(ফ্রি PDF) অধ্যায় ৩:মৌলিক ধারণাসমূহ:সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: ৩য় অধ্যায় এর অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর,সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ও রচনামূলক প্রশ্নোত্তর, সাজেশন সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনার্স ১ম বর্ষের যেকোন বিভাগের সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
(ফ্রি PDF) অধ্যায় ৩:মৌলিক ধারণাসমূহ:সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
অনার্স প্রথম বর্ষ
বিষয়ঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি
অধ্যায় ৩ : মৌলিক ধারণাসমূহ
বিষয় কোডঃ ২১১৯০৯
খ-বিভাগঃ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
০১. সার্বভৌমত্ব কী?
অথবা, সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর ভূমিকা : রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সার্বভৌমত্বের ধারণা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সার্বভৌমত্ব। সার্বভৌম ক্ষমতা হলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা। সার্বভৌমত্বহীন রাষ্ট্র হলো প্রাণহীন দেহের মতো। প্রাণ ছাড়া যেমন কোনো দেহ কার্যকর নয়, তেমনি সার্বভৌমত্ব ছাড়া রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কল্পনাও করা যায় না ।
শব্দগত অর্থে সার্বভৌমত্ব : সার্বভৌমত্ব শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ‘Sovereignty’ যা ল্যাটিন শব্দ ‘Supernas’ হতে এসেছে। এর অর্থ হলো প্রধান বা চূড়ান্ত। সুতরাং শব্দগত দিক থেকে সার্বভৌমত্ব বলতে বুঝানো হয় সর্বোচ্চ ক্ষমতা।
সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞা : সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা। যে ক্ষমতা বলে কোনো রাষ্ট্র তার অভ্যন্তরের অন্যান্য সংগঠন হতে সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর বলে বিবেচিত হয় এবং সকল মানুষের ওপর কর্তৃত্ব করে।
সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা বলে রাষ্ট্র আইন প্রণয়ন করে এবং জনগণ সেই আইন মেনে চলে। অর্থাৎ, রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন, আইন প্রয়োগ, আদেশ প্রদান, বিচার কার্য পরিচালনা করা, অন্যান্য সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাকে বলা হয় সার্বভৌমত্ব।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
উড্রো উইলসন (Woodrow Wilson) বলেন, “সার্বভৌমত্ব আইন সৃষ্টি করার এবং আইনের ক্ষমতা বাস্তবায়নের একটি দৈনন্দিন কার্যকরী শক্তি।”
গ্রোটিয়াস (Grotious) এর মতে, “সার্বভৌমত্ব হলো সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা যার হাতে এ ক্ষমতা ন্যস্ত, তার কার্যকলাপ অন্য কারও আজ্ঞাধীন নয় এবং তার ইচ্ছাই চূড়ান্ত।”
জেলেনিক (Jellinek) সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, “সার্বভৌমিকতা রাষ্ট্রের সেই বৈশিষ্ট্য যার মাধ্যমে রাষ্ট্র স্বীয় ইচ্ছা ব্যতীত আইনগতভাবে বাধা থাকতে পারে না বা নিজ ব্যতীত অপর শক্তি কর্তৃক সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না।”
জন অস্টিন (John Austin) বলেন, “যদি কোনো ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগোষ্ঠী অপর কোনো ঊর্ধ্বতনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ না করে এবং সমাজের বেশির ভাগ লোকের আনুগত্য লাভ করে, তা হলে এ সমাজে ঐ নির্দিষ্ট ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টি সার্বভৌম এবং উক্ত সমাজ একটি রাজনৈতিক ও স্বাধীন সমাজ।”
গেটেল (Gettell ) এর মতে, “সার্বভৌমিকতা সকল প্রকার আইনকে অনুমোদন দান ও সকল প্রকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করে। ”
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কোনো একটি সমাজ যদি স্বাধীন ও রাজনৈতিক সমাজ হিসেবে গড়ে উঠতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই সার্বভৌম হতে হবে। রাষ্ট্র গঠিত হতে হলে সার্বভৌমত্বের কোনো বিকল্প নেই। এ প্রসঙ্গে ডেভিড মিলার বলেন, “We must recognize the sovereign state as ” the prime fact of political life.
- আরো পড়ুন:- PDF রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি,অধ্যায়৩:মৌলিক ধারণাসমূহ
- আরো পড়ুন:-রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
- আরো পড়ুন:-(PDFফ্রি) রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
- আরো পড়ুন:- রাজনৈতিক তত্ত্ব পরিচিতি:অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
- আরো পড়ুন:- (PDF) অধ্যায়৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অধ্যায়৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(PDF)
- আরো পড়ুন:- (PDF) অধ্যায়৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- (PDF) অধ্যায় ৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
অথবা, সার্বভৌমত্বের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : একটি রাষ্ট্র গঠিত হবার জন্য যে চারটি মৌলিক উপাদান অপরিহার্য তাদের মধ্যে প্রধান হলো সার্বভৌমত্ব। সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের প্রাণস্বরূপ। সার্বভৌমত্ব দ্বারাই রাষ্ট্র অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে পৃথক করা হয়েছে। রাষ্ট্র যদি তার অভ্যন্তরের সব নিয়ন্ত্রণ করতে চায় এবং বাহ্যিক প্রভাবমুক্ত থাকতে চায়, তাহলে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োজন।
সার্বভৌমত্বের বৈশিষ্ট্য : সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের সেই ক্ষমতা যার দ্বারা রাষ্ট্র সমাজের অন্যান্য সংগঠন অপেক্ষা সর্বোত্তম এবং জনগণ ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করে। একে রাষ্ট্রের সেই ক্ষমতা বলা যায় যার দ্বারা রাষ্ট্র স্বাধীনভাবে বৈদেশিক সম্পর্ক গড়ে তোলে । অন্য রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকে। নিম্নে সার্বভৌমত্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনা করা হলো—
১. আইন সংক্রান্ত চরম ক্ষমতা : সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের আদেশই হলো আইন। তার আইনকে অমান্য করা যায় না। তার আইন দ্বারাই সমাজের বিচার ব্যবস্থা পরিচালিত হয় । তবে সেই আইন কী রকম এবং জনমত দ্বারা প্রভাবিত কি না তা সার্বভৌমের ধরনের ওপর নির্ভর করে।
২. সংগঠন নিয়ন্ত্রণ : রাষ্ট্র সার্বভৌম ক্ষমতা বলে তার অভ্যন্তরে অন্যান্য সংগঠনকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। রাষ্ট্রের আইন মান্য করে সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয় সার্বভৌমের আদেশের বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠান যেতে পারে না।
৩. স্বাধীন বৈদেশিক নীতি : সার্বভৌম ক্ষমতা থাকলে রাষ্ট্র স্বাধীনভাবে বৈদেশিক নীতি গড়ে তুলতে পারে। এতে অন্য কোনো রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ছাড়াই বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপন করে। ৪. রাষ্ট্রের রক্ষাকারী : সার্বভৌমত্ব ক্ষমতাকে বলা যায় স্বাধীন রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ বা রক্ষাকারী । সার্বভৌমত্ব থাকে বলেই একটি রাষ্ট্রকে বাইরের কোনো দেশ আক্রমণ করার বৈধতা পায় না। এতে সমগ্র বিশ্ব বাধা প্রদান করে থাকে।
৫. সবার জন্য কার্যকর : রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা সে সবার ওপর প্রয়োগ করতে পারে, সমাজের কোনো ব্যক্তিই সার্বভৌমের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নেই। সার্বভৌম ক্ষমতা দেশের সকল জনগণ ও প্রতিষ্ঠানকে আদেশ, নিষেধ প্রদান করার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ।
৬. রাষ্ট্রের প্রাণ : মানবদেহ যেমন প্রাণ ছাড়া অস্তিত্বহীন, মূল্যহীন, ঠিক তেমনি কোনো দেশও সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা ব্যতীত মূল্যহীন, অস্তিত্বহীন। সার্বভৌম ক্ষমতাকে বলা হয় রাষ্ট্রের প্রাণ। এর দ্বারা কোনো রাষ্ট্র সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৭. স্বীকৃতি : কোনো সমাজের বা রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া সারা বিশ্বে কোনো দেশ সার্বভৌম হিসেবে বিবেচিত হয় না। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সার্বভৌম ক্ষমতার একটি শর্ত ।
৮. বিনাশহীন : সার্বভৌম ক্ষমতা কোনো দিন বিনাশ হয় না। সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বদল হয় বা বিনাশ হয়। কিন্তু সার্বভৌমত্ব অবিনশ্বর।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষ সাধারণত নিয়ন্ত্রণ ছাড়া শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে বাস করতে পারে না । নিয়ন্ত্রণহীন সমাজে অনেক দ্বন্দ্ব-বিবাদের সৃষ্টি হয়। সার্বভৌম ক্ষমতা তাই সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে সমাজের সকল মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সমাজকে বা রাষ্ট্রকে একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে কার্যকর করার জন্য সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের বিকল্প নেই।
০৩ জন অস্টিনের সার্বভৌমত্ব তত্ত্বটি বিশ্লেষণ কর।
অথবা, জন অস্টিনের সার্বভৌমত্ব তত্ত্ব সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সকল দার্শনিকদের দর্শনেই সার্বভৌমত্বের আলোচনা রয়েছে। তাদের মধ্যে অনেক রাষ্ট্র দার্শনিকের নাম সার্বভৌমত্বের আলোচনায় উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। এসব রাষ্ট্র দার্শনিকের মধ্যে জন অস্টিন অন্যতম। তিনি আইনগত সার্বভৌমত্ব তত্ত্ব প্রদান করেন।
জন অস্টিনের সার্বভৌমত্ব তত্ত্ব : সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞায় জন অস্টিন বলেন, “যদি কোনো সুনির্দিষ্ট মানবীয় কর্তৃপক্ষ অপর কোনো কর্তৃপক্ষের বশ্যতা স্বীকারে অভ্যস্ত না হন অথচ সমাজের অধিকাংশ ব্যক্তির সাধারণ আনুগত্য লাভ করেন তাহলে
সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঐ সমাজের সার্বভৌম শক্তি হবেন এবং উক্ত কর্তৃপক্ষসহ ঐ সমাজকে রাজনৈতিকভাবে গঠিত ও স্বাধীন সমাজ বলা হবে।” অস্টিন তার ধারণায় বলেন, দেশের যে ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে এবং মানুষকে সেই আইন মানতে বাধ্য করে, সেই সার্বভৌম ক্ষমতা। এক্ষেত্রে তার সার্বভৌমত্ব তত্ত্বের কিছু বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো-
১. উর্ধ্বতনের আদেশ : জন অস্টিন ঊর্ধ্বতনের আদেশ প্রদানের মধ্যে সার্বভৌম ক্ষমতা দেখছেন। তার মতে, সার্বভৌম ক্ষমতা বলে ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি অধস্তনকে আদেশ প্রদান করে।
২. আইন প্রণয়নকারীই সার্বভৌম : জন অস্টিন কেবলমাত্র আইন প্রণয়নকারীকেই সার্বভৌম বলেছেন। যে আইন প্রণয়ন করে এবং প্রয়োগ করে সেই হলো সার্বভৌম শক্তি।
৩. অবিভাজ্য ক্ষমতা : জন অস্টিন সার্বভৌমের হাতে ক্ষমতা অবিভাজ্যভাবেই অর্পণ করেছেন। তিনি তার তত্ত্বে আইন প্রণয়ন, আইন প্রয়োগ ও বিচার কার্যের ক্ষমতা সার্বভৌমত্বে অর্পণ করেছেন।
৪. গণতন্ত্র বিরোধী অস্টিন বলেছেন, সার্বভৌমের আইনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। সার্বভৌম যে আইন প্রণয়ন করে, জনগণকে তাই মানতে বাধ্য থাকতে হবে। তাই জন অস্টিনের সার্বভৌমকে গণতন্ত্রের বিরোধী বলা হয়।
৫. আনুগত্য : জন অস্টিন বলেছেন, সার্বভৌম কারও প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে না। বরং সমাজের সকলেই তার নিকট আনুগত্য প্রদর্শন করে থাকে।
৬. সংঘ ও প্রতিষ্ঠান : জন অস্টিনের মতে রাষ্ট্রই হলো একমাত্র সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্র তার অভ্যন্তরে অন্য সকল প্রতিষ্ঠানের ওপর কর্তৃত্ব আরোপ করতে পারবে। কারণ ঐ প্রতিষ্ঠানের সার্বভৌম ক্ষমতা নাই।
৭. স্বাধীন সমাজ : জন অস্টিন বলেছেন, যে সমাজে সার্বভৌম বিরাজমান, সেই সমাজ স্বাধীন ও রাজনৈতিক সমাজ। সমাজের স্বাধীনতাকে সার্বভৌমই টিকিয়ে রাখে।
৮. মানবীয় ক্ষমতা : জন অস্টিনের মতে, সার্বভৌম ক্ষমতা ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত নয়। তা মানবীয় ক্ষমতা। তিনি মানুষকে সর্বোচ্চ ক্ষমতার আসনে জায়গা দেন যা মধ্যযুগে চার্চদের সার্বভৌমত্বের বিরোধী। এগুলো হলো অস্টিনের সার্বভৌমত্ব তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, অস্টিনের সার্বভৌমত্ব হলো আইনগত সার্বভৌমত্ব। তিনি আইন প্রণয়নকারীর হাতেই দেশের সমস্ত সার্বভৌম ক্ষমতা অর্পণ করেছেন। জন অস্টিন ছিলেন ইংল্যান্ডের একজন প্রখ্যাত আইনজ্ঞ। তাই আইনবিদগণ তার সার্বভৌমত্ব তত্ত্বকে আইনবিদদের সার্বভৌম ক্ষমতা বলে ঘোষণা করেছেন।
০৪ আইনগত সার্বভৌমত্ব কী?
অথবা, আইনগত সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে যা জান লেখ।
উত্তরঃ ভূমিকা : আইনগত সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা। সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের সেই ক্ষমতা যা দেশের সকল জনগণ ও প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সার্বভৌমত্ব ক্ষমতাকে প্রয়োগ করে এবং প্রয়োগের ওপর ভিত্তি করে একে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করা যায়। আইনগত সার্বভৌমত্ব যার একটি। এই সার্বভৌম ক্ষমতা আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের ওপর ভিত্তি করে গঠিত।
আইনগত সার্বভৌমত্ব : যে ব্যক্তি বা ব্যক্তি গোষ্ঠীর আদেশ সমাজে আইন হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে এবং জনগণ তা মেনে নেয়, আদালত কর্তৃক স্বীকৃত হয় তাকে আইনগত সার্বভৌমত্ব বলে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের অধস্তনের প্রতি ঊর্ধ্বতনের আদেশই হলো আইন।
আইন প্রণেতাগণ যে আদেশই প্রদান করুক জনগণকে তাই বৈধ আইন হিসেবে মেনে চলতে হয়। এখানে তার আইনের বৈধতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যায় না। আইনগত সার্বভৌমত্বের নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
১. আইনজীবীদের সার্বভৌমত্ব : আইনগত সার্বভৌমত্ব বলতে আইনজীবীদের সার্বভৌমত্বকে বুঝানো হয়েছে। এতে বলা হয় সমাজে যাদের আইন মেনে চলা হয় এবং আদালত কর্তৃক স্বীকৃত হয়, তারাই সার্বভৌম। সেই হিসেবে আইনবিদদের সার্বভৌম করা হয়েছে।
২. গণতন্ত্র বিরোধী আইনগত সার্বভৌমত্ব কোনো গণতান্ত্রিক পদ্ধতি নয়। এতে রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে আদেশই প্রদান করেন না কেন তাই মেনে চলতে হয়। তাই সকল আদেশ বৈধ। এজন্যই আইনগত সার্বভৌমত্বকে গণতন্ত্র বিরোধী বলা যায়
৩. জনসার্বভৌমত্ব বিরোধী : আইনগত সার্বভৌমত্ব জনসার্বভৌমত্বের বিরোধী ধারণা। এতে জনগণের হাতে কোনো সার্বভৌম ক্ষমতা অর্পণ করা হয়নি সকল ক্ষমতা রাষ্ট্রের আইনবিদদের।
৪. জনমতবিহীন : আইনগত সার্বভৌমত্ব জনমতকে অগ্রাহ্য করে। এতে, আইন প্রণয়নকালে জনমতের কথা বিবেচনা করা হয় না এবং জনমতও আইনকে প্রভাবিত করতে পারে না। অর্থাৎ আইনগত সার্বভৌমত্ব হলো জনমতহীন ।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, আইনগত সার্বভৌমত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের আইনজ্ঞদের চরম ক্ষমতা, যে ক্ষমতা বলে তাদের আদেশ আইন হিসেবে মান্য করা হয়, আদালত কর্তৃক স্বীকৃত হয় আইনগত সার্বভৌমকে অবাধ ক্ষমতা প্রদান করা হয়ে থাকে।
এটি বাস্তবতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। আইনগত সার্বভৌমত্বের শুধু সার্বভৌমত্বে অভ্যন্তরীণ দিকের কথা বলা হয়েছে। এতে বৈদেশিক সম্পর্কের বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে।
০৫ আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের পার্থক্য কী?
অথবা, আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের বৈসাদৃশ্য লেখ।
উত্তরঃ ভূমিকা : সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি। একটি রাষ্ট্র তার সার্বভৌম ক্ষমতার মাধ্যমেই বিশ্বের বুকে টিকে থাকে। এই সার্বভৌমত্বের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব।
বিভিন্ন দার্শনিক বিভিন্ন তত্ত্বের মাধ্যমে এগুলোকে সমর্থন করে গেছেন ।
আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের পার্থক্য : নিম্নে আইনগত ও রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের পার্থক্য আলোচনা করা হলো—
১. সার্বভৌমের মালিক আইনগত সার্বভৌমত্বে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক হচ্ছে আইন প্রণয়নকারী কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বে ক্ষমতার মালিক হচ্ছে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ। তারা জনগণের সার্বভৌমত্বকে প্রয়োগ করে।
২. গণতন্ত্র : আইনগত সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রকে সমর্থন করে না। সেখানে জনগণ নয় সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের স্বার্থে ও মতামতের ভিত্তিতে আইন প্রণয়ন করা হয়। অপরদিকে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নির্বাচিত হয় গণতান্ত্রিকভাবে এবং গণতান্ত্রিকভাবেই তা টিকে থাকে।
৩. জনমত : আইনগত সার্বভৌমত্বে জনমতকে আইন তৈরিতে বিবেচনা করা হয় না। কিন্তু রাজনৈতিক সার্বভৌম শক্তি জনমতের ভিত্তিতে আইন তৈরি করে।
৪. নৈতিকতা : আইনগত সার্বভৌমত্ব আইন প্রণয়নে নীতি ও নৈতিকতার দ্বারা প্রভাবিত হয় না। অপরদিকে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণে নৈতিকতা দ্বারা প্রভাবিত যা জনস্বার্থে হয়ে থাকে।
৫. জনসার্বভৌমত্ব : আইনগত সার্বভৌমত্বে জনগণের হাতে কোনো সার্বভৌম ক্ষমতা থাকে না। অপরদিকে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব দ্বারা জনসার্বভৌমত্বকে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। জনসার্বভৌমত্বই রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নির্বাচিত করে।
৬. চরম ও শর্তহীনতা : আইনগত সার্বভৌমত্ব চরম ও শর্তহীন, একে কেউ অমান্য করতে পারে না। অপরদিকে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব চরম ও শর্তহীন নয়। তা জনগণ ও আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ৭. অবিভাজ্যতা : আইনগত সার্বভৌমত্ব অবিভাজ্য। এতে সব সার্বভৌম ক্ষমতা একটি কর্তৃপক্ষের হাতে থাকে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সার্বভৌমত্বের একত্ববাদী তত্ত্বে আইনগত সার্বভৌমত্ব আলোচিত হয়। অপরদিকে, বহুত্ববাদী তত্ত্বে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব আলোচিত হয়। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অবশ্যই সার্বভৌমত্বের রাজনৈতিক তত্ত্ব বা ত্ববাদী তত্ত্বকে সমর্থন করা হয়ে থাকে।
কারণ রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব জনগণের ক্ষমতাকেই প্রতিনিধি হিসেবে প্রয়োগ করে। এর রাজনৈতিক বৈধতা আছে। ব্যাপক অর্থে সমগ্র জনগণই রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব অধিকারী।
৩.০৬ । রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব কাকে বলে? অথবা, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ ভূমিকা : রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সার্বভৌমত্ব একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। এই ক্ষমতা কার দ্বারা প্রয়োগ করা হবে তা নিয়ে যুগে যুগে তর্কবিতর্ক ছিল সার্বভৌম ক্ষমতা কীভাবে তৈরি হবে, কী উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করা হবে, কোন পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হবে তার ওপর ভিত্তি করে একে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ভাগ হলো রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব । এটি সার্বভৌমত্বের একটি বৈধ রূপ ।
রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব : রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব এক ধরনের বৈধ সার্বভৌমত্বের রূপ। কোনো সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ যদি বৈধ উপায়ে, জনসমর্থনের ভিত্তিতে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হয়, তাহলে তাকে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলে। রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব ব্যতীত আইনগত সার্বভৌমত্ব বৈধতা পায় না ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
অধ্যাপক ডাইসি (Prof. Dicey) বলেন, “আইনবিদ যাকে সার্বভৌমত্ব বলে স্বীকার করেছেন, এর পশ্চাতে আর একটি সার্বভৌমত্বের অস্তিত্ব থাকে। যাকে আইনগত সার্বভৌমত্ব মান্য না করে পারে না। এটাই হচ্ছে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব।” তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব হলো সেই সংস্থা যার ইচ্ছার প্রতি নাগরিকরা শেষ পর্যন্ত আনুগত্য প্রকাশ করে।”
আর. এন. গিলক্রিস্ট (R. N. Gilchrist) বলেন, “আইনের পিছনে অবস্থিত বিভিন্ন প্রভাবের সামগ্রিক যোগাযোগকেই রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলে অভিহিত করা চলে।”
উড্রো উইলসন (Woodrow Wilson) বলেন, “আইনের . চোখে সার্বভৌমিকতা যে আদর্শ নিয়ে গঠিত তা নিতান্ত অবাস্তব। কোনো সার্বভৌম ক্ষমতাই নীতিবোধ, ধর্ম ও জনগণকে গুরুত্ব দিতে অবজ্ঞা করতে পারে না। তবে সার্বভৌম ক্ষমতা, শক্তি ও প্রতিশ্রুতি নির্ভর করে জনগণের রাজনৈতিক সচেতনতার ওপর।”
রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব জনগণের নাকি শুধু নির্বাচকমণ্ডলীর এই নিয়ে অনেকের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের প্রকাশ ঘটে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে।
যেমন— ভোট দানের মাধ্যমে, নীতিবোধের মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব প্রকাশ হয়ে থাকে। কেউ কেউ রাষ্ট্রের বিপ্লবী শক্তিকে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বলে থাকে । তাই রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব অস্পষ্ট, অনির্দিষ্ট ।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, কোনো দেশ যদি স্বাধীন রাজনৈতিক সমাজ হতে চায় তাহলে তার সার্বভৌমত্ব দরকার। যদি কোনো দেশ গণতান্ত্রিক হতে চায়, তাহলে তাকে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বকে সম্মান ও গুরুত্ব দিতে হবে। ব্যাপক অর্থে সমগ্র জনগণই রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের অধিকারী।
০৭. সার্বভৌমত্বের একত্ববাদী ধারণা আলোচনা কর
অথবা, সার্বভৌমত্বের একত্ববাদ সম্পর্কে ধারণা দাও ।
উত্তরঃ ভূমিকা : সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে গবেষণা করেছেন ও তত্ত্ব প্রদান করেছেন। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য তত্ত্ব হলো একত্ববাদী তত্ত্ব যাতে কোনো রাষ্ট্রের সার্বভৌমকে কর্তৃত্ববাদী হিসেবে দেখানো হয়েছে। সার্বভৌমত্বের একত্ববাদী তত্ত্ব একটি জনপ্রিয় তত্ত্ব।
সার্বভৌমত্বের একত্ববাদ : সার্বভৌমত্বের একত্ববাদ বলতে বুঝানো হচ্ছে, এখানে সার্বভৌম ক্ষমতা শুধু একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হাতে অর্পিত থাকে। এতে সার্বভৌমত্বকে একটি কর্তৃপক্ষের হাতে অর্পণ করা হয় যার ক্ষমতা থাকে চূড়ান্ত ও অবিভাজ্য। একত্ববাদে রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানকে সার্বভৌম বলে স্বীকার করা হয় না । সকল প্রতিষ্ঠানই রাষ্ট্রের অন্তর্গত ।
প্রবক্তা : জ্যা বোডিন, জন অস্টিন, টমাস হবস, জেরেমি বেন্থাম প্রমুখ দার্শনিক সার্বভৌমত্বের একত্ববাদ তত্ত্ব প্রদান করেছে। নিম্নে এদের দর্শনের বৈশিষ্ট্য আলাদাভাবে দেওয়া হলো—
জ্যা বোডিনের তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য :
১. আইন দ্বারা অনিয়ন্ত্রিত : সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ আইন প্রণয়ন করে এবং কার্যকর করে। এই আইন সকল জনগণ ও প্রতিষ্ঠান মেনে চলে, কিন্তু সার্বভৌমত্বকে কোনো আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না । সার্বভৌম শক্তি আইনের আওতার বাইরে।
২. চরম ও চিরস্থায়ী : জ্যা বোডিনের মতে, সার্বভৌম ক্ষমতা চরম ও চিরস্থায়ী ক্ষমতা। এই ক্ষমতা কারও দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়।
জন অস্টিনের তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য :
১, ঊর্ধ্বতনের আদেশ : অধস্তনের প্রতি ঊর্ধ্বতনের আদেশ প্রদানের মধ্যে জন অস্টিন সার্বভৌম ক্ষমতা লক্ষ করেছেন। তার মতে, ঊর্ধ্বতনের আদেশই হলো আইন, যা আদালত দ্বারা স্বীকৃত। এই আইন প্রণয়নের মধ্যেই সার্বভৌম ক্ষমতা নিহিত রয়েছে।
২. গণতন্ত্র বিরোধী : জন অস্টিনের সার্বভৌমত্ব তত্ত্ব গণতন্ত্র বিরোধী। এতে জনগণের মতামতকে প্রাধান্য না দিয়েই আইন প্রণয়ন করা হয়। সার্বভৌম যেই রকম আইনই করুক না কেন, জনগণকে তা নিঃশর্তভাবে বৈধ মনে করে মেনে নিতে হয়।
টমাস হবসের তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য :
১. জনসার্বভৌমত্ব বিরোধী : টমাস হবসের সার্বভৌমত্ব জনগণের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করে। এতে জনগণের হাতে ন্যূনতম ক্ষমতা প্রদান করা হয়নি। অর্থাৎ টমাস হবস জনগণের সার্বভৌমত্ব বিরোধী।
২. চুক্তির মাধ্যমে সৃষ্ট : টমাস হবসের সার্বভৌম ক্ষমতা চুক্তির মাধ্যমে সৃষ্ট। তার মতে, জনগণ চুক্তি করে সকল ক্ষমতা শাসকের হাতে অর্পণ করে। তখন শাসক যেকোনো রকমের আইন প্রণয়ন করুক না কেন, তারা তা মেনে চলে তিনি চুক্তির মাধ্যমে সার্বভৌম ক্ষমতা সৃষ্টির কথা বলেছেন ।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সার্বভৌমত্বের একত্ববাদী তত্ত্ব যেই প্রদান করুক না কেন সবাই আইন প্রণয়নকারী কর্তৃপক্ষের হাতে জনমতবিহীন চরম ও অবিভাজ্য ক্ষমতা অর্পণ করেছেন।
সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ন্যূনতম ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। রাষ্ট্রের অন্য কোনো সংঘ বা প্রতিষ্ঠানের সার্বভৌম ক্ষমতা থাকে না এবং একমাত্র রাষ্ট্রেরই তা থাকে বিধায় এই তত্ত্বকে সার্বভৌমত্বের একত্ববাদ বলা হয়।
- আরো পড়ুন:- অধ্যায় ৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর(PDFফ্রি)
- আরো পড়ুন:- অধ্যায় ৩:আমলাতন্ত্র লোকপ্রশাসন অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরPDF
- আরো পড়ুন:- (ফ্রি পিডিএফ) অধ্যায়২: লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- অধ্যায়২: লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর ফ্রি পিডিএফ
- আরো পড়ুন:- অধ্যায়২: লোকপ্রশাসন রচনামূলক প্রশ্নোত্তর ৪টি ফ্রি পিডিএফ
০৮ সার্বভৌমত্বের একত্ববাদী তত্ত্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, সার্বভৌমত্বের একত্ববাদী তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য কী কী?
উত্তরঃ ভূমিকা : সার্বভৌমত্ব হলো সেই ক্ষমতা যা দেশের জনগণের ওপর কর্তৃত্ব করে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকেও নিয়ন্ত্রণ করে। সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা নিয়ে বহু রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে গবেষণা করেছেন ও তত্ত্ব প্রদান করেছেন এর মধ্যে একটি। উল্লেখযোগ্য তত্ত্ব হলো একত্ববাদী তত্ত্ব, যেখানে কোনো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে কর্তৃত্ববাদী হিসেবে দেখানো হয়েছে। একত্ববাদী তত্ত্ব বহুল আলোচিত একটি তত্ত্ব।
সার্বভৌমত্বের একত্ববাদ : সার্বভৌমত্বের একত্ববাদ বলতে বুঝানো হয়েছে এখানে সার্বভৌম ক্ষমতা শুধু একজন ব্যক্তি বা ব্যক্তি গোষ্ঠীর হাতে অর্পিত থাকে। এতে সার্বভৌমত্বকে একটি কর্তৃপক্ষের হাতে অর্পণ করা হয় যার ক্ষমতা থাকে চূড়ান্ত ও অবিভাজ্য। একত্ববাদে রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানকে সার্বভৌম বলে স্বীকার করা হয় না। সকল প্রতিষ্ঠানই রাষ্ট্রের অন্তর্গত।
সার্বভৌমত্বের একত্ববাদী তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য :
১. আইন দ্বারা অনিয়ন্ত্রিত : সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ আইন প্রণয়ন করে এবং কার্যকর করে। তার প্রণীত আইন সকল জনগণ ও প্রতিষ্ঠান মেনে চলে। কিন্তু সার্বভৌমত্ব কোনো আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সার্বভৌম শক্তি আইনের আওতার বাইরে।
২. চরম ও চিরস্থায়ী : সার্বভৌম ক্ষমতা চরম ও চিরস্থায়ী ক্ষমতা। এই ক্ষমতা অন্য কারও কাছে আনুগত্য প্রকাশ করে না। এর পতন হয় না। তাই একে চরম ও চিরস্থায়ী ক্ষমতা বলা হয়।
৩. উর্ধ্বতনের আদেশ : অধস্তনের প্রতি ঊর্ধ্বতনের আদেশ প্রদানের মধ্যে জন অস্টিন সার্বভৌম ক্ষমতা লক্ষ করেছেন। তার মতে, ঊর্ধ্বতন আদেশই হলো আইন যা আদালত দ্বারা স্বীকৃত। এই আইন প্রণয়নের মধ্যেই সার্বভৌম ক্ষমতা নিহিত রয়েছে।
৪. গণতন্ত্র বিরোধী : জন অস্টিনের সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রের বিরোধী। এতে জনগণের মতামতকে প্রাধান্য না দিয়েই আইন তৈরি করা হয়। সার্বভৌম যেই রকম আইনই করুক না কেন, জনগণকে তা নিঃশর্তভাবে বৈধ হিসেবে মেনে নিতে হয়।
৫. সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান : একত্ববাদে রাষ্ট্রের অন্য কোনো সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সার্বভৌম ক্ষমতাকে অস্বীকার করা হয়। এতে রাষ্ট্র ব্যতীত অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সার্বভৌম ক্ষমতা নেই। এতে সকল প্রতিষ্ঠানের সার্বভৌমত্বকে রাষ্ট্রের হাতে অর্পণ করা হয় ।
৬. জনসার্বভৌমত্ব বিরোধী : সার্বভৌমত্বের একত্ববাদ জনগণের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করে। জনগণ চুক্তি করে সকল ক্ষমতা শাসকের হাতে অর্পণ করে। এতে জনগণের হাতে ন্যূনতম ক্ষমতা প্রদান করা হয় না । একত্ববাদ জনসার্বভৌমত্বের বিরোধী।
৭. রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নেই সাধারণত রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব আইনগত সার্বভৌমত্বকে বৈধতা প্রদান করে। কিন্তু একত্ববাদে রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব বা জনসমর্থন নির্বাচনে জয়লাভ ছাড়াই সার্বভৌম ক্ষমতা শাসকের হাতে অর্পণ করা হয়েছে।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, সার্বভৌমত্ব এর একত্ববাদী তত্ত্ব বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। সবাই আইন প্রণয়নকারী কর্তৃপক্ষের হাতে জনমতবিহীন চরম ও অবিভাজ্য ক্ষমতা অর্পণ করেছেন।
সার্বভৌম কর্তৃপক্ষ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ন্যূনতম ক্ষমতাও হস্তান্তর করেনি। রাষ্ট্রের অন্য কোনো সংঘ বা প্রতিষ্ঠানের সার্বভৌম ক্ষমতা থাকে না এবং একমাত্র রাষ্ট্রেরই তা থাকে বিধায় এই তত্ত্বকে সার্বভৌমত্বের একত্ববাদ তত্ত্ব বলা হয় ।
০৯. “সার্বভৌমত্ব ছাড়া রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না।” — ব্যাখ্যা কর।
অথবা, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষায় সার্বভৌমত্বের প্রয়োজনীয়তা লেখ ।
উত্তরঃ ভূমিকা : একটি রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার জন্য যে চারটি মৌলিক উপাদান প্রয়োজন তাদের মধ্যে অন্যতম উপাদান হলো সার্বভৌমত্ব। সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের প্রাণস্বরূপ। সার্বভৌমত্ব দ্বারাই রাষ্ট্র ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে পৃথক করা হয়েছে। রাষ্ট্র যদি তার অভ্যন্তরের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তাহলে তার দরকার হলো সার্বভৌম ক্ষমতা। এই ক্ষমতাবলে রাষ্ট্র বাহ্যিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকে।
“সার্বভৌমত্ব ছাড়া রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। উক্তিটির ব্যাখ্যা : নিম্নে উক্তিটির ব্যাখ্যা করা হলো—
১. জনগণকে নিয়ন্ত্রণ : সার্বভৌম ক্ষমতা আছে বলেই রাষ্ট্র তার অভ্যন্তরের জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। জনগণ তার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। দেশে বিশৃঙ্খলা দেখা যায় না। তাই রাষ্ট্রের জন্য সার্বভৌম ক্ষমতা অপরিহার্য।
২. সংগঠন নিয়ন্ত্রণ : সমাজে অনেক ধরনের প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন থাকে। এদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা সার্বভৌম শক্তির থাকে। এসব প্রতিষ্ঠান সার্বভৌমের কাছে অনুগত। তাই সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান হিসেবে অধিষ্ঠিত করে।
৩. রাষ্ট্রের রক্ষাকারী : সার্বভৌমত্ব থাকলে একটি রাষ্ট্র বাহিরের কোনো দেশকে বৈধভাবে আক্রমণ করতে পারে না। অর্থাৎ সার্বভৌম ক্ষমতা রাষ্ট্রকে বৈদেশিক আগ্রাসন থেকে রক্ষা করে এর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে।
৪. বৈদেশিক নীতি ও সম্পর্ক : একটি দেশকে বিশ্ব ব্যবস্থায় বৈদেশিক নীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়। সার্বভৌমত্ব থাকলে অন্য কোনো দেশ রাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রণয়নে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। রাষ্ট্র স্বাধীনভাবে বৈদেশিক নীতি প্রণয়ন করে।
৫. আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ : কোনো রাষ্ট্রের পরিচালনা, জনগণের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আইনকানুন থাকা প্রয়োজন। সার্বভৌমত্ব থাকলেই জনগণ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের আইন মেনে চলে, না হলে তারা এই আইন মেনে চলত না
৬. বিচারকার্য সম্পাদন : দেশে কোনো অন্যায়, অপরাধ সংঘটিত হলে রাষ্ট্র সার্বভৌম ক্ষমতা বলে এর বিচার সম্পন্ন করে । সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের বিচার সকলেই মেনে নেয়।
৭. রাষ্ট্রের প্রাণ : মানবদেহ যেমন প্রাণ ছাড়া বাঁচতে পারে না, ঠিক তেমনি সার্বভৌমত্ব ছাড়া রাষ্ট্র চলে না। রাষ্ট্রের সমস্ত কার্যক্রম সার্বভৌম শক্তি দ্বারা বা এর আদেশে পরিচালিত হয়। রাষ্ট্র সার্বভৌম ক্ষমতা ছাড়া অস্তিত্বহীন। সার্বভৌমত্ব দ্বারা রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষ সাধারণত কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ ছাড়া শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে পারে না। সমাজে অনেক দ্বন্দ্ব, বিবাদের সৃষ্টি হয়। সার্বভৌম ক্ষমতা তাই সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে সমাজের সকল মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সমাজকে বা রাষ্ট্রকে একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে কার্যকর করার জন্য সার্বভৌম কর্তৃপক্ষের বিকল্প নেই।
১০. আইনের সংজ্ঞা দাও ।
অথবা, আইন বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ ভূমিকা : আইন কোনো বিশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থাকে শৃঙ্খলাপূর্ণ করতে ভূমিকা রাখে। দেশের জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য সরকার আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করে। মানুষ বাধ্য না হলে অনেক সময় খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে চায় না। তাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইন প্রয়োজন। আইনের যৌক্তিকতা ও উপকারিতা আছে বলেই মানুষ আইন মেনে চলে।
আইনের শব্দগত অর্থ : আইন শব্দটি ফারসি শব্দ। আইনের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Law এ Law শব্দটি (Tutonic) ল্যাগ (ষধম) শব্দ থেকে এসেছে! যার অর্থ স্থির বা সমানভাবে প্রযোজ্য। অর্থাৎ শব্দগত দিক থেকে আইন হলো এমন কিছু নিয়ম যা সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।
আইনের সংজ্ঞা দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা, অধিকার রক্ষা করা রাষ্ট্রের কাজ। রাষ্ট্র এই কাজ করতে গিয়ে কতকগুলো নিয়মকানুন ও বিধিবিধান প্রণয়ন করে। এসব নিয়মকানুন ভঙ্গ করলে শাস্তি পেতে হয় ঐ নিয়মগুলোকেই আইন বলে
প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
টমাস হবস (Thomas Hobbes) ) বলেন, “প্রজাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সার্বভৌম ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্রীয় নেতাদের আদেশই হলো আইন ।”
বার্কার (Barker) বলেন, “কেবল রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃতি, প্রণীত ও প্রযুক্ত হলেই আইনকে আদর্শ আইন বলা যাবে না। আইনের মধ্যে বৈধতা ও নৈতিক মূল্যবোধ অবশ্যই থাকতে হবে।”
অধ্যাপক হল্যান্ড (Prof. Holland) বলেন, “আইন হলো সেসব নিয়মকানুন যা মানুষের বাহ্যিক আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সার্বভৌম রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ দ্বারা বলবৎ করা হয় ।”
এরিস্টটল (Aristotle) বলেন, “আইন হলো পক্ষপাতহীন যুক্তি।”
জন অস্টিনের (John Austin) মতে, “আইন হলো অধস্তনের প্রতি ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক কর্তৃত্বের আদেশ ।”
অধ্যাপক গেটেল (Prof. Gettell) বলেন, “রাষ্ট্র যে সকল নিয়মকানুন সৃষ্টি করে, স্বীকার করে ও বলবৎ করে তাই কেবল আইন বলে পরিগণিত হয়।”
আইনের সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা দিয়েছেন উড্রো উইলসন (Woodrow Wilson) তার মতে, “আইন হলো মানুষের প্রতিষ্ঠিত চিন্তাধারা ও অভ্যাসের সেই অংশ যা সাধারণ নিয়মের আকারে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভ করে এবং যার পিছনে সরকারের কর্তৃত্ব বা ক্ষমতার সমর্থন রয়েছে।”
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আইন হলো মানুষের বাহ্যিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সাধারণ নিয়ম যা সরকারের যথাযথ নির্দেশের মাধ্যমে চালু করে এবং সেগুলো লঙ্ঘন হলে শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করে।
আইনের শাসন যেকোনো সমাজকে সুখী, সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ করে তোলে। আইন মেনে চললে সামাজিক ও ব্যক্তিজীবনে অনেক উপকার পাওয়া যায়। তাই সমাজের মানুষ আইনকে শ্রদ্ধা করে ও মেনে চলে ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। ফ্রি পিডিএফ ফাইল এখান থেকে ডাউনলোড করে নিন। (ফ্রি PDF) অধ্যায় ৩:মৌলিক ধারণাসমূহ:সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর