নামঃ শহীদ তাহির জামান প্রিয় (সাংবাদিক)

প্রতিষ্ঠানের নামঃ পাঠশালা-সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট

নাগরিকত্বঃ বাংলাদেশী

জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী

জেলাঃ রংপুর

পেশাঃ পেশাদার আলোকচিত্র

আন্দোলনঃ কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২৪

শাখাঃ আলোকচিত্র

তথ্যসূত্রঃ দ্য রিপোর্ট

মৃত্যুর সময় ও কারণঃ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই ধানমন্ডির সেন্ট্রাল রোডে সংঘর্ষ চলাকালীন নিহত হন দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাবেক ভিডিও জার্নালিস্ট তাহির জামান প্রিয়। এছাড়াও কোটা আন্দোলন চলাকালীন ছয় দিনের সংঘর্ষে আরও দুইজন সাংবাদিক নিহতের খবর এসেছে।

ব্যক্তিগত জীবনঃ

শহীদ তাহির জামান প্রিয় (সাংবাদিক)।। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই ধানমন্ডির সেন্ট্রাল রোডে সংঘর্ষ চলাকালীন নিহত হন দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাবেক ভিডিও জার্নালিস্ট তাহির জামান প্রিয়। এছাড়াও কোটা আন্দোলন চলাকালীন ছয় দিনের সংঘর্ষে আরও দুইজন সাংবাদিক নিহতের খবর এসেছে।

কোটা আন্দোলন ছাড়াও সাম্প্রতিক বিভিন্ন আন্দোলন ফ্রিল্যান্স ভিত্তিতে পর্যবেক্ষণ করেছেন সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া তাহির জামান প্রিয়। চলতি বছর ‘গুটিপা’ নামের চামড়াজাত পণ্য তৈরির একটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠানে যোগদানের কথা ছিল সৃজনশীল এই তরুণের।

২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবে আহতও হয়েছিলেন তাহির জামান প্রিয়। ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২৮ অক্টোবর বিএনপির তাণ্ডবে আহতও হয়েছিলেন তিনি। চলতি বছর ১০ জানুয়ারি মেয়ে পদ্মপ্রিয় পারমিতার সঙ্গে আগেই শেয়ার করে রাখা একটি ছবিকে প্রোফাইল পিকচার বানিয়ে আবেগঘন ক্যাপশন লেখেন প্রিয়। শেয়ার করা সেই পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, “আমার মেয়ে পদ্মপ্রিয় পারমিতা।

৪ বছরে পা দিয়েছে পাখিটা। কাল থেকে ওর জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু। প্রথম স্কুল পদ্মর। ওর বাবা ও মা একই সাথে আমিই। সিংগেল ফাদার, আবার মায়ের দায়িত্বও আছে। আমার অতীত যা ছিল সেটা সুখকর নয়। কিন্তু অনাগত ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য অনেক অনেক সুখকর হবে ইনশাআল্লাহ। সবাই দোয়া করবেন আমার মেয়েটার জন্য।”

চিত্রকর্ম, ফটোগ্রাফিসহ সৃজনশীল কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে পছন্দ করতেন প্রিয়। বিভিন্ন সিনেমা ও সিরিজ নিয়ে পর্যালোচনা (রিভিউ) করার বিষয়ে তার ছিল বিশেষ দক্ষতা ও আগ্রহ। পাঠশালা-সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট থেকে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি (পেশাদার আলোকচিত্র) কোর্সের ওপর ডিপ্লোমা অধ্যয়ন করেন তিনি।

মাত্র ৫ মাস আগে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ ছেড়েছেন তাহির জামান প্রিয়। দুই দফায় এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ২০২৪’র ফেব্রুয়ারিতে মাল্টিমিডিয়া অনলাইন নিউজ পোর্টালটির ভিডিও জার্নালিস্ট পদ থেকে অব্যাহতি গ্রহণ করেন প্রিয়। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ফটো জার্নালিস্ট হিসেবে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভে যোগ দিয়েছিলেন প্রতিভাবান এই তরুণ।

প্রিয়’র সাবেক সহকর্মী দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের নিজস্ব প্রতিবেদক মাহাবুব আলম শ্রাবণ বলেছেন, দীর্ঘ সময় এক সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে গেলে তাহির জামান প্রিয় অসম্ভব মেধাবী এবং বিচক্ষণ মানুষ।

দুর্দান্ত ক্যামেরা চালাতে পারতো, ছবি আঁকতে খুব ভালবাসত ছেলেটা। আড্ডাবাজ মানুষ ছিল প্রিয়, আর সবচেয়ে বড় যে বিষয় সে একটা স্বপ্নবাজ মানুষ। নিজ দেশ নিয়ে সিনেমা বানানোর খুব ইচ্ছে ছিলো ওর। আমাকে প্রায় বলতো শ্রাবণ আমার মুভিটা খুব সুন্দর হবে দেখিস! তুই কিন্তু থাকবি।

কোন কাজের আগেই প্লানিং করতো। ফুল খুব পছন্দ করতো, একটা মজার বিষয় ছিলো ও খুব ঘুম পাগল মানুষ ছিলো। কখনও চলতি পথে রাস্তায় একটা ময়লা পরে থাকলে নিজ হাতে উঠিয়ে ডাস্টবিনে ফেলতো।

কোনদিন কখনো এমন শুনিনি কারোও সাথে ওর ঝগড়াবিবাদ হয়েছে। সদাহাস্যজ্বল ওর নাম যেমন প্রিয় ও সবার কাছে সে তেমনই প্রিয় ছিলো। ওকে সবাই খুব স্নেহ করতো, ভালোবাসতো কাউজে অল্পতেই ভালোবেসে কাছে টানার অসম্ভব ক্ষমতা ছিলো প্রিয়’র, জানিয়েছেন মাহাবুব।

ঘনিষ্ঠজনদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মো. আবু হেনা মোস্তফা জামান ও মোছা. সামছি আরা জামানের সংসারে নব্বইয়ের দশকে প্রিয়র জন্ম। রংপুর শহরেই তাদের বাড়ি।

এই আন্দোলনে তিনি ছাড়া আরও দুজন সাংবাদিক নিহতের খবর এসেছে। তারা হলেন অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা টাইমসের নিজস্ব প্রতিবেদক হাসান মেহেদি (২৮) ও সিলেটের স্থানীয় দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মো. তোরাব হোসেন।

১৯ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গ থেকে হাসান মেহেদির লাশ চিহ্নিত করা হয়। অন্যদিকে গত ২০ জুলাই গুলিতে আঘাত পেয়ে নিহতের পর সিলেটের স্থানীয় দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মো. তোরাব হোসেনকে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সূত্র

উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।

Welcome Back!

Login to your account below

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.