৪র্থ শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা তৃতীয় অধ্যায় – আখলাক প্রশ্ন উত্তর | PDF: চতুর্থ শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়টির তৃতীয় অধ্যায়টি হতে গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
তৃতীয় অধ্যায় – আখলাক
অধ্যায়টি পড়ে জানতে পারব
আখলাক. সম্পর্কে
আব্বা-আম্মার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে
শিক্ষকের মর্যাদা ও তার সাথে করণীয় সম্পর্কে
বড়দের সম্মান, ছোটদের স্নেহ করার কথা
প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে
রোগীর সেবা করা সম্পর্কে
সত্য বলার উপকারিতা ও মিথ্যা বলার ক্ষতি সম্পর্কে
ওয়াদা পালনের গুরুত্ব সম্পর্কে
লোভের ক্ষতি সম্পর্কে
অপচয়ের ক্ষতি সম্পর্কে
অধ্যায়ের মূল বিষয়বস্তু জেনে নিই
সুন্দর স্বভাব ও ভালো চরিত্রকে আরবিতে বলে আখলাক। এর ফলে জীবন সুন্দর ও সুখের হয়। মন্দ স্বভাব ও খারাপ চরিত্রের অধিকারীদের কেউ ভালোবাসে না। আমরা ছোট-বড় সবার সাথে উত্তম আচরণ করব। বয়স্কদের সাথে দেখা হলে সালাম দেব, আদবের সাথে কথা বলব। তাঁদের আদেশ-উপদেশ মেনে চলব। প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক. বজায় রাখব। রোগীর সেবা-যতœ করব। সবসময় সত্য কথা বলব। সত্য কথা বলা একটি মহৎগুণ। কোনো কথা দিলে তা রক্ষা করব। আর এসকল কাজের মাধ্যমেই উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া যায়।
ক. বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :
সঠিক. উত্তরের পাশে টিক. () চিহ্ন দাও।
১. সুন্দর স্বভাব ও ভালো চরিত্রকে আরবিতে কী বলে?
ক. মুনাজাত
খ. আখলাক
গ. ইবাদত
ঘ. সালাত
২. সচ্চরিত্র কোনটি?
ক. পরনিন্দা করা
খ. লোভ করা
গ. মিথ্যা বলা
ঘ. সত্য কথা বলা
৩. সত্যিকার মুমিনের চরিত্র কেমন?
ক. সুন্দর
খ. অসুন্দর
গ. মিথ্যুক.
ঘ. অসৎ
৪. বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আমরা কী করব?
ক. শরীর ভালো রাখব
খ. ভালো জামাকাপড় পরব
গ. আব্বা-আম্মাকে সালাম দেব
ঘ. চিন্তা করব
৫. অসৎ চরিত্র কোনটি?
ক. রোগীর সেবা করা
খ. শিক্ষককে সম্মান না করা
গ. ইবাদত করা
ঘ. শিক্ষককে সম্মান করা
৬. শিক্ষক. আমাদের কোন পথে চলতে নিষেধ করেন?
ক. ন্যায় পথে
খ. সৎ পথে
গ. আল্লাহর পথে
ঘ. অসৎ পথে
৭. আমরা বড়দের কী করব?
ক. সম্মান
খ. আদর
গ. স্নেহ
ঘ. উপকার
৮. মহানবি (স.) সকলের সাথে কেমন ব্যবহার করতেন?
ক. মন্দ ব্যবহার
খ. খারাপ ব্যবহার
গ. ভালো ব্যবহার
ঘ. অসৎ ব্যবহার
৯. আমাদের আশপাশে যারা বসবাস করে তারা আমাদের কে?
ক. আত্মীয়
খ. প্রতিবেশী
গ. সহপাঠী
ঘ. বন্ধুবান্ধব
১০. প্রতিবেশী অসুস্থ হলে আমরা কী করব?
ক. খাদ্য দেব
খ. সাহায্য করব
গ. কথা বলব
ঘ. সেবা করব
১১. ফুয়াদ তার আম্মার চিকিৎসার জন্য কাকে ডেকে আনল?
ক. ডাক্তারকে
খ. নানা ভাইকে
গ. শিক্ষককে
ঘ. নানুকে
১২. যে সত্য কথা বলে তাকে কী বলা হয়?
ক. সততা
খ. সৎ
গ. সত্যবাদী
ঘ. সত্যবাদিত
১৩. মিথ্যা মানুষকে কী করে?
ক. উপকার করে
খ. ধ্বংস করে
গ. খাবার দেয়
ঘ. সাহায্য করে
১৪. যে ওয়াদা পালন করে, সকলে তাকে কী করে?
ক. অসম্মান করে
খ. ঘৃণা করে
গ. অবিশ্বাস করে
ঘ. বিশ্বাস করে
১৫. “যত পায় আরও চায়”- এর নাম কী?
ক. লোভ
খ. অপচয়
গ. শান্তি
ঘ. ভালোবাসা
১৬. পরনিন্দা করা অর্থ কী?
ক. পরোপকার
খ. সাহায্য করা
গ. পরচর্চা করা
ঘ. সহযোগিতা করা
খ. শূন্যস্থান পূরণ কর :
১. মন্দ স্বভাব ও খারাপ চরিত্রকে ——– চরিত্র বলা বলা হয়।
২. মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের ——–।
৩. যারা বয়সে ——– আমরা তাদের সালাম দেব।
৪. লোভ আমাদের অনেক. ——– করে।
৫. আমরা কোনো কিছু ——– করব না।
উত্তর : ১. অসৎ ২. জান্নাত ৩. বড় ৪. ক্ষতি ৫. অপচয়।
গ. বাম পাশের কথাগুলোর সাথে ডান পাশের কথাগুলো মিল কর :
ক. চরিত্র ভালো হলে——- চলতে শেখান
খ. আব্বা-আম্মার সাথে সুন্দর ——-ফেলব না
গ. শিক্ষক. সৎ ও ন্যায়ের পথে ——-জীবন সুন্দর হয়
ঘ. যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ——-তার ধর্ম নেই
ঙ. যে ওয়াদা পালন করে না ——-ব্যবহার কর
উত্তর :
ক. চরিত্র ভালো হলে জীবন সুন্দর হয়।
খ. আব্বা-আম্মার সাথে সুন্দর ব্যবহার কর।
গ. শিক্ষক. সৎ ও ন্যায়ের পথে চলতে শেখান।
ঘ. যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলব না।
ঙ. যে ওয়াদা পালন করে না তার ধর্ম নেই।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর :
১. আমাদের মহানবি (স.)-এর চরিত্র কেমন ছিল?
উত্তর : আমাদের মহানবি (স.) ছিলেন উত্তম চরিত্রের অধিকারী। মহান আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহ রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।”
২. আব্বা-আম্মার সাথে কিরূপ ব্যবহার করব?
উত্তর : আব্বা-আম্মার সাথে আমরা ভালো ব্যবহার করব। আমরা তাঁদের সম্মান করব। তাঁদের সাথে রাগারাগি করব না। কর্কশ ভাষায় কথা বলব না। তাঁদের মনে কষ্ট দেব না। সব সময় হাসিমুখে কথা বলব।
৩. শিক্ষকের সাথে দেখা হলে কী করব?
উত্তর : শিক্ষকের সাথে দেখা হলে প্রথমে তাঁকে সালাম দেব এবং তাঁর কুশল জিজ্ঞাসা করব।
৪. দাদা-দাদি, নানা-নানি আমাদের কী করেন?
উত্তর : দাদা-দাদি ও নানা-নানি আমাদের অনেক. আদর-যতœ করেন। খোঁজ-খবর নেন। আমাদেরকে গল্প শোনান। আমাদের জন্য দোয়া করেন।
৫. মহানবি (স.) বড়দের সাথে কেমন ব্যবহার করতেন?
উত্তর : মহানবি (স.) বড়দের সম্মান করতেন। তাঁদের সাথে ভালো ব্যবহার করতেন। তাঁদের কথা শুনতেন ও মানতেন।
৬. মহানবি (স.) ছোটদের কী করতেন?
উত্তর : মহানবি (স.) ছোটদের স্নেহ করতেন। কাছে ডাকতেন, আদর করতেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেন। হাসিমুখে কথা বলতেন।
৭. আমরা কাজের লোকদের সাথে কেমন ব্যবহার করব?
উত্তর : আমরা কাজের লোকদের সাথে ভালো ব্যবহার করব। তাদের কাজে সহযোগিতা করব। তাদেরকে কষ্ট দিয়ে কোনো কথা বলব না। তাদের সাথে কখনো খারাপ আচরণ করব না।
৮. প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত হলে আমরা কী করব?
উত্তর : প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত হলে তাকে খাবার দেব। মহানবি (স.) বলেছেন, “যে নিজে পেট ভরে খায় অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে সে মুমিন নয়।”
৯. আমরা রোগীর কী করব?
উত্তর : আমরা রোগীর সেবা করব। চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। মহান আল্লাহর কাছে তাঁর রোগের সুস্থতার জন্য দোয়া করব। মহানবি (স.) বলেন, “তোমরা রোগীর সেবা কর।”
১০. সত্যবাদী কাকে বলে?
উত্তর : যে সত্য কথা বলে তাকে সত্যবাদী বলে।
১১. সব পাপের মূল কোনটি?
উত্তর : মিথ্যা সকল পাপের মূল।
১২. ওয়াদা পালন করার অর্থ কী?
উত্তর : ওয়াদা পালন করা অর্থ কথা দিয়ে কথা রাখা। কথামতো কাজ করা। চুক্তিরক্ষা করা। কারো সাথে কোনো কথা দিলে তা রক্ষা করার নাম ওয়াদা পালন করা।
১৩. যে লোভ করে তাকে কী বলে?
উত্তর : যে লোভ করে তাকে লোভী বলে।
১৪. অপচয় অর্থ কী?
উত্তর : অপচয় অর্থ ক্ষতি, অপব্যয়, নষ্ট। বিনা প্রয়োজনে কোনো কিছু নষ্ট করাকে অপচয় বলে।
১৫. কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষের কথা বলার নাম কী?
উত্তর : কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষের কথা বলার নাম গিবত বা পরনিন্দা।
বর্ণনামূলক. প্রশ্নের উত্তর :
১. সচ্চরিত্র কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর : সুন্দর ও ভালো চরিত্রই হলো সচ্চরিত্র। সত্য কথা বলা, রোগীর সেবা করা, আব্বা-আম্মাকে সম্মান করা, প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করা ইত্যাদি সচ্চরিত্র মানুষের গুণ। একজন সচ্চরিত্রবান ব্যক্তি সবার সাথে ভালো ব্যবহার করে, বড়দের সম্মান করে, পিতামাতার সাথে ভালো ব্যবহার করে, শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করে, ছোটদের স্নেহ করে, সালাত আদায় করে। গিবত, লোভ ও অপচয় করে না।
২. আব্বা-আম্মার সাথে ভালো ব্যবহারের তালিকা তৈরি কর।
উত্তর : আব্বা-আম্মা হলেন এ পৃথিবীতে আমাদের সবচেয়ে আপনজন। নিচে আব্বা-আম্মার সাথে ভালো ব্যবহারের তালিকা দেওয়া হলোÑ
১) আব্বা-আম্মাকে আমরা সম্মান, শ্রদ্ধা করব।
২) সব সময় হাসিমুখে কথা বলব।
৩) তাঁদের সালাম দেব।
৪) তাঁদের সাথে সুন্দর সুন্দর কথা বলব।
৫) তাঁরা যখন বৃদ্ধ হয়ে যাবেন তখন তাঁদের সাথে খুব ভালো ব্যবহার করব।
৬) তাদের কাজে ও চলাফেরায় সাহায্য করব।
৭) রাগারাগি ও ঝগড়া-বিবাদ করব না।
৮) কর্কশ ভাষায় কথা বলব না।
৯) তাঁদের মনে কষ্ট দেব না।
৩. আব্বা-আম্মার জন্য কুরআন মজিদে বর্ণিত দোয়াটি আরবিতে লেখ।
উত্তর : আব্বা-আম্মার জন্য কুরআনে বর্ণিত দোয়াটি হচ্ছে
উচ্চারণ : রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী সাগীরা।
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক, আমার আব্বা-আম্মা আমাকে ছোটবেলায় যেমনি সেবাযতেœ লালন-পালন করেছেন, আপনি তাঁদের প্রতি তেমনি দয়া করুন।
৪. বড়দের সাথে আমাদের কেমন ব্যবহার করা উচিত?
উত্তর : বড়দের সাথে উত্তম ব্যবহার করা উচিত। আব্বা-আম্মা, দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা-চাচি সবাই আমাদের বয়সে বড়। আমরা তাঁদেরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করব। যেসব ছেলেমেয়ে আমাদের ওপরের শ্রেণিতে পড়ে আমরা তাঁদের সালাম দেব ও সম্মান করব।
আমাদের বাড়ির যেসব কাজের লোক. বয়সে বড় আমরা তাঁদের শ্রদ্ধা করব। যারা বয়সে বড় তাঁদের সাথে দেখা হলে সালাম দেব। আদবের সাথে কথা বলব। তাঁদের আদেশ-উপদেশ মেনে চলব।
৫. শিক্ষক. আমাদের কী কী শেখান?
উত্তর : শিক্ষক. আমাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। তিনি আমাদের কুরআন, সালাত ও আদব-কায়দা শিখান। তিনি সৎ ও ন্যায়ের পথে চলতে শেখান। তিনি আমাদেরকে অন্যায় ও অসৎ পথে চলতে নিষেধ করেন। কীভাবে পড়তে ও লিখতে হয় তা শিক্ষক. আমাদের শেখান। জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা বিষয় আমরা শিক্ষকের কাছে শিখি। কুরআনপাক. ও হাদিসের বাণী শিখি। তিনি আমাদের দেশ-বিদেশের কথা শেখান।
৬. প্রতিবেশী কারা? আমরা প্রতিবেশীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করব?
উত্তর : আমাদের আশপাশে যারা বসবাস করে তারা আমাদের প্রতিবেশী। বাস, ট্রেন, লঞ্চ, স্টিমারের সহযাত্রীরা আমাদের প্রতিবেশী। বিভিন্ন ছাত্রাবাসে অবস্থানকারী ছাত্রছাত্রীরা একে অপরের প্রতিবেশীর মতো।
আমরা প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক. বজায় রাখব। তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করব। কুশল বিনিময় করব। কেউ ক্ষুধার্ত হলে তাকে খাদ্য দেব। এ প্রসঙ্গে মহানবি (স.) বলেছেন, “যে নিজে পেট ভরে খায় অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে সে মুমিন নয়।” প্রতিবেশীরা অসুস্থ হলে তাঁদের সেবা করব।
বিপদ-আপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব। কখনো ঝগড়া-বিবাদ করব না। হিংসা-বিদ্বেষ করব না। সুখে-দুঃখে তাঁদের পাশে দাঁড়াব। এমন কোনো কাজ করব না যাতে তাঁদের অসুবিধা বা কষ্ট হয়।
৭. ফুয়াদের আম্মার জ্বর হলে ফুয়াদ কী করেছিল?
উত্তর : ফুয়াদ খুব ভালো ছেলে। একবার তার আম্মার ভীষণ জ্বর হলো। বাসায় আর কেউ নেই। সে তার আম্মার চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ডেকে নিয়ে এলো।
ডাক্তার সাহেব ফুয়াদের আম্মাকে পরীক্ষা করে তাঁর মাথায় পানি দিতে এবং সময়মতো ওষুধ খাওয়াতে বলল। ফুয়াদ সময়মতো তার আম্মাকে ওষুধ খাওয়াল। মাথায় পানি দিল। আল্লাহর কাছে আম্মার আরোগ্য লাভের দোয়া করল। আল্লাহর রহমতে তার আম্মা সুস্থ হয়ে উঠল। ফুয়াদ আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করল।
৮. সত্যবাদীর প্রতি মানুষের ধারণা কেমন?
উত্তর : সত্যবাদীর প্রতি মানুষ সব সময় ভালো ধারণা রাখে। সকলে তাকে ভালোবাসে, বিশ্বাস করে। সে সকলের কাছে প্রিয় হয়। পৃথিবীর সব মানুষই সত্যবাদীকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করে। সবাই তার কথাকে মান্য করে। তার বিপদ-আপদে সবাই এগিয়ে আসে ও সাহায্য করে। সত্যবাদীর জন্য সকলেই দোয়া করে। তার দীর্ঘায়ু কামনা করে।
৯. ওয়াদা পালন করার উপকারিতা কী?
উত্তর : ওয়াদা পালন করার অর্থ কথা দিয়ে কথা রাখা। কথামতো কাজ করা। চুক্তি রক্ষা করা। কারো সাথে কোনো কথা দিলে তা রক্ষা করার নাম ওয়াদা পালন করা।
ওয়াদা পালন করার অনেক. উপকারিতা রয়েছে। যেমন :
১) যে ওয়াদা পালন করে তাকে সবাই বিশ্বাস করে।
২) সবাই তাকে ভালোবাসে।
৩) মহান আল্লাহও তার উপর খুশি হন।
৪) সে সকলের কাছে প্রিয় পাত্র হয়।
৫) সকলে তাকে সম্মান করে।
৬) বিপদে পড়লে সাহায্য করে।
৭) আখিরাতে সে সুখ, শান্তি পায়।
৮) পরকালে সে জান্নাত লাভ করবে।
১০. লোভ মানুষের কী কী ক্ষতি করে?
উত্তর : যত পায় আরো চায়। বেশি বেশি চায়। এর নামই লোভ। লোভ করা মহাপাপ কথায় বলে- “লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।” মহানবি (স.) বলেছেন, “তোমরা লোভ থেকে সাবধান থাক। লোভ তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ধ্বংস করে দিয়েছে।” লোভ মানুষের অনেক. ক্ষতি করে। যেমন
১) লোভ অশান্তি সৃষ্টি করে।
২) দুঃখ-কষ্ট বাড়ায়।
৩) নানা অন্যায়ে মানুষ লিপ্ত হয়।
৪) মানুষকে পাপের পথে টেনে নেয়।
৫) লোভী মানুষকে কেউ ভালোবাসে না, লোভীকে সম্মান করে না, ঘৃণা করে।
৬) লোভীর সাথে কেউ বন্ধুত্ব করে না।
৭) তার বিপদে কেউ সাহায্য করে না।
৮) লোভের পাপ মানুষকে ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে যায়।
১১. অপচয় থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা কী করব?
উত্তর : প্রয়োজন ছাড়া কোনো কিছু নষ্ট করার নামই অপচয়। অপচয় করা পাপ অপচয় থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা নিচে উলেখিত কাজগুলো করব।
১) আমরা কোনো জিনিস অযথা নষ্ট করব না।
২) প্রয়োজনের বেশি খাবার নিয়ে অপচয় বা নষ্ট করব না।
৩) স্কুল-কলেজ ও ঘরের বাতি জ্বালিয়ে রাখব না।
৪) অকারণে ফ্যান ছেড়ে রাখব না।
৫) বিড়ি-সিগারেট খাব না, কেননা এতে স্বাস্থ্যের মারাত্মক. ক্ষতি ও টাকা-পয়সা অপচয় হয়।
৬) বিনা কারণে কোনো কিছুতে আগুন দেব না।
৭) পানির কল খুলে রাখব না।
৮) গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখব না।
৯) বাজি ও পটকা ফোটাব না।
অপচয় থেকে বিরত থাকার দ্বারা জাতীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদ রক্ষা হবে। মহান আল্লাহ খুশি হবেন।
১২. আল্লাহ পরনিন্দা না করার জন্য কী বলেছেন?
উত্তর : কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষের ব্যাপারে আলোচনা করাই পরনিন্দা। মহান আল্লাহ পরনিন্দা করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা একে অপরের দোষ খুঁজে বেড়াবে না।” আল্লাহ তায়ালা পরনিন্দা করাকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন। কোনো ভাই তার মৃত ভাইয়ের গোশত কখনো খেতে পারে না। এটা জঘন্যতম অপরাধ, মহাপাপ। যে ব্যক্তি পরনিন্দা বা গিবত করে সে জান্নাতে যেতে পারবে না।
সঠিক. উত্তরের ডান পাশে ‘শু’ এবং ভুল উত্তরের ডান পাশে ‘অ’ লেখ. :
১. সুন্দর স্বভাব ও ভালো চরিত্রকে আরবিতে আখলাক. বলে।
২. শিক্ষক. আমাদেরকে প্রকৃত মানুষরূপে গড়ে তোলেন।
৩. যে ওয়াদা পালন করে না, তার ধর্ম নেই।
৪. সত্যবাদীকে আরবিতে কাযিব বলা হয়।
৫. যে পরনিন্দা করে তাকে পরনিন্দুক. বলে।
উত্তর : ১. ‘শু’ ২. ‘শু’ ৩. ‘শু’ ৪. ‘অ’ ৫. ‘শু’
উপযুক্ত শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ কর :
১. আব্বা-আম্মা আমাদের——–আপনজন।
২. শিক্ষক. আমাদের——–মানুষরূপে গড়ে তোলেন।
৩. সত্যবাদীকে আরবিতে——–বলে।
৪. যে লোভ করে তাকে——–বলে।
৫. বিনা প্রয়োজনে কোনো কিছু নষ্ট করাকে——–বলে।
৬. যে পরনিন্দা করে তাকে——–বলে।
৭. যে——–পালন করে না, তার ধর্ম নেই।
উত্তর : ১. সবচেয়ে ২. প্রকৃত ৩. সাদিক. ৪. লোভী ৫. অপচয় ৬. পরনিন্দুক. ৭. ওয়াদা।
বাম পাশের বাক্যাংশের সাথে ডান পাশের বাক্যাংশ মিলিয়ে পূর্ণবাক্য তৈরি কর :
১. আব্বা-আম্মা আমাদের——–তাকে লোভী বলে।
২. মন্দ স্বভাব ও খারাপ চরিত্রকে—-করাকে অপচয় বলে।
৩. বিনা প্রয়োজনে কোনো কিছু নষ্ট—-দোষের কথা বলার নাম গিবত।
৪. কারো অনুপস্থিতিতে তার———অসৎ চরিত্র বলে।
৫. যে লোভ করে ——–সবচেয়ে আপনজন।
উত্তর :
১. আব্বা-আম্মা আমাদের সবচেয়ে আপনজন।
২. মন্দ স্বভাব ও খারাপ চরিত্রকে অসৎ চরিত্র বলে।
৩. বিনা প্রয়োজনে কোনো কিছু নষ্ট করাকে অপচয় বলে।
৪. কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষের কথা বলার নাম গিবত।
৫. যে লোভ করে তাকে লোভী বলে।
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | পাঠান মুলুকে | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | কাজলা দিদি | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | পাখির জগৎ | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ও উত্তরঃ
১. আখলাক. কাকে বলে?
উত্তর : সুন্দর স্বভাব ও ভালো চরিত্রকে আরবিতে আখলাক. বলে।
২. অসৎ চরিত্র অর্থ কী?
উত্তর : মন্দ স্বভাব ও খারাপ চরিত্রকে অসৎ চরিত্র বলে।
৩. আমাদের সবচেয়ে আপনজন কারা?
উত্তর : আব্বা-আম্মা আমাদের সবচেয়ে আপনজন।
৪. মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে আব্বা-আম্মার সাথে কেমন ব্যবহার করার জন্য আদেশ দিয়েছেন?
উত্তর : মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে আব্বা-আম্মার সাথে উত্তম ব্যবহার করার জন্য আদেশ দিয়েছেন।
৫. কে আমাদের প্রকৃত মানুষরূপে গড়ে তোলেন?
উত্তর : শিক্ষক. আমাদের প্রকৃত মানুষরুপে গড়ে তোলেন।
৬. জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা বিষয় আমরা কার কাছে শিখি?
উত্তর : জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা বিষয় আমরা শিক্ষকের কাছ থেকে শিখি।
৭. কার অনুমতি নিয়ে আমরা শ্রেণিকক্ষ থেকে বাইরে যাব?
উত্তর : শ্রেণিকক্ষ থেকে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে আমরা শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে যাব।
৮. বড়দের সাথে দেখা হলে আমরা কী করব?
উত্তর : বড়দের সাথে দেখা হলে আমরা তাঁদের সালাম দেব, আদবের সাথে কথা বলব, ভালো ব্যবহার করব ও তাঁদের আদেশ-উপদেশ মেনে চলব।
৯. আমাদের চেয়ে বয়সে ছোট যারা তাদের সাথে আমরা কেমন আচরণ করব?
উত্তর : আমাদের চেয়ে বয়সে ছোট যারা তাদেরকে আমরা আদর করব, স্নেহ করব, কাঁদলে মাথায় হাত বুলিয়ে দেব, কোলে নেব, ভালো কথা শোনাব। তাদেরকে কষ্ট দেব না।
১০. আমাদের প্রতিবেশী কারা?
উত্তর : আমাদের আশপাশে যারা বসবাস করে তারা আমাদের প্রতিবেশী।
১১. অসুখ-বিসুখ. ও রোগ-শোক. আল্লাহর পক্ষ থেকে কার জন্য পরীক্ষা?
উত্তর : অসুখ-বিসুখ. ও রোগ. শোক. আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনের জন্য একটি পরীক্ষা।
১২. সত্যবাদীকে আরবিতে কী বলা হয়?
উত্তর : সত্যবাদীকে আরবিতে সাদিক. বলা হয়।
১৩. “সত্য মানুষকে মুক্তি দেয়, আর মিথ্যা ধ্বংস করে”- এ বাণীটি কার?
উত্তর : “সত্য মানুষকে মুক্তি দেয়, আর মিথ্যা ধ্বংস করে।”Ñএ বাক্যটি মহানবি (স.) এর।
১৪. যে ওয়াদা পালন করে সে সকলের কাছে কেমন হয়?
উত্তর : যে ওয়াদা পালন করে সে সকলের কাছে প্রিয় হয়, সম্মানিত হয়।
১৫. যত পায় আরও চায়, বেশি বেশি চায়- এর নাম কী?
উত্তর : যত পায় আরও চায়, বেশি বেশি চায়- এর নামই লোভ।
১৬. অপচয়কারীরা কার ভাই?
উত্তর : অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই।
১৭. পরনিন্দা করা অর্থ কী?
উত্তর : পরনিন্দা করা অর্থ হচ্ছে গিবত করা, পরচর্চা করা, দুর্নাম রটানো।
১৮. মহানবি (স.) পরনিন্দাকারী সম্পর্কে কী বলেছেন?
উত্তর : মহানবি (স.) পরনিন্দাকারী সম্পর্কে বলেছেন, “পরনিন্দাকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
সাধারণ
১. আমাদের সবচেয়ে আপনজন কারা? তাঁরা আমাদের প্রতি কী কী দায়িত্ব পালন করেন?
উত্তর : এই পৃথিবীতে আব্বা-আম্মা আমাদের সবচেয়ে আপনজন। তাঁরা আমাদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১) স্নেহ, মমতা, দরদ দিয়ে তাঁরা আমাদের লালন- পালন করেন।
২) নিজেরা না খেয়ে আমাদের খাওয়ান।
৩) আমাদের সুখের জন্য তাঁরা অনেক. কষ্ট ও ত্যাগ. স্বীকার করেন।
৪) অসুখ-বিসুখ. হলে সেবা যতœ করেন।
৫) আমাদের কষ্টে তারা কষ্ট পান, আমাদের সুখে সুখী হন।
৬) আমরা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আমাদের জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
৭) তাঁরা সব সময় আমাদের কল্যাণ কামনা করেন।
২. প্রতিবেশীর সাথে খারাপ ব্যবহার করলে কী হবে? এ সম্পর্কে মহানবি (স.) কী বলেছেন?
উত্তর : প্রতিবেশীর সাথে খারাপ ব্যবহার করলে মহান আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন। পরিবেশ নষ্ট হবে। সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হবে। সুখ-শান্তি বিনষ্ট হবে। পরকালে সে জান্নাত পাবে না। এ প্রসঙ্গে মহানবি (স.) বলেছেন, “যার অত্যাচার ও অন্যায় আচরণ থেকে তার প্রতিবেশী রক্ষা পায় না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
৩. সত্য পুণ্যের পথে পরিচালিত করে-এ উক্তির আলোকে একটি কাহিনী বর্ণনা কর।
উত্তর : একদিন মহানবি (স.)-এর কাছে একজন লোক. এসে বলল, ‘হে আল্লাহর নবি (স.), আমি চুরি করি। মিথ্যা কথা বলি। আরও অনেক. অন্যায় করি। এখন আমি এগুলো ছেড়ে দিতে চাই। বলুন, আমি প্রথমে কোনটি ছেড়ে দেব।’
মহানবি (স.) বললেন, “তুমি মিথ্যা কথা বলা ছেড়ে দাও।” লোকটি মিথ্যা কথা বলা ছেড়ে দিল। আর এই মিথ্যা বলা ছেড়ে দেওয়ার কারণে সে অন্যান্য খারাপ কাজ থেকে বেঁচে গেল। সত্য বলা তাকে আরো অন্যান্য অনেক. ভালো কাজের দিকে ধাবিত করল। মহানবি (স.) বলেন “তোমরা সব সময় সত্য বলবে। কেননা সত্য পুণ্যের পথে নিয়ে যায়। আর পুণ্য জান্নাতে নিয়ে যায়।”
৪. শিক্ষকের সাথে কেমন ব্যবহার করবে?
উত্তর : শিক্ষকের সাথে যে রকম ব্যবহার করব তা নিচে তুলে ধরা হলোÑ
১) শিক্ষকের সাথে সব সময় ভালো ব্যবহার করব।
২) তাঁর সাথে দেখা হলে তাঁকে সালাম দেব।
৩) তাঁকে ভালো-মন্দ জিজ্ঞাসা করব।
৪) তিনি যা পড়াবেন মনোযোগ. দিয়ে শুনব।
৫) তাঁর সাথে সব সময় নম্রভাবে কথা বলব।
৬) তিনি শ্রেণিকক্ষে থাকা অবস্থায় যদি বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে তাঁর অনুমতি নিয়ে যাব।
৭) তিনি অসুস্থ হলে তাঁকে দেখতে যাব, তাঁর সেবা- যতœ করব।
৮) তাঁর আদেশ-উপদেশ মেনে চলব।
৯) তাঁর সাথে বেয়াদবি করব না, তাঁর কথা শুনব।
১০) তাঁর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করব।
যোগ্যতাভিত্তিক
৫. সকলের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পাওয়ার জন্যে তুমি কী করবে পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : সকলের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পাওয়ার জন্যে আমি যা করব তা নিচে পাঁচটি বাক্যে লেখা হলো :
১) মা-বাবার নির্দেশ মেনে চলব।
২) মা-বাবাকে ভক্তি ও শ্রদ্ধা করব।
৩) ইসলামে নিষিদ্ধ এমন কোনো কাজ করব না।
৪) বড়দের শ্রদ্ধা ও ছোটদের স্নেহ করব।
৫) সবসময় সত্য কথা বলব।
৬. তোমার কোনো প্রতিবেশীর মৃত্যু হলে কী করবে তা পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : আমার কোনো প্রতিবেশীর মৃত্যু হলে আমি যা করব তা নিচে পাঁচটি বাক্যে লেখা হলো :
১) প্রতিবেশীর মৃত্যু হলে তার বাসায় গিয়ে সবাইকে সান্ত¡না দেব।
২) মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহানুভ‚তি জানাব।
৩) মৃত ব্যক্তির জানাজায় শরিক. হব।
৪) মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করব।
৫) প্রতিবেশী অন্য ধর্মের লোকজন হলে, তাদের সাথেও সুন্দর ব্যবহার করব।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।