HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | PDF: বাংলা ১ম পত্রের বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতাটি হতে যেকোনো ধরনের প্রশ্নোত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রেরবিভীষণের প্রতি মেঘনাদ কবিতাটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
পাঠ সহায়ক অংশ
সৃজনশীল পদ্ধতি মুখস্থনির্ভর বিদ্যা নয়, পাঠ্যবই নির্ভর মৌলিক বিদ্যা। তাই অনুশীলন অংশ শুরু করার আগে গল্প/কবিতার শিখন ফল, পাঠ পরিচিতি, লেখক পরিচিতি, উৎস পরিচিতি, বস্তুসংক্ষেপ, নামকরণ, শব্দার্থ ও টীকা ও বানান সতর্কতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব বিষয়গুলো জেনে নিলে এ অধ্যায়ের যেকোনো সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব হবে।
শিখন ফল
উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কৃতিত্ব সম্পর্কে জানতে পারবে।
পৌরাণিক কাহিনী কাব্য, বাল্মীকি-রামায়ণের নবমূল্যায়ন সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে।
পৌরাণিক কাহিনী ও চরিত্র সম্পর্কে জ্ঞাত হবে।
বাংলা ভাষায় প্রথম ও শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যের ভাষা -ছন্দ সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে।
মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা ও বিশ্বাসঘাতকতা সম্পর্কে অবগত হবে।
জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও জাতিসত্তার সংহতির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে।
সুজন ও পরজনের সংজ্ঞা এবং তাদের নীতিনৈতিকতা ও জীবনদর্শন সম্পর্কে জানতে পারবে।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিপ্রতিভা এবং পৌরাণিক কাহিনিবিন্যাস ও চরিত্র সৃষ্টিতে বিশেষ কৃতিত্ব সম্পর্কে জ্ঞাত হবে।
পাঠ-পরিচিতি
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাব্যাংশটুকু মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’-র ‘বধো’ (বধ) নামক ষষ্ঠ সর্গ থেকে সংকলিত হয়েছে। সর্বমোট নয়টি সর্গে বিন্যস্ত ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’র ষষ্ঠ সর্গে ল²ণের হাতে অন্যায় যুদ্ধে মৃত্যু ঘটে অসীম সাহসী বীর মেঘনাদের। রামচন্দ্র কর্তৃক দ্বীপরাজ্য স্বর্ণলঙ্কা আক্রান্ত হলে রাজা রাবণ শত্র“র উপর্যুপরি দৈব-কৌশলের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন।
ভ্রাতা কুম্ভকর্ণ ও পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর পর মেঘনাদকে পিতা রাবণ পরবর্তী দিবসে অনুষ্ঠেয় মহাযুদ্ধের সেনাপতি হিসেবে বরণ করে নেন। যুদ্ধজয় নিশ্চিত করার জন্য মেঘনাদ যুদ্ধযাত্রার পূর্বেই নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে মনস্থির করে। মায়া দেবীর আনুক‚ল্যে এবং রাবণের অনুজ বিভীষণের সহায়তায়, ল²ণ শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রবেশে সমর্থ হয়।
কপট ল²ণ নিরস্ত্র মেঘনাদের কাছে যুদ্ধ প্রার্থনা করলে মেঘনাদ বিস্ময় প্রকাশ করে। শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ল²ণের অনুপ্রবেশ যে মায়াবলে সম্পন্ন হয়েছে, বুঝতে বিলম্ব ঘটে না তার। ইতোমধ্যে ল²ণ তলোয়ার কোষমুক্ত করলে মেঘনাদ যুদ্ধসাজ গ্রহণের জন্য সময় প্রার্থনা করে ল²ণের কাছে। কিন্তু ল²ণ তাকে সময় না দিয়ে আক্রমণ করে।
এ সময়ই অকস্মাৎ যজ্ঞাগারের প্রবেশদ্বারের দিকে চোখ পড়ে মেঘনাদের; দেখতে পায় বীরযোদ্ধা পিতৃব্য বিভীষণকে। মুহূর্তে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যায় তার কাছে। খুললতাত বিভীষণকে প্রত্যক্ষ করে দেশপ্রেমিক নিরস্ত্র মেঘনাদ যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, সেই নাটকীয় ভাষ্যই ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ অংশে সংকলিত হয়েছে।
এ অংশে মাতৃভ‚মির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসঘাতকতা ও দেশদ্রোহিতার বিরুদ্ধে প্রকাশিত হয়েছে ঘৃণা। জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব ও জাতিসত্তার সংহতির গুরুত্বের কথা যেমন এখানে ব্যক্ত হয়েছে তেমনি এর বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্রকে অভিহিত করা হয়েছে নীচতা ও বর্বরতা বলে।
উনিশ শতকের বাংলার নবজাগরণের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাল্মীকি-রামায়ণকে নবমূল্য দান করেছেন এ কাব্যে। মানবকেন্দ্রিকতাই রেনেসাঁস বা নবজাগরণের সারকথা।
ঐ নবজাগরণের প্রেরণাতেই রামায়ণের রাম-ল²ণ মধুসূদনের লেখনীতে হীনরূপে এবং রাক্ষসরাজ রাবণ ও তার পুত্র মেঘনাদ যাবতীয় মানবীয় গুণের ধারকরূপে উপস্থাপিত। দেবতাদের আনুক‚ল্যপ্রাপ্ত রাম-ল²ণ নয়, পুরাণের রাক্ষসরাজ রাবণ ও তার পুত্র মেঘনাদের প্রতিই মধুসূদনের মমতা ও শ্রদ্ধা।
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাব্যাংশটি ১৪ মাত্রার অমিল প্রবহমান যতিস্বাধীন অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত। প্রথম পঙ্ক্তির সঙ্গে দ্বিতীয় পঙ্ক্তির চরণান্তের মিলহীনতার কারণে এ ছন্দ ‘অমিত্রাক্ষর ছন্দ’ নামে সমধিক পরিচিত। এ কাব্যাংশের প্রতিটি পঙ্ক্তি ১৪ মাত্রায় এবং ৮ + ৬ মাত্রার দুটি পর্বে বিন্যস্ত।
লক্ষ করার বিষয় যে, এখানে দুই পঙ্ক্তির চরণান্তিক মিলই কেবল পরিহার করা হয়নি, যতিপাত বা বিরামচিহ্নের স্বাধীন ব্যবহারও হয়েছে বিষয় বা বক্তব্যের অর্থের অনুষঙ্গে। এ কারণে ভাবপ্রকাশের প্রবহমানতাও কাব্যাংশটির ছন্দের বিশেষ লক্ষণ হিসেবে বিবেচ্য।
কবি পরিচিতি
নাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ২৫ জানুয়ারি, ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে।
জন্মস্থান : যশোর জেলার কেশবপুর থানাধীন সাগরদাঁড়ি গ্রাম।
পিতৃ-মাতৃ পরিচয় পিতার নাম : মহামতি মুনশী রাজনারায়ণ দত্ত
মাতার নাম : জাহ্নবী দেবী
মাধ্যমিক : এসএসসি (১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে), জিলা স্কুল, বগুড়া।
শিক্ষাজীবন
কলকাতার লালবাজার গ্রামার স্কুল, হিন্দু কলেজ এবং পরবর্তীতে বিশপস কলেজে ভর্তি হন। তিনি ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য বিলেতে গিয়েছিলেন।
কর্মজীবন/ পেশা প্রথম জীবনে আইন পেশায় জড়িত হলেও লেখালেখি করেই পরবর্তীতে জীবিকা নির্বাহ করেন।
সাহিত্য কর্ম
কাব্য : তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, মেঘনাদবধ কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলি।
নাটক : শর্মিষ্ঠা, পদ্মাবতী, কৃষ্ণকুমারী, মায়াকানন।
প্রহসন : একেই কি বলে সভ্যতা, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ।
ইংরেজি নাটক ও নাট্যানুবাদ : রিজিয়া, রতœাবলি, শর্মিষ্ঠা, নীলদর্পণ।
গদ্য অনুবাদ : হেক্টর বধ।
জীবনাবসান মৃত্যু তারিখ : ২৯ জুন, ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে।
সমাধিস্থান : কলকাতার লোয়ার সার্কুলার রোড।
উৎস পরিচিতি
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাব্যাংশটুকু মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’র ‘বধো’ (বধ) নামক ষষ্ঠ সর্গ থেকে সংকলিত হয়েছে।
বস্তুসংক্ষেপ
‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাব্যাংশটুকু ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’র বধো (বধ) নামক ষষ্ঠ সর্গ থেকে সংকলিত হয়েছে। এতে বিভীষণের বিশ্বাসঘাতকতা, ল²ণকে সহায়তা এবং ল²ণ কর্তৃক নিরস্ত্র মেঘনাদের ওপর আক্রমণের বিষয়গুলো প্রতিফলিত হয়েছে। রামচন্দ্র কর্তৃক দ্বীপরাজ্য স্বর্ণলঙ্কা আক্রান্ত হলে রাজা রাবণ অসহায় হয়ে পড়েন। ভাই কুম্ভকর্ণ এবং পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর পর রাবণ মেঘনাদের ওপর ভরসা করেন।
‘মেঘনাদ’ যুদ্ধযাত্রার পূর্বে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে মনস্থির করেন। এমতাবস্থায় মায়াদেবীর আনুক‚ল্যে এবং রাবণের অনুজ বিভীষণের সহায়তায় প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ল²ণ সেই যজ্ঞাগারে প্রবেশ করেন। হীন মানসিকতায় ল²ণ নিরস্ত্র মেঘনাদকে তার সাথে যুদ্ধ করতে আহŸান করেন এবং তরবারি কোষমুক্ত করেন।
মেঘনাদ তখন যুদ্ধসাজ গ্রহণ করতে অস্ত্রাগারে প্রবেশ করতে চান, কিন্তু বিভীষণ অস্ত্রাগারের দ্বার আগলে রাখেন, তাকে কোনোভাবেই সেখানে ঢুকতে দেন না। এ সময় খুলতাত বিভীষণকে উদ্দেশ্য করে নিরস্ত্র মেঘনাদ যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন, সেই নাটকীয় ভাষ্যই ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ অংশে সংকলিত হয়েছে। রাবণের কনিষ্ঠ সহোদর বিভীষণের এহেন আচরণ মেঘনাদকে বিস্মিত ও মর্মাহত করে।
মেঘনাদের মনে প্রশ্ন জাগেÑ বিভীষণ কী করে এমন হীন কাজ করতে পারলেন। নিকষা যার মা, কুম্ভকর্ণ যার ভাই, সে কিনা শত্র“কে পথ চিনিয়ে ঘরে নিয়ে এলেন, চণ্ডালকে রাজকক্ষে স্থান দিলেন। রামানুজকে শাস্তি দিতে অস্ত্রাগারে ঢুকতে দিচ্ছেন না আমাকে। তার মানে তিনি চান না যে মেঘনাদ স্বর্ণলঙ্কাকে শত্র“মুক্ত করে এর কালিমা মুছে ফেলুক।
এ কাব্যাংশে মেঘনাদ বিভীষণকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন দ্বার ছেড়ে দাঁড়ানোর জন্য; কিন্তু বিভীষণ মেঘনাদের কোনো কথাতেই বিচলিত বা বিগলিত হন না। তিনি সকল, অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি কিছুতেই রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। তখন মেঘনাদ আকাশের চাঁদ, রাজহংস, পঙ্কজকানন, শৈবালদল, সিংহ, শিয়াল প্রভৃতি অনুষঙ্গ ও উপমায় তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
তিনি বিভীষণকে তার বংশমর্যাদা ও আভিজাত্যবোধ, অতীত ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে ল²ণকে সহায়তাদানের ভুল ভাঙাতে চান। কিন্তু বিভীষণ কিছুতেই তা মানতে চান না। বলেনÑ দেবতারা সবসময় পাপমুক্ত, লঙ্কাপুরী ধ্বংস হতে চলছে, এ অবস্থার জন্য মেঘনাদ নিজেই দায়ী। এতে তার কোনো দোষ নেই।
রামচন্দ্রের কাছে আশ্রয় লাভ করে ধন্য। মেঘনাদ তখন বিভীষণের নীচ মানসিকতা এবং ল²ণের অন্যায় আক্রমণের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেন। এভাবে বিভীষণের প্রতি মেঘনাদের অনুরোধ, ক্ষোভ এবং স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাব্যাংশে।
নামকরণের সার্থকতা যাচাই
নামকরণ : বাংলা সাহিত্যের আধুনিকতার পথিকৃৎ মাইকেল মধুসূদন দত্তের (১৮২৪-১৮৭৩) সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘মেঘনাদবধ’ -কাব্য (১৮৬১)। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ‘মেঘনাদবধ-কাব্য’ প্রথম সার্থক মহাকাব্য।
নয়টি সর্গে বিভাজিত কাব্যটির মূল আখ্যায়িকা রামায়ণ হতে গৃহীত। রামানুজ ল²ণ কর্তৃক রাবণপুত্র মেঘনাদ নিধনের কাহিনি কবি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচনা করেছেন। সুতরাং ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’র এ অংশের নামকরণ ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ যথার্থ হয়েছে।
সার্থকতা : ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ কাব্যাংশটুকু ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’র ‘বধো’ (বধ) নামক ষষ্ঠ সর্গ থেকে নেয়া হয়েছে। এখানে ল²ণের হাতে অসীম সাহসী বীর মেঘনাদের মৃত্যুর বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। মেঘনাদের এই পরাজয় ও মৃত্যুর জন্য রাবণের কনিষ্ঠ সহোদর বিভীষণ দায়ী।
কারণ বিভীষণ এবং মায়াদেবীর সহায়তায় ল²ণ শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রবেশ করতে পেরেছেন। যেখানে মেঘনাদ ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে প্রস্তুত। সেই নিরস্ত্র অবস্থায় সশস্ত্র ল²ণ তাকে যুদ্ধের আহŸান করেন এবং আক্রমণ চালান।
মেঘনাদ ইষ্টদেবতা অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে প্রস্তুত। সেই নিরস্ত্র অবস্থায় সশস্ত্র ল²ণ তাকে যুদ্ধের আহŸান করেন এবং তার উপর আক্রমণ চালান। মেঘনাদ যুদ্ধের সাজ গ্রহণের জন্য অস্ত্রাগারে প্রবেশ করতে চাইলে সেখানে পিতৃব্য বিভীষণ দ্বার আগলে রাখেন।
এমতাবস্থায় বিস্মিত ও মর্মাহত হয়ে মেঘনাদ বিভীষণের অন্যায় আচরণ ও শত্র“র পক্ষ নেয়া যে মোটেই উচিত হয় নি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তার সমস্ত চেষ্টাই ব্যর্থ করে দেন বিভীষণ। এখানে মেঘনাদ মূলত বিভীষণের প্রতিই তার আবেদন, নিবেদন, অনুরোধ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কাজেই ‘বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ’ নামকরণ সার্থক হয়েছে।
শব্দার্থ ও টীকা
বিভীষণ : রাবণের কনিষ্ঠ সহোদর। রাম-রাবণের যুদ্ধে স্বপক্ষ ত্যাগকারী। রামের ভক্ত।
‘এতক্ষণে’:অরিন্দম কহিলা : রুদ্ধদ্বার নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ল²ণের অনুপ্রবেশের অন্যতম কারণ যে পথপ্রদর্শক বিভীষণ, তা অনুধাবন করে বিস্মিত ও বিপন্ন মেঘনাদের প্রতিক্রিয়া।
অরিন্দম : অরি বা শত্র“কে দমন করে যে। এখানে মেঘনাদকে বোঝানো হয়েছে।
পশিল : প্রবেশ করল।
রক্ষঃপুরে : রাক্ষসদের পুরীতে বা নগরে। এখানে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে।
রক্ষঃশ্রেষ্ঠ Ñ রাক্ষুসকুলের শ্রেষ্ঠ, রাবণ।
তাত : পিতা। এখানে পিতৃব্য বা চাচা অর্থে।
নিকষা : রাবণের মা।
শূলীশম্ভুনিভ : শূলপাণি মহাদেবের মতো।
কুম্ভকর্ণ : রাবণের মধ্যম সহোদর।
বাসববিজয়ী : দেবতাদের রাজা ইন্দ্র বা বাসবকে জয় করেছে যে। এখানে মেঘনাদ। একই কারণে মেঘনাদের অপর নাম ইন্দ্রজিৎ।
তস্কর : চোর।
গঞ্জি : তিরস্কার করি।
রামানুজ : রাম+অনুজ = রামানুজ। এখানে রামের অনুজ ল²ণকে বোঝানো
হয়েছে।
শমন-ভবনে : যমালয়ে।
ভঞ্জিব আহবে : যুদ্ধ দ্বারা বিনষ্ট করব।
আহবে : যুদ্ধে।
ধীমান্ : ধীসম্পন্ন। জ্ঞানী।
রাঘব : রঘুবংশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। এখানে রামচন্দ্রকে বোঝানো হয়েছে।
রাঘবদাস : রামচন্দ্রের আজ্ঞাবহ।
রাবণি : রাবণের পুত্র। এখানে মেঘনাদকে বোঝানো হয়েছে।
স্থাপিলা বিধুরে বিধি
স্থাণুর ললাটে : বিধাতা চাঁদকে আকাশে নিশ্চল করে স্থাপন করেছেন।
বিধু : চাঁদ।
স্থাণু : নিশ্চল।
রক্ষোরথী : রক্ষকুলের বীর।
রথী : রথচালক। রথচালনার মাধ্যমে যুদ্ধ করে যে।
শৈবালদলের ধাম : পুকুর। বদ্ধ জলাশয়।
শৈবাল : শেওলা।
মৃগেন্দ্র কেশরী : কেশরযুক্ত পশুরাজ সিংহ।
মৃগেন্দ্র : পশুরাজ সিংহ।
কেশরী : কেশরযুক্ত প্রাণী। সিংহ।
মহারথী : মহাবীর। শ্রেষ্ঠ বীর।
মহারথী প্রথা : শ্রেষ্ঠ বীরদের আচরণ-প্রথা।
সৌমিত্রি : ল²ণ। সুমিত্রার গর্ভজাত সন্তান বলে ল²ণের অপর নাম সৌমিত্রি।
নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগার : লঙ্কাপুরীতে মেঘনাদের যজ্ঞস্থান। এখানে যজ্ঞ করে মেঘনাদ যুদ্ধে যেত। ‘মেঘনাদবধ-কাব্যে’ যুদ্ধযাত্রার প্রাক্কালে নিরস্ত্র মেঘনাদ নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবতা বৈশ্বানর বা অগ্নিদেবের পূজারত অবস্থায় ল²ণের হাতে অন্যায় যুদ্ধে নিহত হয়।
প্রগলভে : নির্ভীক চিত্তে।
দম্ভী : দম্ভ করে যে। দাম্ভিক।
নন্দন কানন : স্বর্গের উদ্যান।
মহামন্ত্র-বলে যথা
ন¤্রশিরঃ ফণী : মন্ত্রপূত সাপ যেমন মাথা নত করে।
লক্ষি : লক্ষ করে।
ভর্ৎস : ভর্ৎসনা বা তিরস্কার করছ।
মজাইলা : বিপদগ্রস্ত করলে।
বসুধা : পৃথিবী।
তেঁই : তজ্জন্য । সেহেতু।
রুষিলা : রাগান্বিত হলো।
বাসবত্রাস : বাসবের ভয়ের কারণ যে মেঘনাদ।
মন্ত্র : শব্দ। ধ্বনি।
জীমূতেন্দ্র : মেঘের ডাক বা আওয়াজ।
বলী : বলবান। বীর।
জলাঞ্জলি : সম্পূর্ণ পরিত্যাগ।
শাস্ত্রে বলে, …পর
পরঃ সদা! : শাস্ত্রমতে গুণহীন হলেও নির্গুণ স্বজনই শ্রেয়, কেননা গুণবান হলেও পর সর্বদা পরই থেকে যায়।
নীচ : হীন। নিকৃষ্ট। ইতর।
দুর্মতি : অসৎ বা মন্দ বুদ্ধি।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
বানান সতর্কতা
ল²ণ, নিকষা, রক্ষঃশ্রেষ্ঠ, শূলিশম্ভুনিভ, কুম্ভকর্ণ, তস্কর, চণ্ডাল, গঞ্জি, পিতৃতুল্য, অস্ত্রাগারে, লঙ্গা, কলঙ্গ, ভঞ্জির, ধীমান, স্থাণু, রক্ষোরথি, পঙ্কজ, মৃগেন্দ্র কেশরী, সম্ভাষে, শূর, সম্বোধে, সৌমিত্রি, স্বচক্ষে, নিকুম্ভিলা, যজ্ঞাগার, প্রগলভ, দম্ভী, বিধাতঃ ভ্রাতৃপুত্র, নম্রশিরঃ, ফণী, রুষিলা, জীমূতেন্দ্র, বলী, রাক্ষসবাজানুজ, জ্ঞাতিত্ব, জলাঞ্জলি, শ্রেয়ঃ, রক্ষোবর।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।