রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি): ২য় অধ্যায় অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর সাজেশন সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনার্স ১ম বর্ষের যেকোন বিভাগের সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
অনার্স প্রথম বর্ষ
বিষয়ঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি
অধ্যায় ২ – রাষ্ট্র( State)
বিষয় কোডঃ ২১১৯০৯
খ-বিভাগঃ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১) রাষ্ট্রের সংজ্ঞা দাও।
উত্তরঃ ভূমিকাঃ রাষ্ট্র সমাজের একটি শক্তিশালী বাহন, যার মাধ্যমে সমাজ সঠিক ও সুশৃঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। ব্যক্তি মাত্রই রাষ্ট্রের সদস্য। কেউ রাষ্ট্র ব্যতীত বাস করতে পারে না। অনেকে রাষ্ট্রকে আধুনিক সমাজ সৌধের চূড়া বলে অভিহিত করেছেন। রাষ্ট্রের মাধ্যমে মানুষ নিজেদের জীবন নিয়ন্ত্রিত করে। সুতরাং বলা যায় যে, রাষ্ট্র একটি অত্যাবশ্যক সংগঠন।
রাষ্ট্রঃ রাষ্ট্র বলতে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষে প্রতিষ্ঠিত এক আবশ্যিক রাজনৈতিক সংগঠনকে বুঝায়। রাষ্ট্র গঠনের জন্য চারটি উপাদান আবশ্যক। এগুলো হলো জনসমষ্টি, নির্দিষ্ট ভূখন্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব। অতএব বলা যায়, জনসমষ্টি, সরকার, নির্দিষ্ট ভূখন্ড ও সার্বভৌমত্বের সমন্বয়ে গঠিত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্র বলে।
প্রামান্য সংজ্ঞাঃ ম্যাকাইভারের মতে, “রাষ্ট্র এমন একটি সংঘ যা সরকারের ঘোষিত আইন অনুসারে কার্য করে। সরকার আইন ঘোষণা করার এবং তা পালন করার শক্তির অধিকারী। ঐ শক্তির সাহায্যে সরকার নির্দিষ্ট ভূখন্ডের মধ্যে সামাজিক শৃংঙ্খলার বাহ্যিক ও সর্বজনীন অবস্থা বজায় রাখে।“
- আরো পড়ুন:- (PDF) অধ্যায়৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অধ্যায়৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(PDF)
- আরো পড়ুন:- (PDF) অধ্যায়৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- (PDF) অধ্যায় ৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অধ্যায় ৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
- আরো পড়ুন:- অধ্যায় ৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরPDF
- আরো পড়ুন:- (ফ্রি পিডিএফ) অধ্যায়২: লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অধ্যায়২: লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর ফ্রি পিডিএফ
- আরো পড়ুন:- অধ্যায়২: লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর ৪টি ফ্রি পিডিএফ
এরিস্টটলের মতে, “রাষ্ট্র এমন একটি সংঘ যা সরকারের ঘোষিত আইন অনুসারে কার্য করে। সরকার আইন ঘোষণা করার এবং তা পালন করার শক্তির অধিকারী। ঐ শক্তির সাহায্যে সরকার নির্দিষ্ট ভূখন্ডের মধ্যে সামাজিক শৃঙ্খলার বাহ্যিক ও সর্বজনীন অবস্থা বজায় রাখে।“
উড্রো উইলসনের মতে, “রাষ্ট্র হলো কোনো নির্দিষ্ট ভূখন্ডে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠিত এক জনসমষ্টি।“
অধ্যাপক ওয়াসবি বলেন, “রাষ্ট্র হলো কোনো ভূখন্ডে বসবাসকারী এমন জনসমষ্টি যার সুসংগঠিত সরকার রয়েছে এবং যা অন্যান্য রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণমুক্ত।“
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ব্লুন্টসলি বলেন, “রাষ্ট্র হলো কোনো ভূখন্ডে বসবাসকারী এমন জনসমষ্টি যার সুসংগঠিত সরকার রয়েছে এবং যা অন্যান্য রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণমুক্ত।“
অগবার্ন ও নিমকফ বলেন, “রাষ্ট্র হলো একটি সংগঠন যা নির্দিষ্ট ভূখন্ডে সার্বভৌম সরকার কর্তিক শাসিত।“
সুতরাং যে রাজনৈতিক সংগঠনের নির্দিষ্ট ভূখন্ড, সুসংগঠিত সরকার, সার্বভৌম আধিপত্য এবং স্থায়ীভাবে বসবাসকারী জনসমষ্টি রয়েছে তাকে রাষ্ট্র বলে।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে মানুষ যতগুলো সংঘ সৃষ্টি করেছে তার মধ্যে রাষ্ট্র অন্যতম।
আর রাষ্ট্র গঠনে ৪টি উপাদান সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্র গঠনে জনসমষ্টি, ভূখন্ড এবং সরকার হলেই চলবে না, সার্বভৌম ক্ষমতা অবশ্যই থাকতে হবে। তা না হলে রাষ্ট্র, জনপদ, উপনিবেশ বা অধীন রাজ্য বলে পরিণত হবে। সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রিয় উপাদানগুলোর অন্যতম। এটি রাষ্ট্রদেহের প্রাণতুল্য।
২) রাষ্ট্রের লক্ষ ও উদ্দেশ্য আলোচনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকাঃ গ্রিক চিন্তাবিদ প্লেটো এবং এরিস্টটল রাষ্ট্রকে শ্রেষ্ঠতম মানবীয় সংগঠন বলে বর্ণনা করেছেন। রাষ্ট্রকে ঘিরেই সভ্যতার উত্থান হয়েছে। রাষ্ট্র বলতে একটি সংগঠনকে নির্দেশ করে যেখানে জীবনের নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য একটি সার্বভৌম ক্ষমতা থাকে।
কালের বিবর্তনের ফলে মানুষের এ প্রয়োজনীয় থেকেই রাষ্ট্র নামক রাজনৈতিক সংগঠননের জন্ম হয়। জনগণের সার্বিক কল্যাণ সাধনই রাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্য।
রাষ্ট্রের লক্ষ উদ্দেশ্যঃ রাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর ধারণা নিম্নে প্রদত্ত হলোঃ
প্লেটো ও এরিস্টটলের অভিমত অনুসারেঃ প্লেটো, এরিস্টটল প্রমুখ গ্রিক দার্শনিকগণ মনে করেন, রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য কেবল জনগণের জীবন রক্ষা করা নয় বরং মহৎ ও সুন্দর জীবন প্রতিষ্ঠাকে নিশ্চিত করা।
তারা মনে করেন, মানবজীবনের সমাজিক, নৈতিক ও ধর্মীয় জীবনের পূর্ণতা সৃষ্টির লক্ষে রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রের গুণাবলি বর্ণনা করে রাষ্ট্রকে তারা চরম লক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করতে সচেষ্ট হয়েছেন।
হবস ও লকের ধারণাঃ রাষ্ট্রচিন্তাবিদ হবসের মতে, “রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য হলো শান্তিশৃঙ্খলা ও সম্পত্তির সংরক্ষণ।“ জন লকের মতে, “মানবসমাজের মঙ্ঘল সাধন করা আধুনিক রাষ্ট্রের প্রধান উদ্দেশ্য হলেও সম্পত্তির সংরক্ষণ করাই হলো এর চরমতর উদ্দেশ্য।“ তিনি আরও বলেন “রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য হলো মানবসমাজের সর্বাধিক কল্যাণ সাধন করা।“
অ্যাডাম স্মিথের অভিমতঃ অ্যাডাম স্মিথ রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন। যথাঃ
১. প্রতিরক্ষাঃ সমাজে অভ্যন্তরীন শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং বহিঃশক্তির আক্রমন থেকে দেশে রক্ষা করা।
২. নাগরিকদের সুরক্ষাঃ দেশের সকল নাগরিককে যেকোনো ধরণের অন্যায়, অত্যাচার থেকে সুরক্ষা করা।
৩. উন্নয়নমূলক কাজঃ দেশের নাগরিকের জন্য কল্যাণকর প্রতিষ্ঠান তৈরি করা এবং উন্নয়নমূলক কাজ করা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী উইলোবির ধারনাঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী উইলোবির মতে, রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য তিনটি যথাঃ
১. প্রাথমিক লক্ষঃ রাষ্ট্রে শান্তিশৃঙ্খলা সংরক্ষণ করা ও বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহত করা।
২. মাধ্যমিক লক্ষঃ ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশ এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা সংরক্ষন করা।
৩. চরম লক্ষঃ সকলের নৈতিক, আর্থিক ও মানবিক উৎকর্ষ সাধন করা।
গার্নারের ধারনাঃ তিনি বলেন, রাষ্ট্রের প্রধানত তিনটি উদ্দেশ্য আছে যথাঃ
১. শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখাঃ দেশ আইনের শাসনের মাধ্যমে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখবে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদান করবে।
২. উন্নয়নমূলক কাজঃ দেশের নাগরিকদের কথা চিন্তা করে রাষ্ট্র অবশ্যই বিভিন্ন ধরণের উন্নয়নমূলক কাজ সংগঠিত করবে। শিক্ষা, বস্র, বাসস্থান, চিকিৎসার ক্ষেত্রে অভৃতপূর্ব উন্নয়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।
৩. পররাষ্ট্রবিষয়ক কাজঃ জাতীয়তাবাদের সাথে আন্তর্জাতিকতার সম্পর্কে প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থার গ্রহণ করবে অর্থাৎ বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে সহযোগিতা ও সহানুভূতি প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বের শান্তির পথ রচনা করবে।
আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতামতঃ আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতামত বিশ্লেষন করলে রাষ্ট্রের ৩ টি লক্ষ ও উদ্দেশ্য পাওয়া যায়। যথাঃ ১. রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সংহতি রক্ষা, ২. ব্যক্তিস্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব বিকাশের পূর্ণ সুযোগ দান করা ও ৩. জাতীয় অগ্রগতির নিরিখে আন্তর্জাতিক শান্তি ও সভ্যতা বিকাশে সহায়তা করা।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, আধুনিক রাষ্ট্র নানামুখী লক্ষ ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে মাধ্যমে নাগরিকদের সাধারণ জীবন উন্নয়ন করার নিমিত্তেই নানাবিধ কার্যসম্পাদনা করে থাকে।
আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে রূপান্তর হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তাই বর্তমানে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
৩) আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যাবলি আলোচনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকাঃ মনুষ্য সৃষ্ট সকল সংগঠনের মধ্যে রাষ্ট্র অন্যতম সংগঠন। রাষ্ট্র এমন একটি সংগঠন যেটিকে বাদ দিয়ে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনা করা সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব।
রাষ্ট্রের মাধ্যমেই একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। আধুনিক সব রাষ্ট্রই নাগরিকদের কথা চিন্তা করে সেরূপ কার্যাবলি নির্ধারণ করে যাতে তারা জনশক্তিতে রূপান্তর হতে পারে।
আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যাবলিঃ আধুনিক রাষ্ট্রের কার্যাবলিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যথাঃ ক. অপরিহার্য কার্যাবলি ও খ. ঐচ্ছিক কার্যাবলি। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো –
১. দেশরক্ষাসংক্রান্ত কার্যাবলিঃ বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর গঠন করা রাষ্ট্রের অন্যতম অপরিহার্য কাজ। দেশরক্ষার জন্য রাষ্ট্র স্থলবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী গঠন ও পরিচালনা করে থাকে।
২. পররাষ্ট্রসংক্রান্ত কার্যাবলিঃ রাষ্ট্রের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য প্রতিবেশী ও দূরের রাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন। বিভিন্ন ধরণের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, সামাজিক চুক্তি, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মৈত্রী ইত্যাদি পররাষ্ট্র সংক্রান্ত কাজ রাষ্ট্র সম্পাদন করে।
৩. প্রশাসনসংক্রান্ত কার্যাবলিঃ রাষ্ট্রের অপরিহার্য কার্যাবলির মধ্যে প্রধান কাজ হলো প্রশাসন পরিচালনা সংক্রান্ত কার্যাবলি সম্পাদন করা।
সরকারি কর্মকর্তাগণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগ্রহণ ও সরকারি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। তাছাড়া সঠিকভাবে শাসনকার্য পরিচালনার জন্য সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন, কর্মচারী নিয়োগ করা এবং তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের অন্যতম কাজ।
৪. উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণঃ নাগরিকদের জীবনমান উন্নত করার জন্য সরকার এবং রাষ্ট্র বিভিন্ন ধরণের উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করে এবং তা সুষ্ঠভাবে পরিচালনার মাধ্যমে নাগরিক জীবন উন্নয়নসাধন করে।
খ. ঐচ্ছিক কার্যাবলিঃ নিম্নে আধুনিক রাষ্ট্রের ঐচ্ছিক কার্যাবলি আলোচনা করা হলো –
১. শিক্ষামূলক কার্যাবলিঃ একটি রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সেই রাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র কতৃক বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়। অবৈতনিক শিক্ষা এবং শিক্ষার উপকরণ দেওয়া হয়ে থাকে।
২. জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত কার্যাবলিঃ প্রত্যেক নাগরিকদের সুস্বাস্থ্যের লক্ষে রাষ্ট্র হাসপাতাল, মাতৃসদন ইত্যাদি নির্মাণ করে থাকে। এতে জনগণের ওষুধপত্র, ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ ইত্যাদি বিষয়গুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে প্রয়াস পায়।
৩. শ্রমিকদের কল্যাণসংক্রান্ত কার্যাবলিঃ রাষ্ট্র তার অভ্যন্তরীন শ্রমিকদের সুবিধার্থে উপযুক্ত বেতন, ভাতা, বাসস্থান, চিকিৎসা প্রভৃতির মতো জরুরী বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে করে থাকে। শ্রমিক স্বার্থরক্ষার জন্য ‘শ্রমিক সংঘ’ স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, আধুনিক রাষ্ট্র কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। আর সর্বাধিক জনকল্যাণ নিশ্চিতকল্পে সরকারের কর্মপরিধি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।
আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বসবাসরত নাগরিকদের সার্বিক কল্যাণে রাষ্ট্র কাজ করে যাচ্ছে। নাগরিকদের উন্নয়ন ঘটানোর জন্য এ রকম কার্যসম্পাদন করার মাধ্যমেই রাষ্ট্রের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
৪ কল্যাণ রাষ্ট্র কাকে বলে? অথবা, কল্যাণ রাষ্ট্র বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ ভূমিকা : রাষ্ট্র মানবজীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। আধুনিক বিশ্বে প্রায় সব রাষ্ট্রই এর অন্তর্ভুক্ত। জনগণের কল্যাণের জন্য রাষ্ট্রগুলো বিবিধ কার্যক্রম সম্পাদন করে।
এক কথায় আধুনিক রাষ্ট্রের প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হওয়া এবং এ লক্ষ্যেই রাষ্ট্রগুলো জনকল্যাণমূলক কাজ করে এবং নাগরিকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে।
কল্যাণ রাষ্ট্র : নাগরিকদের ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে যে রাষ্ট্র উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কাজ করে থাকে তাকে কল্যাণ রাষ্ট্র বলে ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : জি. ডি. এইচ. কোল (G. D. H. Cole) বলেন, “যে সমাজ নাগরিকদের জীবনব্যবস্থা সর্বনিম্ন চাহিদা পূরণ করতে পারে তাকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলে।” হার্বার্ট লেহমেনের (Herbert Lehman) মতে, “কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলতে সে রাষ্ট্রকে বুঝায়, যেখানে জনগণ তাদের ব্যক্তিসত্তার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধন করতে পারে এবং তাদের প্রতিভার উপযুক্ত পুরস্কার লাভ করে ।”
জাতিসংঘ (U.N.) প্রদত্ত সংজ্ঞানুযায়ী, “যে রাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিকের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সুযোগ সুবিধা প্রদান করে এবং বেকারত্ব, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে জীবিকা অর্জনে ব্যর্থ হলে জনগণের পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করে তাকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলে ।”
অধ্যাপক বেহামের (Prof. Bentham) মতে, “যে রাষ্ট্র ব্যাপকভাবে জনগণের সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় তাকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলে।” টিটমাসের (Titmuss ) মতে, “কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হলো সে রাষ্ট্র যে জনগণের সার্বিক কল্যাণের দায়িত্ব গ্রহণ করে।
সেলসিংগারের (ঝবষংরহমবৎ) মতে, “কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে সরকার নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান, আয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হয় ।”
সুতরাং বলা যায় যে, যে রাষ্ট্র ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণসাধনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পাদন করে তাকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলে ।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনকল্যাণসাধন। এ কারণে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। তবে কোনো একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য অর্জন না করলে যে সেটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হবে না তা নয়।
তবে সামগ্রিকভাবে একটি রাষ্ট্রকে কল্যাণমূলক হতে হলে সর্বপ্রকার কল্যাণকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ব্যবস্থা সার্বিক জনকল্যাণের সাথে সম্পৃক্ত
৫. কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর। অথবা, কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : আধুনিক রাষ্ট্র মানেই জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের কার্যাবলী এমনভাবে নির্ধারিত হয় যাতে জনগণের সার্বিক কল্যাণ সুনিশ্চিত হয় এবং এর মাধ্যমে জনগণ জনশক্তিতে রূপান্তর হয়। বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রপ্রধানরাই দেশের উন্নয়নের জন্য বিবিধ নীতিমালা সুপারিশ করে এবং সেই নীতিমালা অনুযায়ী তারা কর্মপরিকল্পনা করে।
কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য : নিম্নে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হলো-
১. ব্যক্তিস্বাধীনতা সংরক্ষণ : ব্যক্তিস্বাধীনতা পূর্ণমাত্রায় স্বীকার ও সংরক্ষণ করা এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশে স্বাধীনতার উপভোগকে নিশ্চিত করা হচ্ছে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।
২. উন্নত জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দান : কল্যাণমূলক রাষ্ট্র দেশের নাগরিকদের উন্নত জীবনযাপনে নিশ্চয়তা প্রদান করে। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের দ্বারা, বিভিন্ন দিকনির্দেশনা এবং সুযোগ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্র নিশ্চয়তার কাজটি করে থাকে।
৩. সামাজিক অধিকার সংরক্ষণ : জনগণকে সচেতন করে সামাজিক অধিকার সম্পর্কে ধারণা প্রদান করাই কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য এক্ষেত্রে রাষ্ট্র শিক্ষিত জনগণকে প্রলুব্ধ করে থাকে ।
৪. গণসচেতনতা সৃষ্টি : রাষ্ট্রের বেতনভুক্ত সেচ্ছাকর্মীদের দ্বারা কল্যাণমূলক রাষ্ট্র জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করে থাকে । এক্ষেত্রে হাতেকলমে শিক্ষার মাধ্যমটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়।
৫. সম্পদ ও আয়ের ভারসাম্য : কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নাগরিকদের মধ্য থেকে সম্পদ ও আয় গ্রহণ করে এবং তা পরবর্তীতে ভারসাম্য অবস্থা প্রদানে সহায়তা করে থাকে ।
৬. রণ্টন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ : বণ্টন ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই ব্যবস্থাটির মাধ্যমে ধনী-গরিব বৈষম্য হ্রাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
৭. গণমুখী বিচারব্যবস্থা : কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে শোষণ, জুলুম, অন্যায় ও অত্যাচারের হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করার জন্য গণমুখী বিচারব্যবস্থা করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
৮. নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ : উন্নত জীবনব্যবস্থার জন্য যেসব অধিকার একান্ত অপরিহার্য কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নাগরিকদের সেগুলো অত্যাবশ্যকীয়ভাবে মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেয় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের বহুবিধ বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। কোনো একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য অর্জন না করলে যে সেটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হবে না তা নয়। তবে সামগ্রিকভাবে একটি রাষ্ট্রকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হতে হলে সর্বপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। আর এ ব্যবস্থা সার্বিক জনকল্যাণের সাথে সম্পৃক্ত।
৬. কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের কার্যাবলি আলোচনা কর। অথবা, কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের কার্যাবলি সংক্ষেপে লেখ ।
উত্তরঃ ভূমিকা : আধুনিক রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে জনগণের তথা নাগরিকের সার্বিক কল্যাণ। রাষ্ট্র বা সরকার নীতিমালাসহ সবকিছুই নাগরিকদের কল্যাণের জন্যই প্রণয়ন করে থাকে।
জনকল্যাণমূলক চিন্তাধারা থেকেই আধুনিক রাষ্ট্রগুলো জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়েছে। রাষ্ট্রের কার্যাবলিই নির্ধারণ করে রাষ্ট্রটি জনকল্যাণমূলক কি না ।
কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের কার্যাবলি : জনগণের সার্বিক কল্যাণসাধন করতে গিয়ে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নিম্নলিখিত কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে :
১. জনকল্যাণ সাধন : রাষ্ট্রের সকল কাজের মানদণ্ড হবে জনকল্যাণ। কল্যাণমূলক রাষ্ট্র জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলের রক্ষার জন্য কাজ করে। জনকল্যাণের স্বার্থে রাষ্ট্র ব্যক্তিজীবনের দিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
২. ব্যক্তিত্ব বিকাশে সহায়ক : কল্যাণমূলক রাষ্ট্র ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এজন্য শিক্ষাব্যবস্থাকে গণমুখী করে। সর্বস্তরের জনগণকে বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করে ও শিক্ষার ব্যয় হ্রাস করে। এসব ব্যবস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্র ব্যক্তিত্বকে বিকশিত করে।
৩. নাগরিকের নিরাপত্তা দান : দেশের অভ্যন্তরে যাতে প্রত্যেক নাগরিকের জীবন ও সম্পদ রক্ষিত হয় সেজন্য কল্যাণমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করে । যাদের খাদ্যাভাব বা বাসস্থানের সমস্যা আছে তাদের সে সমস্যাও রাষ্ট্রের মাধ্যমে দূরীভূত হয়, যারা রোগাক্রান্ত তাদের রোগমুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে ।
৪. অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দান : অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। এ উদ্দেশ্যে রাষ্ট্র পূর্ণ কর্মসংস্থানকে কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করে। যাদের কর্মসংস্থান সম্ভব নয়, তাদের জন্য বেকার ভাতা বা কল্যাণমূলক ভাতার ব্যবস্থা করা হয়।
৫. অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ : দেশের নাগরিকদের মধ্যে কোনোরূপ অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকলে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র তা দূর করতে উদ্যত হয় । এ প্রকারের বৈষম্য দেশে শান্তি বিনষ্ট করতে পারে এবং জাতীয় অগ্রগতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। সেজন্য কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে সর্বপ্রকার অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের চেষ্টা করা হয়।
৬. ব্যক্তিমালিকানা ও সরকারি মালিকানার সমন্বয়সাধন : কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে একটি মিশ্র অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এখানে ব্যক্তিমালিকানা থাকে তবে সেগুলো রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং বেশকিছু শিল্প সরকারি মালিকানার অন্তর্ভুক্ত থাকে।
রাষ্ট্র আয়ের সর্বোচ্চসীমা নির্ধারণ করে দেয়। কল্যাণমূলক রাষ্ট্র এভাবে ব্যক্তিমালিকানা সরকারি মালিকানার মধ্যে সুসামঞ্জস্যবিধান করে জনগণের দুঃখদুর্দশা লাঘব করে থাকে ।
৭. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ : কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আর্থিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় এবং ঐ পরিকল্পনাতেই সমাজের রূপরেখা কী হবে সে সম্পর্কে বিস্তারি লেখা থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জনসাধারণের কল্যাণসাধন করাই হচ্ছে কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রধান কাজ। তাই রাষ্ট্রের অন্তর্গত প্রতিটি নাগরিকের সুখী ও সমৃদ্ধিশালী জীবনযাপনের জন্য কল্যাণ রাষ্ট্র বহুবিধ কার্যসম্পাদন করে থাকে। জনগণের কল্যাণের জন্য যা করা দরকার তা সম্পাদন করাই হচ্ছে কল্যাণ রাষ্ট্রের কাজ ।
৭. আধুনিক রাষ্ট্র কি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র? ব্যাখ্যা কর। অথবা, আধুনিক রাষ্ট্রকে কি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলা যায়?
উত্তরঃ ভূমিকা : রাষ্ট্রবিজ্ঞানে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র একটি মৌলিক ধারণা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্রকে আধুনিক সমাজ সৌধের চূড়া বলে অভিহিত করেছেন। রাষ্ট্রের মাধ্যমে মানুষ নিজেদের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে।
সুতরাং বলা যায়, রাষ্ট্র একটি অত্যাবশ্যকীয় সংগঠন। আধুনিক যুগে সব রাষ্ট্রই চায় তার নাগরিকের সার্বিক কল্যাণ আর জনকল্যাণই হলো আধুনিক রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য। বলতে গেলে সব রাষ্ট্রই নিজেকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের সংজ্ঞা : যে রাষ্ট্র জনগণের সার্বিক কল্যাণসাধনের লক্ষ্যে কাজ করে তাকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলে । জি. ডি. এইচ কোল ( G. D. H. Cole) এর মতে, “যে সমাজ নাগরিকদের জীবন ব্যবস্থার সর্বনিম্ন চাহিদা পূরণ করতে পারে, তাকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলে।”
টিটমাস (Titmuss) এর মতে, “কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হলো সে রাষ্ট্র যে জনগণের সার্বিক কল্যাণের দায়িত্ব গ্রহণ করে।”
আধুনিক রাষ্ট্র জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র কিনা : আধুনিক রাষ্ট্র জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র কিনা তা বুঝার মানদণ্ডসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো-
- আরো পড়ুন:-প্রশাসন ও সংগঠনের নীতিমালা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(ফ্রি PDF)
- আরো পড়ুন:-প্রশাসন ও সংগঠনের নীতিমালা,অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDF)
- আরো পড়ুন:-লোকপ্রশাসন পরিচিতির রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)
- আরো পড়ুন:- (ফ্রি PDF) লোকপ্রশাসন পরিচিতির রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- লোকপ্রশাসন পরিচিতির রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(ফ্রি PDF)
- আরো পড়ুন:- ফ্রি PDF লোকপ্রশাসন পরিচিতি‘র (খ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১. ব্যক্তিস্বাধীনতা সংরক্ষণ : কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ব্যক্তির স্বাধীনতা পূর্ণমাত্রায় স্বীকার ও সংরক্ষণ করা এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশে স্বাধীনতার উপভোগকে নিশ্চিত করা।
২. উন্নত জীবনযাপনে নিশ্চয়তা দান : কল্যাণমূলক রাষ্ট্র অবশ্যই নাগরিকদের আধুনিক জীবনযাপনে নিশ্চয়তা প্রদান করবে। এ জন্য রাষ্ট্র বিভিন্ন রকম কাজ করে থাকে।
৩. গণসচেতনতা সৃষ্টি : আধুনিক রাষ্ট্র নাগরিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে থাকে প্রত্যেকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।
৪. গণমুখী বিচারব্যবস্থা : আধুনিক রাষ্ট্র বিচারব্যবস্থাকে শাসনব্যবস্থা থেকে আলাদা করার পক্ষপাতী। এতে সুবিচার নিশ্চিত হয়। গণমুখী বিচারব্যবস্থাই কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের পরিচায়ক।
৫. গণস্বার্থরক্ষা : আধুনিক রাষ্ট্রগুলো গণস্বার্থরক্ষায় তাদের দাবি দাওয়া মেনে নিয়ে সংবিধান প্রণয়ন করে থাকে। রাষ্ট্রের নীতিমালা মূলত নাগরিকদের স্বার্থরক্ষার জন্য প্রণীত হচ্ছে।
৬. মিশ্র অর্থনীতির প্রবর্তন : রাষ্ট্র সকল নাগরিকের স্বার্থ সংরক্ষণ করার জন্য মিশ্র অর্থনীতির প্রবর্তন করে থাকে। সরকারি এবং ব্যক্তি মালিকানায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে দেশের উন্নয়নসাধন করা রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য।
উপসংহার পরিশেষে বলা যায় যে, আধুনিক যুগে প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য হলো জনকল্যাণ নিশ্চিত করা। কেননা আধুনিক রাষ্ট্র জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র।
রাষ্ট্রের কাজ শুধু শাসন করাই না, এর মাধ্যমে দেশের সকল নাগরিকের কল্যাণসাধন করে সার্বিক উন্নয়ন করাই মূল লক্ষ্য। এতে রাষ্ট্রের জনকল্যাণমূলক চিন্তাধারার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
৮. রাষ্ট্রের উপাদানগুলো আলোচনা কর। অথবা, রাষ্ট্রের উপাদানসমূহ কী কী?
উত্তরঃ ভূমিকা : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে রাষ্ট্র। সভ্যতার বিকাশে মানুষ যত রকম সংঘ গঠন করেছে, তার মধ্যে সর্বোচ্চ এবং শক্তিশালী সংঘই হচ্ছে রাষ্ট্র। রাষ্ট্র মূলত একটি বাস্তব রাজনৈতিক সংগঠন।
সমাজজীবনের একপর্যায় মানুষ তার জীবনের নিরাপত্তা ও সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য একটি সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে। কালের বিবর্তনে মানুষের এ প্রয়োজনীয়তা থেকেই রাষ্ট্র নামক রাজনৈতিক সংগঠনের জন্ম হয়।
রাষ্ট্রের উপাদানসমূহ : রাষ্ট্র সম্পর্কিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংজ্ঞাসমূহ বিশ্লেষণ করলে রাষ্ট্রের ৪টি উপাদান দেখতে পাওয়া যায়। নিম্নে রাষ্ট্রের ৪টি উপাদান বর্ণনা করা হলো-
১. জনসমষ্টি : রাষ্ট্রের প্রধান ও প্রথম উপাদান হলো জনসমষ্টি । জনসমষ্টির ইচ্ছাপ্রণোদিত পারস্পরিক সম্বন্ধ থেকে রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়েছে। তাই জনসমষ্টি ব্যতীত রাষ্ট্রকে কল্পনা করা যায় না। সংগঠিত জনসমষ্টি যারা সংগঠনের মধ্যে সংগঠিত হতে পারে, তারাই রাষ্ট্র গঠন করতে পারে। জনসমষ্টির দুধরনের বিভাজন রয়েছে। যথা :
ক. শাসক ও শাসিত এবং খ. নাগরিক ও বিদেশি।
২. নির্দিষ্ট ভূখণ্ড : নির্দিষ্ট ভূখণ্ড রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। রাষ্ট্রের অবশ্যই একটি সুনির্দিষ্ট ভূখণ্ড থাকবে। দেশের জনগণ এ ভূখণ্ডেই বসবাস করবে। এ ভূখণ্ড অন্যান্য রাষ্ট্রের জনগণ কর্তৃক অধিকৃত ভূখণ্ড থেকে অবশ্যই পৃথক হবে।
৩. সরকার সরকার রাষ্ট্রের আর একটি অপরিহার্য উপাদান । কোনো এক ভূখণ্ডের ওপর কতকগুলো লোক যদি বসবাস করে তাহলেও তাদের মধ্যে রাষ্ট্র গঠিত হবে না। তাদের মধ্যে সাধারণ উদ্দেশ্য থাকতে হবে। আইন ও শৃঙ্খলার বন্ধন থাকতে হবে এবং সর্বোপরি একটি বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে যা শান্তি রক্ষা শৃঙ্খলা স্থাপন প্রভৃতি কাজের জন্য দায়ী থাকবে।
৪. সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র গঠনের সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ উপাদান হচ্ছে সার্বভৌমত্ব বা সার্বভৌমিকতা। এটি রাষ্ট্রের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সার্বভৌম ক্ষমতা হলো চরম ক্ষমতা যা অনমনীয়, অবিভাজ্য একক ও অদ্বিতীয়। এ ক্ষমতার বলে রাষ্ট্র সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বে অবস্থান করে এবং অধীনস্থ সকলকে আদেশ ও নির্দেশ প্রদান করে । অন্যান্য উপাদানসমূহ :
ক. স্থায়িত্ব ও ধারাবাহিকতা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে অক্ষয়, অজয় ও অমর। সরকারের পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্রের পরিবর্তন হয় না। রাষ্ট্রের রূপান্তর ঘটতে পারে, কিন্তু তার বিনাশ হয় না।
খ. স্বীকৃতি : আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে জাতিসংঘ কর্তৃক এবং অন্যান্য রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃতি দানকেও রাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য বলা হয়। কোনো রাষ্ট্রকে জাতিসংঘ রাষ্ট্র বলে স্বীকৃতি না দিলে সে রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ হয় না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীনকালের সংজ্ঞায়িত রাষ্ট্রের সাথে আধুনিক রাষ্ট্রের কিছুটা পার্থক্য আছে। উপাদানসমূহের বিস্তৃতি এবং প্রয়োজনীয়তাই এ পার্থক্যের মূল হেতু।
আধুনিক রাষ্ট্রের উপাদানসমূহের কোনো একটা উপাদানের অনুপস্থিতিতেই সেটি তার যোগ্যতা হারাতে পারে। উপরোল্লিখিত উপাদান ছাড়াও আরও অনেক উপাদানসমূহের প্রয়োজনীয়তাও এখানে অনস্বীকার্য।
৯. সরকার বলতে কী বুঝ? অথবা, সরকার কাকে বলে?
উত্তরঃ ভূমিকা : সরকার রাষ্ট্রের একটি অপরিহার্য উপাদান। কোনো এক ভূখণ্ডের ওপর কতকগুলো লোক যদি বাস করে তাহলেও তাদের মধ্যে রাষ্ট্র সংগঠিত হবে না।
তাদের মধ্যে সাধারণ উদ্দেশ্য থাকতে হবে, আইন শৃঙ্খলার বন্ধন থাকতে হবে এবং সর্বোপরি একটি বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে যা শান্তিরক্ষা এবং শৃঙ্খলা স্থাপন প্রভৃতি কাজের জন্য দায়ী থাকবে।
সরকার : সরকার শব্দটি সংকীর্ণ অর্থে রাষ্ট্রপতিসহ মন্ত্রিবর্গকে বুঝায়। কিন্তু ব্যাপক অর্থে তা শাসকগোষ্ঠীর অন্তর্গত সকলকে বুঝায় যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে।
যারা আইন প্রণয়ন করছেন, আইন সংরক্ষণের জন্য নিযুক্ত রয়েছেন এবং আইনের প্রয়োগ করে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাদের সমষ্টিগতভাবে ‘সরকার’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। এই অর্থে গ্রাম্য চৌকিদার থেকে রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত সবাইকে সমবেতভাবে আমরা সরকার বলতে পারি ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক এরিস্টটল (Aristotle) এর মতে, “সরকার হলো রাষ্ট্রের সর্বত্র অবস্থিত সার্বভৌমত্ব এবং বস্তুত সংবিধানই হলো সরকার।”
অধ্যাপক গেটেল (Prof. Gettell) এর মতে, “Government is the organization or machinery of the state.”
অধ্যাপক জে. ডব্লিউ. গার্নার (Prof. J. W. Garner) বলেন, “সরকার হলো এমন একটি কার্যনির্বাহী মাধ্যম বা যন্ত্র যার মাধ্যমে সরকারের সাধারণ নীতি নির্ধারিত হয় এবং যার দ্বারা সাধারণ কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হয় ও সাধারণ স্বার্থ সাধিত হয়।”
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডব্লিউ. ডব্লিউ. উইলোবি (W. W. Willoughby) বলেন, “সরকার হলো এমন একটি প্রতিষ্ঠান বা যন্ত্র যার মাধ্যমে রাষ্ট্র তার ইচ্ছাকে গঠন ও কার্যকর করে।”
জেংকস (Jenks) এর মতে, “জাতিকে পরিচালনার ভার যাদের হাতে থাকে তাদেরকেই সরকার বলা যায়।”
অধ্যাপক ফাইনার (Prof. Finer) বলেন, “সরকার হলো মানবিক সমবায়ের কাঠামোগুলোর একীভূত সংগঠন, ভ্রাতৃত্বের বণ্টনমূলক এবং বিন্যাসগত ধরন ও তাদের কার্যসিদ্ধ প্রণালি।”
অধ্যাপক লাস্কি (Prof. Laski) বলেন, “রাষ্ট্রব্যবস্থায় কতিপয় ব্যক্তি মনোনীত বা নির্ধারিত হয়ে জনগণের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করার নামই সরকার। অধ্যাপক আর্নেস্ট বার্কার (Prof. Ernest Barker) এর মতে, “জনগণের স্বার্থে জনগণের অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগকারী সংঘকে সরকার বলে ।”
উপসংহার পরিশেষে বলা যায় যে, জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রের বৈধ ক্ষমতা ভোগকারীরা যারা নির্বাচন কিংবা মনোনয়নের মাধ্যমে ক্ষমতা অর্জন করে তাদেরকেই একত্রে সরকার বলে সরকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানরূপে আধুনিক রাষ্ট্রে জায়গা করে নিয়েছে।
সরকারের কার্যপ্রণালী, বৈশিষ্ট্য থেকে যার সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। সরকারের মাধ্যমে আধুনিক রাষ্ট্রের প্রতিচ্ছবি প্রকাশ পায়। অনেক সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও সরকারের গুরুত্ব অপরিহার্য।
১০. “শক্তি নয়, সম্মতিই রাষ্ট্রের ভিত্তি।” আলোচনা কর।
অথবা, “রাষ্ট্রের ভিত্তি হচ্ছে সম্মতি, বল নহে।”— ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : আমরা জন্মগ্রহণ থেকে শুরু করে প্রতিটি কাজই করে থাকি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে। আমরা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে থাকি এবং তার মাধ্যমে রাষ্ট্রের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হয়।
রাষ্ট্রের গঠন প্রক্রিয়ায় আমরা সম্মতির মাধ্যমে অংশগ্রহণ করি। বল কিংবা শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সৃষ্টি হতে পারে না। শাসকশাসিতের সম্পর্ক হতে হয় সম্মতির মাধ্যমে, বলের মাধ্যমে নয় ।
“শক্তি নয়, সম্মতিই রাষ্ট্রের ভিত্তি” : সম্মতি বা চুক্তিবাদ হলো, রাষ্ট্র ঈশ্বর কর্তৃক সৃষ্টি হয়নি; বরং এটি দেশের জনসাধারণের সুশৃঙ্খল ও সুসংহত রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার পর এক ধরনের চুক্তির ফলেই রাষ্ট্র উদ্ভূত হয়েছে।
সম্মতির পক্ষে যুক্তি : নিম্নে রাষ্ট্রের ভিত্তি হিসেবে সম্মতির পক্ষে যুক্তি দেখানো হলো—
১. প্রশ্নের সমাধান দেওয়া হয় : সম্মতির মাধ্যমে যে রাষ্ট্রটি গড়ে ওঠে অথবা চলতে থাকে সেটি জনগণের রাষ্ট্রীয় যেকোনো ব্যাপারে উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে ।
২. মোক্ষম হাতিয়ার : সম্মতির মাধ্যমে যে রাষ্ট্রটি পরিচালিত হয়, সেখানে শাসকগণ অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।
৩. গণতান্ত্রিক : রাষ্ট্র সবার সম্মতির মাধ্যমে হয়, সবাই এতে অংশগ্রহণ করে। সবার মতামতের সর্বোচ্চ প্রতিফলন ঘটে এখানে । গণতন্ত্রের প্রতীকরূপে তাই সম্মতিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
বলপ্রয়োগ মতবাদের বিপক্ষে যুক্তি নিম্নে বলপ্রয়োগ মতবাদের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হলো—
১. মানবতাবিরোধী শাসক যেখানে শাসিতের ওপর অত্যাচার করে রাষ্ট্রযন্ত্রে টিকে থাকে তখন সেটি নিঃসংকোচে মানবতাবিরোধী।
২. বিপদজনক : যেকোনো শাসকই যখন বল প্রয়োগের মাধ্যমে আসে, তখন সে অবশ্যই গণতন্ত্র কিংবা জনগণের জন্য বিপজ্জনক এবং হুমকিস্বরূপ হয় ।
৩. বিশ্বশান্তির বিরোধী : বলপ্রয়োগ করার মাধ্যমে যে রাষ্ট্রগুলো শাসিত হয়, সেগুলো তুলনামূলকভাবে উগ্র জাতীয়তাবাদে ধাবিত হয়, যা বিশ্বশান্তির পরিপন্থি।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, আধুনিক রাষ্ট্র পুলিশি রাষ্ট্র নয়, কল্যাণমূলক রাষ্ট্র আর কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে জনগণের সম্মতির মাধ্যমেই সার্বিক কার্যাবলি সম্পাদিত হয়।
সুতরাং আমাদের রাষ্ট্রের ধারণাতে বলপ্রয়োগের চাইতে সম্মতির মতটাই বেশি গ্রহণযোগ্য। পৃথিবীতে একটি রাষ্ট্রকে সুন্দরভাবে টিকে থাকতে হলে জনগণের সম্মতি, বুঝাপড়ার মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে হবে। কাজেই বলা যায় যে, শক্তি নয়, সম্মতিই হচ্ছে রাষ্ট্রের মূলভিত্তি।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। ফ্রি পিডিএফ ফাইল এখান থেকে ডাউনলোড করে নিন। রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)