চতুর্থ শ্রেণীর বাংলা ব্যাকারণ | পদ প্রকরণ ও লিঙ্গ | PDF: চতুর্থ শ্রেণির বাংলা বিষয়টির ব্যাকারণ অংশ হতে পদ প্রকরণ ও লিঙ্গর গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
পদ প্রকরণ
মনে কর, বাড়িতে মা নানা রকম পিঠা বানিয়েছেন। পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা ইত্যাদি। পিঠা খেয়ে আমরা বলি অনেক পদের পিঠা খেলাম। আমরা যে পিঠাগুলো খেলাম তার সবগুলোর বৈশিষ্ট্য এক রকম নয়। পিঠাগুলোর আকার, উপাদান ও স্বাদে আছে নানা বৈচিত্র্য। তেমনিভাবে একটি বাক্য যেসব শব্দ নিয়ে গঠিত হয় সেগুলোর মাঝেও থাকে নানা রকম বৈচিত্র্য।
নিচের বাক্যটি পড় :
সেলিম ও তার ভাই ফুটবল ভালো খেলে।
লক্ষ কর, ‘সেলিম’ এবং ‘ফুটবল’ শব্দ দুটি দ্বারা কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর নাম বোঝাচ্ছে। ‘ও’ শব্দটি সেলিম ও তার ভাইয়ের মাঝে সম্পর্ক তৈরি করেছে। ‘ভালো’ শব্দটির মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারছি সেলিম ও তার ভাই খেলাধুলায় কেমন দক্ষ। আর ‘খেলে’ শব্দটি একটি কাজ সম্পর্কে বলছে। সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই প্রতিটি শব্দেরই আছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। একটি বাক্য যেসব শব্দ দিয়ে গঠিত হয় তাদের প্রতিটিকে পদ বলা হয়।
প্রকারভেদ :
পদ পাঁচ প্রকার। যথা= ১. বিশেষ্য, ২. বিশেষণ, ৩. সর্বনাম, ৪. অব্যয় ও ৫. ক্রিয়া।
১. বিশেষ্য পদ : যে পদ দিয়ে কোনো কিছুর নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলে। যেমন সুমন, ঢাকা, সূর্য ইত্যাদি।
২. বিশেষণ পদ : যে পদ দিয়ে অন্য পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি বোঝায় তাকে বিশেষণ পদ বলে। যেমনঃ বুদ্ধিমান বালক। সুন্দর ফুল ইত্যাদি। এখানে বুদ্ধিমান ও সুন্দর হচ্ছে বিশেষণ পদ।
৩. সর্বনাম পদ : যে পদ বিশেষ্য পদের পরিবর্তে বসে তাকে সর্বনাম পদ বলে। উদাহরণ রাজু ভালো ছেলে। সে স্কুলে যায়। তার বয়স আট বছর। তাকে সবাই ভালোবাসে। এখানে ‘রাজু’র পরিবর্তে সে, তার, তাকে ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে সর্বনাম পদ।
৪. অব্যয় পদ : যে পদের কোনো ব্যয় বা পরিবর্তন হয় না তাকে অব্যয় পদ বলে। যেমন : মশা আর মশা। সে গরিব কিন্তু সৎ। এখানে আর, কিন্তু হচ্ছে অব্যয় পদ।
৫. ক্রিয়াপদ : যে পদ দিয়ে কোনো কাজ করা বোঝায় তাকে ক্রিয়া পদ বলে। উদাহরণ সে বাড়ি যাচ্ছে। রিমা ভাত খায়। এখানে যাচ্ছে, খায় হচ্ছে ক্রিয়াপদ।
লিঙ্গ
বাবা, মা, শিশু, বাড়ি
উপরের শব্দগুলো লক্ষ কর। প্রতিটি শব্দেরই রয়েছে বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য। যেমন : ‘বাবা’ বললে আমরা একজন পুরুষ মানুষকে বুঝি। ‘মা’ বললে একজন স্ত্রীলোক বা নারীকে বুঝি। ‘শিশু’ বললে আমরা ভেবে নিই ছেলে বা মেয়ে যে কোনো একটি হবে।
আর প্রথম তিনটি শব্দ থেকে শেষ শব্দটি আরেকটি দিক থেকে আলাদা। তা হলো প্রথম তিনটি শব্দ জীবজগতের অন্তর্ভুক্ত, অর্থাৎ সবারই জীবন আছে। আর শেষ শব্দটি জড়বস্তু, অর্থাৎ এর জীবন নেই। এবং এটি নারী-পুরুষ কোনোটিই বোঝায় না।
যেসব শব্দ দিয়ে আমরা নারী, পুরুষ অথবা নারী-পুরুষ দুটিকেই কিংবা এগুলোর কোনোটিকেই বুঝি না সেগুলোকেই লিঙ্গ বলা হয়। লিঙ্গ শব্দের অর্থ চিহ্ন বা লক্ষণ।
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | পাঠান মুলুকে | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | কাজলা দিদি | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | পাখির জগৎ | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
প্রকারভেদ :
লিঙ্গ চার প্রকার। যাথা- ১. পুংলিঙ্গ, ২. স্ত্রীলিঙ্গ, ৩. ক্লীবলিঙ্গ ও ৪. উভয়লিঙ্গ।
১. পুংলিঙ্গ : যেসব শব্দ দিয়ে পুরুষ জাতি বোঝায়, সেগুলোকে পুংলিঙ্গ বলে। যেমনঃ বাবা, চাচা, ভাই, ছাত্র ইত্যাদি।
২. স্ত্রীলিঙ্গ : যেসব শব্দ দিয়ে স্ত্রী জাতি বা নারী জাতি বোঝায়, সেগুলোকে স্ত্রীলিঙ্গ বলে। যেমন- মা, বোন, মামি, খালা, ছাত্রী ইত্যাদি।
৩. উভয়লিঙ্গ : যেসব শব্দ দিয়ে স্ত্রী-পুরুষ উভয়কেই বোঝায় সেগুলোকে উভয়লিঙ্গ বলে। যেমনঃ সন্তান, মানুষ, শিশু, বাছুর, পশু, বোকা ইত্যাদি।
৪. ক্লীবলিঙ্গ : যেসব শব্দ দিয়ে স্ত্রী-পুরুষ কোনোটাই না বুঝিয়ে জড় পদার্থ বোঝায় সেগুলোকে ক্লীবলিঙ্গ বলে। যেমনঃ বই, খাতা, কলম, টেবিল, চেয়ার, দরজা, পাথর ইত্যাদি।
লিঙ্গান্তর :
পুংলিঙ্গ বা পুরুষবাচক শব্দকে স্ত্রীলিঙ্গ বা স্ত্রীবাচক শব্দে রূপান্তর করাকে লিঙ্গান্তর বা লিঙ্গ পরিবর্তন বলা হয়। নিচে লিঙ্গ পরিবর্তনের কিছু উদাহরণ দেখানো হলো :
পুংলিঙ্গ——-স্ত্রীলিঙ্গ
বাবা ———-মা
ছাত্র ———-ছাত্রী
পুত্র ———-কন্যা
রাজা ———-রানি
ভাই ———-বোন
শিক্ষক ———-শিক্ষিকা
চাচা ———-চাচি
নর ———-নারী
মামা ———-মামি
খোকা ———-খুকি
নানা ———-নানি
চাকর ———-চাকরানি
দাদা ———-দাদি
সুন্দর ———-সুন্দরী
খালু ———-খালা
তরুণ ———-তরুণী
স্বামী ———-স্ত্রী
পাত্র ———-পাত্রী
গায়ক ———-গায়িকা
সিংহ ———-সিংহী
বৃদ্ধ ———-বৃদ্ধা
বাঘ ———-বাঘিনী
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।