HSC | সাম্যবাদী | Sammobadi | জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর | PDF: বাংলা ১ম পত্রের সাম্যবাদী কবিতাটি হতে যেকোনো ধরনের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের সাম্যবাদী কবিতাটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
রিভিশন অংশ
আলোচ্য অংশে জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করার জন্য বাড়ির কাজ, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা, জ্ঞানমূলক এবং অনুধাবনমূলক আরও কিছু প্রশ্নোত্তর উলেখ করা হয়েছে। এ অংশটি অনুশীলনের মাধ্যমে পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রস্তুতি ও জবারংরড়হ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
বাড়ির কাজ
‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবিমন সাম্যের যে গান গেয়েছেন তার স্বরূপ ব্যাখ্যা কর।
‘সাম্যবাদী’ কবিতায় পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি কবির সমদর্শন আলোচনা কর।
‘সাম্যবাদী’ কবিতায় পৃথিবীর সকল মানুষকে সমান বলার কারণ ব্যাখ্যা কর।
‘সাম্যবাদী’ কবিতায় “সকল জ্ঞান মানুষের হৃদয় থেকে উৎসারিত”: বলা হয়েছে। এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
‘মানবহৃদয়ই সকল ঐশ্বর্যের আধার’: সাম্যবাদী কবিতায় কবির এ মতবাদের যৌক্তিকতা আলোচনা কর।
‘সাম্যবাদী’ কবিতায় বলা হয়েছে “সকল ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থের মূলকথা এক ও অভিন্ন”: এ বিষয়ে তোমার মতামত ব্যক্ত কর।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা
সাম্যের গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মানুষের যত বৈষম্য বিদ্যমান সব বিলীন হয়ে যায়।
মানুষের মাঝেই সমস্ত জ্ঞান নিহিত রয়েছে। এ জ্ঞানের অন্বেষণ করলে অন্য কোনো মত ও পথের অনুসরণ করা প্রয়োজন হয় না।
হৃদয়ের অন্বেষণ করেই পৃথিবীর বড় বড় মানুষেরা সত্যের সন্ধান লাভ করেছে। পৃথিবীতে সত্যের প্রচার ও প্রসার ঘটিয়েছেন।
মহাপুরুষেরা হৃদয়ের সত্য অনুধাবন করতে পেরেছেন। হৃদয়ের চেয়ে বড় মন্দির, কাবা বা পবিত্র স্থান কোথাও নেই।
ইরান বা পারস্যের নাগরিককে পার্সি বলা হয়। মহাবীর প্রতিষ্ঠিত ধর্মাবলম্বীদেরকে জৈন বলা হয়। হিব্র“ জাতি ও ধর্ম স¤প্রদায়ের মানুষকে বলা হয় ইহুদি। সাঁওতাল, ভীল, গারো-এরা হলো প্রাচীন ভারতীয় নৃতাত্তি¡ক গোষ্ঠী।
কনফুসিয়াসকে বলা হয় মহান শিক্ষক, তিনি একজন চীনা দার্শনিক, চার্বক হলো বস্তুবাদী দার্শনিক।
টেক্সট বুক অ্যানালাইসিস
ক জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর
১. ‘সাম্যবাদী’ কবিতাটির রচয়িতা কে?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলাম।
২. কাজী নজরুল ইসলাম কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : ১৮৯৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
৩. কাজী নজরুল ইসলাম পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
৪. কাজী নজরুল ইসলাম কোন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলাম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
৫. চুরুলিয়া কোন মহকুমার অন্তর্গত?
উত্তর : চুরুলিয়া আসানসোল মহকুমার অন্তর্গত।
৬. কাজী নজরুল ইসলামের পিতার নাম কী?
উত্তর : কাজী ফকির আহমদ।
৭. কাজী নজরুল ইসলাম কত বছর বয়সে পিতাকে হারান?
উত্তর : আট বছর বয়সে পিতাকে হারান।
৮. কাজী নজরুল ইসলাম কত বঙ্গাব্দে নিম্ন প্রাইমারি পাস করেন।
উত্তর : ১৩১৬ বঙ্গাব্দে নিম্ন প্রাইমারি পাস করেন।
৯. কত বছর বয়সে লেটো গানের দলে যোগ দেন?
উত্তর : বারো বছর বয়সে লেটো গানের দলে যোগ দেন।
১০. কাজী নজরুল ইসলাম কত খ্রিস্টাব্দে বাঙালি পল্টনে যোগদান করেন?
উত্তর : ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে বাঙালি পল্টনে যোগদান করেন।
১১. কাজী নজরুল ইসলাম কী হিসেবে বাঙালি পল্টনে যোগদান করেন?
উত্তর : একজন সৈনিক হিসেবে বাঙালি পল্টনে যোগদান করেন।
১২. কাজী নজরুল ইসলাম কত খ্রিস্টাব্দে মস্তিষ্কের ব্যাধিতে আক্রান্ত হন?
উত্তর : ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে মস্তিষ্কের ব্যাধিতে আক্রান্ত হন।
১৩. কাজী নজরুল ইসলামকে কখন ঢাকায় আনা হয়?
উত্তর : বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর কাজী নজরুল ইসলামকে ঢাকায় আনা হয়।
১৪. কোন কবিকে বাংলাদেশের ‘জাতীয় কবির’ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলামকে।
১৫. ‘বাউণ্ডেলের আত্মকথা’ গল্পটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তর : ‘সওগাত’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
১৬. কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কবিতার নাম কী?
উত্তর : প্রথম কবিতার নাম ‘মুক্তি’।
১৭. ‘মুক্তি’ কবিতাটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তর : ‘বঙ্গীয় মুসলমান পত্রিকায়’ প্রকাশিত হয়।
১৮. ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কত বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়?
উত্তর : ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি ১৩২৮ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়।
১৯. ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
উত্তর : ‘বিজলী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
২০. ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থটি কার রচিত?
উত্তর : ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থটি কাজী নজরুল ইসলামের রচিত।
২১. ‘বাঁধনহারা’ উপন্যাসটি কার রচিত?
উত্তর : ‘বাঁধনহারা’ উপন্যাসটি কাজী নজরুল ইসলামের রচিত।
২২. কাজী নজরুল ইসলাম কত সালে ‘পদ্মভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত হন?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৬০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ উপাধিতে ভূষিত হন।
২৩. কাজী নজরুল ইসলাম কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর : ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
২৪. কাজী নজরুল ইসলাম কত খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর : ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
২৫. ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবি কীসের গান গেয়েছেন?
উত্তর : ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবি সাম্যের গান গেয়েছেন।
২৬. সকল কেতাব ও কালের জ্ঞান কোথায় রয়েছে?
উত্তর : সকল কেতাব ও কালের জ্ঞান মানুষের মধ্যে রয়েছে।
২৭. কবির মতে, এ হৃদয়ের চেয়ে বড় কী নেই?
উত্তর : কবির মতে, এ হৃদয়ের চেয়ে বড় মন্দির-কাবা নেই।
২৮. কোরানের সাম-গান কে গেয়েছেন?
উত্তর : কোরানের সাম-গান হযরত মুহাম্মদ (স.) গেয়েছেন।
২৯. আরব-দুলাল কোথায় বসে আহŸান শুনতেন?
উত্তর : আরব-দুলাল কন্দরে বসে আহŸান শুনতেন।
৩০. কে মহা-বেদনার ডাক শুনতেন?
উত্তর : শাক্যমুনি মহা-বেদনার ডাক শুনতেন।
৩১. ‘পণ্ডশ্রম’ অর্থ কী?
উত্তর : ‘পণ্ডশ্রম’ অর্থ বিফল পরিশ্রম।
৩২. বিভিন্ন যুগে অবতীর্ণ মহাপুরুষদের কী বলা হয়?
উত্তর : বিভিন্ন যুগে অবতীর্ণ মহাপুরুষদের যুগাবতার বলা হয়।
৩৩. বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক ও প্রচারক কে?
উত্তর : বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক ও প্রচারক গৌতম বুদ্ধ।
৩৪. মুসলমান, খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের কাছে সমভাবে সম্মানিত পুণ্যস্থান কোনটি?
উত্তর : সমভাবে সম্মানিত পুণ্যস্থান জেরুজালেম।
৩৫. ‘সাম্যবাদী’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের নাম কবিতা?
উত্তর : ‘সাম্যবাদী’ কবিতাটি ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্থের নাম কবিতা।
৩৬. শ্রীকৃষ্ণ কোন ধর্মের অনুসারীদের অবতার পুরুষ?
উত্তর : শ্রীকৃষ্ণ সনাতন ধর্মের অনুসারীদের অবতার পুরুষ।
৩৭. শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা কার মুখনিঃসৃত বাণী?
উত্তর : শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণী।
খ অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর
১. কবি ‘সাম্যের গান’ গেয়েছেন কেন?
উত্তর : কবি মানুষকে মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে ‘সাম্যের গান’ গেয়েছেন।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। তাদের মাঝে কোনো হিংসা-ভেদাভেদ-ঝগড়া-মারামারি থাকা উচিত নয়। মানুষকে মানুষ হিসেবে পরিচয় দিতে কবি অসা¤প্রদায়িকতাকে সমর্থন করেছেন। মানুষের বড় পরিচয় সে মানুষ। এ বিষয়টিকে উপলব্ধি করে একটি হিংসা-বিদ্বেষহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য কবি ‘সাম্যের গান’ গেয়েছেন।
২. “যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রীশ্চান।”-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম ও খ্রিস্টানকে মানুষ হিসেবে সমান বিবেচনা করতে গিয়ে কবি কথাটি বলেছেন।
জাতের ওপর কোনো মানুষের হাত থাকতে পারে না। তাই একজন মানুষ হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ কিংবা মুসলিম স¤প্রদায়ে জন্মগ্রহণ করতেই পারে। তাই বলে মানুষের মাঝে পার্থক্য থাকাটা শোভনীয় নয়। কারণ, মানুষের বড় পরিচয় সে মানুষ। এ বিষয়টি উপলব্ধি করাতেই কবি চরণটি ব্যবহার করেছেন।
৩. “কে তুমি?-পার্সী? জৈন? ইহুদী?” -কবি এগুলো বলেছেন কেন?
উত্তর : কবি মনে করেন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবকিছু ভুলে মানুষের উচিত হবে মানুষকে মানুষ মনে করা।
পৃথিবীতে বিভিন্ন জাতের স¤প্রদায় রয়েছে, ধর্ম রয়েছে এবং থাকবে-এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে গোষ্ঠীবদ্ধ জীবনচেতনাকে ধারণ করে মন্দিরতুল্য সত্য ‘মানুষের পরিচয়’ ভুলে যাওয়া আদৌ উচিত হতে পারে না। তাই কবি মানুষের চেতনায় সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের পরিচয় তুলে ধরতে জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র ভুলে যেতে বলেছেন।
৪. কনফুসিয়াস কেন বিখ্যাত?
উত্তর : কনফুসিয়াস চীনা মানুষের জীবন সংস্কারে অদ্বিতীয় ভূমিকা পালন করার জন্য বিখ্যাত।
কনফুসিয়াস একজন চীনা দার্শনিক ছিলেন। তিনি সব মানুষের মাঝে একতাবদ্ধ হওয়ার বাণী প্রচার করতেন এবং তাদের সচেতন করার উদ্দেশ্যে নানা উপদেশ দিতেন। তাঁর আদর্শে, চেতনায়, নিষ্ঠায় নির্দেশনায় চীন হয়ে ওঠে এক আদর্শ রাষ্ট্রে। তাই বলা যায়, তিনি চীনাদের মাঝে একতাবদ্ধ জীবন তৈরির জন্য বিখ্যাত ছিলেন।
৫. “পেটে-পিটে, কাঁধে-মগজে যা-খুশি পুঁথি ও কেতাব বও” চরণটিতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : কবি মানুষের হৃদয়কে বড় শিক্ষালয় হিসেবে বিবেচনা করেছেন বলে চরণটি ব্যবহার করেছেন। সব ধর্মের বড় বিষয় হলো কল্যাণ করা, উত্তম আচরণ করা, মিথ্যা না বলা ইত্যাদি। এ বিষয়গুলো সৃষ্টি হয় প্রত্যেকটি মানুষের হৃদয়বৃত্তকে ধারণ করে। শুধু বই-পুঁথি কাঁধে নিলে বা মগজে জ্ঞানকে ঢেলে মানুষ্যত্বের প্রকৃত বিষয়টি ফুটে ওঠে না। মানুষের জীবনাচরণের প্রকৃত শিক্ষালয় হলো তার হৃদয়। এ বিষয়টিকে বোঝাতেই কবি প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
৬. ‘কোরান-পুরান-বেদ-বেদান্ত’ চর্চাকে কবি কী হিসেবে দেখেছেন?
উত্তর : কোরান-পুরান-বেদ-বেদান্ত-এ বিষয়গুলো দ্বারা কবি অপ্রয়োজনীয় চর্চাকে বুঝিয়েছেন।
প্রত্যেকটি ধর্মগ্রন্থের মূল কথাই হলো পরোক্ষভাবে সত্য কথা বলা, সৎচিন্তা করা ইত্যাদি। আর এসব বিষয়ের সূচনাস্থান মনুষ্যহৃদয়। কবি বলেছেন এসব গ্রন্থ পড়ে সময় নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। কারণ মানুষের মনই সকল কল্যাণের মহৎকর্মের, সুখী জীবনের চিরন্তন উৎস। তাই কবি উলিখিত ধর্ম-গ্রন্থ পড়াকে অপ্রয়োজনীয় চর্চা বলেছেন।
৭. ‘পণ্ডশ্রম’ কথাটি কবি কেন ব্যবহার করেছেন?
উত্তর : ‘পণ্ডশ্রম’ শব্দটিকে কবি এজন্য ব্যবহার করেছেন যে, এটি এমন শ্রমকে বোঝায় যা কোনো উপকারে আসে না।
অনেক ধর্মগ্রন্থ রয়েছে আমাদের সমাজে। সেগুলো পাঠ করে আমরা অনেক শ্রম দিচ্ছি ও সময় নষ্ট করছি। কবির মতে, এসব শ্রমের কোনো মূল্য নেই। কারণ, তিনি সকল কল্যাণকর ও উত্তম কাজের মূল স্থান হিসেবে হৃদয়কে জানতেন। তাই এসব ধর্মগ্রন্থ পড়া মানেই পণ্ডশ্রম।
৮. মগজে হানিছ শূল-বলতে কী বোঝ?
উত্তর : মানুষের হৃদয় হলো সকল পবিত্র ধর্মগ্রন্থের একমাত্র উৎসস্থান। এটিকে বোঝাতেই কবি চরণটি ব্যবহার করেছেন। মানুষ যেভাবে ধর্মগ্রন্থ পড়ছে, যেভাবে মগজে তাকে স্থান দেয়ার নানা চেষ্টা চালাচ্ছে তা আদৌ কল্যাণকর নয়। চাপ প্রয়োগ ও অনেক ধৈর্যে এগুলো পড়া মানেই মগজকে আঘাত করা। মানুষের হৃদয়ই বড় পবিত্র স্থান ও ধর্মের আধার। এ বিষয়টিকে বোঝাতেই কবি প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
৯. “তোমাতে রয়েছে সকল কেতাব সকল কালের জ্ঞান”-বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : কবি সকল কালের ও সকল কিতাবের জ্ঞান হিসেবে মানুষের চিত্তকে উলেখ করেছেন। পৃথিবীতে অসংখ্য ধর্মগ্রন্থ ও ধর্মের স্থান রয়েছে। সেগুলোতে নিত্যই আমরা যাই ও জ্ঞানার্জনের চেষ্টা করি। কবি মনে করেন এর কোনো মানে হয় না। কারণ মানুষের হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো ধর্মীয় গ্রন্থ ও জ্ঞানের আধার থাকতে পারে না। এ বিষয়টিকে বর্ণনা করতেই কবি প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
১০. মানুষের মাঝেই সকল ধর্ম কথাটি কেন বলা হয়েছে?
উত্তর : মানুষের বিবেক থাকার দরুনই সকল ধর্ম মানুষের মাঝে কথাটি বলা হয়েছে।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। তার বিবেক থাকার কারণে সে অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা। বিবেক-বুদ্ধির মাধ্যমেই সকল ধর্ম-অধর্মকে অনুধাবন করা যায়। মানুষের হৃদয় ধর্মের আধার। এ কারণেই বলা হয়েছে মানুষের মাঝেই সকল ধর্ম।
১১. “তোমার হৃদয় বিশ্ব-দেউল সকলের দেবতার।” -কেন বলা হয়েছে?
উত্তর : প্রতিটি মানুষের মাঝে দেবতার অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে কবি চরণটি ব্যবহার করেছেন।
মানুষের হৃদয় যেমন মন্দির তেমনি দেবতাদের আশ্রয়স্থল। একজন ইচ্ছা করলেই কল্যাণকর কাজ বা অকল্যাণকর কাজ করতে পারে। এটি তার একান্তই নিজস্ব ব্যাপার। বিবেক-বুদ্ধি দ্বারাই মানুষের ভালো বা মন্দ কাজ সংঘটিত হয়। কবির মতে, বিবেকই হলো মানুষের মাঝে অবস্থানরত দেবতা। প্রশ্নোক্ত চরণটি দ্বারা কবি এ বিষয়টিকেই বুঝিয়েছেন।
১২. “কেন খুঁজে ফের দেবতা-ঠাকুর মৃত-পুঁথি-কঙ্কালে?”-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মানুষের হৃদয়েই যে দেবতাদের আশ্রয়স্থল এ বিষয়টিকে বোঝাতেই কবি চরণটি ব্যবহার করেছেন।
মানুষের বিভিন্ন ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থ রয়েছে। তাঁরা সবসময় নির্জীব মৃত ও কঙ্কালতুল্য ধর্মগ্রন্থের মাঝে দেবতাদের খুুঁজতে থাকেন নিরন্তন। সেখানে যে আদৌ দেবতাদের অস্তিত্ব মাত্রও নেই এ বিষয়টি আদৌ উপলব্ধি করতে জানল না। সেই জড় পুঁথিতে দেবতা থাকেন না; থাকেন মানুষের হৃদয়ে। এ বিষয়টি বোঝাতেই কবি এ কথাটি বলেছেন।
১৩. “এইখানে এসে লুটাইয়া পড়ে সকল রাজমুকুট।” কেন?
উত্তর : কবি মানুষের হৃদয়কে পবিত্রতম স্থান হিসেবে উলেখ করতেই এটি বলেছেন।
পৃথিবীতে অসংখ্য পবিত্র স্থান যেখানে প্রত্যহ আমরা যাচ্ছি নিজেদের আত্মাকে পবিত্র করতে। অথচ আমাদের হৃদয়ই যে পবিত্রতম জায়গা সে সম্পর্কে আমরা অবগত নই। এই হৃদয়ের বিচারই বড় বিচার। হৃদয়ের মর্যাদার তুলনায় রাজমুকুটের মর্যাদা কিছুই না। এ বিষয়টিকে প্রকাশ করতেই কবি উক্তিটি করেছেন।
১৪. “এইখানে বসে ঈসা মুসা পেল সত্যের পরিচয়। কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : হৃদয়ই যে সকল সত্যের আধার এ বিষয়টিকেই কবি চরণটিতে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।
বিবেকবর্জিত মানুষ আদৌ সত্যের দিশারি হতে পারে না, দেখাতে পারে না সুখী-সুন্দর জীবনের উৎস। মুসা ও ঈসা আলাহর নবি ছিলেন। তাঁরা সদা সত্য ও কর্তব্যকে হৃদয়ের আসনে সমাসীন করেই মানুষের মাঝে তুলে ধরলেন সত্যের পরিচয়। তাঁরা মনে করতেন বিধাতার আসনই সত্য, আর সত্যের স্থানই হলো মনুষ্য হৃদয়। সত্য হৃদয়রাজকে উপস্থাপন করতেই কবি মুসা ও ঈসার প্রসঙ্গ এনেছেন।
১৫. “এই মাঠে হল মেষের রাখাল নবীরা খোদার মিতা।”- বলতে কী বুঝ?
উত্তর : সত্য চেতনা, সত্য জীবন ও সত্য হৃদয়কে তুলে ধরতেই কবি চরণটি ব্যবহার করেছেন।
আলাহর নবিরা সত্য পথকে অবলম্বন করতেন। তারা হৃদয় মন্দিরকে পবিত্র রেখেছেন। ফলে আলাহর সাথে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও গড়ে ওঠে। তাদের সত্য হৃদয়ই তাদের জীবনাচরণকে ফুলতুল্য পবিত্র মন্দির করেছে। সততার বিশ্বাসের হৃদয়কে উপস্থাপন করতেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
১৬. শাক্যমুনি সিংহাসন ত্যাগ করলেন কেন?
উত্তর : মানুষের আর্তনাদে হৃদয় কেঁদে ওঠায় তাদের সহযোগিতার নিমিত্তে শাক্যমুনি সিংহাসন ত্যাগ করলেন।
যেকোনো বিবেকবান ব্যক্তি ইচ্ছা করলেই মানুষের দুঃখ-কষ্টে সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারেন। শাক্যমুনি সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি মানুষের দুঃখ ও কষ্ট অনুভব করে সত্যের পথে নেমে এসে দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ান। এটি তার পক্ষে সত্য-সুন্দর সফল হৃদয়ের জন্যই সম্ভব হয়েছিল।
১৭. “এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই।”-কবি এটি কেন বলেছেন?
উত্তর : মানুষের হৃদয়ই সবচেয়ে পবিত্র উপাসনালয়-এ বিষয়টিকে অনুধাবন করাতে কবি চরণটি ব্যবহার করেছেন।
একমাত্র বিবেকী শক্তিই মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীবের মর্যাদায় ভূষিত করেছে। সে চাইলেই কল্যাণকর কাজ করতে পারে, আবার অকল্যাণকর কাজও করতে পারে। মানুষের মন যেহেতু পবিত্রতম উপাসনালয়, সেহেতু দয়ার সমুদ্র তার হৃদয়। সে চাইলেই অন্যদের ক্ষমা ও উপকার করতে পারে। মানুষের মহৎ হৃদয়কে তুলে ধরতে কবি প্রশ্নোক্ত চরণটি ব্যবহার করেছেন।
পরীক্ষা-প্রস্তুতি যাচাই অংশ
সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক
প্রশ্ন:১\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
আমার পক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ তাপ বেদনা অশ্র“বারি
অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।
ক. ‘বাউণ্ডেলের আত্মকথা’ গল্পটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?
খ. ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবি সাম্যের গান গেয়েছেন কেন?
গ. উদ্দীপকটির সাথে সাম্যবাদী কবিতার বৈসাদৃশ্য চিিহ্নত কর।
ঘ. “বিষয় ভিন্ন হলেও উদ্দীপক ও সাম্যবাদী কবিতা একই চেতনার ধারক।”-মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. ‘বাউণ্ডেলের আত্মকথা’ গল্পটি ‘সওগাত’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
খ. কবি পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যে প্রচলিত ভেদাভেদকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য সাম্যের গান গেয়েছেন।
এই পৃথিবীর মানুষ জাতি ধর্ম-বর্ণ প্রভৃতির দোহাই দিয়ে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। এ জন্যই পৃথিবীময় চলছে এত বিশৃঙ্খলা, যুদ্ধবিগ্রহ। কবি চান মানুষ সকল ভেদাভেদ ভুলে শান্তিতে সমতা প্রতিষ্ঠার ভিত্তিতে একই কাতারে বসবাস করুক আর বিশ্বভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক। এজন্যই কবি ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় সাম্যের গান গেয়েছেন।
টিপস
গ. প্রথমে মনোযোগসহকারে উদ্দীপকটি পড়ে কবিতার মূল বিষয়বস্তু বের কর। এরপর কবিতাটি ভালোভাবে পড়ে লক্ষ কর ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় মূলত কবি কোন বিষয়ের সমতার কথা বলেছেন। দেখবে এখানে কিছুটা ভিন্নতা বা বৈসাদৃশ্য রয়েছে। এরপর যুক্তিসহকারে সে বৈসাদৃশ্যগুলো সাজিয়ে লেখ।
ঘ. প্রথমে অত্যন্ত মনোযোগের সাথে পড়ে কবিতার কবির মূল চাওয়া কী তা ধরার চেষ্টা কর। এবার ‘সাম্যবাদী’ কবিতা পড়ে দেখ এখানেও কবি একই বিষয় কামনা করেছেন ভিন্ন বিষয়বস্তু উপস্থাপন করে। এবার মূল্যায়ন অংশে যুক্তি সহকারে তোমার উত্তরের সপক্ষে বিষয়টি তুলে ধরে সরল ভাষায় প্রশ্নের উত্তর সম্পন্ন কর।
প্রশ্ন:২\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আজম সাহেব ধার্মিক ও দানবীর হিসেবে খ্যাত। তার গ্রামেই বাস করে নিম্নশ্রেণির ও দারিদ্র্যপীড়িত হিন্দু স¤প্রদায়ের লোক। রোগ, শোক, ক্ষুধা, দারিদ্র্য তাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু জাত ও ধর্মের অহমিকায় আজম সাহেব তাদেরকে হীনদৃষ্টিতে দেখেন এবং তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলেন। তারা রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও তিনি কখনো তাদের দেখতে যান না বা কোনো অর্থ সাহায্য করেন না।
ক. কনফুসিয়াস কে?
খ. “এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই।”-কবি কেন এ কথা বলেছেন?
গ. উদ্দীপকের আজম সাহেবের সাথে ‘সাম্যবাদী’ কবিতার সাদৃশ্য নির্ণয় কর।
ঘ. “জাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে সত্য-সুন্দর-কল্যাণময় অসা¤প্রদায়িক সমাজের প্রত্যাশাই ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় বর্ণিত হয়েছে।”-মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. কনফুসিয়াস হলেন প্রাচীন একজন দার্শনিক।
খ. সৃষ্টিকর্তার অবস্থিতির কারণে এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই।
জগৎজুড়ে অসংখ্য মন্দির-মসজিদ তৈরি করেছে হিন্দু-মুসলমান ধর্মের মানুষেরা। তাদের বিশ্বাস সৃষ্টিকর্তা সেই মন্দির আর মসজিদে অবস্থান করেন। কিন্তু প্রতিটি ধর্মই সৃষ্টিকর্তা মানুষের হৃদয় বা অন্তরের মধ্যই বিরাজমান। এই বিষয়টি অন্তর দিয়ে উপলব্ধি ও বিশ্বাস করার কারণেই কবি বলেছেন-“এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির, কাবা নাই।”
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | PDF
HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | PDF
টিপস
গ. প্রথমে উদ্দীপকটি ভালোভাবে পড়ে আজম সাহেবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বোঝার চেষ্টা কর। এবার ‘সাম্যবাদী’ কবিতাটি গভীর মনোযোগসহ পড়ে দেখ এখানেই এমন শ্রেণির এক ধরনের মানুষ আছে। এবার আজম সাহেবের চরিত্র বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে উক্ত মানুষগুলোর সাদৃশ্যগুলো দেখিয়ে উত্তর সমাপ্ত কর।
ঘ. উদ্দীপকটি ভালোভাবে পড়ে দেখ, এখানে জাতি-ধর্মের ভেদাভেদের বিষয়টি রয়েছে। এবার ‘সাম্যবাদী’ কবিতাটি পড়ে উচ্চতর জ্ঞান দিয়ে অনুধাবন করে দেখ এ ভেদাভেদ ধ্বংস করার জন্যই কবি এই কবিতাটি লিখেছেন। এবার মূল্যায়ন অংশে কবির মনোভাবের সঙ্গে এই বিষয়টি মিলিয়ে উত্তরের পক্ষে যৌক্তিক অবস্থান তুলে ধর।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।