ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান > ষষ্ঠ শ্রেণি ●বাংলা● অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
অধ্যায় ৫ : বুঝে পড়ি লেখতে শিখি, পরিচ্ছেদ ৫ : কল্পনানির্ভর লেখা
এই অধ্যায়ে আমরা যা শিখব:সাধারণত কল্পনানির্ভর লেখায় বাস্তব ঘটনার চেয়ে অবাস্তব ঘটনার প্রাধান্য থাকে বেশি। এক্ষেত্রে রূপকথা, উপকথা, কল্পকাহিনি ইত্যাদিকে বিষয় করে কল্পনানির্ভর লেখা রচিত হয়ে থাকে। দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার রচিত ‘সাত ভাই চম্পা’ রচনাটি রূপকথা, অর্থাৎ কল্পনানির্ভর লেখা।
এখানে অবাস্তব ঘটনার উদাহরণ হিসেবে ছোটো রানির সন্তান হিসেবে কাঁকড়া ও ইঁদুরের প্রসঙ্গ এসেছে। এছাড়াও সাতজন ছেলে ও একজন মেয়ের সাতটি চাঁপা ও পারুল ফুলে রূপান্তরিত হওয়া এবং চাঁপা ফুল ও পারুল ফুলের মানুষের মতো কথা বলার কাহিনিগুলোও অবাস্তব, যা কখনো বাস্তবে পরিণত হবে না। গল্পগুলো অবাস্তব হলেও শিশুরা এ ধরনের রূপকথা শুনতে ও পড়তে ভালোবাসে এবং তাদের ভালো লাগে।
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: Class 6: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন:ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || অভিজ্ঞতাভিত্তিক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || অনুধাবনমূলক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
- আরো পড়ুন: ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন বাংলা বই || সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক অনুশীলনমূলক কাজ ও সমাধান
⚙অভিজ্ঞতা-১ মূল বই: পৃষ্ঠা ৮০
‘সাত ভাই চম্পা’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর:এক রাজার ছিলেন সাত রানি। তাদের মধ্যে ছোটো রানি ছিলেন শান্ত স্বভাবের। তাই রাজা ছোটো রানিকে বেশি ভালোবাসতেন। এটা অন্য রানিরা সহ্য করতে পারতেন না। এ জন্য তারা হিংসায় জ্বলে-পুড়ে মরত। কিন্তু রাজা ছিলেন নিঃসন্তান, তাই রাজার মনে শান্তি ছিল না।
অনেকদিন পর খবর এলো ছোটো রানি সন্তানসম্ভবা। রাজা আনন্দে আত্মহারা হয়ে রাজভান্ডার সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিলেন। আর অন্য রানিদের হিংসার আগুনে ঘি পড়ল। রাজা নিজের কোমরের সাথে ছোটো রানির কোমর সোনার শিকল দিয়ে বেঁধে দিলেন। যাতে দ্রুত রাজা সন্তানের মুখ দেখতে পারেন। এদিকে ছোটো রানির আঁতুড়ঘরে অন্য লোক যেতে দিল না বড়ো রানিরা।
তারা ঘরে ঢুকে প্রথমেই শিকলে টান দিল। রাজা দরবার থেকে ঢাক-ঢোলের বাদ্য বাজিয়ে এসে দেখেন কিছুই না। রাজা চলে গিয়ে দরবারে বসতে না বসতে আবার টান। এবারও কিছুই না। রাজা রেগে সব রানিকে কেটে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে গেলেন। তারপর ঘর আলো করে সাতটি ছেলে ও একটি মেয়ে হলো।
ছোটো রানি বড়ো রানিদের কাছে জানতে চান, কী হয়েছে? বড়ো রানিরা রক্ষা-ভঙ্গি করে বলে, কয়টা ইঁদুর আর কয়টা কাঁকড়া হয়েছে। এ কথা শুনে ছোটো রানি অজ্ঞান হয়ে গেলেন। এই সুযোগে বড় রানিরা হাঁড়ি-সরা এনে সন্তানদের পাশগাদায় পুঁতে ফেলল। তারপর শিকল টানলে রাজা আসেন।
বড়ো রানিরা রাজাকে ইঁদুরছানা আর ব্যাঙের ছানা এনে দেখায়। রাজা রাগে-ক্ষোভে ছোটো রানিকে রাজপুরী থেকে বের করে দেন। বড়ো রানিদের সুখের কাঁটা দূর হয়েছে, তাই তাদের আনন্দ আর ধরে না। এমনি করেই দিন যায়, রাজার মনে সুখ নেই, রাজ্যজুড়ে সুখ নেই, রাজার বাগানে কোনো ফুল ফোটে না।
একদিন মালি এসে জানাল বাগানে ফুল না ফুটলেও পাশগাদার উপরে সাতটি চাঁপা ও একটি পারুল গাছে ফুল ফুটেছে। রাজা মালিকে সেই ফুল আনতে বললে মালি পেল ফুল আনতে। মালিকে দেখে পারুল ফুল চাঁপা ফুলদের ডেকে জানতে চাইল, ফুল দেবে কি না? চাঁপা রাজা এলে ফুল দেবে বলে জানিয়ে দেয়। তারপর রাজা এলেন, বড়ো রানি, মেজো রানি, সেজো রানি, নোয়া রানি, কনে রানি, দুয়োরানি সবাই এলো কিন্তু ফুল নিতে ব্যর্থ হলো।
শেষে চাঁপা জানায়, রাজার ঘুঁটে-কুড়ানি দাসী ছোটো রানি এলেই তবে ফুল পাবেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করে ছোটো রানিকে পাওয়া গেল। ছোটো রানি এলে ‘মা’ ‘মা’ করে সাত ভাই চাঁপা আর এক বোন পারুল মায়ের কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ল। রাজাসহ সকলে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখল। বড়ো রানিরা ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেল। রাজা বড়ো রানিদের শান্তি দিয়ে সাত রাজপুত্র, এক রাজকন্যা আর ছোটো রানিকে নিয়ে রাজপুরীতে ফিরে গেলেন।
অধিকতর অনুশীলনের জন্য একক ও দলীয় কাজের সমাধান
কাজ-১ : উপকথা কাকে বলে? ছবি দেখে একটি উপকথামূলক ছড়া লেখো।
উত্তর:
পশু-পাখি নিয়ে রচিত গল্পকে উপকথা বলে। উপকথার পশু-পাখিরা মানুষের মতো আচরণ করে। একটি উপকথামূলক ছড়া হলো-
হাট্টিমা টিম টিম্
তারা মাঠে পাড়ে ডিম্।
তাদের খাড়া দুটো শিং,
তারা হাট্টিমা টিম্ টিম্।
কাজ-২ : ছবি দেখে উপকথা লেখো।
উত্তর:
পশুরাজ সিংহ খুব বুড়ো হয়ে পড়েছিল। দুর্বল শরীরে শিকার করে আহার জোটানো দায় হয়ে পড়ল- তাই সে ঠিক করল এবার থেকে বুদ্ধির জোরে খাদ্য জোটাতে হবে। সে অসুখের ভান করে গুহায় পড়ে থাকল।
রোজই কেউ না কেউ রোগীর খোঁজখবর নিতে গুহায় ঢোকে আর সিংহমশাই খপ করে তাকে ধরে খেয়ে ফেলে। এভাবে অনেক জন্তু-জানোয়ার পশুরাজের বুদ্ধির শিকার হলো। চতুর শিয়াল কিন্তু ব্যাপারটা ঠিকই ধরতে পেরেছিল। সে ধীর পায়ে গুহার অদূরে দাঁড়িয়ে গলাখাকারি দিয়ে শুধাল রাজামশাই, আজ কেমন বোধ হচ্ছে?
ভাঙা ভাঙা গলায় ভেতর থেকে জবাব এলো মোটেই ভালো নয় হে, মোটেই ভালো নয়। তবু ভালো যে তুমি খোঁজ নিতে এলে।
একা একা আমি একেবারে হাঁপিয়ে উঠেছি। তা ভায়া, বাইরে দাঁড়িয়ে কেন? ভেতরে এসে বসো।
বিজ্ঞ শিয়াল মুচকি হেসে বলল: আসতাম ঠিকই কিন্তু ভরসা পাচ্ছি কই? রাজামশাই, পায়ের ছাপগুলো দেখছি সবই ভেতরমুখো। যারা ভেতরে গেছে তারা কেউ আর ফিরে আসেনি?
কাজ-৩ : ছবিতে শেয়াল আর বাঘ দেখা যাচ্ছে। তাদের ছবি দেখে যা বুঝতে পারছ তার ওপর ভিত্তি করে একটি উপকথা লেখো।
উত্তর: শিয়াল ভাবে, “বাঘ মামা, দাঁড়াও তোমাকে মজা দেখাচ্ছি!”
রাগ যেখানে বাস করে তার কাছে একটা কুয়ো ছিল। কুয়োর পাশেই একটা গর্ত। সেখানে শিয়াল মামা থাকত।
একদিন শিয়াল নদীর ধারে একটা মাদুর দেখতে পেয়ে, সেটাকে টেনে তার বাড়িতে নিয়ে এলো। এনে, সেই কুয়োর মুখের উপর বেশ করে বিছিয়ে। বছকে গিয়ে বলল, ‘মামা, আমার নতুন বাড়ি দেখতে গেলে না?’ শুনে বাঘ তখনই তার নতুন বাড়ি দেখতে এলো। শিয়াল তাকে সেই কুয়োর মুখে বিষানো মাদুরটা দেখিয়ে বলল, “মামা, একটু বস, জলখাবার খাবে।”
জলাধারের কথা শুনে বাঘ ভারি খুশি হয়ে, লাফিয়ে সেই মাদুরের উপর বসতে গেল, আর অমনি সে কুয়োয় ভিতরে পড়ে গেল। তখন শিয়াল বলল, ‘মামা, খুব করে জলখাবার খাও, একটুও রেখো না যেন!’
সেই কুয়ার ভিতরে কিন্তু বেশি জল ছিল না, তাই বাঘ তাতে ডুবে যারা যায়নি। সে আগে খুবই ভয় পেয়েছিল, কিন্তু শেষে অনেক কষ্টে উঠে এসো। উঠেই সে বলল, ‘কোথায় গেলি রে শিয়ালের বাচ্চা! দাঁড়া, তোকে দেখাচ্ছি।’ কিন্তু শিয়াল তার আগেই পালিয়ে যায়। তাকে কিছুতেই খুঁজে পাওয়া গেল না।
তারপর থেকে বাঘের ভয়ে শিয়াল আর তার বাড়িতেও আসতে পারে না, খাদ্য খুঁজতেও যেতে পারে না। দূর থেকে দেখতে পেলেই বাঘ তাকে মারতে আসে। বেচারা না-খেয়ে না খেয়ে শেষে আধমরা হয়ে গেল।
তখন সে ভাবল, “এমন হলে তো মরেই যাব। তার চেয়ে বাঘ মামার কাছে যাই না কেন? দেখি যদি তাকে খুশি করতে পারি।
- আরো পড়ুন: অষ্টম শ্রেণি-JSC এর অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
- আরো পড়ুন: JSC : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়‘র জীবনী ও সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর
- আরো পড়ুন: JSC : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়‘র জীবনী ও সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন: অষ্টম শ্রেণি: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়‘র জীবনী ও সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন: অষ্টম শ্রেণি: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়‘র জীবনী ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন: অষ্টম শ্রেণি-JSC এর অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
এই মনে করে সে বাঘের সঙ্গে দেখা করতে গেল। বাঘের বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকতেই সে খালি নমস্কার নমস্কার করছে আর বলছে, “মামা, মামা!”
শুনে বাঘ আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলল, ‘তাই তো, শিয়াল যে’
শিয়াল অমনি ছুটে এসে, দুহাতে তার পায়ের ধুলো নিয়ে বলল, ‘মামা, আমাকে খুঁজতে গিয়ে তোমার বড় কষ্ট হচ্ছিল, তাই দেখে আমার কান্না পাচ্ছিল। জানো তো মামা, আমি তোমাকে বড্ড ভালোবাসি, তাই এসেছি।
আর কষ্ট করে খুঁজতে হবে না, ঘরে বসেই আমাকে মার। শিয়ালের কথায় বাঘ তো ভারি থতমত খেয়ে গেল। সে তাকে মারল না, খালি ধমকে বলল, ‘হতভাগা পাজি, আমাকে কুয়োয় ফেলে দিয়েছিলি কেন?
শিয়াল জিভ কেটে কানে হাত দিয়ে বলল, ‘না, না, তোমাকে কি আমি কুয়োয় ফেলতে পারি? সেখানকার মাটি বড্ড নরম ছিল, তার উপর তুমি লাফিয়ে পড়েছিলে, তাই গর্ত হয়ে গিয়েছিল। তোমার মতো বীর কি মামা আর কোথাও আছে?’ তা শুনে বোকা বাঘ বলল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ ভাগ্নে, সে কথা তো ঠিক। আমি তখন বুঝতে পারিনি।’ এমনি করে তাদের আবার ভাব হয়ে গেল।
তারপর একদিন শিয়াল নদীর ধারে গিয়ে দেখল যে, বিশ হাত লম্বা একটা কুমির ডাঙায় উঠে রোদ পোয়াচ্ছে। তখন সে তাড়াতাড়ি ছুটে গিয়ে বাঘকে বলল, “মামা, মামা, একটা নৌকো কিনেছি, দেখবে এসো।’
বোকা বাঘ এসে সেই কুমিটারকে সত্যি-সত্যি নৌকো মনে করে লাফিয়ে তার উপর উঠতে গেল, আর অমনি কুমির তাকে কামড়ে ধরে জলে গিয়ে নামল।
তা দেখে শিয়াল নাচতে নাচতে বাড়ি চলে গেল।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।