HSC ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১৬-২০ | PDF : ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রের ষষ্ট অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রের ষষ্ট অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
প্রশ্নঃ ১৬ মি. জহির একটি বৃহদায়তন কোম্পানির উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ের সব সময়ই কাজ বেশি করতে বাধ্য করেন। সেজন্য কর্মীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেন না। কর্মীদের ভালো-মন্দ বিবেচনা না করে উৎপাদন বৃদ্ধির ওপরই গুরুত্ব দেন। কর্মীরা এ অবস্থা থেকে উত্তরণ চায়। [সি. বো. ১৬]
ক. নেতৃত্ব কী? ১
খ. কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্বের ব্যাখ্যা দাও। ২
গ. উদ্দীপকে মি. জহির কোন ধরনের নেতৃত্ব অনুসরণ করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ.অবস্থা উত্তরণের জন্য কোন ধরনের নেতৃত্ব উপযোগী বলে তুমি মনে করো?৪
১৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগানোর কৌশলকে নেতৃত্ব বলে।
খ উত্তরঃ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কর্মীদের ভালো-মন্দ বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে যে নেতৃত্ব কার্যক্রম পরিচালিত হয় তাকে কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব বলে। এরূপ নেতৃত্ব ধারণায় নেতা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যার্জনে কর্মীদের নিকট থেকে উত্তম সহায়তা লাভের ওপর অধিক গুরুত্ব প্রদান করে। কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব ধারণা অপেক্ষা এরূপ ধারণা আধুনিক বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকের মি. জহির কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করেছেন। এ নেতৃত্বে নেতা কর্মীর চেয়ে কাজকে বেশি প্রাধান্য দেন তা-ই কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব। এ নেতৃত্ব ব্যবস্থায় কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় এজন্য নেতা সব সময় কর্মীদের কাজে ব্যস্ত রেখে সর্বোচ্চ মাত্রায় কার্যসম্পাদনের চেষ্টা চালায়।
মি. জহির একটি বৃহদায়তন কোম্পানির একজন উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে কাজ বেশি করাতে বাধ্য করেন। তিনি কর্মীদের ভালো-মন্দ, সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করেন না।
তিনি শুধু প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন, বৈশিষ্ট্যানুযায়ী যা কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের সাথে মিলে যায়। সুতরাং মি. জহিরের কার্যাবলি দ্বারা এটা প্রতীয়মান তিনি কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করেছেন।
ঘ উত্তরঃ উদ্দীপকে অবস্থা উত্তরণের জন্য কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব ব্যবস্থা উপযোগী। যে নেতৃত্ব ব্যবস্থায় নেতা কাজের পাশাপাশি কর্মীদের মানসিক দিকটি সর্বপ্রথম বিবেচনা করেন এবং সহানুভ‚তির সাথে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন তা-ই কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব। এ ধরনের নেতৃত্বে কর্মের চেয়ে কর্মীকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উৎপাদন ব্যবস্থাপক মি. জহির নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি কাজ করাতে বাধ্য করেন। তিনি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করেন না। মি. জহিরের নেতৃত্ব ব্যবস্থায় কাজ আদায় হলেও মাঝে মধ্যে কর্মীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে।
মি. জহিরের ব্যবসায়ে কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের চাইতে কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব বেশি উপযোগ হবে। কেননা এতে নেতা কর্মীদের ভালো-মন্দ বিবেচনায় এনে সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালান।
মি. জহির যদি কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করেন তবে কর্মীরা মনোবল নিয়ে সন্তুষ্টির সাথে কাজ করবে, যা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। সুতরাং উদ্দীপকের উক্ত অবস্থা উত্তরণের জন্য কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব তুলনামূলকভাবে উপযোগী।
প্রশ্নঃ ১৭ মি. জিহাদ একতা ফ্যাশন লি.-এর একজন নির্বাহী পরিচালক। তিনি শুধু প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেন, কিন্তু কীভাবে লক্ষ্য অর্জিত হবে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেন না। বরং তা কর্মীদের ওপর ছেড়ে দেন। অন্যদিকে মি. কামাল জনতা টেক্সটাইল নাক উত্তরঃ একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। তিনি কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে কর্মীদের মতামতের গুরুত্ব দেন। এর ফলে প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীরা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠানের অংশীদার মনে করেন এবং কর্তৃপক্ষের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। অল্প দিনের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। [য. বো. ১৬]
ক. কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব কী? ১
খ. নির্দেশনাকে প্রশাসনের হৃৎপিণ্ড বলা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত একতা ফ্যাশনস লি.-এ মি. জিহাদ কোন ধরনের নেতৃত্ব প্রয়োগ করেন? বর্ণনা করো। ৩
ঘ.তুমি কি মনে করো পরামর্শমূলক নির্দেশনার যথাযথ অনুসরণই জনতা টেক্সটাইলের সফলতার মূল কারণ? তোমার মতামত দাও।৪
১৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কর্মীদের ভালো-মন্দ, আগ্রহ-অনাগ্রহ বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে যে নেতৃত্ব কার্যক্রম পরিচালিত হয় তাকে কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব বলে।
খ উত্তরঃ লক্ষ্য অর্জনে অধস্তনদের আদেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং তত্তাবধানমূলক কাজকে নির্দেশনা বলে।
হৃৎপিণ্ড মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রাখতে সাহায্য করে। এটি কাজ না করলে মানুষ অচল হয়ে পড়ে।
ঠিক তেমনিভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন যেসব পরিকল্পনা, নিয়ম-নীতি প্রণয়ন করে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদের নির্দেশনা প্রদান করা প্রয়োজন। নির্দেশনা প্রদান করা না হলে প্রশাসনের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এজন্যই নির্দেশনাকে প্রশাসনের হৃৎপিণ্ড বলা হয়।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকের একতা ফ্যাশনস লি.-এ মি. জিহাদ মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্ব প্রয়োগ করেন। লাগামহীন নেতৃত্বে নেতা কর্মীদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে নিজে কর্মবিমুখ থাকেন। নেতা কমীদের সুনির্দিষ্টভাবে আদেশ-নির্দেশ দেন না। এক্ষেত্রে কর্মীরা নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো কাজ করেন।
উদ্দীপকের মি. জিহাদ একতা ফ্যাশনস লি.-এর একজন নির্বাহী পরিচালক। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু এ লক্ষ্য কীভাবে অর্জিত হবে সে বিষয়ে তিনি কোনো নির্দেশনা দেন না। তিনি মনে করেন লক্ষ্য বাস্তবায়ন কীভাবে করতে হবে তা অধস্তনরাই ঠিক করবেন।
তিনি কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখেন। সবকিছু তিনি কর্মীদের ওপর ছেড়ে দেন। ফলে কর্মীরা নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো কাজ করেন। এসব বৈশিষ্ট্য মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্বের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, মি. জিহাদ মুক্ত বা লাগামহীন নেতৃত্ব অনুসরণ করেন।
ঘ উত্তরঃ আমি মনে করি পরামর্শমূলক নির্দেশনার যথাযথ অনুসরণই জনতা টেক্সটাইলের সফলতার মূল কারণ।
এ পদ্ধতিতে নেতা নির্দেশনার বিষয়বস্তু নিয়ে অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। এতে অধস্তনরা নিজেদের মতামত তুলে ধরতে পারেন। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন ও অধস্তনদের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে সবাই স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে কাজ করেন।
উদ্দীপকের মি. কামাল জনতা টেক্সটাইলের কর্ণধার। তিনি কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে কর্মীদের মতামত নেন। কর্মীরা কোনো পরামর্শ প্রদান করলে তিনি তা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেন। ফলে কর্মরত কর্মীরা নিজেকে প্রতিষ্ঠানের একজন অংশীদার মনে করেন।
মি. কামাল অধস্তনদের সাথে পরামর্শ করার ফলে কর্মীরা তাদের করণীয় সম্পর্কে আগেই জেনে যায়। তাই তারা কাজ সম্পাদনে উৎসাহিত হন। তাছাড়া কর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়।
কর্মীরা প্রতিষ্ঠানকে আপন ভেবে স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে কাজ করেন। ফলে সহজেই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জিত হয়। তাই আমি মনে করি, পরামর্শমূলক নির্দেশনার কারণেই জনতা টেক্সটাইলে সফলতা এসেছে।
প্রশ্নঃ ১৮ তিস্তা দুগ্ধ খামার-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মুশফিক। তিনি বিদেশে পড়ালেখা করে উচ্চ ডিগ্রি পেয়েছেন। এরপর দেশে এসে দুগ্ধ খামার ব্যবসায় শুরু করেন। তিনি নিজেকে অন্যের থেকে আলাদা মনে করেন। নিজের সিদ্ধান্ত তিনি সবসময়ই কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেন। অনেক সময় কর্মীদের ভয়-ভীতিও প্রদর্শন করেন। কর্মীরা চাকরি হারানোর ভয়ে কাজ করলেও এ অবস্থার অবসান চান।
[ব. বো. ১৬]
ক. নেতৃত্ব কী? ১
খ. অনানুষ্ঠানিক নেতৃত্ব বলতে কী বোঝায়? ২
গ. তিস্তা দুগ্ধ খামারে কোন ধরনের নেতৃত্ব বিদ্যমান? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ.উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের মানসিক প্রশান্তি ও সর্বাÍক লক্ষ্য অর্জনে কোন ধরনের নেতৃত্বকে তুমি সুপারিশ করবে? যুক্তি দাও।৪
১৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগানোর কৌশলকে নেতৃত্ব বলে।
খ উত্তরঃ সাংগঠনিক কাঠামোর বাইরে ও নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম-নীতি অনুসরণ না করেই ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে সৃষ্ট নেতৃত্বকে অনানুষ্ঠানিক নেতৃত্ব বলে।গোষ্ঠী, সম্প্রদায়, জš§স্থান, রাজনৈতিক মতাদর্শ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের সম্পর্ক তৈরি হতে পারে। এ সম্পর্কের কারণে কেউ কেউ অন্যদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ফলে এক ধরনের অনানুষ্ঠানিক নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়।
এ ধরনের নেতৃত্বের মাধ্যমেও দলের সদস্যদের পরিচালিত করা যায়। প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে কোনো সৎ, বুদ্ধিমান ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে সবাই সম্মান করতে পারে। প্রতিষ্ঠান যেকোনো প্রয়োজনে উক্ত ব্যক্তির মতামতকে গুরুত্ব দিতে পারে। এক্ষেত্রে কোনো সাংগঠনিক কর্তৃত্ব না থাকলেও উক্ত ব্যক্তি অনানুষ্ঠানিক নেতৃত্ব পেয়েছেন বলা যায়।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকে তিস্তা দুগ্ধ খামারে স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব বিদ্যমান। স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা সব ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভ‚ত করে রাখেন। কাজ আদায়ের জন্য তিনি কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। নেতা সব সময় কর্মীদেরেেক চাকরি থেকে ছাঁটাই ও বরখাস্তের হুমকি দেন। এ ধরনের নেতৃত্ব কর্মীরা পছন্দ করেন না।
উদ্দীপকের জনাব মুশফিক তিস্তা দুগ্ধ খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি সব ক্ষমতা নিজের হাতে রাখেন। নিজের সিদ্ধান্ত তিনি কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেন। তাদের থেকে কোনো মতামত নেওয়া তিনি পছন্দ করেন না।
তিনি তাদের আদেশ দিয়ে জোর করে কাজ আদায় করে নেন। তার আচরণে কর্মীরা সব সময় চাকরি হারানোর ভয়ে থাকেন। এভাবে জনাব মুশফিক স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রয়োগ করেন।
ঘ উত্তরঃ উদ্দীপকে তিস্তা দুগ্ধ খামারের কর্মীদের মানসিক প্রশান্তি ও সর্বাÍক লক্ষ্য অর্জনে গণতান্ত্রিক নেতৃত্বই উপযোগী বলে আমি মনে করি। গণতান্ত্রিক নেতৃতে সব কর্মীর মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এক্ষেত্রে কর্মীরা তাদের সুবিধা-অসুবিধা তুলে ধরতে পারেন। নেতা কর্মীদের পরামর্শ ও মতামতকে গুরুত্ব দেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের প্রতি কর্মীরা অনুগত থাকেন। তারা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে সর্বাÍক চেষ্টা করেন।
উদ্দীপকের জনাব মুশফিক নিজের সিদ্ধান্ত কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেন। তাদেরকে চাকরি হারানার ভয় দেখিয়ে কাজ আদায় করার চেষ্টা করেন। ফলে কর্মীরা মানসিকভাবে অসন্তুষ্টিতে থাকেন। তারা এ অবস্থার উত্তরণ চান।
এ পরিস্থিতিতে জনাব মুশফিক গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রয়োগ করতে পারেন। এ ধরনের নেতৃত্ব গ্রহণ করলে কর্মীরা নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতে পারবেন। এতে তারা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠানের অংশ মনে করবেন।
তাছাড়া জনাব মুশফিক কর্মীদের চাকরি হারানোর ভয় না দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানে তাদের গুরুত্ব তুলে ধরতে পারেন। এতে কর্মীদের মধ্যে মানসিক প্রশান্তি আসবে, যা তাদের স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করবে। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনও সহজ হবে। তাই আমি মনে করি, তিস্তা দুগ্ধ খামারে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করা উচিত।
প্রশ্নঃ ১৯ জনাব শাওন ‘পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ’ এর উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি কর্মীদের এবং প্রতিষ্ঠানে সময় কম দেন। কর্মীদের করণীয় কী তা বুঝিয়ে দেন এবং পরামর্শ দিয়ে বাহিরে অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতে কর্মীরা কার্য সম্পাদনকালে কোনো কাজে সমস্যা দেখা দিলে জনাব শাওনের সাথে পরামর্শ করতে পারেন না। কাজ সম্পাদনে সৃষ্ট সমস্যা সমধানে কোনো উপায় পায় না বলে প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। [রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]
ক. সিদ্ধান্ত গ্রহণ কী? ১
খ. কর্মী নির্বাচনকে নেতিবাচক পদ্ধতি বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব শাওনের নেতৃত্বের ধরন কী? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে সমস্যা সমাধানে নির্দেশনার কোন পদ্ধতি প্রয়োজন বলে তুমি মনে করো? বিশ্লেষণ করো। ৪
১৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ সিদ্ধান্ত গ্রহণ হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের সঠিক ও সর্বোত্তম কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়।
খ উত্তরঃ যে প্রক্রিয়ায় চাকরি প্রার্থীদের মধ্য থেকে সর্বোত্তম ও যোগ্য কর্মী বাছাই করা হয় তাকে কর্মী নির্বাচন বলে।
কর্মী নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধাপে লিখিত, মৌখিক ও বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরি প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করা হয়।
কোনো ধাপে কোনো প্রার্থী অকৃতকার্য হলে তাকে বাদ দেওয়া হয়। এভাবে কর্মী নির্বাচনের প্রতিটি ধাপেই কৃতকার্যদের রেখে অকৃতকার্য কর্মীদের বাদ দেওয়া হয়। এজনই কর্মী নির্বাচনকে নেতিবাচক পদ্ধতি বলা হয়।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব শাওনের নেতৃত্বটি লাগামহীন নেতৃত্বের অন্তর্গত। এ নেতৃত্বে নেতা নিজেকে কাজ থেকে দূরে রাখেন এবং অধস্তন কর্মীদের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করেন। এরূপ নেতৃত্বে অধস্তন কর্মীরা অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করে।
উদ্দীপকে জনাব শাওন ‘পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের এবং প্রতিষ্ঠানে সময় কম দেন। প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের করণীয় কী, তিনি তা বুঝিয়ে দিয়ে নিজের অন্যান্য কাজে ব্যাস্ত থাকেন।
এতে কর্মীদের কাজ সম্পাদনে সমস্যা দেখা দেয়। এসব বৈশিষ্ট্য লাগামহীন নেতত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, জনাব শাওনের নেতৃত্বটি হলো লাগামহীন নেতৃত্ব।
ঘ উত্তরঃ উদ্দীপকের সমস্যা সমাধানে পরামর্শমূলক নির্দেশনা পদ্ধতি প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এ পদ্ধতিতে কর্মীদের সাথে আগে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নির্দেশনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। এছাড়াও তিনি অধস্তনদের পরামর্শ গ্রহণের চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন ও অধস্তনদের মধ্যে সুসম্পর্ক লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকে জনাব শাওন পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ-এর উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কাজের নির্দেশ দিয়ে বাইরে নিজ কাজে ব্যস্ত থাকেন। এতে কর্মীদের কাজে সমস্যা দেখা দিলে তারা পরামর্শ করার মতো কাউকে পান না। ফলে প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
পরামর্শমূলক নির্দেশনা পদ্ধতিতে নেতা প্রতিষ্ঠানের যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে নেন। এতে কর্মীদের মধ্যে কাজের প্রতি উৎসাহ উদ্দীপনা বৃদ্ধি পায়।
তাছাড়া এই নির্দেশনা পদ্ধতিতে কর্মীরা সব সময় নেতাকে কাছে পায়। ফলে নেতার সাথে আলোচনা করে যেকোনো সমস্যার দ্রুত সমাধান করা সম্ভব। তাই উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির সমস্যা সমাধানে পরার্শমূলক নির্দেশনা পদ্ধতি প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
প্রশ্নঃ ২০ স্টার টেক্সাইল লি. একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১,৫০০ জন কর্মী কাজ করে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মনে করেন, কর্তৃপক্ষের অধিক সহানুভ‚তিশীলতার সুবাদে কর্মীরা অলস হয়ে পড়েছে এবং কর্মীরা কাজ এড়িয়ে চলায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। তাই তিনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে কর্মীদের থেকে কাজ আদায় করতে চান এবং কোনো পরিকল্পনা প্রণয়নে কর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
[ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক. নেতৃত্ব কী? ১
খ. লক্ষ্য অর্জনে “একতাই বল” নীতি গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে ক্ষমতা প্রয়োগের ধরন বিচারে “স্টার টেক্সাইল লি.-এ কোন ধরনের নেতৃত্ব বিদ্যমান আছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. বর্তমান পরিস্থিতিতে উলিখিত প্রতিষ্ঠান যে ধরনের নেতৃত্ব গ্রহণের কথা ভাবছে, তা কী? তুমি কি উক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ যৌক্তিক মনে করো? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
২০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ অধস্তনদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগানোর কৌশলকে নেতৃত্ব বলে।
খ উত্তরঃ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সব ব্যক্তি, বিভাগ ও উপবিভাগ সর্বাবস্থায় ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কাজ করার নীতিকেই একতাই বল নীতি বলে। প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগ ও উপবিভাগে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ নিজ নিজ ক্ষেত্রে পরস্পর ঐক্যবদ্ধ থেকে সহজেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।
আর এই পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ করাই হলো একতাই বল নীতি। এ নীতি অনুযায়ী কর্মীদের মধ্যে দলগত চেতনা ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যার্জনের জন্য সব কর্মীকে একতাবদ্ধ থাকতে হয়। এতে কর্মীরা কাজ করতে উৎসাহী হয়। তাই লক্ষ্য অর্জনে একতাই বল নীতি গুরুত্বপূর্ণ।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকে ক্ষমতা প্রয়োগের ধরন বিচারে ‘স্টার টেক্সটাইল লি.’-এ লাগামহীন নেতৃত্ব বিদ্যমান। এ নেতৃত্বে নেতা কর্মীদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকেন। ফলে কর্মীরা ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে। এ ক্ষেত্রে নেতা নিজে কাজ করতে পছন্দ করেন না। আবার কর্মীদেরকে সুনির্দিষ্ট আদেশও দেন না।
উদ্দীপকে ‘স্টার টেক্সটাইল লি.’একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫০০ জন কর্মী কাজ করে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মনে করেন কর্তৃপক্ষের অধিক সহানুভ‚তিশীলতার কারণে কর্মীরা অলস হয়ে পড়েছে।
কর্মীরা কাজ এড়িয়ে চলায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। এ কাজগুলো লাগামহীন নেতৃত্বের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই বলা যায়, ‘স্টার টেক্সটাইল লি.’-এ লাগামহীন নেতৃত্ব বিদ্যমান।
HSC ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১৬-২০ | PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (১ম পত্র) ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা ১ম পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(১ম পত্র)১ম: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্ন উত্তরসহ PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্নের উত্তরসহ অধ্যায়-১: PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC অধ্যায়-১: প্রশ্নের উত্তরসহ ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তরPDF
ঘ উত্তরঃ বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্দীপকে উলিখিত প্রতিষ্ঠানটি স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের কথা ভাবছে। প্রতিষ্ঠানের এ পদক্ষেপটি যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।এ নেতৃত্বে নেতা সব ক্ষমতা নিজের কাছে রাখেন এবং ইচ্ছামতো এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এ ক্ষেত্রে যা ভালো মনে করেন তাই করেন।
তিনি কাজের জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকেন না।উদ্দীপকে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মনে করেন কর্তৃপক্ষের অধিক সহানুভ‚তিশীলতার সুযোগে কর্মীরা অলস হয়ে পড়েছে। কর্মীরা কাজ এড়িয়ে চলায় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।
তাই তিনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায় করতে চান। তাছাড়া কোনো পরিকল্পনা প্রণয়নে কর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। উক্ত সিদ্ধান্তটি স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বরই প্রতিফলন।
স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের ফলে ঐ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা নেতার নির্দেশে কাজ করতে বাধ্য থাকবে। কাজের চাপ ও শাস্তির ভয়ে তারা দ্রুত কাজ সম্পন্ন করবে। প্রতিষ্ঠানে নেতার কর্তৃত্বও বজায় থাকবে।
এই নেতৃত্বে কর্মীরা অপরাধ করলেও মাঝে মাঝে এটি প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক সাফল্য নিয়ে আসে। তাই বলা যায়, উক্ত প্রতিষ্ঠানে স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বই উপযুক্ত হবে বলে আমি মনে করি।
HSC ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১৬-২০ | PDF ফ্রি ডাউনলোড করুন
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।