SSC সাধারণ বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর PDF : ২৫ থেকে ৩১- সাধারণ বিজ্ঞান হতে যেকোনো ধরনের সৃজনশীল প্রশ্ন-উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনার খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য সাধারণ বিজ্ঞান হতে গুরুপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এসএসসি- SSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
SSC সাধারণ বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর PDF : ২৫ থেকে ৩১
প্রশ্ন -২৬ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ঢ একটি যৌগিক পদার্থ। এটি বর্ণহীন, গন্ধহীন, স্বাদহীন এবং উভধর্মী অক্সাইড। প্রকৃতিতে এটি তিনটি অবস্থায় থাকতে পারে। এর ঢ়ঐ মান ৭ এবং স্ফুটনাংক ১০০ক্কঈ। [অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া]
ক. বৈশ্বিক উষ্ণতা কী?
খ. উবধফ জরাবৎ বা মরা নদী বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের পদার্থটির ঢ়ঐ এর মান ২ একক কম বা বেশি হলে জলজ প্রাণী বেঁচে থাকবে কিনা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের পদার্থটির বিশুদ্ধতা ও গাঠনিক কৌশল বিশ্লেষণ কর।
🢖🢔 ২৬নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. বিশ্বের বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বলা হয়।
খ. কোনো নদীর পানি যখন এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা দূষিত হয়ে পড়ে যা পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে। এর ফলে পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন কমে যায় এবং একপর্যায়ে শূন্যে নেমে আসে। সেক্ষেত্রে পানিতে বসবাসকারী মাছসহ সকল প্রাণী অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়। একপর্যায়ে নদী প্রাণীশূন্য হয়ে পড়ে। তখন ঐ নদীকে উবধফ জরাবৎ বা মরা নদী বলা হয়।
গ. উদ্দীপকে ঢ যৌগটি পানি। কারণ উল্লিখিত ধর্মগুলো বিশুদ্ধ পানির। এটির ঢ়ঐ এর মান ২ একক কম বা বেশি হলে ঢ়ঐ এর মান হবে ৫ ও ৯। গবেষণায় দেখা গেছে পানির ঢ়ঐ যদি ৬-৮ এর মধ্যে থাকে; তাহলে তা জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য কোনো অসুবিধা সৃষ্টি করে না।
তবে ঢ়ঐ এর মান যদি খুব কমে যায় বা বেড়ে যায় তাহলে ঐ পানিতে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হয় এবং মাছের ডিম ও পোনা মাছ বাঁচতে পারে না। সুতরাং উদ্দীপকের পানির ঢ়ঐ এর মান ৫ ও ৯ হলে, ঐ পানিতে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর বংশবৃদ্ধি ব্যাহত হবে।
এছাড়া ঢ়ঐ এর মান ৫ হলে জলজ প্রাণীদের দেহ থেকে ক্যালসিয়ামসহ অন্যান্য খনিজ পদার্থ বাইরে চলে আসবে, ফলে জলজ প্রাণীগুলো রোগাক্রান্ত হয়ে পড়বে এবং বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
ঘ. আমরা জানি, বিশুদ্ধ পানি বর্ণহীন, গন্ধহীন, স্বাদহীন এবং উভধর্মী অক্সাইড। প্রকৃতিতে পানি কঠিন, তরল ও বায়বীয় অবস্থায় থাকে। বিশুদ্ধ পানি পুরোপুরি নিরপেক্ষ অর্থাৎ ঢ়ঐ মান ৭। বিশুদ্ধ পানির স্ফুটনাংক ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই ধর্মগুলো উদ্দীপকের ‘ঢ’ যৌগের পদার্থটি প্রকাশ করছে। সুতরাং ‘ঢ’ পদার্থটি বিশুদ্ধ পানি।
পানি দুইটি হাইড্রোজেন পরমাণু ও একটি অক্সিজেন পরমাণু দিয়ে গঠিত। পানির রাসায়নিক সংকেত- ঐ২ঙ। পানির গাঠনিক সংকেত হচ্ছে :
প্রশ্ন -২৭ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
অ একটি তরল পদার্থ যা মানবদেহের শতকরা ৬০-৭০ ভাগ জুড়ে থাকে। জলজ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার্থেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে।
[হবিগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হবিগঞ্জ]
ক. বিøচিং পাউডারের সংকেত কী?
খ. রামসার কনভেনশন বলতে কী বোঝ? ২
গ. অ কীভাবে জলজ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে বর্ণনা দাও।
ঘ. অ এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
🢖🢔 ২৭নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. বিøচিং পাউডারের সংকেত হল [Ca(OCl)Cl।
খ. ১৯৭১ সালের ২রা ফেব্রæয়ারিতে ইরানের রামসারে ইউনেস্কোর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নেওয়া জলাভ‚মি সংক্রান্ত সিদ্ধান্তসমূহ হলো রামসার কনভেনশন।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত অ দ্বারা তরল পদার্থ পানিকে বোঝানো হয়েছে। জলজ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে পানি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। কচুরি পানা, ক্ষুদিপনা, সিংগারা, টোপাপানা, শাপলা ইত্যাদি পানি ছাড়া জš§াতে পারে না। এসব জলজ উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে অক্সিজেন উৎপন্ন করে পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখে।
পানিতে দ্রবীভ‚ত এ অক্সিজেন গ্রহণ করেই পানিতে বসবাসকারী প্রাণীরা শ্বসন কার্য পরিচালনা করে এবং জীবনধারণ করে। অর্থাৎ পানি উদ্ভিদ ও প্রাণীদের মধ্যে একটি যোগসূত্র তৈরি করে। এর ফলে জলজ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে। অর্থাৎ পানি জলজ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহযোগিতা করে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অ অর্থাৎ পানি পৃথিবীর অস্তিত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। মানবদেহের শতকরা ৬৫-৭৫ ভাগই পানি। মাছ, মাংস, শাকসবজি প্রভৃতির শতকরা ৬০-৯০ ভাগ পানি থাকে। ভ‚-পৃষ্ঠের শতকরা ৭৫ ভাগই পানি। পানির ব্যবহার ছাড়া আমরা একদিনও অতিবাহিত করতে পারি না। নিচে এর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার তুলে ধরা হলোÑ
১. দ্রাবক হিসেবে : পানিকে সর্বোৎকৃষ্ট দ্রাবক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অধিকাংশ অজৈব যৌগ ও অনেক জৈব যৌগকে পানি দ্রবীভ‚ত করতে পারে। এজন্য পানিকে সার্বজনীন দ্রাবকও বলা হয়।
২. পানীয়রূপে : পানি পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট পানীয়। পানি পান না করে এক মুহ‚র্ত বেঁচে থাকা আমাদের জন্য কষ্টকর। তাই পানির অপর নাম জীবন।
৩. শিল্প কারখানায় বিকারকরূপ : শিল্প কারখানায় বিকারকরূপে পানির গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার রয়েছে। পানি উভধর্মী পদার্থ হিসেবে কাজ করে অর্থাৎ কখনো এসিড কখনো ক্ষার হিসেবে কাজ করে।
৪. বিভিন্ন পদার্থের বাহকরূপে : পানি বিভিন্ন পদার্থের বিশেষ করে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের বাহকরূপে কাজ করে। পানিতে থাকা খনিজ পদার্থ, জৈব পদার্থসমূহ বিভিন্ন পুষ্টি উপকরণের বাহক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
৫. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে : পানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। উদ্ভিদ পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের উপস্থিতিতে শর্করা ও অক্সিজেন উৎপন্ন করে। এ অক্সিজেন প্রাণী শ্বসনকার্যে ব্যবহার করে। এতে উৎপন্ন কার্বন ডাইঅক্সাইড আবার উদ্ভিদ ব্যবহার করে। এভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণীর মধ্যে একটি যোগসূত্র স্থাপিত হয়। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পায়।
এভাবে পানি আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।
প্রশ্ন -২৮ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর নদীর পানি সা¤প্রতিককালে অনেক ঘোলাটে হয়ে গেছে। দেশের নদী বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে খুবই চিন্তিত।
[সরকারি এস.সি. বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ]
ক. পরিস্রাবণ কী?
খ. লবণাক্ত পানি জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ কেন?
গ. নদীটিতে উদ্ভিদের জীবন কেন সংকটের মুখে পড়তে পারে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. নদীটিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের মাত্রা কিরূপ হওয়া উচিত? বিশ্লেষণ কর।
🢖🢔 ২৮নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. পরিস্রাবণ হলো তরল ও কঠিন পদার্থের মিশ্রণ থেকে কঠিন পদার্থকে আলাদা করার প্রক্রিয়া।
খ. পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে গেলে পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন কমে যাবে। ফলে জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে। জলজ উদ্ভিদের একটা বড় অংশ লবণাক্ত পানিতে জš§াতে পারে না, আবার বেড়ে উঠতেও পারে না। ফলে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ে।
গ. নদীতে পানি ঘোলাটে হওয়ায় সেখানকার উদ্ভিদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেখানকার উদ্ভিদ পর্যাপ্ত সূর্যালোকের অভাবে খাদ্য তৈরি করতে পারবে না।
আমরা জানি, উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেদের খাদ্য নিজেরাই তৈরি করে। খাদ্য উৎপাদনের জন্য যে সকল উপাদান অত্যাবশ্যকীয় সেগুলো হলো কার্বন ডাইঅক্সাইড ও সূর্যালোক। কিন্তু নদীর পানি ঘোলাটে হলে সূর্যালোক পানির স্তর ভেদ করে নিচে থাকা উদ্ভিদ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না।
ফলে নদীর তলদেশে বসবাসকারী উদ্ভিদসমূহ সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে গøুকোজ জাতীয় খাদ্য উৎপন্ন করতে পারে না। খাদ্যের অভাবে উদ্ভিদদেহের সমস্ত বিপাকীয় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে খাদ্যের অভাবে উদ্ভিদটি এক সময় মারাও যেতে পারে।
অতএব, ঘোলা পানিতে খাদ্য তৈরিতে সমস্যা হওয়ায় নদীতে উদ্ভিদের জীবন সংকটের মুখে পড়তে পারে।
ঘ. নদীতে জলজ পরিবেশ তথা জীববৈচিত্র্য টিকে থাকার জন্য প্রতি লিটার পানিতে ন্যূনতম ৫ মিলিগ্রাম অক্সিজেন থাকা প্রয়োজন।
কারণ, স্থলে বসবাসকারী জীবদের ন্যায় জলে বসবাসকারী জীবদের তথা প্রাণীদের শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রয়োজন হয়। তারা এজন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন থেকে। কোনো কারণে এই অক্সিজেন যদি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে কমে যায়, তাহলে জলজ প্রাণীদের অসুবিধা হয় এবং যদি পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন না থাকে, তাহলে মাছসহ অন্যান্য প্রাণী বাঁচতে পারে না। আর মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী নদীতে না থাকলে পুরো ইকোসিস্টেম বিনষ্ট হয়ে যায়।
কারণ খাদ্যশৃঙ্খলের ক্রমানুসারে এক স্তরের জীব অন্য স্তরের জীবের ওপর নির্ভর করে। যেমনÑ পশুর নদীর পানি ঘোলাটে হওয়ার কারণে নদীটির পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের মান কমে গিয়ে, সেখানকার জলজ পরিবেশে এমন ধরনের অস্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে যাতে জীববৈচিত্র্যে বিপর্যয় নেমে আসবে।
তাই নদীর পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের মাত্রা প্রতি লিটারে ন্যূনতম ৫ মিলিগ্রাম হওয়া উচিত।
প্রশ্ন -২৯ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
পুরান ঢাকায় শুভদের বসবাস। প্রায়ই গ্রীষ্মকালে পাইপ লাইন সরবরাহকৃত পানির প্রচণ্ড অভাব দেখা দেয়। এছাড়াও পানি প্রায়ই ভাসমান ময়লা, দুর্গন্ধযুক্ত, পানের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। অপরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা, জনগণের অসচেতনতার কারণে ঐ এলাকার নদীর পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। [আগ্রাবাদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম]
ক. বৈশ্বিক উষ্ণতা কী?
খ. বিশুদ্ধ পানির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
গ. উদ্দীপকে ব্যবহৃত দূষিত পানি বিশোধনে কী কী সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়Ñ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. শুভদের এলাকার পানির অভাব মেটানো ও নদীর পানিদূষণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় বিকল্প ব্যবস্থা সম্পর্কে মতামত দাও।
🢖🢔 ২৯নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. বৈশ্বিক উষ্ণতা হলো বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া।
খ. বিশুদ্ধ পানির দুটি বৈশিষ্ট্য হলোÑ
১. বিশুদ্ধ পানি বর্ণহীন ও স্বাদহীন।
২. বিশুদ্ধ পানির ঢ়ঐ মান ৭।
গ. উদ্দীপকে ব্যবহৃত দূষিত পানি বিশোধনে সহজ পদ্ধতি ও পরিস্রাবণ, ক্লোরিনেশন ও স্ফুটন পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়।
পরিস্রাবণ : পরিস্রাবণে বালির স্তরের মধ্য দিয়ে পানিকে প্রবাহিত করা হয়, এতে করে পানিতে অদ্রবণীয় ময়লার কণাগুলো বালির স্তরে আটকে যায়। বালির স্তর ছাড়াও খুব সূ²ভাবে তৈরি কাপড় ব্যবহার করে পরিস্রাবণ করা যায়। ইদানীং বাসা-বাড়িতে ফিল্টার ব্যবহার করে পানি পরিস্রাবণ করা হয়।
ক্লোরিনেশন : নানারকম জীবাণুনাশক পানি বিশুদ্ধকরণে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো ক্লোরিন গ্যাস (ঈষ২)। এছাড়া বিøচিং পাউডার [ঈধ(ঙঈষ)ঈষ] এবং আরও কিছু পদার্থ যার মধ্যে ক্লোরিন আছে এবং যা জীবাণু ধ্বংস করতে পারে তা ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড (ঘধঙঈষ) ট্যাবলেট ব্যবহার করে পানি বিশুদ্ধকরণ করা যায়। এতে বিদ্যমান ক্লোরিন পানিতে থাকা রোগজীবাণুকে ধ্বংস করে।
স্ফুটন : পানিকে খুব ভালোভাবে ফুটালে এতে উপস্থিত জীবাণু মরে যায়। স্ফুটন শুরু হওয়ার পর ১৫-২০ মিনিট ধরে স্ফুটন করলে পানি জীবাণুমুক্ত হয়। বাসা-বাড়িতে খাওয়ার পানির জন্য এটি একটি সহজ ও সাশ্রয়ী প্রক্রিয়া।
ঘ. শুভদের এলাকায় পানির অভাব মেটানো ও নদীর পানিদূষণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় বিকল্প ব্যবস্থা হলো পানিদূষণ প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি করা এবং সুনাগরিক হিসেবে তা মেনে চলা। পানিদূষণ প্রতিরোধে যেসব কৌশল অবলম্বন করতে হবেÑ
১. জলাভ‚মি, বনভ‚মি এগুলো রক্ষা করার ব্যবস্থা নিলে পানিদূষণ রোধের সহায়ক হবে। আবার বাসা বাড়িতে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে ব্যবহার করা গেলে পুরো পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় ইতিবাচক ভ‚মিকা রাখবে।
২. পানিদূষণকারী ক্ষতিকর বজ্যসমূহ যত্রতত্র না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেললে দূষণ অনেক ক্ষেত্রে কমে যাবে। এক্ষেত্রে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নেই।
৩. শিল্প কারখানা সৃষ্ট বর্জ্য পানি পরিশোধন করে নদীতে ফেলতে হবে।
৪. কৃষি জমি থেকে মাটির ক্ষয়জনিত কারণে দূষণ প্রতিরোধ করতে হলে মাটিতে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে।
সর্বোপরি পানিদূষণ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
প্রশ্ন -৩০ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আমাদের দেশে দক্ষিণা লে সমুদ্র উপক‚লের মিঠা পানির উৎস দিন দিন কৃষিকাজে ও দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
[আমেনা বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ; দিনাজপুর]
ক. বিশুদ্ধ পানির ঢ়ঐ কত?
খ. পানি ঘোলা হলে জলজ উদ্ভিদের কী সমস্যা হতে পারে- ব্যাখ্যা কর।
গ. জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর দৈনন্দিন জীবনে উক্ত পানির উপযোগিতা ও প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যার কারণ ও এর জন্য দায়ী উপাদান সম্পর্কে মতামত দাও।
PDF File সহ -সাধারণ বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : SSC
পানি: জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর: সাধারণ বিজ্ঞান-PDF
🢖🢔 ৩০নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. বিশুদ্ধ পানির ঢ়ঐ এর মান ৭।
খ. পানি ঘোলা হওয়ার মূল কারণ হলো পানিতে অদ্রবণীয় পদার্থ যেমনÑ মাটি, বালি, তেল, গ্রীজ ইত্যাদির উপস্থিতি। এর ফলে জলজ উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ ব্যাহত হয়। ফলে উদ্ভিদ ঠিকমত খাদ্য তৈরি করতে পারে না।
গ. আমাদের দেশে দক্ষিণা লে সমুদ্র উপক‚লের মিঠা পানির উৎসে দিন দিন লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ঐ পানি ব্যবহারের উপযোগিতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
মিঠা পানির উৎস লবণাক্ত হলে তা আর পান করার উপযোগী থাকে না। এছাড়া শিল্প কারখানায় এ পানি ব্যবহৃত হলে যন্ত্রপাতির ক্ষয় সাধন ও নষ্ট হতে পারে।
অন্যদিকে মিঠা পানির উৎসে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেলে মিঠা পানিতে বসবাসকারী জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীসমূহ মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। কারণ লবণাক্ততা বাড়লে পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের মান অনেক কমে যায় এবং অভিস্রবণ চাপের বৃদ্ধি ঘটে।
এতে করে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর শ্বসন ক্রিয়া ব্যাহত হয় ও শারীরবৃত্তীয় কাজ বিঘিœত হয় এবং জলজ উদ্ভিদগুলো হুমকির মুখে পড়ে। জলজ উদ্ভিদের একটি বড় অংশ লবণাক্ত পানিতে জš§ালেও বেড়ে উঠতে পারে না। যে কারণে পানিতে লবণাক্ততা বাড়লে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যাটি হলো মিঠা পানিতে লবণাক্ততা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়া।
মিঠা পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হলো বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং এজন্য মানুষের কর্মকাণ্ডকেও অনেকাংশে দায়ী করা যায়। নিচে এগুলো সম্পর্কে মতামত দেয়া হলো :
বৈশ্বিক উষ্ণতা : বৈশ্বিক উষ্ণতা হলো বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াতে মেরু অ লসহ অন্যান্য অ লের বরফ এবং হিমালয়ের বরফ গলনের হার দ্রæত বৃদ্ধি পায় এবং এ বরফগলা পানি সমুদ্রে গিয়ে পড়ে এবং সমুদ্রের লোনা পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। এ পানি নদীগুলো দিয়ে ভ‚মির দিকে এগিয়ে আসে এবং মিঠা পানির উৎস যেমন, পুকুর, খাল, নদী ইত্যাদির পানিকে লবণাক্ত করে।
মানুষের কর্মকাণ্ড : দক্ষিণ-পশ্চিম অ লের অনেক জেলায় চিংড়ি চাষের জন্য নালা কেটে লবণাক্ত পানি মূল ভ‚খণ্ডে আনা হয়। যে কারণে ঐ সকল এলাকার ভ‚গর্ভস্থ পানিসহ মিঠা পানির অন্যান্য উৎসগুলো লবণাক্ত হয়।
সুতরাং মানুষের অযাচিত হস্তক্ষেপে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাচ্ছে এবং প্রত্যক্ষভাবে মানুষ লবণাক্ত পানি দিয়ে বিভিন্ন মিঠা পানির উৎসকে লবণাক্ত করছে। তাই এই লবণাক্ততার জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষই দায়ী।
প্রশ্ন -৩১ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
হাজেরা বেগমের ছোট একটি ফুলের বাগান আছে। সে নিয়মিত ফুল গাছে পানি দেন কারণ সে জানে প্রতিটি জীবের বেঁচে থাকার জন্য পানি অপরিহার্য। [মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক. মানবদেহের শতকরা কত ভাগ পানি?
খ. জলজ প্রাণীদের পানির দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন প্রয়োজন কেন?
গ. জীবের বেঁচে থাকার জন্য উদ্দীপকে উল্লিখিত অপরিহার্য উপাদানটির ধর্ম ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মাটিতে বিদ্যমান উক্ত উপাদানটির ভ‚মিকা বিশ্লেষণ কর।
🢖🢔 ৩১নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. মানবদেহের শতকরা ৬৫-৭৫ ভাগ পানি।
খ. প্রতিটা জীবের জন্য শক্তির প্রয়োজন। জীব সে শক্তি শ্বসনের মাধ্যমে পায়। শ্বসনের জন্য প্রয়োজন অক্সিজেন। জলজ প্রাণীদের বেঁচে থাকার জন্য শ্বসন প্রক্রিয়া ঘটে এবং তারা পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের দ্বারা শ্বসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। তাই জলজ প্রাণী ও জলজ উদ্ভিদের বেঁচে থাকার জন্য পানির দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের প্রয়োজন।
গ. উদ্দীপকে যে উপাদানটির কথা বলা হয়েছে তা হলো পানি।
পানির অসাধারণ কিছু ধর্ম রয়েছে যার জন্য পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব টিকে আছে। যেমনÑ বিশুদ্ধ পানি স্বাদহীন, বর্ণহীন ও গন্ধহীন হয়। বিশুদ্ধ পানি তড়িৎ পরিবহন করে না, তবে এতে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ (যেমন : লবণ, এসিড ইত্যাদি) দ্রবীভ‚ত থাকলে তড়িৎ পরিবহন করে।
বিশুদ্ধ পানি পুরোপুরি নিরপেক্ষ অর্থাৎ এর ঢ়ঐ ৭। পানি একটি উভধর্মী যৌগ হিসেবে কাজ করে অর্থাৎ এসিডের উপস্থিতিতে এটি ক্ষার এবং ক্ষারের উপস্থিতিতে এটি এসিড হিসেবে কাজ করে।
পানির একটি বিশেষ ধর্ম হলো এটি অনেক ধরনের জৈব যৌগ ও বেশির ভাগ অজৈব যৌগকে দ্রবীভ‚ত করতে পারে। এজন্য এটি একটি সার্বজনীন দ্রাবক। পানি ০ক্ক সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বরফ হয় এবং এর গলনাংক ০ক্ক সেলসিয়াস। অন্যদিকে এর স্ফুটনাংক ১০০ক্ক সেলসিয়াস।
ঘ. মাটিতে বিদ্যমান উক্ত উপাদানটি হলো পানি। পানি অত্যন্ত মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। পানি সকল উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য অপরিহার্য। জলজ উদ্ভিদ পানির অনুপস্থিতিতে বাঁচতে পারে না। পানি না থাকলে জলজ উদ্ভিদ জš§ নিত না এবং নিলেও বাঁচতে পারতো না।
স্থলজ উদ্ভিদ পানি মূলের সাহায্যে গ্রহণ করে এবং তাদের সকল জৈবিক ক্রিয়া সম্পন্ন করে। জলজ প্রাণী পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের মাধ্যমে তাদের শ্বাসকার্য চালায় এবং বেঁচে থাকে। স্থলজ প্রাণীর দেহ সচল রাখতে পানি অপরিহার্য। পানি ছাড়া কোনো প্রাণী বাঁচতে পারে না কারণ কোষের প্রধান উপাদান প্রোটোপ্লাজম যার ৬০-৭০ ভাগ পানি। এই পানি না থাকলে প্রাণী ও উদ্ভিদ কিছুই পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারতো না।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।