
পাঠ্য | পুস্তক | পাঠ্যপুস্তক |
ঠেলা | গাড়ি | ঠেলাগাড়ি |
সবজি | ||
আলু | ভর্তা | আলুভর্তা |
অনুচ্ছেদ লিখে সমাস-সাধিত শব্দ খুঁজি
একদেশে ছিল এক রাজা। তার নাম বাহুবলী। তিনি ছিলেন শান্তিপ্রিয় এবং প্রজাদরদী একজন রাজা। তিনি রাজ্যের প্রজাদের অনেক ভালোবাসতেন। প্রজাদের যেকোন সমস্যা তিনি রাজদরবারে সমাধান করতেন। মানুষের উপকারকে তিনি দেশসেবার মত মহৎ কাজ বলে মনে করতেন। তিনি যেমনই ছিলেন দানবীর, তেমনই ছিলেন মহানুভব।
রাজ্যাভিষেকের অল্প সময়ের মধ্যেই তার খ্যাতি রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। প্রজারাও তাদের মহারাজকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন। যার কারণে রাজ্যের যেকোন প্রয়োজনে রাজা বাহুবলী প্রজাদের পাশে পেতেন। একবার রাজ্যে বহিশত্রুর আক্রমণ হলে রাজা এবং তার প্রজারা মিলে দেশরক্ষায় শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। এতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রচুর প্রাণহানি এবং সম্পদহানী ঘটে। কিন্তু তারপরেও রাজা বাহুবলীর যোগ্য নেতৃত্ব এবং প্রজাদের অসীম সাহসিকতায় তারা জয়লাভ করেন। ফলে তাদের রাজ্য শত্রুমুক্ত হয়।
বাম কলাম ডান কলাম সমাস-সাধিত শব্দ
শান্তি + প্রিয় শান্তিপ্রিয়
প্রজা + দরদী প্রজাদরদী
রাজ + দরবার রাজদরবার
দেশ + সেবা দেশসেবা
দান + বীর দানবীর
রাজ্য + অভিষেক রাজ্যাভিষেক
রাজ্য + জুড়ে রাজ্যজুড়ে
মহা + রাজ মহারাজ
বহি + শত্রু বহিশত্রু
দেশ + রক্ষা দেশরক্ষা
ক্ষয় + ক্ষতি ক্ষয়ক্ষতি
প্রাণ + হানি প্রাণহানি
সম্পদ + হানী সম্পদহানী
জয় + লাভ জয়লাভ
শত্রু + মুক্ত শত্রুমুক্ত
নমুনা-২
উপহার পেতে প্রত্যেকের ভালো লাগে। তবে প্রতিদিন তা পাওয়া যায় না। বিশেষ বিশেষ দিনে আমরা উপহার পাই। নিঃসন্দেহে এর মধ্যে নিখাদ আনন্দ আছে। অচেনা অজানা লোকের উপহার সাধারণত আমরা গ্রহণ করি না। জয়-পরাজয়কে সামনে রেখে যে উপহার দেওয়া হয়, তাকে বলে পুরস্কার। পুরস্কার পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় বিশেষ অবস্থান পেতে হয়। বিশেষ কোনো সুকীর্তি বা অবদানের জন্যও মানুষকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার বা উপহার পাওয়ার ব্যাপারটি অবশ্যই সম্মানের এবং উপভোগ করার মতো। কোনো কোনো উপহার ও পুরস্কার মানুষ আজীবন মনে রাখে।
নমুনা-২ থেকে অর্থযুক্ত শব্দগুলো নিচের ছকে লেখা হল।
নিঃসন্দেহ নিখাদ অচেনা
অজানা পরাজয় অবস্থান
সুকীতি অবদান উপভোগ
আজীবন
উপসর্গ
যেসব শব্দের প্রথম অংশ সাধারণত কোনো অর্থ প্রকাশ করে না, কিন্তু দ্বিতীয় অংশের সুনির্দিষ্ট অর্থ থাকে, সেসব শব্দকে বলা হয় উপসর্গ-সাধিত শব্দ। কোনো শব্দের আগে উপসর্গ যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠিত হয়। যেমন, বেদখল শব্দের “বে” একটি উপসর্গ। যেমন-
উপসর্গ যোগ উপসর্গ-সাধিত শব্দ উপসর্গ যোগ উপসর্গ-সাধিত শব্দ
অ+ গভীর | অগভীর | অতি + মারি | অতিমারি |
অধি + বাসী | অধিবাসী | অনা + বৃষ্টি | অনাবৃষ্টি |
অনু + রূপ | অনুরুপ | অপ + কর্ম | অপকর্ম |
অব + রোধ | অবরোধ | অভি + জাত | অভিজাত |
আ + জীবন | আজীবন | উৎ + ক্ষেপণ | উৎক্ষেপণ |
উপ + গ্রহ | উপগ্রহ | কদ + বেল | কদবেল |
উপসর্গ দিয়ে শব্দ তৈরি করি
বাম কলাম | ডান কলাম | উপসর্গ-সাধিত শব্দ |
বি | কাল | বিকাল |
স | ||
কু | বৃত্তি | কুবৃত্তি |
সু | ফল | সুফল |
বে | খেয়াল | বেখেয়াল |
অ | শেষ | অশেষ |
আ | কার | আকার |
পরা | জয় | পরাজয় |
প্র | জন্ম | প্রজন্ম |
উপ | গ্রহ | উপযোগ |
অনুচ্ছেদ লিখে উপসর্গ-সাধিত শব্দ খুঁজি
মীনা খুবই মেধাবী একজন ছাত্রী। সে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ভালো ফলাফল লাভের জন্য সে প্রতিদিন অনেক পরিশ্রম করে। সে প্রতিদিন অন্তত পাঁচ ঘণ্টা সময় পড়ার পেছনে ব্যয় করে। তার মতে মানুষের অসাধ্য বলতে কিছুই নেই। সে জানে সুফল পেতে হলে আগ্রহ নিয়ে কাজ করতে হবে। তাই সে পরিশ্রমের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করতে চায়। তার ছোট ভাই রাজু অনেক অলস। সে মেধাবী হলেও সফল হওয়ার কোন প্রচেষ্টা তার মধ্যে নেই। সে তার পড়াশোনার প্রতি বেখেয়াল। তাদের বাবা চান, তার অবর্তমানে রাজু-মীনা তার পরিবারকে দেখে রাখবে। তাই তিনি তার দুই সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করে তুলতে চান।
বাম কলাম | ডান কলাম | উপসর্গ-সাধিত শব্দ |
অ | সাধ্য | অসাধ্য |
সু | ফল | সুফল |
আ | গ্রহ | আগ্রহ |
প্র | চেষ্টা | প্রচেষ্টা |
বে | খেয়াল | বেখেয়াল |
অ | বর্তমানে | অবর্তমানে |
নমুনা-৩
খেলার মাঠে আমরা রোজ খেলতে যাই। সেখানে মাঝে মাঝে এক চানাঢুরওয়ালাকে দেখা যায়। তিনি চানাচুর বিক্রি করতে আসেন। লোকটার পরনে থাকে রঙিন জামা, তাতে অনেক রঙের ছোপ। জামাটা আলখেল্লার মতো লম্বা আর ঢোলা। তবে জামাটার হাতা খাটো, তাই তার হাত দেখা যায়। বেঢপ আকারের হলেও সেই জামাটা তার গায়ে দারুণ মানানসই লাগে। স্কুল গেটে দাঁড়ালে নিশ্চয় তার কাছ থেকে ছাত্র আর ছাত্রীরা চানাচুর কিনত। তবে, কখনো তাকে স্কুলের গেটে আমি দাঁড়াতে দেখিনি।
ওই চানাচুরওয়ালাকে নিয়ে একটা মজার ঘটনা বলি। একদিন তীর সামনে ছেঁড়া জামা পরা একটি ছেলে এসে দাঁড়াল। ছেলেটির বয়স সাত-আটের বেশি হবে না। তার হাতে একটা ভাঙা খেলনা। ছেলেটি সেই খেলনাটি দেখিয়ে চানাটুরওয়ালাকে বলল, ‘আমার কাছে পয়সা নেই। এই খেলনা নিয়ে আমাকে চানাচুর দেবেন?’ এই বলে ছেলেটি তার হাতের খেলনাটি চানাটুরওয়ালার দিকে এগিয়ে দিলো। আমি দেখলাম, খেলনাটি হয়তো একসময়ে দামি ছিল, তবে এখন আর সেটা কেউ দাম দিয়ে কিনবে না। চানাুরওয়ালা ছেলেটির কথা শুনে মধুর হাসি হাসল। চানাচুর বানিয়ে ঠোঙায় করে ছেলেটির হাতে দিলেন। তারপর বললেন, ‘তুমি তো বেশ বুদ্ধিমান!’
আমার কাছে চানাচুরওয়ালাকে দয়ালু মনে হলো। লোকটির সরলতায় আমি মুগ্ধ হলাম।
নমুনা-৩ থেকে অর্থযুক্ত শব্দগুলো নিচের ছকে লেখা হল।
প্রত্যয় কী?
যেসব শব্দের প্রথম অংশ অর্থযুক্ত এবং দ্বিতীয় অংশ অর্থহীন, সেসব শব্দকে বলা হয় প্রত্যয়-সাধিত শব্দ। প্রত্যয় শব্দগঠনের একটি প্রক্রিয়া। প্রত্যয়ের নিজের কোনো অর্থ নেই। অর্থযুক্ত কোনো শব্দের পরে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠিত হয়। যেমন, মধু + র = মধুর। এখানে ‘র’ যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ তৈরি হয়েছে; তাই ‘র’একটি প্রত্যয়। কিন্তু বাড়ি + র – বাড়ির। এখানে ‘র’ যোগ হয়ে নতুন কোনো শব্দ তৈরি হয়নি; তাই এই ‘র’ কোনো প্রত্যয় নয়। উদাহরণ-
মূল শব্দ | প্রত্যয় | প্রত্যয়-সাধিত শব্দ |
পড় | অ | পড়ো |
পঠ | অক | পাঠক |
দাপ | অট | দাপট |
খেল | অনা | খেলনা |
মান | অনীয় | মাননীয় |
উড় | অন্ত | উড়ন্ত |
সিল্ | আই | সেলাই |
বাঘ | আ | বাঘা |
ঢাকা | আই | ঢাকাই |
- English | Playing With the Words Questions Answer | Chapter 2
- Class 7 | English | A Good Reader Questions Answer | Chapter 6
- Class 7 | English | IF Questions Answer | Chapter 3
- Class: 7 | English | The Frog and the Ox Questions Answers | Unit 4
প্রত্যয় দিয়ে শব্দ তৈরি করি
বাম কলাম | ডান কলাম | প্রত্যয়-সাধিত শব্দ |
ঢাকা | আই | ঢাকাই |
ফুল | ওয়ালা | ফুলওয়ালা |
র্ক | অনীয় | করণীয় |
দয়া | বান | দয়াবান |
কলম | দানি | কলমদানি |
দরিদ্র | তা | দরিদ্রতা |
গুরু | ত্ব | গুরুত্ব |
বুদ্ধি | মান | বুদ্ধিমান |
চল্ | আ | চলা |
পাহারা | দার | পাহারাদার |
অনুচ্ছেদ লিখে প্রত্যয়-সাধিত শব্দ খুঁজি
গতবছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠে ১লা জানুয়ারি আমি প্রথম মাধ্যমিক স্কুলে যাই। এটিই ছিল আমার মাধ্যমিক স্কুল জীবনের প্রথম দিন। স্কুলে প্রবেশের গেটেই দারোয়ানের সাথে আমার দেখা হয়। তিনি আমাকে শুভেচ্ছা জানান। এরপর আমি শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করলাম। আমি দেখতে পেলাম সবাই নতুন শিক্ষার্থী। এদের কাউকেই আমি চিনি না। প্রথমদিন শ্রেণিশিক্ষক পরিচয়পর্ব শেষে অল্পকিছু পড়া দিলেন। এরপর থেকে আমি দৈনিক স্কুলে যেতাম। স্কুলে আমার অনেকের সাথে বন্ধুত্ব হল। আমার বন্ধুরা বেশ দয়াবান ও বুদ্ধিমান। আমাদের স্কুলের মধ্যে রয়েছে বড় একটি বেলিফুল গাছ। যার সৌন্দর্য এবং গন্ধ আমাকে মাতাল করে তোলে। এখন আমি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। ফেলে আসা একটি বছর আমার স্মৃতিতে মধুর সময় হিসেবে জমা রয়েছে। আমি আমার স্কুলকে অনেক ভালবাসি।
বাম কলাম | ডান কলাম | প্রত্যয়-সাধিত শব্দ |
দারো | আন | দারোয়ান |
পড়্ | আ | পড়া |
দিন | ইক | দৈনিক |
বন্ধু | ত্ব | বন্ধুত্ব |
দয়া | বান | দয়াবান |
বুদ্ধি | মান | বুদ্ধিমান |
সুন্দর | য | সৌন্দর্য |
মাত্ | আল | মাতাল |
মধু | র | মধুর |
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।