HSC | বাংলা ২য় পত্র | পত্র রচনা ১-১০ | PDF Download : বাংলা দ্বিতীয় পত্র হতে গুরুত্বপূর্ণ সব পত্র রচনা গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টির গুরুপূর্ণ কিছু পত্র রচনা নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
পত্র রচনা (ব্যক্তিগত চিঠি এবং আবেদন পত্র)
চিঠি বা পত্র :
চিঠির আভিধানিক অর্থ হলো স্মারক বা চিহ্ন। তবে ব্যবহারিক অর্থে চিঠি বা পত্র লিখন বলতে বোঝায়, একের মনের ভাব বা বক্তব্যকে লিখিতভাবে অন্যের কাছে পৌঁছানোর বিশেষ পদ্ধতিকে। আরও সহজ করে বলা যায়, দূরের কিংবা কাছের কোনো আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের কাছে নিজের প্রয়োজনীকথাগুলো লিখে জানানোর পদ্ধতিকে চিঠি বা পত্র লিখন বলে।
চিঠি বা পত্রের বিভিন্ন অংশ :
একটি চিঠি বা পত্রে সাধারণত ছয়টি অংশ থাকে। এগুলো হলো ১. যেখান থেকে চিঠি লেখা হচ্ছে সে জায়গার নাম ও তারিখ; ২. সম্বোধন বা সম্ভাষণ; ৩. মূল বক্তব্য; ৪. বিদাসম্ভাষণ; ৫. প্রেরকের (যে চিঠি পাঠাচ্ছে তার) স্বাক্ষর ও ৬. প্রাপকের (যে চিঠি পাবে তার) নাম ও ঠিকানা।
চিঠি বা পত্রের প্রকারভেদ :
বিষয়বস্তু বিবেচনাচিঠিকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। যথা
১. ব্যক্তিগত চিঠি। যেমন মা-বাবা বা বন্ধু-বান্ধবকে ব্যক্তিগত বিষউল্লেখ করে লেখা চিঠি।
২. সামাজিক চিঠি। যেমন সামাজিক কোনো সমস্যা জানিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য কিংবা প্রশাসনকে জানানোর জন্য লেখা চিঠি।
৩. ব্যবহারিক চিঠি। যেমন ব্যবহারিক প্রয়োজনে লেখা আবেদনপত্র, ব্যবসাপত্র, নিমন্ত্রণপত্র ইত্যাদি।
চিঠি বা পত্র লেখার নিয়ম :
চিঠি বা পত্র লেখার সমসাধারণ কয়েকটি নিয়ম পালন করতে হয়। যেমন
১. সুন্দর ও স্পষ্ট হস্তাক্ষরে লেখা;
২. সহজ, সরল ভাষালেখা;
৩. নির্ভুল বানানে লেখা;
৪. চলিত ভাষালেখা;
৫. বিরামচিেহ্নর যথাযথ ব্যবহার করা;
৬. একই কথার পুনরাবৃত্তি না করা;
৭. পাত্রভেদে সম্মান ও স্নেহসূচক বাক্য ব্যবহার ইত্যাদি।
ব্যক্তিগত পত্র
১. মনে করো, তুমি সপ্রতি একটি নতুন উপন্যাস পড়েছো। নতুন এই বইটি পড়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে এবার তোমার বন্ধুকে একটি পত্র লেখো। [ব. বো. ১৫]
আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম
০৮.০৮.২০১৬ ইং
প্রিয় সুমন,
পত্রের শুরুতেই আমার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিয়ো। আশা করি পরম করুণাময়ের কৃপাপরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো আছো। তোমার গত চিঠিতে তুমি আমার পড়া নতুন একটি বই সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলে। চিঠির উত্তর দিতে দেরি হলো বলে আমি দুঃখিত। আজ তোমাকে এ সম্পর্কে জানাতেই আমি চিঠি লিখছি।
সপ্রতি আমি অপরাজেকথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসের প্রথম পর্বটি পড়েছি। উপন্যাসটির কাহিনি মূল চরিত্র শ্রীকান্তের আত্মকথনের ওপর রচিত। গ্রন্থটির প্রাঅর্ধেক অংশজুড়েই রয়েছে শ্রীকান্ত ও ইন্দ্রনাথ নামের দুজন কিশোরের বিচিত্র কাহিনি। তবে ইন্দ্রনাথ চরিত্রটি আকস্মিকভাবে হারিয়ে যাসপ্তম পরিচ্ছেদে। উপন্যাসের বাকি পাঁচটি পরিচ্ছেদে রয়েছে শ্রীকান্ত ও রাজল²ীর প্রণয়ের কাহিনি।
উপন্যাসটিতে আরও কয়েকটি অপ্রধান চরিত্রের সমাবেশ লক্ষ করা যায়। এসব চরিত্রের মধ্যে রয়েছে অন্নদাদি, নতুনদা, নিরুদি, রতন প্রমুখ। সব মিলিয়ে উপন্যাসটিতে যথেষ্ট বৈচিত্র্য রয়েছে। প্রতিটি চরিত্র যেন বিশেষ কোনো বার্তা দিচ্ছে। তাই আমার কাছে বইটি পাঠের অভিজ্ঞতা চির অমলিন হয়ে থাকবে। সুযোগ করে তুমিও পড়ে নিয়ো। আশা করি তোমার ভালো লাগবে।
তোমার পরিবারের বড়দেরকে আমার সালাম এবং ছোটদের আদর দিয়ো। আমাদের জন্য দোয়া করো।
ইতি
তোমার বন্ধু
শোভন।
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
২. একুশের বইমেলা সম্পর্কে তোমার প্রবাসী বন্ধুকে চিঠি লেখো।
অথবা, তোমার দেখা কোনো বইমেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র লেখো। [কু. বো. ০৯, ০৭]
সাভার, ঢাকা
২৫শে ফেব্রয়ারি, ২০১৬
সু প্রিয় কথা,
অনেক দিন হতুমি কোনো চিঠি লেখোনি। অথচ তোমাকে আমার প্রায়ই মনে পড়ে।
এই তো সেদিন বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলাগিয়েছিলাম। তুমি এই শহর ছেড়ে গিয়েছ প্রাতিন বছর, অথচ এরই মধ্যে একুশের বইমেলার যে কতটা পরিবর্তন হয়েছে নিজের চোখে না দেখলে তুমি বিশ্বাসই করতে পারবে না। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রাস্তার ওপর আগে যে স্টলগুলোর বরাদ্দ দেওয়া হতো, সেগুলো এখন আর নেই। দোকান বসে শুধু একাডেমির ভেতরে আর একটি অংশ বসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
মেলার ভেতর কোনো রকম গান-বাজনা চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপারটিও প্রশংসার দাবিদার। সর্বোপরি বইমেলাকে এখন আদর্শ বইমেলাই মনে হয়। এসব নিয়মনীতির জন্য ক্রেতা ও দর্শক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বইও বিক্রি হচ্ছে আগের তুলনাবেশি। বাংলা একাডেমি আয়োজিত মাসব্যাপী এই বইমেলার প্রথম দিন থেকেই নেমেছিল জনতার ঢল।
অগণিত মানুষের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে মেলার সুবিশাল অঙ্গন। পরিণত হলেখক-প্রকাশক-পাঠকের মিলনমেলায়। এবারের বইমেলার সবচেয়ে আলোচ্য বিষহচ্ছে নতুন লেখকদের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা এবং বিক্রি ছিল বেশ আশাব্যঞ্জক।
বাংলা একাডেমি ফেব্রয়ারির পহেলা থেকে একটানা একুশ দিন আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। যে কয়দিন মেলাগিয়েছি উপভোগ করেছি বৈচিত্র্যমঅনুষ্ঠানমালা। বইও কিনেছি বেশ কিছু। শীঘ্রই তোমার জন্য কয়েকটি বই পাঠিয়ে দেবো। আজ বিদানিচ্ছি। তোমার খবরাখবর জানিয়ে চিঠি দিয়ো।
ইতি
তোমার বান্ধবী
সাথী
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
৩. স্কুলের শেষ দিনে তোমার মনের অবস্থা বর্ণনা করে বন্ধুর কাছে চিঠি লেখো। [রা. বো. ১৪, চ. বো. ০৯, সি. বো. ১৩]
মোহাম্মদপুর, ঢাকা
২১শে ডিসেম্বর, ২০১৬
প্রিয় কবির,
একটু আগে স্কুল থেকে ফিরেছি। মনটা দারুণ যন্ত্রণাকাতরাচ্ছে। ভাবলাম তোমার কাছে দু-কলম লিখতে পারলে আমার বেদনাহত হৃদকিছুটা হয়তো শান্ত হবে।
আজ আমার স্কুলজীবনের শেষ দিন। স্কুলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিদাসংবর্ধনার মাধ্যমে আমাদের বিদাজানানো হয়। আমরা যারা পরীক্ষার্থী ছিলাম সবাই অন্য দিনের চেয়ে দু-ঘণ্টা আগেই স্কুলে এসে হাজির হয়েছি।
কিন্ত আজ আর কারো মনে কোনো আনন্দ নেই, নেই কোনো চঞ্চলতা। সবার চোখেমুখে একটা বিষণœতার ছাপ। চারদিকে যেন বিদায়ের সকরুণ সুর বাজছে, সে ধ্বনি আকাশে-বাতাসে প্রতিধ্বনি হয়ে আমার হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করতে লাগল। মনে হলো সবচেয়ে বেশি কষ্ট বোধ হআমিই পাচ্ছি। আসলে এ-কষ্ট এবং দুঃখ কাউকে বোঝানো কিংবা বলা যানা বলেই এর তীব্রতা এত বেশি।
যথাসময়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্কুলের নবম শ্রেণির কৃতী ছাত্রী দোলা আমাদের সবাইকে ফুলের-মালা পরিয়ে দিল। সূচনা হলো বিদায়ের! ওবায়দুল স্যার সূচনা-ভাষণ দিলেন। একে একে সিনিয়র শিক্ষকগণ বক্তব্য রেখে আমাদের প্রতি তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেন।
স্কুলের শ্রেষ্ঠ ছাত্র হিসেবে আমাকে যখন বক্তব্য দেওয়ার জন্য বলা হলো, তখন আমি ভেবেই পাচ্ছিলাম না কীভাবে কথা বলব। দু-একটি কথা বলার পর আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। দু-চোখের জল বাধা মানল না। পনেরো সেকেন্ড পর অতি কষ্টে উচ্চারণ করলাম আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
এটুকু বলেই আমার বক্তব্য শেষ করতে হলো। সভাপতির ভাষণে বক্তব্য রাখলেন আমাদের পরম শ্রদ্ধাভাজন প্রধান শিক্ষক। তিনি আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে চলার পথের পাথেসম্পর্কে নানা উপদেশ দিলেন। সবশেষে আমাদের সবাইকে উপহার হিসেবে একটি করে বই দেওয়া হলো। এরপর সংগীতানুষ্ঠান।
বিদায়ের গানে বেদনার সুর বেজে উঠতেই আমাদের স্কুলজীবনের শেষ দিনের মুহূর্তগুলো হৃদয়পটে ছবির মতো আটকে গেল। এ-স্মৃতি কখনোই ভোলার নয়।
সত্যিই, আজকের দিনে তোমাকে পাশে পেলে ভালো হতো। আজ এখানেই শেষ করছি। তাড়াতাড়ি চিঠি দিও। চাচা-চাচিকে সালাম জানিও।
ইতি
তোমার বন্ধু
টুটুল
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
৪. এসএসসি পরীক্ষা পাসের পর তুমি বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণ করতে চাও। এ ব্যাপারে যুক্তি দেখিয়ে তোমার বন্ধুর কাছে একটি চিঠি লেখো।
১৮ই জুন ২০১৬
প্রিয় পবন
কেমন আছো? পড়ালেখার কী অবস্থা? অনেক দিন তোমার চিঠি পাই না। আজকে আমি তোমাকে জানাব পরীক্ষার পর কী করব সেই পরিকল্পনার কথা।
এসএসসি ভালো ফলের জন্য আমি কঠোর পরিশ্রম করছি। পরীক্ষার পর আমি বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণ করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তুমি হয়তো ভাবছ সাধারণ পড়াশোনা ছেড়ে কেন বৃত্তিমূলক শিক্ষাগ্রহণে আগ্রহী হলাম। তোমাকে তার কারণটা বুঝিয়ে বলি।
তুমি তো আমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা জানো। বাবাকে হারিয়েছি সেই ছেলেবেলায়। আমাদের দুই ভাইকে মানুষ করার জন্য মা অমানুষিক পরিশ্রম করেছেন। অনেক ত্যাগ তাঁকে স্বীকার করতে হয়েছে। তাঁর সামান্য বেতনের চাকরি দিয়ে আমাদের সংসার খুব কষ্টে চলছে। আমি বড় বলে পরিবারের জন্য আমার একটা বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের দেশে সাধারণ পড়াশোনা খুবই ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ।
অন্যদিকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা হলো হাতে-কলমে শিক্ষা। এ শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের অভাব ও সময়ের অপচহনা। তাছাড়া বৃত্তিমূলক শিক্ষাগ্রহণে সেশনজটের কোনো ঝামেলা নেই। এ শিক্ষা শেষে সরাসরি কাজে ঢোকা সম্ভব। তাই মন হতাশাজর্জরিত হনা। এর ফলে আর্থিক সমস্যার সমাধান সহজতর হয়।
আশা করি বুঝতে পেরেছ কেন আমি পরীক্ষার পর বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তোমার পরিকল্পনা জানিয়ে চিঠি লিখো। ভালো থেকো।
তোমার শুভাকাক্সক্ষী
সুব্রত
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
৫. তোমার গ্রামকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে তুমি যেমন ভ‚মিকা পালন করবে তার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে একটি পত্র লেখো। [সি. বো. ১৫]
রামপুরা, ঢাকা-১২১৯
৪ঠা জানুয়ারি, ২০১৬
প্রিয় কমল
শুভেচ্ছা নিয়ো। আশা করি ভালোই আছ। পথশিশুদের লেখাপড়া নিয়ে কাজ করছো শুনে খুব ভালো লাগল। তোমার মতোই আমিও মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সে সম্পর্কে জানাব বলেই আজ লিখছি।
নিরক্ষরতার কুফল সম্পর্কে তোমার নিশ্চয়ই ভালো ধারণা আছে। এই অভিশাপ থেকে আমার প্রিগ্রামকে মুক্ত করার জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই ব্যস্ত সমকাটাচ্ছি। আশা করি আমার কাজটি সম্পর্কে জানলে তুমি খুশি হবে এবং নিজেও অনুপ্রাণিত হবে।
আমার প্রিগ্রামটি নিরক্ষরতার অভিশাপে অন্ধকারাচ্ছন্ন এ বিষয়টি সত্যিই খুব হতাশাজনক। তাই আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি যেভাবেই হোক গ্রামকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করব। এজন্য গ্রামের শিক্ষিত ও সমাজসেবী মানুষদের সাথে কথা বলি। তাঁরা আমাদের উদ্দেশ্যের কথা শুনে খুব খুশি হলেন এবং নানা রকম পরামর্শ দিলেন। আমরা আমাদের গ্রামের স্কুল মাঠের একটি পাশে নৈশ বিদ্যালস্থাপন করেছি।
গ্রামের নিরক্ষর পুরুষ, ছেলে, বউ-ঝিরা পড়ালেখা করতে অত্যন্ত আগ্রহের সাথে নৈশ বিদ্যালয়ে আসতে শুরু করেন। আমরা বন্ধুরা প্রত্যেকেই নিজেদের অবস্থান থেকে নিরক্ষরতামুক্ত আন্দোলনে সক্রিভ‚মিকা পালন করছি। লেখাপড়ার প্রতি মানুষের এমন ইচ্ছাশক্তির উদাহরণ আমাদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করছে। আমাদের এখানে এসে বেড়িয়ে যাও। কোনো পরামর্শ থাকলে জানিয়ো। আজ আর নয়। উত্তর দিয়ো।
ইতি
তোমার বন্ধু
ইউসুফ
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
৬. নিয়মিত লেখাপড়া করার উপদেশ দিয়ে/ভবিষ্যতে পরীক্ষাভালো ফলাফল করার উৎসাহ দিয়ে তোমার ছোট ভাই-বোনের কাছে পত্র লেখো।
আজিমপুর, ঢাকা
১৫ই মে, ২০১৬
স্নেহের আমান,
আমার ভালোবাসা রইল। গতদিন মায়ের লেখা একটা চিঠি পেলাম। মা জানিয়েছেন পড়াশোনাতোমার মন নেই। তোমার সম্পর্কে এমনটা শুনব আশা করিনি। তোমাকে ঘিরে আমাদের সবার অনেক আশা-ভরসা।
লেখাপড়া সম্পর্কে সবচেয়ে বড় কথা হলো এটি কেউ কাউকে দান করতে পারে না। নিজের আগ্রহেই একে অর্জন করে নিতে হয়। মুখস্থ বিদ্যার জোরে পরীক্ষাকেবল পাস করা যায়। কিন্তু তাতে প্রকৃত জ্ঞান তোমার ভেতর সঞ্চিত হবে না। সুতরাং যেটুকু পড়বে মন দিয়ে পড়বে। সারাবেলা তোমাকে বই নিয়ে বসে থাকার পরামর্শ আমি দিচ্ছি না। কেননা মন থেকে পড়তে না বসলে সে পড়াশোনা দিয়ে কোনো লাভ নেই।
লেখাপড়ার বিষয়টাকে তুমি আনন্দের সাথে নাও-এই আমার কামনা। তোমাকে আমি নানা সমছোটদের উপযোগী কিছু বই পাঠাই। সে বইগুলো যেমন মজার, তেমনি শিক্ষণীয়। অবসরে এই বইগুলো পড়ে দেখো। দেখবে পাঠ্য বইয়ের প্রতিও তোমার আগ্রহ তৈরি হবে। বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে পড়াশোনা করলেও ভালো ফল পাবে। তবে এক্ষেত্রে সঙ্গী নির্বাচনে সতর্ক থাকা চাই।
তোমার জেএসসি পরীক্ষার তো আর মাত্র তিন মাস বাকি। তাই পড়া জমিয়ে না রেখে নিয়মিত পড়াশোনা করো। অনেক শিক্ষার্থীই সময়ের পড়া সময়ে না পড়ে তা জমিয়ে রাখে। পরে পরীক্ষা চলে এলে সিলেবাস সম্পূর্ণ শেষ করতে না পেরে নকলের মতো জঘন্য পথ বেছে নেয়।
নকল করে অনেক সমপরীক্ষা পাসের সার্টিফিকেট পাওয়া গেলেও, ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে তা কোনো কাজে আসে না। তোমার প্রতি আমার দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে যে, এ বিষয়ে তুমি বেশ সচেতন।
সবশেষে বলতে চাই, পরিশ্রম ছাড়া জীবনে উন্নতি করার বিকল্প কোনো উপানেই। যে ব্যক্তি অধ্যবসায়ী নয়, জীবনের কোনো কাজেই সে সফলতা লাভ করতে পারে না। তাই আমাদের সকলের উচিত অধ্যবসায়ের মতো এই মহৎ গুণটিকে আয়ত্ত করা।
এর বেশি কিছু বলার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। আশা করি এখন থেকে তুমি পড়াশোনার প্রতি যতœবান হবে। আব্বু-আম্মুর প্রতি খেয়াল রেখো। তোমার পরীক্ষার আগেই বাড়ি আসব। আজ এখানেই শেষ করছি।
ইতি
তোমার বড় বোন
কবিতা
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
৭. পরীক্ষাকৃতিত্ব প্রদর্শনের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি চিঠি লেখো। [কু. বো. ১৪, ঢা. বো. ০৯, দি. বো. ১৪]
বগুড়া সদর
২৫শে মে, ২০১৬
প্রিয় কাঞ্চন,
প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিয়ো। এসএসসি পরীক্ষাতোমাগোল্ডেন এ প্লাস পাওয়ার খবর শুনে আমি অত্যন্ত উচ্ছ¡সিত। এমন গৌরবোজ্জ্বল ফল অর্জন করাতোমাকে আমি আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই।
তোমার মতো ফল আমি করতে পারিনি। তবে যেটুকু হয়েছে তাতেই আমি খুশি। আমি পেয়েছি ৪.৮৮। তোমার ফলাফলের কথা শুনে বাবা-মাও খুব খুশি হয়েছেন। আমার মনে হতোমার এই সাফল্য তোমার দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সামনের দিনে অপেক্ষা করছে কঠিনতর চ্যালেঞ্জ।
সে চ্যালেঞ্জে জয়ী হওয়ার জন্য তোমাকে পরিশ্রমের ধারাটি অব্যাহত রাখতে হবে। দৃঢ়সংকল্প ও পরিশ্রমের জোরেই যে জীবনে সফলতা আসে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তো তুমি নিজেই। তুমি তোমার লক্ষ্যকে সামনে রেখে নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে গেছ। আমি আশা করেছিলাম যে, পরীক্ষাতুমি অবশ্যই দারুণ ফলাফল করবে। আমার কথা অক্ষরে অক্ষরে ফলেছে। তুমি তোমার পরিশ্রমের পুরস্কার পেয়েছ।
তোমার বাবা-মাকে আমার সালাম জানাবে। তোমার ভবিষ্যৎ জীবন আরও সুন্দর ও সফল হোক। এই কামনা করে শেষ করছি। ভালো থেকো।
ইতি
তোমার বন্ধু
সাগর
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
৮. তোমার দেখা একটি বিজ্ঞান মেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র লেখো। [রা. বো. ১২]
জামালপুর
প্রিয় অসীম
কেমন আছ বন্ধু? আমার খবর ভালো। তবে গত সপ্তাহটি পার করেছি ভীষণ ব্যস্ততায়। আমাদের স্কুলে আয়োজন করা হয়েছিল সপ্তাহব্যাপী একটি বিজ্ঞান মেলার। তার খবর জানাতেই তোমাকে আজ লিখছি।
মেলাবিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তাদের নিজেদের তৈরি বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজেক্ট প্রদর্শন করে। মেলা উপলক্ষে পুরো স্কুল ভবনকে সাজানো হয়। প্রতিদিন বিকাল ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য প্রদর্শনী খোলা রাখা হয়। আমরা বিভিন্ন স্টলে নিজ নিজ প্রদর্শনী বস্তু নিয়ে প্রদর্শন শুরু করি। আমি আমার অটোমেটিক লাইট ডিটেক্টর যন্ত্রটি প্রদর্শন করি এবং বিচারকগণের রায়ে দ্বিতীস্থান অধিকার করি।
উক্ত প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার মাননীজেলা প্রশাসক। তিনি সবগুলো স্টল পরিদর্শন করেন এবং আমাদের কাজে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। শেষ দিনে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আমাদের প্রধান শিক্ষক এতে সভাপতির আসন অলংকৃত করেন। প্রদর্শনী সফল হওয়ার জন্য তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি ঘোষণা দেন যে, এখন থেকে নিয়মিতভাবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এ বছর দশটি স্কুল এতে অংশ নেয়। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করি।
আজ এ পর্যন্তই। তোমার আব্বা-আম্মাকে আমার সালাম দেবে। আর ছোট ভাইবোনদের দেবে অনেক অনেক আদর। তোমার গাছগুলোর কী খবর? চিঠিতে জানিয়ো।
ইতি
তোমার বন্ধু
পুনম
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৬১-১৮৫ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১৪১-১৬০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | কলেজ ভিত্তিক অনুবাদ ১২১-১৪০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় | বোর্ড ভিত্তিক অনুবাদ ১০১-১২০ | PDF Download
HSC | বাংলা দ্বিতীয় পত্র | অনুবাদ ৬১-৮০ | Onubad | PDF Download
৯. তোমাদের বিদ্যালয়ে সপ্রতি অনুষ্ঠিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিবরণ দিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র লেখো।
পরশুরাম, ফেনী
১৬ই ফেব্রয়ারি, ২০১৬
প্রিয় মারুফ,
তোমার চিঠি পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছি। তোমার ভ্রমণের বৃত্তান্ত পড়ে খুব ভালো লাগল। গত সপ্তাহে আমাদের স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই কথা জানাতেই এই চিঠি।
প্রাএক মাস আগে থেকে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি শুরু হয়। প্রতিটি ক্লাস থেকে বিভিন্ন ইভেন্টের জন্য প্রতিযোগী বাছাই করা হয়। এ কটা দিন সব ছাত্রছাত্রীই প্রচণ্ড উৎসাহ ও উত্তেজনার মধ্য দিয়ে কাটিয়েছে। সবার এক চিন্তা- বাছাইপর্বের চেয়ে ভালো করতে হবে। যা হোক, অবশেষে এলো সেই প্রতীক্ষিত দিন। সকাল আটটাপ্রতিযোগিতা শুরু হয়। জাতীপতাকা উত্তোলনের সাথে সাথে জাতীসংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর প্রজ্জ্বলিত হঅলিম্পিক মশাল।
মাননীপ্রধান অতিথি তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণ শেষে শান্তির প্রতীক শ্বেত কপোত ও রঙবেরঙের বেলুন মুক্তাকাশে উড়িয়ে প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ৮টা ৩৫ মিনিটে শুরু হক্রীড়া প্রতিযোগীদের মার্চপাস্ট। সকাল ৯টাশুরু হমূল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন আমাদের ক্রীড়াবিষয়ক শিক্ষক।
তাঁকে সহযোগিতা করে রোভার স্কাউট ও বিএনসিসির সদস্যরা। মোট ১৫টি ইভেন্টে ১২০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। এদের মধ্যে ছাত্র ৭২ জন এবং ছাত্রী ৪৮ জন। দৌড়, হাইজাম্প, লংজাম্প, গোলক নিক্ষেপ, চাকতি নিক্ষেপ, বর্শা নিক্ষেপসহ প্রাসবগুলো ইভেন্টেই দারুণ প্রতিদ্ব›িদ্বতা হয়।
সবচেয়ে মজার ইভেন্টটি ছিল আমন্ত্রিত অতিথি ও স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে রশি টানাটানি খেলা। খুব হৈ-হুল্লোড়ের মাঝে অতিথিরাই জিতে যান। আমন্ত্রিত মহিলাদের জন্য ছিল মিউজিক্যাল চেয়ার। এটাতেও খুব মজা হয়। ছাত্রছাত্রীদের জন্য আরেকটি ব্যতিক্রমী ইভেন্ট ছিল ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’। বছরের এই একটি দিনের সুযোগ অনেকেই কাজে লাগিয়ে ইচ্ছেমতো সেজেছিল।
বিকেল ৫টাপুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার। সবাই পুরস্কার পায়নি, কিন্তু কারো মুখেই পরাজিত হওয়ার কোনো গøানি ছিল না এটিই হলো খেলাধুলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মহৎ শিক্ষা। আমি ২০০ মিটার দৌড়ে অংশ নিয়ে ২স্থান অধিকার করেছি।
আজ এখানেই ইতি টানছি। তোমার কাছে নতুন কোনো বই থাকলে জানিয়ো। ভালো থেকো।
ইতি
তোমারই
আফসান
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
১০. সংবাদপত্র পাঠের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে তোমার বন্ধুর কাছে একটি পত্র লেখো। [চ. বো. ১১]
অথবা, সংবাদপত্র পাঠের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে তোমার বন্ধুকে একটি পত্র লেখ। [ব. বো. ১১]
২০.০৫.২০১৬
ঢাকা।
প্রিয় আমান,
আশা করি ভালো আছো। আমার খবর ভালো।
আমি জানি, তুমি প্রচুর বই পড়ো। শুধু বই পড়লেই হবে না বিশ্বের সাপ্রতিক পরিস্থিতিও জানতে হবে। কেবল পাঠ্যবই পড়লেই জ্ঞান অর্জন করা যানা। একজন মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ হতে হলে তাকে সব বিষয়ে জ্ঞান রাখতে হয়। আর সেটি অর্জন করার অন্যতম উপাসংবাদপত্র পাঠ করা। সংবাদপত্র পাঠ করলে তুমি অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ, স্বদেশ-বিদেশসহ সব রকম তথ্য জানতে পারবে।
দেখবে সে এক মজার তথ্য-জগৎ। নিয়মিত সংবাদপত্র পাঠ তোমার মেধাকে শানিত করবে। তুমি একজন প্রকৃত ও পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠতে পারবে। এজন্য তুমি নিয়মিত সংবাদপত্র পাঠ করো। এতে তোমার জানার পরিধি যেমন বাড়বে, তেমনি বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।
আসলে সংবাদপত্র পাঠ আমাদের প্রত্যেকটি সচেতন মানুষের জন্যই অতীব প্রয়োজন। আশা করি এ প্রয়োজনীয়তা তুমিও উপলব্ধি করতে পেরেছ।
আজ এখানেই শেষ করলাম। ভালো থেকো।
ইতি
তোমার বন্ধু
কামাল
[ঠিকানাসহ খাম হবে]
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।