নামঃ শহীদ হাসান মেহেদী (সাংবাদিক)

নাগরিকত্বঃ বাংলাদেশী

জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী

পেশাঃ সাংবাদিক

আন্দোলনঃ কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২৪

তথ্যসূত্রঃ ঢাকা টাইমস

মৃত্যুর সময় ও কারণঃ কোটা সংস্কার আন্দোলনের খবর সংগ্রহে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গত ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ঢাকা টাইমসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মেহেদী।

ব্যক্তিগত জীবনঃ

শহীদ হাসান মেহেদী (সাংবাদিক)।। কোটা সংস্কার আন্দোলনের খবর সংগ্রহে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গত ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ঢাকা টাইমসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মেহেদী। তিনি জীবন দিয়ে অন্যান্য সাংবাদিকদের কাছে অনেক শিক্ষা রেখে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা জার্নালের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।

সংবাদ সংগ্রহে মাঠে দায়িত্ব পালনকারী সাংবাদিকদেরকে হাসান মেহেদীর মৃত্যুর ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ঢাকা টাইমসের সঙ্গে একান্ত আলাপে এসব বলেছেন এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ঢাকা টাইমসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মেহেদীর মৃত্যুতে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি এবং এটা একটি মর্মান্তিক ঘটনা যে একজন তরুণ রিপোর্টার তার পেশাগত দ্বায়িত্ব পালন করে এভাবে পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। বাংলাদেশে সাংবাদিকতার ইতিহাসে আমার ধারণা এরকম সম্মুখ সমরে থেকে কাভার করতে গিয়ে মারা যাওয়া এর আগে আমরা এভাবে দেখিনি। সেই জায়গা থেকে বলতেই হবে যে, তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে জীবন দিয়েছেন এবং এবার যে কোটা সংস্কার আন্দোলন হয়েছে এটা অত্যন্ত সহিংস হয়ে উঠেছিল এবং একপর্যায়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছিল একটি শক্তি। কোটা সংস্কারের বাহিরে গিয়ে তারা সরকারি স্থাপনায় হামলা করা, ধ্বংসযজ্ঞ করা এবং আমরা দেখেছি পুলিশও বেশ মারমুখী ছিল, যারা মাঠে ছিল। বিক্ষোভরত তারাও সাংঘাতিকভাবে ধ্বংস করেছিল একের পর এক স্থাপনা। এবং রায়টের মধ্যে পড়ে তিনি মারা গেছেন। তার একটি পরিবার আছে, সন্তান আছে এবং আমরা জানি বাংলাদেশে সাংবাদিকরা আর্থিকভাবে খুব একটা স্বচ্ছল থাকে না। ফলে স্বাভাবিক কারণে তাঁর পরিবারটি এখন বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়েছে।

হাসান মেহেদীর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ঢাকা টাইমস কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় তার পরিবারের পাশে থাকবে। একইসঙ্গে রাষ্ট্রেরও কিন্তু এখানে দ্বায়িত্ব আছে। একজন সাংবাদিক এরকম একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে। এজন্য সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট এই ব্যাপারে কী করতে পারে তা আমরা জানি না। আমাদের আবেদন থাকবে তারা এই পরিবারের খোঁজ-খবর নেবেন। একইভাবে আমাদের বড় শিক্ষা হলো যে রায়ট, দাঙ্গা এগুলো কাভার করতে গেলে যে নিরাপত্তার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের রিপোর্টারদের, ক্যামেরাম্যানদের, ফটো জার্নালিস্টদের ট্রেনিং ছাড়া যে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং এতে করে তাদের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাদের প্রয়োজনীয় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট দিতে হয় কর্তৃপক্ষের। সেটাও দেখি আমরা অনেক সময় উপেক্ষিত থাকে।

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, হাসান মেহেদী তার জীবন দিয়ে আমাদের কাছে অনেক শিক্ষা রেখে গেছেন এবং আমরা প্রত্যাশা করবো যে, অন্য সাংবাদিকরা যেন এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে একটি কথা ঠিক যে আমরা দেখেছি সাংবাদিকরা মারা গেলে কিছু হয় না বাংলাদেশে। বিচার হয় না। প্রচুর সাংবাদিক এর আগে খুন হয়েছে, আমরা বিচার হতে দেখিনি। আমরা চাই যে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক। কে দোষী এটা বের করা নিশ্চয় খুব কঠিন হবে না। এটা বের করা উচিত। এবং একইসঙ্গে এই পরিবারটির পাশে সবাই দাঁড়াক।

অন্যদিকে এবার আমরা দেখেছি সাংবাদিকদের উপরে প্রচণ্ড রকম আক্রমণ হয়েছে জানিয়ে সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, সাংবাদিকদের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, মোটরসাইকেল জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়েছে, গাড়ি জ¦ালানো হয়েছে, শারীরিকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। এমনকি নারায়ণগঞ্জের একজন নারী সাংবাদিককে যৌন নিপীড়নের শিকার হতে দেখেছি। যারা বিক্ষোভ করেন তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ সরকারের। সাংবাদিকরা কেন টার্গেট হলো এটিও আমাদের কাছে একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা প্রত্যেকটি ঘটনার তদন্ত চাই, বিচার চাই এবং যারা রাজনীতি করছেন যে সমস্ত রাজনৈতিক দলের কর্মীরা এসব কাজগুলো করেছেন, তারা এদেরকে (হামলাকারীদের) নিবৃত্ত করবেন আগামী দিনগুলোতে সে প্রত্যাশা রাখতে চাই।

ঢাকা জার্নালের প্রধান সম্পাদক বলেন, সবার আগে আরেকবার একটি কথা বলতে চাই, হাসান মেহেদীর মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত, আমরা দুঃখিত এবং একইসঙ্গে শোকাহত। কিন্তু রাষ্ট্রের কাছে আমাদের দাবি, ঢাকা টাইমস কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি আপনারাও তার পরিবারের খোঁজ খবর নেবেন, দ্বায়িত্ব নেবেন। একটি তরুণ প্রাণ তার পেশাগত দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মারা গেছেন। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং তার পরিবারটি যেন ভালো থাকে সে দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নেওয়ার দ্বায়িত্ব আমরা অনুভব করছি। সূত্র

উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.