HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-১১ | PDF: বাংলা ১ম পত্রের বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতাটি হতে যেকোনো ধরনের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তরগুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রেরবিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতাটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
৬ || নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
‘স্বদেশের উপকারে নেই যার মন।
কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন\’
ক. রাক্ষসরাজানুজ বলা হয়েছে কাকে?
খ. বিভীষণ নিজেকে রাঘবের দাস বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার কোন চরিত্রটিকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার মূলবক্তব্য উদ্দীপকের মূলবক্তব্যের প্রতিরূপ’Ñ উক্তিটির যৌক্তিকতা বিচার কর।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রাক্ষসরাজানুজ বলা হয়েছে বিভীষণকে।
খ. বিভীষণ রামের নৈতিকতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাঁর আদর্শে নিজেকে সমর্পণ করেছেন বলে তিনি নিজেকে রাঘবের দাস বলেছেন।
রাক্ষসরাজ রাবণ বিভীষণের বড় ভাই। রাবণ রামের সাথে যে অন্যায় করেছিলেন বিভীষণ তা সমর্থন করতে পারেন নি। রাবণের যে পাপে আজ সমস্ত লঙ্কাপুরী কলঙ্কিত সে দোষে বিভীষণ নিজে মরতে চান না।
তাই রামের নৈতিকতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি তাঁর আজ্ঞাবহ হয়েছেন। আর তাই রাবণের ভাই হওয়া সত্তে¡ও তিনি নিজেকে রাঘবের দাস মনে করেন।
গ. উদ্দীপকটি ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার বিভীষণের চরিত্রটিকে নির্দেশ করে।
দেশপ্রেম মানবজীবনের মহান বৈশিষ্ট্য। একজন মানুষ যতই ধনবান, গুণবান কিংবা জ্ঞানী হোক না কেন, তার মনে যদি দেশপ্রেম ও স্বজাতির প্রতি ভালোবাসা না থাকে তাহলে সে নরাধম, বর্বর ও পশুর তুল্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
মানুষের গভীর মমত্ববোধই হলো দেশপ্রেমের উৎস, স্বজাতি প্রীতির বন্ধন। সকল মানুষের কাছেই নিজের জাতির স্বার্থ আগে। এই বৈশিষ্ট্যগুলো যার মধ্যে বর্তমান থাকে না, তাকে প্রকৃত মানুষ বলে অভিহিত করা যায় না। এমন ব্যক্তি পশুর মতো বিবেকহীন হয়ে থাকে।
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় নিজের দেশ ও জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। মেঘনাদ যজ্ঞাগারে হঠাৎ ল²ণকে দেখে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিন্তু পরক্ষণেই আপন পিতৃব্য বিভীষণকে দেখে বুঝতে পারেন যে, ঘরের শত্র“ বিভীষণই ল²ণকে যজ্ঞাগারের পথ দেখিয়ে দিয়ে এসেছেন।
বিভীষণের সাথে মেঘনাদের বিতর্কের মধ্য দিয়ে এ সত্যটি প্রতীয়মান হয় যে, মহাকুলে জন্মগ্রহণ করেও নিজের জ্ঞাতি এবং দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে বিভীষণ পশুত্বের পরিচয় দিলেন। উদ্দীপকেও এ সত্যই উচ্চারিত হয়েছে।
ঘ. ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার মূলবক্তব্য উদ্দীপকের মূলবক্তব্যের প্রতিরূপ’Ñউক্তিটি যুক্তিসম্মত।
মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম না থাকলে সে মানুষ হয়েও পশুর সমান হিসেবে বিবেচিত হয়, ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার মধ্যে এ বিষয়টিই প্রতীয়মান হয়।
স্বদেশ ও স্বজাতির উপকার সাধন মানুষের অন্যতম কর্তব্য। স্বদেশ ও স্বজাতির উপকার সাধনে যে দ্বিধাগ্রস্ত এবং তাদের বিপদে যার প্রাণ কাঁদে না, তাকে কখনোই মানুষ হিসেবে গণ্য করা যায় না।
উদ্দীপক এবং ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় এ বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। জ্ঞাতিত্ব ও ভ্রাতৃত্ববোধ ভুলে গিয়ে বিভীষণ তাদের শত্র“ রামের সাথে হাত মেলান। আর ল²ণকে নিয়ে আসেন নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে মেঘনাদকে হত্যা করার জন্য।
বিভীষণ স্বদেশ ও স্বজাতির কথা ভুলে হীনতার পরিচয় দেন। আর তাঁর আচরণের প্রেক্ষিতে মেঘনাদ উচ্চারণ করেন দেশপ্রেম ও স্বাজাত্যবোধের অমর বাণী। উদ্দীপকেও স্বদেশের প্রতি যার মমত্ববোধ নেই, তাকে মানুষের অধম বা পশুর তুল্য বলা হয়েছে।
অতএব, উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতার বক্তব্যের আলোকে বলা যায়, ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার মূল বক্তব্যই উদ্দীপকের বক্তব্যে প্রতিভাত হয়েছে।
৭ || নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
প্রাসাদ ষড়যন্ত্র ও দেশবৈরিতা বিশ্ব ইতিহাসের ঘৃণিত দিক। বিখ্যাত রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার খুবই বিশ্বাস করতেন ব্র“টাসকে। তিনি ছিলেন জুলিয়াস সিজারের ঘনিষ্ঠ পরিষদ। কিন্তু এই কুখ্যাত ব্যক্তি নিজের স্বার্থে দেশের সঙ্গে, রাজা সিজারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। অন্যান্য পরিষদদের সঙ্গে ব্র“টাসও সিজারের হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।
ক. রাবণ ও বিভীষণের সম্পর্ক কী?
খ ‘রাঘব দাস আমি’ কী প্রকারে তাঁর বিপক্ষে কাজ করিব’Ñ বিভীষণ একথা কেন বলেছেন?
গ. ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার বিভীষণের সঙ্গে উদ্দীপকের ব্র“টাস চরিত্রের সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. ‘দেশদ্রোহী ও বিশ্বাসঘাতক সকলের কাছেই ঘৃণিত।’Ñউদ্দীপক ও ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার আলোকে উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রাবণ ও বিভীষণ পরস্পর সহোদর।
খ. মেঘনাদের তিরস্কারের জবাবে বিভীষণ আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে প্রশ্নোলিখিত উক্তিটি করেছেন।
বিভীষণের মতে, তিনি সত্য ও ন্যায়ের পথ অবলম্বন করার জন্য রামের পক্ষ নিয়েছেন। রাক্ষসরাজ রাবণ তাঁর পাপকর্মের কারণে লঙ্কার সর্বনাশ ডেকে এনেছেন। তাই তিনি দেবতাদের অনুগ্রহপ্রাপ্ত ন্যায়নিষ্ঠ রামকে প্রভু হিসেবে মেনে নিয়েছেন। বিভীষণ বলেন যে, ন্যায়ধর্মের পথ অবলম্বন করার জন্য রামের দাসে পরিণত হয়েছেন তিনি, ফলে তাঁর পক্ষে আর রামের বিরুদ্ধাচরণ সম্ভব নয়।
গ. বিশ্বাসঘাতকতার দিক থেকে ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার বিভীষণের সাথে উদ্দীপকের ব্র“টাস চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে।
কারো বিশ্বাসভাজন হওয়ার পর তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার মতো ঘৃণ্য কাজ আর হয় না। দেশ ও জাতির সাথে এ ধরনের আচরণ অত্যন্ত ঘৃণিত। এরকম বিশ্বাসঘাতকরা যুগে যুগে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেয় তাদের জঘন্যতম অপকর্মের জন্য।
উদ্দীপকে ব্র“টাস সম্রাট জুলিয়াস সিজারের বিশ্বাসভাজন ও ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। নিজ স্বার্থের নেশায় বুঁদ হয়ে ব্র“টাস দেশের সাথে, রাজার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। এমনকি তিনি সম্রাটের হত্যাকাণ্ডেও যুক্ত ছিলেন।
ব্র“টাসের মতো বিভীষণও দেশ ও জাতির সাথে একই রকমভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করে। বিভীষণ রামের দাসত্ব বরণ করে ল²ণকে পথ দেখিয়ে রাক্ষসপুরীতে নিয়ে আসে। নিজ ভ্রাতা রাবণের পরাজয় নিশ্চিতকরণে সকল প্রকার কাজ করেন বিভীষণ।
নিজ জাতির সঙ্গ ত্যাগ করে, নিজের দেশকে অন্যের করতলগত করতে সহায়তা করার মতো ঘৃণিত কাজ করে এবং মেঘনাদকে হত্যার জন্য ল²ণকে রাক্ষসপুরীতে নিয়ে আসে। এক্ষেত্রে ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার বিভীষণের সঙ্গে উদ্দীপকের ব্র“টাস চরিত্রের সাদৃশ্য প্রতীয়মান হয়।
ঘ. ‘দেশদ্রোহী ও বিশ্বাসঘাতক সকলের কাছেই ঘৃণিত’Ñউক্তিটি উদ্দীপক ও ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার আলোকে যথার্থ।
সভ্য মানুষের কাছে দেশ হচ্ছে মায়ের মতো। যে মায়ের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে তার পক্ষে যেকোনো জঘন্যতম কাজ করা সম্ভব। ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় দেশদ্রোহিতার মতো জঘন্যতম কাজের প্রমাণ পাওয়া যায়।
উদ্দীপকে ব্র“টাস রাজা সিজারের বিশ্বাস ভঙ্গ করে তাঁর হত্যাকারীদের সহায়তা করেন। তিনি সিজারের একান্ত ঘনিষ্ঠজন হয়েও এই রকম জঘন্যতম কাজে সহায়তা করেন শুধু নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। জুলিয়াস সিজারের সময় থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ রাজার সাথে ব্র“টাসের এই আচরণকে ঘৃণাভরে স্মরণ করে।
তেমনি বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতাতেও এই একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বিভীষণ রাক্ষসরাজা রাবণের ভাই হয়েও রামের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজ মাতৃভূমির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এমনকি রাক্ষসদের বীরযোদ্ধা মেঘনাদকে হত্যার উদ্দেশ্যে ল²ণকে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসে বিভীষণ। বিভীষণের এই হীন আচরণ মেঘনাদের কাছে ধরা পড়ার পর মেঘনাদ তাকে বিভিন্নভাবে ভর্ৎসনা করে।
পুরাণের এ ঘটনা কালক্রমে এখনো মানুষ মনে রেখেছে এবং বিভীষণকে ঘরের শত্র“ বলে ঘৃণা প্রকাশ করে। তাই দেখা যায় যে, উদ্দীপক ও ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার আলোকে দেশদ্রোহী ও বিশ্বাসঘাতক সকলের কাছেই ঘৃণিত উক্তিটি যথার্থ।
৮ || নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। এ যুদ্ধে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ শহিদ হন। আর এ কাজে পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছিল রাজাকার, আলবদরসহ তাদের এদেশীয় দোসররা। যদিও ‘যুদ্ধ আইনে’ নিরস্ত্র মানুষ হত্যা কাপুরুষোচিত।
ক. ল²ণ কোন যজ্ঞাগারে প্রবেশ করেন?
খ. মেঘনাদ ল²ণকে ‘ক্ষুদ্রমতি নর’ বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকের হানাদার বাহিনী এবং ল²ণ চরিত্রের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা চালানো কাপুরুষোচিত’Ñ উদ্দীপক ও ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার আলোকে উক্তিটি বিচার কর।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ল²ণ নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রবেশ করেন।
খ. নিরস্ত্র মেঘনাদকে যুদ্ধে আহŸান করার কারণে মেঘনাদ ল²ণকে ক্ষুদ্রমতি নর বলেছেন।
কপটতার আশ্রয় নিয়ে ল²ণ মেঘনাদের যজ্ঞাগারে প্রবেশ করেন। এছাড়াও ল²ণ নিরস্ত্র মেঘনাদকে যুদ্ধে আহŸান জানান। যুদ্ধসাজে সজ্জিত ল²ণ অস্ত্রহীন মেঘনাদের সাথে যে আচরণ করেছেন তা মোটেও বীরের কাজ নয়। তাই মেঘনাদ ল²ণকে ক্ষুদ্রমতি নর বলেছেন।
গ. উদ্দীপকের হানাদার বাহিনী এবং ল²ণ চরিত্রের মধ্যে সাদৃশ্য হলো উভয়েই নিরস্ত্র মানুষের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে।
অতর্কিত আক্রমণকারী হিসেবে ল²ণ চরিত্র এবং উদ্দীপকের হানাদার বাহিনীর মধ্যে মিল বর্তমান। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বর্বরোচিত কাজ করেছিল নিরীহ বাঙালিদের হত্যা করে। তেমনি ল²ণও কপটতার মাধ্যমে লঙ্কায় প্রবেশ করে নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন।
পাকিস্তানিরা এদেশের কিছু মানুষের সহায়তায় ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ল²ণ সরাসরি দেবতাদের সহযোগিতা নিয়ে মায়া বিস্তার করে মেঘনাদের যজ্ঞালয়ে প্রবেশ করেন। মেঘনাদ ল²ণকে স্মরণ করিয়ে দেন, সে নিরস্ত্র শত্র“কে বধ করতে চান। দেবতাদের আনুুক‚ল্যপ্রাপ্ত ল²ণের এই হীন আচরণ কোনোক্রমেই মেনে নেয়া যায় না এবং এখানেই হানাদার বাহিনীর সাথে তাঁর চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. “নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা চালানো কাপুরুষোচিত” উদ্দীপক ও ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার আলোকে এই উক্তিটির যথার্থতা বিদ্যমান।
নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা চালালে ওই নিরস্ত্র মানুষটির মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে দুই প্রতিপক্ষকেই সমান হতে হয়। একপক্ষ যদি অস্ত্রসজ্জায় সজ্জিত হয় আর অপরপক্ষ যদি অস্ত্রহীন হয় তাহলে সেখানে সমতা হয় না, হয় অন্যায়। আর অস্ত্রহীন মানুষের ওপর হামলা চালানো কোনো বীরোচিত কাজ নয়।
উদ্দীপকে দেখা যায় যে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের কিছু বিশ্বাসঘাতকের সহায়তায় নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা চালায়। ১৯৭১ সালে যুদ্ধে পাকিস্তানিরা বাঙালির কাছে পরাজিত হয়েছিল। যদি তারা নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা না চালাত তাহলে হয়তো ৩০ লক্ষ মানুষকে শহিদ হতে হতো না।
প্রায় একই পরিস্থিতি দেখা যায় ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায়। মেঘনাদ রাক্ষসদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বীর। রাম এবং রাবণের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধে বিজয়লাভের জন্য মেঘনাদ দেবতার আরাধনা করতে যজ্ঞালয়ে যান।
উদ্দীপকেও বলা হয়েছে, ‘যুদ্ধ আইন’ অনুযায়ী নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা কাপুরুষোচিত কাজ। সুতরাং প্রশ্নোলিখিত উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার আলোকে যথার্থ।
৯ || নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
মুক্তিযুদ্ধের সময় চৌধুরী পরিবারের ফুরকান চৌধুরী মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। অন্যদিকে, তার ভাই ফিরোজ চৌধুরী যোগ দেন রাজাকার বাহিনীতে। যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে ফুরকান একদিন বাসায় এলে ফিরোজ তাকে পাকবাহিনীর হাতে তুলে দেয়।
ক. বিভীষণের মায়ের নাম কী?
খ. ‘চণ্ডালে বসাও আনি রাজার আলয়ে’Ñব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ফিরোজ চৌধুরীর মধ্যে ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার কোন প্রবণতাগুলো লক্ষণীয়? আলোচনা কর।
ঘ. ‘কোন ধর্মমতে, কহ দাসে, শুনি, জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব জাতিÑএ সকলে দিলা জলাঞ্জলি’Ñ উদ্দীপকের আলোকে এ পঙ্ক্তির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বিভীষণের মায়ের নাম নিকষা।
খ. ‘চণ্ডালে বসাও আনি রাজার আলয়ে’Ñ লাইনটি দ্বারা অধমকে উত্তম স্থানে আসীন করানোকে বোঝানো হয়েছে।
বিভীষণ রামের অনুগত ছিলেন। রামের আদর্শানুসারী হওয়ায় রাক্ষসকুলের বীর মেঘনাদ বিভীষণকে ভর্ৎসনা করেন। মেঘনাদের মতে, রাম তুচ্ছ ও হীন চরিত্রাধিকারী। তাঁকে আদর্শ হিসেবে বিভীষণ অনুসরণ করার মাধ্যমে মূলত চণ্ডালকে তথা হীনকে রাজার আসনে বসিয়েছেন।
গ. উদ্দীপকের ফিরোজ চৌধুরীর মধ্যে ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার স্বজাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা এবং শত্র“কে প্রাধান্য দেয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়।
মানুষ কখনো মানসিক নীচতার কারণে শত্র“র সাথে আঁতাত করে। আবার কখনো আদর্শগত দ্ব›েদ্বর কারণেও শত্র“র পক্ষ অবলম্বন করে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় ফুরকান চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে ছিলেন, যাকে তার ভাই ফিরোজ চৌধুরী রাজাকারের হাতে তুলে দিয়ে স্বজাতির সাথে বৈরিতার পরিচয় দেয়।
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতাতেও দেখা যায়, বিভীষণ লঙ্কার অধিবাসী হয়েও শত্র“পক্ষ তথা রামের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন, যা স্বজাতির সাথে বৈরিতার পরিচায়ক। আর এখানেই উদ্দীপকের ফিরোজ চরিত্রের প্রবণতার সঙ্গে ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার সাদৃশ্য বিদ্যমান।
ঘ. কোন ধর্মমতে, কহ দাসে, শুনি, জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব জাতিÑ এ সকলে দিলা জলাঞ্জলি’Ñ এ উক্তিটি উদ্দীপকের ক্ষেত্রেও তাৎপর্য বহন করে।
স্বজাতি, জাতির প্রতি মানুষের ভালোবাসা চিরন্তন এবং এ ভালোবাসা প্রদর্শন বাঞ্ছনীয়। কিন্তু অনেক সময় মানুষ ধন ও যশের লোভে অথবা আদর্শের কারণে স্বজাতির প্রতি দ্বেষভাব প্রকাশ করে, যা সত্যিই গর্হিত কাজ। ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় বিভীষণের আচরণ এ কারণেই গর্হিত।
উদ্দীপকে দেখা যায়, ফিরোজ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের পক্ষ অবলম্বন করে স্বজাতির সাথে বেইমানি প্রদর্শন করে। এমনকি আপন মুক্তিযোদ্ধা ভাইকে শত্র“র হাতে তুলে দেয়। স্বজাতির বিরুদ্ধাচরণ করার এ প্রবণতা ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার বিভীষণের চরিত্রেও পাওয়া যায়, যা পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রশ্নোক্ত উক্তিটি মেঘনাদের। এ উক্তিতে বিভীষণের কৃতকর্মের প্রতি প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে।
যে আদর্শের কারণে বিভীষণ শত্র“র সাথে মিত্রতা করেছেন, সে আদর্শ বা নীতিধর্মের প্রতিও প্রশ্ন উপস্থাপন করা হয়েছে এখানে। মূলত বিভীষণ তাঁর ভাই রাবণের অন্যায় কাজ মেনে নিতে পারেননি বলেই তাঁর আদর্শগত বিশ্বাসের কারণে এ বিরুদ্ধাচরণে লিপ্ত হন। কিন্তু উদ্দীপকের ফিরোজ চৌধুরী শুধুই মানসিক নীচতার কারণে স্বদেশের সাথে বৈরিতা করেছে এবং আপন ভাইকে শত্র“র হাতে তুলে দিয়েছে।
আদর্শগত পার্থক্য থাকা সত্তে¡ও উদ্দীপকের ফিরোজ চৌধুরী আর কবিতার বিভীষণ স্বজাতির প্রতি সমান আচরণ প্রদর্শন করেছে। বিভীষণের এ আচরণ গর্হিত হলে ফিরোজ চৌধুরীর আচরণকে বিবেচনা করতে হবে নিকৃষ্টতম হিসেবে। এখানেই উক্তিটির তাৎপর্য নিহিত।
১০ || নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বিখ্যাত গ্রিক কবি হোমারের ‘ইলিয়ড’ মহাকাব্যের চরিত্র হেক্টর ট্রয় রাজ্যের যুবরাজ। ট্রয় যুদ্ধে তিনি অসামান্য বীরত্বের পরিচয় দেন। স্বাজাত্যবোধ, সত্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম তাঁর চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ট্রয় নগরকে রক্ষার জন্য তিনি প্রাণ বিসর্জন দিতেও পিছপা হননি।
ক. অরিন্দম বলা হয়েছে কাকে?
খ. মেঘনাদ কীভাবে লঙ্কার কলঙ্ক মোচন করতে চেয়েছেন?
গ. ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার মেঘনাদ ও উদ্দীপকের সাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. ‘স্বাজাত্যবোধ ও দেশপ্রেম প্রকৃত বীরের স্বভাবধর্ম’Ñউদ্দীপক ও ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অরিন্দম বলা হয়েছে মেঘনাদকে।
খ. মেঘনাদ ল²ণকে হত্যা করে লঙ্কার কলঙ্ক মোচন করতে চেয়েছেন।
লঙ্কা রাক্ষসদের রাজ্য। সেখানে কোনো গুপ্তচর বা শত্র“ প্রবেশের সাহস পায় না কিংবা প্রবেশের ক্ষমতাও রাখে না। অথচ ল²ণ সবার চোখে ধুলো দিয়ে লঙ্কায় প্রবেশ করে রাজ্যের কলঙ্ক সৃষ্টি করেছেন। তাই ল²ণকে হত্যা করে মেঘনাদ লঙ্কার কলঙ্ক মোচন করতে চেয়েছেন।
গ. ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার মেঘনাদ ও উদ্দীপকের হেক্টরের চরিত্র, বীরত্ব ও স্বদেশপ্রেমের দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ।
মাতৃভূমির প্রতি মানুষের ভালোবাসা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আর যখন এ ভালোবাসা কোনো বীরের চরিত্রে ফুটে ওঠে, তখন সেটা আলঙ্কারিক হয়ে পড়ে। বস্তুত, কালে কালে সেরা বীরেরা স্বদেশের জন্যই লড়াই করে প্রাণ দিয়েছেন।
উদ্দীপকে হেক্টরের বীরত্বের কথা পাওয়া যায়। ট্রয় নগরের এ বীর গ্রিকদের সাথে যুদ্ধের সময় স্বদেশপ্রেমের যে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন তা ইতিহাসে বিরল। স্বদেশপ্রেমের এই নিষ্ঠা ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার মেঘনাদের চরিত্রেও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মূলত বিভীষণের সাথে কথোপকথনের সময় তার স্বদেশপ্রেমের গভীরতা প্রকাশ পায়, যা উদ্দীপকের হেক্টর চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্য রচনা করেছে।
ঘ. ‘স্বজাত্যবোধ ও দেশপ্রেম প্রকৃত বীরের স্বভাবধর্ম’Ñ উদ্দীপক ও ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার আলোকে উক্তিটি যথাযথ।
স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা মানুষের উচ্চতর বৃত্তি। স্বদেশের আলয়ে মানুষ আপনার অস্তিত্বকে বিকশিত করে, ভালোবাসার বিস্তার ঘটায়, স্বপ্নের সাধন করে। ফলে, স্বদেশের প্রতি যার ভালোবাসা নেই সে পশুর চেয়েও অধম বিবেচিত হয়। যুগে যুগে বীরেরা দেশপ্রেমের টানেই বীরধর্মকে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।
উদ্দীপকে হেক্টরের স্বদেশপ্রেমের কথা পাওয়া যায়। ট্রয় নগরের মহাবীর হেক্টরের স্বদেশপ্রেমের কথা পাওয়া যায়। হেক্টর স্বদেশ রক্ষায় জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায়ও স্বদেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে মেঘনাদের পরিচয় পাওয়া যায়।
স্বদেশের মান রক্ষায় মেঘনাদ প্রাণ বাজি রাখতেও সর্বদা প্রস্তুত। ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার মেঘনাদ এবং উদ্দীপকের হেক্টর দু’জনেই বীর। তাঁরা বীরত্বের যে নির্যাস, তা স্বদেশের সার্বভৌমত্ব ও সম্মান রক্ষায় ব্যয় করেছেন। আপনার ক্ষুদ্র কার্যের প্রতি লালায়িত হননি।
হেক্টর ও মেঘনাদ এ দুই বীরের মতো কালে কালে যত বীর ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন প্রত্যেকেই স্বদেশের জন্য জীবন বাজি রেখেছেন এবং প্রয়োজনে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, যা প্রশ্নোক্ত উক্তির সত্যতা নিশ্চিত করে।
১১ || নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা মিরজাফরকে বিশ্বাস করে সেনাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু, মিরজাফর নিজের স্বার্থে জাতির ও দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেন। তিনি ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলান। বলা যায়, তার বিশ্বাসঘাতকতায় বাংলার স্বাধীনতা অস্তমিত হয়।
ক. রাঘব দাস কে?
খ. ‘হে পিতৃব্য, তব বাক্যে ইচ্ছি মরিবারে! রাঘবের দাস তুমি’Ñউক্তিটিতে মেঘনাদ কী বুঝিয়েছেন?
গ. ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার বিভীষণের সঙ্গে উদ্দীপকের মিরজাফরের তুলনা কর।
ঘ. ‘বিভীষণ ধর্মের জন্য এবং মিরজাফর স্বার্থের জন্য স্বাজাত্যবোধকে বিসর্জন দিয়েছেন।’ তা উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
১১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রাঘব দাস হলেন বিভীষণ।
খ. ‘হে পিতৃব্য, তব বাক্যে ইচ্ছি মরিবারে! রাঘবের দাস তুমি’ Ñউক্তিটি দ্বারা বোঝানো হয়েছেÑবিভীষণও রামচন্দ্রের আজ্ঞাবহ হয়েছে তা শুনে মেঘনাদ ক্ষোভে, দুঃখে, যন্ত্রণায় তাঁর চাচাকে বলে যে, এ কথা শুনে তার মরে যেতে ইচ্ছে হয়।
মেঘনাদ যুদ্ধে যাবার আগে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে পূজা দিতে প্রবেশ করে। হঠাৎ সেখানে ল²ণকে দেখে সে অবাক হয়, কিন্তু সাথে বিভীষণকে দেখে ক্ষোভে, দুঃখে, অপমানে কাকাকে যথেষ্ট ভর্ৎসনা করে। তাদের কুলগৌরব সম্পর্কে সচেতন করার জন্য নানা উপমা দেয়। রাক্ষসকুলে জন্ম নিয়ে বিভীষণ কীভাবে রাঘবের পক্ষ নেয় তা শুনে মেঘনাদের মরে যেতে ইচ্ছা করে।
গ. উদ্দীপকে মিরজাফর যেমন বিশ্বাসঘাতক, ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় বিভীষণও তেমনি বিশ্বাসঘাতক।
দেশ ও স্বজাতির স্বার্থে যারা নিজেকে উৎসর্গ করতে পারে না তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। নিজের স্বার্থের জন্য তারা বড় কোনো ক্ষতি করতেও পিছপা হয় না। উদ্দীপকে প্রকাশিত চরিত্র মিরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার চিত্রটিই ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় বিভীষণের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে।
উদ্দীপকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা মিরজাফরকে বিশ্বাস করে সেনাপতির দায়িত্ব দেন। কিন্তু মিরজাফর ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে যুদ্ধে নবাবের পরাজয় ঘটিয়ে বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় দেয়।
মূলত উদ্দীপকের মিরজাফর চরিত্র এবং ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার বিভীষণের চরিত্রের মজ্জাগত কোনো পার্থক্য নেই। বিশ্বাসঘাতকতার জন্য বিভীষণ ও মিরজাফর দুজনই ইতিহাসে নিকৃষ্ট চরিত্রের উদাহরণ হিসেবে পরিচিত।
ঘ. ‘বিভীষণ ধর্মের জন্য এবং মিরজাফর স্বার্থের জন্য স্বজাত্যবোধকে বিসর্জন দিয়েছে’Ñ উক্তিটি উদ্দীপকের বক্তব্য ও ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতার আলোকে যথার্থ।
উদ্দীপকে মিরজাফর এবং আলোচ্য রচনায় বিভীষণ দুজনেই শত্র“দের পক্ষ নিয়েছে। উভয়ের মজ্জাগত বিষয় ছিল বিশ্বাসঘাতকতা। এ স্বার্থকে চরিতার্থ করতে গিয়ে আজ দুজনেই ইতিহাসে কলঙ্কিত অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে।
পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা মিরজাফরকে প্রধান সেনাপতির দায়িত্ব দিয়ে যুদ্ধে প্রেরণ করেন। কিন্তু মিরজাফর নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখে ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে যুদ্ধে নবাবকে পরাজিত করে। ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় বিভীষণকেও একই রূপে দেখা যায়।
বিভীষণ রাম-রাবণের যুদ্ধে ধর্মীয় আদর্শের কথা বলে রামের দাসত্ব স্বীকার করে নেয় এবং স্বজাতির শত্র“কে সহযোগিতা করেন। বিভীষণ শত্র“দের সাথে হাত মিলিয়ে দেশদ্রোহিতা ও জাতিদ্রোহিতার পরিচয় দেন।
উদ্দীপক ও আলোচ্য রচনার বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, মিরজাফরের নবাবকে ঠকানোর একমাত্র কারণ বাংলার মসনদ দখল করা। অন্যদিকে বিভীষণ রামের ধর্মীয় আদর্শে আকৃষ্ট হয়ে সে মেঘনাদের শত্র“পক্ষ রাম-ল²ণের সাথে হাত মেলান।
তাই বলা যায়, মিরজাফর স্বার্থের জন্য আর বিভীষণ ধর্মের জন্য স্বজাত্যবোধকে বিসর্জন দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করতেও দ্বিধাবোধ করেনি।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
রিভিশন অংশ
আলোচ্য অংশে জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করার জন্য বাড়ির কাজ, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা, জ্ঞানমূলক এবং অনুধাবনমূলক আরও কিছু প্রশ্নোত্তর উলেখ করা হয়েছে। এ অংশটি অনুশীলনের মাধ্যমে পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রস্তুতি ও জবারংরড়হ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
বাড়ির কাজ
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় স্বজাত্যবোধ ও দেশপ্রেমের যে পরিচয় পাওয়া যায় তার স্বরূপ ব্যাখ্যা কর।
মেঘনাদ ও বিভীষণের বিতর্কে নৈতিকতা ও ধর্মবোধের যে স্বরূপ প্রকাশিত হয়েছে তা যুক্তিসহ মূল্যায়ন কর।
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতা অবলম্বনে মেঘনাদ চরিত্রটি বিশ্লেষণ কর।
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতায় বিভীষণ চরিত্রে প্রকাশিত বিশ্বাসঘাতকতার স্বরূপ বিশ্লেষণ কর।
বীরের ধর্ম বিচারে ল²ণ ও মেঘনাদ চরিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কবিতাংশ অবলম্বনে পৌরাণিক কাহিনি ও এর নবনির্মাণ সম্পর্কে আলোচনা কর।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা
কর্তব্যপরায়ণ এবং বিশ্বাসঘাতকতা না করার মানসিকতা।
মানবতাবোধ ও পৌরাণিক কাহিনির পরিচয়।
পৌরাণিক কাহিনিতে প্রকৃতির স্থান এবং প্রকৃত সংলগ্ন মানুষ।
বিশ্বাসঘাতকতা এবং বিশ্বাসীর পরিণাম।
ঐতিহাসিক পানিপথের যুদ্ধের বিশেষত্ব ও পৌরাণিক চরিত্র।
যুদ্ধের নীতিকে অমান্য করে অন্যায়ভাবে হত্যা।
স্বদেশ প্রীতি ও স্বদেশের শত্র“দের ষড়যন্ত্র।
আত্মবিশ্বাস ও মানবকল্যাণ আত্মনিয়োগে স্বদেশের উন্নতি।
অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং মানব কল্যাণে আত্মনিয়োগ।
হিংসাত্মক মনোবৃত্তি চরিতার্থে অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা।
দেশপ্রেম ও প্রকৃতিচেতনা।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেম।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন ও স্বদেশের প্রকৃতিতে মুগ্ধতা।
বাস্তব জ্ঞানের অভাব এবং যুদ্ধে ভুল সিদ্ধান্তের পরিণতি।
স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা ও গভীর অনুরাগ এবং ঐক্যবদ্ধ শক্তির জয়।
সমাজ-ভাবনা এবং টিকে থাকার লড়াইয়ে নিজের সম্পৃক্ততা।
দেশপ্রেমিকের গুরুত্ব এবং বিশ্বাসঘাতকতার পরিণতি।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।