পঞ্চম শ্রেণি | ইসলাম শিক্ষা | অধ্যায় ২ | বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর | PDF: পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়টির ২য় অধ্যায়টি হতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
দ্বিতীয় অধ্যায় – ইবাদত
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও সমাধান
বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রশ্ন- ১ \ ইবাদতের তাৎপর্য বর্ণনা কর।
উত্তর : আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তিনি সবকিছুকে আমাদের অনুগত করে দিয়েছেন। আর তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁরই ইবাদতের জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “আর আমি জিন ও মানবজাতিকে কেবল আমচার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।”
তাই আল্লাহ আমাদের মাবুদ আর আমরা তাঁর আবদ বা অনুগত বান্দা। এ হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো আল্লাহ তায়ালচার আদেশ-নিষেধ মেনেলা। আর এটাই ইবাদত। সালাত, সাওম, হজ, যাকাত, সাদকা, দান-খয়রাত, আল্লাহর পথে জিহাদ এগুলো মৌলিক ইবাদত। তবে শুধুমাত্র এগুলোর মধ্যেই ইবাদত সীমাবদ্ধ নয়। আল্লাহ তায়ালচার সন্তুষ্টির জন্য রাসুল (স)-এর দেখানো পথে যেকোনো ভালো কাজই ইবাদতের শামিল।
প্রশ্ন- ২ \ সালাতের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : ইমানের পরই সালাতের স্থান। সালাত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রাসুল (স) বলেছেন, “সালাত দীন ইসলামের খুঁটি। যে সালাত কায়েম করল, সে দীনরূপ ইমচারতটি কায়েম রাখল। আর যে সালাত ত্যাগ করল, সে দীনরূপ ইমচারতটি ধ্বংস করল।
কুরআন মজিদে বচারবচার সালাত কায়েমের হুকুম দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে “সালাত কায়েম করো।” দিন-রাত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জীবনের প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ তায়ালচার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বান্দচার মনে আল্লাহর বিধানমতোলচার অনুপ্রেরণা জোগায়।
সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালচার নৈকট্য লাভ করতে পচারে। সালাতের গুরুত্ব প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীলতা ও খচারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।” আর মহানবি (স) বলেন “সালাত জান্নাতেরাবি।” সুতরাং আমাদের জান্নাত লাভ করতে হলে নিয়মিত সালাত আদায় করতে হবে।
প্রশ্ন- ৩ \ পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময় বর্ণনা কর।
উত্তর : সালাত আদায়ের নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। যথাসময়ে সালাত আদায় না করলে আদায় হয় না। নিচে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময় বর্ণনা করা হলো :
১. ফজর : ফজর সালাতের সময় শুরু হয় সুবহি সাদিক হওয়চার সাথে সাথে এবং সূর্য উদয়ের পূর্ব পর্যন্ত এর সময় থাকে।
২. যোহর : দুপুরের সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়লেই যোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়। ছায়া আসলি বাদে কোনো বস্তুর ছায়া দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত এর সময় থাকে।
৩. আসর : যোহরের সময় শেষ হলেই আসরের সময় শুরু হয় এবং সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে।
৪. মাগরিব : সূর্যাস্তের পর থেকে মাগরিবের সময় শুরু হয় এবং পশ্চিম আকাশে যতক্ষণ লালিমা বিদ্যমান থাকে ততক্ষণ সময় থাকে।
৫. এশা : মাগরিবের সময় শেষ হলেই এশচার সালাতের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং সুবহি সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে।
প্রশ্ন- ৪ \ সালাতের ফজিলত ও শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর : আল্লাহ তায়ালচার নিকট বান্দচার আনুগত্য প্রকাশের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলো সালাত। নিচে সালাতের ফজিলত ও
শিক্ষা বর্ণনা করা হলো :
সালাতের ফজিলত : সালাতের ফজিলত অনেক। যেমন :
১. সালাত জীবনের প্রতি মুহ‚র্তে আল্লাহ তায়ালচার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
২. সালাত বান্দচার মনে আল্লাহর বিধানমতোলচার অনুপ্রেরণা জোগায়।
৩. সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালচার নৈকট্য লাভ করতে পচারে।
৪. সালাতের মাধ্যমে মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যায়।
৫. সালাতের ফজিলত সম্পর্কে মহানবি (স) বলেছেন, “কোনো বান্দা জামাআতের সাথে সালাত আদায় করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে পাঁচটি পুরস্কচার দিবেন। যথা :
র. তচার জীবিকচার অভাব দূর করবেন।
রর. কবরের আজাব থেকে মুক্তি দিবেন।
ররর. হাশরে আমলনামা ডান হাতে দিবেন।
রা. পুলসিরাত বিজলীর মতো দ্রæত পচার করাবেন।
া. তাকে বিনা হিসাবে জান্নাত দান করবেন।
সালাতের শিক্ষা :
১. সালাত মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকচার শিক্ষা দেয়।
২. সালাতের মাধ্যমে দৈনিক পাঁচবচার মিলিত হওয়চার সুবাদে মুসলমানদের মধ্যে পচারস্পরিক ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব গড়ে ওঠে।
৩. ইমামের পেছনে জামাআতবদ্ধ হয়ে সালাত আদায়ের ফলে মুসল্লিগণ নেতচার প্রতি আনুগত্যের শিক্ষা পায়।
প্রশ্ন- ৫ \চার রাকআত ফরজ সালাত আদায়ের নিয়ম লেখ।
উত্তর :চার রাকআত ফরজ সালাত আদায়ের নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো : প্রথমে ওযু করে পবিত্র জায়গায় কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াব। তচারপর নিয়ত করে আঙুল কিবলামুখী করে দুহাত কান পর্যন্ত তুলে ‘আল্লাহু আকবর’ বলব এবং নাভির ওপর হাত বাঁধব। মেয়েরা হাত বাঁধবে বুকের ওপর। এভাবে প্রথম রাকআত শুরু হবে। তচারপর ‘সানা’ (সুবহানাকা) পড়ব।
‘আউযুবিলাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম’ ‘বিসমিলাহির রাহমানির রাহিম’ বলে ‘সূরা ফাতিহা’ পড়ব। সূরা ফাতিহা পড়চার পর সঙ্গে সঙ্গেই অন্য কোনো একটি সূরা কিংবা সূরচার কমপক্ষে তিন আয়াত পড়ব। এরপর ‘আল্লাহু আকবর’ বলে রুকু করব। রুকুতে গিয়ে অন্তত তিনবচার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম’ বলব। এরপর ‘সামি আল্লাহু লিমান হামিদা’ বলে সোজা হয়ে দাঁড়াব। দাঁড়িয়ে ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলব।
তচারপর আল্লাহু আকবর বলে সিজদাহ করব, সেজদায় গিয়ে অন্তত তিনবচার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ বলব। তচারপর সোজা হয়ে বসব। এরপর আবচার ‘আল্লাহু আকবর’ বলে পুনরায় সিজদায় যাব এবং কমপক্ষে তিনবচার সুবহানা রাব্বিয়াল আলা বলব। তচারপর ‘আল্লাহু আকবর’ বলে সোজা হয়ে দাঁড়াব। এভাবে প্রথম রাকআত শেষ এবং দ্বিতীয় রাকআত শুরু। দ্বিতীয় রাকআতেও প্রথম রাকআতের ন্যায় যথচারীতি সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা পড় রুকু, সিজদাহ করে সোজা হয়ে বসব।
তচারপর তাশহহুদ পড়ে তৃতীয় রাকআতের জন্য আল্লাহু আকবর বলে উঠে দাঁড়াব। তৃতীয় ওতুর্থ রাকআতে সূরা ফাতিহচার পরে কোনো সূরা না মিলিয়ে এভাবেই আদায় করব।তুর্থ রাকআতের সিজদচার পরে বসে তাশাহহুদ, দরুদ এবং দোয়া মাসুরা পড়ে প্রথমে ডানে এবং পরে বামে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করব।
প্রশ্ন- ৬ \ সালাতের আহকামগুলো লেখ।
উত্তর : সালাত শুরু করচার আগে যে ফরজ কাজগুলো আছে, সেগুলোকে সালাতের আহকাম বা শর্ত বলে। আহকাম ৭টি। যথা :
১. শরীর পাক : প্রয়োজনমতো ওযু, গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে শরীর পাক-পবিত্র করা।
২. কাপড় পাক : পরিধানের কাপড় পাক হওয়া।
৩. জায়গা পাক : সালাত আদায়ের স্থান পাক হওয়া।
৪. সতর ঢাকা : পুরুষের নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত এবং স্ত্রীলোকের মুখমণ্ডল, হাতের কবজি এবং পায়ের পাতা ছাড়া সমস্ত শরীর ঢাকা।
৫. কিবলামুখী হওয়া : কাবচার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করা।
৬. ওয়াক্ত হওয়া : সালাতের নির্ধচারিত সময় হওয়া।
৭. নিয়ত করা : যে ওয়াক্তের সালাত আদায় করবে মনে মনে তচার নিয়ত করা।
প্রশ্ন- ৭ \ আরকান বলতে কী বোঝ? আরকানগুলো কী কী?
উত্তর : সালাতের ভেতরে যে ফরজ কাজগুলো আছে সেগুলোকে সালাতের আরকান বলে। আরকান মোট সাতটি। যথা :
১. তাকবিরে তাহরিমা : আল্লাহু আকবর বলে সালাত শুরু করা।
২. কিয়াম : দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। তবে দাঁড়াতে সক্ষম না হলে বসে বা শুয়ে যেকোনো অবস্থায় সালাত আদায় করতে হয়।
৩. কিরাত : কুরআন মজিদের কিছু অংশ পাঠ করা।
৪. রুকু করা।
৫. সিজদাহ করা।
৬. শেষ বৈঠকে বসা : যে বৈঠকে তাশাহ্হুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালামের মাধ্যমে সালাত শেষ করা হয় তাকেই বলে শেষ বৈঠক।
৭. কোনো কাজের মাধ্যমে সালাত শেষ করা। সাধচারণত তা সালামের মাধ্যমে করা হয়।
প্রশ্ন- ৮ \ সালাতের ওয়াজিবগুলো কী কী?
উত্তর : সালাতের ওয়াজিব ১৪টি। এগুলো হলো :
১. প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহা পড়া।
২. সূরা ফাতিহচার সাথে অন্য একটি সূরা বা কুরআনের কিছু অংশ পড়া।
৩. সালাতের ফরজ ও ওয়াজিবগুলো আদায় করচার সময় ধচারাবাহিকতা রক্ষা করা।
৪. রুকু করচার পর সোজা হয়ে দাঁড়ানো।
৫. দুই সিজদাহর মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।
৬. তিন বাচার রাকআত বিশিষ্ট সালাতে দ্বিতীয় রাকআতের পর তাশাহহুদ পড়চার জন্য বসা।
৭. সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়া।
৮. মাগরিব ও এশচার ফরজের প্রথম দুই রাকআতে এবং ফজর ও জুমুআর ফরজ সালাতে এবং দুই ঈদের সালাতে ইমামের সরবে কুরআন পাঠ করা এবং অন্যান্য সালাতে নীরবে পাঠ করা।
৯. বিতর সালাতে দোয়া কুনুত পড়া।
১০. দুই ঈদের সালাতে অতিরিক্ত ছয় তাকবির বলা।
১১. রুকু ও সিজদাহ্য় কমপক্ষে এক তসবি পরিমাণ অবস্থান।
১২. সালাতে সিজদাহর আয়াত পাঠ করে তিলাওয়াতে সিজদাহ করা।
১৩. ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়চারহমাতুলাহ’ বলে সালাত শেষ করা।
১৪. ভুলে কোনো ওয়াজিব কাজ বাদ পড়লে সাহু সিজদাহ দেওয়া।
প্রশ্ন- ৯ \ মসজিদের আদবগুলো কী কী?
উত্তর : মসজিদের আদবগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. পাক-পবিত্র শরীর ও পোশাক নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করা।
২. পবিত্র মন ও বিনয়-বিনম্রতচার সাথে মসজিদে প্রবেশ করা।
৩. মসজিদে প্রবেশের সময় “আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওয়াবা রাহমাতিকা”-এ দোয়া পড়া।
৪. মসজিদে প্রবেশের সময় হুড়োহুড়ি, ধাক্কা-ধাক্কি না করা। মসজিদে কোনো খালি জায়গা দেখে বসা।
৫. লোকজনকে ডিঙিয়ে সামনের দিকে না যাওয়া।
৬. মসজিদে কোনো অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা।
৭. নীরবতা পালন করা। উচ্চস্বরে কথা না বলা।
৮. কুরআন তিলাওয়াত ও ধর্মীয় কথাবচার্তা শোনা।
৯. কোনো অবস্থাতেই হৈচৈ, শোরগোল না করা।
১০. সালাতরত কোনো মুসল্লির সামনে দিয়ে যাতায়াত না করা।
১১. মোবাইল খোলা রেখে বা অন্য কোনোভাবে মসজিদের শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করা।
১২. মসজিদে বিনয় ও একাগ্রতচার সাথে ইবাদত করা।
১৩. মসজিদ থেকে বের হওয়চার সময় “আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিকা”- এ দোয়া পড়া।
প্রশ্ন- ১০ \ সাওমের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর : মৌলিক ইবাদতগুলোর মধ্যে সালাত ও যাকাতের পরই সাওমের স্থান। সাওম ধনী-দরিদ্র সকল মুসলমানের ওপর ফরজ ইবাদত। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন “হে ইমানদচারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হলো। যেহেতু সাওমকে ফরজ করা হয়েছে, সুতরাং যে তা অস্বীকচার করবে সে কাফির হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি বিনা ওজরে পালন করবে না সে গুনাহগচার হবে।
সাওম পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন করা। তাকওয়া মানে আল্লাহকে ভয় করা, সবরকম পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা, সংযম অবলম্বন করা। আল্লাহ তায়ালা বরেন, “যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পচার।” সাওম পালনকালে মুমিন ব্যক্তি কুপ্রবৃত্তি, কামনা-বাসনা ও লোভ-লালসা থেকে নিজেকে বিরত রাখে এবং পালনকচারীর সামনে যত লোভনীয় খাবচার আসুক, যতই ক্ষুধা-তৃষ্ণা লাগুক সূর্যাস্ত না হওয়া পর্যন্ত সে কিছুই খায় না।
যেখানে দেখচার মতো কেউ নেই সেখানেও এক বিন্দু পানি পান করে না। এটি আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির উৎকৃষ্ট উপায় বিধায় এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।
প্রশ্ন- ১১ \ যাকাতের তাৎপর্য ও শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর : ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে সালাতের পরই যাকাতের গুরুত্ব বেশি। যাকাতের তাৎপর্য ও শিক্ষা হলো :
যাকাতের তাৎপর্য : যাকাত দেওয়া দরিদ্রদের প্রতি ধনীদের কোনো অনুগ্রহ বা অনুকম্পা নয়; বরং তচার সম্পদকে পবিত্র করচার এবং তচার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করচার একটি অবশ্য করণীয় ব্যবস্থা। ধনীদের সম্পদে গরিবদের অধিকচার আছে, গরিবদের অংশ দিয়ে দিলে অবশিষ্ট সম্পদ মালিকের জন্য পবিত্র হয়ে যায়। তাই যাকাতের তাৎপর্য অপরিসীম।
যাকাতের শিক্ষা : যাকাত দিলে ধনী-গরিবের ব্যবধান কমে যায়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের খালিক ও মালিক। সকল ধন-সম্পদের মালিকও তিনি। “সম্পদের মালিকানা আল্লাহর” এ কথচার বাস্তব প্রমাণ ঘটে যাকাতে। যাকাত না দিলে আল্লাহর মালিকানা অস্বীকচার করা হয়। যচারা সম্পদ পুঞ্জীভ‚ত করে রাখে, যাকাত দেয় না, তাদেরকে পরকালে কঠিন আজাব ভোগ করতে হবে। সুতরাং আমরা সঠিকভাবে যাকাত প্রদান করব।
প্রশ্ন- ১২ \ যাকাতের মাসচারিফ কয়টি ও কী কী বর্ণনা কর।
উত্তর : যাদেরকে যাকাত দেওয়া যায় তাদেরকে বলে যাকাতের মাসচারিফ। যাকাতের মাসচারিফ হলো আটটি। এগুলো হলো:
১. ফকির বা অভাবগ্রস্ত
২. মিসকিন বা সম্বলহীন
৩. যাকাতের জন্য নিয়োজিত কর্মচচারীবৃন্দ
৪. ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হতে পচারে এমন ব্যক্তি
৫. দাসমুক্তি
৬. ঋণগ্রস্ত
৭. আল্লাহর পথে সংগ্রামকচারী
৮. অসহায় পথিকদের জন্য।
প্রশ্ন- ১৩ \ হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য লেখ।
উত্তর : প্রত্যেক সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক, বুদ্ধিমান ও সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নচারীর ওপর জীবনে একবচার হজ করা ফরজ। হজ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, “আল্লাহর উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহ শরীফে হজ পালন করা মানুষের ওপর অবশ্য কর্তব্য, যচার সেখানে যাওয়চার সামর্থ্য আছে।”
হজ হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন এবং বিশ্ব মুসলিম যে এক, অখণ্ড উম্মত, হজ তচার জ্বলন্ত প্রমাণ। গায়ের রং, মুখের ভাষা, আর জীবন পদ্ধতিতে যত পচার্থক্যই থাকুক না কেন, এই সম্মেলনে তচারা একাকচার হয়ে যায়, তাদের সকল পচার্থক্য দূর হয়ে যায়। হজ মানুষের অতীত জীবনের গুনাহগুলোকে ধুয়ে-মুছে সাফ করে দেয়, মাফ করে দেয়। ইসলামের ঐক্য, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও প্রাণচাঞ্চল্য বজায় রাখচার ব্যাপচারে হজের তাৎপর্য অপরিসীম।
প্রশ্ন- ১৪ \ হজের ফরজগুলো সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তর : হজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। এর ফরজ তিনটি। নিচে সংক্ষেপে সেগুলো বর্ণনা করা হলো :
১. ইহরাম বাঁধা : হজের প্রথম ফরজ হলো ইহরাম বাঁধা। অযু, গোসলের পরে সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরে ইহরাম বাঁধতে হয়।
২. ওকুফ বা অবস্থান : হজের দ্বিতীয় ফরজ হলো ৯ জিলহজ তচারিখে আরাফাত ময়দানে অবস্থান করা।
৩. তওয়াফে যিয়চারত : হজের তৃতীয় ফরজ হলো তওয়াফে যিয়চারত করা। কুরবানির দিনগুলোতে অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১০-১২ তচারিখের মধ্যে কাবাঘরে তওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করাকে তওয়াফে যিয়চারত বলে।
প্রশ্ন- ১৫ \ মুখ, দাঁত, হাত ও পা পরিষ্কচার-পরিচ্ছন্ন রাখচার গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : মুখ : মুখ আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমরা মুখ দিয়ে খাবচার খাই। কথা বলি। মুখ পরিষ্কচার না থাকলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। মানুষ তাকে ঘৃণা করে। লোক সমাজে লজ্জা পেতে হয়। মহনবি (স) দুর্গন্ধযুক্ত কোনো কিছু খেয়ে মসজিদে যেতে নিষেধ করেছেন।
দাঁত : আমরা দাঁত দিয়েিবিয়ে খাবচার খাই। এতে দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা লেগে থাকে। প্রতিবচার খাবচার পরে, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে দাঁত না মাজলে দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাদ্যকণা পচে মুখে দুর্গন্ধ হয়। দাঁতের নানচারকম রোগ হয়। রাসুল (স) বলেছেন ‘আমচার উম্মতের কষ্ট না হলে, প্রত্যেক অজুর আগে মিসওয়াক করচার নির্দেশ দিতাম”।
হাত : আমরা হাত দিয়ে নানচারকম কাজ করি। এতে হাত ময়লা হয়, নোংরা হয়। অনেক সময় হাতের নখ বড় হয়। বড় নখে অনেক ময়লা আটকে থাকে। আমরা হাত দিয়ে খাবচার খাই। নোংরা হাতে খাবচার খেলে খাবচারের সাথে ময়লা পেটেলে যায়। এতে নানচারকম পেটের অসুখ হয়। আমাদের নখ কেটে ছোট রাখতে হবে। ভালোভাবে হাত ধুয়ে পরিষ্কচার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
পা : রাস্তাঘাটেলাফেরা করচার সময় আমাদের পায়ে ধুলা-ময়লা লেগে পা নোংরা হয়ে যায়। কাজের শেষে পা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কচার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়।
প্রশ্ন- ১৬ \ কুরবানি প্রচলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বর্ণনা কর।
উত্তর : হযরত ইবরাহীম (আ) ছিলেন একজন বিশিষ্ট নবি। আল্লাহ তায়ালা তাকে অনেকবচার পরীক্ষা করেছেন। তিনি সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। একদিন হযরত ইবরাহীম (আ) স্বপ্নে দেখলেন, আল্লাহ তাঁকে আদেশ করছেন প্রিয় পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানি করতে।
তিনি তাঁর স্বপ্নের কথা ইসমাঈল (আ)-কে জানিয়ে বললেন, “হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখলাম আমি তোমাকে জবাই করছি এখন তোমচার অভিমত কী বল।” উত্তরে ইসমাঈল (আ) বললেন, “হে আমচার আব্বা, আপনি তাই করুন যা আপনাকে আদেশ করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।”
ইবরাহীম (আ) আল্লাহর প্রতি তাঁর পুত্রের এমন আনুগত্য, নিষ্ঠা ও সাহসিকতাপূর্ণ উত্তরে খুশি হলেন। তিনি প্রাণপ্রিয় পুত্রকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কুরবানি করতে তাঁর গলায় ছুরিালালেন। পুত্র ইসমাঈলও আল্লাহকে সন্তুষ্ট করচার জন্য ধচারাল ছুরির নিচে মাথা পেতে দিলেন। কঠিন এ পরীক্ষায় পিতা-পুত্র উত্তীর্ণ হলেন। আল্লাহ তায়ালা কুরবানি কবুল করলেন এবং ইসমাঈলকে রক্ষা করলেন। তাঁর পরিবর্তে একটি দুম্বা কুরবানি হয়ে গেল।
আল্লাহ তায়ালচার প্রতি হযরত ইবরাহীম (আ) ও তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ) এর অপরিসীম আনুগত্য ও অপূর্ব ত্যাগের ঘটনাকেিরস্মরণীয় করে রাখচার জন্য এবং মুসলিমদের ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত করচার জন্য তখন থেকেই কুরবানির প্রচলন রয়েছে।
প্রশ্ন- ১৭ \ ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতচার গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : ধর্মীয় অনুশাসন পালনে তথা ইবাদতে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা একান্ত আবশ্যক। নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে সালাত, সাওম, হজ ও যাকাতের মতো মৌলিক ইবাদতগুলো ইবাদত হিসেবে গণ্য নাও হতে পচারে। যেমন : কেউ যদি এই উদ্দেশ্যে সালাত, আদায় করে যে লোকে তাকে নামাজি বলবে, এই উদ্দেশ্যে যাকাত দেয় যে লোকে তাকে দানশীল বলবে, এই উদ্দেশ্যে হজ করে যে লোকে তাকে আলহাজ আখ্যায়িত করবে তাহলে তা ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে না। উপরিউক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে কোনো সুফল পাওয়া যায় না। সুতরাং আমরা পূর্ণ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতচার সাথে ধর্মীয় অনুশাসনগুলো যথাযথভাবে পালন করব।
প্রশ্ন- ১৮ \ সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি উদচার, সহিষ্ণু ও সহনশীল হওয়চার গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : ইসলাম উদচার মানবতাবোধ সম্পন্ন, পরমতসহিষ্ণু একটি জীবনব্যবস্থা। ইসলাম সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি উদচার, সহনশীল ও শ্রদ্ধাশীল। ইসলামে যেমন আছে ব্যক্তিগত, পচারিবচারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় নীতিমালা, তেমনি আছে ন্যায়-নীতিভিত্তিক উদচার, পরমতসহিষ্ণু, আন্তঃধর্মীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা। মানবতচার ঐক্য, সংহতি, বিশ্বশান্তি ও বিশ্বভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ইসলামের ভ‚মিকা অপরিসীম।
বিভিন্ন ধর্মের এবং ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠচার জন্য পচারস্পরিক সম্পর্ক কিরূপ হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে ইসলামে সুস্পষ্ট নীতিমালা বিদ্যমান। ইসলাম এত উদচার যে, মহানবি (স) ইয়াহুদি, খ্রিষ্টান ধর্মযাজকদের মদিনা মসজিদে ইবাদত করচার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। নিজের ধর্ম অন্যের ওপরাপিয়ে দেওয়চার অনুমতি ইসলামে নেই। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “ধর্মে জবরদস্তি নেই।”
হযরত মুহাম্মদ (স) মদিনায় হিজরত করেই মদিনা ও তচার আশেপাশে বসবাসকচারী গোত্রগুলোর সাথে একটি বিশ্বখ্যাত সনদপত্র সম্পাদন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। এ সনদ সাম্যের মহান নীতি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, জানমালের নিরাপত্তা, সকল ধর্মের স্বাধীনতা ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতচার ঘোষণা ও রক্ষাকবচ।
এ সনদের মাধ্যমে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকচার তথা মানবাধিকচার স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবে মহানবি (স) সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি উদচার, সহিষ্ণু ও সহনশীল হওয়চার শিক্ষা দিয়েছেন।
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন- ১ \ পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত কেন? তুমি কীভাবে পরিচ্ছন্ন থাকবেচারটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : আল্লাহ তায়ালচার ভালোবাসা লাভের জন্য পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত। পরিচ্ছন্ন থাকচার জন্য আমি- দাঁত ও মুখ পরিষ্কচার রাখব। ভালোভাবে হাত পরিষ্কচার করব। কাজের শেষে পা ধুয়েমুছে পরিষ্কচার -পরিচ্ছন্ন রাখব। সর্বদা শরীর, পোশাক ও পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখব।
প্রশ্ন- ২ \ রোযা রাখলে কী উপকচার হয় পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : রোযা রাখলে অনেক উপকচার হয়। যেমন : ১. তাকওয়চার অনুশীলন ও ট্রেনিং হয়ে থাকে। ২. পাপাচচার ও লোভ-লালসা থেকে বিরত থাকা যায়। ৩. আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির উৎকৃষ্ট উপায়। ৪. সাওম পালন উন্নতরিত্র ও আদর্শ সমাজ গঠনে সহায়ক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। ৫. সাওম পালনের মাধ্যমে মানুষ পরস্পরের প্রতি সহানুভ‚তিশীল হয়ে ওঠে।
প্রশ্ন- ৩ \ মুসলমানদের জন্য সাওম গুরুত্বপূর্ণ কেন? এ সম্পর্কিত পাঁচটি বাক্য লিখ।
উত্তর : যেসব কচারণে মুসলমানদের জন্য রোযা গুরুত্বপূর্ণ তা পাঁচটি বাক্যে লিখা হলো :
১. সাওম পালন করা ফরজ।
২. সাওম পালনের দ্বচারা ধৈর্যের অনুশীলন হয়।
৩. সাওম পালন উন্নতরিত্র ও আদর্শ সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।
৪. সাওম পালনের দ্বচারা লোভ-লালসা, পাপাচচার, কুরিপু মিথ্যাচচার, ঝগড়া-বিবাদ প্রভৃতি দমন হয়।
৫. জাহান্নাম হতে মুক্তি পাওয়া যায়।
প্রশ্ন- ৪ \ সঠিকভাবে যাকাত দিলে কী সুফল পাওয়া যাবে? পাঁচটি বাক্যে তা লিখ।
উত্তর : সঠিকভাবে যাকাত দিলে সম্পদ পবিত্র হয় ও বৃদ্ধি পায়। যাকাত প্রদানের মাধ্যমে ধনী ও গরিব শ্রেণির মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় হয়। যাকাত প্রদানের ফলে ধনী-গরিবের বৈষম্য দূর হয়। মুসলমানদের মধ্যে ত্যাগের মনোভাব সৃষ্টি হয়। যাকাত ফরজ কাজ হওয়ায় তা আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব।
প্রশ্ন- ৬ \ সালাতের আহকাম কী? সালাতেরচারটি আহকাম লিখ।
উত্তর : সালাত শুরু করচার আগে যে ফরজ কাজগুলো আছে, সেগুলোকে সালাতের আহকাম বা শর্ত বলে। আহকাম ৪টি হলো :
১. শরীর পাক : প্রয়োজনমতো ওযু, গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে শরীর পাক-পবিত্র করা।
২. কাপড় পাক : পরিধানের কাপড় পাক হওয়া।
৩. জায়গা পাক : সালাত আদায়ের স্থান পাক হওয়া।
৪. সতর ঢাকা : পুরুষের নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত এবং স্ত্রীলোকের মুখমণ্ডল, হাতের কবজি এবং পায়ের পাতা ছাড়া সমস্ত শরীর ঢাকা।
প্রশ্ন- ৭ \ মাসচারিফু যাকাত কী?চারটি খাতের নাম লিখ।
উত্তর : মাসচারিফু যাকাত হলো যাকাত ব্যয়ের খাতসমূহ।চারটি খাত হলো- ১. ফকির বা অভাব গ্রস্ত; ২. মিসকিন বা সম্বলহীন; ৩. যাকাতের জন্য নিয়োজিত কর্মচচারীবৃন্দ; ৪. ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হতে পচারে এমন ব্যক্তি।
প্রশ্ন- ৮ \ জামাআতের সাথে সালাত আদায়ের পাঁচটি পুরস্কচার লিখ।
উত্তর : রাসুল (স) বলেন, কোন বান্দা জামাআতের সাথে সালাত আদায় করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে পাঁচটি পুরস্কচার দেবেন। যেমন:
১. তচার জীবিকচার অভাব দূর করবেন।
২. কবরের আজাব থেকে মুক্তি দেবেন।
৩. হাশরে আমলনামা ডান হাতে দেবেন।
৪. পুলসিরাত বিজলির মতো দ্রæত পচার করাবেন।
৫. তাকে বিনা হিসাবে জান্নাত দান করবেন।
প্রশ্ন- ৯ \ ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : ধর্মীয় অনুশাসন পালনে তথা ইবাদতে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা একান্ত আবশ্যক। ইবাদতের অনুষ্ঠানের মূলকথা আল্লাহর উদ্দেশ্যেই নিবেদিত হতে হবে। নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে সালাত, সাওম, হজ ও যাকাতের মতো মৌলিক ইবাদতগুলোও ইবাদত হিসেবে গণ্য না-ও হতে পচারে, যদি ওই ইবাদতকচারীর নিয়ত অসৎ ও আল্লাহ বিমুখ হয়। যেমন সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর তায়ালচার সান্নিধ্য লাভ করে। পক্ষান্তরে সালাতে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে লোক দেখানোর জন্য সালাত আদায় করলে আল্লাহ তায়ালচার কাছে সেই সালাতের কোন মূল্য নেই।
প্রশ্ন- ১২ \ তুমি কীভাবে পরিবেশ সংরক্ষণ করবে? পাঁচটি উপায় লিখ।
উত্তর : : পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য আমরা নানা উপায়ে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পচারি। যথা :
১. বৃক্ষরোপণ করব। বিনা প্রয়োজনে বৃক্ষনিধন করা যাবে না। গাছের ডালপালা ভাঙা যাবে না। গাছের পাতা ছেঁড়া, নষ্ট করা যাবে না।
২. অকচারণে পশুপাখি ও কীটপতঙ্গ হত্যা করা যাবে না।
৩. যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করা যাবে না।
৪. যেখানে সেখানে কফ, থুথু, এবং ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।
৫. গাড়ি ও কলকচারখানচার ধোঁয়া পরিবেশ দূষিত করে। তাই যেখানে সেখানে কলকচারখানা নির্মাণ করা যাবে না।
প্রশ্ন- ১৩ \ তোমচার দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজকর্মে ব্যবহৃত কয়েকটি দোয়া অর্থসহ লিখ।
অথবা, অর্থসহ পাঁচটি ব্যবহচারিক দোয়া লেখ।
উত্তর : দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজকর্মে ব্যবহৃত কয়েকটি দোয়া অর্থসহ নিচে দেওয়া হলো।
১. কোনো ভালো কাজ শুরু করচার আগে বলব : (বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম অর্থ : ‘দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে’।
২. পরস্পর সাক্ষাৎ হলে বলব : আসসালামু আলাইকুম অর্থ : ‘আপনচার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’
৩. হাঁচি দিয়ে বলব : আলহামদুলিল্লাহ অর্থ : ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।’
৪. হাঁচি শুনে বলব : ইয়চারহামুকাল্লাহ অর্থ : ‘আল্লাহ আপনাকে রহমত করুন’।
৫. ঘুমাতে যাওয়চার আগে পড়ব : আল্লাহুম্মা বিইসমিকা আমূতু ওয়া আহইয়া অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমচার নাম নিয়েই ঘুমাই আর তোমচার নাম নিয়েই জেগে উঠি।’
প্রশ্ন- ১৪ \ তুমি কি মনে কর একজন মানুষের পক্ষেব্বিশ ঘণ্টা ইবাদত করা সম্ভব? যদি সম্ভব বলে মনে কর তাহলে কীভাবে?
উত্তর : হ্যাঁ, আমি মনে করি, একজন মানুষের পক্ষেব্বিশ ঘণ্টা ইবাদত করা সম্ভব। যেমন আমরা যদি বিসমিল্লাহ বলে হালাল খাদ্য খাই, খাওয়চার পরে শোকর করি তবে খাওয়চার সময়টুকু ইবাদতে গণ্য হবে। পড়চার সময় বিসমিল্লাহ বলে পড়া শুরু করলে যতক্ষণ লেখাপড়া করব, ততক্ষণই ইবাদতে গণ্য হবে। সৎপথে ব্যবসা-বাণিজ্য করা,াষাবাদ এবং অন্যকোনো সৎ পেশায় নিয়োজিত হয়ে যথাযথ কর্তব্য পালন করাও ইবাদতের মধ্যে শামিল।
এমনকি ঘুমানোর আগে পাক-পবিত্র হয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে ঘুমালে নিদ্রচার সময়টুকুও আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে গণ্য। এভাবে আমরা সর্বক্ষণই আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতে পচারি।
প্রশ্ন- ১৫ \ সালাত কী? মুসলমানদের জন্য সালাতের ৪টি গুরুত্ব লিখ।
উত্তর : ইসলামের পরিভাষায় আহকাম, আরকানসহ বিশেষ নিয়মে আল্লাহর ইবাদত করাকে সালাত বলে।
মুসলমানদের জন্য সালাতের ৪টি গুরুত্ব :
১. সালাতের মাধ্যমে মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যায়।
২. সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালচার নৈকট্য লাভ করতে পচারে।
৩. সালাত মানুষকে সবরকম অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।
৪. জান্নাত লাভের জন্য নিয়মিত সালাত আদায় করতে হবে।
প্রশ্ন- ১৬ \ আমরা কেন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করব?
উত্তর : সালাত ইসলামের ৫টি রুকনের মধ্যে দ্বিতীয় রুকন। মুসলমানের জন্য সবচেয়ে বড় ফরজ ইবাদত হলো সালাত।
যে কচারণে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে :
১. দিনরাত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ফরজ।
২. সালাত প্রতি মুহ‚র্তে আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
৩. সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে বেশি নৈকট্য লাভ করে।
৪. মহান আল্লাহ হাশরের দিন সর্বপ্রথম সালাতের হিসাব নিবেন।
৫. সালাত মানুষকে যাবতীয় অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।
প্রশ্ন- ১৮ \ পাক-পবিত্রতচার গুরুত্ব কী? ৫টি বাক্যে লিখ।
উত্তর : পাক-পবিত্রতচার গুরুত্ব ইসলামের প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহর ইবাদতের জন্য পাক-পবিত্র থাকা প্রয়োজন। শরীর, পোশাক এবং স্থান বা পরিবেশ পাকসাফ ও পরিষ্কচার- পরিচ্ছন্ন থাকলে মনও পবিত্র থাকে। মন পবিত্র থাকলে মনে শান্তি লাগে, ভালো কাজের আগ্রহ সৃষ্টি হয়। পাকসাফ না হয়ে সালাত আদায় করা যায় না; অপবিত্র অবস্থায় কুরআন মজিদ স্পর্শ করা যায় না। সর্বোপরি পাক-পবিত্র থাকলে আল্লাহ খুশি হন।
প্রশ্ন- ১৯ \ কোন ওয়াক্তে কত রাকআত ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত সালাত আছে, তচার একটি তালিকা তৈরি কর।
উত্তর :
ওয়াক্ত সুন্নত
(মুয়াক্কাদাহ) ফরজ সুন্নত
(মুয়াক্কাদাহ) ওয়াজিব
ফজর ২ রাকআত ২ রাকআত
যোহর ৪ রাকআত ৪ রাকআত ২ রাকআত
আসর ৪ রাকআত
মাগরিব ৩ রাকআত ২ রাকআত
এশা ৪ রাকআত ২ রাকআত ৩ রাকআত (বিতর সালাত)
প্রশ্ন- ২০ \ কোন কোন সম্পদ নিসাব পরিমাণ থাকলে যাকাত দিতে হবে তা পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : যেসব সম্পদ নিসাব পরিমাণ থাকলে যাকাত দিতে হবে তা পাঁচটি বাক্য হলো :
১. সোনা, রুপা। (নগদ অর্থ ও গহনাসহ)
২. গবাদিপশু। ৩. জমিতে উৎপন্ন ফসল।
৪. ব্যবসা-বাণিজ্যের পণ্য। ৫. অর্জিত সম্পদ।
প্রশ্ন- ২১ \ সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে মুসলিম পিতামাতচার কী কাজ করতে হয় এ সম্পর্কেচারটি বাক্য লিখ।
উত্তর : সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে মুসলিম পিতামাতচার সন্তানের সুন্দর ইসলামি নাম রাখতে হয়। সন্তানের মাথা কামাতে হয়। মাথচারুলের ওজন পরিমাণ সোনা বা রুপা দান করতে হয়। আকিকা করা সুন্নত যা পিতামাতচার কর্তব্য।
প্রশ্ন- ২২ \ নিসাব মানে কী? কোন সম্পদ নিসাব পরিমাণ থাকলে যাকাত দিতে হয়?
উত্তর : নিসাব মানে নির্ধচারিত পরিমাণ বা মাত্রা। সাধচারণত সোনা, রূপা (নগদ অর্থ ও গহনাপত্রসহ), গবাদিপশু, জমিতে উৎপন্ন ফসল, ব্যবসা-বাণিজ্যের পণ্য এবং অর্জিত সম্পদ ইত্যাদি নিসাব পরিমাণ থাকলে যাকাত দিতে হয়। স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাড়ে সাত তোলা (৮৭.২৫ গ্রাম), রূপচার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা (৬১২.২৫ গ্রাম) বা এর তৈরি গহনা থাকলে যাকাত দিতে হয়। সম্পদের ক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ সম্পদেরল্লিশ ভাগের একভাগ যাকাত দিতে হয়। প্রতি একশ টাকচার যাকাত আড়াই টাকা।
প্রশ্ন- ২৩ \ যাকাত না দেওয়চার কুফল বর্ণনা কর।
উত্তর : ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে সালাতের পরই যাকাতের গুরুত্ব বেশি। যাকাত না দিলে মহান আল্লাহর তায়ালা অসন্তুষ্ট হন। ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বৃদ্ধি পায়। সমাজে অভাবজনিত কচারণে অসামাজিক কচার্যকলাপ ও অপরাধ বৃদ্ধি পায়। ফলে সমাজে অশান্তি ও বৈরিতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া যাকাত অস্বীকচার করচার জন্য আখিরাতে রয়েছে কঠিন আজাব।
প্রশ্ন- ২৪ \ যাকাতের ৩টি তাৎপর্য ও ২টি শিক্ষা লিখ।
উত্তর : যাকাত ইসলামের অন্যতম ফরজ ইবাদত।
যাকাতের ৩টি তাৎপর্য :
১. যাকাত হচ্ছে আল্লাহ কর্তৃক নির্ধচারিত ধনীদের সম্পদে গরিবদের, নিঃস্বদের অধিকচার।
২. যাকাত প্রদান অন্তরের কৃপণতচার কলুষতা দূর করে।
৩. যাকাত প্রদানে আমলনামা গুনাহ থেকে পবিত্র হয়।
যাকাতের ২টি শিক্ষা :
১. সমাজে ধনীদের সম্পদের ওপর গরিবের অধিকচার রয়েছে।
২. যাকাত সমাজে ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন সৃষ্টি করতে প্রেরণা জোগায়।
প্রশ্ন- ২৫ \ মসজিদকে আল্লাহর ঘর বলা হয় কেন? পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : মজজিদ অর্থ হলো সিজদাহ করচার স্থান। সালাত আদায় করচার জন্য নির্ধচারিত স্থান হলো মসজিদ। মুসলমানগণ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত মসজিদে গিয়ে জামাআতের সাথে আদায় করে থাকে। মসজিদে শুধু মহান আল্লাহ তায়ালচার ইবাদত এবং ইবাদতের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজ করা হয়। আর এজন্যই মসজিদকে বায়তুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর বলা হয়।
প্রশ্ন- ২৬ \ হজ বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন পাঁচটি বাক্যে বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর : ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে পঞ্চম স্তম্ভ হজের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালচার দরবচারে হাজির হওয়চার অনুভ‚তির প্রতিফলন ঘটে। আল্লাহ তায়ালচার প্রতি ভালোবাসা, তচার প্রতি ভরসা ও আত্মত্যাগের মহান শিক্ষা নিহিত রয়েছে হজের পরতে পরতে। বিশ্ব মুসলিম যে এক, অখণ্ড উম্মত হজ তচার জ্বলন্ত প্রমাণ।
সকলের পরনে ইহরামের সাদা কাপড়; সকলের ধর্ম এক, উদ্দেশ্য এক, অন্তরে এক আল্লাহ তায়ালচার ধ্যান, সকলেই আল্লাহর বান্দা। মূলত হজই প্রত্যেক হাজিকে মুসলিম বিশ্বের লাখো মুসলিমের সাথে পরিচয়ের বিরাট সুযোগ করে দেয়।সুতরাং বলা যায়, হজ বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন।
কুরবানি করচার নিয়মাবলি হলো :
১. জিলহজ মাসের ১০, ১১ এবং ১২ তচারিখ পর্যন্ত কুরবানির সময়। তবে ঈদুল আযহচার সালাতের পরে কুরবানি করতে হয়।
২. ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, গরু, মহিষ, উট ইত্যাদি গৃহপালিত হালাল সুস্থ-সবল পশু দ্বচারা কুরবানি করতে হয়। পশুটি নির্দোষ ও নিখুঁত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
৩. ছাগল, ভেড়া, দুম্বা জনপ্রতি একটি করে কুরবানি করতে হয়। গরু, মহিষ, উট সাতজন পর্যন্ত শরিক হয়ে কুরবানি করা যায়। তবে সবচার উদ্দেশ্যই আল্লাহর নৈকট্য লাভ হতে হবে।
৪. ছাগল, ভেড়া, দুম্বচার বয়স কমপক্ষে এক বছর; গরু, মহিষ দুই বছর এবং উট কমপক্ষে পাঁচ বছর বয়সের হতে হবে।
৫. কুরবানির গোশত সাধচারণত তিন ভাগ করে একভাগ গরিব মিসকিনকে, একভাগ আত্মীয়স্বজনকে এবং একভাগ নিজে রাখতে হয়।
সাধারণ
প্রশ্ন- ২৯ \ হজের ফরজ কয়টি? ফরজগুলো লিখ।
উত্তর : হজের ফরজ তিনটি। যথা : ১. ইহরাম বাঁধা, ২. আরাফাতে অবস্থান এবং ৩. তওয়াফে জিয়চারত।
১. হজের প্রথম ফরজ হলো ইহরাম বাঁধা, কয়েকটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হজ বা উমরচার নিয়ত করাকে ইহরাম বলে। ওযু, গোসলের পর সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরে ইহরাম বাঁধতে হয়।
২. হজের দ্বিতীয় ফরজ হলো ৯ই জিলহজ তচারিখে আরাফাত ময়দানে অবস্থান করা।
৩. হজের তৃতীয় ফরজ হলো তওয়াফে যিয়চারত করা। কুরবানির দিনগুলোতে অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১০-১২ তচারিখের মধ্যে কাবাঘরে তওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করাকে তওয়াফে জিয়চারত বলে।
প্রশ্ন- ৩০ \ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের ফজিলত সম্পর্কে মহানবি (স) এর হাদিসটি লিখ।
উত্তর : মহানবি (স) একদিন সাথীদের বললেন, “তোমাদের বাড়ির সামনে যদি একটি নদী থাকে, আর কোনো ব্যক্তি ঐ নদীতে দৈনিক পাঁচবচার গোসল করে, তবে কি তচার শরীরে কোনো ময়লা থাকতে পচারে? সাহাবিরা বললেন, না। কোনো ময়লা থাকতে পচারে না। তখন রাসুল (স) বললেন, ঠিক তেমনি কোনো বান্দা যদি প্রতিদিন পাঁচবচার সালাত আদায় করে তচার আর কোনো গুনাহ থাকতে পচারে না।” (বুখচারি ও মুসলিম)
প্রশ্ন- ৩১ \ সাওমকে আত্মরক্ষচার ঢাল বলা হয় কেন?
উত্তর : ইসলামের প্রধান পাঁচটি রুকনের মধ্যে সাওম একটি। এটি আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির উৎকৃষ্ট উপায়। সাওম পালনের সময় মিথ্যা, প্রতচারণা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরনিন্দা, পরচর্চা, ধূমপান ইত্যাদি ত্যাগ করতে হয়। এ সময় এসব পাপকর্ম ও বদভ্যাস ত্যাগ করা সহজ হয়। এজন্য সাওমকে আত্মরক্ষচার ঢাল বলা হয়েছে। আমাদের প্রিয়নবি (স) বলেছেন ‘সাওম হচ্ছে ঢালস্বরূপ।’
প্রশ্ন- ৩২ \ আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন কেন?
উত্তর : আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁরই ইবাদতের জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- “আর আমি জিন ও মানবজাতিকে কেবল আমচার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।” আমাদের জন্য কতগুলো মৌলিক ইবাদত রয়েছে। যেমন : সালাত, সাওম, হজ, জাকাত, সাদকা, দান-খয়রাত, আল্লাহর পথে জিহাদ ইত্যাদি এসব ইবাদত করচার জন্যই আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।