HSC | বাংলা ২য় পত্র | চিঠি পত্র লিখন ১১-২৩ | PDF Download : বাংলা দ্বিতীয় পত্র হতে গুরুত্বপূর্ণ সব চিঠি পত্র লিখন গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টির গুরুপূর্ণ কিছু চিঠি পত্র লিখন নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
পত্র রচনা (ব্যক্তিগত চিঠি এবং আবেদন পত্র)
১১. নববর্ষ উদ্যাপনের জন্য কেমন আয়োজন চলছে তা জানিয়ে বন্ধুকে একটি পত্র লেখো।
২৫.০২.২০১৬
আল্লারদর্গা, কুষ্টিয়া
প্রিয় জুয়েল,
আশা করি ভালো আছো। শুনে খুশি হবে আসছে পহেলা বৈশাখে আমাদের স্কুল থেকে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আমাদের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে থাকবে সপ্তাহব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, সংগীতানুষ্ঠান ইত্যাদি। আবৃত্তি অনুষ্ঠানে আমি একটি কবিতা আবৃত্তি করব।
তাছাড়া সংগীত সন্ধ্যাআমরা সমবেত কণ্ঠে সূচনা সংগীত হিসেবে পরিবেশন করব “এসো হে বৈশাখ, এসো এসো” গানটি। আমাদের অনুষ্ঠানগুলোতে প্রধান অতিথি থাকবেন মাননীজেলা প্রশাসক ও বিশেষ অতিথি থাকবেন আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহোদয়।
অনুষ্ঠানের শেষ দিন পুরস্কার বিতরণীর ব্যবস্থা রয়েছে। নববর্ষ উদ্যাপনকে সামনে রেখে আমাদের বিদ্যালভবন ও প্রাঙ্গণ নতুন সাজে সাজানো হবে। ঐদিন আমরা সবই নতুন পোশাকে সজ্জিত হয়ে একত্রিত হব। ছোট-বড় সবাই মিলে মজা করব এবং পান্তা ভাত ও ভাজা ইলিশের আয়োজন করব।
এই আয়োজনে তোমারও নিমন্ত্রণ রইল। আজ এখানেই শেষ করছি। তাড়াতাড়ি চিঠি পাঠিয়ো।
ইতি
তোমার বন্ধু
রানা
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
১২. মনে করো, তোমার নাম নিলয়। তোমার বন্ধুর নাম সাগর। সে খুলনাথাকে। বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তার কাছে একটি পত্র লেখ। [কু. বো. ১২, য. বো. ১৪]
১৩.০৭.২০১৬
পল্লবী, ঢাকা
প্রিয় সাগর,
কেমন আছ? অনেক দিন হলো তোমার কোনো খবর পাই না। গতকাল আমাদের স্কুলে ‘বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে একটি সেমিনার হয়ে গেল। সেই সেমিনারেই বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক কথা শুনলাম। তোমাকে সে সম্পর্কে জানাতেই এ চিঠি লিখতে বসেছি।
তুমি তো জানো, গাছ আমাদের পরম বন্ধু। আমরা শ্বাস-প্রশ্বাসে অক্সিজেন গ্রহণ করি, কার্বন ডাইঅক্সাইড ত্যাগ করি। আর গাছ আমাদের প্রয়োজনীঅক্সিজেন সরবরাহ করে এবং বিষাক্ত কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে নেয়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। কিন্তু মানুষ তার প্রয়োজনে প্রচুর গাছ কাটছে। বন উজাড় হচ্ছে। তাতে প্রকৃতি ও পরিবেশের ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য একটি দেশের মূল ভূখণ্ডের কমপক্ষে পঁচিশ ভাগ বন থাকা দরকার।
আমাদের দেশে তা নেই। যেটুকু আছে তা-ও নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে। সভ্যতা ও উন্নয়নের ফলে সৃষ্টি হচ্ছে কলকারখানা। রাস্তাযানবাহনের চলাচল বাড়ছে। কলকারখানা ও গাড়ির ধোঁয়াবাতাসে বাড়ছে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ। কমছে বাতাসের ওজোন স্তর। যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে গ্রিনহাউস ইফেক্ট। ফলে মানুষের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। দেখা দিচ্ছে নানা রোগ-ব্যাধি। এসবই ঘটছে বাতাসে অক্সিজেনের অভাবের কারণে।
তাই বেশি বেশি গাছ লাগালে বাতাসে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ হবে। প্রকৃতির ভারসাম্য ফিরে আসবে। পরিবেশ দূষণমুক্ত হবে। তাছাড়া আমাদের জ্বালানির চাহিদার বেশির ভাগ পূরণ হবৃক্ষের মাধ্যমে। কাঠ থেকে আমরা বাড়িঘর এবং আমাদের প্রয়োজনীআসবাব প্রস্তুত করে থাকি।
সুতরাং ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখনই আমাদের অধিক হারে বৃক্ষরোপণ করা প্রয়োজন। বাড়ির চারপাশে, রাস্তার দুপাশে, পতিত জমিতে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে। বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনগণকে আরো সচেতন করে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে, বৃক্ষ বাঁচলেই আমরা বাঁচব।
আজ এই পর্যন্তই। তোমার মা-বাবাকে আমার সালাম জানিয়ো। চিঠি দিয়ো।
ইতি
তোমার বন্ধু
নিলয়
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
১৩. কম্পিউটার শিক্ষার গুরুত্ব বর্ণনা করে তোমার বন্ধু অভ্রকে একটি চিঠি লেখো। [চ. বো. ১৩, ব. বো. ১২]
১৭.০৭.২০১৬
শাসনগাছা, কুমিল্লা।
প্রিয় অভ্র,
আমার শুভেচ্ছা নিয়ো। অনেক দিন পর তোমার চিঠি পেলাম। তুমি ক্লাসে প্রথম হয়েছ জেনে খুব আনন্দিত হয়েছি। আমি আরো খুশি হয়েছি তুমি ক্লাসের পড়াশোনার বাইরে কম্পিউটার শিখছ বলে।
বর্তমান যুগ হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। আর প্রযুক্তির এ যুগে সর্বোচ্চ স্থান দখল করে আছে কম্পিউটার। কম্পিউটার ছাড়া আধুনিক জীবন-যাপন কল্পনা করা যানা। এর ব্যবহারে সব ধরনের কাজ তুলনামূলক কম সময়ে ও নির্ভুলভাবে করা সম্ভব। শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, অফিস-আদালত, চিকিৎসা, বিনোদন সব ক্ষেত্রেই কম্পিউটারের ব্যবহার আজ অপরিহার্য।
তাই কর্মক্ষেত্রেও এখন কম্পিউটার জানা লোকদের অগ্রাধিকার। কম্পিউটার-অভিজ্ঞ লোক কখনো বেকার বসে থাকে না। তাই বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকম্পিউটার শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আমাদের প্রত্যেকের উচিত অন্যান্য বিষয়ের সাথে কম্পিউটার শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া।
বর্তমানে পাঠ্যবইয়ের পড়াশোনা ভালোভাবে আত্মস্থ করার কাজে অগ্রসর শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের সাহায্য নিচ্ছে। তাছাড়া পাঠ্যবইয়ের বাইরেও নানা সৃজনশীল কাজেও এটি ব্যবহার করতে পারছে। তুমি ক্লাসের পড়াশোনার পাশাপাশি কম্পিউটার ভালোভাবে আয়ত্ত করবে, আমার এই শুভকামনা রইল।
আজ আর নয়। মা ও বাবাকে আমার সালাম দিয়ো। তুমি ভালো থেকো।
ইতি
তোমার বন্ধু
রাজন
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
১৪. মনে করো, তুমি কাজল। তোমার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে জানিয়ে বাবার কাছে একটি পত্র লেখো।
এপ্রিল ২৫, ২০১৬
বাজিতপুর
শ্রদ্ধেয় বাবা,
সালাম নিন। আশা করি ভালো আছেন। গতকাল আপনার চিঠি পেলাম। আপনার আসতে দেরি হবে জেনে মনটা খুব খারাপ হলো।
আজ আমার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। আমার ফল জেনে আপনি নিশ্চয়ই খুশি হবেন। আমি গোল্ডেন অ+ পেয়েছি। দোয়া করবেন, আমি যেন ভবিষ্যতে আপনার মুখ উজ্জ্বল করতে পারি।
আপনাকে অনেক দিন দেখিনি। আপনাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে। ছুটি নিয়ে দুটো দিনের জন্য হলেও আমাদের সঙ্গে দেখা করে যান। আমরা আপনার অপেক্ষারইলাম।
বাড়ির সবাই ভালো আছে। আপনি শরীরের প্রতি যতœ নেবেন। ভালো থাকবেন।
ইতি
তোমার শুভার্থী
কাজল
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
১৫. মনে করো, তোমার নাম খসরু। তোমার বড় বোনের বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছে। তোমার প্রিবন্ধু হামিদকে এ উপলক্ষে একটি চিঠি লেখো।
২৫শে মার্চ, ২০১৬
পূর্ব ঘোপাল, ফেনী
প্রিয় হামিদ,
শুভেচ্ছা নিয়ো। আশা করি ভালো আছ। তোমাকে আজ একটা সুখবর দেওয়ার জন্য লিখছি।
আগামী ১০ই এপ্রিল আমার বড় আপার বিয়ের দিন ঠিক হয়েছে। ৯ তারিখ গায়েহলুদ আর ১২ তারিখ বৌভাত অনুষ্ঠিত হবে। আপার বিয়ের সব আয়োজনের দায়িত্ব পড়েছে আমার ওপর। তুমি অবশ্যই আসবে। মা, আপা সবাই তোমাকে আসতে বলেছেন। তুমি কিন্তু ৭ তারিখের মধ্যেই চলে আসবে, কেমন? অনেক কাজ করতে হবে। আমাদের সব বন্ধুই আসছে। খুব মজা হবে।
আজকের মতো বিদায়। সাবধানে এসো।
ইতি
তোমার বন্ধু
খসরু
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
১৬. মনে করো, তুমি ফরহাদ। গ্রীষ্মের ছুটি কীভাবে কাটাবে তা জানিয়ে তোমার বন্ধু শফিককে একটি চিঠি লেখো।
১০/০৪/২০১৬
বয়রা, খুলনা
প্রিয় শফিক,
ভালোবাসা নিয়ো। তোমার চিঠি পেয়ে খুব আনন্দিত হয়েছি। তোমার সাথে কতদিন দেখা হনা।
যা হোক, তোমাকে একটা খুশির খবর দিই। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে আমাদের বিদ্যালয়ে গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হবে। ঠিক করেছি আমি বাংলাদেশের বিখ্যাত কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনাবেড়াতে যাব। তুমি তো জানোই ইতিহাস আর ভ‚গোল সম্পর্কে আমার অনেক আগ্রহ।
এ কারণেই ভাবছি মা-বাবার সাথে এই ছুটিতে সোনারগাঁ ও পাহাড়পুর যাব। এ দুটিই আমাদের দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান। বইয়ে এ দুটো জায়গার কথা অনেক পড়েছি। নিজের চোখে দেখতে পেলে সেই জ্ঞান পূর্ণতা লাভ করবে। স্থানগুলোতে গেলে বাংলার প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে। তুমিও চলোনা আমাদের সাথে। খুব মজা হবে।
ভালো থেকো। তোমার মতামত জানিয়ো।
ইতি
তোমার শুভার্থী
ফরহাদ
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
১৭. মনে করো, তোমার নাম অহনা/অহন। তোমার কলকাতা প্রবাসী এক বন্ধুর নাম বাদল/বৃষ্টি। ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে তুমি যা জানো তা তোমার বন্ধুকে জানিয়ে একটি চিঠি লেখো। ধরো, তোমার বন্ধুকে
লেখার ঠিকানা- ৩৬, সল্ট লেক, কলকাতা, ভারত।
২২শে ফেব্রয়ারি, ২০১৬
মহিষাকান্দি, নরসিংদী।
প্রিয় বাদল,
কেমন আছ? আমি ভালোই আছি। কাল ছিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির জীবনে এ দিনটি অত্যন্ত গৌরবমণ্ডিত ও তাৎপর্যপূর্ণ। আজ তোমাকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানিয়ে লিখছি।
১৯৫২ সালের ২৬শে জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন ঘোষণা দেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। এর প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বাংলার ছাত্রসমাজ। ২১শে ফেব্রয়ারিকে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। অন্যদিকে ২০শে ফেব্রয়ারি সন্ধ্যা থেকে ঢাকা১৪৪ দ্বারা জারি করা হয়।
২১শে ফেব্রয়ারির দিন ¯েøাগানে ¯েøাগানে রাজপথ উত্তাল হয়ে ওঠে। সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারার পরোয়া না করেই এগিয়ে যাছাত্র-জনতা। পুলিশের গুলিতে রফিক, বরকত, জব্বারসহ আরও অনেকে শহিদ হন। এ ঘটনা সারা দেশের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে।
রাস্তানেমে আসে সর্বস্তরের লাখো জনতা। অবশেষে ভাষাশহিদদের জীবনের বিনিময়ে আমরা পাই মাতৃভাষা বাংলাকথা বলার অধিকার। তাই একুশ আমাদের অহংকার। আমাদের দৃপ্ত চেতনার অগ্নিমশাল।
তোমার বাবা-মাকে আমার সালাম জানিয়ো। আজ বিদায় নিচ্ছি।
ইতি
তোমার বন্ধু
অহনা
১৮. মনে করো, তোমার নাম পল্লব/পলি। জন্মভ‚মির প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়ে তোমার আমেরিকা প্রবাসী বন্ধুকে একটি চিঠি লেখো।
ধরো, তোমার বন্ধুর নাম ড্যানিয়েল/ডোরি। তার ঠিকানা- ২৪ ডাউনিং স্ট্রিট, নিউইয়র্ক, আমেরিকা।
প্রিয় ড্যানিয়েল,
কেমন আছ বন্ধু? গত চিঠিতে তুমি জন্মভ‚মি সম্পর্কে আমার অনুভ‚তির কথা জানতে চেয়েছ। আজ সে কথা জানিয়ে তোমাকে লিখছি।
পৃথিবীর সব মানুষের মনেই জন্মভ‚মির জন্য আলাদা একটা টান থাকে। আমার দেশের প্রতিও আমি গভীর মমতা অনুভব করি। আমাদের দেশটা অনেক সুন্দর। মন ভোলানো এর প্রকৃতি। সারা দেশে সবুজের ছড়াছড়ি। নদী, পাহাড়, সমুদ্র সবই আছে এদেশে। আর আছে নানা ধর্ম, পেশা ও সংস্কৃতির মানুষ। সকলেই এদেশে মিলেমিশে বসবাস করে। এই সবকিছুই আমাকে প্রচণ্ডভাবে আকর্ষণ করে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। ত্রিশ লক্ষ মানুষ সে যুদ্ধে শহিদ হয়েছে। এদেশকে নিয়ে তাই আমাদের অহংকারের শেষ নেই। বাংলাদেশে জন্ম নিতে পেরে আমি গর্বিত। দেশকে আমি আমার মায়ের মতোই ভালোবাসি।
আজ আর নয়। তোমার দেশের কথা জানিয়ে আমাকে চিঠি দিয়ো।
ইতি
তোমার বন্ধু
পল্লব
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
১৯. মনে করো, তোমার নাম সাকিব/সালমা। তোমার বন্ধুর নাম অয়ন/আয়না। সপ্রতি তুমি একটি স্থান থেকে বেড়িয়ে এসেছ। সেই ভ্রমণের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি পত্র লেখো। [চ. বো. ১৫, কু. বো. ১১, রা. বো. ১৩]
১৭/০২/২০১৬
মালিবাগ, ঢাকা।
প্রিয় অয়ন,
শুভেচ্ছা নিয়ো। আশা করি ভালো আছ। ছুটি কেমন কাটল? আমার কিন্তু দারুণ কেটেছে। কারণটা বলছি, শোনো।
গত সপ্তাহে বাবা-মায়ের সাথে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন থেকে ঘুরে এসেছি। দারুন মজা হয়েছে। ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে প্রথমে গিয়েছি চট্টগ্রাম। ট্রেনে চেপে এটাই আমার প্রথম ভ্রমণ। কী যে ভালো লেগেছে বলে বোঝানো যাবে না। চট্টগ্রাম থেকে বাসে করে টেকনাফ।
তারপর জাহাজে চড়ে সেন্টমার্টিন পৌঁছেছি। সমুদ্রের বুকে জাহাজে চড়ার অভিজ্ঞতাটা সত্যিই অসাধারণ। সমুদ্রের তীর ঘেঁষে থাকা পাহাড়গুলোর সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। আর সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য তো বলে বোঝানোর মতো নয়। সাগরের স্বচ্ছ নীল পানি, রাতের আকাশে হাজার তারার মেলা, সৈকতে ঘুরে বেড়ানো নানা রঙের কাঁকড়া, সূর্যোদয়ের দৃশ্য ইত্যাদি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি। অনেক রকমের সামুদ্রিক মাছের স্বাদ নিয়েছি।
আর খেয়েছি সেন্টমার্টিনের সুমিষ্ট ডাবের পানি। সেন্টমার্টিনের অদূরেই আছে ছেঁড়াদ্বীপ। ট্রলারে চড়ে সেখানেও গিয়েছি। উত্তাল সমুদ্রের মাঝে ট্রলারটি বিপজ্জনকভাবে দুলছিল। ক্ষণে ক্ষণে তা মনের ভেতর উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ সৃষ্টি করছিল। সেন্টমার্টিনে আমরা দুই দিন ছিলাম। ফেরার পথে টেকনাফ এসে বাসে চড়ে সরাসরি ঢাকাফিরেছি। সব মিলিয়ে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের স্মৃতি ভোলার মতো নয়।
আজ বিদানিচ্ছি। তোমার ময়না পাখিটার কী খবর? ভালো থেকো।
ইতি
তোমার বন্ধু
সাকিব
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
২০. মনে করো, তোমার নাম হাসনা/সেলিম। তোমার ছোট ভাইয়ের নাম আকাশ। স্বাধীনতা দিবস কীভাবে উদ্যাপন করেছ সে সম্পর্কে জানিয়ে তাকে একটি পত্র লেখো।
২৯/০৩/২০১৬
সাভার, ঢাকা।
আদরের আকাশ,
কেমন আছ? বাড়ির সবাই ভালো তো? তোমার বিড়ালটা কত বড় হলো?
২৬ তারিখ ছিল আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস। নানা রকম অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়ের সবাই মিলে এ দিবসটি উদ্যাপন করেছি। দিনটি উপলক্ষে আমরা পুরো স্কুল কাগজের পতাকা দিয়ে সাজিয়েছিলাম। সবাই মিলে স্কুলের বিভিন্ন দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধের বেশ কয়েকটি ছবি এঁকেছি। সব মিলিয়ে পুরো স্কুলটি দেখতে খুব সুন্দর লাগছিল। সকালবেলা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের নিয়ে যাওয়া হসাভারের জাতীস্মৃতিসৌধে।
সেখানে আমরা ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। স্মৃতিসৌধের আশপাশের স্থানগুলো ঘুরে দেখি। দুপুর থেকে স্কুলে শুরু হসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে ছাত্রছাত্রীরা আবৃত্তি, নাচ, গান, নাটিকা ইত্যাদি উপস্থাপন করে। আমিও একটি কবিতা আবৃত্তি করি। বিকেলে অডিটোরিয়ামের বড় পর্দায় দেখানো হ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ চলচ্চিত্রটি। দেখে খুব ভালো লাগল। সব মিলিয়ে খুব আনন্দমএকটি দিন কেটেছে।
আজ আর নয়, গরমের ছুটিতে বাড়ি আসছি। মন দিয়ে লেখাপড়া করো। আম্মার কথা শুনো।
ইতি
তোমার বড় বোন
হাসনা
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
২১। সড়ক দুর্ঘটনাআহত বন্ধুকে সমবেদনা জানিয়ে একটি চিঠি লেখো।
০৫/০২/২০১৬
হালিশহর, চট্টগ্রাম
প্রিয় রাজীব,
সড়ক দুর্ঘটনাতুমি আহত হয়েছ শুনে ভীষণ চিন্তিত আছি। আজ সকালে তুষার ফোন করে জানাল যে, তুমি রিক্শা উল্টে পড়ে গিয়েছ। ডান হাত আর ডান পায়ে মারাত্মক জখম হয়েছ। শুনে খুব কষ্ট পেলাম। আশা করি, জখমগুলো শরীরের কোনো স্থায়ী ক্ষতি করবে না।
পা এক্স-রে করেছ কি? ডাক্তার কী বলেছেন? ওখানে যদি ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা না হয়, তবে দ্রত চট্টগ্রাম চলে এসো। আমার মামা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বোন্-স্পেশালিস্ট। মামাকে আমি তোমার কথা বলে রাখব, কোনো সমস্যা হবে না। সরাসরি আমাদের বাসাএসে উঠবে। কোনো দ্বিধা করবে না।
আমার মনে হয়, ভয়ের কিছু নেই। এখন চিকিৎসা-ব্যবস্থা অনেক উন্নত। দরকার শুধু সময়মতো ডাক্তারের কাছে যাওয়া। আশা করি, পরম করুণাময়ের কৃপাতুমি দ্রত সুস্থ হয়ে উঠবে। আমাদের ফোন নম্বর তো তোমার জানা। প্রয়োজনে ফোন করো। তুমি দ্রত ভালো হয়ে ওঠো, এটাই কামনা করি।
ইতি-
তোমার বন্ধু
মামুন
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
২২। এসএসসি পরীক্ষার পর অবসর দিনগুলো কীভাবে কাটাবে জানিয়ে বন্ধুর কাছে একটি পত্র লেখো।
৫.১.২০১৬
কুড়িগ্রাম
প্রিয় হানিফ,
শুভেচ্ছা নিস। অনেকদিন পর তোর চিঠি পেলাম। চিঠিতে তুই জানতে চেয়েছিস, আসন্ন পরীক্ষার পর কী করব? কেন, তোর কোনো পরিকল্পনা আছে নাকি? সিঙ্গাপুর, কলকাতা, কাঠমান্ডু কিংবা কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আনন্দভ্রমণে যাওয়ার প্ল্যান? আসলে পরীক্ষার পর তিনমাস সময়টা যে খুব দীর্ঘ তা নয়। দেখতে দেখতে হয়তো কেটে যাবে। তবে আমি এই সময়টা কাজে লাগাতে চাই। নিরর্থক আনন্দভ্রমণের চেয়ে আমি বরং সময়টাকে অর্থমকরে তুলতে চাই।
প্রথমে আমার ইচ্ছে, পরীক্ষার পর কিছুদিন আমি গ্রামের বাড়িতে কাটাব। সেখানে আমার একটা পরিকল্পনা আছে। আমরা গ্রামের বন্ধুরা মিলে ১০০০টি ফলজ, বনজ বৃক্ষের চারা রোপণ করব। চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে আমাদের গ্রামের যে নতুন রাস্তাটা হয়েছে, তার দুপাশে গাছগুলো লাগাব। কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে থাকাও হবে, আর বন্ধুদের নিয়ে গ্রামের জন্য কিছু করতে পারলে ভালো লাগবে। আমাদের দেশে যে হারে বৃক্ষনিধন চলছে, তাতে পরিবেশ বিপর্যঅত্যাসন্ন।
তারপর ঢাকাআমার বড়মামার বাসাকিছুদিন বেড়াব। ঢাকার বেশকিছু দর্শনীস্থান আমার দেখা হয়নি। মামা-মামি কতবার যেতে বলেছেন। কিন্তু পড়াশোনার জন্যে এতদিন যাওয়া হয়নি। ভাবছি মামার বাসাবেড়ানো হবে, দর্শনীস্থানও দেখা হবে। আপাতত পরিকল্পনা হচ্ছে, ঢাকার রায়েরবাজারে অবস্থিত শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, সাভারে জাতীস্মৃতিসৌধ, লালবাগ কেল্লা ও আহসান মঞ্জিল দেখা। সম্ভব হলে ঈশা খাঁর স্মৃতিবিজড়িত সোনারগাঁও পরিদর্শন করব।
তুই তো জানিস, আমার বড়মামা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আমার মেঝমামাকে পাকিস্তানি আর্মিরা গুলি করে হত্যা করেছে। এসব আমার জন্মেরও আগের কথা। মায়ের মুখে মেজমামার নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা শুনতে শুনতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জন্মে গেছে। তাই প্রথমে রায়েরবাজারের বধ্যভ‚মি ও জাতীস্মৃতিসৌধ দেখতে যাব। তারপর অন্যান্য জায়গা। মোটামুটি এই আমার পরিকল্পনা। ইচ্ছে করলে তুইও সঙ্গে যোগ দিতে পারিস।
আমার পরিকল্পনা তো জানালাম। এবার তোর অবসর কাটানোর পরিকল্পনা লিখে জানা। চাচা ও চাচিকে আমার সালাম দিস। তোর সুন্দর, বিকশিত জীবন কামনা করে আজকের মতো শেষ করছি।
শুভেচ্ছান্তে
সালমান
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৬১-১৮৫ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৪১-১৬০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১২১-১৪০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | বোর্ড ভিত্তিক অনুবাদ ১০১-১২০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় পত্র | অনুবাদ ৬১-৮০ | Onubad | PDF Download
২৩। ছাত্রজীবনে শিক্ষামূলক সফরের উপকারিতা বর্ণনা করে বন্ধুর কাছে একটি পত্র লেখো।
২৪/৪/২০১৬
নীলফামারী
প্রিয় অরুণ,
শুভেচ্ছা নিও। আশা করি বাড়ির সবাইকে নিয়ে ভালো আছ। আমরাও খোদার কৃপাভালো আছি। গত সপ্তাহে আমাদের স্কুলের সবাই মিলে ইতিহাসখ্যাত বগুড়া মহাস্থানগড় শিক্ষাসফরে গিয়েছিলাম। তোমাকে আজ লিখছি আমাদের সেই শিক্ষাসফর সম্পর্কে।
সেদিন সকাল সাড়ে আটটাস্কুল ক্যাম্পাস থেকে আমাদের বাস ছেড়েছে। গিয়ে পৌঁছতে পৌঁছতে দুপুর একটা। শিক্ষাসফরে যাব বলে সবার মাঝে ছিল দারুণ আনন্দ। মহাস্থানগড়ের প্রাচীন পুরাকীর্তি, বৌদ্ধযুগের স্থাপত্য নিদর্শন ও ভাস্কর্য সম্পর্কে বইতে শুধু পড়েছি। সেখানে দাঁড়িয়ে যখন সেই লুপ্তপ্রাইতিহাসের কথা আমাদের মমতাজ ম্যাডাম বলতে শুরু করলেন, কল্পনাআমি যেন মুহূর্তে ফিরে গেলাম অতীতের সেই সমৃদ্ধ যুগে।
আমি উপলব্ধি করলাম, আসলে শুধু বই পড়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান লাভ করা কখনো সম্ভব নয়। মাঝে মাঝে ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে শিক্ষাসফরে যাওয়া উচিত। এতে জাতীইতিহাসের সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক যেমন গড়ে উঠতে পারে, তেমনি বইতে পড়া ইতিহাস সম্বন্ধেও আমাদের অনেক কিছু জানা সম্ভব হয়।
বাস্তব শিক্ষার জন্য আসলে শিক্ষাসফরের কোনো বিকল্প নেই। তাই জীবনের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার জন্যে শিক্ষাসফরের খুবই প্রয়োজন। এতে আনন্দও হয়, আবার বাস্তবতা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা ও বোঝার সুযোগ ঘটে।
আজ আর নয়। ভালো থেকো।
ইতি-
তোমার বন্ধ
চয়ন
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।