HSC | বিড়াল | জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর | PDF Download: বাংলা ১ম পত্রের বিড়াল গল্পটি হতে যেকোনো ধরনের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের বিড়াল গল্পটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
বিড়াল| জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর সমুহ:
ক জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর
১. কমলাকান্ত শয়নগৃহে চারপায়ীর উপর বসে হুঁকা হাতে কী করছিল?
উত্তর : হুঁকা হাতে ঝিমাচ্ছিল।
২. ‘বিড়াল’ রচনায় দেয়ালের উপর চঞ্চল ছায়া কীসের মতো নাচছিল?
উত্তর : চঞ্চল ছায়া প্রেতের মতো নাচছিল।
৩. কমলাকান্ত নেপোলিয়ন হয়ে কী জিততে পারত কিনা ভাবছিল?
উত্তর : ওয়াটারলু জিততে পারত কিনা ভাবছিল।
৪. কে হঠাৎ বিড়ালত্ব প্রাপ্ত হয়ে কমলাকান্তের কাছে আফিম ভিক্ষা করতে এসেছে বলে প্রথমে তার মনে হলো?
উত্তর : ওয়েলিংটন।
৫. কাকে ইতোপূর্বে যথোচিত পুরস্কার দেওয়া গিয়েছে বলে কমলাকান্ত মনে করল?
উত্তর : ডিউক মহাশয়কে।
৬. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : ১৮৩৮ সালের ২৬ জুন।
৭. বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাসের নাম কী?
উত্তর : ‘দুর্গেশনন্দিনী’ (১৮৬৫)।
৮. বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্র কী নামে সমধিক পরিচিত?
উত্তর : ‘সাহিত্য সম্রাট’ নামে সমধিক পরিচিত।
৯. ‘বিড়াল’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে?
উত্তর : ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ গ্রন্থ থেকে।
১০. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কবে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর : ১৮৯৪ সালের ৮ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
১১. কমলাকান্ত ভালো করে তাকিয়ে ওয়েলিংটনের পরিবর্তে কাকে দেখতে পেল?
উত্তর : ওয়েলিংটনের পরিবর্তে ক্ষুদ্র মার্জারকে দেখতে পেল।
১২. মার্জার কমলাকান্তের দিকে তাকিয়ে কী ভাবছিল বলে কমলাকান্তের মনে হলো?
উত্তর : মার্জার কমলাকান্তের দিকে তাকিয়ে “কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই”Ñ এ কথা ভাবছিল বলে কমলাকান্তের মনে হলো।
১৩. মঙ্গলার দুধ কে দোহন করে কমলাকান্তের কাছে এনেছে?
উত্তর : মঙ্গলার দুধ প্রসন্ন দোহন করে এনেছে।
১৪. “বিড়াল দুধ খাইয়া গেলে তাহাকে তাড়াইয়া মারিতে যাইতে হয়”Ñ এটি কী?
উত্তর : এটি একটি চিরায়ত প্রথা।
১৫. চিরায়ত প্রথার অবমাননা করে মনুষ্যকুল সমাজে কীরূপে পরিচিত হয় বলে কমলাকান্তের ধারণা?
উত্তর : কুলাঙ্গার স্বরূপ পরিচিত হয় বলে কমলাকান্তের ধারণা।
১৬. চিরায়ত প্রথার অবমাননায় মার্জারী স্বজাতিমণ্ডলে কমলাকান্ত কে কী বলে উপহাস করতে পারে?
উত্তর : কমলাকান্তকে কাপুরুষ বলে উপহাস করতে পারে।
১৭. কমলাকান্ত অনেক অনুসন্ধান করে কী আবিষ্কার করে সগর্বে মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলেন?
উত্তর : এক ভগ্ন যষ্টি আবিষ্কার করে সগর্বে মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলেন।
১৮. ‘বিড়াল’ গল্পে কে দিব্যকর্ণ প্রাপ্ত হয়েছিল?
উত্তর : কমলাকান্ত দিব্যকর্ণ প্রাপ্ত হয়েছিল।
১৯. বিড়াল কার কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত মানুষের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখে না?
উত্তর : বিড়াল বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত মানুষের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখে না।
২০. মার্জারীর মতে ধর্ম কী?
উত্তর : মার্জারীর মতে পরোপকারই পরম ধর্ম।
২১. বিড়ালের দুগ্ধ পানে কে পরম ধর্মের ফলভাগী?
উত্তর : কমলাকান্ত পরম ধর্মের ফলভাগী।
২২. মার্জারী নিজেকে কী বলে স্বীকার করেছে?
উত্তর : মার্জারী নিজেকে চোর বলে স্বীকার করেছে।
২৩. কারা চোর অপেক্ষাও অধার্মিক?
উত্তর : যারা বড় বড় সাধু অথচ কৃপণ, তারা চোর অপেক্ষাও অধার্মিক।
২৪. চোরে যে চুরি করে সে অধর্ম কার?
উত্তর : সে অধর্ম কৃপণ ধনীর।
২৫. চোরের দণ্ড হলেও কার দণ্ড হয় না?
উত্তর : কৃপণ ধনীর দণ্ড হয় না।
২৬. মার্জারী কোথায় মেও মেও করে বেড়ালেও কেউ তাকে মাছের কাঁটা পর্যন্ত দেয় না?
উত্তর : প্রাচীরে প্রাচীরে।
২৭. মানুষ মাছের কাঁটা, পাতের ভাত কোথায় ফেলে দেয়?
উত্তর : নর্দমা আর জলে ফেলে দেয়।
২৮. বড় রাজা ফাঁপরে পড়লে কার রাত্রে ঘুম হয় না?
উত্তর : যে কখনো অন্ধকে মুষ্টি ভিক্ষা দেয় না, তারও রাত্রে ঘুম হয় না।
২৯. বিড়ালের মতো দরিদ্রের ব্যথায় ব্যথিত হওয়া কীসের কথা?
উত্তর : লজ্জার কথা।
৩০. কে কমলাকান্তের দুধ খেয়ে গেলে সে ঠেঙ্গা নিয়ে মারতে যেত না বলে মার্জারী মনে করে?
উত্তর : নাম না-জানা শিরোমণি আর ন্যায়ালংকার মহাশয়।
৩১. মনুষ্য জাতির রোগ কী?
উত্তর : ‘তেলা মাথায় তেল দেওয়া’।
৩২. আমাদের সমাজে কার জন্য ভোজের আয়োজন করা হয়?
উত্তর : যে খেতে বললে বিরক্ত হয়।
৩৩. কাদের রূপের ছটা দেখে অনেক মার্জারী কবি হয়ে পড়ে?
উত্তর : সোহাগের বিড়ালের রূপের ছটা দেখে।
৩৪. আহারাভাবে ক্ষুধার্ত মার্জারীর কী পরিদৃশ্যমান?
উত্তর : আহারাভাবে ক্ষুধার্ত মার্জারীর অস্থি পরিদৃশ্যমান।
৩৫. মার্জারী তাদের কী দেখে ঘৃণা করতে নিষেধ করেছে?
উত্তর : কালো চামড়া দেখে।
৩৬. ধনীর কীসের দণ্ড নেই বলে মার্জারী প্রশ্ন উত্থাপন করেছে?
উত্তর : ধনীর কার্পণ্যের দণ্ড নেই বলে মার্জারী প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।
৩৭. কতজন দরিদ্রকে বঞ্চিত করে একজনে কত লোকের খাদ্য সংগ্রহ করে?
উত্তর : পাঁচশ দরিদ্রকে বঞ্চিত করে একজনে পাঁচশ লোকের খাদ্য সংগ্রহ করে।
৩৮. কীসে মরে যাওয়ার জন্য এ পৃথিবীতে কেউ আসেন নি?
উত্তর : অনাহারে।
৩৯. মার্জারপণ্ডিতের কথাগুলো কী রকম?
উত্তর : ভারি সোশিয়ালিস্টিক।
৪০. কাকে কস্মিনকালেও কেউ কিছু বোঝাতে পারে না?
উত্তর : বিচারক বা নৈয়ায়িককে।
৪১. সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ কী?
উত্তর : ধনীর ধনবৃদ্ধি।
৪২. যে বিচারক চোরকে সাজা দেবেন তাকে আগে কতদিন উপবাস থাকার নিয়মের কথা মার্জারী উত্থাপন করল?
উত্তর : তাকে আগে তিন দিন উপবাস থাকার নিয়মের কথা মার্জারী উত্থাপন করল।
৪৩. তিন দিন উপবাস করলে কমলাকান্ত কোথায় ধরা পড়বে বলে মার্জারী নিশ্চিত?
উত্তর : কমলাকান্ত নসীরাম বাবুর ভাণ্ডার ঘরে ধরা পড়বে বলে মার্জারী নিশ্চিত।
৪৪. বিচারে যখন পরাস্ত হবে তখন বিজ্ঞ লোকের মত কী?
উত্তর : গম্ভীরভাবে উপদেশ প্রদান করা।
৪৫. নীতিবিরুদ্ধ কথা পরিত্যাগ করে কমলাকান্ত মার্জারীকে কীসে মন দিতে বলল?
উত্তর : ধর্মাচরণে মন দিতে বলল।
৪৬. মার্জারী চাইলে কার গ্রন্থ দিতে পারে বলে কমলাকান্ত বলল?
উত্তর : নিউমান ও পার্কারের গ্রন্থ দিতে পারে বলে কমলাকান্ত বলল।
৪৭. ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ পড়লে কী বুঝতে পারা যাবে?
উত্তর : আফিমের অসীম মহিমা বুঝতে পারা যাবে।
৪৮. প্রসন্ন কাল কী দেবে বলে কমলাকান্তকে বলে গিয়েছিল?
উত্তর : প্রসন্ন ছানা দেবে বলে কমলাকান্তকে বলে গিয়েছিল।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
৪৯. কমলাকান্তের বড় আনন্দ হওয়ার কারণ কী?
উত্তর : একটি পতিত আত্মাকে অন্ধকার থেকে আলোকে এনেছে।
৫০. হাঁড়ি খাওয়ার কথা কী অনুসারে বিবেচনা করা যাবে?
উত্তর : ক্ষুধানুসারে বিবেচনা করা যাবে।
খ অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর
১. “সে দুধে আমারও যে অধিকার, বিড়ালেরও তাই।” ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : দুধের প্রকৃত মালিক বিড়ালও না, কমলাকান্ত নিজেও না। তাই কমলাকান্ত এ কথা বলেছে।
কমলাকান্ত আফিমখোর হলেও জ্ঞানী মানুষ। বিড়াল ক্ষুধার তাড়নায় দুধ খেয়ে ফেলেছে এটি সে ভালো করেই জানে। তাকে দেয়া দুধ মূলত মঙ্গলার এবং এটি দোহন করেছে প্রসন্ন গোয়ালিনী। সুতরাং এই দুধ তার নিজের নয়, এটি সে উপলব্ধি করতে পেরেছে। যেহেতু এই দুধ তার ব্যক্তিগত সম্পদ নয় তাই এখানে সবার অধিকার সমান বলেই সে মনে করেছে। তাই বলেছে, “সে দুধে আমারও যে অধিকার, বিড়ালেরও তাই।”
২. বিড়াল দুধ খেয়ে গেলে মানুষ তাকে তাড়িয়ে মারতে যায় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মানুষ তার চিরায়ত প্রথার কারণে বিড়াল দুধ খেয়ে গেলে তাকে তাড়িয়ে মারতে যায়।
মানুষ নিজে মূলত কিছু উৎপাদন করতে না পারলেও সে যা প্রকৃতি থেকে পায় বা দখল করে সেটাকে তার একান্তই নিজের ভাবে। এজন্য ঐ সম্পদে অন্য কেউ ভাগ বসাতে চাইলে সে তীব্রভাবে তাতে বাধা দেয়, যা মানুষের চিরায়ত একটি প্রথা। এ কারণে বিড়াল দুধ খেয়ে ফেললে তার ওপর প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে মানুষ তাকে তাড়িয়ে মারতে চায়।
৩. কমলাকান্ত কেন এক ভগ্ন যষ্টি আবিষ্কার করে সগর্বে মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলো?
উত্তর : কমলাকান্ত নিজের পৌরুষত্ব জাহির করার জন্য এক ভগ্ন যষ্টি আবিষ্কার করে সগর্বে মার্জারীর প্রতি ধাবমান হলো।
দুধ খাওয়ার দোষে বিড়ালকে মারতে না গেলে কমলাকান্ত মনুষ্যসমাজে কুলাঙ্গাররূপে পরিচিত হবে। মার্জারী একথা স্বজাতিমণ্ডলে প্রচার করলে তারাও তাকে কাপুরুষ ভাববে। এজন্য পুরুষের ন্যায় আচরণ করাকেই কমলাকান্ত বিবেচ্য মনে করল। আর নিজের পৌরুষত্ব জাহির করে বিড়ালকে যথোচিত শিক্ষা দেয়ার জন্য কমলাকান্ত এক ভগ্ন যষ্টি আবিষ্কার করে সগর্বে মার্জারীর দিকে এগিয়ে গেল।
৪. মার্জারী তাকে প্রহার না করে বরং তার প্রশংসা করতে বলেছে কেন?
উত্তর : মার্জারী কমলাকান্তের মূলীভূত কারণ বলে তাকে প্রহার না করে বরং তার প্রশংসা করতে বলেছে।
মার্জারীর মতে পরোপকারই পরম ধর্ম। কমলাকান্তের দুধ খেয়ে তার পরম উপকার সাধন হয়েছে বলে এই উপকারের ফলভাগী কমলাকান্ত নিজেই। মার্জারীর মতে, সে চুরি করে খাক আর যা করেই খাক না কেন, তার খাওয়ার ফলে যে উপকার সিদ্ধ হয়েছে তাতে মূলত কমলাকান্তের ধর্মসঞ্চয় হয়েছে। আর ধর্মসঞ্চয়ের মূলীভূত কারণে মার্জারী তাকে প্রহার না করে বরং তার প্রশংসা করতে বলেছে।
৫. “আমি কি সাধ করিয়া চোর হইয়াছি?”Ñ একথা কে, কাকে কেন বলেছে?
উত্তর : নিজের চুরি করার প্রকৃত কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মার্জারী কমলাকান্তকে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছে।
মার্জারীর মতে, সমাজের বড় বড় সাধুরা, সাধারণ মানুষরা খাবার কুক্ষিগত করে রাখে। এ জন্যই মার্জারীরা খেতে পায় না। সে আরও জানায় যে, তারা যদি ঠিকমতো খেতে পারত তাহলে আর এভাবে চুরি করত না। তাই বলা যায়, নিজের চুরির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মার্জারী কমলাকান্তকে উদ্দেশ্য করে বলেছেÑ আমি কি সাধ করে চোর হয়েছি?
৬. চোরের চেয়ে কৃপণ ধনী শতগুণ বেশি দোষী কেন?
উত্তর : চোরের চুরি করার মূল কারণ হলো কৃপণ ধনীর সম্পদ এবং খাদ্য আত্মাসাৎ। এজন্যই চুরির ক্ষেত্রে চোরের চেয়ে কৃপণ ধনী শতগুণ বেশি দোষী। সমাজে এমন কিছু ধনী আছে যারা নিম্নশ্রেণির মানুষের মুখের দিকে তাকায় না। এসব কৃপণ ধনীর প্রয়োজনের অতিরিক্ত ধন সম্পদ থাকলেও তারা সমাজের কল্যাণে তা ব্যয় না করে নিজেদের কুক্ষিগত রাখে। এজন্যই দরিদ্র খেতে না পেয়ে চুরি করে। ধনীর এমন স্বভাবের কারণেই সে চুরি করতে বাধ্য হয়। তাই বলা হয়েছেÑ চোরের চেয়ে কৃপণ ধনী শতগুণ বেশি দোষী।
৭. ছোটলোকের দুঃখে অপরের ব্যথিত না হওয়ায় কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সমাজের সকলেই তেলা মাথায় তেল দিতে চায় বলে ছোটলোকের দুঃখে অপরে ব্যথিত হয় না।
সমাজে যারা বড় বা উচ্চশ্রেণির মানুষ তাদের ব্যথায় ব্যথিত হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু যারা গরিব বা ছোটলোক, তাদের দুঃখে দুঃখিত হলে কোনো জাগতিক লাভ হয় না। এক কথায়, সমাজের সকলেই তেলা মাথায় তেল দিতে ব্যস্ত। এ জন্যই ছোটলোকের দুঃখে অপরে কোনোভাবেই ব্যথিত হয় না।
৮. “তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্যজাতির রোগ।” -কথাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষদের তোষামোদি মানবজাতির এক ধরনের সংক্রামক ব্যাধি।
সমাজে প্রধানত উচ্চবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত দুই শ্রেণির মানুষ দেখতে পাওয়া যায়। উচ্চশ্রেণির মানুষদের কথামতো চললে বা তাদের তোষামোদি করলে ভবিষ্যতে আর্থিক এবং অন্যান্য সহযোগিতা লাভ করা যায়। তাই সবাই সেসব মানুষের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল হয়ে থাকে, যা মানবজাতির এক খারাপ বৈশিষ্ট্য। এজন্যই বলা হয়েছেÑ তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্যজাতির রোগ।
৯. মার্জারী কথায় কথায় ‘ছি! ছি!’ উচ্চারণ করেছে কেন?
উত্তর : মনুষ্যজাতিকে তাদের বিবেকহীনতার কারণে ধিক্কার জানাতে মার্জারী কথায় কথায় ‘ছি! ছি!’ উচ্চারণ করেছে।
আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষই বিবেকবোধহীন অন্যায় কাজে বেশি মনোযোগী। তারা স্বল্পবিত্তের ব্যথায় ব্যথিত না হয়ে উচ্চ শ্রেণির প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। তারা চোরের চুরির কারণ যে কৃপণ ধনী, তার শাস্তিবিধান না করে চোরের শাস্তি বিধান করে। এক কথায়, তারা কেবল তেলা মাথাতেই তেল দিয়ে থাকে। মনুষ্যজাতির এহেন আচরণের প্রতি তীব্র ঘৃণা আর ধিক্কার জানাতেই মার্জারী বারবার ‘ছি! ছি!’ উচ্চারণ করেছে।
১০. ক্ষুধার্ত মার্জারীদের দৈহিক অবস্থা বর্ণনা কর।
উত্তর : ক্ষুধার্ত মার্জারীদের দৈহিক বা শারীরিক অবস্থা খুবই করুণ। তাদের স্বাস্থ্যে অনেকটা ভগ্নদশা পরিলক্ষিত হয়।
অনাহারে ক্ষুধার্ত মার্জারীদের উদর কৃশ; অস্থি পরিদৃশ্যমান। দেখে মনে হয় তাদের দাঁত বের হয়ে গেছে আর জিহŸা ঝুলে পড়েছে। তাদের চামড়াও অতিশয় কালো, যা দেখে অনেকে ঘৃণা করে। খাদ্যাভাবের কারণেই তাদের এহেন করুণ ভগ্নদশা প্রতীয়মান হয়।
১১. “চোরের দণ্ড আছে, নির্দয়তার কি দণ্ড নাই?”Ñ কথাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : চোর নিজের অপকর্মের জন্য দণ্ড পেলেও নির্দয় ব্যক্তি তার হীন কাজের জন্য কোনো দণ্ডে দণ্ডিত হয় না। চুরি করা অবশ্যই দণ্ডনীয় কাজ। কিন্তু চুরি করার প্রধান কারণ হলো কৃপণ ধনী ব্যক্তিদের নির্মম নির্দয় মনোভাব। তারা যদি নির্মমতার পথ পরিহার করে দরিদ্রের প্রতি একটু মুখ তুলে তাকায় তবে সমাজে আর চুরি হয় না। কিন্তু আমাদের এই সমাজে চুরি নামক অপকর্মের জন্য দণ্ডবিধানের ব্যবস্থা থাকলেও নির্দয়তার কোনো দণ্ড নেই, যা সূ² বিচারে গর্হিত অন্যায়।
১২. চোরের দণ্ডবিধান কেন কর্তব্য বলে কমলাকান্ত মনে করে?
উত্তর : সমাজের উন্নতি অর্থাৎ ধনীদের ধনবৃদ্ধির জন্যই চোরের দণ্ড বিধান কর্তব্য।
আমাদের সমাজে একশ্রেণির মানুষ আছে যাদের ধনবৃদ্ধিকেই মূলত সমাজের ধনবৃদ্ধি বা সমাজের উন্নতি বলে বিবেচনা করা হয়। অথচ এ ধরনের উন্নতিতে মূলত দরিদ্রের কোনো লাভ নেই। সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষের ধনবৃদ্ধি অর্থাৎ সামাজিক উন্নতির পথে মূল অন্তরায় হলো চোরের চুরি করা। এজন্যই তথাকথিত সামাজিক উন্নতির জন্য চোরের দণ্ডবিধান হওয়া কর্তব্য বলে কমলাকান্ত মনে করেন।
১৩. চোরকে ফাঁসি দেওয়া প্রসঙ্গে মার্জারীর নতুন নিয়মটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : চোরকে ফাঁসি দেওয়া প্রসঙ্গে মার্জারীর নতুন নিয়মটি হলো বিচারককে তিন দিন উপবাসে রাখা।
মার্জারীর মতে, বিচারক যদি তাকে চুরির অপরাধে বিচার করেন তার কোনো আপত্তি নেই। তবে শর্ত হলো, বিচারকাজের পূর্বে বিচারককে তিন দিন অভুক্ত থাকতে হবে। কেননা, বিচারক যদি তিন দিন অভুক্ত থাকেন, তবে বুঝতে পারবেন, অভুক্ত থাকার কষ্ট কতটা তীব্র এবং কেনই বা লোকে চুরি করে।
১৪. কমলাকান্ত মার্জারীকে সব দুশ্চিন্তা পরিত্যাগ করে ধর্মাচরণে মন দিতে বলল কেন?
উত্তর : কমলাকান্ত যুক্তিতে মার্জারীর সঙ্গে না পেরে উঠে সব দুশ্চিন্তা পরিত্যাগ করে ধর্মাচরণে মন দিতে বলল। বিজ্ঞ লোকের মত, যখন বিচারে পরাস্ত হবে তখন গুরুগম্ভীরভাবে উপদেশ প্রদান করবে। কমলাকান্ত মার্জারীর সঙ্গে প্রতিটি যুক্তিতেই হেরে গেছে। এমনকি তার দুধ খাওয়ার দণ্ডে দণ্ডিত হওয়া বিষয়েও সে মার্জারীর সঙ্গে পেরে ওঠেনি। তাই বিজ্ঞ লোকদের আপ্তবাক্য অনুসারে সে উপদেশ দিতে গিয়ে মার্জারীকে সকল দুশ্চিন্তা পরিত্যাগ করে ধর্মাচরণে মন দিতে বলল।
১৫. মার্জারী চরিত্রের মাধ্যমে বঙ্কিমচন্দ্র কাকে রূপায়ণ করতে চেয়েছেন?
উত্তর : মার্জারী চরিত্রের মাধ্যমে বঙ্কিমচন্দ্র একজন বিবেকবোধসম্পন্ন সচেতন মানুষকে রূপায়ণ করতে চেয়েছেন।
বঙ্কিমচন্দ্রের মার্জারী চরিত্রটি মূলত একটি রূপক চরিত্র। এ চরিত্রটি অতি সচেতন এবং সময়ের প্রতি অন্যায়-অবিচারের মূলে সে কুঠারাঘাত করেছে। আমাদের সমাজের সচেতন বুদ্ধিজীবী শ্রেণির মানবিক যুক্তিপূর্ণ কথাগুলো মার্জারীর মাধ্যমে বঙ্কিমচন্দ্র বলিয়েছেন। তাই বলা যায়, সমাজের সচেতন বুদ্ধিজীবী বিবেকবোধসম্পন্ন মানুষকে তিনি মার্জারী চরিত্রের মাধ্যমে রূপায়ণ করতে চেয়েছেন।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।