পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ৩ | বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর: পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়টির ৩য় অধ্যায়টি হতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
অধ্যায় ৩ – বাংলাদেশের ঐতিহাসিক কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন-১ : বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হওয়া প্রয়োজন কেন তা পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক ঐতিহাসিক নির্দশন রয়েছে। এসব নিদর্শন আমাদের অতীত সভ্যতা ও সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। এগুলো আমাদের গর্ব। এগুলো সম্পর্কে জানলে আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জিত হবে এবং জ্ঞান সমৃদ্ধ হবে। তাই ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।
প্রশ্ন-২ : বাংলাদেশের দুইটি ঐতিহাসিক নিদর্শনের নাম লেখ। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হওয়া প্রয়োজন কেন? তিনটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : বাংলাদেশের দুইটি ঐতিহাসিক নিদর্শনের নাম হলো : ১. পানাম নগর, ২. ব্রাহ্মী শিলালিপি। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের
ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো আমাদের অতীত সভ্যতা ও সংস্কৃতির পরিচয়ে বহন করে। এগুলো আমাদের গর্ব। তাই ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হওয়া প্রয়োজন।
এই বিভাগে আরো পড়ুন
প্রশ্ন-৩ : বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থান মহাস্থানগড় সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর : মহাস্থানগড় বাংলাদেশের বিশেষ খ্যাতনামা ঐতিহাসিক স্থান। এটি খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ অব্দ থেকে পরবর্তী ১৫০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
প্রায় ১৯০০ বছরের বাংলার ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে। মৌর্য আমলে এটি ‘পুন্ড্রনগর’ নামে পরিচিত ছিল। এটি বগুড়া শহর থেকে তেরো কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। এখানে প্রাপ্ত নিদর্শনগুলোর মধ্যে প্রাচীন দুর্গ, ব্রাহ্মী শিলালিপি, পোড়ামাটির ফলক, ভাস্কর্য, ধাতব মুদ্রা, পুঁতি, মন্দিরের ভগ্নাবশেষ উল্লেখযোগ্য।
প্রশ্ন-৪ : মনে কর গত সপ্তাহে তুমি বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেছ। সে স্থানটি সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর : গত সপ্তাহে আমি বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক স্থান সোনারগাঁও পরিদর্শন করেছি। সোনারগাঁও সম্পর্কে নিচে পাঁচটি বাক্য উল্লেখ করা হলো :
১. ঢাকা শহর থেকে পূর্বে মেঘনা নদীর তীরে নারায়ণগঞ্জে সোনারগাঁও অবস্থিত।
২. সোনারগাঁও প্রাচীন বাংলার সুলতানদের রাজধানী ছিল।
৩. এখানে রয়েছে সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের মাজার ও আরও কিছু সমাধি।
৪. সোনারগাঁওয়ের পানাম নগর ছিল ঊনিশ শতকে হিন্দু বণিকদের সুতা বাণিজ্য কেন্দ্র।
৫. সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘরটি বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
প্রশ্ন-৫ : তোমার দেখা একটি ঐতিহাসিক স্থানের বিবরণ দাও।
উত্তর : ঐতিহাসিক স্থানগুলোর গুরুত্ব আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত, আমার দেখা ঐতিহাসিক স্থান হলো ময়নামতি। আমার পরিবারের সাথে আমি কুমিল্লার ময়নামতি ভ্রমণ করতে গিয়েছিলাম। এখানে মন্দিরগুলো কারুকার্যম™িত ছিল। মন্দিরের বাইরের দেয়ালও অন্যান্য ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য পোড়ামাটির ফলক দেখলাম।
এখানে বতর্মানের সাথে মিলে যায় এমন দৃশ্য অনেক স্মৃতি রয়েছে। আমার দেখার মধ্যে আরও আছে পাথরে ফলকের নিদর্শন। বেজির সাথে যুদ্ধরত গোখরা সাপ, আগুয়ান হাতি ইত্যাদি। এসব জীবজন্তু অঙ্কিত পোড়ামাটির ফলক আমার মনে বিশেষ স্মৃতি বহন করে। ময়নামতিতে একটি জাদুঘর আছ। জাদুঘরে সংরক্ষিত বিভিন্ন মুদ্রা ও পাথরের ফলক নিজ চোখে দেখতে পারায় খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম।
প্রশ্ন-৬ : বাংলাদেশের একটি উলেখযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে আহসান মঞ্জিলের বর্ণনা দাও।
উত্তর : আহসান মঞ্জিল ছিল ঢাকার নবাবদের প্রাসাদ। এটি বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। আহসান মঞ্জিল বাংলাদেশের একটি উলেখযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শন। প্রাসাদের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দীর্ঘ বারান্দা রয়েছে।
আহসান মঞ্জিলে জলসা ঘর, দরবার হল, রংমহল বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। জমিদার ব্যবস্থার বিলুপ্তি ঘটলে আহসান মঞ্জিল তার ঐতিহ্য হারায়। ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সরকার এর তত্ত¡াবধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। বর্তমানে আহসান মঞ্জিলকে জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে।
প্রশ্ন-৭ : আহসান মঞ্জিল এর ঐতিহাসিক বর্ণনা দাও।
[আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
উত্তর : আহসান মঞ্জিল বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শন। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে নির্মিত আহসান মঞ্জিল ছিল বাংলার নবাবদের রাজপ্রাসাদ। মুঘল আমলে বরিশালের জামালপুর পরগণার জমিদার শেখ এনায়েতউল্লাহ এ প্রাসাদটি তৈরি করেন।
আঠারো শতকে তার পুত্র শেখ মতিউল্লাহ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে প্রাসাদটি ফরাসি বণিকদের কাছে বিক্রি করে দেন। ১৮৩০ সালে খাজা আলিমুল্লাহ ফরাসিদের নিকট থেকে প্রাসাদটি ক্রয় করে এটিকে আবার প্রাসাদে পরিণত করেন।
প্রশ্ন-৮ : মনে কর, তুমি পাহাড়পুর নামক ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণে গিয়েছিলে। উক্ত স্থান সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর : আমি বন্ধুদের সাথে পাহাড়পুর নামক ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণে গিয়েছিলাম। উক্ত স্থান সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য উল্লেখ করলাম : পাহাড়পুর রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায় অবস্থিত।
এখানে ২৪ মিটার উঁচু গড় রয়েছে যা ‘সোমপুর মহাবিহার’ নামে পরিচিত। পাহাড়পুরে আবিষ্কৃত নিদর্শনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মন্দির, খাবার ঘর, পাকা নর্দমা। এখানে পাওয়া গেছে জীবজন্তুর মূর্তি ও টেরাকোটা। পাহাড়পুরে আবিষ্কৃত পুরাকীর্তি প্রাচীনবাংলার ধর্ম ও সংস্কৃতির ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর অন্যতম।
প্রশ্ন-৯ : বাংলায় মুসলিম শাসনামলের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রত্নতত্তে¡র বিবরণ দাও।
উত্তর : নিচে বাংলায় মুসলিম শাসনামলের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতত্তে¡র বিবরণ করা হলো :
প্রত্নতত্তের ঐতিহাসিক নিদর্শন সোনারগাঁও। এটি বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। মুসলিম শাসনামলে প্রাচীন বাংলার সুলতানদের রাজধানী ছিল সোনারগাঁও। ঊনিশ শতকে হিন্দু বণিকদের সুতা বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে এখানে পানাম নগর গড়ে ওঠে।
বার ভ‚ঁইয়াদের নেতা ঈসা খাঁ ও মুসা খাঁর রাজধানী ছিলএটি। এখানে সুলতানি ও মুঘল আমলের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বহু আবাসিক ভবন, দিঘি, দরগাহ, সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের সমাধি প্রভৃতি রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ
-
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | প্রার্থনা কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ঘাসফুল কবিতার প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | ভাবুক ছেলেটি গল্প প্রশ্ন উত্তর | PDF
- ৫ম শ্রেণি | বাংলা | অবাক জলপান নাটকটির প্রশ্ন উত্তর | PDF
প্রশ্ন-১০ : ঐতিহাসিক নিদর্শন পরিদর্শনের ৫টি সুফল লেখ।
উত্তর : ঐতিহাসিক নিদর্শন পরিদর্শনের ৫টি সুফল :
১. অতীত ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারা যায়।
২. অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।
৩. জাতির আত্মপরিচয় সম্পর্কে ধারণা হয়।
৪. সমৃদ্ধ নিদর্শন আমাদের গৌরবান্বিত করে।
৫. জাতীয় জীবনে কর্তব্য পালনে উদ্বুদ্ধ হই।
সাধারণ
প্রশ্ন-১১ : লালবাগ দুর্গের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
উত্তর : ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিমে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ১৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে লালবাগ কেল্লা নির্মাণ করা হয়। আওরঙ্গজেবের পুত্র শাহাজাদা মোহাম্মদ আযম শাহ এই দুর্গটির নির্মাণ কাজ শুরু করলেও শেষ করতে পারেননি।
দুর্গটি সম্পূর্ণ ইটের তৈরি। দুর্গের মাঝখানে খোলা জায়গায় মোঘল শাসকগণ তাঁবু টানিয়ে বসবাস করতেন। দুর্গের দক্ষিণে গোপন প্রবেশপথ এবং একটি তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ রয়েছে। এটি বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন-১২ : উয়ারী-বটেশ্বরের পরিচয় দাও।
উত্তর : উয়ারী ও বটেশ্বর নরসিংদী জেলার পাশাপাশি দুটি গ্রাম। এখানে কয়েক বছর আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এটি ‘উয়ারী-বটেশ্বর’ নামে পরিচিত। এটি মহাস্থানগড়ের মতো বাংলার একটি সুপ্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন।
খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০ অব্দে মৌর্য যুগে এখানে একটি সভ্যতার যাত্রা শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। সমুদ্র বাণিজ্যের সাথে এ অঞ্চলটি যুক্ত ছিল। এখানে রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া গেছে। এছাড়া পাথরের অনেকগুলো হাতিয়ার ও পুঁতি পাওয়া গেছে। উয়ারী-বটেশ্বরের অনুসন্ধান কাজ এখনও চলছে।
প্রশ্ন-১৩ : ময়নামতির প্রত্ন নিদর্শনসমূহের বর্ণনা দাও।
উত্তর : ময়নামতির প্রত্ন নিদর্শনসমূহ অষ্টম শতক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় বহন করে। এখানে বাংলার বৌদ্ধ সভ্যতার অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে।
এছাড়া এখানে জৈন ও হিন্দুদের দেব-দেবীর অনেক মূর্তি পাওয়া গেছে। এখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আবাসিক ব্যবস্থারও নিদর্শন পাওয়া গেছে। এছাড়া রয়েছে জীবজন্তু অঙ্কিত পোড়ামাটির ফলক, বিভিন্ন মুদ্রা ও পাথরের ফলকের নিদর্শন।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।