HSC | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ১-৫ | PDF : বাংলা ১ম পত্রের ঐকতান কবিতাটি হতে যেকোনো ধরনের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের ঐকতান কবিতাটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
অনুশীলন অংশ
১. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরে রফিকুল বারি রাজনীতিতে মনোযোগী হতে চান। সুস্থ রাজনীতির মাধ্যমে দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন তার লক্ষ্য। এই উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করেন এবং বিভিন্ন সভা-সমিতিতে যোগ দেন। একজন সৎ ও জ্ঞানী ব্যক্তি হিসেবে শহরের একটি বিশেষ শ্রেণির সবাই তাঁকে চেনে। একবার ঈদে গ্রামের বাড়ি গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন, দেশের মানুষের কথা ভাবলেও গ্রামের সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তাঁর নতুন উপলব্ধি হয় যে, দেশের সাধারণ মানুষের উন্নয়নকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এরপর থেকে তিনি গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে মিশতে শুরু করেন, তাদের জন্য কাজ করতে আরম্ভ করেন। ধীরে ধীরে তিনি সাধারণের প্রিয় নেতা হয়ে ওঠেন।
ক. কাছে থেকে দূরে যারা, কবি তাদের কী শুনাতে চেয়েছেন?
খ. কবি সর্বত্র প্রবেশের দ্বার পান না কেন তা বুঝিয়ে লেখ।
গ. রফিকুল বারির মধ্যে ‘ঐকতান’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “জীবনে জীবন যোগ করা/না হলে কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় গানের পসরা”Ñ কবির এই উপলব্ধির আলোকে রফিকুল বারির নেতা হয়ে ওঠার বিষয়টি বিশ্লেষণ কর।
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবি তাদের বাণী শুনাতে চেয়েছেন।
খ. নিজের আভিজাত্যবোধে সমাজের উচ্চ মঞ্চে আসীন বলে কবি সর্বত্র প্রবেশের দ্বার পান না।
আলোচ্য কবিতায় কবির বহুমাত্রিক চিন্তা-চেতনার প্রকাশ ঘটেছে। এখানে কবির মনে স্বদেশের অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষের সাথে একাত্ম না হতে পারার অতৃপ্তি প্রকাশ পেয়েছে। কবি তাঁর নিজের আভিজাত্যবোধ ও জীবনযাত্রার বেড়ার কারণে সবার সাথে মিলতে পারেন নি। সব মানুষের সাথে তিনি অন্তর মেলাতে পারেন নি।
বিপরীতক্রমে তাঁর অভিজাত ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে নিম্নশ্রেণির মানুষেরা তাকে অতিরিক্ত শ্রদ্ধা ও ভয়ের চোখে দেখত, তাকে এড়িয়ে চলত। কবি তাই তাদের সাথে মিলতে পারেন নি। তাদের সাথে, তাদের জীবনযাপনের সাথে কবির ব্যবধান ঘোচেনি।
গ. উদ্দীপকে রফিকুল বারির মধ্যে ‘ঐকতান’ কবিতায় কবির অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষের সাথে মিশতে না পারার আক্ষেপ এবং মাটির কাছাকাছি থাকা মানুষের কবিদের অবদানের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
আমাদের এ পৃথিবী জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষেরই বাসভূমি। এ ধরণীর স্নেহচ্ছায়ায় এবং একই সূর্য ও চাঁদের আলোতে সবাই লালিত। অনুভূতির দিক থেকে সবাই এক ও অভিন্ন। অথচ মানুষের মধ্যে বৈষম্য ও অসাম্য বিরাজমান। এ বিষয়টি যাকে পীড়িত করে জগতে সেই মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগে এগিয়ে আসে।
উদ্দীপকে রফিকুল বারির মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগের ইচ্ছা এবং এর অন্তরায় দূর করার অদম্য চেষ্টার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। কেননা, তিনি শহরে থেকে সুস্থ রাজনীতি করতে চাইলেও গ্রামে যাওয়ার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
তিনি বুঝতে পারেন যে, দেশের সাধারণ মানুষের উন্নতি করতে না পারলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। উদ্দীপক এবং ঐকতান উভয়েই সাধারণ্যের উন্নতির দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে কবির এ উপলব্ধির আলোকে রফিকুল বারির নেতা হয়ে ওঠার বিষয়টি একটি স্বাভাবিক বিষয়। কারণ সাধারণ মানুষের সাথে জীবনের যোগ ঘটাতে না পারলে কেউ নেতা হতে পারে না।
বহু প্রাচীনকাল থেকেই শ্রেণিবৈষম্যের বিভেদ চলে আসছে। আর তথাকথিত আভিজাত্যগর্বিত স¤প্রদায়ই এ শ্রেণিবৈষম্যের। দরিদ্র ও অভাবী মানুষেরা তাদের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত। এ অনাহূত, অবহেলিত, নিন্দিত মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া দরকার। কারণ মানুষ হিসেবে সবাই একই রকম মর্যাদার অধিকারী।
‘ঐকতান’ কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর দীর্ঘ জীবন পরিক্রমণের শেষপ্রান্তে এসে পেছন ফিরে তাকিয়ে সমগ্র জীবনের সাহিত্য সাধনার সাফল্য ও ব্যর্থতার হিসাব খুঁজেছেন। তিনি এখানে অকপটে নিজের সীমাবদ্ধতা, ব্যর্থতা ও অপূর্ণতার কথা স্বীকার করেছেন। কবি তাঁর নিজের আভিজাত্যবোধ ও জীবনযাত্রার বেড়ার কারণে অন্ত্যজ শ্রেণির সাধারণ মানুষের সাথে মিশতে পারেন নি।
কবিতার এ বিষয়টি উদ্দীপকের রফিকুল বারিকে পীড়া দিয়েছে। তিনি যখন শহরের মানুষের কাছে আদৃত হয়ে গ্রামের মানুষের কাছে যান, তখন তিনি নিজের দীনতা বুঝতে পারেন। তারপর গ্রামে সাধারণ মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করে ধীরে ধীরে তাদের প্রিয় মানুষ হিসেবে নিজেকে সক্ষম করে তোলেন।
উদ্দীপকের রফিকুল বারির মতো নেতা হয়ে ওঠার পেছনে অন্তরায় হয়ে উঠেছিল গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতার দীনতা। তিনি তা দূর করার জন্য গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার সাথে মিশতে শুরু করেন, তাদের জন্য সমাজকল্যাণমূলক কাজ করতে থাকেন।
তিনি সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখে নিজেকে সম্পৃক্ত করে, তাদের অন্তরের সাথে অন্তর মিশিয়ে তাদেরই একজন হয়ে ওঠেন, যা ‘ঐকতান’ কবিতার কবির পক্ষে সম্ভব ছিল না। কবি নিজে সেই বিষয় বুঝতে পেরেই আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।
অতিরিক্ত অনুশীলন (সৃজনশীল) অংশ
২. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
শহীদুল আমিন একজন স্কুলশিক্ষক। তিনি হৃদয়ে সৃজনশীল চিন্তা লালন করেন। হঠাৎ আজ তার মনে হলো, দেশের এক কোণে বসে থেকে সংকীর্ণ জীবনযাপন করে তিনি কোনোক্রমেই শান্তি পাচ্ছেন না। তার মন আজ বিশাল পৃথিবীর অজানাকে জানার, অদেখাকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। যখন পৃথিবীর অজানা রহস্যকে জানতে, অদেখাকে দেখতে তিনি ব্যর্থ হন, তখন ঘরের এক কোণে পড়তে বসেন। আর বইয়ের কালো অক্ষরে তিনি অজানা সৌন্দর্যকে হৃদয়ে ধারণ করতে থাকেন।
ক. কবির স্বরসাধনায় কী রয়ে গেছে?
খ. “দেশে দেশে কত না নগর রাজধানী”Ñ কবি কেন বলেছেন?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত শহীদুল আমিনের চরিত্রের মাঝে ‘ঐকতান’ কবিতার কোন দিকটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “ঐকতান” কবিতার সমগ্র ভাব উদ্দীপকের শহীদুল আমিনের চরিত্রের মাঝে পাওয়া যায় না।Ñ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবির স্বরসাধনায় ফাঁক রয়ে গেছে।
খ. পৃথিবীর বিশালত্ব তুলে ধরতে কবি প্রশ্নোলিখিত উক্তিটি করেছেন।
মহাকালের সাপেক্ষে জীবন যেমন কিছু না, মহাবিশ্বের কাছে পৃথিবীর এককোণে বাস করাও তেমনি কিছু না। পৃথিবীতে অসংখ্য নগর ও রাজধানী আছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানি। বিশাল এ পৃথিবীর এক কোণে বাস করে এত সব বিষয় অনুমেয় মাত্র হয়। তাই কবি শহর ও রাজধানীর ব্যাপকতা তুলে ধরতে চরণটি ব্যবহার করেছেন।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত শহীদুল আমিনের চরিত্রের মাঝে ‘ঐকতান’ কবিতার ‘অজানাকে জানা’র দিকটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মানুষের জানার আকাক্সক্ষা অপরিমেয়। সে সবসময় নতুন কিছুকে জানতে ও দেখতে চায়। এ জানা ও দেখার আগ্রহ থেকে মানুষের মনে বাসনা জাগে, এ বাসনা মানুষের চিরন্তন।
উদ্দীপকের শহীদুল আমিন একজন স্কুলশিক্ষক। তিনি সব অজানাকে জানতে এবং অদেখাকে দেখতে চান। শত চেষ্টাতেও তিনি পৃথিবীর অনিন্দ্য সৌন্দর্যকে দেখতে না পেয়ে ক্ষোভে বই পড়তে থাকেন। ফলে বইয়ের কালো অক্ষরের লেখা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারেন।
‘ঐকতান’ কবিতাতেও পৃথিবীর সৌন্দর্য অবলোকন করতে ব্যর্থ হয়ে কবিকে কাতর হতে দেখা যায়। পৃথিবীতে অসংখ্য পাহাড়, নদী, শহর, বন্দর রয়েছে যেগুলো দেখতে না পারলে কবির জীবন যেন সার্থকতা লাভ করবে না। তাই তিনি ক্ষোভে বই পড়ে সেসব জানতে চেষ্টা করেন। এভাবে উদ্দীপকে বর্ণিত শহীদুল আমিন চরিত্রে ‘ঐকতান’ কবিতার অজানাকে জানার দিকটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
ঘ. “ঐকতান’ কবিতার সমগ্র ভাব উদ্দীপকের শহীদুল আমিনের চরিত্রের মাঝে পাওয়া যায় না”Ñ মন্তব্যটি সঠিক।
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সীমাহীন স্বপ্ন থাকে। যে স্বপ্নের মুক্তঝরা ডানায় চড়ে সে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারবে, পরতে পারবে গলায় বিজয়মাল্য। কিন্তু চাইলেই মানুষের সব আকাক্সক্ষা পূরণ করা সম্ভব নয়।
উদ্দীপকে জানা যায় যে, শহীদুল আমিন একজন স্কুলশিক্ষক। তিনি পৃথিবীর অজানা রহস্যকে জানতে সদা ব্যাকুল। পৃথিবীর এক কোণে থেকে অজানা রহস্যকে জানা বাস্তবে সম্ভব নয় বলে তিনি বই পড়েন। অন্যদিকে ‘ঐকতান’ কবিতায় শুধু অজানাকে জানার বিষয়টিই ফুটে ওঠেনি।
কবিতায় আরও অনেক বিষয়, যেমনÑ পৃথিবীর প্রতি কবির মনোভাব, আকাক্সক্ষা পূরণে কোনো কবির আবির্ভাব, শূন্যতাবোধ, নিজের জীবনের ও কর্মের সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া কবিতায় সম্মিলিত সুরের মূর্ছনার যে দিকটি আছে তা উদ্দীপকে নেই।
উদ্দীপকে শহীদুল আমিন চরিত্রের মাঝে শুধু অজানাকে জানার দিকটিই জোরালোভাবে প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে ‘ঐকতান’ কবিতায় উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টি ছাড়া আরও বিচিত্র বিষয় প্রকাশিত হয়েছে। এজন্য ‘ঐকতান’ কবিতার সমগ্র ভাব উদ্দীপকের শহীদুল আমিন চরিত্রের মাঝে পাওয়া যায় না। তাই উলিখিত মন্তব্যটি যৌক্তিক।
৩. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
সাইফুদ্দীন একজন কৃষক। সে জানে না কীভাবে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়, কীভাবে দেশকে নিয়ে ভাবতে হয়, কীভাবে ব্যক্তিত্ববোধ বাড়ানো যায়। সে শুধু জানে বেঁচে থাকতে হলে তাকে দুবেলা দু’মুঠো ভাত খেতে হবে। তাই সে পাথরের মতো শক্ত মাটির বুকে লাঙল চালায়। সেখানে ফসল ফলাতে প্রাণান্ত চেষ্টা করে। সাইফুদ্দীনের মতো অসংখ্য মানুষের ঘামেই উন্নতির দিকে এগিয়ে যায় দেশ।
ক. কীসের দীনতা কবির মনে?
খ. “চাষি ক্ষেতে চালাইছে হাল।” উক্তিটি দিয়ে কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টি ‘ঐকতান’ কবিতার কোন দিকটিকে নির্দেশ করেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘ঐকতান’ কবিতার সমগ্র ভাব ফুটে ওঠেনি।”Ñ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবির মনে জ্ঞানের দীনতা।
খ. প্রশ্নোক্ত উক্তিটি দিয়ে কবি চাষির কঠিন মাটি কষে চাষ করার দিকটিকে বুঝিয়েছেন।
চাষিরা গ্রামের নিতান্তই সাধারণ মানুষ। তারা শুধু দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য নিরন্তর পরিশ্রম করে। তাদের পরিশ্রমের উপযুক্ত পারিশ্রমিকও তারা পায় না। এ বিষয়টিকে বর্ণনা করতেই কবি উলিখিত চরণটি ব্যবহার করেছেন।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টি ‘ঐকতান’ কবিতার খেটে খাওয়া মানুষের দিকটিকে ফুটিয়ে তুলেছে।
সমাজে একশ্রেণির মানুষ আছে, যারা শুধু বেঁচে থাকার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে। অনেক সময় তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনেও বিঘœ ঘটে। ফলে এ শ্রেণির মানুষ নিজেদের আরও বেশি অসহায় ভাবতে থাকে।
উদ্দীপকের সাইফুদ্দীন একজন কৃষক। সে দুবেলা দুমুঠো ভাতের আশায় নিরন্তর নিরলস পরিশ্রম করে। তার মতো অসংখ্য মানুষের পরিশ্রমেই যে দেশ এগিয়ে যায় তা সে জানে না। একইভাবে ‘ঐকতান’ কবিতাটিতেও চাষি ও তাঁতির বিষয়টি জানা যায়। তারা এই নিরন্তর পরিশ্রম করে শুধু খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার জন্য।
তারা রাষ্ট্রচিন্তা করতে পারে না। অথচ তাদের পরিশ্রমেই দেশ এগিয়ে যায়, এটি তাদের জানার বাইরে। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টি ‘ঐকতান’ কবিতার খেটে খাওয়া মানুষের দিকটিকে ফুটিয়ে তুলেছে।
ঘ. ‘ঐকতান’ কবিতার সমগ্র ভাব উদ্দীপকে ফুটে ওঠেনি।”মন্তব্যটি সঠিক।
অজানাকে জানার বাসনা মানুষের সহজাত ধর্ম, এটি চিরদিন থাকবে। এর মাঝে আনন্দ আছে, শিক্ষণীয় বিষয় আছে। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার দরুন চাইলেও অনেক কিছু করা যায় না। ফলে সবসময় শূন্যতা বিরাজ করে মানুষের মাঝে।
উদ্দীপকের সাইফুদ্দীন কৃষি কাজ করে জীবনযাপন করে। সে চায় দুবেলা দুমুঠো ভাত। তাদের নিরলস শ্রমেই এগিয়ে যায় একটি রাষ্ট্রÑ অথচ তা তারা জানে না। ‘ঐকতান’ কবিতাটিতে খেটে খাওয়া মানুষের চিত্র পাওয়া যায়। এ কবিতায় আরও বর্ণিত হয়েছে জীবনের সীমাবদ্ধতা, অজানা রহস্য, শূন্যতাবোধ। এছাড়া কবিতায় ফুটে উঠেছে বিভিন্ন সুরের মূর্ছনা।
উদ্দীপকের সাইফুদ্দীনকে একজন খেটে খাওয়া মানুষ হিসেবে দেখা যায়। পক্ষান্তরে বিচিত্র বিষয় সংমিশ্রণে ‘ঐকতান’ কবিতাটিকে অনন্যসাধারণ রূপদান করা হয়েছে।
৪. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
আমিনুল ইসলাম একজন ডাক্তার। তিনি সবসময় চেষ্টা করেন পরের মঙ্গল করতে, বিনা খরচে সমাজে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে। কিন্তু বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে তাঁর পক্ষে সমাজের মানুষদের ভালো চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় নি। তাই তিনি এমন একজন ডাক্তারের পথ চেয়ে আছেন যিনি নিরীহ, বঞ্চিত, দরিদ্র, অসহায় ও বিকলাঙ্গ মানুষের সেবা নিশ্চিত করে একটি উত্তম সমাজ উপহার দিবেন।
ক. কবি কার বাণীর জন্য কান পেতে আছেন?
খ. “নিত্য আমি থাকি তার খোঁজে”Ñকথাটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের আমিনুল ইসলামের মাঝে ‘ঐকতান’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘ঐকতান’ কবিতার আংশিক ভাব প্রতিফলিত হয়েছে।”Ñমন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবি মাটির কাছাকাছি মানুষের বাণীর জন্য কান পেতে আছেন।
খ. কবির অসমাপ্ত দায়িত্ব সমাপ্ত করতে কোনো এক কবির আকাক্সক্ষায় চরণটি ব্যবহার করা হয়েছে।
কবি একজন কবির আশায় পথ চেয়ে আছেন, যিনি দেশ ও মাটির টানে ছুটে আসবেন। তিনি এসে কবির অসমাপ্ত দায়িত্ব সমাপ্ত করবেন। এই প্রত্যাশা তুলে ধরতে প্রশ্নোক্ত চরণটি কবি ব্যবহার করেছেন।
গ. উদ্দীপকের আমিনুল ইসলামের মাঝে ‘ঐকতান’ কবিতার আকাক্সক্ষার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।
দেশ, মাটি ও মানুষ একই চেতনাই লালিত। দেশ ও মাটির কল্যাণে যে মানুষটির পদচারণা শুরু হয় সেই হয় দেশপ্রেমিকের মূর্তমান চিত্র। দেশ, মাটি আর মানুষের জন্য কাজ করার অভিপ্রায় তৈরি করা উচিত।
উদ্দীপকে জানা যায়, আমিনুল ইসলাম একজন ডাক্তার। তিনি সকলের কল্যাণ ও সেবা নিশ্চিত করতে চান। তবে যখন পুরো দায়িত্ব সুন্দরভাবে সমাপ্ত করতে পারেন নি, তখনই তিনি এমন একজন ডাক্তারের প্রত্যাশী হয়ে বসে আছেন, যিনি সমাজের মানুষের উত্তম চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করবেন। ‘ঐকতান’ কবিতার কবি অনুধাবন করেন যে, তাঁর পক্ষে পুরো দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয়নি।
তিনি এমন একজন কবির প্রত্যাশায় বসে থাকেন যিনি দেশ, মাটি আর মানুষের কল্যাণে লিখবেন। উদ্দীপকের আমিনুল ইসলামের মাঝে ‘ঐকতান’ কবিতার আকাক্সক্ষার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে ‘ঐকতান’ কবিতার আংশিক ভাব প্রতিফলিত হয়েছে। মন্তব্যটি যথার্থ।
পৃথিবী এক রহস্যপুরী। মমতাময়ী এ পৃথিবীতে এমন অনেক নয়নাভিরাম দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা দেখলে জীবনে মাহাত্ম্য বেড়ে যায়। সবার নিমিত্তে চিন্তা করার সুন্দর মন গড়ে ওঠে।
‘ঐকতান’ কবিতার কবিকে অন্য কবির প্রত্যাশী হয়ে থাকতে দেখা যায়, যিনি মাটি ও মানুষের সহযোগী হবেন। এ কবিতাটিতে বর্ণিত হয়েছে শূন্যতাবোধ, সীমাবদ্ধতা, মাতৃভূমি চেতনা ও প্রকৃতি চেতনা। পাশাপাশি কবিতাটিতে সুরের অপূর্ণতার দিকটিও ফুটে উঠেছে। পক্ষান্তরে উদ্দীপকে ডাক্তার আমিনুল ইসলামের আকাক্সক্ষার দিকটি বর্ণিত হয়েছে। তিনি এমন একজন ডাক্তারের আকাক্সক্ষা করেছেন, যিনি তার অসমাপ্ত দায়িত্ব সমাপ্ত করতে পারবেন।
উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়ে শুধু ‘আকাক্সক্ষার’ দিকটি প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে ‘ঐকতান’ কবিতাটিতে বিচিত্র ভাবের সমাহার আছে। ফলে নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয় ‘ঐকতান’ কবিতার আংশিক ভাব ধারণ করে।
৫. নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বিশিষ্ট লেখক সাজেদ করিম নিরন্তর পৃথিবীর নানা দেশ ভ্রমণ করে বেড়ান। বিচিত্র দেশ ও বৈচিত্র্যময় মানুষকে জানার আগ্রহে এ পর্যন্ত তিনি প্রায় সাতাশটি দেশ ভ্রমণ করেছেন। তবুও তিনি অতৃপ্ত।
ক. নগর রাজধানী কোথায়?
খ. কবির অগোচরে কী রয়ে গেছে? বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের সাজেদ করিম ও ‘ঐকতান’ কবিতার কবির দৃষ্টিভঙ্গির বৈসাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ লাইনের আলোকে ‘ঐকতান’ কবিতার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. নগর রাজধানী দেশে দেশে।
খ. জগতের বিচিত্র সৌন্দর্য কবির অগোচরে রয়ে গেছে।
কবির অগোচরে অগণিত নগর রাজধানী, মানুষের বহু কীর্তি, বহু নদী-গিরি সিন্ধু-মরু, বহু অজানা জীব ও অপরিচিত তরু রয়ে গেছে। কারণ এই পৃথিবী যেমন বিশাল, তেমনি বৈচিত্র্যময়। একজন মানুষের অতি ক্ষুদ্র জীবনে সব কিছু দেখা সম্ভব নয়।
গ. উদ্দীপকের বিশিষ্ট লেখক সাজেদ করিম এবং ‘ঐকতান’ কবিতার কবির মধ্যে কিছু বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
সাজেদ করিম ও কবি দুজনই বিচিত্র দেশ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ জনজীবনকে জানতে আগ্রহী। অবশ্য কবির এই অবস্থান তাঁর কাছেও সন্তোষজনক ছিল না। তিনি এটিকে বলেছেন ‘ভিক্ষালব্ধ ধন’। সাজেদ করিম সাতাশটি দেশ ভ্রমণ করেও অতৃপ্ত। কারণ তিনি জানেন আরও অগণিত দেশ ও মানুষকে তাঁর জানা হয়নি।
সুদূরকে কাছ থেকে জানার আগ্রহে সাজেদ করিম পৃথিবীর নানা দেশ ভ্রমণ করে বেড়ান। ভ্রমণের মধ্য দিয়েই মানুষকে তিনি কাছে টানতে চান, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে চান পৃথিবীর নানাপ্রান্ত। অন্যদিকে কবি ভ্রমণ নয়; বরং ভ্রমণ বৃত্তান্ত পড়েন। অধিক জ্ঞানের মধ্য দিয়ে তিনি জীবন জগৎ ও পারিপার্শ্বকে জানতে চান, জানতে চান পৃথিবীর জনজীবন কোলাহলকেও। এখানেই তাঁদের বৈসাদৃশ্য।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | PDF
HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | PDF
ঘ. উদ্দীপকের শেষ লাইনে ‘ঐকতান’ কবিতার তাৎপর্য নিহিত। ‘ঐকতান’ কবিতায় ব্যাপ্ত হয়েছে একটি অতৃপ্তির সুর। জীবন-জগৎ ও পারিপার্শ্বিককে নিবিড়ভাবে জানতে না পারার অতৃপ্তি কিংবা বৈচিত্র্যময় জনজীবনের সঙ্গে একাত্ম হতে না পারার আক্ষেপ কবিতায় স্পষ্ট।
উদ্দীপকের সাজেদ করিম অজানাকে জানার আগ্রহে পৃথিবীর নানান দেশ ভ্রমণ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি হয়তো অনেক দেশ, দর্শনীয় স্থান ও মানুষকে জানার ও দেখার সুযোগ পেয়েছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু বাকি রয়ে গেছে বহু দেশ ও বহু মানুষ।
সেখানেও আছে অফুরন্ত কর্মকোলাহল, আছে জীবনের নিবিড় উত্তাপ। যা হয়তো তাঁর পক্ষে একজীবনে জানা ও বুঝা সম্ভব হবে না। এই বোধ ও সচেতনতাই তাঁর ভেতরে অতৃপ্তির জন্ম দিয়েছে।
‘ঐকতান’ কবিতার কবিও এই বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন। পৃথিবীর বিশালতা ও জীবনের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতনতা তাঁর মধ্যে সৃষ্টি করে অতৃপ্তির অনিশ্চয়তাবোধ।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকের শেষ লাইনে ‘ঐকতান’ কবিতার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ধরা পড়েছে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।