HSC | বাংলা ২য় পত্র | গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা ৫১-৫৫ | PDF Download: বাংলা দ্বিতীয় পত্র হতে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রবন্ধ রচনা গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়টির গুরুপূর্ণ কিছু প্রবন্ধ রচনা নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
৫১. বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও তার প্রতিকার
[ঢা. বো. ১৫, চ. বো. ১৩, দি. বো. ১৩]
ভূমিকা : প্রকৃতপক্ষে ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বেশি আক্রান্ত হয়। নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন এ দেশের মানুষের নিত্যসঙ্গী। দেশটি নদীবাহিত পলিমাটিতে তৈরি একটি বদ্বীপ। বিশাল গঙ্গা-যমুনা-মেঘনার প্রবাহ মিলিয়ে সাত শত নদ-নদী বয়ে গেছে এ দেশের ওপর দিয়ে।
তার ওপর এ দেশের দক্ষিণাংশজুড়ে রয়েছে বঙ্গোপসাগর- যার আকার অনেকটা ওল্টানো ফানেলের মতো। ফলে সাগরে ঝড় উঠলেই প্রবল দক্ষিণা হাওয়ার তোড়ে সমুদ্রের লোনা পানি উঁচু হয়ে গড়িয়ে পড়ে নিচু উপক‚লে। এতে সৃষ্টি হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বন্যা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, টর্নেডো, সাইক্লোন- তার সঙ্গে নদীভাঙন, জলোচ্ছ¡াস ও জমিতে লবণাক্ততার আক্রমণ-এসব প্রায় প্রতিবছর লেগেই আছে। এমনি নানা দুর্যোগ এ দেশের মানুষের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্নকে তছনছ করে দেয়।
বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ : বাংলাদেশ ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। আমাদের দেশ নদীমাতৃক ও সমতল। সমুদ্রপৃষ্ঠে থেকে সামান্য উঁচু এ দেশে প্রায় প্রতিবছর কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেয়। নিম্নে বাংলাদেশের কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিচয় তুলে ধরা হলো
বন্যা : আমাদের দেশ একটি সমতল ভ‚মি, এর বুক চিরে প্রবাহিত হচ্ছে অসংখ্য নদ-নদী। হিমালয় ও অন্যান্য পর্বতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও বরফগলা পানি নেমে আসার কারণে আমাদের নদ-নদীগুলো ধারণক্ষমতা হারায়। ফলে নদীর তীর উপচে মূল ভ‚খণ্ড প্লাবিত হয়। ১৯৭৪ সালের বন্যার কারণে ফসলহানিতে ভয়ংকর দুর্ভিক্ষে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারায়। ১৯৮৮ ও ২০০৭ সালের বন্যা সবচেয়ে ভয়াবহতম। এতে দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫০/৫৪টি জেলাই প্লাবিত হয়।
জলোচ্ছ¡াস : বাংলাদেশের উপক‚লীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ¡াস একটি ভয়াবহ দুর্যোগ। ১৯৬০, ১৯৭০, ১৯৮৫, ১৯৯১ ও ১৯৯৭ সালের জলোচ্ছ¡াস ছিল বিভীষিকাময়। ১৯৭০ সালের সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় উপক‚লীয় বিশাল এলাকাকে পরিণত করেছিল মৃত্যুপুরীতে। এ জলোচ্ছ¡াসে ৫ লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ১৯৮৫ সালের ঘূর্ণিঝড়ে উড়িরচর নামক জনপদ সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়ে বিরান ভ‚মিতে পরিণত হয়।
১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল সবচেয়ে মারাত্মক জলোচ্ছ¡াসটি বাংলাদেশে আঘাত হানে। এতে দেশের ১৬টি জেলার ৪৭টি উপজেলা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই জলোচ্ছ¡াসে পানি ২০ ফুট উঁচু হয়ে উপক‚লে আঘাত হানে। এতে উপক‚লীয় অঞ্চলে প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষ ও প্রাণী প্রাণ হারায়।
মৌসুমি ঝড় : গ্রীষ্মকাল বাংলাদেশে মৌসুমি ঝড়ের সময়। গ্রীষ্মকালে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে কালবৈশাখী ঝড় হয়। এ সময় মুহূর্তের তাণ্ডবে সব কিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ১৯৮৯ সালে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় এবং ১৯৯১ সালে খুলনায় প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের কবলে সমগ্র এলাকা মুহূর্তেই বিধ্বস্ত জনপদে পরিণত হয়। ২০০২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এবং ২০০৪ সালে নেত্রকোনা জেলায় ভয়ংকর ঝড়ে বিশাল এলাকা জুড়ে ধ্বংসলীলা চলে।
নদীভাঙন : বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীর যেমন দান রয়েছে এ দেশে, তেমনি রয়েছে ধ্বংসলীলাও। প্রতিবছর নদীভাঙনে লাখ লাখ মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে পথের ভিখারিতে পরিণত হচ্ছে। জামালপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, চাঁদপুর নদীভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সর্বগ্রাসী পদ্মার গ্রাসে অসংখ্য জনপদ বিলীন হয়ে গেছে অবলীলায়।
ভ‚মিকম্প : বাংলাদেশ সুনিশ্চিতভাবে ভ‚মিকম্প বলয়ে অবস্থিত। যেকোনো মুহূর্তে আমাদের দেশে ভ‚মিকম্পে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হতে পারে। বিশেষত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় তীব্র ভ‚মিকম্প হতে পারে। বাংলাদেশে যদিও এ পর্যন্ত বড় কোনো ভ‚মিকম্প হয়নি, তবে বড় কোনো ভ‚মিকম্প হলে যে ক্ষয়ক্ষতি হবে তা কল্পনাতীত।
দুর্যোগ প্রতিরোধের উপায় : প্রাকৃতিক দুর্যোগ একটি অভিশাপ। এ অভিশাপ থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে বিশ্বজুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এসব প্রস্তুতির মধ্যে পড়ে আগাম সতর্কতা, দুর্যোগকালে ক্ষয়ক্ষতির প্রশমন, দুর্যোগের পর পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন, দুর্যোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা এবং ভবিষ্যতে যাতে দুর্যোগ না ঘটে সেজন্য অবকাঠামোগত ও সামাজিক উন্নয়নের ব্যবস্থা করা।
এসবের প্রস্তুতিকল্পে বাংলাদেশও বেশ সোচ্চার। আমাদের দেশে চিরাচরিতভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা বলতে বোঝায় দুর্যোগ ঘটে যাওয়ার পর সাহায্য দানের মাধ্যমে তার ক্ষয়ক্ষতি নিরসনের চেষ্টা করা। কিন্তু আজ আর এই ধারণা নিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলা হচ্ছে না। এর জন্য পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে অভিনব পদ্ধতিতে। যেমন
১. দুর্যোগ ঘটার পূর্ব থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং সেজন্যে বিশেষ ধরনের কর্মীবাহিনী সৃষ্টি এবং জনগণকে প্রশিক্ষিত করে তোলা।
২. জাতীয় ভিত্তিতে দুর্যোগ মোকাবেলা করার নীতিমালা পরিকল্পনা ও কর্মপদ্ধতি প্রণয়ন।
৩. জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমের মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের ব্যবস্থা করা।
৪. পরীক্ষিত পদ্ধতির ভিত্তিতে যথাসময়ে সতর্কতা সৃষ্টির আয়োজন।
৫. দ্রæুত ক্ষয়ক্ষতি ও চাহিদা নিরূপণের ব্যবস্থা করা।
৬. তথ্য সরবরাহের ব্যবস্থা উন্নত করা।
৭. সামরিক বাহিনীকে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাজে সমন্বয় সাধন করা।
৮. থানা, জেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি নিয়ে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা।
৯. দুর্যোগ মোকাবেলায় নিয়োজিত কর্মীবাহিনীর বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
১০. সর্বোপরি দুর্যোগের সম্ভাব্যতা ও সেগুলোর মোকাবেলা করার পদ্ধতি সম্বন্ধে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।
দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ : বাংলাদেশেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় ভিত্তিতে বিভিন্ন নীতিমালা প্রণীত হয়েছে। দুর্যোগ সংক্রান্ত কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধন, গণসচেতনতা বৃদ্ধি, তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা, গবেষণাকর্ম পরিচালনা, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রশমন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা দান প্রভৃতির উদ্দেশে ১৯৯৩ সালে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো।
দুর্যোগের কারণে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসসহ দুর্যোগ-উত্তরকালে জাতীয় সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জন ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করাই এর মূল লক্ষ্য।
উপসংহার : এককালে মানুষের ধারণা ছিল প্রকৃতির ওপর যেকোনো উপায়ে আধিপত্য প্রতিষ্ঠাই সবচেয়ে জরুরি। আজ সে ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। কেননা দেখা যাচ্ছে, এই আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বন ধ্বংস করে, নদীর প্রবাহ বন্ধ করে, পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করে মানুষ নিজের জন্যে সমূহ বিপদ ডেকে এনেছে।
তাই আজ প্রকৃতির ওপর আধিপত্য নয়, মানুষ গড়ে তুলতে চাইছে প্রকৃতির সঙ্গে মৈত্রীর সম্বন্ধ। আর চেষ্টা করছে প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে প্রকৃতির সহায়তায় তার নিজের জীবনধারাকে আগামী দিনের সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
৫২. বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা ও সমাধান
[চ. বো. ১৪, দি. বো. ১১]
ভূমিকা : জনসংখ্যা বিস্ফোরণে ভারাক্রান্ত তৃতীয় বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ বাংলাদেশ। উন্নয়ন অগ্রগতি ও অর্থনীতির গতিশীল চাকাকে জনসংখ্যা সমস্যা মন্থর করে দিয়েছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আজ তাই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। জনসংখ্যা যখন কোনো দেশের সমস্যার বদলে শক্তিতে পরিণত হয়, তখন আমূল পরিবর্তন ঘটে সেই দেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতির।
বাংলাদেশের জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য : আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীর ক্ষুদ্রতর দেশগুলোর অন্যতম। এ দেশের জনবসতি অত্যন্ত ঘন। সরকারের এক হিসাব অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে বর্তমানে বাংলাদেশের মোট লোকসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। বাংলাদেশে ১৫ বছরের কম এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের লোকের সংখ্যা অধিক হওয়ায় বৃহত্তর জনগোষ্ঠী দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করতে পারছে না।
পুরুষের সংখ্যা আর নারীর সংখ্যা প্রায় সমান হলেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে পুরুষের মতো নারী সমান অবদান রাখতে পারছে না। দেশের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ লোক শিক্ষিত। ব্যাপক নিরক্ষরতা জনসংখ্যা সমস্যাকে করে তুলেছে প্রকট।
জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধি : দ্রæত বেড়ে চলেছে পৃথিবীর জনসংখ্যা। পৃথিবীর মানুষকে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলার জন্যে প্রতিবছর ১১ জুলাই তারিখে পালিত হয় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ৭০০ কোটি। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী এর মধ্যে শুধু উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনসংখ্যার পরিমাণ প্রায় ৪৫০ কোটি।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, আগামী এক দশকের মধ্যেই বিশ্বের জনসংখ্যা আরো প্রায় একশ কোটি বেড়ে যাবে এবং এই বৃদ্ধির শতকরা ৯০ ভাগ ঘটবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। তাই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে না পারলে পিছিয়ে-পড়া দেশগুলোর দুর্বল অর্থনীতি ক্রমেই নাজুক ও বিপন্ন হয়ে পড়বে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ : পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ছে জ্যামিতিক হারে অথচ সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে গাণিতিক হারে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় সম্পদ কমহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা দিচ্ছে খাদ্য ঘাটতি। বাংলাদেশে জনসংখ্যা দ্রæত বৃদ্ধির অনেকগুলো কারণ রয়েছে।
সেগুলোর মধ্যে দারিদ্র্য এবং নিম্নমানের জীবনযাত্রা, অশিক্ষা, ভৌগোলিক প্রভাব, ধর্মীয় এবং সামাজিক কুসংস্কার, বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ, জন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে অজ্ঞতা ইত্যাদি প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচ্য। এছাড়াও বিনোদনের অব্যবস্থা, খাদ্যাভ্যাস, মৃত্যুহার হ্রাস ইত্যাদিও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
দ্রত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল : বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এই জনগোষ্ঠীর মধ্যেই জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। দেশে দ্রæত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সুচিকিৎসা, শিক্ষা, বিশুদ্ধ পানি ইত্যাদির অভাব বেড়েই চলেছে। ফলে জীবনযাত্রার মানেরও ঘটছে অবনতি সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। প্রধান কিছু সমস্যা হচ্ছে
ক. বাংলাদেশের তীব্র খাদ্যসংকটের মূল কারণ অত্যধিক জনসংখ্যা। খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য বাংলাদেশকে প্রতিবছর ১০-১২ লক্ষ টন খাদ্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দারুণভাবে বাধাগস্ত হচ্ছে।
খ. বাংলাদেশের শিল্পোন্নয়নের গতি অত্যন্ত মন্থর। কৃষির ওপরেও রয়েছে অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ। অন্যদিকে দেশে সঠিক কর্মব্যবস্থাপনা না থাকায় জনগোষ্ঠীর বিরাট অংশ বেকার থাকছে। এ সমস্যা ক্রমেই জটিলতর রূপ ধারণ করছে। বর্তমানে দেশের কর্মক্ষম লোকদের শতকরা প্রায় ৩০ ভাগই বেকার জীবনযাপন করছে।
গ. জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাসস্থান নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। ফলে শহরাঞ্চলে বাসস্থান সমস্যা প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বাড়তি জনসংখ্যার জন্য বাসস্থান তৈরি করতে গিয়ে কমে আসছে চাষের জমির পরিমাণ।
ঘ. জনসংখ্যা যতই বৃদ্ধি পাবে ততই স্কুল-কলেজের সংখ্যা বাড়াতে হবে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান লোকের শিক্ষার জন্যে দরিদ্র এ দেশ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে পারছে না। অনেক ক্ষেত্রে দারিদ্র্য এবং অপুষ্টির। কারণে জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ শিক্ষা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কমে যাচ্ছে শিক্ষিতের হার।
ঙ. দ্রæত জনসংখ্যা বৃদ্ধি মারাত্মক পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে। জনসংখ্যার অত্যধিক বৃদ্ধির ফলে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের অপ্রতুলতা, ময়লা ও পানি নিষ্কাশনের অব্যবস্থা, ব্যাপকহারে বৃক্ষ নিধন, অনিয়ন্ত্রিতভাবে কলকারখানা স্থাপন ইত্যাদি ঘটছে। এর ফলে দেশের পরিবেশ এবং স্বাস্থ্য মারাত্মক দূষণের শিকার হচ্ছে।
জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানের উপায় : কোনো সমস্যাই চিরকাল স্থায়ী হয় না। সব সমস্যারই কোনো-না-কোনো সমাধান এবং প্রতিকার রয়েছে। উন্নয়নকামী দেশ জনসংখ্যা সমস্যার সমাধান খোঁজে অগ্রগতির পথ পাওয়ার জন্য। এই সমস্যা সমাধানের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি উপায়। যেমনÑ
ক. দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অগ্রগতির হারকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের তুলনায় বেশি করতে পারলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
খ. শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে সমাজ থেকে কুসংস্কার ও গোঁড়ামি দূর করে জনসাধারণকে পরিবার পরিকল্পনায় উদ্বুদ্ধ করে তুলতে হবে।
গ. পরিমাণগত নিয়ন্ত্রণের চেয়ে গুণগত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই জনসংখ্যা সমস্যার প্রকৃত সমাধান সম্ভব। এ লক্ষ্যে দেশে শিক্ষার বিস্তার, কারিগরি দক্ষতার বিস্তার এবং কর্মশক্তি বৃদ্ধির ব্যবস্থার দ্বারা জনসংখ্যার গুণগত মান বৃদ্ধির মাধ্যমে একে সমস্যার বদলে সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব।
ঘ. বাংলাদেশে আয়ের ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বিদ্যমান। আয়ের সুষম বণ্টন, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব।
ঙ. সর্বোপরি আইন প্রণয়নের মাধমে বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ রোধ ও গর্ভপাত অনুমোদন করা সম্ভব হলে জনসংখ্যা হ্রাস পাবে। এছাড়া বিয়ের ন্যূনতম বয়স বৃদ্ধি করতে হবে। ব্যাপক প্রচার এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধির মাধমে এই আইনসমূহের সফল প্রয়োগ ঘটাতে হবে।
উপসংহার : পরিকল্পিত পরিবার গঠন ও জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে একটি সর্বজনীন জাতীয় নীতিমালা প্রণীত হওয়া আবশ্যক। সাথে সাথে শিক্ষা বিস্তার করতে হবে এবং জাতীয় আয়ের সুষম বণ্টন করে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হবে। আর তাহলেই জনসংখ্যা সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।
৫৩. ভূমিকম্প ঝুঁকিতে বাংলাদেশ
ভূমিকা : বাংলাদেশের এই সবুজ ভ‚খণ্ডে মাঝে মাঝেই আঘাত হানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। নিয়মিত বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ¡াসের ভয়াবহতায় আমরা প্রতিবছরই ক্ষতিগ্রস্ত। প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের মধ্যে ভ‚মিকম্প আতঙ্কই আমাদের মাঝে সর্বাধিক দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করে।
কারণ ভ‚মিকম্প কোনো রকম পূর্ব সংকেত ছাড়াই ভ‚পৃষ্ঠকে কাঁপিয়ে দেয়। বেশ কয়েক বছর ধরে অনেকগুলো মৃদু থেকে মাঝারি ভ‚মিকম্প আমাদের দেশে আঘাত হেনেছে। হাইতির পর সা¤প্রতিককালে নেপালের ভ‚মিকম্প আমাদের উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
ভ‚মিকম্প কী এবং কেন? : ভ‚ত্বক পরিবর্তনকারী প্রক্রিয়াসমূহ প্রতিনিয়ত ক্রিয়াশীল। কোনো কারণে ভ‚অভ্যন্তরের বিপুল শক্তি দ্রæত মুক্ত হওয়ার সময় ভৃপৃষ্ঠে যে প্রবল ঝাঁকুনি বা কম্পনের সৃষ্টি হয় তাকে ভ‚মিকম্প বলে। ভ‚মিকম্পের তীব্রতা অনুযায়ী পৃথিবীর এক প্রান্তে অবস্থিত ভ‚কম্পনকেন্দ্র থেকে সৃষ্ট তরঙ্গমালা পৃথিবীর অপরপ্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
অবশ্য কেন্দ্র হতে তরঙ্গগুলো যতই দূরে অগ্রসর হয়; ততই নিস্তেজ হয়ে পড়ে। মৃদু কিংবা প্রবল ভ‚মিকম্প মাপার এককের নাম রিখটার স্কেল। ভ‚মিকম্পের কারণ অনুসন্ধানকালে ভ‚তত্ত¡বিদগণ লক্ষ করেন, পৃথিবীর কয়েকটি বিশেষ অঞ্চলে অধিক ভ‚মিকম্প সংঘটিত হয়।
বাংলাদেশ ভ‚মিকম্পের ঝুঁকিতে : বাংলাদেশের ভ‚খণ্ডে মোট ৮টি ভ‚চ্যুতি এলাকা ক্রিয়াশীল। এগুলো হচ্ছে বগুড়ার তানোর, ত্রিপুরা, সীতাকুন্ড-টেকনাফ এলাকা, হালুয়াঘাট, ধুবরি, চিটাগাং, শাহীবাজার এবং রাঙামাটি। এসব ভ‚চ্যুতির জন্য বাংলাদেশে ভ‚মিকম্পের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। এ ছাড়া ইন্ডিয়া-ইউরেশিয়া-বার্মা টেকটোনিক প্লেটের সীমান্তবর্তী এলাকার নিকটে বাংলাদেশের অবস্থান।
হিমালয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে এই টেকটোনিক প্লেট বন্ধ হয়ে আছে। ফলে এটি শক্তি সঞ্চয় করছে। যখন সেই শক্তির কাছে এ টেকটোনিক প্লেট বন্ধনমুক্ত হবে, তখন শক্তিশালী ভ‚মিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে। যা বাংলাদেশ, উত্তর ভারত ও মায়ানমারে মারাত্মক আঘাত হানতে পারে।
জানুয়ারি ২০০৬-ডিসেম্বর ২০০৯ এ তিন বছরে ৪ রিখটার স্কেলের ওপরের মাত্রার ১১৫টি ভ‚মিকম্প রেকর্ড করেছে। এছাড়াও ৫ রিখটার স্কেলের আরও দশটি ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হয়েছে এ সময়ে। বঙ্গোপসাগরে চারটি ভ‚মিকম্পের উৎস ক্রিয়াশীল থাকায় এ অঞ্চলগুলো সুনামিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।
বাংলাদেশে ভ‚মিকম্পের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস : বাংলাদেশে ১৫৪৮ সাল থেকে সংঘটিত ভ‚মিকম্পসমূহের তথ্য সংরক্ষিত আছে। ভ‚মিকম্পের এ তথ্য থেকে জানা যায়, ১৯০০ সাল থেকে প্রায় ১০০টি মাঝারি থেকে শক্তিশালী ভ‚মিকম্প আঘাত হেনেছে, যার মধ্যে ৬৫টি আঘাত হেনেছে ১৯৬০ সালের পর থেকে। এ তথ্য থেকে আরও জানা যায় গত ত্রিশ বছরে দেশে ভ‚মিকম্পের হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আমাদের দেশের জন্য অশনী সংকেত।
ভ‚মিকম্পে ক্ষতক্ষতির কারণ ও পরিমাণ : ভ‚মিকম্পের সময় মাটির তারল্যিকরণ ঘটে এবং মাটির ধারণক্ষমতা কমে যায়। ফলে বড় বড় ভবনগুলোকে মাটি ধরে রাখতে পারে না। যে কারণে সেগুলো ধ্বংসের মুখে পতিত হয়। ইউএআইডি ঢাকা শহরে ভ‚মিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির কারণ বিশ্লেষণ করেছে, যা প্রায় ক্ষেত্রে সারা বাংলাদেশের শহরগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এগুলো নিম্নরূপ-
র. ভ‚মিকম্পের পরপরই কী করণীয়- এ সম্বন্ধীয় জ্ঞানের অভাব রয়েছে। ফলে ক্ষয়ক্ষতি বৃদ্ধি পেতে পারে।
রর. শহরের বেশিরভাগ বিল্ডিং ভাসমান অথবা কম গভীর ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত, ফলে এগুলো দেবে যেতে পারে।
ররর. বর্ষার সময় যদি ভ‚মিকম্প হয় তবে মাটিতে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় ধ্বংসযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ লাভ করতে পারে।
রা. গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, যা ভ‚মিকম্প-পরবর্তী পুনর্বাসন কর্মসূচিতে ব্যাঘাত ঘটাবে।
া. রাস্তা-ঘাট-ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস হতে পারে।
পুরাতন ও নিম্নমানের স্কুল-ভবন ভেঙে অনেক ছাত্রছাত্রীর মৃত্যু ঘটতে পারে। যার ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ লাভ করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে ৭.৫ মাত্রার একটি বড় ভ‚মিকম্প ঢাকা শহরে লক্ষাধিক মানুষ এবং প্রায় ৭২,০০০ ভবন ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অবস্থা আরও বেশি খারাপ।
ভ‚মিকম্প মোকাবেলায় আমাদের করণীয় : ভ‚মিকম্প এক ধ্বংসাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ যার পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়নি। এ কারণে ভ‚মিকম্পে যাতে অধিক জানমালের ক্ষতি না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। সরকার অনুমোদিত বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করতে হবে। ভ‚মিকম্পের পরবর্তী সময়ে যেন খাদ্য, পানীয় ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায় সেদিকে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
তবে সরকারের একার পক্ষে এ ধরনের মহাবিপর্যয় মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন দাতাসংস্থা ও এনজিও এক্ষেত্রে নানা ভ‚মিকা পালন করতে পারে। দাতাসংস্থাগুলো ভ‚মিকম্প মোকাবেলায় সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সহযোগিতা করতে পারে। ভ‚মিকম্পের ওপর যে উন্নত প্রযুক্তি বিদেশে উদ্ভাবিত হয়েছে, আমাদের দেশের প্রকৌশলীদের সে বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত করতে হবে।
ভ‚মিকম্প মোকাবেলায় বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা : ২০১০ সালে ভ‚মিকম্পের পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করতে ৪০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে সরকার। ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বড় মাত্রার ভ‚মিকম্পের জন্য এ প্রস্তুতি বড়ই অপ্রতুল। বড় কোনো বিপর্যয় মোকাবেলা করার মতো সামর্থ্য এখনও তৈরি হয়নি আমাদের।
উপসংহার : ভ‚মিকম্প পৃথিবীর সবচেয়ে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটি একটি দেশের আবাসিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়। আমাদের মতো দরিদ্র দেশে ভ‚মিকম্প তাই অভিশাপের দ্বিতীয় নাম। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে বাংলাদেশের অবস্থান পৃথিবীর ভ‚মিক¤পপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে। এ কারণে অপ্রত্যাশিত হলেও বড় ধরনের ভ‚মিকম্পের ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ।
৫৪. দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও তার প্রতিকার
[সি. বো. ১২, ব. বো. ১০]
ভূমিকা : বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণে-অকারণে নিত্যপণ্যের দাম বর্তমানে বেড়েই চলেছে। ফলে জনজীবন তীব্র ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ক্রমাগত পণ্যমূল্য বৃদ্ধি জনজীবনে অসন্তোষ, ক্রোধ ও বিদ্বেষ পুঞ্জীভ‚ত করে।
বর্তমান সমাজজীবনে ধর্মঘট, আন্দোলন এগুলোর পেছনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অভাব ও দরিদ্রতাই দায়ী। আর দরিদ্রতার মূলে রয়েছে পণ্যমূল্যের বৃদ্ধি। তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আজ আমাদের সামাজিক, জাতীয় ও অর্থনৈতিক জীবনে এক বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দ্রব্যমূল্যের সাথে জীবনযাত্রার সম্পর্ক : দ্রব্যমূল্যের সাথে জীবনযাত্রার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে সমাজের দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। মানুষকে প্রতিদিনই নানাবিধ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ক্রয় করতে হয়। আর এরূপ কেনাকাটা যদি তার আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয় তবে তার দুরবস্থার সীমা থাকে না। আমাদের দেশের বেশিরভাগ শ্রমিক কর্মচারীর আয় সামান্য।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে এ সীমিত আয় দ্বারা জীবন নির্বাহ তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তখন সাধ ও সাধ্যের ব্যাপক ব্যবধানে জীবনে নেমে আসে দুর্ভোগ ও হতাশা। পক্ষান্তরে, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল থাকলে তাদের জীবনে থাকে স্বস্তি।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ : বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধির নানাবিধ কারণ রয়েছে। তবে উৎপাদন অব্যবস্থাপনাই যে এর মূল কারণ এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যহীনতা।
ফলে সীমাবদ্ধ জিনিসের জন্য অগণিত ক্রেতার ভিড় এবং পরিণামে মূল্যবৃদ্ধি ও জিনিস সংগ্রহের জন্য তীব্র প্রতিযোগিতা। বস্তুত, মজুতদারেরাই নিজেদের লাভের জন্য জিনিসপত্রের দাম চড়িয়ে দেয় এবং তাদের দেখাদেখি ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার পথ বেছে নেয়।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ক্ষতিকর দিক : দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রভাব সবটাই জনগণের ওপর পতিত হয়। জীবনের দৈনন্দিন প্রয়োজনে কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদি ক্রয় করতে হয়। দেশের অধিকাংশ মানুষ স্বল্প আয়ের মধ্যে জীবন যাপন করে এবং তাদের পক্ষে অতিরিক্ত মূল্যে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করা প্রায় অসম্ভব। ফলে বাধ্য হয়ে তারা ব্যয় বরাদ্দ কমাতে থাকে। বাজারে জিনিসের দাম বাড়ছে তাতে শিশুদের ভোগ্যপণ্য ক্রয়ের পরিমাণ কমছে।
ফলে শিশুদের ওপর যে প্রভাব পড়ে তাতে তাদের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে না, তারা অপুষ্টির শিকার হয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে যে আর্থিক সংকটের সৃষ্টি হয় তাতে ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনেও প্রভাব পড়ে খাদ্য, পোশাক, শিক্ষা উপকরণ ইত্যাদির অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিজনিত আর্থিক সংকট কাটানোর জন্য অনেকে অবৈধ উপার্জনের দিকে মনোযোগী হয়। ফলে সমাজে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।
জনজীবনে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া : দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি মানুষের জীবনকে করে তুলেছে দুর্বিষহ। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির ফলে জনজীবন আজ সংকটের সম্মুখীন। এগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক বিপর্যয়, দুর্ভিক্ষ ও মহামারি প্রধান। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষ অভাবের তীব্রতা ও শোচনীয় দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত।
তারা দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে মুক্তি পেতে কখনও ধর্মঘট করে আবার কখনও বা বেতন বৃদ্ধির জন্য আন্দোলনে নামে। তাদের আন্দোলনের মুখে সরকার সামান্য বেতন বৃদ্ধি করলেও মূল্যবৃদ্ধির দুর্বার আগ্রাসী শক্তির সঙ্গে তারা সামঞ্জস্য রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধের উপায় : নানা কারণে আজও আমাদের এই দরিদ্র দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বেড়েই চলছে। তাই যথাশীঘ্র সম্ভব এই দুষ্ট রাহু থেকে মুক্তির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এই উদ্দেশ্যে বাজারে চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পণ্যের জোগান নিশ্চিত করতে হবে। কল-কারখানার উৎপাদন নিয়মিত করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি প্রক্রিয়ায় যাতে বিঘœ না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য মজুদদারি ও কালোবাজারি দূর করতে হবে। মুদ্রাস্ফীতি যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে হবে। অসাধু ও ফটকা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। সর্বোপরি সামগ্রিক বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে এবং কেউ যেন হঠকারী সিদ্ধান্ত দিয়ে দ্রব্যের মূল্যকে প্রভাবিত করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
তবে শুধু সরকারের একার পক্ষে এর সমাধান দেওয়া কঠিনতর ব্যাপার। সরকারের পাশাপাশি সচেতন জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের নৈতিকতাবিরোধী কার্যক্রম পরিহারই এই সমস্যার আশু সমাধান দিতে পারে।
উপসংহার : দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে দেশের সাধারণ মানুষের দুর্দশা বাড়বে। কিন্তু আমাদের দেশের এই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। দেশের সাধারণ মানুষের দিকে তাকিয়ে এই দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরতে হবে। সর্বোপরি বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে যেভাবে জিনিসের দাম বেড়েছে তার সঠিক প্রতিরোধ আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তবুও তার ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য সব নাগরিককে আদর্শ দেশপ্রেমিক হতে হবেÑ দেশকে ভালোবাসতে হবে এবং উৎপাদন বাড়িয়ে নিজস্ব দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে হবে।
৫৫. ইভ টিজিং
ভূমিকা : সামপ্রতিক সময়ের আলোচিত সামাজিক সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ইভ টিজিং। এটি একটি মারাত্মক অপরাধ, যা আমাদের সমাজকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। এর বিষাক্ত ছোবলের শিকার হয়ে অনেক মেয়ের জীবন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একে আমাদের সমাজে যৌন হয়রানিও বলা হয়ে থাকে। নৈতিক মূল্যবোধ ও মানবিকতাকে বিসর্জন দিয়ে অনেক বখাটে নির্লজ্জের মতো আচরণ করছে ইভ টিজিংয়ে লিপ্ত হয়ে।
ইভ টিজিংয়ের স্বরূপ : খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বাইবেল অনুযায়ী ‘ইভ’ (ঊাব) হচ্ছেন পৃথিবীর আদিমাতা। বর্তমানে এই ‘ইভ’ শব্দটি নারীকে রূপক অর্থে প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়। আর ‘টিজিং’ (ঞবধংরহম) অর্থ হলো উত্ত্যক্ত করা বা বিরক্ত করা। তাই ইভ টিজিং শব্দটি দ্বারা বোঝায় নারীকে উত্ত্যক্ত করা। আমাদের দেশে একে যৌন হয়রানি হিসেবেও অভিহিত করা হয়ে যাকে। ১৯৭৫ সালে আমেরিকান কর্নেল অ্যাস্টিভিস্টরা সর্বপ্রথম এ শব্দটি ব্যবহার করেন।
বিশিষ্টজনদের মতে অশালীন চাহনির মাধ্যমে মেয়েদেরকে উত্ত্যক্ত করা, তাদেরকে দেখে শিস বাজানো, বাজে মন্তব্য করা, অপ্রত্যাশিতভাবে বা আচমকা কোনো মেয়ের সামনে লাফিয়ে পড়া, হঠাৎ হাততালি দেওয়া, বিনা অনুমতিতে ক্যামেরা অথবা মোবাইল দিয়ে মেয়েদের ছবি তোলা, মেয়েদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে মিসড কল বা কল দেওয়া কিংবা মেসেজ পাঠানোর মতো আপত্তিকর কাজগুলো ইভ টিজিংয়ের পর্যায়ে পড়ে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মেয়েদের স্বাধীনভাবে চলাফেরায় বাধা সৃষ্টি করা হয়। এগুলো মানসিক বিকৃতিরই বহিঃপ্রকাশ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইভ টিজিং : বাংলাদেশে সা¤প্রতিক সময়ে ইভ টিজিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমাদের সংবিধানের ২৭ ও ২৮ নং অনুচ্ছেদে রাষ্ট্র ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার লাভের কথা উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ দেখা যায় না। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা এখনও অনেক ক্ষেত্রে অসহায়ত্বের শিকার হয়।
সামপ্রতিক সময়ে বাংলা বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পবিত্র শিক্ষাঙ্গনেও ইভ টিজিংয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে মেয়েদের। এখানেই শেষ নয়। স্কুলছাত্রী থেকে শুরু করে আদিবাসী তরুণী কেউই রেহাই পায়নি বখাটেদের হাত থেকে। জ্ঞান প্রদানকারী শিক্ষকও এখন ভক্ষকে পরিণত হয়েছে। নারীরা কোথাও নিরাপদ নয়।
ইভ টিজিংয়ের কারণ : ইভ টিজিং মূলত এক ধরনের মানসিক ব্যাধি। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ মুখ্যত দায়ী। এই কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
(১) নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় : সময়ের সাথে সাথে যুগের পরিবর্তনে মানুষের চিন্তা-চেতনা আধুনিক হলেও তার নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের যুবসমাজ বিপথগামী হচ্ছে এবং নৈতিক শিক্ষা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটার কারণে তারা ইভ টিজিংয়ে প্রবৃত্ত হচ্ছে।
(২) দুর্বল আর্থ সামাজিক অবস্থা ও বেকারত্ব : দরিদ্র পরিবারের উঠতি বয়সের ছেলেরা কিংবা বেকার ছেলেরা দিশাহারা হয়ে পথে-ঘাটে ঘুরে বেড়ায়। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে সময় কাটানোর জন্য তারা পার্কে কিংবা রাস্তার মোড়ে জটলা পাকায়। এ সময় তারা বিনোদনের জন্য যেকোনো মেয়েকে দেখলেই ইভ টিজিং করতে থাকে।
(৩) দুর্বল পারিবারিক শিক্ষা : যেসব পরিবারে বাবা-মা তার পুত্রসন্তানকে প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে তারা ইভ টিজিংয়ের মতো নোংরা কাজে জড়িত হয় না। কিন্তু যেসব পরিবারের কাঠামো দুর্বল এবং সন্তানরা পিতা-মাতার কাছ থেকে যথার্থ শিক্ষা পায় না তারা সহজেই যেকোনো অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে।
(৪) অপসংস্কৃতির প্রভাব : ইভ টিজিংকে উৎসাহিত করতে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি কিংবা অপসংস্কৃতি বিরাট নেতিবাচক প্রভাব রাখছে। টেলিভিশনে নানা ধরনের কুরুচিপূর্ণ অনুষ্ঠান দেখে আজকের যুবসমাজ একে ফ্যাশন বলে মনে করে। ফলে সমাজে ইভ টিজিং বাড়ছে।
(৫) মেয়েদের অশালীন পোশাক পরিধান : বর্তমানকালে আধুনিক ফ্যাশনের নামে মেয়েদের অশালীন নানা পোশাক পরিধান করতে দেখা যায়। এসব পোশাক প্রকারান্তরে ছেলেদেরকে ইভ টিজিংয়ে প্ররোচিত করে, যা অত্যন্ত ক্ষতিকর।
উপর্যুক্ত নানা কারণে ইভ টিজিং সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
ইভ টিজিং প্রতিরোধে করণীয় : ইভ টিজিং প্রতিরোধে সকলের সচেতন অবস্থান তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি আরও নানা করণীয় রয়েছে আমাদের। এগুলো হলো
(১) মেয়েদেরকে মজবুত মানসিকতার অধিকারী করে গড়ে তুলতে হবে
(২) তরুণ ছেলেদের মনে নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করতে হবে।
(৩) পাঠ্যপুস্তকগুলোতে ইভ টিজিংয়ের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরতে হবে।
(৪) ইভ টিজিংয়ের শিকার হওয়া যেকোনো মেয়েকে পরিবার থেকে সহানুভ‚তি ও ভালোবাসা দিতে হবে।
(৬) পাশ্চাত্য সংস্কৃতি কিংবা অপসংস্কৃতির প্রভাব থেকে তরুণ প্রজন্মকে বাঁচানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
(৭) নৈতিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে অন্যায়বোধ জাগ্রত করতে হবে।
(৮) নারী-পুরুষ সকলকে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার শিক্ষা দিতে হবে। এর মাধ্যমে তারা সুশৃঙ্খল জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ হবে, যা ইভ টিজিংয়ের মতো অনৈতিক কাজকে নিরুৎসাহিত করবে।
(৯) ইভ টিজিংবিরোধী সভা-সমাবেশ ও সেমিনারের আয়োজন করা।
(১০) প্রচারমাধ্যমগুলোতে ইভ টিজিং প্রতিরোধে অনুষ্ঠান আয়োজন।
(১১) আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশের সহয়তা নেওয়া।
HSC | বাংলা ২য় | প্রতিবেদন রচনা ১-৫ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | প্রতিবেদন রচনা ৬-১০ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | প্রতিবেদন রচনা ১০-১৫ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | প্রতিবেদন রচনা ১৬-২১ | PDF Download
HSC | বাংলা ২য় | সংলাপ রচনা ১-১০ | PDF Download
ইভ টিজিং প্রতিরোধে সরকার গৃহীত পদক্ষেপ : ইভ টিজিং প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছেÑ
(১) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারিক ক্ষমতার তত্ত¡াবধানে ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যবস্থা গৃহীত হয়। এতে ৫০৯ ধারা সংযোজন করে তাৎক্ষণিকভাবে বখাটেদের শাস্তি দেওয়ার বিধান রাখা হয়।
(২) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইনÑ২০১০’Ñএর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
উপসংহার : ইভ টিজিং একটি ভয়ংকর সামাজিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এ সমস্যা সমাধানকল্পে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণ এবং সরকার উভয়ের সম্মিলিত উদ্যোগই পারে ইভ টিজিংকে কঠোর হাতে দমন করতে। আমাদের সমাজকে ইভ টিজিং থেকে রক্ষা করতে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। তাই সকলকে সচেতন হতে হবে এবং প্রতিবাদ করতে হবে ইভ টিজিংয়ের বিরুদ্ধে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।