SSC – জীবনের জন্য পানি: বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর(PDF) ৫-১০: সাধারণ বিজ্ঞান হতে যেকোনো ধরনের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন-উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয়া ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেন আপনার খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য সাধারণ বিজ্ঞান হতে গুরুপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এসএসসি- SSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
SSC – জীবনের জন্য পানি: বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর(PDF) ৫-১০
প্রশ্ন -৫ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ফাহাদের বাড়ির পাশে নদীর পাড়ে অনেক শিল্প কারখানা গড়ে ওঠায় নদীর পানির ঢ়ঐ এর মান পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। পানি খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফাহাদের মা আগে পানি ফুটাতেন কিন্তু ইদানীং সেটিও সম্ভব হচ্ছে না।
ক. ব্লিচিং পাউডারের সংকেত কী?
খ. সমুদ্রের পানি লোনা হয় কেন?
গ. ফাহাদের মা কীভাবে পানি খাওয়ার উপযোগী করে তুলতে পারেন ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে ঢ়ঐ পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্লেষণ কর।
PDF : সাধারণ বিজ্ঞান হতে গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন সমুহ : SSC
PDF File সহ -সাধারণ বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর : SSC
🢖🢔 ৫নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. ব্লিচিং পাউডারের সংকেত Ca(OCl)Cl।
খ. সমুদ্রের পানিতে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকায় তা লোনা হয়।
পানির সবচেয়ে বড় উৎস হলো সমুদ্র বা সাগর এবং মহাসাগর। পৃথিবীর মোট পানির শতকরা ৯০ ভাগেরই উৎস হলো সমুদ্র। কিন্তু সমুদ্রের পানিতে প্রচুর লবণ থাকায় তা পানযোগ্য নয়। এমনকি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা অন্য কাজেও ব্যবহারের উপযোগী নয়। একারণেই সমুদ্রের পানি লোনা।
গ. ফাহাদের মা পানিকে বিশুদ্ধ করার জন্য পানি ফুটাতেন। কিন্তু ইদানীং তাতেও কাজ হচ্ছে না। এখন তিনি একমাত্র পাতন পদ্ধতির দ্বারা পানি বিশুদ্ধ করতে পারেন। কারণ পানির ঢ়ঐ এর মান এর পরিবর্তন হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি হবে বর্ণহীন, স্বাদহীন এবং নিরপেক্ষ এই মানদণ্ড সম্পন্ন পানি পেতে হলে পাতনের বিকল্প নেই। নিচে পাতন পদ্ধতি ব্যাখ্যা করা হলো :
যখন খুব বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন হয়, তখন পাতন প্রক্রিয়ায় পানি বিশুদ্ধ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় একটি পাত্রে পানি নিয়ে তাপ দিয়ে বাষ্পে পরিণত করা হয়। পরে ঐ বাষ্পকে আবার ঘনীভ‚ত করে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় বিশুদ্ধকৃত পানিতে অন্য পদার্থ থাকার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।
অতএব, ফাহাদের মা উপরিউক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে পানিকে খাওয়ার উপযোগী করে তুলতে পারেন।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে দেখা যায় ঢ়ঐ পরিবর্তনের প্রভাবে পানি দূষিত এবং পানের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এছাড়াও ঢ়ঐ পরিবর্তনের আরও অনেক প্রভাব রয়েছে বা নিচে বিশ্লেষণ করা হলো।
ঢ়ঐ হলো এমন একটি রাশি, যার দ্বারা বোঝা যায় পানি বা জলীয় দ্রবণ এসিডিক, ক্ষারীয় না নিরপেক্ষ। নিরপেক্ষ হলে ঢ়ঐ হয় ৭, এসিডিক হলে ৭-এর কম, আর ক্ষারীয় হলে ৭-এর বেশি। এসিডের পরিমাণ যত বাড়ে ঢ়ঐএর মান তত কমে, অন্যদিকে ক্ষারের পরিমাণ যত বাড়ে, ঢ়ঐ এর মানও তত বাড়ে। নদনদী, খালবিল ইত্যাদি জন্য ঢ়ঐ এর মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত নদনদীর পানি ক্ষারীয় হয়।
গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে নদনদীর পানির ঢ়ঐ যদি ৬-৮ এর মধ্যে থাকে, তবে তা জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য কোনো অসুবিধার সৃষ্টি করে না। তবে ঢ়ঐ এর মান যদি খুব কমে যায় বা বেড়ে যায়, তাহলে ঐ পানিতে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
মাছের ডিম, পোনা মাছ এরা খুব কম বা বেশি ঢ়ঐ হলে বাঁচতে পারে না, পানিতে এসিডের পরিমাণ খুব বেড়ে গেলে অর্থাৎ ঢ়ঐ এর মান খুব কমে গেলে জলজ প্রাণীদের দেহ থেকে ক্যালসিয়ামসহ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ বাইরে চলে আসে, ফলে মাছ রোগাক্রান্ত হয়।
অতএব, উপরিউক্ত আলোচনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঢ়ঐ পরিবর্তনের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন -৬ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
তাপমাত্রা ০ক্ক সেলসিয়াস হলে ঢ তরল পদার্থটি কঠিন আকার ধারণ করে। তাপ দিলে কঠিন আকারের ঢ তরল হয়ে যায় এবং ১০০ক্ক সেলসিয়াস তাপে বাষ্পে পরিণত হয়।
ক. ইউরেনিয়াম কী?
খ. মরা নদী বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে ঢ পদার্থের গলনাংক ও স্ফুটনাংক ভিন্ন হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ঢ পদার্থটির ভিন্ন ভিন্ন রূপÑ বিশ্লেষণ কর।
🢖🢔 ৬নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. ইউরেনিয়াম একটি তেজষ্ক্রিয় পদার্থ।
খ. জলাভ‚মি যেমন নদী, খাল, বিল অতিরিক্ত দূষণের ফলে পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের পরিমাণ শূন্যে নেমে আসে। এ অবস্থায় জলজ উদ্ভিদ ও সকল জলজ প্রাণীর শ্বসন ক্রিয়ার ব্যাঘাত হওয়ায় মরে যায় এবং নদীগুলো প্রাণী শূন্য হয়ে পড়ে। যখন এ অবস্থা সৃষ্টি হয় তখন সেসব নদীকে মরা নদী বলা হয়।
গ. বায়ুমণ্ডলীয় চাপে যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো একটি কঠিন পদার্থ গলে তরলে পরিণত হয় সেই তাপমাত্রাকে ঐ পদার্থের গলনাংক বলে। কঠিন পদার্থটি গলে তরলে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত ঐ তাপমাত্রা স্থির থাকে। উদ্দীপকের ঢ পদার্থটি পানি এবং এর কঠিন অবস্থা বরফ। বরফের গলনাংক ০ক্ক সেলসিয়াস। অপরদিকে বায়ুমণ্ডলীয় চাপে যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তরলের বাষ্পায়ন হয়, সেই তাপমাত্রাকে ঐ তরলের স্ফুটনাংক বলে। সমস্ত তরল পদার্থটি বাষ্পে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত তরলের স্ফুটনাংক স্থির থাকে। উদ্দীপকের তরল পদার্থের অর্থাৎ পানির স্ফুটনাংক ১০০ক্ক সেলসিয়াস।
সুতরাং পানির গলনাংক ও স্ফুটনাংক দুটি ভিন্ন বিষয়।
ঘ. অবস্থাবিশেষে নির্দিষ্ট কোনো পদার্থ কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায় থাকতে পারে। যেমন : ঢ পদার্থটির কঠিন রূপ বরফ, তরল রূপ পানি ও বাষ্পীয় রূপ জলীয় বাষ্প একই পদার্থ। তাপ বাড়িয়ে বা কমিয়ে এদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো যায়। সাধারণ তাপমাত্রায় পানি একটি তরল পদার্থ।
পানিকে ঠাণ্ডা করলে ০ক্ক সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বরফে পরিণত হয়। এ বরফে তাপ দিলে আবার পানিতে পরিণত হয়। তাপবৃদ্ধি করে ১০০ক্ক সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বা পানি জলীয় বাষ্পে রূপান্তরিত হয়। ওই জলীয় বাষ্পকে ঠাণ্ডা করলে তা পুনরায় অর্থাৎ উদ্দীপকের ঢ পদার্থটিকে পানিতে পরিণত হয়। এভাবে তাপের পরিবর্তন করে পানিকে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তর করা যায়।
সুতরাং বরফ, পানি ও জলীয় বাষ্প একই পদার্থের ভিন্ন ভিন্ন রূপ।
প্রশ্ন -৭ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
শ্রেণিশিক্ষক ক্লাসে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্বন্ধে শিক্ষার্থীদের বোঝালেন। জলজ উদ্ভিদগুলোর দৈহিক গঠন ও এদের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য জানালেন। মাছ কীভাবে পানিতে বাস করে এবং বংশবিস্তার করে এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ধারণা দিলেন।
ক. পানির স্ফুটনাংক কত?
খ. জলজ প্রাণীদের বেঁচে রাখতে জলজ উদ্ভিদ কী ভ‚মিকা রাখে? ব্যাখ্যা কর।
গ. পানির কোন কোন মানদণ্ড উদ্দীপকের জলজ প্রাণীর বংশবিস্তারে প্রভাব রাখে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জলজ উদ্ভিদ ও মাছের মতো তুমি কি পানিতে বাস করতে পারবে? ব্যাখ্যাসহ লেখ।
🢖🢔 ৭নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. পানির স্ফুটনাংক ১০০ক্কঈ।
খ. জলজ উদ্ভিদগুলো সালোকসংশ্লেষণের সময় অক্সিজেন নির্গত করে। এই অক্সিজেন পানিতে দ্রবীভ‚ত হয়ে পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখে। এতে করে জলজ প্রাণী ফুলকার সাহায্যে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন গ্রহণ করে শ্বসন প্রক্রিয়া চালায়। এছাড়া জলজ শ্যাওলা জাতীয় উদ্ভিদ জলজ প্রাণীদের খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে।
গ. উদ্দীপকের জলজ প্রাণী হলো মাছ। পানির তাপ, ঢ়ঐ ও লবণাক্ততা মাছের বংশবিস্তারে সরাসরি প্রভাব রাখে। পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে মাছের প্রজনন থেকে শুরু করে অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় কাজে সমস্যা সৃষ্টি হয়। নদনদী, খালবিল ইত্যাদিতে জলজ প্রাণীদের বেঁচে থাকার জন্য পানির ঢ়ঐ মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত নদনদীর পানি ক্ষারীয় হয়।
নদনদী ও জলাশয়ের পানির ঢ়ঐ যদি ৬-৮ এর মধ্যে থাকে, তাহলে মাছের বংশবিস্তার ও বেঁচে থাকতে অসুবিধা হয় না। ঢ়ঐ এর মান এসিডিক বা ক্ষারীয় হলে ওই পানিতে মাছের ডিম, পোনা মাছ বাঁচতে পারে না এবং বংশবিস্তারে বিঘœ ঘটে।
পানির লবণাক্ততা কিছু মাছের বংশ বিস্তারে সমস্যা সৃষ্টি করে। যেমন ইলিশ মাছ। ইলিশ মাছ সামুদ্রিক মাছ হলেও প্রজননের সময় ডিম ছাড়ার জন্য মিঠা পানিতে চলে আসে। কারণ সমুদ্রের পানি লোনা হওয়ায় ইলিশ পোনা মাছ সৃষ্টি হতে পারে না। তাই প্রাকৃতিক নিয়মেই ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ার সময় মিঠা পানিতে আসে।
সুতরাং, পানির তাপ, লবণাক্ততা, ঢ়ঐ এসব মানদণ্ড জলজ প্রাণীর জীবনচক্রে গুরুত্বপূর্ণ।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জলজ উদ্ভিদ ও জলজ প্রাণীদের মতো মানুষ পানিতে বাস করতে পারে না। কারণ জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী পানিতে বসবাসের জন্য অভিযোজিত হয়েছে। জলজ উদ্ভিদগুলো পানিতে দ্রবীভ‚ত গ্যাস ও খনিজ পদার্থগুলো দেহ দ্বারা শোষণ করে আর জলজ প্রাণীগুলো পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন বিশেষ শ্বাসঅঙ্গ ফুলকার দ্বারা শোষণ করে শ্বসনকার্য সম্পন্ন করে। মানুষ ফুসফুসের সাহায্যে বায়ুর অক্সিজেন শোষণ করে শ্বাসকার্য সম্পন্ন করে।
মানুষের এমন কোনো অঙ্গ নেই যার দ্বারা পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন শোষণ করে শ্বসনকার্য সম্পন্ন করা সম্ভব। এজন্য মানুষের পক্ষে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীদের মতো পানিতে বসবাস সম্ভব নয়।
প্রশ্ন -৮ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
অবনি ও হিয়া তাদের বাবার সাথে কক্সবাজারে বেড়াতে যায়। সমুদ্রে গোসল করার সময় পানি মুখে লাগায় তারা বুঝে সমুদ্রের পানি লোনা। তাদের বাবা বোঝালেন এ পানি থেকে মিঠা পানি প্রস্তুত করা যায়। এও বললেন সমুদ্রের পানির উচ্চতা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ অ লে মিঠা পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে।
ক. ঢ়ঐ কী?
খ. পানিকে সর্বজনীন দ্রাবক বলা হয় কেন?
গ. অবনি ও হিয়ার বাবা কীভাবে সমুদ্রের পানি থেকে মিঠা পানি প্রস্তুত করবেন?
ঘ. বাংলাদেশের উক্ত অ লে মিঠা পানির সমস্যা কেন দেখা দিয়েছে এবং এর সমাধান কী? বিশ্লেষণ কর।
🢖🢔 ৮নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. ঢ়ঐ হলো এমন একটি রাশি, যার দ্বারা বোঝা যায় পানি বা জলীয় দ্রবণ এসিডিক, ক্ষারীয় না নিরপেক্ষ।
খ. পানির একটি বিশেষ ধর্ম হলো এটি বেশির ভাগ অজৈব যৌগ ও অনেক জৈব যৌগকে দ্রবীভ‚ত করতে পারে। যেমন : পানির মধ্যে জৈব যৌগ চিনি আর অজৈব যৌগ লবণ দ্রবীভ‚ত হতে পারে। এজন্য একে সর্বজনীন দ্রাবক বলা হয়।
গ. মানসম্মত পানি উৎপাদন করার জন্য যে প্রক্রিয়াগুলো আছে তাদের মধ্যে পাতন একটি পদ্ধতি।
অবনির বাবা পাতন প্রক্রিয়ায় সমুদ্রের পানি থেকে মিঠা পানি প্রস্তুত করবেন। তিনি সমুদ্রের পানিকে একটি বদ্ধ পাত্রে নিয়ে তাপ দিয়ে বাষ্পে পরিণত করে ওই বাষ্পকে ঘনীভ‚ত করে মিঠা পানিতে পরিণত করবেন। এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য অবনির বাবাকে বিশেষ ধরনের যন্ত্রপাতির সাহায্যে নিতে হবে।
ঘ. বাংলাদেশের উক্ত অ ল অর্থাৎ দক্ষিণ অ ল বঙ্গোপসাগরের নিকটে। বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে মেরু অ লের বরফ গলার কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রভাবে সাগরের লবণাক্ত পানি মূল ভ‚খণ্ডে ঢোকার ফলে নদী খালবিলের ও ভ‚গর্ভস্থ পানি লবণাক্ত হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ অ লে চিংড়ি চাষের জন্য নালা কেটে লবণাক্ত পানি মূল ভ‚খণ্ডে আনা হয়। এ কারণে এ এলাকার ভ‚গর্ভস্থ পানিসহ মিঠা পানির অন্যান্য উৎস লবণাক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে খাওয়ার পানি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার উপযোগী পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ অ লে মিঠা পানির একমাত্র উৎস বৃষ্টির পানি।
তাই দক্ষিণ অ লে ১০-১৫টি গ্রামের মানুষ সবাই মিলে পুকুর খনন করে মিঠা পানির জন্য বৃষ্টির পানি ধরে রেখে ব্যবহার করতে পারে। এভাবে এ অ লের মানুষ এ সমস্যার সমাধান করতে পারে।
প্রশ্ন -৯ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সজল পান করার জন্য বাসা থেকে ফুটানো পানি স্কুলে নিয়ে যায়। একদিন সে বাসা থেকে পানি না নেওয়ায় স্কুলের ট্যাপের দূষিত পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। সে ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি তাকে সব সময় বিশুদ্ধ পানি পান করার কথা বললেন।
ক. পানিদূষণ কী?
খ. মানবদেহের জন্য পানি অপরিহার্য কেন?
গ. ট্যাপের পানিকে সজল কীভাবে পানযোগ্য করতে পারে?
ঘ. সজলের পান করা পানি মানবদেহে কী কী রোগ সৃষ্টি করতে পারে? আলোচনা কর।
🢖🢔 ৯নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. পানির মধ্যে নানা ধরনের রোগজীবাণু, ময়লা, আবর্জনা ইত্যাদি মিশ্রিত হলে একে পানিদূষণ বলে।
খ. পানি খাদ্যের একটি উপাদান। মানবদেহ গঠন ও আভ্যন্তরীণ কাজ পানি ছাড়া চলে না। মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গ গঠনের জন্য পানি প্রয়োজন। কোষের যাবতীয় শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলো পানি ছাড়া সম্ভব নয়। এটি জীবের প্রবাহের কাজ করে।এটি খাদ্য পরিপাক ও পরিশোষণে সাহায্য করে। এজন্য পানি মানবদেহের জন্য অপরিহার্য।
গ. ট্যাপের পানিকে সজল পানযোগ্য করতে পারে পানিকে বিশুদ্ধ করে। পানিবাহিত রোগের জীবাণুকে দূর করার জন্য সজলকে জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে। পানি বিশুদ্ধকরণের পদ্ধতিকে ক্লোরিনেশন বলে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ক্লোরিন গ্যাস। এ ছাড়া বিøচিং পাউডার পরিমিত পরিমাণ ব্যবহার করে পানিকে জীবাণুমুক্ত করা যায়। সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড (ঘধঙঈষ) ট্যাবলেট পানিতে দিয়ে পানিকে পানযোগ্য করা যায়। এতে বিদ্যমান ক্লোরিন পানিতে থাকা রোগজীবাণু ধ্বংস করে। এ ছাড়া পানিতে ওজোন (ঙ৩) গ্যাস অথবা অতিবেগুনি রশ্মি চালিত করে পানিকে বিশুদ্ধ করা যায়।
ক্লোরিনেশন ছাড়া সজল স্ফুটন প্রক্রিয়ায় ট্যাপের পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে পারে। এ পদ্ধতিতে পানি ফুটতে শুরু হওয়ার পর ১৫-২০ মিনিট পর্যন্ত পানিকে ফুটালে পানি জীবাণুমুক্ত হয়ে যায়। এরপর এই পানি ঠাণ্ডা করে পান করা যায়।
সুতরাং সজল পানি বিশুদ্ধকরণের এই পদ্ধতিগুলোর যেকোনো একটি ব্যবহার করে ট্যাপের পানিকে পানযোগ্য করতে পারে।
ঘ. সজলের পান করা পানি দূষিত। দূষিত পানি পানে পানিবাহিত রোগ দেখা দেয়। টাইফয়েড জ্বর, কলেরা, আমাশায়, হেপাটাইটিস-বি এসব পানিবাহিত রোগ। দূষিত পানি পান ও ব্যবহারে এসব রোগের জীবাণু মানবদেহ সংক্রমিত হয় এবং এসব রোগে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া পানিতে যদি ক্ষতিকর ধাতব পদার্থ যেমন : পারদ, সিসা, আর্সেনিক ইত্যাদি থাকে এবং এই পানি পান করলে মানবদেহে পারদ, সিসা ও আর্সেনিকের প্রভাবে যেসব রোগ হতে পারে তা হলোÑ
পারদ : মস্তিষ্কের বিকল হওয়া, ত্বকের ক্যান্সার ও বিকলাঙ্গ হতে পারে।
সিসা : মেজাজ খিটখিটে হওয়া, শরীর জ্বালাপোড়া, রক্তশূন্যতা, কিডনি বিকল হওয়া, দেহে বেশি সিসা প্রবেশ করলে মস্তিষ্ক বিকল হতে পারে।
আর্সেনিক : ত্বক ও ফুসফুসের ক্যান্সার, পাকস্থলীর রোগ হতে পারে।
এছাড়া তেজস্ক্রিয় পদার্থ যেমন : ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, সিজিয়াম প্রভৃতি দ্বারা পানি দূষিত হলে তা মানবদেহে ক্যান্সার ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন -১০ 🢖 নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
পৃথিবীতে যত তরল পদার্থ আছে এর মধ্যে সবচেয়ে সহজলভ্য হলো পানি। পৃথিবীর ভাগ পানি। মানবদেহের ৭০ ভাগই পানি। পানি ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না।
ক. পানির রাসায়নিক সংকেত লেখ।
খ. পানির ঢ়ঐ বলে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের তরলটির ব্যবহার যোগ্যতার মানদণ্ড কী কী হওয়া উচিত? আলোচনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের তরলটির ব্যবহার ব্যাপক কিন্তু তবুও এটি শেষ হয় না Ñ বিশ্লেষণ কর।
🢖🢔 ১০নং প্রশ্নের উত্তর 🢖🢔
ক. পানির রাসায়নিক সংকেত ঐ২ঙ.
খ. পানির ঢ়ঐ বলতে এমন একটি রাশিকে বোঝায় যার দ্বারা বোঝা যায় পানি এসিডিক, ক্ষারীয় নাকি নিরপেক্ষ। পানি নিরপেক্ষ হলে ঢ়ঐ মান ৭ হয়, এসিডিক হলে ঢ়ঐ মান ৭ এর মান কম এবং ক্ষারীয় হলে ঢ়ঐ মান ৭ এর বেশি হয়।
গ. পানির ব্যবহার যোগ্যতার মানদণ্ড নির্ভর করে পানিকে কোন কাজে ব্যবহার করা হবে তার উপর। মানদণ্ডগুলো হলোÑ বর্ণ ও স্বাদ, স্বচ্ছতা, ক্ষতিকর ধাতু ও তেজস্ক্রিয় পদার্থ যুক্ত দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের উপস্থিতি, তাপমাত্রা ঢ়ঐ এবং লবণাক্ততা। বিশুদ্ধ পানি সব সময় হবে বর্ণহীন ও স্বাদহীন; পর্যাপ্ত দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন যুক্ত এবং ক্ষতিকর পদার্থমুক্ত। ঢ়ঐ মান হবে ৭।
পানি অস্বচ্ছ বা ঘোলাটে হলে তাতে আলো না পৌছার কারণে জলজ উদ্ভিদগুলো সালোকসংশ্লেষণ করতে পারেনা ফলে পানিতে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়। এতে করে জলজ প্রাণীদের শ্বসন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। নদনদী খাল বিল ইত্যাদির পানির ঢ়ঐ মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এসব জলাশয়ের পানির ঢ়ঐ ৬-৮ এর মধ্যে হলে তা জলজ উদ্ভিদও প্রাণীদের বেঁচে থাকার জন্য কোনো অসুবিধার সৃষ্টি করে না তবে ঢ়ঐ এর মান যদি খুব কমে যায় বা বেড়ে যায়, তা হলে ঐ পানিতে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এছাড়া পানির তাপমাত্রা জলজ প্রাণীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পানির তাপমাত্রা বেড়ে গেলে পানিতে দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের অভাব সৃষ্টি হয় এবং অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় কাজে ব্যাঘাত ঘটে।
ঘ. উদ্দীপকের তরলটি পানি। পানির ব্যবহার ব্যাপক কারণ পানির অপর নাম জীবন। পানির এত ব্যবহার ও অপচয়ের পরও পানি শেষ হওয়ার কারণ পৃথিবী পৃষ্ঠে পানির পুনঃআবর্তন ঘটে। দিনের বেলায় সূর্যের তাপে ভ‚পৃষ্ঠের পানির উৎসগুলো থেকে পানি বাষ্পীভ‚ত হয়ে বায়ুমণ্ডলে চলে যায়।
এরপর বাষ্প ঘনীভ‚ত হয়ে প্রথমে মেঘ ও পরে তা বৃষ্টি আকারে আবার ভ‚পৃষ্ঠে ফিরে আসে। এই বৃষ্টির পানির বড় অংশ আবার পানির উৎসগুলোতে গিয়ে পরে এবং আবার বাষ্পীভ‚ত ও ঘনীভ‚ত হয়ে বৃষ্টির আকারে ভ‚পৃষ্ঠে ফিরে আসে। এজন্য পানির এই পুনঃআবর্তনে পানির ব্যবহার ব্যাপক হওয়ার পরও শেষ হয় না। পানির পুনঃআবর্তনের দ্বারা পরিবেশের পানির পরিমাণ ও ভারসাম্য বজায় থাকে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।