ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় | অধ্যায় ৩ | সৃজনশীল প্রশ্ন ১১-১৫ | PDF: ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্রের তৃতীয় অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্রের তৃতীয় অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় | অধ্যায় ৩ | সৃজনশীল প্রশ্ন ১১-১৫ | PDF
প্রশ্ন ১১ মি. আতিক একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ের প্রয়োজনে তিনি তার এলাকার একটি ব্যাংকের সাথে বিভিন্ন ধরনের লেনদেন করেন। ব্যবসায় সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে তিনি ৫০,০০০ টাকা ঋণ সহায়তার জন্য তার ব্যাংক- এ আবেদন করেন। ব্যাংকের ঝখজ ২০%। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা সংকোচন নীতির আওতায় এক সার্কুলারের মাধ্যমে ব্যাংক হার ও জমার হার বৃদ্ধি করায় আতিকের ব্যাংকটি ঋণ সহায়তা দিতে পারগতা প্রকাশ করে।[দি. বো. ১৬]
ক.তালিকাভুক্ত ব্যাংক কী?১
খ.শাখা ব্যাংক বলতে কী বোঝায়?২
গ.উদ্দীপকে আতিকের ব্যাংকটি কী পরিমাণ ঋণ-আমানত সৃষ্টি করতে পারে? ব্যাখ্যা করো।৩
ঘ.উদ্দীপকে আতিকের ব্যাংকটি কেন ঋণ সহায়তা দিতে পারগতা প্রকাশ করল তার যথাঅর্থতা মূল্যায়ন করো।৪
১১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: যেসব ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা মেনে নিয়ে এর তালিকার ন্তর্ভুক্ত হয় তাকে তালিকাভুক্ত ব্যাংক বলে।
খ উত্তর: একটি প্রধান ফিসের নিয়ন্ত্রণে যখন কোনো ব্যাংক বিভিন্ন স্থানে শাখা স্থাপনের মাধ্যমে তাদের ব্যাংকিং কাজ সম্পাদন করে তাই হলো শাখা ব্যাংক।
শাখা ব্যাংকের প্রশাসন সাধারণত কেন্দ্রীভ‚ত থাকে। এটি রাষ্ট্রীয়, সমবায় বা ব্যক্তি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। আইনের মাধ্যমে এ ব্যাংক গঠিত হয় বলে এ ব্যাংকের আইনগত সত্তা বিদ্যমান।
গ উত্তর: দেয়া আছে, বিধিবদ্ধ তারল্য সঞ্চিতি (ঝখজ) = ২০%
তাহলে,
বহুগুণিত চাহিদা আমানত সৃষ্টি হবে= ১বিধিবদ্ধ তারল্য সঞ্চিতি
= ১২০% = ১২০১০০
= ১ ূ ১০০২০ = ৫ গুণ
আতিকের জন্য বরাদ্দকৃত আমানত থেকে তার ব্যাংকটি ঋণ আমানত সৃষ্টি করতে পারে = ৫০,০০০ ূ ৫ = ২,৫০,০০০ টাকা।
উদ্দীপকে আতিকের ব্যাংকটি মোট ২,৫০,০০০ টাকা ঋণ আমানত সৃষ্টি করতে পারে।
উত্তর: ২,৫০,০০০ টাকা।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে আতিকের ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংক হার নীতি ও জমার হার বৃদ্ধির প্রভাবের কারণে ঋণ সহায়তা প্রদানে পারগতা প্রকাশ করল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত বিদ্যমান ব্যাংক হারের হ্রাস-বৃদ্ধি করে ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ কৌশলকে ব্যাংক হার নীতি বলে। ব্যাংক হার নীতি ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংক জমার হার পরিবর্তন করে ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, যা জমার হার পরিবর্তন নীতি নামে পরিচিত।
উদ্দীপকে মি. আতিক ক্ষুদ্র ব্যবসায় সম্প্রসারণ করার জন্য একটি ব্যাংকে ঋণ সহায়তার আবেদন করেন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংক হার ও জমার হার বৃদ্ধি করায় আতিকের ব্যাংকটি ঋণ সহায়তা প্রদানে পারগতা প্রকাশ করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংক হার বৃদ্ধি করায় মি. আতিকের বাণিজ্যিক ব্যাংকটি ধিক সুদে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করবে। আবার জমার হার বৃদ্ধির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আরও বেশি অর্থ জমা রাখতে হবে। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণদান ক্ষমতা হ্রাস পাবে।
প্রশ্ন ১২ আকিব আহনাফ একজন সুপারশপ ব্যবসায়ী। তিনি তার আঅর্থিক লেনদেন বিভিন্ন সময় পদ্মা ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন করেন। নতুন আরও কয়েকটি শাখা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তিনি তার ব্যাংকের কাছে ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ চান। কিন্তু ব্যাংকটি তাকে ধিক পরিমাণে ঋণ প্রদানে স্বীকৃতি জানায়। [চ. বো. ১৬]
ক.তারল্য কী?১
খ.‘অর্থের গতিশীলতা বিনিময়ের মাধ্যমগুলোর ওপর নেকাঅংশে নির্ভরশীল’Ñ ব্যাখ্যা করো।২
গ.পদ্মা ব্যাংকের ঋণদানের স্বীকৃতি কতটা যুক্তিসঙ্গত ছিল? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।৩
ঘ.আকিব আহনাফের কোন ধরনের ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা উচিত? ব্যাখ্যা করো।৪
১২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: গ্রাহকদের জমা রাখা অর্থ চাহিবামাত্র ফেরতদানের ক্ষমতাকে ব্যাংকের তারল্য বলে।
খ উত্তর: বাণিজ্যিক ব্যাংক অর্থ ও অর্থের মূল্যে পরিমাপযোগ্য কোনো দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করে।
বর্তমান জগতে সব ধরনের লেনদেন অর্থের মাধ্যমে করা ত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ঝামেলাপূর্ণ। তাই আস্থা ও নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত বাণিজ্যিক ব্যাংক বিভিন্ন দলিল ও উপকরণের প্রচলন ঘটিয়ে বিনিময়ের সহজ মাধ্যম সৃষ্টি করে।
এই সকল বিনিময়ের মাধ্যম অর্থের গতিশীলতাকে স্বাভাবিকভাবেই ত্বরান্বিত করে। তাই অর্থের গতিশীলতা বিনিময়ের মাধ্যমগুলোর ওপর নেকাঅংশে নির্ভরশীল।
গ উত্তর: উদ্দীপকে পদ্মা ব্যাংকের ঋণদানের ক্ষেত্রে স্বীকৃতি বাণিজ্যিক ব্যাংকের তারল্য নীতি নুসরণে যথাঅর্থই ছিল বলে আমি মনে করি।
গ্রাহকদের চেকের অর্থ চাহিবামাত্র পরিশোধের সামঅর্থ্য ধরে রাখার জন্য কাম্য পরিমাণ তরল সম্পত্তি সংরক্ষণের কৌশলকেই বাণিজ্যিক ব্যাংকের তারল্য নীতি বলে।
উদ্দীপকে আকিব আহনাফ একজন সুপারশপ ব্যবসায়ী। তিনি তার ব্যবসায়িক লেনদেন পদ্মা ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন করেন। তবে ব্যবসায়ের শাখা সম্প্রসারণে তিনি পদ্মা ব্যাংকে ২৫ লক্ষ টাকা ঋণের আবেদন করলে ব্যাংক তাতে স্বীকৃতি জানায়।
মূলত পদ্মা ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক হওয়ায় আমানতকারীদের অর্থ সংগ্রহ করে তা থেকে ঋণ দেয়। তাই গ্রাহকদের অর্থ চাহিবামাত্র ফেরত প্রদানের নীতি অর্থাৎ বাণিজ্যিক ব্যাংকের তারল্য নীতি নুযায়ী পদ্মা ব্যাংক ধিক পরিমাণে ঋণ দিতে পারে না।
আর আকিব আহনাফ যেহেতু ব্যবসায়ের শাখা সম্প্রসারণে মূলধন সংগ্রহে ঋণ আবেদন করেছেন, সেহেতু তিনি মূলধনের যোগান দিতে চান যা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ। আর বাণিজ্যিক ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি ঋণের ব্যবসায়ী।
তাই তারল্য নীতি ও ঋণের মেয়াদ বিচারে পদ্মা ব্যাংকের আকিব আহনাফকে ঋণদানে স্বীকৃতি প্রদান যথাঅর্থ হয়েছে।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে আকিব আহনাফের স্থায়ী বিনিয়োগ হিসেবে ব্যবসায়ের শাখা সম্প্রসারণে বিশেষায়িত ব্যাংকের ন্তর্ভুক্ত বিনিয়োগ ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা উচিত।
দেশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সরবরাহের লক্ষ্যে যে বিশেষায়িত ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে বিনিয়োগ ব্যাংক বলে।
উদ্দীপকে আকিব আহনাফ প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় সম্প্রসারণের লক্ষ্যে নতুন বিনিয়োগে আগ্রহী। তাই ব্যবসায় সম্প্রসারণে তিনি পদ্মা ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ চান। কিন্তু তারল্য নীতি ও স্বল্পমেয়াদি ঋণের ব্যবসায়ী হওয়ায় পদ্মা ব্যাংক তাকে ঋণ মঞ্জুরে পারগতা প্রকাশ করে।
উদ্দীকের আকিব আহনাফের স্থায়ী বিনিয়োগ নিশ্চিতকল্পে অর্থাৎ ব্যবসায়ের শাখা সম্প্রসারণে মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংক সহায়তা করে না। এক্ষেত্রে বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে বিনিয়োগ ব্যাংক এ খাতে ঋণ মঞ্জুর করে থাকে।
এ ধরনের ব্যাংক ঋণদান ছাড়াও নতুন কোম্পানি বা শিল্প প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতার উদ্দেশ্যে বলেখক ও দায়গ্রাহকের ভ‚মিকা পালন করে। এ ব্যাংক শেয়ার বিক্রয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পাশাপাশি প্রয়োজনে নিজেও শেয়ার ক্রয় করে থাকে। তাই উদ্দীপকে আকিব আহনাফের ব্যবসায়ের শাখা সম্প্রসারণে বিনিয়োগ ব্যাংক ধিক সহযোগী হবে বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন ১৩: গুডউইল ব্যাংক লি. ব্যাংক আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ সংরক্ষণ করে বাকি টাকা ঋণ হিসাবে বিতরণ করে। নির্বিচারে ঋণ প্রদান করায় বেশকিছু ঋণ খেলাপি হয়ে যায়। এতে ব্যাংকের তহবিল সংকট সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদেরকে ঋণ মঞ্জুর করে। এতে গুডউইল ব্যাংকের তহবিল ও তারল্য উভয়ই বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে তারা ঋণ প্রদানে বেশ সতর্কতা বলম্বন করায় ঋণের গুণগতমান বাড়লেও তারল্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে। [সি. বো. ১৬]
ক.ব্যাংকের আজ্ঞাপত্র কী?১
খ.বিনিময়ের মাধ্যমে সৃষ্টি বলতে কী বোঝায়?২
গ.উদ্দীপকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের কোন মূলনীতি লঙ্ঘনের ফলে গুডউইল ব্যাংকে সংকট সৃষ্টি হয়েছে?৩
ঘ.গুডউইল ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম কীভাবে ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ ও ঋণ আমানত সৃষ্টিকে প্রভাবিত করছে? বিশ্লেষণ করো।৪
১৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: ব্যাংকে এক শাখা ন্য শাখাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রাপককে প্রদানের জন্য যে লিখিত নির্দেশ প্রদান করে তাকে ব্যাংকের আজ্ঞাপত্র বলে।
খ উত্তর: পারস্পরিক দেনা-পাওনা নিষ্পত্তির জন্য যে মাধ্যম বা দলিল ব্যবহৃত হয় সেটাই বিনিময়ের মাধ্যম।
সাধারণত বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে নগদ অর্থ ব্যবহৃত হয়। সে অর্থে বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি বলতে নোট বা মুদ্রা ইস্যুকরণকে বোঝায়। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নোট ইস্যুর জন্য নুমোদনপ্রাপ্ত নয়।
তাছাড়া নগদ অর্থে লেনদেনও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই লেনদেনে ঝুঁকি হ্রাসে ও লেনদেনের গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চেক, বিনিময় বিল, পে-র্ডার, ব্যাংক ড্রাফট ইত্যাদি ইস্যু করে। এসব দলিল মুদ্রার বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংক বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করে।
গ উত্তর: উদ্দীপকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের নিরাপত্তা নীতি লঙ্ঘনের কারণে গুডউইল ব্যাংকে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
আমানতকারীদের অর্থ নিরাপত্তা খাতে বিনিয়োগ করে মুনাফা র্জন করাই নিরাপত্তার মূল কথা। সেটি লঙ্ঘন করলে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এবং ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়।
উদ্দীপকে গুডউইল ব্যাংকটি আমানতের নির্দিষ্ট অংশ সংরক্ষণ করে বাকি টাকা যততত্র নিবির্চারে ঋণ প্রদান করে।
ফলে তার ঋণখেলাপি গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং তহবিলের সংকট সৃষ্টি হয়। ব্যাংককে আমানতকারীর অর্থের যততত্র বিনিয়োগ করলে চলবে না। এমন খাতে ঋণদান বা বিনিয়োগ করতে হবে যাতে নির্দিষ্ট সময় পর লাভসহ পুঁজি ফিরে পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে। এটাই নিরাপত্তা নীতির সারকথা। সুতরাং নিরাপত্তা নীতি লঙ্ঘন করায় গুডউইল ব্যাংকে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে গুডউইল ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম ব্যাংকের তারল্য প্রবাহের ওপর নেতিবাচক কিন্তু ঋণ আমানত সৃষ্টির ওপর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে।
গ্রাহকদের জমাকৃত অর্থ চাহিবামাত্র ফেরতদানের ক্ষমতাকে তারল্য বলে। পরপক্ষে সরাসরি নগদে ঋণ না দিয়ে তা ঋণগ্রহীতার হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে উক্ত আমানত হতে পুনরায় ঋণ সৃষ্টিকে ঋণ আমানত সৃষ্টি বলে।
উদ্দীপকের গুডউইল ব্যাংক লি. বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণ করলেও ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার নীতি নুসরণ না করায় খেলাপির সংখ্যা বেড়ে যায়। এতে ব্যাংকটির তহবিলে সংকট সৃষ্টি হয়। এ তহবিল সংকট মোকাবিলায় ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে।
উদ্দীপকের ব্যাংকটি নির্বিচারে ঋণ প্রদান করায় খেলাপি ঋণের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ঋণগ্রহীতারা ঋণের অর্থ যথাসময়ে ফেরত না দেয়ায় ব্যাংকটি তারল্য সংকটে পড়ে তথা তারল্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অর্থাৎ ব্যাংকটি গ্রাহকদের চাহিবামাত্র অর্থ প্রদানে ব্যঅর্থ হয়।
ফলে ব্যাংকটির সুনামের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। পরদিকে ধিক পরিমাণে ব্যাংকটি ঋণ প্রদান করে, যা নগদে দেয়া হয়নি। বরং ঋণগুলো ঋণগ্রহীতার আমানতের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়।
এতে ব্যাংকটি ঐ আমানতগুলোকে আবারও ঋণ সৃষ্টিতে ব্যবহার করে। ফলে প্রচুর পরিমাণে ঋণ আমানত সৃষ্টি হয়। সুতরাং বলা যায় যে, উদ্দীপকের গুডউইল ব্যাংকের নির্বিচারে ঋণ প্রদান কার্যক্রম ব্যাংকের তারল্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেললেও ঋণ আমানত সৃষ্টিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্রশ্ন ১৪ ‘ঢ’ ব্যাংক লি. ও ‘ঈ’ ব্যাংক ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। ‘ঢ’ ব্যাংককে তার আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ ‘ঈ’ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা রাখতে হয়। ‘ঈ’ ব্যাংক কর্তৃক বিভিন্ন নিয়ম-কানুনের মধ্যে থেকে ‘ঢ’ ব্যাংক লি.-কে তার দৈনন্দিন কার্য পরিচালনা করতে হয়। ‘ঈ’ ব্যাংকের নির্দেশনার বাইরে ‘ঢ’ ব্যাংক লি. কোনো কাজ করতে পারে না। [য. বো. ১৬]
ক.কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী?১
খ.‘কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ঋণদানের শেষ আশ্রয়স্থল বলা হয় কেন?২
গ.’ঢ’ ব্যাংক লি.-এর একটি নির্দিষ্ট অংশ ‘ঈ’ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা রাখার কারণ বুঝিয়ে লেখো। ৩
ঘ.উদ্দীপকে উলিখিত দুটি ব্যাংকের বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো।৪
১৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: জনকল্যণের উদ্দেশ্যে সরকারি নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত দেশের এক ও নন্য ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানই হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
খ উত্তর: দেশের সরকার বা কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক আঅর্থিক সংকটে পড়লে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আঅর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো মাঝে মাঝে তারল্য সংকটে পড়ে। এ বস্থায় সব উৎস থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে ব্যঅর্থ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শরণাপন্ন হয়। দেশের অর্থনীতির সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তখন তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে ঋণ সরবরাহে এগিয়ে আসে। দেশের সরকারও প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ ধরনের সহায়তা নেয়। এসব ভ‚মিকার কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক-কে ঋণদানের শেষ আশ্রয়স্থল বলে।
গ উত্তর: জমার হার নীতি নুযায়ী ঢ ব্যাংক লি.-এর আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ ঈ ব্যাংকে জমা রাখা বাধ্যতামূলক।
তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আমানতের একটি অংশ বাধ্যতামূলকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হয়। একে বিধিবদ্ধ রিজার্ভ বলে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রণীত বিভিন্ন নিয়ম-কানুন মেনেই বাণিজ্যিক ব্যাংক-কে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়।
উদ্দীপকে ঢ ব্যাংক-কে তার আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ ঈ ব্যাংকে বাধ্যতামূলকভাবে জমা রাখতে হয়। ঢ ব্যাংক লি. একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ঈ ব্যাংক একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই ব্যাংক দু’টি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত।
কেননা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তালিকাভুক্তির নিয়মানুযায়ী সব বাণিজ্যিক ব্যাংক-কে তার আমানতের একটি অংশ তারল্য হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংরক্ষণ করতে হয়। একে বিধিবদ্ধ রিজার্ভ বলে। বিধিবদ্ধ রিজার্ভ সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক।
অন্যথায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার তালিকা থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক-কে বাদ দিয়ে দিতে পারে। তাই বলা যায়, বিধিবদ্ধ রিজার্ভ হিসেবেই ঢ ব্যাংক-কে ঈ ব্যাংকে তার আমানতের একটি নির্দিষ্ট অংশ বাধ্যতামূলকভাবে জমা রাখতে হয়।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে উলিখিত ঢ ব্যাংক ও ঈ ব্যাংকের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ব্যাপক পাঅর্থক্য বিদ্যমান।
সরকারের নিয়ন্ত্রণে থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট ও মুদ্রার প্রচলন করে, মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণ করে ও অর্থবাজার সঅংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
আর বাণিজ্যিক ব্যাংক মুনাফা র্জনের উদ্দেশ্যে জনগণের আমানত সংগ্রহ এবং স্বল্পমেয়াদি ঋণ প্রদান করে।
উদ্দীপকে ঢ ব্যাংক লি. ও ঈ ব্যাংকের মধ্যকার সম্পর্কের উলেখ করা হয়েছে। ব্যাংক দুটি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। ঢ ব্যাংককে তার আমানতের একটি অংশ ঈ ব্যাংকে বাধ্যতামূলকভাবে জমা রাখতে হয়। ঢ ব্যাংক লি. ঈ ব্যাংকের নিয়ম-নীতি মেনে চলে। ঈ ব্যাংকের নির্দেশনার যাইরে ঢ ব্যাংক লি. কোনো কাজ করতে পারে না। এখানে ঢ ব্যাংক লি. বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং ঈ ব্যাংক একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৈশিষ্ট্যগতভাবেই ঈ ব্যাংক ও ঢ ব্যাংকের মধ্যে কিছু পাঅর্থক্য রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাষ্ট্রপতির আদেশবলে বা বিশেষ আইনবলে গঠিত হয়। কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশে প্রচলিত ব্যাংকিং আইন নুসারে গঠিত হয়। মুনাফা র্জনই ঢ ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু জনকল্যাণে উদ্দেশ্যে ঈ ব্যাংক পরিচালিত হয়।
দেশের কয়েকটি ঞ্চলে ঈ ব্যাংকের শাখা থাকলেও সারাদেশে ঢ ব্যাংকের শাখা রয়েছে। ঈ ব্যাংক সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু ঢ ব্যাংক-কে ঈ ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে। ঈ ব্যাংক মুদ্রাবাজারের ভিভাবক আর ঢ ব্যাংক এ বাজারের সদস্য।
ঢ ব্যাংকের নোট ইস্যু করার ক্ষমতা নেই। কিন্তু ঈ ব্যাংক একচ্ছত্রভাবে নোট ইস্যু করে থাকে। তাই কার্যাবলি ও বৈশিষ্ট্য বিচারে ঈ ব্যাংক ও ঢ ব্যাংক লি.-এর মধ্যে যথেষ্ট পাঅর্থক্য বিদ্যমান।
প্রশ্ন ১৫: মি. স্বপন তার সম্পত্তি বন্ধক রেখে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিতে চান। তিনি যে ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন সেই ব্যাংকের ম্যানেজারকে এ কথা জানানো হলো। ম্যানেজার সাহেব বললেন যে, তারা দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দেন তবে তা খুবই সীমিত। কারণ তাদের তহবিলের মুখ্য অংশ হলো চাহিদা আমানত। আমানতকারীদের উত্থাপিত চেক যাতে কখনো ফেরত না যায় এ বিষয়ে ব্যাংক খুবই সতর্ক থাকে। ম্যানেজার সাহেবের কথা শুনে প্রথমত কিছুটা আহত হলেও মি. স্বপন মনে করছেন এ কথাগুলোর পিছনে তারও স্বাঅর্থ রয়েছে। [ব. বো. ১৬]
ক.ব্যাংক কী?১
খ.ই-ব্যাংকিং বলতে কী বোঝায়?২
গ.উদ্দীপকের ব্যাংকটি কার্যাবলির ভিত্তিতে কোন ধরনের? ব্যাখ্যা করো।৩
ঘ.‘ব্যাংকটি যে নীতির ওপর চলছে তা মি. স্বপনের স্বাঅর্থ রয়েছে’- এ উক্তিটির যথাঅর্থতা বিশ্লেষণ করো।৪
১৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: যে প্রতিষ্ঠান জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ, ঋণদান ও বিভিন্ন আঅর্থিক কার্যাদি সম্পাদন করে তাকে ব্যাংক বলে।
খ উত্তর:আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্রুত নির্ভুল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার নামই হলো ই-ব্যাংকিং।
ই-ব্যাংকিং একটি সম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে মানুষের ভ‚মিকা গৌণ, যন্ত্রের ভ‚মিকাই মুখ্য। যন্ত্রের সাহায্যেই যাবতীয় ব্যাংকিং কার্য সম্পন্ন করা হয়। এটি ব্যাংকের আধুনিকায়নের নীতির ন্যতম সংস্করণ।
গ উত্তর: উদ্দীপকের ব্যাংকটি কার্যাবলির ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংক।
সাধারণভাবে যে আঅর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে গঠিত হয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে তাকে বাণিজ্যিক ব্যাংক বলে। এ ব্যাংক বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে কম সুদে আমানত সংগ্রহ করে এবং ধিক সুদে বিভিন্ন খাতে ঋণ দেয় বা বিনিয়োগ করে।
উদ্দীপকে মি. স্বপন তার সম্পত্তি বন্ধক রেখে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের জন্য একটি ব্যাংকে যান। ব্যাংকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণদান ক্ষমতা খুবই সীমিত বলে ব্যাংক ম্যানেজার জানায়।
এ ব্যাংক মূলত জনগণের কাছ থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে আমানত সংগ্রহ করে এবং জনগণ চাহিবামাত্র অর্থ প্রদানে বাধ্য থাকে। মি. স্বপন যে ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন সেটি জনগণের অর্থের নিরাপদ সংরক্ষণ এবং লাভজনক খাতে ব্যাংকের মূলধন বিনিয়োগ করে মুনাফা র্জন করে।
তাছাড়া এ ব্যাংকটি চেক, ড্রাফট, পে-র্ডার, ক্রেডিট কার্ড প্রভৃতির মাধ্যমে বিনিময়ের মাধ্যমও সৃষ্টি করে। এ ধরনের ব্যাংক সাধারণত শাখা ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে তার কাজ সম্পাদন করে। পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকে উলিখিত ব্যাংকটি কার্যাবলির ভিত্তিতে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (১ম পত্র) ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা ১ম পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(১ম পত্র)১ম: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্ন উত্তরসহ PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্নের উত্তরসহ অধ্যায়-১: PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC অধ্যায়-১: প্রশ্নের উত্তরসহ ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তরPDF
ঘ উত্তর: উদ্দীপকের ব্যাংকটি তারল্য নীতির ওপর চলছে যাতে মি. স্বপনেরও স্বাঅর্থ রয়েছে।
গ্রাহকের জমাকৃত অর্থ চাহিবামাত্র ফেরত দেয়ার ক্ষমতাকে ব্যাংকের ভাষায় তারল্য বলে। ব্যাংক ব্যবসায়ে তারল্য সংরক্ষণ করাকে ব্যাংকের তারল্য নীতি বলে।
উদ্দীপকে মি. স্বপন একজন আমানতকারী। তিনি ব্যাংকে তার অর্থ জমা রাখেন। আমানতকারী হিসেবে মি. স্বপন যেকোনো সময় তার অর্থ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারেন বা ফেরত চাইতে পারেন। মি. স্বপনের অর্থ চাহিবামাত্র ফেরত দেয়ার ক্ষমতাই হলো ব্যাংকের তারল্য নীতি।
উদ্দীপকে ব্যাংক যদি চাহিবামাত্র মি. স্বপনের অর্থ ফেরত দিতে না পারে তবে ব্যাংকটির সুনাম ক্ষুণœ হবে এবং মি. স্বপনও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আর এ কারণেই পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ব্যাংক-কে কিছু তারল্য সংরক্ষণ করতে হয়। তাই বলা যায়, ব্যাংকের তারল্য নীতির ওপর মি. স্বপনেরও স্বাঅর্থ রয়েছে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।