HSC | বাংলা ২য় পত্র | অনুচ্ছেদ রচনা ১-১৫ | PDF Download: বাংলা দ্বিতীয় পত্র হতে গুরুত্বপূর্ণ সব অনুচ্ছেদ রচনা গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টির গুরুপূর্ণ কিছু অনুচ্ছেদ রচনা নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
উচ্চ মাধ্যমিক \ বাংলা ২য় পত্র \ নির্মিতি অংশ \অনুচ্ছেদ রচনা
বাক্য মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। কিন্তু সব সময় একটি বাক্যের মাধ্যমে মনের সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। এজন্য প্রয়োজন একাধিক বাক্যের। মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার জন্য পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত বাক্যের সমষ্টিই অনুচ্ছেদ। অনুচ্ছেদে কোনো বিষয়ের একটি দিকের আলোচনা করা হয় এবং একটি মাত্র ভাব প্রকাশ পায়। অনুচ্ছেদ রচনার ক্ষেত্রে কয়েকটি দিকে লক্ষ রাখা প্রয়োজন। যেমন-
ক) একটি অনুচ্ছেদের মধ্যে একটি মাত্র ভাব প্রকাশ করতে হবে। অতিরিক্ত কোনো কথা লেখা যাবে না।
খ) সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো বাক্যের মাধ্যমে বিষয় ও ভাব প্রকাশ করতে হবে।
গ) অনুচ্ছেদটি খুব বেশি বড় করা যাবে না। লিখতে হবে একটি মাত্র প্যারায়। কোনোভাবেই একাধিক প্যারা করা যাবে না।
ঘ) একই কথার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ঙ) যে বিষয়ে অনুচ্ছেদটি রচনা করা হবে তার গুরুত্বপূর্ণ দিকটি সহজ-সরল ভাষায় সুন্দরভাবে তুলে ধরতে হবে। অনুচ্ছেদের বক্তব্যে যেন স্বয়ংসম্পূর্ণতা প্রকাশ পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
১. জাতীয় পতাকা
জাতীয় পতাকা একটি জাতির স্বাধীনতার প্রতীক। বিশ্বের প্রতিটি জাতির তাদের নিজস্ব জাতীয় পতাকা আছে। আমাদের দেশেরও একটি জাতীয় পতাকা আছে। এই একটি পতাকার জন্য আমাদের অনেক রক্ত বিসর্জন দিতে হয়েছে। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর আমরা এই পতাকাটি অর্জন করি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় ঘন সবুজ রঙের ওপর একটি লাল বৃত্ত থাকে। দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থে এর অনুপাত ১০:৬।
লাল বৃত্তটির ব্যাসার্ধ পাতাকার দৈর্ঘ্যরে এক-পঞ্চমাংশ। সবুজ রং তারুণ্যদীপ্ত প্রাণশক্তির জয়গান এবং বাংলাদেশের সবুজ মাঠ ও চিরহরিৎ উপক্রান্তীয় বনভূমিকে তুলে ধরে। লাল বৃত্তটি একটি নবগঠিত জাতির নতুন আশা ও আকাক্সক্ষা সমন্বিত একটি উদীয়মান সূর্যকে চিহ্নিত করে। জাতীয় পতাকা আমাদের গর্বের প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চূড়ায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
বিভিন্ন জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিশেষ কিছু দিবসে এটি অর্ধনমিত রাখা হয়। আমাদের জাতীয় পতাকা রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে সর্বদা আমাদের জীবন উৎসর্গ করতে প্রেরণা দেয়। এটি প্রতিনিয়ত স্বাধীন রাষ্ট্রের কথা মনে করিয়ে দেয়। এর মর্যাদা রক্ষায় আমাদের সদা সচেষ্ট থাকা উচিত।
২. বাংলা নববর্ষ [ঢা. বো. ১৫]
নববর্ষ সকল দেশের সকল জাতিরই আনন্দ উচ্ছ¡াস ও মঙ্গল কামনার দিন। পুরাতন বছরের জীর্ণতাকে ঝেড়ে ফেলে বছরের এই দিনটিতে নতুনকে আহŸান জানানো হয়। বাংলাদেশেও পয়লা বৈশাখে সকলের কল্যাণ প্রত্যাশা করে মহা ধুমধামের সাথে নববর্ষ উদ্যাপিত হয়। এটি বাংলাদেশের সর্বজনীন ও শ্রেষ্ঠ লোকউৎসব। প্রবল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল বাঙালি এই উৎসব পালন করে থাকে।
বাঙালির জাতিসত্তা বিনির্মাণে এবং স্বাধীনতা অর্জনে নববর্ষের তাৎপর্যপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে। সম্রাট আকবরের সময় বাংলা সনের গণনা শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। জমিদার ও নবাবেরা নববর্ষে পুণ্যাহ আয়োজন করতেন। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নববর্ষ পালন করায় সে আয়োজন দেশময় ছড়িয়ে পড়ে। সবার মুখে লেগে থাকে হাসি, গায়ে থাকে রঙিন জামা।
নববর্ষে হালখাতা, বৈশাখী মেলা, ঘোড়দৌড় এবং বিভিন্ন লোকমেলার আয়োজন করে সাধারণ মানুষ। সংস্কৃতি সংগঠন ছায়ানট নববর্ষে রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট আয়োজন করে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এতে আবহমান বাঙালির ঐতিহ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি থাকে সমকালীন সমাজ-রাজনীতির সমালোচনাও। এছাড়াও নানা বর্ণিল আয়োজনে দিনটিকে বরণ করা হয়।
এই দিনে প্রত্যেক বাঙালি নিজের, বন্ধুর, পরিবার ও দেশের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে। কোনো ধর্ম-গোত্র-শ্রেণির বন্ধনে বাঁধা পড়ে না বাংলা নববর্ষের উদ্যাপন। ফলে আমাদের জাতিগত সংহতি ও ঐক্য সুদৃঢ় হয়।
৩. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ [ব. বো. ১৫]
মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অর্জন করে প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা। ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে যে স্বাধীনতা তাকে চিরসমুন্নত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের প্রেরণা জোগাবে চিরদিন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি লাভ করলেও প্রকৃত মুক্তি আসেনি বাঙালি জাতির।
১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার ওপর আঘাত, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট, ৫৮ সালে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ৬৬ সালের ৬ দফা, ৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিকাশ লাভ করে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন। ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গড়িমসি শুরু করে।
তখনই চূড়ান্ত স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু চূড়ান্ত ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণের আহŸান জানান। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ২৫ই মার্চ মধ্যরাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের বর্বরতা চালায় দেশজুড়ে। বাংলারজনতা সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানিদের অত্যাচার রুখে দেয়। দীর্ঘ নয় মাস ধরে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধ চলে।
অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে। ৩০ লক্ষ শহিদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গৌরব, আমাদের চেতনা। এই চেতনাকে মনেপ্রাণে ধারণ করেই আমাদের জাতি গঠনে কাজ করতে হবে।
৪. একুশে বইমেলা
একুশে ফেব্রæয়ারির সংগ্রামী চেতনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ফেব্রæয়ারি মাসজুড়ে বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম আয়োজন হলো মহান একুশে বইমেলা। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ফেব্রæয়ারি মাসজুড়ে এ মেলা চলে। বইমেলা উপলক্ষে বই বিক্রেতা ও প্রকাশকরা নানা সাজে বইয়ের স্টল বা দোকান সাজিয়ে বসেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের বইয়ের সমাহার ঘটে। বইমেলা উপলক্ষে প্রচুর নতুন বইমেলায় আসে।
প্রতিষ্ঠিত লেখকদের পাশাপাশি নতুন লেখকদের বইও পাওয়া যায় এখানে। প্রতিদিন বইয়ের আকর্ষণে বই প্রেমিক মানুষেরা মেলা প্রাঙ্গণে ছুটে আসে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি লেখক, ভাষাবিদ ও বরেণ্য ব্যক্তিত্বরা বইমেলায় আসেন। লেখক ও পাঠকদের মিলনমেলায় রূপ নেয় এই মেলা। এটি বাংলা একাডেমির একটি মহৎ উদ্যোগ। এ বইমেলার ফলে পাঠকরা এক জায়গা থেকে তাদের পছন্দের বই কিনতে পারে।
এছাড়া বই কেনার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহও তৈরি হয়। একুশের বইমেলা আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতিবোধ জাগ্রত করে। এ বইমেলা এখন আমাদের জাতীয় চেতনার সাথে সম্পৃক্ত।
৫. প্রিয় শিক্ষক
সুন্দর এই পৃথিবীতে পিতা-মাতার বদৌলতে সন্তান জন্মলাভ করে ঠিকই কিন্তু সেই সন্তানের জীবনকে সার্থক এবং সফল করে তোলার পেছনে যাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি, তিনি হলেন শিক্ষক। শিক্ষকের কাছে আমরা গ্রহণ করি জীবনের মূল্যবান পাঠ। জ্ঞানের পৃথিবীতে তিনি আমাদের দ্বিতীয়বার জন্মদান করেন। সুশিক্ষকের প্রভাব মানুষের জীবন চলার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
যে শিক্ষক আমার হৃদয় মানসে ধ্রæবতারার মতো জেগে আছেন তিনি হলেন ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব বাবু হরিমন বিশ্বাস। তিনি আমাকে তাঁর সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। সবসময় আমার যতœ নিতেন। তাঁর পাঠদান পদ্ধতি ছিল অনেক চমৎকার। আমাদের পারিবারিক জীবনে তিনি ছিলেন সবচেয়ে আকাক্সিক্ষত অতিথি। তাছাড়া পাঠ্য বইয়ের বাইরেও আমি যাতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিষয় জানতে পারি সেজন্য তাঁর আগ্রহের অন্ত ছিল না।
স্যার ছিলেন অনুভূতিপ্রবণ এক সুবিশাল ব্যক্তিত্ব। তিনি হৃদয় দিয়ে যা অনুভব করতেন তা সবার সামনে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতেন। তাই তিনি আজও আমার প্রিয় শিক্ষক এবং চিরদিন আমার জীবনাকাশে আদর্শের মূর্ত তারকা হয়েই প্রজ্জ্বলিত থাকবেন।
৬. পিতামাতা
সন্তানের নিকট পিতা-মাতার স্থান সবার ওপরে। পিতা-মাতার মতো প্রিয় ও শ্রদ্ধাভাজন সন্তানের কাছে আর কেউ নেই। পিতাÑমাতাই সন্তানের সবচেয়ে বড় শুভাকাক্সক্ষী ও সবচেয়ে আপন। তাঁদের নিকট সন্তানরা এত বেশি ঋণী যে, এ ঋণ জীবনে শোধ করা সন্তানদের পক্ষে সম্ভব নয়। পিতা-মাতার কারণেই সন্তান এ পৃথিবীতে আসতে পারে। জন্মের পর মায়ের কোলই সন্তানের প্রধান আশ্রয়।
সন্তানের লালনÑপালনের জন্য পিতা-মাতাকে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হয়। সন্তান অসুস্থ হলে তাঁরা আহারÑনিদ্রা ভুলে তার পাশে বসে থাকেন। সর্বস্ব ব্যয় করে সন্তানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে থাকেন। নিজে না খেয়ে হলেও সন্তানের জন্য তাঁরা আহার জোগান। সন্তানের প্রতি পিতাÑমাতার ভালোবাসা নিঃস্বার্থ।
মাতা-পিতা শৈশবে আমাদের লালন-পালন করেছেন, তেমনি বৃদ্ধ বয়সে তাঁদেরকে আদর যতেœর মধ্যে রাখা আমাদের কর্তব্য। আমাদের উচিত সর্বাবস্থায় পিতা-মাতাকে সুখী রাখার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা। সন্তান যখন পিতা-মাতার মুখে হাসি ফোটাতে পারে, তখনই তার জীবন সার্থক হয়ে ওঠে।
৭. শিক্ষাসফর
‘শিক্ষা সফর’ শব্দটি শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত। জ্ঞান আহরণের ক্ষেত্রে দুটি মাধ্যম সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো হলোÑ বই এবং ভ্রমণ। বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করলে মানুষ প্রত্যক্ষ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। এ অভিজ্ঞতা সব সময় মানুষের মনে অ¤øান হয়ে থাকে। ছাত্রসমাজকে জ্ঞানের সংস্পর্শে নিয়ে যাওয়ার জন্যই বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষাসফরের আয়োজন করে থাকে।
শিক্ষাসফরে একটি নির্দিষ্ট জায়গা পরিভ্রমণের মাধ্যমে অদেখাকে দেখা যায়, অজানাকে জানা যায় সফর মাত্রই রোমাঞ্চকর। আর তা যদি শিক্ষাকে কেন্দ্র করে হয় তবে তো কথাই নেই। আমাদের পাঠ্যশিক্ষার বিষয়টি শিক্ষাসফরের মাধ্যমে আরও পরিষ্কার হয়ে ধরা দেয় আমাদের কাছে। যেকোনো ঐতিহাসিক স্থান, জাদুঘর কিংবা বিশেষ কোনো স্মৃতিবিজড়িত স্থান পরিদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষা লাভের পথ সুগম হয়।
বাস্তবিক জীবনবোধের সাথে পরিচিত হতে হলে শিক্ষাসফরকে গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক। শিক্ষাসফর আমাদের জীবনবোধের পরিধিকে বিস্তৃত করে জ্ঞানকে পরিপূর্ণতা দান করে। এতে দৃষ্টি উন্মীলিত হয় এবং মানুষ নব নব অভিযানে অংশ নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। জ্ঞান আহরণের পাশাপাশি একঘেয়েমি দূর করে বৈচিত্র্য এনে দিতে পারে শিক্ষাসফর। শিক্ষার পরিপূর্ণতা লাভে শিক্ষাসফর কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে সক্ষম।
৮. স্বেচ্ছায় রক্তদান
মানুষ সামাজিক জীব। পরের কল্যাণে নিজে উৎসর্গ করে জীবনকে সার্থক করার সুযোগ কেবল মানুষই পায়। বর্তমান সময়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান মানুষের কল্যাণ করার এক চমৎকার সুযোগ হয়ে ধরা দিয়েছে মানুষের কাছে। রক্ত মানবদেহের অপরিহার্য একটি উপাদান। রক্ত থাকলেই মানুষের দেহ সজীব ও সক্রিয় থাকে। কিন্তু রক্তের ঘাটতি হলেই মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে।
সুস্থ ব্যক্তির স্বেচ্ছায় রক্তদানের বিনিময়ে যেকোনো মুমূর্ষু ব্যক্তির জীবন বেঁচে যেতে পারে। তাই স্বেচ্ছায় রক্তদানের মতো মহৎ কাজ আর নেই। বর্তমানে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে আগ্রহী করতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নানা ধরনের কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগঠন হলো ‘সন্ধানী’। ১৯৭৭ সাল থেকে।
এখনও এটি জনস্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্œ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘বাঁধন’-এর অন্তত ১০০টি শাখা রয়েছে। স্বেচ্ছায় রক্তদান করলে যেকোনো ব্যক্তি শারীরিকভাবেও সুস্থ থাকতে পারেন আবার তা অন্যের জীবনকেও বাঁচিয়ে তোলে। তাই স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়ে সবাইকে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসবে হবে।
৯. মহান বিজয় দিবস [দি. বো. ১৫]
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রাম শেষে এদিন আমাদের দেশ শত্রæমুক্ত হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে ‘বাংলাদেশ’ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তাই ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ৭০-এর সাধারণ নির্বাচন ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর আমরা এই ১৬ই ডিসেম্বরে বিজয় লাভ করি।
তাই বাংলার আবালÑবৃদ্ধÑবণিতা মহাসমারোহে এদিনটি উদ্যাপন করে। এদিন বিভিন্ন অফিসÑআদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যগণ পতাকা উত্তোলন করেন এবং কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন। সরকারিÑবেসরকারি ভবন ও দেশের প্রধান প্রধান সড়ককে জাতীয় পতাকায় সুশোভিত হয়। বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা আর রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা।
স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে কত ছাত্র, জনতা, কৃষক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী মানুষ। বিজয়ের আনন্দের মাঝে তাই জেগে ওঠে তাদের হারানোর বেদনা। মহান বিজয় দিবস শুধু জাতীয় মর্যাদায় অভিষিক্ত একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন নয়, এটি বাঙালির হৃদয় এবং সত্তার গভীরে প্রোথিত একটি অনন্য দিন। বিজয় দিবস স্বাধীনতাকামী বাঙালির পবিত্র চেতনার ধারক।
বাঙালির হাজার বছরের সভ্যতা এবং সংস্কৃতির ইতিহাসে দ্যুতিময় এ মহান বিজয় দিবস চিরদিন সমুজ্জ্বলভাবে টিকে থাকবে। প্রতিবছর এ দিবসে আমরা আত্মসচেতন হই, প্রত্যয়ে দৃপ্ত হই, অন্তরে বিশ্বাস স্থাপন করি-রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এ স্বাধীনতাকে আমরা যেকোনো মূল্যে সমুন্নত রাখব।
১০. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রæয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি” -এ চরণ দ্বারা আমরা স্মরণ করি ভাষাশহিদদের যারা মাতৃভাষা বাংলার জন্য প্রাণ দিয়েছিল। এ দিনটি ইতিহাসের পাতায় অমরত্ব লাভ করেছে। বহু তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের মাতৃভাষার গৌরব রক্ষা করেছি। ১৯৪৭ সালের ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটিয়ে ‘পাকিস্তান’ সৃষ্টি হলেও পশ্চিম পাকিস্তান, পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশের মাতৃভাষার মর্যাদা দিতে চায়নি।
১৯৪৮ সালে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করেন। ছাত্ররা তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। এ প্রতিবাদ আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত প্রলম্বিত হয়। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রæয়ারি ছাত্রজনতা ১৪৪ ধারা ভাঙ্গ করে মিছিলে মিছিলে রাজপথ প্রকম্পিত করে। প্রতিবাদী ছাত্রদের মিছিলে গুলি করা হলে শহিদ হন সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বারসহ অনেকে।
তাদের রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় মাতৃভাষার মর্যাদা। প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি সরকারিভাবে পালন করা হয়। আমরা শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে একুশের শহিদদের শ্রদ্ধা জানাই। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদের ৩০তম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সর্বসম্মতভাবে একুশে ফেব্রæয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ২০০০ সালের ২১শে ফেব্রæয়ারি প্রথম আন্তর্জাতিকভাবে ১৮৮টি দেশে এ দিবস পালিত হয়।
পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার স্বীকৃতির দাবিতে শহিদ হওয়ার ঘটনা শুধু ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রæয়ারিতেই ঘটেছিল। বাংলা ভাষার জন্য আত্মবিসর্জনের সে ঘটনা আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলা ভাষার কথা বাঙালিদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।
১১. অতিথি পাখি
অতিথি পাখি বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতি বছরই উষ্ণতার খোঁজে হাজার হাজার কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিয়ে এই পাখিরা আমাদের দেশে উড়ে আসে। শীতপ্রধান দেশে তাপমাত্রা অধিকাংশ সময়ই শূন্যের নিচে থাকে। এর পাশাপাশি তুষারপাত, তুষারঝড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও দেখা যায়।
এ সময় প্রচণ্ড ঠাণ্ডা থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য উত্তর মেরু, সাইবেরিয়া, ইউরোপ, হিমালয়ের আশপাশের কিছু অঞ্চল ইত্যাদি স্থান থেকে পাখিরা দল বেঁধে চলে আসতে থাকে অপেক্ষাকৃত কম ঠাণ্ডা অঞ্চলের দিকে। এই পাখিদেরকেই বলা হয় পরিযায়ী পাখি বা অতিথি পাখি। শীতের সময় অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে আমাদের নাটোরের চলনবিল অঞ্চলসহ কিছু জলাশয়।
বাংলাদেশে আগত অতিথি পাখিদের মধ্যে অধিকাংশই আসে হিমালয়ের পাদদেশের তিব্বতের লাদখা থেকে সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান ফ্লাইওয়ে দিয়ে। এসব পাখির মধ্যে বালিহাঁস, বুনোহাঁস, চখাচখি, হেরন, সারস, ডাহুক, কাদাখোঁচা, গায়ক রেন পাখি, ডুবুরি পাখি, রাজসরালি, গ্যাডওয়াল, পিন্টেইল, নীলশীর, পিয়াং, চীনা, পান্তামুখী, গিরিয়া, খঞ্জনা, পাতারি, জলপিপি উল্লেখযোগ্য।
প্রায় ১৫০ প্রজাতির পাখি প্রতিবছর আমাদের দেশে বেড়াতে আসে। কয়েক মাস কাটিয়ে বসন্তকালে অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিলের দিকে যখন শীতপ্রধান অঞ্চলের বরফ গলতে থাকে তখন তারা নিজ দেশে ফিরে যায়। এই পাখিগুলো আমাদের জীববৈচিত্র্যের অনন্য বৈশিষ্ট্য সংযোজন করে। কিন্তু কতিপয় অসাধু পাখি শিকারি অতিথি পাখি শিকার করে বাঙালির অতিথিপরায়ণতার সুনামকে ক্ষুণœ করে। অতিথি পাখির জন্য বাংলাদেশকে অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তোলাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
১২.বর্ষণমুখর দিন
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে প্রকৃতি যখন নির্জীব হয়ে ওঠে তখন বর্ষা আসে প্রাণস্পন্দন নিয়ে। বর্ষণমুখর দিনে অনুভ‚তিপ্রবণ মানুষ আরও বেশি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ে। বর্ষণস্নাত দিন এক মিশ্র অনুভ‚তি সৃষ্টি করে মানুষের মনে। এদিনে মানুষ ও প্রকৃতি যেন একে অপরের মাঝে বিলীন হয়ে যায়।
প্রতিটি মানুষের কাছেই এদিনটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। তপ্ত তৃষিত পৃথিবীর বুকে বৃষ্টির স্পর্শ জাগায় রোমাঞ্চকর অনুভ‚তি। মানুষের মনেও তার প্রভাব পড়ে। প্রকৃতির বৃষ্টিস্নাত রূপ মানুষকে আবেগাপ্লুত করে তোলে। বর্ষণমুখর দিনে মানুষের মাঝে অজানা এক আলস্য এসেও যেন ভর করে। কোনো কাজ-কর্মে মন বসে না। বাইরে যেতেও ইচ্ছা করে না কারও। এ দিন ঘরে থেকে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যেতেই মন চায় অধিকাংশ মানুষের।
আর তার সাথে যদি খাবার হিসেবে থাকে গরম খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ তবে তো কথাই নেই। বর্ষণমুখর দিনে আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে। আকাশ কালো করে যখন চারদিক ছাপিয়ে বৃষ্টি নামে তখন প্রত্যেক মানুষের মনে এক শীতল অনুভ‚তির সৃষ্টি হয়। মাঠেÑঘাটে-প্রান্তরে সর্বত্র হুঙ্কার তুলে আসে প্রমত্ত বাদল।
কর্মব্যস্ত মানুষকে এক পশলা শান্তির নির্যাস দিয়ে যায় যেন বৃষ্টিস্নাত প্রকৃতি। আর ঘরে অবস্থানরত মানুষের মনে একাকিত্বের করুণ সুর বেজে ওঠে। তাই বর্ষণমুখর দিন মানুষের মনে মিশ্র অনুভ‚তির সঞ্চার করে।
১৩. নারী শিক্ষা [কু. বো. ১৫]
শিক্ষা প্রতিটি মানুষের জন্মগত মৌলিক অধিকার। এক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ের সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। নারী ও পুরুষ সমাজ নামক দেহের দুইটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। নারী শিক্ষিত হলে পরবর্তী প্রজন্মও শিক্ষিত হয়ে গড়ে ওঠে। তাই নেপোলিয়ন বলেছেন, “আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি দেব।” বর্তমানে বাংলাদেশে নারী শিক্ষার যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছে।
দেশের উন্নতিতে পুরুষের পাশাপাশি এখন নারীরাও গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে। প্রাথমিক পর্যায়ে সবার জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা থাকলেও মাধ্যমিক পর্যায়ে শুধু মেয়েদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত নারী শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। নারী শিক্ষায় অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে সরকারের এ পদক্ষেপ প্রশংসনীয়।
শিক্ষকতায় এর মধ্যে ৬০ ভাগ শিক্ষিকাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পেশাগত শিক্ষায় এখন নারীর অংশগ্রহণ ৩৮ শতাংশ। সরকারের নানা উদ্যোগে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে বাংলাদেশ ‘রোল মডেল’ হিসেবে কাজ করছে।
নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ তুলনামূলক অগ্রগতি সাধন করলেও সার্বিক দিক বিবেচনায় তা এখনও পর্যাপ্ত নয়। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে নারী শিক্ষার প্রসারে। তবেই দেশ ও জাতির যথাযথ অগ্রগতি সাধিত হবে।
১৪. সড়ক দুর্ঘটনা [চ. বো. ১৫]
সা¤প্রতিককালের অন্যতম জাতীয় সমস্যা হলো সড়ক দুর্ঘটনা। নিরাপদ জীবনযাপনের ক্ষেত্রে বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়ায় এটি। প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। পত্রিকা ওল্টালেই প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনার বীভৎস সব খবর আমাদের চোখে পড়ে। সড়ক দুর্ঘটনার ফলে মানবসম্পদের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারের (এআরসি) গবেষণা অনুযায়ী আমাদের দেশে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় গড়ে ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হয় ৩৫ হাজার লোক। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটার পেছনে রয়েছে নানা কিছু কারণ।
এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ সরু রাস্তা ও রাস্তায় ডিভাইডার না থাকা, পুরনো ও ত্রæটিপূর্ণ যানবাহন, উন্নতমানের ও টেকসই সড়কের অভাব, চালকের অদক্ষতা, ড্রাইভিং পেশার উৎকর্ষহীনতা, সনাতনি ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা, সড়ক নিরাপত্তায় সচেতনতার অভাব, বিকল্প যানবাহনের পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকা, আইন প্রয়োগের অভাব, জনসচেতনতার অভাব, চালকের ওভারটেকিং করার প্রবণতা, রাস্তায় সড়কবাতি না থাকায় ইত্যাদি মনে রাখতে হবে যে, “একটি দুর্ঘটনা, সারা জীবনের কান্না”। তাই সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৬১-১৮৫ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৪১-১৬০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১২১-১৪০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | বোর্ড ভিত্তিক অনুবাদ ১০১-১২০ | PDF Download
১৫. বই পড়া [য. বো. ১৫]
বই হলো জ্ঞানের আধার। জ্ঞান অর্জনের জন্য বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বই পড়া সর্বাপেক্ষা উত্তম কাজ। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের জ্ঞান বই পড়ার মাধ্যমেই আমরা পেয়ে থাকি। মানুষের মেধা ও মননের বিকাশ সাধনের অন্যতম মাধ্যম হলো বই। সকল কালের এবং সকল দেশের ঘটনা লিপিবদ্ধ রয়েছে বইয়ের প্রতিটি পাতায়।
মানুষের জীবন নিরবচ্ছিন্ন সুখের আধার নয়। প্রতি মুহূর্তে জীবন সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ায় নানা চিন্তায় মগ্ন থাকতে হয় মানুষকে। নির্মল আনন্দের উৎস খুঁজে পাওয়া বিরল। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা সে নির্মল আনন্দের উৎসকে সহজেই খুঁজে পেতে পারি। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের বই পড়েই পাওয়া যায়।
বই মানুষের সবচেয়ে উত্তম সঙ্গী। তবে বইয়ের পাতায় বিবৃত ইতিবাচক জ্ঞান তখনই মানুষ অর্জন করতে পারবে যখন সে একটি ভালো বই বেছে নেবে। বইয়ের নানা ধরন রয়েছে। বিশুদ্ধ জ্ঞান তখনই অর্জন করা যায় যখন সঠিক ও ভালো বইকে আমরা সঙ্গী হিসেবে বেছে নিই।
বই আমাদেরকে নিঃস্বার্থভাবে উপকার করে। একটি বই কাল থেকে কালান্তরে জ্ঞান বিলিয়ে থাকে। মানুষকে স্বশিক্ষিত ও সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলে। বই পড়ার মাধ্যমে নির্মল জ্ঞানের সন্ধান করাই জ্ঞানী ব্যক্তির কাজ। তাই সঠিক জ্ঞান ও জীবনপথের সন্ধান পেতে হলে উত্তম বই পড়া আবশ্যক।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।