HSC | আমার পথ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৮ | বাংলা ১ম | PDF: বাংলা ১ম পত্রের আমার পথ গল্পটি হতে যেকোনো ধরনের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের আমার পথ গল্পটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
আমার পথ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর সমুহ:
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
যারা ঘরের পাশে পাহাড়ের অজগর, বনের বাঘ নিয়ে বসবাস করে, তারা আজ নীরবে বিদেশির দাসত্ব করে। শুনে ভীষণ ক্রোধে হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে ওঠে। সারা দেহমনে আসে প্রলয়ের কম্পন, সারা বক্ষ মন্থন করে আসে অশ্র“।
ক. বেশি বিনয় দেখাতে গিয়ে অনেক সময় কোনটি ঘটে?
খ. পরাবলম্বন কেন আমাদের নিষ্ক্রিয় করে তোলে?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের বৈসাদৃশ্য প্রমাণ কর।
ঘ. “সারা দেহমনে আসে প্রলয়ের কম্পন”Ñ উক্তিটি ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বেশি বিনয় দেখাতে গিয়ে অনেক সময় নিজের সত্যকে অস্বীকার করে ফেলা হয়।
খ উত্তর: পরাবলম্বনতা মানুষের সঞ্জীবনী শক্তি ও আত্মশক্তি ক্রমান্বয়ে বিনষ্ট করে ফেলে। নিজের সত্তাকে বিকিয়ে অন্যের গলগ্রহ হয়ে থাকলে মানুষ ধীরে ধীরে অলস ও কর্মবিমুখ হয়ে পড়ে। তার নিজের যে একটা অলৌকিক শক্তি আছে তা বিকাশে বাধাপ্রাপ্ত হয়। তখন মানুষ অন্যের দানে, দয়ায়, দাক্ষিণ্যে বেঁচে থাকে। পুরাতন-জরাজীর্ণ ধ্যানÑধারণা আর মিথ্যাকে সে আঁকড়ে ধরে কোনো রকমে বেঁচে থাকে। আসলে এ বাঁচায় কোনো কৃতিত্ব নেই।
গ উত্তর: উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের যথেষ্ট অমিল লক্ষ করা যায়।
বাঙালি ভুলে গেছে তাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির কথা, ভুলে গেছে তাঁদের আসল পরিচয়। তারা যে জ্বলে-পুড়ে মরবার জন্য প্রস্তুত কিন্তু মাথা নোয়াবার নয়, তা যেন আজ ভাবাও অবান্তর। দিনের পর দিন তাঁর সন্তানেরা মুখ বুজে সহ্য করছে বিদেশিদের পরাধীনতার শৃঙ্খল।
উদ্দীপকে বর্ণিত বাঙালি একদিন ঘরের পাশে পাহাড়ের অজগর, বনের বাঘ নিয়ে বাস করেছে তারাই আজ নীরব, বিদেশির দাসত্ব করছে। আর এর জন্য বাঙালির আলস্য ও কর্মবিমুখতা দায়ী। এই দাসত্বের জন্য বাঙালি আজ সকলের চেয়ে ঘৃণ্য। শুনে ভীষণ ক্রোধে হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে আসে, সারা দেহমনে প্রলয়ের কম্পন আসে, সারা বুক বেয়ে অশ্র“ নামে।
কিন্তু ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলেছেন, মানুষের ভেতরে যে ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে তা যদি সে উপলব্ধি করে তাহলে ঐ ক্ষমতার বলে সে তার সামনের সমস্ত বাধা-বিপত্তি, প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারবে। প্রাবন্ধিক বলেছেন, যার অন্তরে ভয়, সে নিজেকে যেমন ভয় পায় তেমনি বাইরের সবকিছুতেই তার ভয়। যার মনে মিথ্যা সে নিজেকেও ভয় পায়। এখানেই প্রবন্ধের অমিল।
ঘ উত্তর: বাঙালিরা নীরবে বিদেশিদের দাসত্ব করে বলেই সারা দেহমনে প্রলয়ের কম্পন আসে।
বাঙালি যে সাহসী জাতি তা ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। বাঙালি শুধু লাঠি দিয়েই তার স্বাধীনতাকে অক্ষুণœ রাখতে চেষ্টা করেছে। বাংলার তরুণরাই স্বাধীনতার জন্য অসম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে, যা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত আছে। কিন্তু সেই বাঙালিরা আজ পরদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে।
উদ্দীপকে লক্ষণীয়, বাঙালি দিনের পর দিন পৃথিবীর লোককে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতো, সেই আজ সকলের দ্বারে ভিখারি। বাঙালিরা ঘরের পাশে পাহাড়ের অজগর আর বনের বাঘ নিয়ে বাস করলেও নীরবে বিদেশিদের দাসত্ব করছে। আর এ জন্যই ভীষণ ক্রোধে প্রাবন্ধিকের হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে ওঠে, দেহমনে আসে প্রলয়ের কম্পন।
প্রাবন্ধিক বলেছেন, বাঙালি তার নিজের সত্যকে ভালোভাবে চেনে না বলেই তার অন্তরে ঢুকে আছে ভয়, এই ভয়ের জন্য সে নিজের অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞ। এই নিষ্ক্রিয়তা তাকে সত্যের পথ থেকে মিথ্যা নামক কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধকার পথে নিয়ে গেছে। আত্মাকে চিনলেই আত্মনির্ভরতা আসে অর্থাৎ নিজের ওপর নিজের ভরসা আসে। তাই প্রাবন্ধিক বলেছেন, পরনির্ভরতা পরিহার করে নিজের শক্তি ও সামর্থ্যরে ওপর প্রতিষ্ঠিত হলেই কেবল স্বাবলম্বী হওয়া যাবে।
আলোচনার দ্বারপ্রান্তে এসে বলা যায়, মানুষ বাইরে যতই গোঁয়ার্তুমি বা স্বাধীন হওয়ার কথা মুখে বলুক না কেন, সে যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভেতরের গলদ দূর করতে না পারবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে পরাধীনই থাকবে। তাই অন্তরের দাসত্ব দূর করে নিজের ওপর দণ্ডায়মান হয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার কথা ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম ফুটিয়ে তুলেছেন।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
আজকাল শিক্ষিত বেকারদের মাঝে পরনির্ভরশীলতা বাড়ছে। তারা এর ওপর অটল বিধায় এ সংখ্যাটি কমানো সম্ভবপর নয়। কিন্তু নিজের সম্পর্কে জানলে তারা আর এ সমস্যার সম্মুখীন হতো না। পরের দিকে চেয়ে থাকার জন্য তাদের মন আজ মানসিক দাসত্বে পরিণত হচ্ছে। এ দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে না আসলে জাতীয় জীবনে মুক্তি সম্ভব নয়।
ক. বাংলাদেশের জাতীয় কবি কে?
খ. নিজেকে চিনলে আর কাউকে চিনতে বাকি থাকে না। প্রাবন্ধিকের এ মতামতটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকটি ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের শিক্ষিত বেকারদের মানসিক দাসত্ব পরিবর্তনে প্রয়োজন আত্মনির্ভরতা”Ñ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
খ উত্তর: মানুষ যদি তার নিজ সত্তাকে চিনতে পারে অর্থাৎ নিজ দেশের সংস্কৃতি ও ধর্মবোধ জাগ্রত করে তাহলে বাইরের কোনো অপশক্তিই তাদের গ্রাস করতে পারে না।
এদেশের মানুষের মতো জ্ঞানশক্তি ও প্রেমশক্তি পৃথিবীর আর অন্য কোনো জাতির মধ্যে নেই। এদেশের মানুষ শত শত বছর ধরে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ধর্মবোধ জাগ্রত রেখে বসবাস করছে। নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য ও সোনার বাংলাকে স্বকীয় করার জন্য আত্মোৎসর্গ করতে তারা পিছপা হয়নি। তাই প্রাবন্ধিক বলেছেন, নিজেদের সংস্কৃতি, সভ্যতা, ঐশ্বর্য, ধর্মবোধ সম্পর্কে সচেতন থাকলে অন্যরা এদেশের সম্পদ লুট করতে পারত না।
গ উত্তর: আমি মনে করি উদ্দীপকটি ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। কারণ উদ্দীপকে যে পরনির্ভরশীলতা ও মানসিক দাসত্বের কথা বলা হয়েছে তা ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেও ফুটে উঠেছে।
পরনির্ভরশীলতা মানুষকে অমানুষ করে তোলে, মানুষকে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হতে বাধা সৃষ্টি করে, তাঁকে নি®প্রাণ পুতুলের মতো করে পরের আজ্ঞাবাহী দাসে পরিণত করে। বহুকাল ধরে আমাদের সমাজের মানুষের অন্তরের উচ্চবৃত্তিগুলো বিনাশ হওয়ায় তাদের মস্তিষ্ক ও হৃদয় অন্যের দাস হয়ে পড়েছে।
উদ্দীপকে আমরা লক্ষ করি, আজকাল আমাদের দেশের শিক্ষিত বেকাররা পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। কিন্তু তাদের এ পরনির্ভরশীলতার প্রধান কারণ নিজের সম্পর্কে অচেতন হওয়া। প্রত্যেক মানুষের মাঝেই সুপ্ত প্রতিভা আছে কিন্তু মানুষ আত্মশক্তি দ্বারা তা বিকশিত করে না। যার ফলে পরের দিকে চেয়ে থেকে মনটাও দাসে পরিণত হয়েছে।
‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক এ পরনির্ভশীলতা ও দাসত্বপনার কথা তুলে ধরেছেন। কিন্তু অলস ও কর্মবিমুখ মানুষ তা না করে ধীরে ধীরে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যে-বাঙালি একদিন সারা পৃথিবীর লোককে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াত আজ তারা পথের ভিখারি। আর এ হীন অবস্থার জন্য লেখক তাদের আলস্যকে দায়ী করেছেন। সুতরাং পরনির্ভরতা ও দাসত্বপনার দিক থেকে উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি অবশ্যই সঙ্গতিপূর্ণ।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকের শিক্ষিত বেকারদের মানসিক দাসত্ব পরিবর্তনে প্রয়োজন আত্মনির্ভরতা।”Ñপ্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
উদ্দীপকে শিক্ষিত যুবক বেকারদের পরনির্ভরশীলতার একমাত্র কারণ নিজ সম্পর্কে সচেতনতা। নিজের ভেতরের প্রতিভাকে জ্ঞানের দ্বারা উদ্ভাসিত করা। আলস্য ও কর্মবিমুখতা পদে পদে তাদের দাসত্বেকে পরিণত করেছে আর অন্যের দিকে চেয়ে থাকার জন্য তারা আত্মনির্ভরশীল হতে পারছে না।
প্রাবন্ধিকের মতে, নিজেকে চিনলে নিজের সত্যকেই কর্ণধার মনে করে নিজের শক্তির ওপর অটুট বিশ্বাস জন্মে। এ বিশ্বাস থেকেই তার মধ্যে স্বাবলম্বিতা আসে। এ স্বাবলম্বিতাই পারে মানুষকে পরনির্ভরশীলতা থেকে দূরে রাখতে। আত্মনির্ভরতা যেদিন বাঙালির মাঝে প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিনই বাঙালি পরনির্ভরশীলতার গ্লানি থেকে মুক্তি পাবে।
অতএব, আত্মাকে চিনে, নিজের সত্যকে জেনে, নিজের শক্তিতে বলীয়ান হওয়ার যে দম্ভ, এই দম্ভই শির উঁচু করে। তাই উদ্দীপকের শিক্ষিত বেকারদের মানসিক দাসত্ব পরিবর্তনে প্রয়োজন আত্মনির্ভরতাÑএ উক্তিটি যৌক্তিক।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
মুসলমানদের সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বলীয়ান করতে ১৯২৬ সালে বাংলায় ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ গড়ে ওঠে। এখান থেকে ‘শিখা’ নামের একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। যেখানে স্লোগান ছিল ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’। সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বলবৎ থাকা একান্ত কাম্য।
ক. কী থাকলে মানুষের ধর্মের বৈষম্যের ভাব থাকে না?
খ. প্রাবন্ধিকের মতে, এদেশের নতুন জাত গড়ে উঠবে না কেন?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের অমিলগুলো দেখাও।
ঘ. “জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব”Ñ উক্তিটির আলোকে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি বিশ্লেষণ কর।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: কাজী নজরুল ইসলামের মতে, কেউ নিজের ধর্ম চিনলে সে অন্যের ধর্ম ঘৃণা করতে পারে না।
খ উত্তর: প্রাবন্ধিকের মতে, এদেশের ধ্বংস না হলে নতুন জাত গড়ে উঠবে না।
প্রাবন্ধিক মনে করেন, আমাদের মাতৃভূমি পৃথিবীর স্বর্গ। অতি প্রাচুর্য আমাদের বিলাসী, ভোগী করে শেষে অলস-বিমুখ জাতিতে পরিণত করেছে। আমাদের ঐশ্বর্য শত বিদেশি লুটে নিয়ে যায়, আমরা তার প্রতিবাদ তো করি না, উল্টো তাদের দাসত্ব করি¬Ñ এ লুণ্ঠনে তাদের সাহায্য করি।
গ উত্তর: উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের অনেক বিষয়েই অমিল লক্ষ করা যায়।
জ্ঞান সকল প্রকার অজ্ঞতা অন্ধকার দূর করে মানুষকে আলোর পথে নিয়ে যায়। নতুনের স্বপ্ন ও সম্ভাবনা তাদের প্রেরণা জোগায়। কিন্তু যারা ভীরু, কাপুরুষ তারা জ্ঞানের আলো উদ্ভাবনে ভয় পায়, শঙ্কিত হয়। অন্ধকারের সাথেই তাদের সখ্য গড়ে ওঠে।
উদ্দীপকে সমগ্র জনগোষ্ঠীর কথা ফুটে ওঠেনি, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ আরো জাতি-উপজাতি আছে, যা উপেক্ষিত হয়েছে। শুধু সমাজের একটি অংশ মুসলমানদেরকে সাহিত্য-সংস্কৃতিতে উদারমনা ও সচেতনভাবে অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক অখণ্ড বাঙালির কথা তুলে ধরেছেন।
উদ্দীপকে যেমন সাহিত্যে-সংস্কৃতিতে উদারমনা ও সচেতনভাবে অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে, সেখানে প্রবন্ধে নজরুল বাঙালিদের সত্যের পথে চলার কথা বলেছেন, আর এ সত্যের পথ হলো আলো ও জ্ঞানের পথ। উদ্দীপকে যে ‘শিখা’ পত্রিকার কথা বলা হয়েছে তা ছিল একটি সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা। পক্ষান্তরে, ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে যে-পত্রিকার উলেখ আছে তা হলো ‘ধূমকেতু’।
‘ধূমকেতু’ ছিল বিদ্রোহাত্মক একটি পত্রিকা। ‘শিখা’ পত্রিকার স্লোগান ছিল ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।” পক্ষান্তরে ‘ধূমকেতু’ ছিল আগুনের সমার্জ্জনা। যে-আগুনের শিখায় দেশের যারা শত্র“, যা কিছু মিথ্যা, ভণ্ডামি-মেকি তা দূর হবে। সুতরাং একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উদ্দীপকের সাথে প্রবন্ধের ক্রিয়াকলাপ ও অখণ্ডতার দিক থেকে অমিল লক্ষ করা যায়।
ঘ উত্তর: “জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।” প্রশ্নোক্ত উক্তিটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
মানুষ যখন আলো ও অন্ধকারকে সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে না তখন মরীচিকার পেছনে ছোটে। জ্ঞানের আলো থেকে আসে কল্যাণ, মহত্ত¡, সমৃদ্ধি ও জয়ের প্রেরণা। অন্যদিকে অজ্ঞতা থেকে আসে অশান্তি, হতাশা, ব্যর্থতা ও অমানিশার হাতছানি। উদ্দীপকে যে-জ্ঞানের কথা বলা হয়েছে তাকে জীবন-দর্শনের আলো হিসেবে অভিহিত করা হয়। তাই আলো যেখানে স্বল্প-সেখানে জ্ঞানের পরিধিও ক্ষীণ। আর মুক্তিও সেখানে অসম্ভব।
‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক যে-সত্যের কথা বলেছেন তা হলো জ্ঞান বা আলো। এই জ্ঞান মানুষের মাঝে উদ্ভাসিত হলে তার চলার পথে কোনো বাধা-বিপত্তি আসলে সে অনায়াসে তা পরাহত করতে পারে। এ সত্যের পথ অতি সহজ নয়, বড়ই কণ্টকাকীর্ণ। এই পথেই মানুষ তার সকল বিভ্রান্তি ও অন্ধকার দূর করে পায় মুক্তির স্বাদ।
কিন্তু মুক্তির জন্য হয় সাহসী; পথে যদি কোনো লোকলজ্জার ভয়, রাষ্ট্রের ভয় তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে তাহলে এই পথ চলায় বাঁধার সৃষ্টি হবে। প্রাবন্ধিক স্পষ্টই বলেছেন, সত্য হলো পূর্ণতার প্রতীক। এই পথের পথিকরা ভীরুদের কথা বিশ্বাস করে না। তারা আশায় বুক বেঁধে অন্ধকার ফেলে আলোর পথে এগোয়।
অতএব, উদ্দীপকে যে-প্রাণের কথা বলা হয়েছে সেই জ্ঞান যদি মানুষের অন্তরে সম্পূর্ণ প্রস্ফুটিত না হয়, তাহলে সেখানে ভালো কিছু আশা করা যায় না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত উক্তিতে যে সত্য ফুটে উঠেছে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে তা অবশ্যই যৌক্তিক।
পরীক্ষা-প্রস্তুতি যাচাই অংশ
সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক
সৃজনশীল প্রশ্ন ১উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বিশ্বের কল্যাণমন্ত্র তাহাকে ঘিরিয়া বলিলÑ‘এখন অনেক দেরি, পথ চল।’ পথিক চমকিয়া উঠিয়া বলিলÑ ‘ওগো আমি যে তোমাকে চাই!’ সে অচিন সাথি বলিয়া উঠিলÑ‘আমাকে পেতে হলে ঐ সামনের বুলন্দ দরওয়াজা পার হতে হয়!’ দুরন্ত পথিক তাহার চলার দুর্বার বেগের গতি আনিয়া বলিল, ‘হ্যাঁ ভাই, তাই আমার লক্ষ্য’। অনেক দূরে বনের ফাঁকে মুক্ত গগন একবার চমকাইয়া গেল। পিছন হইতে নিযুত তরুণ কণ্ঠের বিপুল বাণী শোর করিয়া উঠিলÑ‘আমাদেরও লক্ষ্য ঐ, চল ভাই, আগে চল। তোমারই পায়ে চলার পথ ধরে আমরা চলেছি।’ পথিক বুকভরা গৌরবের তৃপ্তি তাহার কণ্ঠে ফুটাইয়া হাঁকিয়া উঠিলÑ‘এ পথে যে মরণের ভয় আছে।’ বিক্ষুদ্ধ তরুণ কণ্ঠে প্রদীপ্ত বাণী বাজিয়া উঠিল-‘কুছ পরওয়া নেই। ও তো মরণ নয়, জীবনের আরম্ভ।’
ক. ‘মেকি’ শব্দের অর্থ কী?
খ. রাজভয়-লোকভয় প্রাবন্ধিককে বিপথে নিতে পারবে না কেন?
গ. উদ্দীপকের পথিকের মধ্যে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের প্রতিফলিত দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা দিকটিই ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক কামনা করেছেনÑ বিশ্লেষণ কর।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. কপট।
খ. প্রাবন্ধিক তাঁর সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত বলে রাজভয়-লোকভয় তাঁকে বিপথে নিতে পারবে না।
প্রাবন্ধিক সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত। তিনি তাঁর আত্মাকে চেনেন খুব ভালোভাবেই। কেননা, সত্য ও ন্যায়ের পথে তিনি এমনভাবে অটুট যে, কোনো প্রকার ভয় তাঁকে কাবু করতে পারবে না। এজন্যই রাজভয়-লোকভয় তাঁকে বিপথে নিতে পারবে না।
গ. উদ্দীপকটি মনোযোগসহকারে পড়ে পথিক চরিত্রটি অনুধাবন কর। এরপর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি পড়ে তার সঙ্গে উক্ত পথিকের সাদৃশ্য নির্ণয় করে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটি ভালোভাবে পড়ে এর মধ্যে ফুটে ওঠা দিকটি অনুধাবন কর। তারপর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি ভালোভাবে পড়ে প্রাবন্ধিকের কামনা উপলব্ধি কর। দেখবে উভয়ের বিষয়বস্তুই এক। এ বিষয়টি সহজ ও সাবলীল ভাষায় বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
‘শুনুন, মনে রাখবেন, শত্র“বাহিনী ঢুকেছে, নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করবে, লুটতরাজ করবে। এই বাংলায়-হিন্দু, মুসলিম, বাঙালি, অবাঙালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই। তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের ওপর, আমাদের যেন বদনাম না হয়।’
ক. কে বাইরের ভয় পায়?
খ. মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের কোন বিষয়টির সাদৃশ্য রয়েছে? চিিহ্নত কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকটি ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আংশিক প্রতিফলন’Ñ বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. যার ভিতরে ভয়।
খ. মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম বলতে মানব-ধর্মকে বোঝানো হয়েছে।
পৃথিবীতে জাত-পাত, উঁচু বর্ণবৈষম্য প্রভৃতি বিদ্যমান। কিন্তু সবারই এক পরিচয়, আর তা হলো সবাই মানুষ। কেননা, সবার ওপরে মানুষ সত্য, তার উপর আর কিছুই নেই। প্রশ্নোক্ত কথাটি দ্বারা মূলত মানুষের অসা¤প্রদায়িক চেতনাকে বোঝানো হয়েছে।
টিপস্ :
গ. উদ্দীপকটি ভালোভাবে পড়ে এর দৃশ্যমান বিষয়টি অনুধাবন কর। এরপর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি পড়ে এর সঙ্গে উক্ত দৃশ্যমান বিষয়টির সম্পর্ক নির্ণয় করে তা উপস্থাপন কর।
ঘ. উদ্দীপকটি মনোযোগসহকারে পড়ে এর মূলকথা অনুধাবন কর। তারপর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সমগ্র বিষয় অনুধাবন কর। দেখবে উভয়ের মধ্যে মিল-অমিল বিদ্যমান। এ বিষয়টি সহজ-সরল ভাষায় বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মানবজীবনে ভুল-ত্র“টি হওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তাই বলে ভুলের মধ্যে জীবনকে ভাসিয়ে দেয়া কোনো বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে না। জীবনে ভুলকে একটা শিক্ষা ভাবতে হবে। তবেই মানুষ প্রকৃত পথে ফিরে আসতে পারবে। কেননা, যে মানুষ ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার পথ চলতে পারে, সেই মানুষই জীবনে সার্থক।
ক. কোনটি কাজী নজরুল ইসলামের প্রাণপ্রাচুর্যের উৎস বিন্দু?
খ. ভুল করেছি বুঝতে পারলে প্রাণ খুলে স্বীকার করতে প্রাবন্ধিক বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকের ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের ফুটে ওঠা দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকটি ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সমগ্র ভাব ধারণ করে না’Ñমূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. কাজী নজরুল ইসলামের প্রাণপ্রাচুর্যের উৎস বিন্দু হলোÑসত্যের উপলব্ধি।
খ. ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার জন্যই প্রাবন্ধিক ভুল করেছি বুঝতে পারলে প্রাণ খুলে স্বীকার করতে বলেছেন।মানুষ মাত্রই ভুল। কিন্তু ভুলকে আগলে ধরে বসে থাকা নিতান্তই বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। তাই ভুল করে বুঝতে পারলে তা স্বীকার করে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। যেন অদূর ভবিষ্যতে আর ভুল হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। এজন্য প্রাবন্ধিক ভুলকে প্রাণ খুলে স্বীকার করতে বলেছেন।
টিপস্ :
গ. উদ্দীপকটি মনোযোগসহকারে পড়ে তা অনুধাবন কর। তারপর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি পড়ে উদ্দীপকের সঙ্গে সাদৃশ্য নির্ণয় কর এবং তা সংক্ষেপে উপস্থাপন কর।
ঘ. উদ্দীপকটি ভালোভাবে পড়ে এর প্রধান প্রধান দিকগুলো অনুধাবন কর। এরপর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি ভালোভাবে পড়ে তার প্রধান দিকগুলো চিিহ্নত কর। দেখবে উদ্দীপকটি প্রবন্ধের সমগ্র বিষয় ধারণ করে না। এ বিষয়টি মূল্যায়ন অংশে লেখ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।