অষ্টম শ্রেণি‘র জীবন ও জীবিকা‘র অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল প্রশ্নোত্তর | Class8 2024 | Class8 2024 | সমাধান : ৮ম শ্রেণির অষ্টম শ্রেণি জীবন ও জীবিকা‘র এর অধ্যায়টি হতে গুরুত্বপূর্ণ সব সমাধানগুলো গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
প্রথম অধ্যায়
অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল
প্রিয় শিক্ষার্থী, জীবন ও জীবিকা বিষয়ে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে এই বইয়ে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। এই অংশে কৌশলগুলো বিস্তারিতভাবে উদাহরণসহ তুলে ধরা হলো, যা তোমার শিখনকালীন এবং সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রস্তুতি গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
ফ্লিপ চার্ট
ফ্লিপ চার্ট হলো একাধিক বড় আকৃতির কাগজের শিটের সমন্বয়ে গঠিত প্যাড। এটি একটি স্টেশনারি পণ্য। এটি সাধারণত হোয়াইট বোর্ডের উপরের প্রান্তে স্থির থাকে। এ জাতীয় চার্টগুলো সাধারণত তথ্য উপস্থাপনার জন্য ব্যবহৃত হয়।
ফ্লিপ চার্ট ব্যবহার করা হয় একটি আলোচনায় ছবি দেখিয়ে সেই আলোচনার উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তু তুলে ধরার জন্য। এতে একটি আলোচনা পর্ব অনেক ফলপ্রসূ হয় । আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা আলোচনার বিষয়বস্তু ভালোভাবে বুঝতে পারেন ।
ফ্লিপ চার্ট ব্যবহারের জন্য প্রথমেই বিষয় নির্ধারণ করে নিতে হবে। এরপর পরিকল্পনা করতে হবে কোন পৃষ্ঠায় কী থাকবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন ফ্লিপ চার্টটি দর্শকরা ঠিকমতো দেখতে পারে। বড় বড় অক্ষরে, সংক্ষেপে ও সহজে প্রতিটি বাক্য লিখতে হবে।
প্রয়োজনে বিভিন্ন রঙের কালি বা হাইলাইটার ব্যবহার করা যেতে পারে। অভিনব ও সুন্দরভাবে চিত্রের মাধ্যমে বিষয়গুলোকে উপস্থাপন করতে হয়। সেশন শেষে ফ্লিপ চার্টটি যথাযথ স্থানে সংরক্ষণ করতে হয়।
অষ্টম শ্রেণি‘র জীবন ও জীবিকা‘র অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল প্রশ্নোত্তর | Class8 2024
আরো দেখুন
বরিশাল ইতিহাস ঐতিহ্য
বরিশাল ইতিহাস ঐতিহ্য ।। বরিশাল বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। এর ইতিহাস ও সংস্কৃতি দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ। বরিশালকে বলা...
ফ্রী শিক্ষামূলক ভিডিও মেকার,শিক্ষামূলক ভিডিও কিভাবে করা যায়
ফ্রী শিক্ষামূলক ভিডিও মেকার,শিক্ষামূলক ভিডিও কিভাবে করা যায়।। শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করতে কিছু ধাপ অনুসরণ করা প্রয়োজন। এখানে কিছু ধাপ...
দাঁত ও দাঁতের মাড়ি সুস্থ রাখতে চাইলে যেসব কাজ গুলো করা জরুরী
প্রতিটি মানুষের সকল মন্ত্রের মূল চাবিকাঠী স্বাস্থ্য! স্বাস্থ্য ভালো থাকলে মন ভালো থাকে, কাজের অগ্রগতিও ভাড়ে, স্বাস্থ্য ভালো আপনার সব...
শান্তিগঞ্জের বগুলারকাড়া গ্রামের স্কুল মাঠে কাবাডি খেলা
শান্তিগঞ্জের বগুলারকাড়া গ্রামের স্কুল মাঠে কাবাডি খেলা।। সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি।। গ্রামবাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্য বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি(হা ডু ডু) খেলার ঐতিহ্য...
চিত্র : ফ্লিপ চার্ট
পোস্টার
কোনো বিষয় বড় কাগজে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করে প্রচার করা হলো পোস্টার। এক্ষেত্রে কোনো বিষয় বা ঘটনাকে ভাষা, ছবি, চিহ্ন ব্যবহার করে উপস্থাপন করা হয়। এটি একটি জনপ্রিয় প্রচার মাধ্যম।
কোনো জনসমাগম এলাকায় বা দেয়ালে পোস্টার স্থাপন করে সহজেই প্রচারণা চালানো যায়। চিত্র/ছবি/কোলাজ/কার্টুন/লেখা/পেপার কাটিং ইত্যাদি দিয়ে পোস্টার সাজাতে হয়। *
পোস্টার ডিজাইনের কৌশল
১. বড় কাগজে শিট সংগ্রহ করা (পুরাতন ক্যালেন্ডারের পাতা হলেও চলবে)।
২. বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটি আকর্ষণীয় শিরোনাম বা স্লোগান লিখ ।
৩.শিরোনামের ফন্ট তুলনামূলক বড় হতে হবে ।
৪. সহজ ও কম শব্দ ব্যবহার করে বিষয়বস্তু তুলে ধরা।
৫. লেখার সাথে সংশ্লিষ্ট গ্রাফিক্স বা চিত্র আঁকা ।
৬. কাগজের বিভিন্ন স্থানে খালি জায়গা রাখা ।
৭. চিত্র/ছবি/কোলাজ/কার্টুন/পেপার কাটিং ইত্যাদি দিয়ে ডিজাইন করা ।
৮. প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের রং ব্যবহার করা প্রভৃতি ।
বিজনেস আইডিয়া সেমিনার ২০২৪
তারিখ : ২৪/০৪/ 2028
সময় : বিকাল ৪টা
স্থান : টাউন হল, নতুন বাজার,
ভোলা লক্ষ্য : বিজনেস আইডিয়া বাস্তবায়নে উৎসাহিতকরণ
চিত্র : পোস্টারের নমুনা
ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিং হলো কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করা। এক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি একটি প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী থাকে না। যেমন : অনলাইনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করা। এক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারে। অনলাইন ও অফলাইনে দুভাবেই এ কাজ করা যায়।
কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্র হলো গ্রাফিক্স বা লোগো, ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং প্রভৃতি। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং একটি আলোচিত পেশা। এর মাধ্যমে ঘরে বসেও অনেক টাকা আয় করা যায়। এছাড়াও ছাত্রজীবনে পড়ালেখার পাশাপাশি আয়ের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ফ্রিল্যান্সিং।
কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী না থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করা হলো ফ্রিল্যান্সিং। কন্টেন্ট রাইটিং লোগো বা গ্রাফিক্স ডিজাইন ফ্রিল্যান্সিংয়ের উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র।
মাইন্ড ম্যাপিং
মাইন্ড ম্যাপিং হচ্ছে ডায়াগ্রাম বা চিত্রের মাধ্যমে একটি বিষয়ের ধারণা উপস্থাপন করা। সাধারণত মাইন্ড ম্যাপিং-এর মূল বিষয়টি চিত্রের মাঝে অবস্থান করে। এর সাথে জড়িত বিষয়গুলো সংযোগ রেখা দ্বারা উপস্থাপন করা হয় ।
একটি বিষয়ের তথ্যসমূহ চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করলে তা বুঝতে ও মনে রাখতে সহজ হয়। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা এককভাবে, জোড়ায় অথবা দলীয়ভাবে কাজ করতে পারে।
মাইন্ড ম্যাপিং শিক্ষার্থীর চিন্তন দক্ষতা বাড়ায় এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়ে। মাইন্ড ম্যাপিং পদ্ধতিতে কোনো একটি মূল বিষয়/ধারণা/সমস্যা চিহ্নিত করা হয়। তারপর মূল বিষয়ের/ধারণার/সমস্যার সাথে জড়িত তথ্যগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা লাভ করা হয়।
এরপর বিভিন্ন প্রকার ডায়াগ্রাম, নকশা, বৃক্ষ বা রেখার সাহায্যে মূল বিষয়/ধারণা/সমস্যার সাথে জড়িত অন্যান্য তথ্যগুলোর সম্পর্ক স্থাপন করা হয় ।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষণীয় বিষয়
কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ———————-চাহিদা অনুযায়ী অনুষ্ঠান সাজানো
আয়োজনে অভিনবত ———————-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
মিতব্যয়ী বাজেট প্রণয়ন ও পরিচালনা———————-নির্ধারিত সময়ে আয়োজন শেষ করা
প্রয়োজনীয় সব জিনিসের অনুমতি ছক———————-আয়োজন শেষে পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা
স্ক্রিপ্ট
স্ক্রিপ্ট হলো নাটকের একটি লিখিত নকশা। এটি এক ধরনের লিখিত পাঠ যা মঞ্চে প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে রচনা করা হয়। একটি নাটক প্রদর্শন বা তৈরি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে হয়। এ স্ক্রিপ্টে নাটকের বিষয়বস্তু, বিভিন্ন চরিত্র, চরিত্রগুলোর সংলাপ, নাটকের দৃশ্য, মঞ্চের দিক নির্দেশনা থাকে।
যেমন ধর, তোমরা ক্লাসে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের জন্য একটি জনসচেতনতামূলক নাটক করতে চাও। এক্ষেত্রে প্রথমেই নাটকের চরিত্র, চরিত্রগুলোর কথোপকথন, চরিত্রগুলোকে কীভাবে উপস্থাপন করবে ইত্যাদি বিষয়ে আগেই লিখতে হবে এবং সেই অনুযায়ী নাটকটি প্রদর্শন করতে হবে।
অষ্টম শ্রেণি‘র জীবন ও জীবিকা‘র অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল প্রশ্নোত্তর | Class8 2024
রিহার্সেল
রিহার্সেল হলো নাটকের মহড়া। একটি সফল নাটক মঞ্চায়নের জন্য রিহার্সেল একটি অপরিহার্য অংশ। রিহার্সেল হলো নাটক প্রদর্শনের পূর্বে এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করা ব্যক্তিদের অনুশীলনের মাধ্যমে প্রস্তুত করার একটি প্রক্রিয়া।
রিহার্সেল নাটকের সংলাপ মনে রাখা, অভিব্যক্তি প্রকাশ, মঞ্চে প্রবেশ ও প্রস্থানের সময় ইত্যাদি নিখুঁতভাবে করতে সাহায্য করে। রিহার্সেল অভিনয় শিল্পীদের সরাসরি মঞ্চে অভিনয়ে দক্ষ করে তোলে। ধর তোমরা একটি নাটক মঞ্চস্থ করতে চাও।
তাই নাটকটি প্রদর্শনের পূর্বে নিজেদের স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী নিলে। কোথাও কোনো ভুল হলে সংশোধন করে নিবে, কীভাবে সংলাপ বা অভিনয় করলে আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করা যাবে ইত্যাদি বিষয় অনুশীলন করবে। এসবই নাটকের রিহার্সেল ।
নাটক
নাটক শিল্প মাধ্যমের একটি শাখা। এটি সরাসরি দর্শকের সামনে প্রদর্শন করা হয়। এটি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট স্থানে মঞ্চ তৈরি করে বা থিয়েটারে হতে পারে। নাটকের জন্য প্রথমে একটি স্ক্রিপ্ট রচনা করতে হয়।
এসব নাটকে সংলাপ, অভিনয়, সঙ্গীত, নৃত্য ইত্যাদির মিশ্রণ থাকে । এ নাটকে স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী বিভিন্ন চরিত্রের সংলাপ থাকে। স্ক্রিপটি অধ্যায় এবং দৃশ্যে ভাগ করা হয়। একটি নাটক সামাজিক, ঐতিহাসিক বা কাল্পনিক বিষয়ের ওপর হতে পারে।
নাটক পরিকল্পনা
- ভূমিকাভিনয়
- নাটকের স্ক্রিপ্ট তৈরি
- উপকরণ সংগ্রহ
- স্থান নির্বাচন
- স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণ
- নাটকের রিহার্সেল
- শিক্ষকের সহায়তা গ্রহণ
- নাটকের তারিখ ও সময় নির্ধারণ
- দর্শকদের আমন্ত্রণ
কোনো বিষয়বস্তু বা ঘটনা নাটক কিংবা অভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করাই হলো ভূমিকাভিনয় । এক্ষেত্রে বাস্তবভিত্তিক কোনো বিষয় সহজে তুলে ধরা যায়। পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু ভূমিকাভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপিত হলে শিক্ষার্থীরা তা আনন্দের সাথে উপভোগ করে।
শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে বলে শিক্ষণীয় বিষয়বস্তু জীবন্ত হয়ে ওঠে। এ কারণে ভূমিকাভিনয় একটি কার্যকর শিক্ষাদান পদ্ধতি । ভূমিকাভিনয় একক বা দলগত হতে পারে ।
ভূমিকাভিনয় করার কৌশল
১. বিষয়বস্তু সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা নেওয়া;
২. দলগত অভিনয়ের ক্ষেত্রে সদস্যরা কে, কোন ভূমিকায় অভিনয় করবে তা নির্ধারণ করা;
৩. বিষয় চরিত্র নিজের মধ্যে ধারণ/আত্মস্থ করা;
৪. বিষয়বস্তুর সাথে মিল রেখে প্রয়োজনে অভিনয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা;
৫. সহজ ও সাবলীলভাবে সংলাপ বলা;
৬. চরিত্রের সাথে মিল রেখে শারীরিক অভিব্যক্তি প্রকাশ করা;
৭. অন্যান্য সদস্যদের সংলাপের সাথে ধারাবাহিকতা ও সমন্বয় রাখা;
৮. শ্রেণিকক্ষে ভূমিকাভিনয় করার সময় মঞ তৈরি, নাটকের পোশাক পরিধান, দৃশ্যপট তৈরি প্রভৃতি নিশ্চিত করা জরুরি নয়;
৯. অতিরঞ্জিত না হওয়ার দিকে সতর্ক থাকা:
১০. অভিনয় শেষে দর্শকদের মতামত নেওয়া প্রভৃতি ।
কেসস্টাডি
কোনো ঘটনা যাচাই করা অথবা বিচার-বিশ্লেষণ করাই হলো কেসস্টাডি। কেস একটি ঘটনা বা সমস্যার বর্ণনা প্রদান করে, যা বাস্তবে একজন ব্যক্তিকে মোকাবিলা করতে হয়েছে। একটি কেসের সমস্যা সমাধানে নির্দিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক চিন্তা-ভাবনা ও বিচার- বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া হলো কেসস্টাডি।
কেসস্টাডি করার জন্য প্রথমে নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা (কেস) ভালোভাবে পড়ে নিতে হয়। পড়ার সময় কেসের প্রধান শব্দগুলো চিহ্নিত করতে হয়। এরপর কেসটিতে কী সমস্যার কথা বলা হয়েছে সেটি চিহ্নিত করতে হয়। অনেক সময় একটি কেসে একাধিক সমস্যাও থাকতে পারে।
সেই সমস্যা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হয়। প্রয়োজনে সমস্যা ভালোমতো বোঝার জন্য বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনাও করতে হয়। উক্ত সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে ভাবতে হয়।
এ ব্যাপারে ক্লাসের সহপাঠী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করা যেতে পারে। এরপর সমস্যার যৌক্তিক সমাধান খুঁজে বের করে তা লিখে শিক্ষক বা অভিভাবকের মতামত গ্রহণ করতে হয়।
কেসে বর্ণিত সমস্যাটি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সম্পর্কে গভীর অনুভূতি লাভ করা যায়। এর মাধ্যমে নতুন ও উন্নততর কার্যক্রমের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে। এতে প্রকৃত জ্ঞান ও শিক্ষা অর্জিত হয় ।
সাক্ষাৎকার
সাক্ষাৎকার হলো একটি ধরনের মৌখিক কথোপকথন যার মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও অনুভূতি প্রকাশ করা হয়। এর মাধ্যমে কোনো বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয় । এর ফলে ঐ বিষয় সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা পাওয়া যায় । সাক্ষাৎকারের বৈশিষ্ট্য :
১.সাক্ষাৎকারের তথ্য সংগ্রহকারী এবং তথ্য প্রদানকারীর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয় ।
২ . সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্য গ্রহণকারী ও তথ্য প্রদানকারীর মধ্যে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ স্থাপিত হয় ।
৩. সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্যদাতার সামাজিক অবস্থান নির্ণয় করা যায় ।
৪. সাক্ষাৎকারে সূচি অনুসরণ করা হয়। সূচিতে অন্তর্ভুক্ত বিষয়াবলি অনুসারে তথ্য সংগ্রহকারী তথ্যদাতার নিকট ধারাবাহিকভাবে প্রশ্ন করে থাকে এবং উত্তর সংগ্রহ করে থাকে।
৫. সাক্ষাৎকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রশ্নের ধারাবাহিকতা রক্ষা। সাক্ষাৎকারে উত্তরদাতাকে প্রথমে সহজ ও তার পছন্দ অনুসারে প্রশ্ন করতে হয়।
৬. সাক্ষাৎকারে প্রাপ্ত তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়। অর্থাৎ, উত্তরদাতা যেসব উত্তর প্রদান করেন তথ্য সংগ্রহকারী সেসব তথ্য রেকর্ড করেন ।
৭. সাক্ষাৎকার পদ্ধতিতে খোলামেলা আলোচনা হয়ে থাকে। খোলামেলা আলোচনার ফলে অনেক গোপন তথ্য রেকর্ড করেন। ৮. সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যের গুণগতমান নিশ্চিত হয় ।
আত্মজিজ্ঞাসা
নিজেকে চেনা-জানাকে বলে আত্মজ্ঞান। আর নিজেকে চিনতে-জানতে হলে নিজের কাছে নিজেকে প্রশ্ন করতে হয়। প্রশ্নের উত্তরগুলো উপলব্ধি করতে হয়। এভাবে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করা এবং এর উত্তর উপলব্ধি করার নামই আত্মজিজ্ঞাসা। নিজেকে ছোট ছোট প্রশ্ন করার মাধ্যমে আত্মজিজ্ঞাসা করা হয় ।
এরপর নিজেরই সেসব প্রশ্নের উত্তর চিন্তা করতে হয়। আত্মজিজ্ঞাসার মাধ্যমে নিজেদের সবল ও দুর্বল দিক জানা যায়। নিজের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে তা শুধরানোও যায় । নিজের কতটুকু উন্নতি হয়েছে তাও আত্মজিজ্ঞাসার মাধ্যমে জানা যায় ।
অষ্টম শ্রেণি‘র জীবন ও জীবিকা‘র অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল প্রশ্নোত্তর | Class8 2024
মূল্যবোধ
যে চিন্তাভাবনা, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও সংকল্প মানুষের সামগ্রিক আচার-ব্যবহার এবং কর্মকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করে, তাকে মূল্যবোধ বলে । সমাজবিজ্ঞানী এফ. ই. স্পেন্সার বলেছেন, ‘মূল্যবোধ হলো একটি মানদণ্ড, যা আচরণের ভালো-মন্দ বিচারের এবং সম্ভাব্য বিভিন্ন লক্ষ্য থেকে কোনো একটি পছন্দ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
মূলকথা হলো, মূল্যবোধ আমাদের লক্ষ্য নির্ধারণেও প্রভাববিস্তার করে। তবে সব সমাজে মূল্যবোধের প্রকাশ একই রকম না-ও হতে পারে। যেমন : ধরা যাক, শুভেচ্ছা বিনিময়ের কথা; কোনো কোনো দেশে কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে সালামের মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়।
আবার কোনো দেশে কারো সঙ্গে দেখা হলে গুড মর্নিং অথবা গুড ইভিনিং জানিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়। কারো সঙ্গে দেখা হলে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে হয়। এটি হলো মূল্যবোধ, যার প্রকাশ একেক দেশে একেক রকম।
সুতরাং বলা যায়, স্থান পরিবর্তনের কারণে মূল্যবোধ প্রকাশে পরিবর্তন ঘটতে পারে । আবার সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গেও অনেক সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তন হয়।
এই কারণে আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিদ্যমান মূল্যবোধ বিবেচনায় রাখতে হয়। মনে রাখতে হবে, আমাদের আগ্রহ বা ইচ্ছার প্রতিফলনে মূল্যবোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে প্রভাববিস্তার করে ।
পেশাগত লক্ষ্য অর্জনে যে যে মূল্যবোধ চর্চা করা হয়-
- সততা বজায় রাখা
- প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে কাজ করা
- সবার সাথে উত্তম ব্যবহার করা
- দেশ ও সমাজের কল্যাণে কাজ করা
- প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে নিজস্ব স্বার্থ ত্যাগ করা
- কাউকে না ঠকানো
- দেশীয় আইন মান্য করা
স্বমূল্যায়ন
স্বমূল্যায়ন হলো নিজেই নিজের মূল্যায়ন করা। এটি একটি পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে কোনো বিষয়ে নিজের অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। নিজের কোনো কাজ নিজেই মূল্যায়ন করলে সহজেই সবল ও দুর্বল দিক খুঁজে পাওয়া যায়। এতে কোন কোন ক্ষেত্রে উন্নতি করা দরকার তা নির্ধারণ করা যায়। সুতরাং স্বমূল্যায়ন হলো নিজের কর্মক্ষমতা ও আচরণের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ।
স্বমূল্যায়ন মূল্যায়নের উপায় :
১. সম্পাদিত কাজসমূহের তালিকা তৈরি;
২. প্রতিটি কাজের পারদর্শিতা স্তর নির্ধারণ;
৩. প্রতিটি কাজের নিজের পারদর্শিতা অনুযায়ী টিক (√) চিহ্ন দেওয়া;
৪. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া;
৫. পারদর্শিতা অনুযায়ী নিজের প্রাপ্তি অবস্থান পর্যালোচনা করা;
৬. দুর্বল দিকগুলো খুঁজে বের করা;
৭. দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া;
৮. শিক্ষক/অভিভাবকের মন্তব্য নেওয়া।
স্বমূল্যায়ন থেকে আমরা যা শিখি :
১. নিজের উন্মুক্ত ক্ষেত্রসমূহ;
২. নিজের ভেতর লুক্কায়িত ক্ষেত্রসমূহ এবং
৩. নিজের ভেতর অজানা ক্ষেত্রসমূহ ।
এককথায় বলতে গেলে, স্বমূল্যায়ন হলো আমাদের কাজের অগ্রগতি, বিকাশ, কোনগুলোর উন্নতি হয়েছে এবং কোন ক্ষেত্রগুলোতে উন্নতি করতে হবে তা নির্ধারণ করার একটি প্রক্রিয়া ।
প্রজেক্টর ও এর ব্যবহারের নিয়মাবলি
প্রজেক্টর হলো একটি ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল যন্ত্র; যা দিয়ে ভিডিও, ছবি ও বিভিন্ন তথ্য বড় স্ক্রিনে দেখা যায়। এর ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ক্রমশ বেড়েই চলছে। বিভিন্ন সেমিনার, সভা, ক্লাসরুম, ট্রেইনিং, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রজেক্টরের ব্যবহার লক্ষ করা যায় ।
প্রজেক্টর ব্যবহারের নিয়মবালি :
- প্রজেক্টর চালু হওয়ার পর সরাসরি বিদ্যুতের কানেকশন বন্ধ না করা।
- প্রজেক্টর বন্ধ করার সময় পাওয়ার বাটন প্রেস করে বন্ধ করা।
- প্রজেক্টর বন্ধ করার পর অন্তত ৩০ মিনিট খোলা জায়গায় রাখা ।
- চালু অবস্থায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে না সরানো ।
- ধুলো-বালি যাতে না জমে সে দিকে লক্ষ রাখা ।
- লো ভোল্টেজে না চালানো ।
প্রজেক্ট ওয়ার্ক
প্রজেক্ট ওয়ার্ক হলো হাতে-কলমে কোনো কাজ করা। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিষয়বস্তুর ওপর অধ্যয়ন এবং গবেষণা করতে পারে। শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষমতা, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা ব্যবহার করে কাজটি বাস্তবায়নের জন্য নিজেরাই চেষ্টা করে।
প্রজেক্ট ওয়ার্কের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পর্যবেক্ষণ, যুক্তি, ব্যাখ্যা, অনুমান, বাস্তবমুখী অভিজ্ঞতা ইত্যাদি বিভিন্ন দক্ষতা লাভের সুযোগ পায়। অর্থাৎ বিষয়বস্তুভিত্তিক শিক্ষাকে ব্যবহারিক শিক্ষায় রূপান্তর করতে প্রজেক্ট ওয়ার্ক ব্যবহৃত হয়।
- প্রকল্প নির্বাচন
- প্রকল্পের বিষয়
- উদ্দেশ্য নির্ধারণ
- প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ পরিকল্পনা
- প্রকল্প বাস্তবায়ন
- প্রতিবেদন তৈরি
প্রেজেন্টেশন বা উপস্থাপনা ও এর কৌশল
কোনো বিষয়কে সুন্দর, রুচিশীল ও শ্রুতিমধুরভাবে তুলে ধরাকে প্রেজেন্টেশন বা উপস্থাপনা বলে । সাধারণত কোনো সেমিনার, মিটিং, দলগত আলোচনা, ক্লাসরুম প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রেজেন্টেশন বা উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়। উপস্থাপনার সৌন্দর্য নির্ভর করে উপস্থাপক কীভাবে উপস্থাপনা করছেন তার ওপর। আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করার জন্য বিশেষ কিছু দক্ষতা বা কৌশল
জানা প্রয়োজন ।
উপস্থাপনা কৌশল
- উপস্থাপনা করার আগে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।
- উপস্থাপনার শুরুতেই সুন্দরভাবে নিজের পরিচয় দেওয়া।
- উপস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপস্থাপনার অনুষ্ঠান দেখা ।
- পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইডে প্রেজেন্টেশন করার ক্ষেত্রে প্রজেক্টরের ব্যবহার জানা ।
- ভাষার সঠিক ব্যবহার করা।
- উচ্চারণ শুদ্ধ করে তোলা ।
- মিশ্রিত ভাষা থেকে বিরত থাকা। যেমন : বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি একসাথে না বলা ।
- সুন্দর বাচনভঙ্গি প্রকাশ করা।
- নিজের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটানো।
- বক্তব্য উপস্থাপন করার জন্য কণ্ঠের নিয়মিত চর্চা করা।
- উপস্থাপনার ব্যাপারে ইতিবাচক চিন্তা করা।
- গঠনমূলক আলোচনা করা।
- উপস্থাপনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আধুনিকতার চিন্তা-চেতনা তৈরি করা ।
- নিজের মধ্যে ইতস্তত বা সংকোচবোধ করলে তা পরিহার করা।
- উপস্থাপনার সময় ভয় দূর করে স্বাভাবিক থাকা ।
- উপস্থাপনের ক্ষেত্রে অবশ্যই সুন্দর বাক্য ব্যবহার করা এবং বাক্যগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে বলা।
- উপস্থাপনার ক্ষেত্রে অবশ্যই পোশাক সচেতন থাকা।
- উপস্থাপনার ক্ষেত্রে শুধু নিজেকে প্রাধান্য না দিয়ে অন্যকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।