HSC | বাংলা ২য় | সংলাপ রচনা ১-১০ | PDF Download : বাংলা দ্বিতীয় পত্র হতে গুরুত্বপূর্ণ সব সংলাপ রচনা পত্র গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টির গুরুপূর্ণ কিছু সংলাপ রচনা পত্র নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
উচ্চ মাধ্যমিক ■ বাংলা (দ্বিতীয় পত্র) ■ নির্মিতি অংশের আলোচনা ও পরীক্ষা প্রস্তুতি
আলোচ্য বিষয়: সংলাপ রচনা
ইংরেজিতে Dialogue শব্দটির বাংলা অর্থ সংলাপ। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলছি। মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু এবং শিক্ষকদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতা করে থাকি। এক বা একাধিক ব্যক্তির মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর হওয়া আলাপচারিতা বা কথোপকথনই হচ্ছে সংলাপ।
সংলাপ রচনার নিয়ম
যে বিষয়ে সংলাপ রচনা করা হবে, সে বিষয়টি সম্পর্কে প্রথমেই ভালোভাবে ভাবনা-চিন্তা করে তারপর রচনা কার্যে অগ্রসর হতে হবে।
বিষয় কেন্দ্রিক সংলাপের বিষয়ে যথাযথ উপস্থাপনা থাকবে। তাছাড়া সমস্ত সংলাপের মধ্যে থাকবে একটি সুসংহত সামঞ্জস্যবোধ।
বিষয় অনুযায়ী চরিত্র সৃষ্টি করে সংলাপ রচনা করতে হবে। সংলাপের মধ্য দিয়ে চরিত্রের প্রকৃতি প্রতিফলিত হয়, আবার চরিত্রের স্বরূপ বুঝে নিয়ে সে অনুযায়ী সংলাপ রচনার প্রয়োজন আছে। একজন বৃদ্ধের মুখে ছেলেমানুষের মতো সংলাপ ব্যবহারে তাকে উন্মাদ বলে মনে হতে পারে। ঠিক সেরকমই শিশুর মুখে বৃদ্ধের মতো সংলাপ ব্যবহারও হাস্যকর।
দীর্ঘ বিবরণধর্মী সংলাপ রচনা পরিহার করতে হবে। অর্থাৎ সংলাপে উভয় বক্তার বলা বাক্যগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে হবে।
সংলাপের ভাষা হবে সহজ,সরল, বোধগম্য, প্রাঞ্জল,সাবলীল।
আয়তনের দিক থেকে সংলাপকে দীর্ঘায়িত না করে যথাযথ লিখতে হবে। অর্থাৎ পরীক্ষায় অধিক নম্বর পাওয়ার জন্য একটি সংলাপকে অযথা দীর্ঘায়িত করা যাবে না।
সংলাপের উপস্থিত বক্তাদের ভাষা একে অন্যের প্রতি আন্তরিক, শ্রদ্ধাপূর্ণ ও বুদ্ধিদীপ্ত হওয়া বাঞ্চনীয়।
বক্তার বলা পূর্ববর্তী সংলাপের সঙ্গে পরবর্তী সংলাপের যোগসূত্র অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।
সংলাপ রচনার ক্ষেত্রে যথাযথ যতি ও ছেদ (বিরাম) চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ অনুশীলন
১. করোনাভাইরাস সম্পর্কে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।
রাজু : হ্যালো মীনা, তোমাকে খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত দেখাচ্ছে। কিন্তু কেন?
মীনা : আমি খুবই চিন্তিত, কারণ আমার এক আত্মীয় স¤প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং সে এখনো সুস্থ হয়ে ওঠেনি।
রাজু : এটা সত্যিকার অর্থেই খারাপ লাগার মত একটি সংবাদ। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে করোনাভাইরাস যেভাবে খারাপ প্রভাব ফেলেছে, তা অস্বীকার করার মত নয়।
মীনা : হ্যাঁ, তুমি ঠিক বলেছো। আমাদের চারিপাশে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ এই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। আর এই মৃত্যু মিছিল যেন থামছেই না।
রাজু : হ্যাঁ, করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের প্রত্যাহিক জীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা বাইরে বের হতে পারছি না। এমনকি বিদ্যালয়েও যেতে পারছি না। আমাদের প্রায় সারাদিনই বাসায় বদ্ধ থাকতে হয়।
মীনা : শুধু তাই নয়, চারিদিকে এই রোগের প্রচুর বিস্তারের ফলে মানুষ প্রায় কর্মহীন হয়ে পরেছে। অনেকেই চাকরী হারিয়েছে এবং না খেতে পেয়ে কষ্ট করছে।
রাজু : সত্যিই তাই। এই মহামারী ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার কোন উপায় কি তোমার জানা আছে?
মীনা : আপাতদৃষ্টিতে করোনাভাইরাস স্থায়ীভাবে দূর করার কোন চিকিৎসা এখনো আবিস্কৃত হয়নি। তবে কিছু সুরক্ষা নিয়ম মেনে এই রোগের বিস্তার কিছুটা কমানো সম্ভব।
রাজু : কি সেই নিয়মগুলো। দয়া করে বলবে কি?
মীনা : অবশ্যই। আমাদের সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। বারবার সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবে না। অবশ্যই বাইরে বের হলে মাস্ক পড়তে হবে।
রাজু : তুমি ঠিক বলেছো। সুরক্ষার জন্য আমাদের এই স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মানা উচিত। এর বাইরে কি আর কোন নিয়ম আছে যা আমাদের অনুসরণ করা উচিত?
মীনা : হ্যাঁ, আমাদের অবশ্যই আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি যাওয়া উচিত নয়। আমাদের জনবহুল জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে এবং একজনের থেকে আরেকজনের অন্তত ৩ ফুট সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে।
রাজু : আমি অবশ্যই তোমার দেয়া নির্দেশনাগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবো এবং আমার পরিচিত সকলকে এ সম্পর্কে সচেতন করবো। তোমার আত্মীয়র জন্য শুভকামনা। আশা করা তিনি খুব শীঘ্রই সুস্থ্য হয়ে উঠবেন। আজ তাহলে বিদায় নিচ্ছি।
মীনা : বিদায়। ভালো থেকো এবং নিজের খেয়াল রেখো।
২. ধুমপানের ক্ষতিকরণ দিক নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।
রাজু : হ্যালো মীনা, তোমার পড়াশোনা কেমন চলছে?
মীনা : যথারীতি। তোমার পরীক্ষা কবে শুরু হবে?
রাজু : আমাদের পরীক্ষা দরজায় কড়া নাড়ছে (আসন্ন/খুব কাছেই)। কিন্তু পড়াশোনায় মন দিতে পারছি না। যাই হোক, গতকাল পত্রিকায় ধূমপানের বিপদ নিয়ে একটি ফিচার পড়েছিলাম। তুমি কি এটা নিয়ে সচেতন? পড়া
মীনা : অবশ্যই, আমিও ধূমপানের বিরুদ্ধে ভাবছি। ধূমপানের ফলে অনেক রোগ হয়। তুমি এটি সম্পর্কে কি মনে কর?
রাজু : আমি মনে করি ধূমপান এক ধরনের নেশা। তাছাড়া অন্য সব মারাত্মক আসক্তি শুরু হয় ধূমপানের মাধ্যমে।
মীনা : তোমার যুক্তি ঠিক। ধূমপান আমাদের জীবনকে ছোট করে ছাড়া কিছুই দেয় না। ধূমপানে অন্য কোন অপব্যবহার আছে বলে তুমি মনে করেন?
রাজু : ধূমপানে অনেক খরচ হয়। এছাড়া ধূমপায়ীর নিঃশ্বাসের মাধ্যমে দুর্গন্ধ ছড়ায়। তোমার কি তাই মনে হয় না?
মীনা : অবশ্যই। যখন কেউ তার সামনে ধূমপান করে তখন এটি অধূমপায়ীদের জন্য খুব বিরক্তিকর। ধূমপানের ধোঁয়া শিশুদের চোখে আঘাত করে। আমি কি ভুল?
রাজু : অবশ্যই না। প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ করতে হবে।
মীনা : হ্যাঁ, এ ব্যাপারে প্রচারণার ব্যবস্থা করতে হবে।
রাজু : তোমার মূল্যবান যুক্তির জন্য ধন্যবাদ।
মীনা : ধন্যবাদ।
৩. একটি উত্তেজনাপূর্ণ ক্রিকেট ম্যাচ সম্পর্কে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।
রাজু : হ্যালো মীনা! তুমি কেমন আছো?
মীনা : আমি ভালো আছি আর তোমার কি খবর?
রাজু : আমিও বেশ ভালো আছি। তুমি কি গতকাল বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ক্রিকেট ম্যাচটি উপভোগ করেছ?
মীনা : অবশ্যই! এই প্রথম নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আমি খুব খুশি যে আমি স্টেডিয়ামে ম্যাচ উপভোগ করেছি।
রাজু : ম্যাচটি সম্পর্কে তোমার ধারণা কী?
মীনা : ওহ, হ্যাঁ! দুই দলের পারফরম্যান্স দেখে আমি গভীরভাবে মুগ্ধ হয়েছিলাম, বিশেষ করে বাংলাদেশ দলের।
রাজু : হ্যাঁ, এটি একটি দুর্দান্ত বিস্ময় ছিল যে বাংলাদেশ প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন- নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে।
মীনা : ঠিক! তুমি জান যে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম পরিচিত দল এবং এটা খুবই মজার যে তারা আমাদের কাছে পরাজিত হয়েছে।
রাজু : হ্যাঁ। তবে এটা সত্যি যে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের ফিল্ডিং ছিল চমৎকার। তারা শীর্ষস্থানীয় দলের মতো মাঠে নেমেছিল।
মীনা : অবশ্যই! এবং এটি নিউজিল্যান্ড দল উচ্চ স্কোর পেতে ব্যর্থ হযতে আরেকটি কারণ ছিল।
রাজু : শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের জন্য সহজ টার্গেট ছিল। কিন্তু আমাদের দল এতটাই অপ্রত্যাশিত ছিল যে তারা সেটা অর্জন করতে না পারলে তুমি অবাক না হয়ে পারতেন না।
মীনা : অবশ্যই। তবে বোলারদের পাশাপাশি আমাদের ব্যাটসম্যানরাও পারফর্ম করেছে।
রাজু : ঠিক বলেছ। আমি মনে করি পরের ম্যাচে বাংলাদেশ আরও উজ্জ্বল হবে এবং দেশের জন্য সুনাম ও সুনাম বয়ে আনবে।
মীনা : অবশ্যই! আমাদের আশা অযৌক্তিক নয়।
রাজু : হ্যাঁ, সত্যিই! তোমাকে অনেক ধন্যবাদ এবং আমাদের পরবর্তী ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করতে দাও।
মীনা : তোমাবে স্বাগতম। বিদায়, আবার দেখা হবে।
৪. এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ লেখ।
সোহেল : কেমন আছ? আরমান : ভালো বন্ধু। তুমি কেমন আছ?
সোহেল : ভালো আছি। তবে পরীক্ষা নিয়ে খুব চিন্তিত আছি।
আরমান : তুমি তোমার রসায়ন বিষয়টি সম্পূর্ণ আয়ত্তে আনতে পারনি?
সোহেল : রসায়নে আমি সব পড়ে ফেলেছি। বুঝেও পড়েছি কিন্তু তবুও মনে হচ্ছে সবই ভুলে যাচ্ছি।
আরমান : চিন্তা করো না বন্ধু, পরীক্ষার আগে এমনই হয়। আমারও মনে হচ্ছে সব ভুলে যাচ্ছি। দেখবে পরীক্ষায় ঠিকই সব লিখতে পারবে। শ্রেণি পরীক্ষার সময়ও এমনই হয়েছিল, না?
সোহেল : হ্যা, কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষাটি মনে একটি বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে। তোমার রসায়নে প্রস্তুতি কেমন?
আরমান : ভালো। আমি ভয় পাচ্ছি বাংলা প্রথম পত্র নিয়ে। সৃজনশীল বিষয়ে কেমন উদ্দীপক হয়, তাই নিয়ে।
সোহেল : উদ্দীপক যেমনই হোক, সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো মূল বইয়ের প্রতিটি অংশ ভালোভাবে পড়া। এমন উদ্দীপকই দেবে, যেটা পাঠ্যবইয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ অথবা বৈসাদৃশ্যপূর্ণ অথবা পাঠ্যবিষয়ের খÐাংশের চিত্র। এই সাদৃশ্য, বৈসাদৃশ্য ও খÐাংশকে তুমি তখনই যথার্থভাবে চিত্রিত করতে পারবে, যখন তুমি মূল বই ভালোভাবে পড়বে।
আরমান : ঠিক বলেছ বন্ধু, আর চিন্তা করব না। আমি এভাবেই পড়ব।
সোহেল : আমিও রসায়ন নিয়ে আর ভাববাে না। শুধু পড়ব আর লিখব। তাহলেই আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
আরমান : পড়ার মাঝখানে বিশ্রাম নেবে। এতে পড়াটা ভালোভাবে মনে থাকবে।
সোহেল : ধন্যবাদ বন্ধু।
আরমান : তোমাকেও ধন্যবাদ।
৫. নারী স্বাধীনতা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।
অঙ্কিতা : মাধ্যমিক পাশ করার পর তুই তো উচ্চমাধ্যমিক পড়বি ? আমার ভাই এই মাধ্যমিকেই পড়াশুনো থমকে যাবে।
নন্দিতা : দুঃখ করার কিছু নেই। আমারও তো এখন সেই একই অবস্থা। মা-বাবা এখন থেকেই সে কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
অঙ্কিতা : স্বাধীনতা শব্দের অর্থ শুধুমাত্র আকারেই বেড়েছে। নারীর ক্ষেত্রে তা বেশির ভাগ সময় সে সবের কোনো অর্থই নেই।
নন্দিতা : বলতো! এই পড়াশুনা নিয়ে কতটা এগুতে পারি আমরা।
অঙ্কিতা : আমাদের বাবা-মাদের বোঝাতেই হবে। আর তাদের মাথা থেকে সরাতে হবে তাড়াতাড়ি মেয়েদের বিবাহ দেওয়ার চিন্তা ভাবনা।
নন্দিতা : মনে নেই আবার, সে সব কথা মনের মধ্যে গেঁথে আছে। সত্যিকারের নারী স্বাধীনতার হদিস তো ওখানেই পেয়েছিলাম।
অঙ্কিতা : আর্থিক স্বাধীনতা ছাড়া নারী স্বাধীনতার কোনো অর্থই হয় না। অতএব এবার আমাদের শপথ নিতে হবে, যেমন করেই হোক পড়াশুনোটা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
৬. বৃক্ষরোপণ-উপযোগিতা বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সংলাপ রচনা করো।
প্রিয়ম : দেখলি, আমাদের স্কুলের সামনে এত বড়ো একটা বকুল গাছ কেটে ফেলা হল। শুনলাম ওখানে ফ্ল্যাট বানানো হবে।
সায়ন : আর বলিস না ! মনটা এত খারাপ লাগছে, যে ওদিকে আর তাকাতেই পারছি না। সেই কোন ছোটবেলায় প্রথম স্কুলে আসার দিনটা থেকে গাছটার সঙ্গে বন্ধুত্ব, চেনাশোনা। মনে আছে, ছুটির পরে ওই বিশাল গাছটার নীচে বাঁধানো বেদিটায় চড়ে কত খেলেছি।
প্রিয়ম : সভ্যতার গর্বে উন্মত্ত মানুষ যেন ভুলেই গিয়েছে গাছের অবদান। নগরায়ণের এই হামলে পড়া নেশায় তরাই থেকে সুন্দরবন সর্বত্রই চলেছে অরণ্যনিধনের এই যজ্ঞ।
সায়ন : কেউ একবার অন্তত এটাও ভেবে দেখবে যে, এতে ক্ষতি আখেরে নিজেদেরই। এই ভয়ানক লোভে তো মানুষের নিজের সভ্যতাকেই ধ্বংস করছে। পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়ছে, মেরুপ্রদেশের বরফ গলে যাচ্ছে, বেড়ে যাচ্ছে পৃথিবীর জল স্তর, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য- গাছপালা কমে যাওয়ায় অতিবেগুনি রশ্মিও নির্বিরোধে প্রভাব ফেলছে পরিবেশের ওপরে। সব মিলিয়ে নানান অসুখবিসুখের প্রকোপও বেড়েই চলেছে।
প্রিয়ম : শুধু তাই নয়, তুই কি জানিস, বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো দেশের আয়তনের তুলনায় ভূভাগের পরিমাণ যখন ৩৫ শতাংশের নীচে নেমে যাবে, তখনই সেই দেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে। বাংলাাদেশসহ পৃথিবীর বহু দেশই এখন এই সমস্যার সম্মুখীন।
সায়ন : আসলে কী বল তো, ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’ এই বাক্যটিকে নিছক ¯েøাগান নয়, জীবনযাপনের অনিবার্য শর্ত করে তুলতে হবে। না ইলে এই ভয়ানক ধ্বংসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না।
৭. মাধ্যমিকের পর কী বিষয় নিয়ে পড়বে এ বিষয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।
বিভাস : কী রে পরেশ, এইতো মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলি, বই-খাতা নিয়ে কোথায় চললি?
পরেশ : টিউশনে যাচ্ছি। অঙ্কটা পড়তে শুরু করলাম।
বিভাস : ও, তার মানে তুই সাইন্স নিয়ে পড়বি ?
পরেশ : হ্যাঁ, আমি যেহেতু ডাক্তার হতে চাই তাই সায়েন্স নিয়েই পড়তে হবে। তুই কী নিয়ে পড়তে চাস?
বিভাস : আমি আর্টস নিয়ে পড়বো। তুই তো জানিস আমার ইতিহাস পড়তে খুব ভালো লাগে।
পরেশ : তাছাড়া তুই তো শিক্ষকতা করতে চাস? স্কুল টিচার না কলেজের অধ্যাপক কী হতে চাস?
বিভাস : ইতিহাস অনার্স এবং মাস্টার ডিগ্রি করার ইচ্ছে আছে। তারপর শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দেব। যেকোনো একটা পেলেই হবে।
পরেশ : ঠিক আছে ,এই নিয়ে পরে কথা হবে এখন পড়ে আসি।
বিভাস : হ্যাঁ, আয়।পরে কথা হবে।
৮. বইমেলার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে দুই বন্ধুর মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।
বাপ্পা : কী খবর রাহুল , কেমন আছিস?
রাহুল : এই তো ভালো, তোর খবর কী? কাল নাকি বইমেলায় গিয়েছিলি?
বাপ্পা : হ্যাঁ, গিয়েছিলাম। আমি তো সারা বছরই এই মেলার অপেক্ষায় থাকি।
রাহুল : হস্তশিল্প মেলায় যেতে বললাম গেলি না। এখন একা একাই বইমেলায় চলে গেলি।
বাপ্পা : তুই তো জানিস, আমি শৈশব থেকেই বইপাগল, বইয়ে ডুব দিয়ে আমি পার করতে পারি ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
রাহুল : বর্তমানে দেশের এরূপ অসহিষ্ণু ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বইমেলা আয়োজনের যৌক্তিকতা কতটুকু?
বাপ্পা : আসলে আমাদের এরূপ অবস্থা থেকে উত্তরণে একমাত্র সহায়ক হতে পারে বই। কারণ বই মানুষকে সুপথে চালিত করে, মানুষের চিন্তার প্রসার ঘটায়।
রাহুল : বইমেলায় বই বিক্রি ছাড়া অন্য কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় কী?
বাপ্পা : মেলায় বই বিক্রির পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেমন গান, কবিতা আবৃত্তি, প্রবন্ধ পাঠ, ক্যুইজ,বক্তৃতা, নতুন বই প্রকাশ প্রভৃতি।
রাহুল : মেলা থেকে কী কী বই কিনলি?
বাপ্পা : জয় গোস্বামী, হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবাল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ
সাহিত্যিকদের বেশ কয়েকটি বই কিনেছি।
রাহুল : এরপর গেলে আমাকেও নিয়ে যাস।
বাপ্পা : নিশ্চয়ই যাবি। আমরা দুই বন্ধু একসঙ্গে বইমেলায় গেলে অনেক মজা হবে।
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৬১-১৮৫ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৪১-১৬০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১২১-১৪০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | বোর্ড ভিত্তিক অনুবাদ ১০১-১২০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় পত্র | অনুবাদ ৬১-৮০ | Onubad | PDF Download
৯. শিক্ষাঙ্গনে অসন্তোষ ও অস্থিরতা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এ সম্পর্কে দুই বন্ধুর কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো।
সাইদ : পরীক্ষাতো আর বেশিদিন বাকী নেই। প্রস্তুতি কেমন বন্ধু?
মোস্তাক : আর বলিস না। প্রস্তুতি নেব কিভাবে। ঠিকমতো ক্লাস হলো না। সিলেবাস শেষ হলো না। এখন কী পরীক্ষা দেবো বুঝতে পারছি না।
সাইদ : আমারো একই অবস্থা। এ বছর কলেজে তেমন ক্লাসই হলো না। ক্যাম্পাস খুললেই মারপিট আর দাঙ্গা হাঙ্গামা। এরপর কলেজ বন্ধ। এভাবে কী লেখাপড়া হয়।
মোস্তাক : সবচেয়ে দুঃখজনক হলো আমরা শিক্ষাঙ্গনে যে মূল্যবোধ ও আদর্শ শিখতে এসেছি তা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। শিক্ষক ও ছাত্রের যে সম্পর্ক থাকার কথা ছিল সেটাও পাইনি।
সাইদ : হ্যাঁ, তুমি সত্য কথাই বলেছ। এইতো সেদিন কলেজে এক সিনিয়র ভাই একজন শিক্ষককে ক্ষমতার দাপটে একটি কক্ষে কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখেছিল। এর চেয়ে লজ্জার বিষয় আর কী হতে পারে।
মোস্তাক : কেন তুমি কী ভুলে গেছ সাঈদ, গত বছর দুই দল ছাত্রের মধ্যে তুমুল মারামারি হয়েছিল। শিক্ষকরা মিমাংসা করতে গেলে দুই জন শিক্ষকের মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়। এরপর প্রায় একমাস কলেজ বন্ধ থাকে।
সাইদ : এভাবে অস্থিরতা ও অসন্তোষ চলতে থাকলে শিক্ষাঙ্গন থেকে সুনাগরিক বের হওয়ার পরিবর্তে দুর্নীতিপরায়ণ নাগরিক বের হবে।
মোস্তাক : আমারো তাই মনে হচ্ছে। এসব বন্ধে সবার আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
সাইদ : কিছু অসাধু ব্যক্তি ছাত্রদের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে।
মোস্তাক : শুধু কি তাই? নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে ছাত্ররা খুনোখুনিতে জড়াচ্ছে।
সাইদ : আমার মনে হয় পরিবার থেকেই ছাত্রদের মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে।
মোস্তাক : আমারও তাই ধারণা, পরিবার থেকেই তার সূচনা করতে হবে।
১০. ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা সম্পর্কে ছাত্র ও শিক্ষকের সংলাপ
ছাত্র : জনসংখ্যা সমস্যা কী স্যার?
শিক্ষক : তুমি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অবতারণা করেছ। জনসংখ্যা বদ্ধির ফলে আমাদের অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর প্রভাব প্রতিটি মানুষের উপর পড়ে।
ছাত্র : সেটা কীভাবে স্যার?
শিক্ষক : এই মনে করো, আমাদের দেশের আয়তন যা আছে তা কিন্তু বাড়ছে না। কিন্তু জনসংখ্যা কিন্তু বেড়েই যাচ্ছে। তাহলে এই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজন বাসস্থানের বা বাড়ি-ঘরের। আর বাড়িঘর তৈরির ফলে-ফসলী জমি কমে যাচ্ছে। ফলে উৎপাদন কমছে। খাদ্য ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
ছাত্র : স্যার, সত্যিইতো। এভাবেতো কখনো ভাবিনি। এটা তো বিরাট বড় সমস্যা।
শিক্ষক : শুধু এখানেই শেষ নয়। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ফলে বেকারত্ব দেখা দিচ্ছে। নাগরিক জীবনের সুযোগ-সুবিধা ব্যাহত হচ্ছে।
ছাত্র : এর কী কোনো সমাধান নেই স্যার?
শিক্ষক : হ্যা অবশ্যই আছে, এ জনসংখ্যাকে কাজে লাগাতে পারলে আমাদের দেশের জন্যেই কল্যাণ হতে পারে।
ছাত্র : কীভাবে কাজে লাগানো যায় স্যার?
শিক্ষক : বাংলাদেশের এই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে কাজে লাগাতে পারলে খুব দ্রæত এ দেশ উন্নত হবে। বিশেষ করে, বিদেশে দক্ষ শ্রমিক প্রেরণ ও জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি করতে পারলে প্রচুর বৈদিশিক মুদ্রা আয় সম্ভব। শিল্প কারখানা স্থাপন করে তাতে এই জনবলকে কাজে লাগাতে হবে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।