ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় | অধ্যায় ৬ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | PDF: ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রের ষষ্ট অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রের ষষ্ট অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
প্রশ্নঃ ১ মি. X কর্মীদের কোনো মতামতকে গুরুত্ব দেন না। তিনি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বিবেচনা না করেই কর্মীদের যা করতে বলেন তা পালনে বাধ্য করেন। এককভাবেই তিনি সব সিদ্ধান্ত নেন। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মূল্যায়ন না করেই তিনি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ১০০ টন পণ্য আমদানি করেন। পরবর্তীতে উক্ত পণ্য বিক্রয়ে মুনাফা লাভে ব্যর্থ হন, যা প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। [ঢা. বো., কু. বো. ১৭]
ক. নেতা কাকে বলে? ১
খ. গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব উত্তম কেন? ২
গ. উদ্দীপকে কোন ধরনের নেতৃত্ব বিদ্যমান? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘মি. X-এর দূরদর্শিতার অভাবই প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’ উদ্দীপকের আলোকে মূল্যায়ন করো। ৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ যিনি প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে অধীনস্থদের প্রভাবিত করে তাদের সর্বাধিক সামর্থ্যকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন, তিনিই নেতা।
খ উত্তরঃ যে নেতৃত্বে নেতা অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনা, পরামর্শ করে কাজ পরিচালনা করেন তাকে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বলে।
এক্ষেত্রে নেতা সব ক্ষমতা নিজের হাতে কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব অধীনস্থদের নিকট অর্পণ করেন। তাছাড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধীনস্থদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। যার কারণে নেতার প্রতি কর্মীদের ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়।
ফলে এরূপ নেতৃত্বের প্রতি অধীনস্থরা সন্তুষ্ট থাকেন। এতে কর্মীদের মনোবল বৃদ্ধি পায় এবং তারা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করেন। তাই বলা হয়, সাংগঠনিক ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক নেতৃত্বই উত্তম।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকে স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের কথা বলা হয়েছে।
স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা নিজের কাছে সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভ‚ত করে রাখেন। তিনি নিজের ইচ্ছেমতো একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে নেতা কর্মীদের কোনা মতামতকে গুরুত্ব দেন না। নেতার নিদের্শনা কর্মীরা বিনাবাক্যে মানতে বাধ্য থাকেন।
উদ্দীপকের মি. X কর্মীদের কাজের দিকনিদের্শনা দেন। কর্মীদের কোনো মতামত তিনি গ্রহণ করেন না । তিনি যা ভালো মনে করেন তাই কর্মীদের ওপর চাপিয়ে দেন।
তিনি কর্মীদেরকে আদেশ পালনে বাধ্য করেন। এসব বৈশিষ্ট্য স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের মি. ঢ স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রদান করছেন।
ঘ উত্তরঃ ‘মি. X-এর দূরদর্শিতার অভাবই প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’ উদ্দীপকের আলোকে বক্তব্যটি যথার্থ।
জ্ঞানচক্ষু বা বিশেষ জ্ঞান দ্বারা ভবিষ্যতকে উপলব্ধি করতে পারার সামর্থ্যই হলো দূরদর্শিতা। দূরদর্শী নেতা সময়োপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন। তিনি সম্ভাব্য করণীয় পূর্বেই নির্ধারণ করে রাখতে পারেন। এতে তিনি সহজেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেন।
উদ্দীপকের মি. X ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মূল্যায়ন না করেই বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ১০০ টন পণ্য আমদানি করেন। পরবর্তীতে দেখা যায়, তিনি উক্ত পণ্য বিক্রয় করে মুনাফা অর্জনে ব্যর্থ হন। ফলে প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে বোঝা যায়, মি. ঢ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আগাম ধারণা করতে পারেননি।
ভবিষ্যৎ সর্বদাই অনিশ্চিত। এ অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়েই একজন নেতাকে সফলতা অর্জন করতে হয়। কিন্তু মি. ঢ ভবিষ্যৎ মূল্যায়নে অতীত ও বর্তমানের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেন নি।
ফলে তিনি ভবিষ্যতে কী পরিমাণ পণ্য কত দামে বিক্রয় হবে তা বিবেচনা না করে ১০০ টন পণ্য আমদানি করেন। পরবর্তীতে তা বিক্রয় না হওয়ায় তিনি মুনাফা অর্জনে ব্যর্থ হন । এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বলা যায়, মি. ঢ-এর দূরদর্শিতার অভাবই প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
প্রশ্নঃ ২ একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী তার অধস্তনদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে কাজ আদায়ে বিশ্বাসী। সব সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই নেন। আবার অধস্তনদের কাছ থেকে শর্তহীন আনুগত্য প্রত্যাশা করেন। কিন্তু কর্মীরা তার নেতৃত্বকে ভালোভাবে নেয় না। তারা মানসিক কষ্ট নিয়ে কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে কর্মীরা দুই-একজন করে চাকরি ছেড়ে দিতে থাকে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি সংকটাবস্থায়। [ঢা. বো., কু. বো. ১৭]
ক. নির্দেশনা কী? ১
খ. পরামর্শমূলক নির্দেশনা অনেকটা গণতান্ত্রিক কেন? ২
গ. উদ্দীপকে প্রধান নির্বাহীর নেতৃত্ব ডগলাস মারে ম্যাকগ্রেগরের কোন তত্ত সংশ্লিষ্ট? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘স্বৈরাচারী নির্দেশনা উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’ বিশ্লেষণ করো। ৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ লক্ষ্য অর্জনে অধস্তনদের আদেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং তত্তাবধান কাজকে নির্দেশনা বলে।
খ উত্তরঃ কোনো কাজের নির্দেশ দেওয়ার পূর্বে যারা তা বাস্তবায়ন করবে তাদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাকে পরামর্শমূলক নির্দেশনা বলে।
গণতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকেন। এক্ষেত্রে কর্মীদের মতামতকে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
পরামর্শমূলক নির্দেশনায়ও যারা নির্দেশ পালনের সাথে জড়িত কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেন এবং গঠনমূলক মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। এজন্যই বলা হয় পরামর্শমূলক নির্দেশনা অনেকটা গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের মতো।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকের প্রধান নির্বাহীর নেতৃত্ব ডগলাস মারে ম্যাকগ্রেগরের ঢ তত্ত সংশ্লিষ্ট।
তত্তে মনে করা হয় কর্মীরা কাজকে অপছন্দ করে ও সুযোগ পেলেই কাজে ফাঁকি দেয়। এজন্য এ তত্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ, ভয়ভীতি ও শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে দিয়ে কাজ করানোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী তার অধস্তন কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে কাজ আদায় করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের যেকোনো সিদ্ধান্ত একাই গ্রহণ করেন। কর্মীদের ভুল-ভ্রান্তির জন্য শাস্তি প্রদান করেন।
এছাড়া তিনি কর্মীদের কাছ থেকে শর্তহীন আনুগত্য প্রত্যাশা করেন। এসব বৈশিষ্ট্য ঢ তত্তের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের নির্বাহীর নেতৃত্বটি ডগলাস মারে ম্যাকগ্রেগরের ঢ তত্ত সংশ্লিষ্ট।
ডগলাস মারে ম্যাকগ্রেগর গ্রন্থে কর্মীর মনোভাব সম্পর্কে দুই ধরনের তত্তের উলেখ করেন, যা ঢ ও ণ তত্ত নামে পরিচিত।
ঢ তত্তে (নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি) মনে করা হয়
কর্মীরা কাজকে অপছন্দ করে ও সুযোগ পেলেই কাজে ফাঁকি দেয়। এজন্য কঠোর নিয়ন্ত্রণ, ভয়ভীতি ও শাস্তির মাধ্যমে তাদেরকে দিয়ে কাজ করাতে হবে।
কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্মীদেরকে মতামত প্রদানের সুযোগ দেওয়া যাবে না।
ণ তত্তে (ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি) মনে করা হয়
কর্মীরা কাজকে পছন্দ করে এবং তারা স্বপরিচালিত ও স্বনিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
উপযুক্ত পরিবেশ পেলে তারা দায়িত্ব গ্রহণ, সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা প্রদান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণেও যোগ্যতার প্রমাণ রাখে।
ঘ উত্তরঃ ‘স্বৈরাচারী নির্দেশনা উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’ বক্তব্যটি যৌক্তিক।
স্বৈরাচারী নির্দেশনায় নেতা সব ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভ‚ত রাখেন। তিনি চাপ সৃষ্টি করে কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায় করেন।
এ নেতৃত্বে নেতা নিজে যা ভালো মনে করেন তা-ই করেন। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন নির্দেশ দানের ক্ষেত্রে অধস্তনদের মতামত বা চিন্তা-ভাবনাকে কোনো বিবেচনায় আনেন না।
উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায়ে চাপ সৃষ্টি করেন। তিনি সব বিষয়ে নিজের সিদ্ধান্তকেই প্রাধান্য দেন। যারা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে তিনি তাদের উপেক্ষা করেন। এভাবে প্রধান নির্বাহী স্বৈরাচারী নির্দেশনা প্রদান করেন।
উক্ত স্বৈরাচারী নির্দেশনা কর্মীরা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে না। তাদের মতামতকে মূল্যায়ন না করায় তারা কাজে নিরুৎসাহিত হয়। তারা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার মতো যথোপযুক্ত প্রেষণাও পায় না। ফলে প্রতিষ্ঠানকে তারা আপন ভাবতে পারে না।
এজন্য দুই-একজন কর্মী প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যায়, যা প্রতিষ্ঠানকে সংকটে ফেলে দেয়। তাই বলা যায়, স্বৈরাচারী নির্দেশনা উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
প্রশ্নঃ ৩ জনাব সাব্বির অইঈ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন ব্যবস্থাপক। কর্মীদের কাজ তিনি সময় ও মান অনুযায়ী নির্দিষ্ট করে দেন এবং এর ভিত্তিতে কাজ হচ্ছে কিনা তা তদারকি করেন। তবে কর্মীদের কাছ থেকে বেশি কাজ আদায়কেই তিনি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তিনি কর্মীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেন না। জনাব সাব্বির কর্মীদের চাইতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনকেই বেশি প্রাধান্য দেন। কর্মীরা এ অবস্থার উত্তরণ চায়। [রা. বো. ১৭]
ক. নির্দেশনা কী? ১
খ. একজন নেতার ঝুঁকি গ্রহণ ক্ষমতা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে উলিখিত প্রতিষ্ঠানটিতে জনাব সাব্বির কোন ধরনের নেতৃত্ব অনুসরণ করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. বর্তমান পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য কোন ধরনের নেতৃত্ব উপযোগী হবে বলে তুমি মনে করো? যুক্তি দাও। ৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ লক্ষ্য অর্জনে অধস্তনদের আদেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান এবং তত্তাবধানমূলক কাজকে নির্দেশনা বলে।
খ উত্তরঃ নেতার ঝুঁকি নেওয়ার সামর্থ্যকে তার ঝুঁকি গ্রহণ ক্ষমতা বলা হয়।
নেতাকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক ফলাফল না দিলে নেতা ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এ জন্য নেতাকে অনেক চিন্তা-ভাবনা করে ঝুঁকি গ্রহণ করতে হয়।
এমনকি অধীনস্থদের ব্যর্থতার দায়ভারও নেতাকেই বহন করতে হয়। নেতার ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতার ওপরই সংগঠনের সফলতা ও ব্যর্থতা নির্ভর করে।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকের জনাব সাব্বির কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করছেন।
কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বে নেতা কর্মীর চেয়ে তার কাজকে বেশি প্রাধান্য দেন। এক্ষেত্রে নেতা মনে করেন কাজ সম্পাদনই মূল বিষয়। এজন্য তিনি কর্মীদের ওপর অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেন।
উদ্দীপকের জনাব সাব্বির অইঈ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি কর্মীদের কাজের সময় ও মান নির্দিষ্ট করে দেন। এর ভিত্তিতে কর্মীরা কাজ করছে কিনা, তা তদারকি করেন। কর্মীদের ভালো-মন্দ বিষয় তিনি বিবেচনা করেন না।
তিনি কর্মীদের উৎপাদন ক্ষমতাকেই বেশি প্রাধান্য দেন, তবে এজন্য কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেন না। এসব বৈশিষ্ট্য কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, জনাব সাব্বির প্রতিষ্ঠানে কর্মকেন্দ্রিক নেতৃত্ব প্রদান করছেন।
ঘ উত্তরঃ উদ্দীপকের বর্তমান পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব উপযোগী হবে বলে আমি মনে করি।
কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্বে নেতা কাজের পাশাপাশি কর্মীদের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করেন। নেতা সহানুভ‚তির সাথে কর্মীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন।
এক্ষেত্রে নেতা কাজের জন্য কর্মীদের যথোপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেন। ফলে কর্মীরা প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুগত থাকে।
উদ্দীপকের জনাব সাব্বির অইঈ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের চেয়ে উৎপাদনকেই বেশি প্রাধান্য দেন। তিনি কর্মীদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেন না। কর্মীরা এ অবস্থার উত্তরণ চায়।
বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব প্রয়োগ করা যায়। এরূপ নেতৃত্বে নেতা কর্মীদের ভালো-মন্দের বিষয়টি বিবেচনা করেন। নেতা কর্মীদের ওপর সহানুভ‚তির হাত বাড়িয়ে দিলে তারা প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুগত থাকবে।
কর্মীরা তখন সঠিকভাবে নেতার নির্দেশ পালনে সচেষ্ট থাকবে। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। এতে প্রতিষ্ঠান ও কর্মী উভয়ই লাভবান হবে।
তাই আমি মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মীকেন্দ্রিক নেতৃত্ব প্রয়োগ করা উচিত।
প্রশ্নঃ ৪ মি. নাজমুল হাসান একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে সবসময় কুশল বিনিময় করেন। তিনি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কেবল আদেশ-নির্দেশই প্রদান করেন না, সময় সময়ে পরামর্শ এবং প্রেষণাও দিয়ে থাকেন। তিনি আদেশ নির্দেশের পূর্বে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধস্তনদের মূল্যায়ন করেন। এতে অধস্তনরাও তার ওপর বেশ সন্তুষ্ট ও তারা সকল কাজে হাসান সাহবেকে সহযোগিতা করেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাকে একক সিদ্ধান্তও নিতে হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি একটি সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। [দি. বো. ১৭]
ক. সংগঠন চার্ট কী? ১
খ. ইতিবাচক নেতৃত্ব কখন ব্যবহার করা হয়? ২
গ. উদ্দীপকে উলিখিত মি. নাজমুল হাসান তার প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের নির্দেশনা অনুসরণ করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ব্যবস্থাপনা পরিচালকের একক সিদ্ধান্তের বিষয়টি কোন ধরনের নেতৃত্ব? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলিকে বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগে বিভক্ত করে প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্ধারণের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ককে চিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করাকে সংগঠন চার্ট বা সংগঠন চিত্র বলে।
খ উত্তরঃ কর্মীরা যখন স্বতঃস্ফ‚র্তভাবেই নেতার নির্দেশনা মেনে চলেন তখন ইতিবাচক নেতৃত্ব ব্যবহার করা হয়।
এরূপ নেতৃত্বে কর্মীদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টির মাধ্যমে কাজে মনোনিবেশ করা হয়। এক্ষেত্রে কর্মীদের কাজের প্রশংসা করা হয় এবং স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের আর্থিক বা অনার্থিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়। এরূপ নেতৃত্ব অধীনস্থদের মধ্যে সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকের মি. নাজমুল হাসান তার প্রতিষ্ঠানে পিতৃসুলভ নির্দেশনা অনুসরণ করছেন।
পিতৃসুলভ নির্দেশনার ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অধস্তনের ওপর অতিমাত্রায় কর্তৃত্বশালী হলেও কাজ আদায়ের ক্ষেত্রে পূর্ণ ও আন্তরিক ব্যবহার করেন। ফলে অধস্তনরা ঊর্ধ্বতনের প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন।
উদ্দীপকে মি. নাজমুল হাসান একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে সবসময় কুশল বিনিময় করেন। তিনি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কেবল আদেশ-নির্দেশই প্রদান করেন না, সময়ে সময়ে পরামর্শ ও প্রেষণাও দিয়ে থাকেন।
তিনি আদেশ নির্দেশের পূর্বে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অধস্তনদের মূল্যায়ন করেন। এসব বৈশিষ্ট্যের সাথে পিতৃসুলভ নির্দেশনার মিল পাওয়া যায়। সুতরাং, মি. নাজমুল হাসান প্রতিষ্ঠানে পিতৃসুলভ নির্দেশনা অনুসরণ করছেন।
ঘ উত্তরঃ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের একক সিদ্ধান্তের বিষয়টি পিতৃসুলভ নেতৃত্ব।
পিতৃসুলভ নেতৃত্বে নেতা কর্মীদের সাথে পিতার মতো আচরণ করে আস্থাশীল সম্পর্ক তৈরি করেন। নেতা সর্বদা অধস্তনদের প্রতি সদয় থাকেন। এরূপ নেতা অধঃস্তনদের অভাব-অভিযোগের প্রতি মনোনিবেশ করেন।
উদ্দীপকে মি. নাজমুল হাসান একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি কর্মীদের আদেশ নির্দেশ প্রদানের পূর্বে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের মূল্যায়ন করেন। এতে অধস্তনরা তার ওপর বেশ সন্তুষ্ট থাকেন এবং সব কাজে তারা হাসান সাহেবকে সহযোগিতা করেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে তাকে একক সিদ্ধান্তও হয়, যা পিতৃসুলভ নেতৃত্বের স্বরূপ।
পিতৃসুলভ নেতৃত্বে নেতা অধস্তনদের প্রতি অতিমাত্রায় কর্তৃত্বশালী হলেও কাজ আদায়ে পিতা-পুত্রের ন্যায় আচরণ করেন। এ নেতৃত্বে নেতা একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও কর্মীদের প্রতি সদয় আচরণ করেন এবং তাদের অভাব অভিযোগ শোনেন।
উদ্দীপকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এরূপ নেতৃত্ব পদ্ধতি অনুসরণ করেন। ফলে কর্মীরা কাজের প্রতি আনুগত্য ও কঠোর পরিশ্রমী হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটি সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত লাভ করে। তাই বলা যায়, হাসান সাহেবের একক সিদ্ধান্তের বিষয়টি পিতৃসুলভ নেতৃত্ব।
প্রশ্নঃ ৫ একটি প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার মি. আশরাফ বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে মাঝে মধ্যেই সভা করেন। তিনি প্রত্যেক বিভাগের সুবিধা-অসুবিধা শোনেন এবং করণীয় নির্ধারণ করে দেন। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় ব্যবস্থাপকের সিদ্ধান্ত হলো এভাবে সভা না করে অধস্তনদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়ে চাপ দিলে কাজ ভালো হবে। প্রথমদিকে তার কৌশল কিছুটা কাজে আসলেও পরে বিক্রয় কমেছে। [দি. বো. ১৭]
ক. শিক্ষণ কী? ১
খ. সমন্বয় কেন প্রয়োজন? ২
গ. মি. আশরাফ প্রদত্ত নেতৃত্বের ধরন ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. বিক্রয় ব্যবস্থাপককে ভালো করতে হলে নতুন নির্দেশনা পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে? তোমার মতামত দাও। ৪
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষাদান কার্যক্রমকে শিক্ষণ বলে ।
খ উত্তরঃ সমন্বয় হলো প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে দলীয় প্রচেষ্টা, ঐক্য ও শৃঙ্খলা বিধানের প্রক্রিয়া।
প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তি, বিভাগের কাজের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ কর্মপ্রচেষ্টা জোরদার হলে কাজে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। সমন্বয় প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কাজে গতিশীলতা বাড়ায়। ফলে মূল লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়। এজন্যই প্রতিষ্ঠানে সমন্বয় অত্যন্ত প্রয়োজন।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকের মি. আশরাফ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রদান করেন।
এ নেতৃত্বে নেতা নিজের কাছে সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাজ পরিচালনা করেন। এরূপ নেতৃত্ব কর্মীদের মনে স্বতঃস্ফ‚র্ততা নিয়ে আসে। ফলে প্রতিষ্ঠানের কাজে গতিশীলতা আসে।
উদ্দীপকের জেনারেল ম্যানেজার মি. আশরাফ বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে মাঝে মধ্যেই সভা করেন। তিনি প্রত্যেক বিভাগের কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা শোনেন এবং করণীয় নির্ধারণ করে দেন। এতে কর্মীরা নিজেদের মতামত দিতে পারে বলে কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ে।
যেকোনো কাজ তারা স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে করার চেষ্টা করে। এসব বৈশিষ্ট্য গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, মি. আশরাফ গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব অনুসরণ করেন।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (১ম পত্র) ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা ১ম পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(১ম পত্র)১ম: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্ন উত্তরসহ PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্নের উত্তরসহ অধ্যায়-১: PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC অধ্যায়-১: প্রশ্নের উত্তরসহ ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তরPDF
ঘ উত্তরঃ বিক্রয় ব্যবস্থাপককে ভালো করতে হলে স্বৈরতান্ত্রিক নির্দেশনার পরিবর্তে পরামর্শমূলক নির্দেশনা পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
স্বৈরতান্ত্রিক নির্দেশনায় নেতা সব ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভ‚ত করে রাখেন। কাজ আদায়ের জন্য তিনি কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন।
অন্যদিকে পরামর্শমূলক নির্দেশনায় নেতা অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এতে কর্মীরা নেতার প্রতি অনুগত থাকে। ফলে প্রতিষ্ঠানের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সহজ হয়।
উদ্দীপকের বিক্রয় ব্যবস্থাপক অধস্তনদের বিক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেন। এরপর তা বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। এতে কর্মীরা মনোযোগ সহকারে কাজ করতে পারে না।
এ ব্যবস্থায় কর্মীরা চাকরি হারানোর ভয়ে থাকে; তখন তাদের চাকরি ছাড়ার প্রবনতা বেড়ে যায়। ফলে প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কমে যায়।
এরূপ পরিস্থিতিতে বিক্রয় ব্যবস্থাপককে ভালো করতে হলে পরামর্শমূলক নির্দেশনা প্রয়োগ করতে হবে। কর্মীদের সাথে আলোচনা করে বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিতে হবে, তা হলেই ঐ নির্দেশ বাস্তবায়নে তারা মনোযোগী হবে।
কর্মীদের মতামতকে মূল্যায়ন করা হলে প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের কাজের আগ্রহ বেড়ে যাবে। ফলে প্রতিষ্ঠান সহজে লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে। তাই বিক্রয় ব্যবস্থাপককে প্রতিষ্ঠানের জন্য পরামর্শমূলক নির্দেশনা প্রয়োগ করাই বেশি যথোপযুক্ত হবে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।