(ফ্রি PDF) রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর ও (ফ্রি PDF) রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর সহ শিক্ষমূলক সকল বিষয় পাবে এখান থেকে: অধ্যায় ৫.৭ : লক, এর অতিসংক্ষিপ্ত, প্রশ্নোত্তর,সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ও
রচনামূলক প্রশ্নোত্তর, সাজেশন সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনার্স ১ম বর্ষের যেকোন বিভাগের সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
(ফ্রি PDF) রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর
অনার্স প্রথম বর্ষ
বিষয়ঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি
অধ্যায় ৫.৭ : লক
বিষয় কোডঃ ২১১৯০৯
০৪. জন লকের সম্মতি তত্ত্ব আলোচনা কর ।
অথবা, জন লকের সম্মতিসংক্রান্ত মতবাদটি আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম জন লক, যার হাত ধরে আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা জন্মলাভ করে। তিনি বিশ্বাস করতেন শাসক কখনও সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক হতে পারে না; বরং সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক হলো জনগণ যাদের সম্মতির ভিত্তিতে সরকার গঠিত হবে।
যে সরকার জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নয়, সে সরকার জনগণের আনুগত্য দাবি করতে পারে না। আর জনগণও সে সরকারকে মানতে বাধ্য নয়। এ আলোচনার মাধ্যমে তিনি এক ধরনের তত্ত্বের অবতারণা করেন যা জন লকের ‘সম্মতি তত্ত্ব’ বা নামে পরিচিত।
জন লকের সম্মতি তত্ত্ব : জন লকের রাষ্ট্রদর্শনে সম্মতি তত্ত্ব অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাষ্ট্রচিন্তায় জন লকের সম্মত্তি তত্ত্ব এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। তার মতে, কোনো শাসকের বৈধতার প্রধান ভিত্তি হলো জনগণের সম্মতি।
- আরো পড়ুন:-রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)
- আরো পড়ুন:-রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ফ্রি PDF
- আরো পড়ুন:- PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-PDFডাউনলোড অনার্স রাজনৈতিক হবস: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক হবস: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর PDFডাউনলোড
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক হবস: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF ডাউনলোড
যে সরকার জনগণের সম্মতিতে গঠিত নয়, সে সরকার কোনো বৈধ সরকার নয় এবং জনগণের আনুগত্য দাবি করতে পারে না। এ ধরনের সরকারের বিরোধিতা করার অধিকার নাগরিকদের আছে। তার সম্মতি তত্ত্বের মূল কথাই হলো সরকার জনগণের সম্মতিতে গঠিত হবে এবং তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করবে ।
সম্মতির প্রকারভেদ : জন লক তার সম্মতি তত্ত্বে সম্মতিকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করেছেন। যথা : প্রকাশ্য সম্মতি ও অপ্রকাশ্য বা মৌন সম্মতি ।
১. প্রকাশ্য সম্মতি : প্রাকৃতিক রাজ্যের অনিশ্চয়তা ও অনিরাপত্তা মুক্তির আশায় মানুষ যে সম্মতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র এবং পরবর্তীতে সরকার গঠন করেছিল তাকেই প্রকাশ্য সম্মতি বলে ।
২. মৌন সম্মতি : জন লকের মতে, যখন জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠিত হচ্ছে ঠিক ঐ সময় একশ্রেণির মানুষ তাদের সম্মতি না জানিয়ে চুপ ছিল কিন্তু তারাও রাষ্ট্র প্রদত্ত অধিকার ভোগ করতো। সম্মতি ছাড়া কোনো অধিকার ভোগ করা যায় না। তাদের এ অধিকার ভোগের পিছনে ছিল তাদের অপ্রকাশ্য বা মৌন সম্মতি।
জন লকের সম্মতি তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য : জন লক তার সম্মতি তত্ত্বের মাধ্যমে জনগণের শাসন তথা গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। তার এ তত্ত্বের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান যা নিম্নে আলোচনা করা হলো-
১. রাষ্ট্রের ভিত্তি : জন লকের সম্মতি তত্ত্ব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রের সৃষ্টি, স্থায়িত্ব ও শাসনব্যবস্থাসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ডের জন্য সম্মতি অপরিহার্য। সমাজ বা সরকারের বৈধতা নির্ভর করে ঐ সমাজের জনগণের সম্মতির ওপর।
এ সম্পর্কে জন লক বলেন, “The consent of every individual made a community” অর্থাৎ, প্রতিটি ব্যক্তির সম্মতির ভিত্তিতে একটি সম্প্রদায় তৈরি হয়। তাই লক বলেন, রাষ্ট্রের .ভিত্তি অবশ্যই সম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
- আরো পড়ুন:- PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-PDFডাউনলোড অনার্স রাজনৈতিক হবস: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক হবস: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর PDFডাউনলোড
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক হবস: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF ডাউনলোড
২. সম্পত্তি ভোগ : প্রকৃতির রাজ্যে স্বাধীনভাবে মানুষ সম্পত্তি ভোগ করতে পারত না। আর এ অনিশ্চয়তা দূর করতেই মানুষ সম্মতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠন করে এবং সম্পত্তি ভোগের স্বাধীনতা লাভ করে।
এ সম্পর্কে জন লক বলেন, ” The supreme power cannot take from any man, any part of his property without his consent. ” অর্থাৎ, কারো সম্পত্তির অধিকার যদি স্পর্শ করতে হয় তবে সম্পদের মালিকের সম্মতি ছাড়া সরকার তা করতে পারবে না।
৩. নাগরিকের আনুগত্য : জন লক মনে করতেন নাগরিকের আনুগত্য নির্ভর করে নাগরিকের সম্মতির ওপর। যে সরকার নাগরিকের সম্মতির ওপর গড়ে উঠেনি, সে সরকারকে নাগরিক আনুগত্য করতে বাধ্য নয় এমনকি সরকারও আনুগত্য দাবি করতে পারে না।
নাগরিকের আনুগত্য ও সম্মতি উভয়ই পরস্পরের সাথে সম্পর্কিত । নাগরিকের সম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকারই কেবল নাগরিকের আনুগত্য দাবি করতে পারে।
৪. প্রকাশ্যতা : জন লক জনগণের প্রকাশ্য সম্মতি জ্ঞাপনের পরামর্শ দেন। তার মতে, জনগণ প্রকাশ্যে সরকারের প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন বা বিরোধিতা করতে পারে ।
৫. রাজনৈতিক অধিকার সংরক্ষণ : মানুষ জন্মগতভাবেই সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব মানুষ তার সম্মতির মাধ্যমে তার সেই অধিকার ভোগ করতে পারে। কেননা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় নাগরিকের সম্মতির ভিত্তিতে যা প্রকাশের মাধ্যমে নাগরিক তার রাজনৈতিক অধিকার সংরক্ষণ করতে পারে।
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক সেন্ট অগাস্টিন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর PDF
- আরো পড়ুন:- অনার্স রাজনৈতিক সেন্ট অগাস্টিন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর PDF
- আরো পড়ুন:- PDF ফ্রি অনার্স: রাজনৈতিক সেন্ট অগাস্টিন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
৬. চিরস্থায়ী বন্ধন : জন লকের সম্মতি তত্ত্বের মাধ্যমে যারা রাষ্ট্র গঠন করে তারা রাষ্ট্রের সাথে চিরস্থায়ী বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যায়। লকের মতে, “যারা প্রকাশ্য ঘোষণার মাধ্যমে রাষ্ট্র গঠনে সম্মতি প্রদান করেছে, তারা চিরস্থায়ী ও অপরিহার্যভাবে রাষ্ট্রের সাথে আনুগত্যের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেছে।”
৭. জবাবদিহিতা : জন লকের সম্মতি তত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত সরকার জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য কেননা জনগণের সম্মতির ওপর সরকার গঠিত এবং সরকার উৎখাত করার ক্ষমতাও জনগণের আছে।
জন লকের সম্মতি তত্ত্বের সমালোচনা : জন লকের সম্মতি তত্ত্ব সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। নিম্নে জন লকের সম্মতি তত্ত্বের কিছু সমালোচনা তুলে ধরা হলো-
১. লক বলেন, সরকারের বৈধতার মাপকাঠি সম্মতি কিন্তু কখন, কীভাবে সম্মতি লাভ করবেন তার ব্যাখ্যা তিনি করেননি ।
২. জন লকের মতে, কোনো প্রজন্ম সম্মতি প্রকাশ করলে পরবর্তী প্রজন্ম তা মানতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু একজনের সম্মতি কখনও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাধ্যতামূলক হতে পারে না।
৩. সম্পত্তি ভোগের ক্ষেত্রে লক যে সম্মতির কথা বলেছেন, তা অনেকে বুর্জোয়া চিন্তাধারা বলে উল্লেখ করেছেন। কেননা যাদের সম্পত্তি নেই তার কাছে সম্মতির কোনো মূল্য নেই।
৪. সম্মতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সরকার নাগরিকের অধিকার সংরক্ষণ করবে। কিন্তু বাস্তবে তা নাও হতে পারে কেননা বর্তমানে সম্মতির ভিত্তিতে অনেক সরকারই নাগরিকের অধিকার লঙ্ঘন করছে।
৫. ম্যাকডোনাল্ড (MacDonald) সম্মতি তত্ত্বের নৈতিক ভিত্তির মধ্যে শূন্যতা লক্ষ করেছেন। কারণ সম্পদ চিরস্থায়ী কোনো বিষয় নয়। তাছাড়া সম্পদ স্থিতিশীলও নয়; বরং গতিশীল ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, জন লকের সম্মতি তত্ত্বের যতই সমালোচনা থাকুক না কেন, তিনি এ তত্ত্বের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন।
- আরো পড়ুন:-অনার্স: সেন্ট অগাস্টিন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (PDF ফ্রি)
- আরো পড়ুন:- অনার্স সেন্ট অগাস্টিন: অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (PDF ফ্রি)
- আরো পড়ুন:- (PDF ফ্রি) অনার্স সেন্ট টমাস একুইনাস: রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
রাষ্ট্র গঠনে ব্যক্তির ভূমিকা শুধু মেনে নিয়েই ক্ষান্ত হননি; বরং রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বক্ষেত্রে ব্যক্তির মতামত যে অপরিহার্য তা স্বীকার করে নিয়েছেন। সুতরাং আধুনিক গণতন্ত্রের ভিত্তি জন লকের সম্মতি তত্ত্বের ওপর অনেকাংশে প্রতিষ্ঠিত ।
০৫. জন লককে সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক বলা হয় কেন? আলোচনা কর।
অথবা, জন লককে সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা বলা হয় কেন ? বিশ্লেষণ কর।
উত্তর : ভূমিকা : “Where ever law ends, Tyranny begins”—John Locke. সপ্তদশ শতাব্দীর অন্যতম দার্শনিক, সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জন লক। তার বিখ্যাত গ্রন্থ ”Two Treatises on Civil Government” এ যে শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি আলোচনা করেছেন তা আধুনিক গণতন্ত্রের সাথে অনেকাংশেই মিলে যায়।
তিনি বিশ্বাস করতেন যে, জনগণের সকল প্রকার অধিকার সংরক্ষণ করার জন্যই সরকার নামক প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়েছে। আর তাদের এ কাজের জন্য জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। যা একমাত্র সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় পরিলক্ষিত হয়। আর এ জন্যই তাকে সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক বলে অভিহিত করা হয়।
জন লককে সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক বলার কারণ : সংসদীয় সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো আইনসভার সর্বোচ্চ মর্যাদা ও প্রাধান্য। এ ধরনের পদ্ধতিতে সরকার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন এবং সরকার আইনসভা গঠন করে।
সরকার তার যাবতীয় কাজের জন্য আইনসভার নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে। আর সরকারের সকল ক্ষমতার মূলে থাকে জনগণ। নিম্নে জন লককে আধুনিক সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক বলার কারণসমূহ আলোচনা করা হলো-
১. জনসম্মতির ভিত্তিতে সরকার : জন লক জনসম্মতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নিয়মতান্ত্রিক সরকারের কথা বলেছেন। একনায়কতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র বা রাজতান্ত্রিক শাসনের তিনি ঘোর বিরোধী ছিলেন। তার মতে,
“সরকারের ক্ষমতার মূলভিত্তি হচ্ছে জনসমর্থন ও সম্মতি। যে সরকার জনগণের সম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়, সে সরকার জনগণের আনুগত্য দাবি করতে পারে না।” এভাবে তিনি জনসম্মতির ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার পক্ষপাতী ছিলেন।
২. জনগণের সার্বভৌমত্ব জন লক জনগণকে সার্বভৌম ক্ষমতার আধার হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, “জন সার্বভৌমত্ব না থাকলে গণতন্ত্র সফল হতে পারে না। ফলে স্বৈরশাসন বিস্তার লাভ করার সম্ভাবনা থাকে।”
এভাবে তিনি জনগণের ক্ষমতাকে স্বীকার করে গণতান্ত্রিক শাসনের কথা বলেছেন। সর্বোপরি সরকার গঠনে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ক্ষমতাকে স্বীকার করেন।
৩. নিয়মতান্ত্রিক শাসনের প্রতিষ্ঠা : লক তার শাসনব্যবস্থার আলোচনায় নিয়মতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার কথা বলেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং রাষ্ট্রের কল্যাণসাধনে নিয়মতান্ত্রিক শাসনের গুরুত্ব অপরিসীম। ‘
রাজা ঈশ্বরের প্রতিনিধি’ এ ধরনের কাল্পনিক কথা তিনি অস্বীকার করেন এবং রাজার শাসনের কৌশল হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এভাবে তিনি নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেন।
৪. সরকারের সীমাবদ্ধ ক্ষমতা : জন লক জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং সরকারকে সীমাহীন ক্ষমতা প্রদানের বিপক্ষে ছিলেন । তিনি মনে করতেন, সরকার সীমাহীন ক্ষমতা পেলে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠতে পারেন।
তার ভাষায়, “সরকারের ক্ষমতা চূড়ান্ত বা নিরঙ্কুশ নয়। মানুষের প্রাকৃতিক অধিকারকে অধিকমাত্রায় বিকশিত করার জন্যই সরকার। সরকার যদি তার এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তবে জনগণ বিদ্রোহের মাধ্যমে সরকারকে উৎখাত করতে পারবে।”
৫. ধর্মনিরপেক্ষতা আধুনিক সংসদীয় গণতন্ত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ধর্মনিরপেক্ষতা। জন লক ধর্ম ও রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণ আলাদা বিষয় বলে উল্লেখ করেন। তার মতে, “ধর্মান্ধতা রাষ্ট্রীয় ঐক্যে বাধা সৃষ্টি করে।
পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস গড়ে তোলে যা রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে লিপ্ত হতে অনুপ্রাণিত করে। আর এভাবে গণতান্ত্রিক পরিবেশের বিঘ্নিত করার সম্ভাবনা থাকে।” এভাবে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা প্রচার করেন।
- আরো পড়ুন:- (PDF ফ্রি) অনার্স সেন্ট টমাস একুইনাস: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অনার্স সেন্ট টমাস একুইনাস: অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF ফ্রি
- আরো পড়ুন:- অনার্স এরিস্টটল: রাজনৈতিক রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)
৬. ব্যক্তিস্বাধীনতা : জন লক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ব্যক্তিকে সর্বময় ক্ষমতার মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে তিনি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের জন্মই হচ্ছে ব্যক্তির স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং তার ব্যক্তিত্ব বিকাশে সব সুযোগ সুবিধা প্রদান করতে। ব্যক্তিগত স্বাধীনতা না থাকলে ব্যক্তিত্ব বিকশিত হতে পারে না। আর তাই তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের অন্যতম পূর্বশর্তই হলো ব্যক্তিস্বাধীনতা।”
৭. আইন বিভাগের প্রাধান্য : জন লকই প্রথম দার্শনিক যিনি আইনকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আইন বিভাগকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন। অন্যান্য বিভাগকে তিনি আইন বিভাগের নিয়ন্ত্রণে আনতে যৌক্তিক আলোচনা করেন।
তার মতে, “রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ সংস্থা হলো আইনসভা। আইনসভার সদস্যগণ জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হতে হবে। তাহলেই আইনসভা কর্তৃক জনকল্যাণমূলক আইন তৈরি হবে।” আর এভাবেই তিনি আইন বিভাগকে গুরুত্ব দিয়ে আধুনিক সংসদীয় গণতন্ত্রের শাসনের বীজ বপন করেন ।
৮. সহনশীলতা : সুষ্ঠু শাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে সহনশীলতা অপরিহার্য। জন লকের মতে, “সহনশীলতা ছাড়া ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব না। ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সবাইকে একটি বন্ধনে থেকে কাজে মনোনিবেশ করতে হবে ।
আর সহনশীলতা প্রদর্শনই শ্রেষ্ঠতম উপায়।” ৯. জন সম্পত্তি : জন লক তার সম্পত্তি তত্ত্বের মাধ্যমে, সম্পত্তি লাভ মানুষের একটি প্রাকৃতিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আর সরকারকে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একমাত্র দায়িত্ব বলেছেন।
তার মতে, “The only task of the government is the protection of private property.” এভাবে তিনি জনগণের সম্পত্তির মালিকানা স্বীকার করেন।
৯. জন সম্পত্তি : জন লক তার সম্পত্তি তত্ত্বের মাধ্যমে, সম্পত্তি লাভ মানুষের একটি প্রাকৃতিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আর সরকারকে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একমাত্র দায়িত্ব বলেছেন।
তার মতে, “The only task of the government is the protection of private property..” এভাবে তিনি জনগণের সম্পত্তির মালিকানা স্বীকার করেন ।
- আরো পড়ুন:- (ফ্রি PDF) অনার্স এরিস্টটল: রাজনৈতিক রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-অনার্স এরিস্টটল: রাজনৈতিক রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)
- আরো পড়ুন:-অনার্স এরিস্টটল: রাজনৈতিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)
১০. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি : জন লক একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর একাধিক ক্ষমতা দেওয়ার বিপক্ষে ছিলেন। তার মতে, একজনের ওপর যদি একই সাথে আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় তবে সেক্ষেত্রে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠতে পারে। সেজন্য তিনি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাস করতেন ।
১১. সরকার গঠনে গুরুত্ব : জন লক সরকার গঠনের ওপর অধিকতর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি মনে করতেন, একবার সম্মতির ভিত্তিতে সরকার গঠন হলে সমাজের সব ক্ষমতা তাদের ওপর ন্যস্ত হবে। তবে এ সরকার গঠনে তিনি জনসম্মতির ওপর জোর দেন যার মাধ্যমে আধুনিক গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আধুনিক সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জন লক অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি গণতন্ত্রের প্রাণ দিয়েছেন।
নিয়মতান্ত্রিক সরকার, সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন, পার্লামেন্টারি সার্বভৌমত্বের ধারণা ইত্যাদি বিষয়ে জন লকের মত গণতন্ত্রের পথকে সুগম করেছে। আইন বিভাগের ক্ষমতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে জনগণের শাসন কায়েমের পথ দেখিয়েছেন। আর এসব কারণেই তাকে আধুনিক সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক বলা হয়।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। ফ্রি পিডিএফ ফাইল এখান থেকে ডাউনলোড করে নিন। (ফ্রি PDF) রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি লক: রচনামুলক প্রশ্নোত্তর