PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ও PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর সহ শিক্ষমূলক সকল বিষয় পাবে এখান থেকে: অধ্যায় ৫.৭ : হবস, এর অতিসংক্ষিপ্ত, প্রশ্নোত্তর,সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ও
রচনামূলক প্রশ্নোত্তর, সাজেশন সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনার্স ১ম বর্ষের যেকোন বিভাগের সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
অনার্স প্রথম বর্ষ
বিষয়ঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি
অধ্যায় ৫.৭ : লক
বিষয় কোডঃ ২১১৯০৯
খ-বিভাগঃ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
০১. জন লকের পরিচয় দাও।
অথবা, জন লক সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লেখ ।
উত্তর : ভূমিকা : ইংরেজ দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, নবজাগরণের সূচনাকালের অন্যতম চিন্তাবিদ জন লক ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের এক মধ্যবিত্ত পিউরিটান (Puritan) পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ।
শাসনসংক্রান্ত ব্যাপারে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও অভূতপূর্ব দার্শনিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন বলে জন লক রাষ্ট্রদর্শনের ইতিহাসে একটি অনন্য সাধারণ নাম। জন লককে সপ্তদশ শতাব্দীতে আধুনিক গণতন্ত্র ধারণার উদ্ভাবক হিসেবে গণ্য করা হয় ।
জন লকের পরিচয় : জন লক (John Locke) অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবে অভিহিত হলেও রাজনৈতিক চিন্তাবিদ হিসেবেও খ্যাত। সপ্তদশ শতকের প্রখ্যাত দার্শনিক সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
জন্ম তারিখ ও বংশ পরিচয় : ইংরেজ দার্শনিক ও চিন্তাবিদ জন লক ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলের নিকটবর্তী শহর রিংটনের এক মধ্যবিত্ত ‘পিউরিটান’ (Puritan ) পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- আরো পড়ুন:- PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-PDFডাউনলোড অনার্স রাজনৈতিক হবস: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক হবস: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর PDFডাউনলোড
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক হবস: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF ডাউনলোড
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক সেন্ট অগাস্টিন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর PDF
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক সেন্ট অগাস্টিন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর PDF
- আরো পড়ুন:- PDF ফ্রি অনার্স: রাজনৈতিক সেন্ট অগাস্টিন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-অনার্স: সেন্ট অগাস্টিন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (PDF ফ্রি)
- আরো পড়ুন:- অনার্স সেন্ট অগাস্টিন: অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (PDF ফ্রি)
- আরো পড়ুন:- (PDF ফ্রি) অনার্স সেন্ট টমাস একুইনাস: রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
তার পিতা একজন পিউরিটান আইনজীবী হিসেবে সমাদৃত ছিলেন। তিনি অল্প বয়সেই মাকে হারান এবং বন্ধুভাবাপন্ন পিতার কাছে তিনি লালিত পালিত হন ।
শিক্ষাজীবন : জন লকের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় পার্লামেন্টারি দলের প্রভাবিত ওয়েস্ট মিনিস্টার স্কুলে। ১৬৪৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৬৫২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ঐ স্কুলে অধ্যয়ন করেন।
পরে ১৬৫২ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে ভর্তি হন। এখানে তিনি দর্শন, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন।
যেহেতু জন লক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাশাস্ত্রের ওপরই প্রধানত জ্ঞানলাভ করেছেন, তাই জীবনের শুরুতে তিনি চিকিৎসাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।
কর্মজীবন : জন লক কর্মজীবনের শুরুতে ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে সিনিয়র স্টুডেন্টশিপ লাভ করেন এবং পরবর্তী বছর গ্রিক ভাষার অধ্যাপক নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি দর্শন শাস্ত্রের অধ্যাপক পদও লাভ করেন।
পেশাগত জীবনে অধ্যাপনা, চিকিৎসাসহ রাজকীয় কূটনৈতিক ও বাণিজ্য পরিষদের নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। জন লক ১৬৭১ খ্রিস্টাব্দের দিকে মানবিক জ্ঞান ও রাষ্ট্র সমাজ সম্পর্কিত প্রবন্ধাবলি রচনা শুরু করেন ।
১৬৮৪ খ্রিস্টাব্দে তার বিখ্যাত মানবিক বিষয়ক প্রবন্ধ ”An Essay Concerning Human Understanding, প্রথম সংস্করণ বের হয়। পরে তার জীবদ্দশায়ই আরও তিনটি সংস্করণ বের হয়।
এরপর ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে তার আরেকটি বিখ্যাত বই Two Treatises on Civil Government” প্রকাশিত হয় এবং ১৬৯৩ খ্রিস্টাব্দে বের হয় ‘শিক্ষা বিষয়ক কিছু চিন্তা’ (Some Thoughts Concerning Education). এছাড়াও জন লক আরও ছোট বড় আনুমানিক বিশটি গ্রন্থ রচনা করেছেন ।
মৃত্যু : আধুনিক গণতন্ত্রের জনক বলে খ্যাত এ বিখ্যাত ও বিশিষ্ট ইংরেজ দার্শনিক জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন যার ফলে স্বাস্থ্য বেশ খারাপ হয়ে যায়। ১৭০৪ খ্রিস্টাব্দে ৭২ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ব্যক্তিজীবনে, জন লক ছিলেন অকৃতদার এবং তার কোনো সন্তান ছিল না ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, রাষ্ট্রদর্শনের আদর্শ হিসেবে গণতন্ত্র বিশেষ স্থান ও স্বাতন্ত্রের অধিকারী । জন লককে গণতন্ত্রের রূপকার বা জনক বলে বিবেচনা করা হয়।
তিনি জ্ঞানতত্ত্বের আলোচনায় পদ্ধতিগত দিক থেকে নতুনভাবে অভিজ্ঞতাবাদের প্রয়োগ ও দার্শনিক চিন্তাধারাতে মৌলিক প্রশ্ন উপস্থাপনের প্রয়াস পান। পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক কাঠামোতে নারীর অবস্থার ও ভূমিকা বিষয়ে তার মতামত ছিল আধুনিক নারীবাদী চিন্তার কাছাকাছি।
০২. আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তায় জন লকের অবদান আলোচনা কর।
অথবা, আধুনিক রাষ্ট্রদর্শনে জন লকের অবদান সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর ।
উত্তর : ভূমিকা : আধুনিক গণতন্ত্রের জনক বলে খ্যাত সপ্তদশ শতাব্দীর অন্যতম প্রভাবশালী দার্শনিক জন লক তার বিখ্যাত গ্রন্থ Two Treatises on Civil Government’ এ রাজনৈতিক দর্শন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
তিনি তার বিখ্যাত গ্রন্থে সমসাময়িক রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যাবলি ইত্যাদি বিষয়গুলোকে এক বাস্তবমুখী রূপ প্রদানে প্রয়াস চালিয়েছেন। গণতন্ত্রের জনক লক আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তায় জনপ্রিয় সরকার পদ্ধতি ও তার রাষ্ট্রদর্শনের মাধ্যমে পৃথিবীতে অমর হয়ে আছেন ।
আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তায় জন লকের অবদান : আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তায় জন লকের রাষ্ট্রদর্শনের অবদান অপরিসীম। কেননা তার হাত ধরেই গণতন্ত্র নামক শাসনব্যবস্থার জন্ম হয়। নিম্নে আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তায় জন লকের অবদান আলোচনা করা হলো-
১. যুক্তিবাদী দার্শনিক : জন লককে যুক্তিবাদী দার্শনিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় তিনি মনে করেন, এ পৃথিবীর সবকিছুই এবং তার বিভিন্ন সংগঠন মানুষের কল্যাণের জন্যই সৃষ্টি হয়েছে। তাই তিনি যুক্তির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে বিশ্বাস করতেন। তিনি তার রচিত গ্রন্থে অসংখ্য যুক্তির মাধ্যমে মানুষের কল্যাণকর শাসনের রূপরেখা তুলে ধরেন।
২. দায়িত্বশীল শাসনের প্রবক্তা : জন লক রাষ্ট্রদর্শনের বিভিন্ন ধারার ব্যাখ্যায় দায়িত্বশীল প্রবক্তা হিসেবে আবির্ভূত হন। তার প্রণীত নকশায় তিনি দেখিয়েছেন সরকার জনগণের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রদানে বাধ্য থাকবে। যেখানে জবাবদিহিতা বর্তমান থাকবে। এসবের ব্যত্যয় ঘটলে জনগণ সরকার উৎখাতেরও ক্ষমতা রাখে বলে তিনি তার রাষ্ট্রদর্শনে উল্লেখ করেছেন।
৩. সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক : জন লক ছিলেন আধুনিক সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক। তিনি বিশ্বাস করতেন সরকারের ক্ষমতার মূলভিত্তি হচ্ছে জনগণের সমর্থন ও গণসম্মতি। যে সরকারে জনগণের সমর্থন নেই, তাকে তিনি স্বৈরাচারী সরকার বলে আখ্যায়িত করেন।
এছাড়াও তিনি আইনগত বিভাগকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দেন। তার মতে, প্রত্যেকটি কমনওয়েলয়ের মধ্যে আইন বিভাগের ক্ষমতাই সর্বোচ্চ। এভাবে তিনি সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন।
৪. সাম্যবাদের প্রবর্তক : জন লক ছিলেন সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার অন্যতম কারিগর। তিনি মনে করতেন যে, জনগণকে উৎপীড়ন, নির্যাতন, স্বাধীনতা এবং অধিকার হতে বঞ্চিত করার অধিকার কারো নেই।
অনেকে তাকে উদারতাবাদের আত্মা বলেও আখ্যায়িত করেছেন। তিনি মানুষের ক্ষমতায় বিশ্বাস করতেন। যার কারণে তাকে সাম্যবাদের প্রবক্তা হিসেবে মনে করা হয়।
৫. সরকার গঠনের গুরুত্ব : জন লক জনগণের নিরাপত্তা লাভের স্বার্থে সরকার গঠনে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সরকার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বদা সচেতন থাকবে এবং নিরাপত্তা বিধানের নিশ্চয়তা প্রদান করবে। আর এ সরকার পরিচালিত হবে মানুষের তৈরি নির্বাচিত আইন দ্বারা। এভাবে তিনি সরকার গঠনে গুরুত্বারোপ করেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জন লকের রাজনৈতিক দর্শন ছিল গণতান্ত্রিক। তবে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী দার্শনিক হিসেবেও তিনি পরিচিত। কারণ ব্যক্তির অধিকার রক্ষা ছিল তার দর্শনের মূলমন্ত্র।
তিনি জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পক্ষপাতী ছিলেন। তাকে সংসদীয় গণতন্ত্রের জনকও বলা হয় । রুশো, মন্টেস্কু প্রমুখ ছিলেন তার ভাবশিষ্য ।
০৩. জন লককে আধুনিক গণতন্ত্রের জনক বলা হয় কেন? আলোচনা কর।
অথবা, তুমি কি মনে কর যে, লক সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রথম প্রবক্তা?
উত্তর : ভূমিকা : জন লক ছিলেন আধুনিক দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম। তার মাধ্যমেই আধুনিক সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্ম। তার দার্শনিক চিন্তা, গণতান্ত্রিক সচেতনতা, সরকারের চেতনা এবং বাকস্বাধীনতার চিন্তা এক নবদিগন্তের সূচনা করে।
তিনি জগদ্বিখ্যাত “Two Treatises on Civil Government’ গ্রন্থ রচনা করেন। তার গ্রন্থে রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা করা হয়েছে। যার ফলে তাকে গণতন্ত্রের জনক বলা হয়।
জন লককে সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক বলার কারণ : নিম্নে জন লককে সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক বলার কারণগুলো তুলে ধরা হলো-
১. নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা : নিয়মতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করার কথা একমাত্র জন লকই বলেছেন। ‘রাজা ঈশ্বরের প্রতিনিধি’ এ মতবাদটি তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন এবং একে রাজতন্ত্র দীর্ঘায়িত করার কৌশল বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য নিয়মতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার গুরত্ব অপরিসীম।
২. জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা : জন লকই প্রথম দার্শনিক যিনি সরকারের ক্ষমতা জনগণের ওপর ন্যস্ত করে জনগণের সার্বভৌমত্বের কথা বলেছেন। জনগণের সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে জন লক বলেন, “জন সার্বভৌমত্ব না থাকলে গণতন্ত্র সফল হতে পারে না, ফলে স্বৈরশাসন বিস্তার লাভ করার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।”
৩. গণসম্মতি : জন লক মনে করতেন, যে সরকার জনগণের সম্মতিতে পরিচালিত ও গঠিত নয় সে সরকার স্বৈরাচারী ও স্বেচ্ছাচারী হতে পারে। তাই তিনি এ ধরনের সরকারের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, “সরকারের ক্ষমতার মূলভিত্তি হচ্ছে জনসম্মতি।
যে সরকার জনসম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয় সে সরকার জনগণের আনুগত্য দাবি করতে পারে না।” এভাবে তিনি জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পক্ষপাতী ছিলেন।
৪. ক্ষমতা পৃথককরণ নীতি : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ক্ষমতার পৃথককরণ নীতি। জন লক ক্ষমতার সকল উৎস সরকারের ওপর ন্যস্ত করতে চাননি।
তিনি মনে করতেন একই সাথে যদি আইন বলবৎ করার ক্ষমতা দেওয়া হয় তাহলে মানব চরিত্রের স্বাভাবিক দুর্বলতার কারণে এ ক্ষমতা নিজ স্বার্থে ব্যবহারের প্রবণতা দেখা দিবে। এসব কারণে জন লক ক্ষমতা পৃথক্করণে বিশ্বাসী ছিলেন।
৫. আইন বিভাগের শ্রেষ্ঠত্ব : জন লকই প্রথম দার্শনিক যিনি আইনকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে উল্লেখ করেন। তিনি নির্বাহী বিভাগকে আইন বিভাগের নিকট জবাবদিহি করেন, যার মাধ্যমে তিনি সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার জন্ম দেন । তিনি আইনসভাকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সংস্থা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
৬. সংবিধান : জন লকই সাংবিধানিক সরকারের জনক হিসেবে পরিচিত। তিনি মনে করেন, জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে কিছু আইন তৈরি করা হবে। যার মাধ্যমে শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হবে। আর এ আইন হবে লিপিবদ্ধ যা কেউ ভঙ্গ করলে সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জন লক আধুনিক গণতন্ত্রকে গতিশীল করতে ভূমিকা পালন করেছেন। জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা, নিয়মতান্ত্রিক সরকার, ব্যক্তিস্বাধীনতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ প্রভৃতি ধারণাই গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে প্রসারিত করেছে।
তিনি আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগকে এর অধিভুক্ত করার মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্ম দেন। আর এ সকল কারণেই তাকে আধুনিক গণতন্ত্রের জনক বলা হয় ।
- আরো পড়ুন:- (PDF ফ্রি) অনার্স সেন্ট টমাস একুইনাস: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অনার্স সেন্ট টমাস একুইনাস: অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF ফ্রি
- আরো পড়ুন:- অনার্স এরিস্টটল: রাজনৈতিক রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)
- আরো পড়ুন:- (ফ্রি PDF) অনার্স এরিস্টটল: রাজনৈতিক রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-অনার্স এরিস্টটল: রাজনৈতিক রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)
- আরো পড়ুন:-অনার্স এরিস্টটল: রাজনৈতিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)
০৪. গণতন্ত্র সম্পর্কে জন লকের ধারণা আলোচনা কর।
অথবা, গণতন্ত্র সম্পর্কে জন লকের মতামত সংক্ষেপে লেখ ।
উত্তর : ভূমিকা : গণতান্ত্রিক বা জনগণের শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অন্যান্য দার্শনিকদের চেয়ে যার বক্তব্য সবচেয়ে জোরালো ও অগ্রগামী তিনি হলেন ইংরেজ দার্শনিক জন লক (John Locke)।
তার মতে, “জনগণের সকল প্রকার অধিকার সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যাবলি সম্পন্ন করার জন্যই গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উদ্ভব ঘটেছে।” জন লক তার বিখ্যাত গ্রন্থ “Two Treatises on Civil Government’ এ গণতন্ত্র সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
গণতন্ত্র সম্পর্কে জন লকের ধারণা : পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চিন্তাবিদের আগমন হয়েছে যাদের রাজনৈতিক চিন্তাধারা বর্তমান বিশ্বেও প্রতিফলিত হচ্ছে তাদের মাঝে জন লক অন্যতম। নিম্নে জন লকের গণতন্ত্র সম্পর্কিত আলোচনা করা হলো-
১. গণতান্ত্রিক সরকার : জন লকই কেবল একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী যিনি সরকারের ক্ষমতা বা সার্বভৌমত্ব হ্রাস করে জনগণের সার্বভৌমত্বের গুরুত্ব দিতে প্রয়াস চালিয়েছেন।
জন লকের সামাজিক চুক্তিতে তিনি দেখিয়েছেন, জনগণের সার্বভৌমত্ব না থাকলে গণতন্ত্র সফল হতে পারে না বলে স্বৈরাচার বা স্বৈরশাসন বিস্তার লাভ করার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। এ চুক্তি অনুসারে, গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য।
২. আইন বিভাগ : গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য জন লক সরকারের তিন রকমের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন যা তিনটি স্বীয় ক্ষেত্রে আবদ্ধ। যেমন আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ।
জন লকের মতে, এ তিন বিভাগের মধ্যে আইন বিভাগ হচ্ছে সর্বোচ্চ। জন লকের এ ধারণা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় আইন বিভাগের মর্যাদা সর্বাধিক।
৩. সরকারের সীমাবদ্ধ ক্ষমতা : জন লক সরকারের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করার প্রয়াসী ছিলেন। তিনি মনে করেন, সরকার এককভাবে সার্বভৌম ক্ষমতা ভোগ করতে পারে না।
জবাবদিহিতার কথা উল্লেখ করে সরকারের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করেছেন এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য জনগণের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন করেছেন ।
৪. সরকার গঠন : জন লক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার গঠনের ওপর অধিকতর গুরুত্বারোপ করেছেন। তার মেতে, অধিকাংশ লোক একবার সরকার গঠনে সম্মত হলে সমাজের সমস্ত ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে তাদের ওপর ন্যস্ত হবে। এভাবে তিনি আধুনিক গণতন্ত্রের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য গণ-নির্বাচনের পক্ষে মত ব্যক্ত করেছেন।
৫. গণতন্ত্রের রূপ : জন লক জনকল্যাণের জন্যই গণতন্ত্ৰ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়াস চালিয়েছেন। তিনি মনে করেন, গণতন্ত্র যদি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ না পায় তাহলে এটি কখনও জনগণের কল্যাণে আসবে না। তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্রে জনগণকে কেন্দ্র করেই সকল চিন্তাধারা আবর্তিত।”
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জন লককে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী দার্শনিক হিসেবে দেখতে পেলেও মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল গণতান্ত্রিক। যেখানে ব্যক্তির বা জনগণের অধিকার সংরক্ষণই ছিল তার দর্শনের মূল কথা ।
আধুনিক যুগের এ পথিকৃৎকে রাষ্ট্রদর্শন পরবর্তী যুগের বহু বিখ্যাত দার্শনিক ও ভ রাজনৈতিক ঘটনাকে বিপুলভাবে প্রভাবিত করেছে। মন্টেস্কু, রুশো, হবস প্রমুখ দার্শনিকরা ছিলেন তার ভাবশিষ্য ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। ফ্রি পিডিএফ ফাইল এখান থেকে ডাউনলোড করে নিন। PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর