HSC | বাংলা ২য় | প্রতিবেদন রচনা ১৬-২১ | PDF Download: বাংলা দ্বিতীয় পত্র হতে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রতিবেদন রচনা পত্র গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টির গুরুপূর্ণ কিছু প্রতিবেদন রচনা পত্র নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
১৬. নগর উন্নয়ন বিষয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজন দ্রুত নগর উন্নয়ন
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজজীবন মূলত কৃষিভিত্তিক। তবে দেশের সার্বিক উন্নয়নের মূল কেন্দ্রবিন্দু নগরগুলোই। গ্রামগুলোকেও তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ডের সুফল লাভের জন্য নির্ভর করতে হয় নগরগুলোর ওপর। বর্তমান বিশ্বসভ্যতা প্রধানত নগরভিত্তিক। তাই নগর উন্নয়ন ও নাগরিকসেবার প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগী না হয়ে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্ভব নয়।
ভারসাম্যহীন নগরায়ন
বাংলাদেশের নগরায়নে ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ সুস্পষ্ট। কারণ স্বাধীন-উত্তর সময়ে নগরায়ন ঘটেছে অত্যন্ত দ্রæত হারে। ১৯৭১ সালে দেশের নগর জনসংখ্যা ছিল ৫ মিলিয়ন আর ২০১০ সালে নগর জনসংখ্যা প্রায় ৫০ মিলিয়ন। প্রতি ১২ বছরে নগরের জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নগর উন্নয়ন ঘটেনি।
বরং পরিকল্পনার অভাবে বা এর দুর্বলতার কারণে অথবা সুচিন্তিতভাবে উন্নয়ন বিনিয়োগ ব্যবস্থা না হওয়ায় দেশে ভারসাম্যহীন নগরায়ন ঘটছে। ফলে আমরা দেখি ঢাকা শহরে মাত্রাতিরিক্ত বিনিয়োগ আর ঢাকার বাইরে গুটিকয়েক বড় শহরের নগর উন্নয়ন।
নগরভিত্তিক সমস্যা
নগরভিত্তিক সমস্যাসমূহ মেগাসিটি ঢাকা থেকে শুরু করে যেকোনো ছোট শহর পর্যন্ত দৃশ্যমান। প্রতিটি সমস্যার সমাধান প্রচেষ্টাই এক একটি চ্যালেঞ্জ। এসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে :
আইনশৃঙ্খলা সমস্যা।
বিভিন্ন সরকারি সেবা-পরিসেবার অপ্রতুলতা।
পরিবহন অপর্যাপ্ততা ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে সৃষ্টি হয়েছে পরিবহন ও যানজট সমস্যা, সড়ক দুর্ঘটনা ইত্যাদি।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিনোদনসেবার অপ্রতুলতা এবং বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা।
আবাসন সংকট।
পরিবেশ দূষণ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত সমস্যা ও অগ্নিকাণ্ড।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের সমস্যা।
বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, বিশেষ করে নারী ও শিশু নির্যাতন ইত্যাদি।
সমস্যা সমাধানের কৌশল
নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজন একটি জাতীয় নগরায়ন নীতিমালা প্রপ্রণ। যার মূল লক্ষ্য হবে নগর-দারিদ্র্য দূরীকরণ ও নগর-দরিদ্রদের জীবন মান উন্নতকরণ।
রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রাম অভিমুখী জনস্রোত হ্রাস করার ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। এজন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুযোগ-সুবিধাসহ প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ নীতি গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন জরুরি। এক্ষেত্রে জেলা শহর, মাঝারি শহর, উপজেলা শহর, এমনকি ছোট শহরেও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা প্রয়োজন।
প্রয়োজন দক্ষতার সঙ্গে নগর পরিচালনা করা। নগর পরিচালনা বলতে বোঝায় একটি নগরের সামগ্রিক উন্নয়ন ও বিদ্যমান সমস্যাবলির সমাধানের জন্য সুচিন্তিত ও সুসমন্বিত ব্যবস্থাপনা। নগর পরিচালনার প্রধান দায়িত্ব স্থানীয় পৌর সরকারের (পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন) ওপর বর্তায়।
বর্তমানে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাসমূহের উন্নয়ন ও কর্মসূচি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে যথেষ্ট স্বচ্ছতা নেই। এছাড়াও রয়েছে অনেক আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। নগর উন্নয়ন ও নাগরিক সেবার মান উন্নত করার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এবং দক্ষতার সঙ্গে সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।
প্রতিবেদক
ইসরাত জাহান
ছোটরা, কুমিল্লা
১১/০২/২০১৬।
[এখানে প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা সংবলিত খাম আঁকতে হবে]
১৭. খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার
‘খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল’ বিষয়টি মানুষের জন্য এক আতঙ্কের নাম। প্রায় প্রতিদিনই এ নিয়ে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিভিন্ন সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে। মাছ, মাংস, চিনি, লবণ, চাল, আটা, দুধ, ঘি, মিষ্টি, ওষুধÑ ভেজাল সর্বত্রই। এমনকি মিনারেল ওয়াটার নামে বোতলবন্দি ‘বিশুদ্ধ’ পানিতেও ভেজাল। উদ্বেগের বিষয় হলোÑ হচ্ছে এসব নকল ও ভেজাল খাদ্যসামগ্রীই বিশুদ্ধ বা খাঁটি লেবেল লাগিয়ে অনায়াসে বিক্রি হচ্ছে।
ভেজালের বর্তমান চিত্র
বর্তমানে দেশে ভেজালের দৌরাত্ম্যের কথা আমরা সবাই কমবেশি জানি। কিন্তু ভয়ের কথা হলো ভেজালের আওতার মধ্যে প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন দ্রব্য যুক্ত হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত বাজার থেকে কিনে যেসব খাদ্যদ্রব্য খেয়ে থাকি, এদের মধ্যে কত শতাংশ ভেজাল তা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের এক সূত্র থেকে জানা যায়, রাজধানীতে বিক্রিত খাদ্যসামগ্রীর শতকরা সত্তর ভাগ ভেজালযুক্ত।
অন্যদিকে ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ-এর সূত্র মতে, দেশের পঞ্চাশ শতাংশ খাদ্যদ্রব্যই ভেজাল মিশ্রিত করে বিক্রি করা হয়। ভেজাল দেওয়ার প্রক্রিয়ায় খাদ্যশস্যে বহির্জাত পদার্থ সরাসরি যোগ করা হয়, যেমন : ওজন বৃদ্ধির জন্য বালি বা কাঁকর, ভালো শস্যের সঙ্গে কীটপতঙ্গ আক্রান্ত বা বিনষ্ট শস্য মেশানো ইত্যাদি। অনেক সময় মজুদ খাদ্যশস্যের ওজন বাড়ানোর জন্য কেউ কেউ তাতে পানি ছিটায়।
ঘিয়ের সঙ্গে পশুচর্বি দিয়ে ভেজাল করা হয়। তিল বা নারিকেল তেলের সঙ্গে বাদাম তেল বা তুলাবীজের তেল মেশানো হয়। সয়াবিন তেলের সঙ্গে পামতেলের ভেজাল করা হয়। অনেক সময় দুধে পানি মিশিয়ে ভেজাল দুধ বাজারজাত করা হয়।
বিভিন্ন ফলের রসের নামে কৃত্রিম ও নিষিদ্ধ দ্রব্য ব্যবহার করে নকল রস তৈরি হয়ে থাকে। বর্তমানে মিনারেল ওয়াটার নামে বাজারে যে পানির ব্যবসা চলছে তাতে গুণ ও মানের নিশ্চয়তা অতি সামান্য বা অনেক ক্ষেত্রে নেই বললেই চলে।
ভেজাল মেশানোর কারণ
খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানোর প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের লোভ। নৈতিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের অভাবে ব্যবসায়ীরা লোভে পড়ে নানা রকম দুর্নীতি ও অসৎ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।
ভোগবাদী প্রবণতা এবং রাতারাতি ধনী হওয়ার প্রবণতা থেকেও খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মিশিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা করছে।
প্রশাসনিক নিয়মকানুনের দুর্বলতার কারণে এবং কঠিন দণ্ডবিধি বা শক্ত কোনো আইন কার্যকর না থাকায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিন্দনীয় এ কাজটির সঙ্গে অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে।
খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল রোধের উপায়
দেশের সংবিধানের ১৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে : ‘জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন রাষ্ট্রের অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবে।’ বাজার যেখানে ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্যদ্রব্যে পূর্ণ সেখানে জনগণের ‘পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন’ করতে হলেও রাষ্ট্রকে অবশ্যই সর্বাগ্রে ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্যদ্রব্য এবং এসবের জোগানদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জনগণকেও এ ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে।
খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানো ও তার প্রতিকার সম্পর্কে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ নামে একটি আইন করা হয়েছে। আইনটির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত হবে। খাদ্যনমুনা পরীক্ষা করার জন্য প্রত্যেক জেলায় এবং সম্ভব হলে বড় বড় বাজারগুলোতে পরীক্ষাগার স্থাপন করতে হবে। বিএসটিআইকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং বাজার তদারকির জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে।
পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ এবং পণ্যের প্যাকেটের গায়ে কোম্পানির লাইসেন্স নম্বর, ট্রেড মার্ক, পণ্যের উৎপাদন সময়সহ এমন সব কৌশল ও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে ক্রেতাসাধারণ সহজেই খাদ্যদ্রব্যের ভেজাল বুঝতে পারে। ভেজালের প্রতিকারের লক্ষ্যে ক্রেতাস্বার্থ আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।
প্রচারমাধ্যমে খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের নানা রকম প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। সমাজে ভেজালকারীকে চিহ্নিত করে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। ব্যবসায়ীদের খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের ভয়াবহ দিক সম্পর্কে জানিয়ে তাদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে।
আশা করা যায়, উল্লিখিত পদক্ষেপসমূহের আলোকে সরকারের সদিচ্ছা এবং আইন প্রয়োগকারীদের সততা অটুট থাকলে খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের পরিমাণ কমবে।
প্রতিবেদক
নিগার সুলতানা
সাত্তারখান, চট্টগ্রাম।
[এখানে প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা সংবলিত খাম আঁকতে হবে]
১৮. যুব সমাজের অবক্ষয়ের চিত্র তুলে ধরে পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
উত্তর :
ধ্বংসের মুখে জাতির ভবিষ্যৎ কাণ্ডারীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক : যারা বয়সে নবীন, যাদের আত্মবিশ্বাস রয়েছে অগাধ, যারা অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়ায় না, যারা পুরাতনকে ভেঙে নতুন কিছু গড়তে চায় তারাই যুবক। তারা স্থবির নয়, তারা চঞ্চল। তারা পরাজয় মানতে নারাজ। তারা দেশ ও জাতির গৌরব। এ তরুণরাই যদি বিপরীতমুখী রূপ ধারণ করে অন্যায়ের দিকে পা বাড়ায় তাহলে জাতি অনিবার্য ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যায়।
যুবসমাজের এ অবস্থাকেই বলা হয় অবক্ষয়। আমাদের যুবসমাজ নানা অবক্ষয়ের শিকার। বেকারত্ব, সন্ত্রাস, রাজনৈতিক কুপ্রভাব, অপসংস্কৃতি, অর্থনৈতিক দৈন্য ইত্যাদি যুবসমাজকে দারুণভাবে প্রভাবিত করছে। ফলে তারা সুস্থ জীবন থেকে আলাদা হয়ে ঝুঁকে পড়ছে অবক্ষয়ের গহীন আবর্তে।
অবক্ষয়ের কারণগুলো নিম্নরূপ :
জীবনের আদর্শ ও মূল্যবোধের অভাব : আমাদের যুবসমাজের সামনে জীবন্ত আদর্শের একান্ত অভাব। বড়দের মাঝে তারা আদর্শবান ব্যক্তিত্ব খুব কমই খুঁজে পাচ্ছেÑ যাদের কাছ থেকে তারা সৎ পথের অনুপ্রেরণা পাবে। বরং দেখতে পাচ্ছে রাজনীতির নামে মিথ্যাচার, সমাজসেবার নামে স্বেচ্ছাচার, আদর্শের নামে প্রতারণা। মূলত সর্বত্র আজ যে মূল্যবোধের অভাব দেখা দিয়েছে, তার দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে বর্তমান যুবসমাজ।
অপসংস্কৃতির প্রভাব : যুবসমাজের ওপর সিনেমা, টিভি, বিভিন্ন প্রকার সংবাদপত্র, এসবের কুপ্রভাব অত্যন্ত বেশি। অধিকাংশ সিনেমার কাহিনি, নাচ-গান, পোশাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদি এমনভাবে সন্নিবেশিত যে তাতে যুবকেরা অতি সস্তায় ও সহজে আমোদ-প্রমোদের উপকরণ খুঁজে পায়। তারা অনেক সময় এসব উদ্ভট ও অবাস্তব কাহিনিকে বাস্তব জীবন বলে চালিয়ে দিতে গিয়ে মারাত্মক ভুল করে বসে। অপসংস্কৃতি গ্রাস করছে যুবসমাজকে। বর্তমানে খুন, রাহাজানি, ছিনতাই, ধর্ষণ এসব কার্যকলাপের মূলে রয়েছে অপসংস্কৃতির প্রভাব।
মাদকদ্রব্যের ভ‚মিকা : কোনো দেশের যুবস¤প্রদায় মাদকাসক্ত হওয়ার কারণ হচ্ছে সে দেশের নৈতিক চরিত্রের অনিবার্য অধঃপতন। গাঁজা, ভাং, আফিম, হেরোইন, প্যাথেড্রিন, কোকেন, হাসিস, মারিজুয়ানা ইত্যাদি নানা ক্ষতিকর মাদকদ্রব্য আজ সর্বত্র সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা এর অবাধ ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক দলের প্রভাব : রাজনৈতিক দলের অসৎ নেতারা নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করার মানসে যুবসমাজকে অনেক সময় কুপথে পরিচালিত করে। মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে যুবকদের ক্ষমতা ও অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ক্যাডার তৈরি করে নানা অপকর্মে লিপ্ত করে। যার পরিণাম যুবসমাজের অধঃপতন।
বেকারত্ব : বেকারত্ব যুবসমাজের বিপথগামিতার অন্যতম প্রধান কারণ। লেখাপড়া শেষে যখন তারা কোনো কাজ পায় না, তখন অসৎ উপায়ে উপার্জনের জন্য রাস্তায় নামে। চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি, ছিনতাই, অপহরণ ইত্যাদি অপরাধমূলক কাজ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। এভাবে বেকার যুবসমাজ জীবন সম্পর্কে হতাশায় ভোগে এবং নানা অপরাধে লিপ্ত হয়।
শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস : শিক্ষায় অব্যবস্থার নানা অসঙ্গতিও যুবকদের অনেক সময় বিপথগামী করে। ভর্তি সমস্যা, পুস্তক সমস্যা, আবাসিক সমস্যা, খাদ্য সমস্যা, ফল প্রকাশে অহেতুক বিলম্ব, যখন তখন ধর্মঘট, দলবাজিÑএসব ঘটনা তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণ খুবই ব্যাপার। তরুণদের মানসিকতা নষ্ট করে দেয়। গুটিকয়েক সন্ত্রাসী সমগ্র ছাত্রসমাজকে জিম্মি করে রেখেছে। আর এর শিকার হচ্ছে আমাদের গোটা যুবসমাজ।
তরুণরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের বিপথগামিতা অবশ্যই রোধ করতে হবে। যুবসমাজকে সুপথে ফিরিয়ে আনা, আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনের ভার সচেতন মহলের সবাইকে নিতে হবে। প্রচার মাধ্যমগুলো; বিশেষ করে টিভি, সিনেমা, পত্র-পত্রিকাগুলোকে গঠনমূলক ভ‚মিকা পালন করতে হবে। যুবসমাজের জন্য খেলাধুলা ও শরীর চর্চার ব্যবস্থা নিতে হবে। বেকারত্ব দূর করতে হবে। শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সব প্রকার মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
প্রতিবেদক
কামরুল হাসান
হবিগঞ্জ, সিলেট।
[এখানে পত্রিকার ঠিকানা সংবলিত খাম আঁকতে হবে]
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৬১-১৮৫ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৪১-১৬০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১২১-১৪০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | বোর্ড ভিত্তিক অনুবাদ ১০১-১২০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় পত্র | অনুবাদ ৬১-৮০ | Onubad | PDF Download
১৯. তোমার বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য বিজ্ঞান মেলার ওপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করো।
উত্তর :
১২/০৩/২০১৬
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
টিকাটুলি মডেল হাই স্কুল
টিকাটুলি, ঢাকা।
বিষয় : বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন সম্পর্কে প্রতিবেদন।
জনাব,
আপনার দ্বারা আদিষ্ট হয়ে টিকাটুলি মডেল হাই স্কুলে অনুষ্ঠিতব্য বিজ্ঞান মেলার আয়োজন সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য নিচে উপস্থাপন করা হলো।
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় চলছে বিজ্ঞান মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি
প্রতি বছরের মতো এবারও টিকাটুলি মডেল হাই স্কুলে আয়োজিত হতে যাচ্ছে দিনব্যাপী বিজ্ঞান মেলা। এবার এ মেলার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে মার্চ মাসের ২০ তারিখ। মোট ২৩টি স্কুল এ মেলায় অংশ নিতে যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও ঢাকার বাইরের কয়েকটি নামকরা স্কুলও রয়েছে। আয়োজনটিকে সর্বাঙ্গীণভাবে সফল করে তোলার জন্য ছাত্র ও শিক্ষকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন আইসিটি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক মাহফুজুর রহমান স্যার। গত সোমবার কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে স্কুলের অডিটোরিয়ামে একটি মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ নানা বিষয়ে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। আয়োজনটি সফল করার ব্যাপারে কার কী ভ‚মিকা থাকবে তা-ও সভায় নির্ধারণ করা হয়।
এদিকে স্কুলের পক্ষ থেকে এ মেলায় অংশ নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে লক্ষ করা গিয়েছে বেশ উৎসাহ। সবাই নিজ নিজ প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। গত বছরের মতো এবারও প্রথম পুরস্কারটি জিতে নিতে তারা বদ্ধ পরিকর। শিক্ষকগণ তাদের কর্মকাণ্ডে আন্তরিকভাবে সহায়তা করছেন।
মেলার দিন বিদ্যালয় ভবন ও প্রাঙ্গণটিকে বর্ণিল সাজে সাজানো হবে। অংশগ্রহণকারী বিচারকগণ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য থাকবে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা। তাছাড়া মেলার প্রারম্ভে ছোট পরিসরে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেরও আয়োজন থাকবে। এই সবকিছুর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ও জনবলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবারের বিজ্ঞান মেলার আয়োজন খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।
প্রতিবেদক
জিনিয়া সুলতানা
নবম শ্রেণি, বিজ্ঞান শাখা
রোল নং-১
২০. মাদকাসক্তি যুবসমাজের অবক্ষয়ের অন্যতম একটি প্রধান কারণ, এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী একটি প্রতিবেদন রচনা করো।
উত্তর :
নিজস্ব প্রতিবেদক : উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও মাদকদ্রব্যের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের তরুণ সমাজের একটি বিরাট অংশ ভয়াবহ মাদকাসক্তির শিকার। বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য ব্যবহারের পরিমাণ ও ব্যবহারকারীর সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণামতে এ দেশের ১৭ ভাগ লোক মাদকাসক্ত। এ দেশে অবৈধভাবে প্রচুর পরিমাণে মাদক বিক্রি হয় এবং মাদকদ্রব্যের এই সহজলভ্যতাই আমাদের দেশে দিন দিন মাদকগ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি করছে।
মাদকাসক্ত ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনে ভয়াবহ পরিণাম ডেকে আনে। কখনো খারাপ লোকের প্ররোচনা, হতাশা, নৈরাশ্য অথবা নিছক কৌত‚হলবশত কেউ একবার মাদক গ্রহণ শুরু করলে সে আর এই নেশা থেকে ফিরে আসতে পারে না। দিনের পর দিন তার এ নেশা আরো বাড়তে থাকে। অনেকেই ভাবে মাদক গ্রহণের মাধ্যমে তারা দুঃখকে ভুলে থাকার শক্তি পায়।
কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ অমূলক। মাদক মানুষের মানসিক সুস্থতাকে নষ্ট করে তাকে মানসিকভাবে আরো দুর্বল করে তোলে। মাদক গ্রহণের ফলে মানুষের আচরণেও অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি অত্যন্ত সহজেই অনৈতিক ও বেআইনি কাজে জড়িয়ে পড়ে। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি করে, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি অসৎ পথ অবলম্বন করে।
মাদকাসক্তরা পরিবার এবং সমাজে ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে। মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন জটিল ও দুরারোগ্য রোগব্যাধি দেহকে আচ্ছন্ন করতে থাকে। ব্যক্তিত্বের অবসান ঘটে ও কর্মক্ষমতা লোপ পায়।
মাদকাসক্তির সর্বনাশা ছোবল দেশের তরুণ সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজের জন্য মাদকাসক্তি নির্মূল করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন ব্যক্তিগত ও সামাজিক সচেতনতা ও দৃঢ় প্রতিরোধ ব্যবস্থা। তবেই আমরা পেতে পারি একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ।
প্রতিবেদক
আরেফিন
চরফ্যাশন, ভোলা।
[এখানে পত্রিকার ঠিকানা সংবলিত খাম আঁকতে হবে]
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।