মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কি ও ব্যবহারের সুযােগ-সুবিধা কি? > মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (Microsoft Word), সংক্ষেপে এমএস ওয়ার্ড (MS Word) একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম। এটি ব্যবহার করে সহজেই ডকুমেন্ট তৈরি করা, সংরক্ষণ করা, বানান ও ব্যাকরণ জনিত ভুল সংশােধন করা, লেখা ছােট-বড় করা প্রভৃতি কাজ করা যায়।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ডকে অ্যাপ্লিকেশন প্রােগ্রামও বলা হয়। আমেরিকার বিখ্যাত মাইক্রোসফট কোম্পানি কর্তৃক বাজারজাতকারী প্যাকেজ প্রােগ্রাম হচ্ছে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড। বর্তমানে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড হলাে বহুল ব্যবহৃত এবং ব্যাপকভাবে সমাদৃত ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (ইংরেজি: Microsoft Word) মাইক্রোসফট কর্পোরেশন কর্তৃক তৈরি করা একটি ওয়ার্ড প্রসেসর। এটি ১৯৮৩ সালে জেনিক্স সিস্টেমের জন্য মাল্টি-টুল ওয়ার্ড নামে বাজারে ছাড়া হয়। পরবর্তীকালে আইবিএমসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মের জন্য যেমন, ডস, (১৯৮৩) অ্যাপল ম্যাকিন্টশ-এর ম্যাক ওএস (১৯৮৫), এটিএন্ডটি ইউনিক্স পিসি (১৯৮৫) ইত্যাদি এবং মাইক্রোসফট উইন্ডোজ (১৯৮৯)। বাণিজ্যিকভাবে স্বতন্ত্র পণ্য বা মাইক্রোসফট অফিস এর সঙ্গে মুক্তি পায়। সীমিত বৈশিষ্ট্য নিয়ে অফিস ভিউয়ার এবং অফিস অনলাইন চালু আছে।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড আইবিএম পিসি/কম্প্যাটিবল কম্পিউটারের উইন্ডােজ এবং ম্যাকওএস-এই উভয় প্লাটফরমেই খুব জনপ্রিয় এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহার হওয়া ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম।
প্রধানত লেখালেখির কাজে ব্যবহার হওয়া অ্যাপ্লিকেশন প্রােগ্রামকেই ওয়ার্ড প্রসেসর বা ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম বলা হয়। ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম হিসেবে ১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রো প্রাে ইন্টারন্যাশনালের তৈরি Word Star ছিল কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য এক চমকপ্রদ উপহার।
কম্পিউটারে এত সহজে, স্বাচ্ছন্দ্যে লেখালেখির কাজ করা যায় ওয়ার্ড স্টার প্রচলিত হওয়ার আগে কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা কখনাে তা ভাবতেই পারেননি। তখন শুধু স্ট্যান্ডার্ড নয়, ওয়ার্ড স্টারই ছিল একমাত্র ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম।
এরপর আশির দশকের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের Word Perfect Corporation-এর তৈরি Word Perfect নামে আরাে একটি ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের হাতে পৌঁছে অল্প সময়ের মধ্যেই ওয়ার্ড পারফেক্ট জনপ্রিয়তা পায়।
ওয়ার্ড স্টারের তুলনায় কাজের বাড়তি সুবিধা ও স্বাচ্ছন্দ্যের কারণে ওয়ার্ড পারফেক্টের ব্যবহার দ্রুত বাড়তে থাকে। এরপর ১৯৮৯ সালে ওয়ার্ড পারফেক্ট ৫.১ সংস্করণে লেখালেখির কাজ আরাে চমৎকারভাবে সম্পন্ন করার সুযােগ তৈরি হয়। কিন্তু ওয়ার্ড পারফেক্ট ক্রমাগত উন্নত সংস্করণ উপহার দিয়ে ব্যবহারকারীদের বাড়তি চাহিদা পূরণ করেছে, যা ওয়ার্ড স্টার পারেনি।
স্ট্যান্ডার্ড ওয়ার্ড প্রসেসর হিসেবে ঘােষিত কোনাে ওয়ার্ড প্রসেসর নেই। অ্যাপ্লিকেশন প্রােগ্রাম ব্যবহারের ব্যাপকতা নির্ভর করে ব্যবহারকারীদের চাহিদা পূরণের মাত্রার ওপর। কাজেই যে প্রােগ্রাম বা প্রােগ্রামগুলাে যখন ব্যবহারকারীদের কাছে ব্যাপক হারে গ্রহণযােগ্য হয়, তখনকার জন্য ওই প্রােগ্রামগুলােই স্ট্যান্ডার্ড।
বর্তমানে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড হলাে বহুল ব্যবহৃত এবং ব্যাপকভাবে সমাদৃত ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম। মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের জনপ্রিয়তার কাছে উইন্ডােজ বা ম্যাক কোনাে প্লাটফরমেই ওয়ার্ড পারফেক্ট টিকতে পারেনি।
আরো পড়ুন:
Android-স্মার্টফোনের সিক্রেট সব কোড এখানে
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড আইবিএম পিসি/কম্প্যাটিবল কপিউটারের উইন্ডােজ এবং ম্যাকওএস এই উভয় প্লাটফরমেই খুব জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রথমে চালু হয় মেকিনটোশ কম্পিউটারে আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে।
এরপর আইবিএম পিসি কম্প্যাটিবল কম্পিউটারে উইন্ডােজ পরিবেশে কাজের সুযােগ সৃষ্টি হওয়ার সময় মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ব্যবহার শুরু হয়। এখন আইবিএম পিসি কম্প্যাটিবল কম্পিউটারে উইন্ডােজ, উইন্ডােজ ৯৫/৯৮/২০০০/এমই/এক্সপি/ভিস্তা ২০১০ এবং উইন্ডােজ এনটি অপারেটিং সিস্টেমে এবং মেকিনটোশ কম্পিউটারের ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম হিসেবে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ব্যবহার ব্যাপক।
কাজেই মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রােগ্রামকে বর্তমানের স্ট্যান্ডার্ড ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম বলা হয়। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে দেখা যাবে, মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের চেয়ে আরাে উন্নত সফটওয়্যার চলে আসবে। ফলে মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ব্যবহার কমে যাবে। তখন হয়তােবা সেই ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রােগ্রাম স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে পরিগণিত হবে। অতএব স্ট্যান্ডার্ড ওয়ার্ড প্রসেসরের মাপকাঠি নির্ধারণ করা যাবে না।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ব্যবহারের সুযােগ-সুবিধা
সহজেই ডকুমেন্টে শব্দ, বাক্য, প্যারা সংযােজন (Add) ও অপ্রয়ােজনীয় অংশ মোছা বা ডিলিট (Delete) করা যায়।
ডকুমেন্টের কোনাে অংশ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা যায়।
ডকুমেন্টের কোনাে অংশ বার বার না লিখে কপি করা যায়।
এক ফাইল থেকে প্রয়ােজনীয় অংশ অন্য ফাইলে স্থানান্তর ও কপি করা যায়।
ডকুমেন্টে কোনাে শব্দের পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন শব্দ বসানাে যায়।
বানান ও ব্যাকরণগত ভুল সংশােধন করা যায়।
একই শব্দের বিভিন্ন সমার্থক শব্দ প্রতিস্থাপন করা যায়।
বিভিন্ন আকারের কাগজে কাজ করা যায়।
মেমরিতে ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করা যায় এবং প্রয়ােজনে সংরক্ষিত ডকুমেন্টের অনুলিপি প্রস্তুত করা যায়।
মেমরিতে সংরক্ষিত ডকুমেন্ট কাগজে মুদ্রিত করা যায় অথবা অন্য কোনাে মাধ্যমে পাঠানো যায়।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড চালু করা মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রােগ্রাম চালু করার জন্য স্টার্টার (Start) থেকে Programs এবং Programs থেকে Microsoft Word নির্বাচন করে এন্টার কী চাপতে হবে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, তাহলে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রােগ্রাম চালু হয়ে যাবে।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড উইন্ডাের বিভিন্ন অংশ
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড চালু করার পর নিচের চিত্রের মতাে উইন্ডােটি পর্দায় আসবে। এতে টাইটেল বার, মেনুবার, টুলবার, স্ক্রলবার এবং অন্যান্য উপাদান দেখা যাবে। এগুলাে সম্পর্কে নিচে বর্ণনা করা হলাে.
টাইটেল বার: এমএস ওয়ার্ড উইন্ডােজের পর্দার একবারে শীর্ষে মাইক্রোসফট লেখা বারটিকে টাইটেল বার বলে। বর্তমানে কোন ডকুমেন্টে কাজ হচ্ছে, তার নাম এই টাইটেল বারে সব সময় দেখা যাবে।
টাইটেল বারে প্রােগ্রামের নাম, এর আওতাধীন বর্তমান ফাইলের নাম, কন্ট্রোল বক্স, মিনিমাইজ বাটন, ম্যাক্সিমাইজ বাটন, ক্লোজ বক্স ইত্যাদি প্রদর্শিত হয়।
কন্ট্রোল বক্স: টাইটেল বারের সর্ব বামে অবস্থিত প্রােগ্রাম নামের পাশের আইকনকে কন্ট্রোল বক্স বলা হয়। এতে ছােট একটি বাটন থাকে। এ বাটনে ক্লিক করলে একটি মেনু ওপেন হয়। একে কন্ট্রোল মেনু বলে।
মিনিমাইজ বাটন: যেকোনাে প্রােগ্রামের টাইটেল বারের ডান কোনায় অবস্থিত বাটনকে মিনিমাইজ বাটন বলা হয়। এ বাটনে ক্লিক করলে পর্দায় চালু প্রােগ্রামটি স্ট্যাটাস বারের মধ্যে ক্ষুদ্র আইকনে পরিণত হবে।
ম্যাক্সিমাইজ বাটন: যেকোনাে প্রােগ্রামের টাইটেল বারের ডান কোনায় থাকে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।