HSC | তাহারেই পড়ে মনে | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ১৬-১৯ | PDF: বাংলা ১ম পত্রের তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি হতে যেকোনো ধরনের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের তাহারেই পড়ে মনেকবিতাটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
‘স্যার, নিজের কথার এমন উত্তুঙ্গ উপস্থাপনা কি সাহিত্যের শর্ত ভঙ্গ করে না? একজন ছাত্রের তরফ থেকে এল প্রশ্ন:জামিল স্যারের দিকে। জামিল স্যার, আত্মবিশ্বাসে ঋদ্ধ তার চোখ দুটো ছাত্রদের দিকে বিছিয়ে দিয়ে বললেন- না, করে না। কবিতায় গীতিধর্মিতা থাকে। আর গীতিধর্মিতা ব্যক্তিগত দুঃখ সুখের মর্মমূল থেকে উৎসারিত। যেমন ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি তার একজন স্বজনকে হারিয়েছেন। তাইতো প্রকৃতির কোন কিছু তাঁর চিত্তে দোলা লাগায় না। সুন্দরের পূজারী হয়েও সুন্দরের প্রতি তাঁর তীব্র বিমুখতা। আসলে তাঁর সেই স্বজনকে তিনি ভুলতে পারেন না। তাইতো সুখকর সমস্ত জীবনানুভব তাঁর কাছে বিবর্ণ, পাণ্ডুর, ধূসর।
ক. ‘ঙঁৎ ংবিবঃবংঃ ঝড়হমং ধৎব ঃযড়ংব ঃযধঃ ঃবষষ ড়ভ ংধফফবংঃ ঃযড়ঁমযঃ’ -এই উপলব্ধিটি কোন কবির।
খ. কবি ভক্তের সৌন্দর্য সৃষ্টি অনুপ্রেরণা সত্তে¡ও কবির বসন্ত বিমুখতার কারণ কী?
গ. প্রদত্ত উদ্দীপক অনুসরণ করে কবির গীতিধর্মী কবিধর্ম বিশ্লেষণ কর।
ঘ. সাহিত্য শর্তাধীন নয়, শর্তহীন:আলোচনা কর।
১৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ঙঁৎ ঝবিবঃবংঃ ঝড়হমং ধৎব ঃযড়ংব ঃযধঃ ঃবষষ ড়ভ ঝধফফবংঃ ঃযড়ঁমযঃ -কথাটি চই. ঝযবষষু. (চবৎপু নুংংযব ংযবষষবু).
খ. বিষাদাক্রান্ত মানুষ অনেক সময়, নানা কারণে অন্তর্গত বিষয়ের খবর অন্যকে জানতে দেয় না। অনেকটা, দুঃখ বিলাসে মগ্ন থাকে সে। কষ্ট বুকের মধ্যে পুষে রেখে নিঃসঙ্গ থাকতে চায়। সুখানুভব তার কাছে খুব বেশি আবেদন সৃষ্টি করতে পারে না। এই ধরনের মনোবিকলনের শিকার কবি।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একটি দুঃখকে দোসর করেছিলেন। তাঁর প্রথম স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেন ছিলেন তাঁর সাহিত্য সাধনার উৎসাহ দাতা। তাঁর অকাল মৃত্যুতে তিনি মুষড়ে পড়েছিলেন।
সেই কষ্টটা তিনি কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তাই বসন্তের এত উৎসবের মধ্যেও তিনি বসন্তের প্রতি মনোযোগী হতে পারেন নি। বরং দুঃখের প্রাবল্যে সুখ বা আনন্দ বিমুখ হয়ে ফিরে গেছে। দুঃখের আঘাতে আহত হয়ে বসন্তের প্রতি বিমুখতা সৃষ্টি হয়েছে।
গ. কবিতার গীতিধর্মিতা একটি অনিন্দ্যসুন্দর অনুষঙ্গ। একসময় যখন সাহিত্যের মান বিচারে ‘অৎঃ ভড়ৎ ধৎঃ ংযধশব’ -এই পরিমাপক বিদ্যমান ছিল তখন বলা হতো, সাহিত্যে নিজের কোন কথা বলা হবে না, কারণ শিল্প নৈর্ব্যক্তিক। কিন্তু পরে কবিরা মানেননি এই বিধি।
নিজের হৃদয়ের ভাবোচ্ছ¡াসকে গীতিমূর্ছনার মাধ্যমে বিকাশ করার প্রয়াস পান অনেক কবি। এগুলোর সাধারণ নাম গীতিকবিতা। যে ধর্ম এই কবিতাগুলোকে বিশিষ্টতা দান করেছে তার নাম:গীতিধর্মিতা। কবি যখন তার একান্ত আত্মগত ভাবোচ্ছ¡াসকে আবেগ কম্পিত সুরে প্রকাশ করেন তখন তা হয় গীতিধর্মী।
উদ্দীপকে সাধারণভাবে একজন কবির গীতিধর্মিতা বিষয়ে প্রাজ্ঞ মত প্রকাশিত হয়েছে। উদ্দীপকে প্রসঙ্গত সুফিয়া কামালের ‘তাহারেই পড়ে মনে’ এ কবিতাটির প্রসঙ্গ এসেছে। এ কবিতাটির মধ্যে গীতিধর্মিতা বিদ্যমান। এ কবিতার শেষ স্তবক থেকে জানা যায় তার এক প্রিয়জন (তাঁর প্রথম স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেন) তাকে রিক্ত নিঃস্ব করে দিয়ে পরলোকে পাড়ি দিয়েছেন।
তাঁকে নিয়ে কবিচিত্তে যে বেদনার বাষ্প তার অভিঘাতে তিনি বসন্তকে পর্যন্ত ফিরিয়ে দিয়েছেন। অন্তরে বহমান দুঃখের ইন্ধনে দ্বারে জাগ্রত বসন্তের বিষয়ে উদাসীন উন্মনা তিনি। নানাভাবে নিজের একান্ত বিষয় সর্বজনবেদ্য করে উপস্থাপন করেছেন কবি।
নিতান্ত স্বল্প পরিসরে কবি তার পূর্ণ হৃদয়কে মেলে ধরেছেন পাঠকের সামনে। এগুলো গীতিধর্মিতার গুণ। ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবির যে কবিধর্ম তা গীতিধর্মিতার লক্ষণাক্রান্ত।
ঘ. মানুষের মনের ভেতরে নিজেকে বিকাশ বা প্রকাশ করার একটা অদম্য ইচ্ছা কাজ করে। এর নাম সৃজন বেদনা। এ বেদনার বিকশিত রূপ যা মানুষের মননশীলতার ফসল:তার নাম শিল্প।
শিল্পের পরিচিতি পর্ব শেষ হলে শিল্প বোদ্ধারা বললেন শিল্প হতে হবে শর্তযুক্ত। শিল্প পবিত্র বস্তু বিধায় তাতে মানুষের বা শিল্পীর একান্ত ব্যক্তিক ইচ্ছা থাকবে না। তাহলে শিল্প তার মহত্ত¡ হারাবে। এভাবে শিল্পের মহত্ত¡ রক্ষার জন্য তাকে শর্তযুক্ত করে দেয়া হল। কিন্তু শিল্প যে মনোগত বিষয় সেটা ভাবা হলনা।
মনোগত বিষয় বলে ব্যক্তি মনের প্রতিফলন শিল্পে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এই স্বাভাবিক প্রাণ প্রবাহের ওপর শর্ত আরোপ করে দিলেন কলাকৈবল্যবাদিরা। কিন্তু কবি বা সাহিত্যিক সম্পর্কে বলা হয়:চড়বঃং ধৎব ঃযব সড়ংঃ ঁহধপশহড়ষিবফমবফ খবমরংষধঃঁৎব ড়ভ ঃযব ড়িৎষফ. কবিরা হলেন আইন ভঙ্গকারী আইন প্রণেতা।
তাঁরা আইন করেন; সে আইন ভেঙে আনন্দ পান। এই প্রবণতার ফল হিসেবে একসময় ঘোষিত হল ‘অৎঃ ভড়ৎ ষরভব ংযধশব’:জীবনের জন্য শিল্প। শিল্পের গোঁড়ালি থেকে শর্তের শেকল খুলে গেল। সাহিত্য হলো শর্তহীন।
ভেবে দেখার বিষয় এই যে মনোজগতে যে সৃষ্টি সুখের ইন্ধন, তাকে কিন্তু শর্তের তর্জনী দিয়ে শাসন করা যায় না। তাহলে সৃষ্টিশীলতাই রুদ্ধ হয়ে যাবে। যখন অৎঃ ভড়ৎ ধৎঃ ঝযধশব-এর স্বৈরতন্ত্র বিদ্যমান ছিল তখনো কিন্তু শিল্পীরা তা মানেননি।
এই না মানা এবং তাকে মেনে নেয়াটা অনুপ্ররণা হিসেবে নিলেন অন্য শিল্পীরা। ফলে শিল্প এক সময় হয়ে পড়লো শর্তহীন। সৃষ্ট হল বিপুল ব্যাপক শিল্প বস্তু। সাহিত্য শিল্পের একটা অনুষঙ্গ। সুতরাং শিল্পের যা প্রাণ ধর্ম তা সাহিত্যের প্রাণ ধর্ম। অতএব সাহিত্য শর্তাধীন নয়, শর্তহীন।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
যারে খুব বেসেছিনু ভালো
সে মোরে ছেড়ে চলে গেল।
রেখে গেছে শুধু মায়া।
লাগে না ভালো অপরূপ প্রকৃতি
যতই করুক কেউ মিনতি।
আমি এখন রিক্ত শূন্য
মন পড়ে রয়েছে তার জন্য।
সে দিল মোরে কেমনে ফাঁকি
আমি এখন বড় একাকী।
ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি কোন গান বাজার কথা জানতে চেয়েছেন?
খ. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতা অবলম্বনে সংক্ষেপে বসন্ত ঋতুর বর্ণনা দাও।
গ. উদ্দীপকের প্রথম দু’চরণে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে ওঠেছে?:ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের ভাব যেন ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার কবি সুফিয়া কামালের মনোবেদনার বহিঃপ্রকাশ।:বিশ্লেষণ কর।
১৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি আগমনী গান বাজার কথা জানতে চেয়েছেন।
খ. সাধারণভাবে প্রকৃতির সৌন্দর্য মানব মনের অফুরন্ত আনন্দের উৎস। সেই অফুরন্ত আনন্দের উৎস হিসেবে পৃথিবীতে বসন্তের আবির্ভাব ঘটেছে। প্রকৃতিতে ঘটে গেছে এক অনিন্দ-হিন্দোল। দখিন দুয়ার খুলে গেছে। বাগানে ফুটেছে বাতাবি লেবুর ফুল।
ফুটেছে আমের মুকুল। দখিনা সমীর গন্ধে গন্ধে অধীর-আকুল হয়েছে। নতুন ফুল প্রকৃতিকে সাজিয়েছে তার পূর্ণ রূপ মাধুর্য দিয়ে। মাধবী কুঁড়ির বুকে গন্ধ ছড়িয়েছে। দখিনা বাতাস বইতে শুরু করেছে। সঙ্গে এনেছে পৃথিবীর সমস্ত সৌরভ।
আমের মুকুলে মৌমাছির গুঞ্জরণ, মাধবী ফুলের কুঁড়ির নাচন আর বনে বনে ফুলের আসরে নানা পাখ-পাখালীর কণ্ঠে বসন্তের এ আগমন যেন মানবমনকে আনন্দে শিহরণে উদ্বেলিত করে তুলেছে। বনভ‚মি নতুন পত্রপলবে বিচিত্র ফুলের বাহারে হয়ে উঠেছে রঞ্জিত, নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে উঠেছে পুলকিত স্বচ্ছলতার এক প্রগাঢ় নিকুঞ্জ।
গ. উদ্দীপকের প্রথম দু’চরণে কবি বেগম সুফিয়া কামাল রচিত ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার প্রিয়জন হারানোর বেদনার দিকটি ফুটে ওঠেছে। কবি সুফিয়া কামাল তার প্রথম স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনকে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন।
তিনিই ছিলেন কবির সাহিত্য সাধনার প্রধান সহায়ক ও উৎসাহদাতা। মনে:প্রাণে যাকে ভালোবেসেছিলেন, সেই ভালোবাসার ধনকে তিনি নিজের কাছে ধরে রাখতে পারেননি। আকস্মিকভাবেই মৃত্যুকে বরণ করেন তার স্বামী, আর কবি হয়ে পড়েন একাকী, নিঃস্ব।
উদ্দীপকের কবিতাংশের প্রথম দু’টি চরণে এ বিষয়টিই ফুটে ওঠেছে। এ অংশের কবি নিজেও তাঁর প্রিয়জনকে খুব ভালোবেসেছিলেন। কিন্তু নিয়তি তাকে দিল কবি সুফিয়া কামালের মতো বেদনার আঘাত। তাঁর প্রিয়জনও তাঁকে ছেড়ে চলে গেল না ফেরার দেশে। এত ভালোবাসলেন, তবুও আটকানো গেলো না তাকে।
মোটকথা যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি আবর্তিত হয়েছে, সেই ঘটনাটিই উদ্দীপকের প্রথম দু’চরণে উলেখ করা হয়েছে এ কথাটি নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নেয়া যায়।
ঘ. ‘তাহারেই পড়ে মনে কবিতাটি কবি বেগম সুফিয়া কামালের ব্যক্তিজীবনের দুঃসময় ঘটনার রূপকধর্মী বহিঃপ্রকাশ। উদ্দীপকটিও যেন একই দুঃখবোধকে ধারণা করে আছে। ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি বসন্তের আগমনে, তার অপরূপ সৌন্দর্যে মোটেও আপ্লুত নন।
কারণ তাঁর হৃদয় এখন শীতের মতোই রিক্ত, নিঃস্ব আর শূন্যতায় ভরপুর। বসন্তের আগমন তাঁর হৃদয়ে কোনোরকম আবেদন সৃষ্টি করতে ব্যর্থ। কেননা, কবি তাঁর প্রাণপ্রিয় স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনকে হারিয়েছেন, যিনি ছিলেন কবির সাহিত্য-সাধনার প্রধান সহায়ক ও উৎসাহদাতা।
কিন্তু তাঁর আকস্মিক প্রয়াণকে কবি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। প্রিয়জন হারানোর বেদনা তাঁর হৃদয়ে এমন গভীরভাবে বেজেছে যে প্রকৃতির কোনো পরিবর্তনই তাঁর হৃদয়ের দুয়ার খুলতে পারছে না। পুরো কবিতা জুড়েই কবি তার মনোবেদনার স্বরূপকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন, যার স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখতে পাই উদ্দীপকের কবিতাংশে।
উদ্দীপকের কবিতার কবিও তার প্রিয় মানুষকে, ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে আজ রিক্ত। কেননা, এ মানুষটিই ছিল তার জীবনের ছায়াসঙ্গী এবং তাঁর অবর্তমানেও এখনো তার স্মৃতি কবিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে । আজ কবি এতটাই রিক্ত ও শূন্য যে, প্রকৃতির অপরূপ সাজও তাঁর কাছে কোনো আকর্ষণের বিষয় মনে হয় না।
বরং তিনি তাঁর প্রিয় মানুষটির কথা’ স্মরণ করে একাকী নীরবে, নিভৃতে থাকেন। যে হাহাকার, যার স্পষ্ট উলেখ পাওয়া যায় ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায়। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের কবিতাংশের মূলভাবের মধ্য দিয়ে কবি সুফিয়া কামালো প্রিয়জনকে হারানোর বেদনা ফুটে ওঠেছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে। কিন্তু কিছুই ভালো লাগেনা আমার। বিষাদ ছুঁয়েছে আজ মন ভালে নেই। ইচ্ছে ছিল বসন্তকে নিয়ে একটা গান বা কবিতা লিখবো। মনঃসংযোগ হচ্ছেনা লেখায়। কে তুমি? ও হ্যাঁ- চিনেছি। বসন্তগীতির জন্য এসেছো তুমি? কিন্তু কণ্ঠ যে সমর্থন করে না। মন যে বিক্ষিপ্ত, এবার থাক। তাছাড়া আমি বসন্তগীতি না গাইলেও সেতো ব্যর্থ হয়ে যায়নি। বরাবরের মত সে এসেছে। আমাকে কেন বেদনাবিদ্ধ কর? বসন্ততো আমার অপেক্ষা করেনি! গাছে গাছে ফুল ফুটিয়েছে। কণ্ঠে দিয়েছে গান। “আমার জন্য তো থেমে নেই বসন্তের পুষ্প রচন।”
ক. কবির প্রথম স্বামীর নাম কী?
খ. কবি কেন বসন্তকে সংবর্ধনা জানাতে পারেন নি?
গ. উদ্দীপক অবলম্বনে বসন্তের ধর্ম/বৈশিষ্ট্য লেখ।
ঘ. উদ্দীপক অবলম্বনে সৌন্দর্যপিপাসু একজন কবির মনোবেদনা বিশ্লেষণ কর।
১৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবির প্রথম স্বামীর নাম সৈয়দ নেহাল হোসেন।
খ. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি সুফিয়া কামালের নিজের জীবনের বিষাদময় স্মৃতির করুণ রাগিনী যেন বাণীমূর্তি লাভ করেছে। কবিতায় নিসর্গের বর্ণময় রূপের আড়ালে রয়েছে কবির নিজের জীবনের ভাবোচ্ছ¡াস ও আত্মগত বিচ্ছেদের নিদারুণ মর্মজ¦ালা। শীতের রিক্ততার মধ্যে উৎসারিত হয়েছে কবির জীবনের পুষ্পশূন্য হৃদয় যন্ত্রণা।
প্রথম স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের আকস্মিক মৃত্যুতে কবির জীবনে নেমে এসেছে দুঃসহ এক বিষণœতা। স্বামী ছিলেন তাঁর সাহিত্য সাধনার উৎসাহদাতা। তাই তাঁর মৃত্যুতে কবির মন আচ্ছন্ন হয়ে আছে রিক্ততার হাহাকারে।
এ কবিতাকে আচ্ছন্ন করে আছে এই বিষাদখিন্ন রিক্ততার সুর। তাই আনন্দের ঝর্ণাধারা নিয়ে বসন্ত এলেও উন্মনা কবির অন্তর জুড়ে বেদনার রাগিনী ধ্বনিত। তাই বসন্তকে তিনি সংবর্ধনা জানাতে পারেন নি।
গ. প্রকৃতির স্বাভাবিক ধর্মে বসন্ত একসময় এসে হাজির হয় পৃথিবীর আঙিনায়। ফুল ফুটাতে ফুটাতে তার আগমন। ফুল ছড়াতে ছড়াতে তার লীলা। সংবেদনশীল চিত্ত তার আগমনে পুলকিত হয়; তাকে নিয়ে গান রচনা করে।
আবেগতাড়িত শিল্পীরা বসন্তের অচেতন সত্তায় চেতনের গুণ আরোপ করে হৃদয় বিনিময় করার মধ্যদিয়ে বসন্তকে আপন করে নেয়। তৃষিতকে তৃপ্ত করতেই বসন্ত আসে। তাহলে দুঃখীর দুঃখ দেখলে বসন্ত কি ফিরে যাবে? এমন ঘটনা কি ঘটে?
কবি মনোবেদনায় আহত; অতএব বসন্ত আসবে না! তা হয় না। কে সুখী কে দুঃখী তা দেখেনা বসন্ত। শুধু আনন্দের বার্তা জানানোর জন্য সে আসে। ফুল ফোটায়, রং ছড়ায়, গান গাওয়ায়। বসন্তোৎসব শেষ হলে বিদায় নেয়।
জীবনে দুঃখই বেশি। এই দুঃখসঙ্কুল জীবনে মানুষ সুখ চায়। বসন্ত সেই সুখের গান গায়। আনন্দ যজ্ঞে সকলকে নিমন্ত্রণ করে। এর মধ্যে কেউ যদি দুঃখে থাকে বসন্ত তাকে সান্ত্বনা দিতে পারে না। কারণ সুখ সকলের দুঃখ একান্তই নিজের।
ঘ. কবির কাজ অন্তর হতে বচন আহরণ করে, আনন্দলোক সৃষ্টি করা। তাঁর আত্মগত ভাবোচ্ছ¡াস যখন অন্যকে আপ্লুত করে তখন তা হয় মহৎ কবিতা। এই উচ্ছ¡াস সুখের হতে পারে, দুঃখেরও হতে পারে। প্রদত্ত উদ্দীপকে একজন কবির কথা ব্যক্ত হয়েছে আত্মকথনের ভঙ্গিতে।
তিনি আনন্দলোকের বাসিন্দা। সৌন্দর্য পিপাসু মধুর বসন্ত এসেছে। সৃষ্টির বেদনা জেগেছে মনে। কিন্তু উপযুক্ত পরিবেশ নেই। মন ভালো নেই। ইচ্ছে ছিল অন্তর হতে বচন আহরণ করে একটি মহৎ কবিতা রচনা করবেন। কিন্তু পারছেন না। কারণ কবিতা বা শিল্পের জন্য যে মন দরকার হয়, মনের সেই সুস্থতা নেই তার। তাই কবির সৃজন বেদনা ব্যর্থ হয়।
শিল্পের জন্য যেমন উপলক্ষ বস্তু বা বিষয়বস্তু প্রয়োজন হয়, প্রয়োজন হয় শব্দ প্রকৌশল দক্ষতা। তবে বেশি প্রয়োজন কবির ‘মনোভূমি’ যা বাস্তবের ভিত্তিভূমি বা কল্পভূমি-এসব কিছু থেকেও সত্য। কোন এক প্রাজ্ঞজন কবিকে বলে যান:‘সেই সত্য যা রচিবে তুমি’ আর তার জন্য প্রয়োজন কবির পরিচ্ছন্ন মনোভূমি।
উদ্দীপকে বর্ণিত কবির পক্ষে বসন্তগীতি রচনা করা সম্ভব হচ্ছে না:কারণ তার ‘মনোভূমি’ বসন্তগীতির জন্য উপযুুক্ত ছিলনা। কোন এক দুর্জেয় কারণে তিনি বিষণœ, অন্যমনস্ক; সময় থেকে অনেক দূরে।
এজন্য কবির মনে ক্ষোভ বিদ্যমান দুঃখও আছে। কিন্তু মন যে প্রস্তুত নয়। তাই সৌন্দর্যতৃষ্ণা থাকার পরও কবি সৌন্দর্য সৃষ্টিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। একটি সৃষ্টিশীল সত্তার পক্ষে এটা বড় যন্ত্রণার।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
আলোচনার বিষয় ছিল : ‘মনোবেদনা এবং সঙ্গীত।’ দর্শক সারি থেকে প্রশ্ন এল: ‘বিনোদন কি মনের ওপর চেপে থাকা কষ্টের আবরণকে অপসারিত করতে পারে? আলোচকদের একজন ছিলেন সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ কাজল। তিনি বললেন ‘হ্যাঁ পারে।’ অন্যজন ‘মনোজগত’ পত্রিকার সম্পাদক বললেন, ‘না পারে না।’ মনোবেদনা উৎসারিত হয় মনের ক্ষত থেকে। ক্ষত যত গভীর হয়, বেদনা তত প্রলম্বিত হয়। কখনো কখনো কোন স্থান, কোন প্রাকৃতিক পরিবেশ, কোন ব্যক্তির মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা বেদনাকে মনের উপরিতলে নিয়ে আসে। বিনোদন এই কষ্টকে ভুলিয়ে রাখে মাত্র, বিলুপ্ত করতে পারে না।’ অন্য একজন আলোচক কবি সুমন বললেন- ‘কথাটা ঠিক। এজন্য সুফিয়া কামাল তার প্রথম স্বামীকে কোনদিন ভুলতে পারেন নি। বসন্ত এসেছিল, কিন্তু তাতে তার মনের গহীনে জমে থাকা কষ্ট কমেনি। কেবলই মনে হয়েছিল- সে নেই। পরবর্তী সংসারে সুখের প্রাচুর্য ভুলিয়ে রাখতে পারেনি প্রথম প্রেমের অবলম্বনকে।’
ক. বসন্ত বন্দনা অর্থ কী?
খ. কবিভক্ত কবির কাছে কি মিনতি করছেন? এরূপ মিনতির কারণ কী?
গ. প্রদত্ত উদ্দীপক এবং কবিতা অবলম্বনে দেখাও প্রকৃতির সৌন্দর্য ও কবির মনের অবস্থার মধ্যে কোনটি প্রবল।
ঘ. প্রদত্ত উদ্দীপক অবলম্বনে ভালোবাসার চিরন্তন মূল্যবোধগুলো তুলে ধর।
১৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বসন্ত বন্দনা অর্থ:বসন্তের আগমনে তারই প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে রচিত কোন গান বা কবিতা।
খ. স্রষ্টা যিনি কোনো বিষয়ের, তার কাছে বিষয়ভিত্তিক প্রার্থনা জানানো হবে এটাই স্বাভাবিক। কবি বা শিল্পী সৌন্দর্য স্রষ্টা তাই কবি বা শিল্পীর কাছে শিল্প সৃষ্টির বা সৌন্দর্য সৃষ্টির দাবি সাধারণ মানুষের। প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গকে শিল্পে পরিণত করেন শিল্পীরা, কবিরা। এটা তাঁদের আত্মবিকাশের স্বাভাবিক ধর্ম।
সৃজনশীলতার সহজাত ধারা। তাদের কাছে তাই এ ধরনের প্রত্যাশা করা অমূলক নয়, বরং স্বাভাবিক প্রত্যাশার বিষয়। কবিভক্ত তাই কবির কাছে মিনতি জানাচ্ছে ‘বসন্ত বন্দনা তব কণ্ঠে শুনি:এ মোর মিনতি’ এই আনন্দ লগ্নে বসন্ত নিয়ে গানটা রচনার জন্য মিনতি তার।
সুন্দরের পক্ষে যার নিয়ত অবস্থান এবং সুন্দরের সৃষ্টিতে যার ক্লান্তি নেই তার কাছেইতো সঙ্গত দাবি জানাতে হয়। কবিভক্ত তাই কবির কাছেই বসন্তগীতি রচনার মিনতি জানিয়েছে।
গ. প্রদত্ত উদ্দীপকে এবং ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় প্রকৃতি ও মানব মনের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তাৎপর্যময় অভিব্যক্তি পেয়েছে। তাঁর লেখনীতে বাঙ্নয় হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। দ্বারে জাগ্রত বসন্তকে মনের মাধুরী মিশিয়ে অপরূপ রূপে মূর্ত করে তুলেছেন কবি।
প্রকৃতির রূপ রং মানব মনের অফুরন্ত আনন্দের উৎস। বাসন্তী প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য কবিচিত্তে আনন্দের শিহরণ জাগাবে এবং তিনি তাকে শব্দ প্রকৌশল আর ছন্দমাধুর্যে ফুটিয়ে তুলবেন সেটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু কবির ক্ষেত্রে বাস্তবতা হয়েছে ভিন্ন।
বসন্ত এলেও উদাসীন কবির অন্তর জুড়ে রিক্তশীতের বিদায়ের করুণ রাগিনী বেজে উঠেছে। তাই বসন্ত তাঁর মনে কোন সাড়া জাগাতে পারে না। বসন্তের সৌন্দর্য তার শোকদগ্ধ হৃদয়ে কোন আবেদন সৃষ্টি করতে পারে না।
এ কবিতায় প্রকৃতির সৌন্দর্যের বর্ণনার আড়ালে একটা চাপা শোকের ক্ষীণ রাগিনী বেজে উঠেছে। দেখা যায়:কবিতাটিতে কবির বসন্ত প্রকৃতির সৌন্দর্যের চেয়ে কবি মনের শূন্যতাই প্রধান হয়ে উঠেছে।
প্রকৃতির অনুপম সৌন্দর্যধ্যান আছে এ কবিতায়। কিন্তু সে প্রকৃতি শান্ত স্তম্ভিত বিষাদে মৌন:অন্তত কবির চেতনায়। শীতের বিয়োগ ব্যথা কবিকে অনুক্ষণ ঘিরে রয়েছে বলে বসন্তের সৌন্দর্য কবি হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারে না। প্রথম স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের মৃত্যুর পর কবির এই বেদনাবিধূরতা।
কবি হৃদয় রিক্ততায় ভরা। কবি নিজের শোকাচ্ছন্ন মনের সঙ্গে প্রকৃতির সৌন্দর্যের সামঞ্জস্য করতে পারছেন না বলে সূক্ষ¥ হৃদয়তন্ত্রীতে বসন্তের সমুদয় আয়োজন আবেদন ব্যর্থতার পর্যবসিত হয়েছে। এজন্য কবিমনের অবস্থাই প্রবল এখানে:প্রকৃতি নয়।
HSC | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | PDF Download
HSC | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | বহু নির্বাচনি প্রশ্নসমুহ | PDF
HSC | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর | PDF
HSC | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ১-৫ | PDF
HSC | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ৬-১০ | PDF
ঘ. ভালোবাসা বিষয়টা পুরোটাই হৃদয়জ অনুভূতি। একটি মানবীয় সত্ত¡া আরেকটি মানবীয় সত্তাকে ভাববে-নিজের অন্তরের পূর্ণতার প্রতিপাদক হিসেবে। তার সান্নিধ্যে পুলক লাভ করবে, তার থেকে দূরে গেলে বিষাদাক্রান্ত হবে:একের প্রতি অন্যের:হার্দিক টান থাকবে।
থাকবে কৃতজ্ঞতাবোধ, দায়বোধ, কর্তব্যবোধ, ত্যাগ, বোঝাপড়া, মেনে নেওয়া:মনে নেওয়া। এসব কিছুর সমষ্টি ভালোবাসা। এই ভালোবাসাবাসিতে পুরুষ নারী ভেদ নেই। মানবীয় অনুভূতিসম্পন্ন মানব মানবী, সবার জন্য সত্য এ বিধান।
উদ্দীপকে মনের ওপর সঙ্গীতের প্রভাব সম্পর্কে এক পর্যায়ে বলা হয়েছে যা একান্ত মনোগত ব্যাপার, তা বাহ্যিক কোন উদ্দীপকের প্রভাবে খুব বেশি পরিবর্তিত হয় না। মানুষের ভালোবাসার বিষয়টা গভীরতর মনোগত ব্যাপার।
বাইরের কোন উদ্দীপক একে খুব বেশি বদলে দিতে পারে না যদি তা সত্যিকারের ভালোবাসা হয়। সত্যিকার ভালোবাসা বিশ্বাসের কষ্টিপাথরে পরীক্ষিত। তাই যথার্থ ভালোবাসার কোনো বিকৃতি নেই। বসন্তের আগমনে তাই কবিচিত্তে কোনো দোলা লাগেনা, কারণ কবিচিত্ত ভরে আছে প্রথম স্বামীর ভালোবাসায়। বসন্ত সেখানে অনুপ্রবেশ করতে চেয়ে পারেনি।
ভালোবাসা প্রকৃতপক্ষে আধেয়:মানব বা মানবী তার আধার বা পাত্র। পাত্র সরে যায় কিন্তু তা থেকে চুইয়ে পড়া ভালোবাসা ক্ষয় বা শেষ হয় না। স্মরণে মননে জাগরুক থাকে এ প্রেমবোধ। এজন্য কবির সহজ স্বীকারোক্তি ‘ভুলিতে পারিনা কোন মতে।’ প্রকৃত ভালোবাসায় আধার আধেয়:কেউ কাউকে ভুলে থাকতে পারে না। অস্বীকার করতে পারেনা অদৃশ্য কিন্তু যথার্থ সত্য।
পরীক্ষা-প্রস্তুতি যাচাই অংশ
সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক
প্রশ্ন-১ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বিদ্যা ও সাহিত্যচর্চার জন্য বিয়ের পর অনিন্দিতা সবসময় স্বামী ধ্র“বগুপ্তের কাছ থেকে উৎসাহ ও প্রেরণা পেয়েছেন। কিন্তু তাঁর সুখী দাম্পত্য জীবন দীর্ঘায়িত হয় নি। তবে স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি থেমে যান নি, একাকী জীবনযাপন করলেও বিদ্যা ও সাহিত্যচর্চা অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়া তিনি নারীশিক্ষার জন্য নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। সর্বক্ষেত্রেই স্বামীর স্মৃতি ছিল তাঁর অনুপ্রেরণাস্থল।
ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার মূলসুর কী?
খ. বসন্তের সৌন্দর্য কবির কাছে অর্থহীন কেন?
গ. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার কোন ঋতুর সঙ্গে উদ্দীপকের অনিন্দিতার স্বামীর চিরবিদায়ের মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “তাহারেই পড়ে মনে ভুলিতে পারি না কোন মতে”- কবির এ মনোভাবের সঙ্গে স্বামীহারা অনিন্দিতার মনোভাবের তুলনা কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার মূলসুর হলো প্রকৃতি ও মানবমনের সম্পর্ক। মনের অবস্থাই প্রধান। মনে আনন্দ থাকলে প্রকৃতি আনন্দময়, আর মনে দুঃখ বিরাজ করলে প্রকৃতিতে বসন্ত থাকলেও তা দুঃখময়।
খ. বসন্তের আগমনের পূর্বক্ষণে কবি তার প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। তাই বসন্তের সৌন্দর্য কবির মনে আনন্দ দিতে পারে নি।
বেগম সুফিয়া কামাল তাঁর হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের জনকে হারিয়েছেন। তাই বসন্তের সৌন্দর্য কবির কাছে অর্থহীন, কারণ কবির হৃদয় দুঃখভারাক্রান্ত। তাঁর কণ্ঠ নীরব। শীতের করুণ বিদায়কে তিনি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। তাই বসন্ত তার মনে কোনো সাড়া জাগাতে পারছে না।
বসন্তের সৌন্দর্য তাঁর কাছে অর্থহীন, মনে কোনো আবেদন জানাতে পারছে না। প্রসঙ্গত উলেখ্য, তাঁর প্রথম স্বামী ও কাব্যসাধনার প্রেরণা পুরুষের আকস্মিক মৃত্যুতে কবির
অন্তরে যে বিষন্নতা জাগে, তারই সুস্পষ্ট প্রভাব ও ইঙ্গিত এ কবিতায় ফুটে উঠেছে।
টিপস্
গ. তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার শীত ঋতুর সঙ্গে উদ্দীপকের অনিন্দিতার স্বামীর চির বিদায়ের মিল রয়েছে।
ঘ. অনিন্দিতা ও কবি দুজনেই তাদের স্বামী হারিয়েছেন। তাই স্বামী হারানোর ব্যাথা তাঁরা কোনো ভাবেই ভুলতে পারছে না।
প্রশ্ন-২ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
উত্তরীয় বায় মাগিছে বিদায় শালবীথিকার পাশে
জাগে কিশলয় সবুজ স্বপনে ঝরা পাতা যায় খসে
শিহরি শিহরি ওঠে সারা তনু
বাজিল কাহার আসিবার রেনু?
শিশিরের ধারা হয় বুঝি সারা আজি এ সকল ক্ষণে
সার্থক আজি হইবে জীবন বুঝি তার দরশনে।
ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কোন ঋতুর কথা বলা হয়েছে?
খ. বিদায়ী শীতের শূন্যতায় কবিমন আচ্ছন্ন হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশে বর্ণিত বসন্ত প্রকৃতির সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় বর্ণিত বসন্তের আগমনী চিত্রের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার মূলভাবের পার্থক্য বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় বসন্ত ঋতুর কথা বলা হয়েছে।
খ. বসন্তের আগমন সত্তে¡ও বিদায়ী শীতের শূন্যতায় কবিমন আচ্ছন্ন হয়ে ওঠে। শীতের শেষে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করার জন্য বন্দনাগীতি রচনা করে ফুলের ডালি সাজিয়ে নানা আয়োজন করা হয়।
কিন্তু কবির প্রেরণাদায়ী স্বামীর অকালমৃত্যুতে তাঁর জীবনে নেমে এসেছে বিরাট শূন্যতা। শীতের করুণ বিদায়কে তিনি কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। তাঁর মনে আনন্দের পরিবর্তে আছে শীতের রিক্ততা ও বিষণœতার ছবি। এ আচ্ছন্নতাই কবিমনকে ব্যথিত করে তোলে।
টিপস্
গ. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় বসন্ত-প্রকৃতির সঙ্গে উদ্দীপকের বসন্ত-প্রকৃতির আগমনী রূপের সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার মূলভাবের পার্থক্য রয়েছে।
প্রশ্ন-৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
‘ওরে আয় রে তবে, মাতরে সবে আনন্দে
আজ নবীন প্রাণের বসন্তে \
পিছন-পানের বাঁধন হতে চল ছুটে আজ বন্যাস্রোতে,
আপনাকে আজ দখিন-হাওয়ায় ছড়িয়ে দে-রে দিগন্তে \
বাঁধন যত ছিন্ন করো আনন্দে
আজ নবীন প্রাণের বসন্তে \’
ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কী বেয়ে বসন্তের তরী আসার কথা বলা হয়েছে?
খ. কবি শীতকে কেন সন্ন্যাসীরূপে কল্পনা করেছেন?
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার ভাবগত বৈসাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. উদ্দীপকের কবিতাংশের সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার শিল্পরীতির পার্থক্য যাচাই কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় অলখের পাথার বেয়ে বসন্তের তরী আসার কথা বলা হয়েছে।
খ. কবির কল্পনায় প্রকৃতিতে বসন্ত আসার আগে শীত সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর মতো কুয়াশার চাদর পড়েছে। ‘মাঘের সন্ন্যাসী’র চিত্রকল্প এ অর্থকে প্রকাশ করছে। কবি শীতকে সন্ন্যাসীরূপে কল্পনা করেছেন। প্রকৃতিতে বসন্ত আসার আগে শীত সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর মতো কুয়াশার চাদর গায়ে জড়িয়ে বেরিয়ে পড়েছে।
সবকিছু ত্যাগ করে মিলিয়ে গেছে বহুদূর। প্রকৃতিকে বসন্ত নতুনরূপে সাজিয়ে দিলেও শীতের সন্ন্যাসীর রিক্ততা কবি ভুলে যেতে পারছেন নাÑ এ ভাবার্থই প্রকাশ পেয়েছে কবির কল্পনায়।
টিপস্
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের সঙ্গে ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার ভাবগত বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. বসন্ত-বন্দনা ধ্বনিত শিল্পরীতির দিক থেকে উদ্দীপক ও কবিতার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।