HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF: বাংলা ১ম পত্র বিষয়টি হতে যেকোনো ধরনের প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের জাদুঘরে কেন যাব উপসন্যাসটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান:
শিখন ফল
‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধের লেখক সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।
প্রবন্ধটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত হবে।
জ্ঞান অর্জনের উপায় ও জাদুঘরের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সম্যক অবগত হবে।
জাদুঘরে সংরক্ষিত চমকপ্রদ, অনন্য, লুপ্তপ্রায়, বিস্ময় উদ্রেককারী বস্তুগুলো সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানতে পারবে।
জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও আত্মপরিচয়ের সূত্র সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে।
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ভাবনা সৃষ্টি, ভাবাদর্শ ও চেতনার জাগতিক এবং মনোজগতের সমৃদ্ধি সম্পর্কে জ্ঞাত হবে।
মানুষের উদ্ভাবন নৈপুণ্য, নিরলস সৃষ্টিক্ষমতা এবং সৌন্দর্যসাধনা সম্পর্কে জানতে পারবে।
ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্য বিষয়ে জনগণের সম্পত্তি সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারবে।
পাঠ-পরিচিতি
এ রচনাটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে শামসুল হোসাইনের সম্পাদনায় প্রকাশিত স্মারক পুস্তিকা ‘ঐতিহ্যায়ন’ (২০০৩) থেকে সংকলিত হয়েছে।
জাদুঘর হচ্ছে এমন এক সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান, যেখানে মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় ও ঐতিহাসিক নিদর্শন সংগ্রহ করে রাখা হয় প্রদর্শন ও গবেষণার জন্যে।
অর্থাৎ জাদুঘর কেবল বর্তমান প্রজন্মের কাছে নিদর্শনগুলো প্রদর্শন করে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যেও সেগুলো সংরক্ষণ করে রাখে। সংগৃহীত নিদর্শনগুলোকে জাদুঘরে যথাযথভাবে পরিচিতিমূলক বিবরণসহ এমন আকর্ষণীয়ভাবে প্রদর্শন করা হয়, যেন তা থেকে দর্শকরা অনেক কিছু জানতে পারেন, পাশাপাশি আনন্দও পান।
এ ছাড়াও জাদুঘরে আয়োজন করা হয় বক্তৃতা, সেমিনার, চলচ্চিত্র প্রদর্শন ইত্যাদির। পরিদর্শকদের মধ্যে জানার কৌতূহল বাড়িয়ে তোলাই এর উদ্দেশ্য। এভাবে জাদুঘর ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ইত্যাদি সম্পর্কিত জ্ঞান ও তথ্যের সঙ্গে জনগণকে আকৃষ্ট ও সম্পৃক্ত করায় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।
এ গুরুত্বের কথা এবং মানব জাতির আত্মপরিচয় তুলে ধরায় নানা ধরনের জাদুঘরের ভূমিকার কথা বর্ণিত হয়েছে এ প্রবন্ধে। প্রবন্ধটি উপস্থাপন করা হয়েছে আকর্ষণীয় ঢঙে ও মনোগ্রাহী ভাষায়।
লেখক পরিচিতি
নাম: আনিসুজ্জামান
জন্ম ও পরিচয় জন্ম তারিখ : ১৮ ফেব্র“য়ারি, ১৯৩৭
জন্মস্থান : কলকাতা, ভারত।
পিতৃ ও মাতৃ পরিচয় পিতার নাম : ডা. এ.টি.এম. মোয়াজ্জম
মাতার নাম : সৈয়দা খাতুন
শিক্ষাজীবন মাধ্যমিক : প্রবেশিকা, প্রিয়নাথ স্কুল, ঢাকা, ১৯৫১ সাল।
উচ্চ মাধ্যমিক : আইএ, জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা, ১৯৫৩ সাল।
উচ্চতর ডিগ্রি : বিএ (অনার্স), এমএ (বাংলা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; পিএইচডি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা : শিকাগো ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়।
কর্মজীবন ও পেশা অধ্যাপক : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইমেরিটাস অধ্যাপক।
সাহিত্যকর্ম গবেষণা ও প্রবন্ধ গ্রন্থ : ‘মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য, ‘মুসলিম বাংলার সাময়িক পত্র, ‘স্বরূপের সন্ধানে, ‘আঠারো শতকের চিঠি, ‘পুরোনো বাংলা গদ্য, ‘বাঙালি নারী; সাহিত্যে ও সমাজে, ‘বাঙালি সংস্কৃতি ও অন্যান্য, ‘ইহজাগতিকতা ও অন্যান্য, ‘সংস্কৃতি ও সংস্কৃতি সাধক, ‘চেনা মানুষের মুখ ইত্যাদি। :
মানসী, সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালি, ক্ষণিকা, নৈবেদ্য, গীতাঞ্জলি, বলাকা, পূরবী, পুনশ্চ, বিচিত্রা, সেঁজুতি, জন্মদিনে, শেষলেখা বিশেষ উলেখযোগ্য।
বিশেষ কৃতিত্ব উচ্চমানের গবেষণা ও সাবলীল গদ্য রচনার জন্য খ্যাতি অর্জন।
পদক ও পুরস্কার সাহিত্য ও গবেষণায় কৃতিত্বের জন্য তিনি ‘একুশে পদক’ ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ‘আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডি.লিট ও ভারত সরকার প্রদত্ত ‘পদ্মভূষণ’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
উৎস পরিচিতি
এ রচনাটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে শামসুল হোসাইনের সম্পাদনায় প্রকাশিত স্মারক পুস্তিকা ‘ঐতিহ্যায়ন’ (২০০৩) থেকে সংকলিত হয়েছে।
বস্তুসংক্ষেপ
আনিসুজ্জামান বাংলাদেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, উচ্চমানের গবেষক, প্রাবন্ধিক ও মনস্বী অধ্যাপক। তাঁর ‘জাদুঘরে কেন যাব’ প্রবন্ধটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে শামসুল হোসাইনের সম্পাদনায় প্রকাশিত স্মারক পুস্তিকা ‘ঐতিহ্যায়ন’ (২০০৩) থেকে সংকলিত হয়েছে।
জাদুঘর এমন এক সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান যেখানে মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় ও ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহ সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও গবেষণার জন্য সুবিন্যস্তভাবে সংগ্রহ করে রাখা হয়।
খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে আলেকজান্দ্রিয়ায় পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল। কালক্রমে প্রাচীন জিনিসপত্র সম্পর্কে সচেতন মানুষের আগ্রহ বাড়ছিল এবং সম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিবারের উদ্যোগে তা সংগৃহীত হয়ে জাদুঘর গড়ার ভিত্তি রচনা হচ্ছিল।
ক্রমে রাজা-মহারাজ বা সামন্ত প্রভুরা এ ধরনের সংগ্রহশালা গড়ে তুলতে শুরু করেন। ফরাসি বিপ্লবের পর প্রজাতন্ত্রই সৃষ্টি করে ল্যুভ, উন্মোচিত হয় ভের্সাই প্রাসাদের দ্বার। রুশ বিপ্লবের পর লেনিনগ্রাদের রাজপ্রাসাদে গড়ে তোলা হয় হার্মিতিয়ে। সতোরো শতকে ব্রিটেনের প্রথম পাবলিক মিউজিয়াম গড়ে ওঠে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। আঠারো শতকে রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় ব্রিটিশ মিউজিয়াম।
পুঁজিবাদের সমৃদ্ধি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশের ফলে উনিশ শতকে জাদুঘরের সংখ্যা বেড়ে যায়। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোও তাদের উপনিবেশে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করতে থাকে। সদ্য স্বাধীন দেশগুলোও আত্মপরিচয়দানের প্রেরণায় জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়।
আজকের দিনে জাদুঘরের বৈচিত্র্য খুবই চোখে পড়ে। সেগুলো একদিকে যেমন সংগ্রহের বিষয়গত, তেমনি অন্যদিকে গঠনগত ও প্রশাসনগত।
প্রততত্ত¡ ও ইতিহাস, মানববিকাশ ও নৃতত্ত¡, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, স্থানীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি, সামরিক ইতিহাস, পরিবহন ব্যবস্থা, বিমানযাত্রা, মহাকাশ ভ্রমণ, পরিবেশ, কৃষি, উদ্ভিদবিজ্ঞান, জীবতত্ত¡, শিল্পকলা ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের জাদুঘর গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে বর্তমানে। মৎস্যাধার ও নক্ষত্রশালাও এখন জাদুঘর হিসেবে বিবেচিত। উন্মুক্ত জাদুঘর এখন খুবই প্রচলিত।
আমাদের দেশ থেকে উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, চট্টগ্রামের জাতিতাত্তি¡ক জাদুঘর, ঢাকার নগর জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু জাদুঘর, বিজ্ঞান জাদুঘর, সামরিক জাদুঘর, আহসান মঞ্জিল জাদুঘর, রাজশাহীর বরেন্দ্র মিউজিয়াম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর, ঢাকার বলধা গার্ডেন এবং বিভিন্ন প্রতœতাত্তি¡ক খনন এলাকায় সাইট মিউজিয়াম। জাদুঘরের একটা সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে যা চমকপ্রদ, বা অনন্য, যা লুপ্তপ্রায়, যা বিস্ময় উদ্রেককারী এমন সব বস্তু সংগ্রহ করা, যা দেখে মানুষ আপ্লুত হয়।
বাংলার হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতির নমুনা ঢাকা জাদুঘরে দেখে লেখক বাঙালির আত্মপরিচয় খুঁজে পেয়েছিলেন। অসংখ্য বৌদ্ধমূর্তি, পৌরাণিক ও লৌকিক দেবদেবী, মুদ্রা, অস্ত্রশস্ত্র, ঈসা খাঁর কামানে বাংলা লেখা, পোড়ামাটির কাজ ইত্যাদি বাংলা ও বাঙালির আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। জাদুঘরের প্রধান কাজ হলো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণ এবং জাতিকে আত্মপরিচয়ের সূত্র জানানো। এদিক থেকে জাদুঘর একটা শক্তিশালী সামাজিক সংগঠন।
সমাজের এক স্তরে সঞ্চিত জ্ঞান জনসমাজের সাধারণ স্তরে ছড়িয়ে দেয়াই এর কাজ। বস্তুত জাদুঘর আমাদের জ্ঞান দান করে, আমাদের শক্তি জোগায়, আমাদের চেতনা জাগ্রত করে এবং আমাদের মনোজগৎকে সমৃদ্ধ করে। কাজেই জাদুঘর দেখতে যাওয়া আমাদের অনিবার্য কর্তব্য।
নামকরণ
বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে প্রবন্ধের নামকরণ করা হয়েছে ‘জাদুঘরে কেন যাব’। এতে খুবই সংরক্ষিত পরিসরে জাদুঘরের ইতিহাস, পৃথিবী বিখ্যাত জাদুঘরের পরিচিতি, জাদুঘরের গুরুত্ব ও মহিমা আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। পৃথিবীর প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হয়েছিল আলেকজান্দ্রিয়ায় খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে। এতে ছিল নিদর্শন সংগ্রশালা ও গ্রন্থাগার। ক্রমে ক্রমে প্রাচীন জিনিসপত্র সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। ফরাসি বিপ্লবের পরে ল্যুভ জাদুঘর, রুশ বিপ্লবের পরে হার্মিতিয়ে এবং রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় ব্রিটিশ মিউজিয়াম।
জাদুঘর এখন নানা বৈচিত্র্যে ভাস্বর। বাংলাদেশের নানা জায়গায় রয়েছে হরেক রকম জাদুঘরÑবাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, চট্টগ্রামের জাতিতাত্তি¡ক জাদুঘর, রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বিজ্ঞান ও সামরিক জাদুঘর ইত্যাদি। এসব জাদুঘর যা কিছু চমকপ্রদ, অনন্য, লুপ্তপ্রায়, বিস্ময় উদ্রেককারী তা সংগ্রহ করে রাখা হয়। জাদুঘরের প্রধান কাজ হলো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণ ও জাতিকে আত্মপরিচয়ের সূত্র জানানো।
কাজেই জাদুঘরে যাওয়া খুব জরুরি। কেননা, জাদুঘর আমাদের জ্ঞান দান করে শক্তি জোগায় ও আনন্দ দেয়, জাতীয় চেতনা জাগ্রত করে এবং মনোজগতকে সমৃদ্ধ করে। তাই জাদুঘরতত্ত¡ এখন বিদ্যায়তনিক বিষয় যা স্বতন্ত্র শৃঙ্খলা হিসেবে বিকশিত হচ্ছে। সুতরাং আত্মপরিচয়ের সন্ধানে নিজেকে সম্যকভাবে আবিষ্কার করতে আমরা জাদুঘরে যাব। কাজেই ‘জাদুঘরে কেন যাব’ নামকরণ যথার্থ ও যুক্তিযুক্ত হয়েছে।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর | PDF
শব্দার্থ ও টীকা
মিউজিয়াম স্টাডিজ- জাদুঘর বা প্রদর্শনশালা সংক্রান্ত বিদ্যা।
আলেকজান্দ্রিয়া- উত্তর মিশরের প্রধান সমুদ্রবন্দর ও সুপ্রাচীন নগর। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩২ অব্দে আলেকজান্ডার দি গ্রেট এ নগর পত্তন করেন। এটি ছিল আলেকজান্ডার যুগের গ্রিক সভ্যতার কেন্দ্র। এখানে বিশ্বের প্রাচীন গ্রন্থাগার (পরে ধ্বংসপ্রাপ্ত) ছিল।
অবিদিত – জানা নেই এমন। অজানা। অজ্ঞাত।
ইউরোপীয় রেনেসাঁস – খ্রিষ্টীয় চৌদ্দো থেকে ষোলো শতক ধরে ইউরোপে শিল্প-সাহিত্য, জ্ঞানচর্চা ও চিন্তা-চেতনার ক্ষেত্রে নবজাগরণের মাধ্যমে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগে উত্তরণই ইউরোপীয় রেনেসাঁস।
ফরাসি বিপ্লব – ইউরোপের প্রথম বুর্জোয়া বিপ্লব। ১৭৮৯ সালের ১৪ই জুলাই ফরাসি জনগণ সেখানকার কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গ ও কারাগার দখল করে নেয় এবং সমস্ত বন্দিকে মুক্তি দেয়। এর মাধ্যমে এই বিপ্লবের সূচনা হয়। এই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয় ধনিক শ্রেণি আর অত্যাচারিত কৃষকরা ছিল তাদের সহযোগী। বিপ্লবের মূল বাণী ছিল ‘মুক্তি, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও সম্পত্তির পবিত্র অধিকার।’ এই বিপ্লবের ফলে সামন্তবাদের উৎপাটন সম্ভব হয়।
রুশ বিপ্লব – ১৯১৭ সালের ৭ই নভেম্বর বিপ্লবী নেতা লেনিনের নেতৃত্বে রাশিয়ায় সর্বহারার দল বলশেভিক পার্টি সেখানকার জারতন্ত্রকে হটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। এই বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়ায় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। সমস্ত সম্পত্তি ও উৎপাদনের উপায়ের মালিক হয় জনগণ তথা রাষ্ট্র।
টাওয়ার অব লন্ডন – লন্ডনের টেমস নদীর উত্তর তীরবর্তী রাজকীয় দুর্গ। এর মূল অংশে রয়েছে সাদা পাথরের গম্বুজ। এটি নির্মিত হয় ১০৭৮ খ্রিষ্টাব্দে। এক সময় দুর্গটি রাজকীয় ভবন ও রাষ্ট্রীয় কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে অস্ত্রশালা ও জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত।
গোচরীভত – অবগত। পরিজ্ঞাত।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় – যুক্তরাজ্যের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় বারো শতকের প্রথম দিকে। শিল্পকলা ও প্রতœতত্ত¡ সংক্রান্ত জাদুঘর অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান।
অ্যাশমল – ইংরেজ পুরাকীর্তি সংগ্রাহক। জন্ম ১৬১৭; মৃত্যু ১৬৯২। তিনি রসায়ন ও পুরাকীর্তি বিষয়ে কয়েকটি বই লিখেছেন। তাঁর সংগ্রহগুলি দিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম।
অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম – ইংরেজ পুরাকীর্তি সংগ্রাহক অ্যাশমলের সংগ্রহ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘর। এই সংগ্রহশালার প্রাচীন ভবন গড়ে ওঠে ১৬৭৯-১৬৮৩ কালপর্বে। বর্তমান অ্যাশমোলিয়ান মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯৭ সালে।
ব্রিটিশ মিউজিয়াম – প্রততত্ত¡ ও পুরাকীর্তি সংক্রান্ত এই জাদুঘর ব্রিটেনের জাতীয় জাদুঘর। প্রতিষ্ঠাকাল ১৭৫৩। সে সময়ে ব্রিটিশ সরকার স্যার হ্যানস ¯েøান, স্যার রবার্ট কটন, আর্ল অব অক্সফোর্ড রবার্ট হার্লি এই তিনজন সংগ্রাহকের বই, পাণ্ডুলিপি, মুদ্রা, পুরাকীর্তি ইত্যাদির বিশাল ব্যক্তিগত সংগ্রহ ক্রয় করে এই জাদুঘর গড়ে তোলে।
প্রততত্ত – এই বিদ্যায় প্রাচীন মুদ্রা, পুরাকীর্তি ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করে প্রাচীন ইতিহাস আবিষ্কার করা হয়। পুরাতত্ত¡। ধৎপযধবড়ষড়মু।
নৃতত্ত¡ – মানব জাতির উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান। নৃবিদ্যা। ধহঃযৎড়ঢ়ড়ষড়মু।
মৎস্যাধার – মাছ পালনের কাচের আধার। মাছের চৌবাচ্চা। জলজ প্রাণী বা উদ্ভিদ সংরক্ষণের কৃত্রিম জলাধার। ধয়ঁধৎরঁস।
ল্যুভ – খড়াঁৎব গঁংবঁস। ফ্রান্সের জাতীয় জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি। প্যারিসে অবস্থিত এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় ১৫৪৬ খ্রিষ্টাব্দে। এই জাদুঘরের চিত্রশিল্পের সংগ্রহ বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ সংগ্রহ হিসেবে বিবেচিত।
হার্মিটেজ – সন্ন্যাসীর নির্জন আশ্রম। মঠ। যবৎসরঃধমব।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর – বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জাদুঘর। এ দেশের ইতিহাস, প্রতœতত্ত¡, নৃতত্ত¡, শিল্পকলা ও প্রাকৃতিক ইতিহাসের নিদর্শন সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও গবেষণার কাজে এটি নিয়োজিত। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা জাদুঘর হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে ঢাকা মহানগরের শাহবাগে এর অবস্থান।
জাতিতাত্তি¡ক জাদুঘর – এ জাদুঘর বাংলাদেশের অনন্য জাদুঘর। চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদে অবস্থিত এ জাদুঘরে বাংলাদেশের পঁচিশটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বিদেশি পাঁচটি দেশের জাতিতাত্তি¡ক বৈশিষ্ট্যের নিদর্শন প্রদর্শনের জন্য রয়েছে।
ঢাকা নগর জাদুঘর – ঢাকা সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত এই জাদুঘর নগর ভবনে অবস্থিত। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে। এর লক্ষ ঢাকা নগরের ঐতিহাসিক নিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণ। এ জাদুঘর ঢাকা সংক্রান্ত বেশকিছু বই প্রকাশ করেছে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর – বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রথম জাদুঘর। মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শন ও স্মারক সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্যে এ জাদুঘর বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস সবার সামনে তুলে ধরার কাজেই জাদুঘর অনন্য অবদান রেখে আসছে।
বঙ্গবন্ধু জাদুঘর – এই জাদুঘর ঢাকার ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাসভবনকে ১৯৯৭ সালে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। এই জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক দুর্লভ ছবি, তাঁর জীবনের শেষ সময়ের কিছু স্মৃতিচিহ্ন এবং তাঁর ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শনের জন্যে রাখা হয়েছে।
বিজ্ঞান জাদুঘর – ঢাকায় অবস্থিত এই জাদুঘরের প্রাতিষ্ঠানিক নাম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর। ১৯৬৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে ভৌতবিজ্ঞান, শিল্পপ্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি, মজার বিজ্ঞান, ইত্যাদি গ্যালারি ছাড়াও সায়েন্স পার্ক, আকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার ইত্যাদি রয়েছে। এই জাদুঘর তরুণ বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনামূলক কাজে প্রণোদনা দিয়ে থাকে।
সামরিক জাদুঘর – ১৯৮৭ সালে মিরপুর সেনানিবাসের প্রবেশদ্বারে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে শহরের কেন্দ্রস্থল বিজয় সরণিতে এটি স্থানান্তরিত হয়। প্রাচীন যুগের সমরাস্ত্র, ট্যাংক, ক্রুজারসহ নানা ধরনের আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র, আঠারো শতক থেকে এ পর্যন্ত ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কামান, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিভিন্ন স্মারক ইত্যাদি দেখার সুযোগ এ জাদুঘরে রয়েছে।
বরেন্দ্র জাদুঘর – প্রাতিষ্ঠানিক নাম বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর। ১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত ও রাজশাহীতে অবস্থিত। এ জাদুঘর বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘর। এখানে ভাস্কর্য, খোদিত লিপি, পাণ্ডুলিপি ও প্রাচীন মুদ্রার মূল্যবান সংগ্রহ রয়েছে। বাংলার প্রাচীন ও মধ্যযুগের ইতিহাস, শিল্পকলা ও প্রতœতত্ত¡ ইত্যাদি সম্পর্কে গবেষণায় এগুলি আকর-উপাদান হিসেবে গণ্য।
বলধা গার্ডেন – ঢাকা মহানগরের ওয়ারীতে এর অবস্থান। এটি একাধারে উদ্ভিদ উদ্যান ও জাদুঘর। ভাওয়ালের জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ১৯০৯ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই জাদুঘরের অনেক নিদর্শন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বলধা গার্ডেনে দেশি-বিদেশি অনেক প্রজাতির গাছপালার আকর্ষণীয় সংগ্রহ রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর – চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ কর্তৃক হস্তান্তরিত ছোট সংগ্রহ নিয়ে ১৯৭৩ সালে এই জাদুঘরের যাত্রা শুরু। এই জাদুঘরে রয়েছে টার্সিয়ারি যুগের মাছের জীবাশ্ম, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতœক্ষেত্রের উৎখননকৃত শিল্পবস্তু, প্রাচীন ও মধ্যযুগের মুদ্রা, শিলালিপি, ভাস্কর্য, অস্ত্রশস্ত্র, লোকশিল্প ইত্যাদি নিদর্শন ও মুক্তিযুদ্ধের কিছু দলিলপত্র। এ ছাড়া একাডেমিক প্রদর্শনী, সেমিনার ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে এ জাদুঘর সক্রিয় ভ‚মিকা রেখে যাচ্ছে।
দ্বিজাতি তত্ত – ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ভারতকে ধর্মীয় প্রাধান্যের ভিত্তিতে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রে বিভক্ত করার রাজনৈতিক মতবাদ। বিশ শতকের চলিশের দশকে এ ধারণার উদ্গাতা তদানীন্তন মুসলিম লীগ নেতা মুহম্মদ আলী জিন্নাহ।
স্থাপত্য – ভবন প্রাসাদ ইত্যাদি স্থাপনের কাজ বা এ সংক্রান্ত কলাকৌশল বা বিজ্ঞান। ধৎপযরঃবপঃঁৎব।
ভাস্কর্য – ধাতু বা পাথর ইত্যাদি খোদাইয়ের শিল্প। মূর্তিনির্মাণ কলা। ংপঁষঢ়ঃঁৎব।
কলকাতা জাদুঘর – এটি ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম বা ভারতীয় জাদুঘর নামেও সমধিক পরিচিত। কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে অবস্থিত এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৪ সালে। এটিই ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন জাদুঘর।
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল – প্রাতিষ্ঠানিক নাম ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল। রানি ভিক্টোরিয়ার নামাঙ্কিত স্মৃতিসৌধ। কলকাতা ময়দানের দক্ষিণ কোণে অবস্থিত সুরম্য শ্বেতপাথরে নির্মিত এই স্মৃতিসৌধ অপূর্ব স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন।
গ্রেকো রোমান মিউজিয়াম – মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায় অবস্থিত এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে। এতে খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকের পুরানিদর্শনসহ প্রাচীন গ্রিক-রোমান সভ্যতার অনেক নিদর্শন সংরক্ষিত আছে।
কায়রো মিউজিয়াম- মিশরের কায়রোতে অবস্থিত এই জাদুঘর মিশরীয় জাদুঘর নামেও পরিচিত। এটি ১৮৩৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় এক লক্ষ বিশ হাজার প্রদর্শন সামগ্রী রয়েছে।
বানান সতর্কতা
পাশ্চাত্যদেশে, জাদুঘরতত্ত, মিউজিওলজি, স্বতন্ত্র, শৃঙ্খলা, খ্রিষ্টপূর্ব, দর্শনার্থী, সংগ্রহশালা, উদ্ভিদউদ্যান, গণতন্ত্র, উন্মোচিত, চক্ষুগ্রাহ্য, উন্মুক্ত, রাষ্ট্রীয়, সাম্রাজ্যবাদী, শিল্পোন্নতি, দৃষ্টান্ত, প্রতœতাত্তি¡ক, বৈচিত্র্য, শিল্পকলা, নক্ষত্রশালা, কৌতূহলোদ্দীপক, অস্ত্রশস্ত্র, সংরক্ষণ, উদ্ভাবননৈপুণ্য।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।