লোকপ্রশাসন পরিচিতির রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF পর্বঃ ১ প্রশ্নোত্তর ও সাজেশন সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত সকল কিছু জানতে পারবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনার্স ১ম বর্ষের যেকোন বিভাগের সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
লোকপ্রশাসন পরিচিতির রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)
- অনার্স প্রথম বর্ষ
- বিষয়ঃ লোকপ্রশাসন পরিচিতি
- অধ্যায় ১ : লোকপ্রশাসন
- বিষয় কোডঃ ২১১৯০৭
- গ-বিভাগঃ রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- ০৯. লোকপ্রশাসন ও বেসরকারি প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ কর।
- অথবা, বেসরকারি প্রশাসনের সাথে লোকপ্রশাসনের বৈসাদৃশ্য আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : আধুনিক রাষ্ট্রের প্রধান উদ্দেশ্য হলো জনকল্যাণ নিশ্চিত করা। আর এ কল্যাণ বাস্তবায়নে নিরলস পরিশ্রম করে প্রশাসন। সরকারি এবং বেসরকারি প্রশাসন, উভয়ই রাষ্ট্রের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। যদিও উভয় প্রশাসনের মধ্যে কিছু সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায় তবে এদের মধ্যে বৈসাদৃশ্যই বেশি পরিলক্ষিত হয় ।
লোকপ্রশাসন ও বেসরকারি প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য প্রকৃতি, পরিধি, দৃষ্টিভঙ্গি, ফলাফল, প্রশাসনিক কার্যাবলির ধরন প্রভৃতি বিবেচনা করে লোকপ্রশাসন ও বেসরকারি প্রশাসনের মধ্যে বৈসাদৃশ্য নির্ণয় করা হয়। সরকারি ও বেসরকারি প্রশাসনের মধ্যে যেসব তাত্ত্বিক বৈসাদৃশ্য দেখিয়েছেন তাদের মধ্যে পল অ্যাপলেবি, হার্বার্ট এ. সাইমন প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। নিম্নে পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো—
- আরো পড়ুন:- (ফ্রি PDF) লোকপ্রশাসন পরিচিতির রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:- লোকপ্রশাসন পরিচিতির রচনামূলক প্রশ্নোত্তর(ফ্রি PDF)
- আরো পড়ুন:- ফ্রি PDF লোকপ্রশাসন পরিচিতি‘র (খ) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-লোকপ্রশাসন পরিচিতি অধ্যায়:-১(সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরPDFফ্রি)
- আরো পড়ুন:-স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৬ষ্ঠ-অতিসংক্ষিপ্ত)
১. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : উভয় প্রশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগত দিক দিয়ে ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। লোকপ্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য হলো জনকল্যাণ নিশ্চিত করা। অপরদিকে, বেসরকারি প্রশাসনের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন।
২. আইনগত ভিত্তি : লোকপ্রশাসন আইনের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। লোকপ্রশাসনের কার্যক্রম কিছু সাংবিধানিক নীতির মাধ্যমে নির্ধারিত করা থাকে । অপরপক্ষে, ব্যবসায়িক প্রশাসনের আচরণ এবং ব্যবসায়িক প্রশাসনের কার্যক্রমে খুব কম আইনগত নীতিমালা অনুসরণ করা হয় ।
৩. মুনাফার অভিপ্রায় : সরকারি প্রশাসনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো সামাজিক উন্নয়নের জন্য জনগণের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়া। অপরপক্ষে, বেসরকারি প্রশাসনের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো নিজেদের মুনাফা অর্জন।
৪. রাজনৈতিক নির্দেশনা : লোকপ্রশাসন হলো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। অপরদিকে, বেসরকারি প্রশাসন একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। আইন পরিষদ ও রাজনৈতিক কার্যনির্বাহী কর্তৃক নির্ধারিত আদেশ বাস্তবায়ন করে থাকে লোকপ্রশাসন। অন্যদিকে, বেসরকারি প্রশাসনে কোনো রাজনৈতিক নির্দেশনা মানা হয় না ।
৫. জবাবদিহিতা : সরকারি কর্মচারীগণকে তাদের কার্যক্রমের জন্য জনগণের নিকট দায়বদ্ধ ও জবাবদিহি করতে হয়। অপরদিকে, বেসরকারি প্রশাসনে জনগণের সম্পৃক্ততা অনুপস্থিত।
৬. আমলাতান্ত্রিকতা : লোকপ্রশাসন অতিমাত্রায় আমলাতন্ত্র নির্ভর। এখানে কাজের দীর্ঘসূত্রিতা, উদাসীনতা ও আনুষ্ঠানিকতার প্রভাব অনেক বেশি অন্যদিকে, বেসরকারি প্রশাসনে আমলাতন্ত্রের প্রভাব কম । যেকোনো সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত বাস্তবায়িত হতে পারে।
৭. সিদ্ধান্ত গ্রহণ লোকপ্রশাসনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি বহুত্ববাদী । অপরপক্ষে, বেসরকারি প্রশাসনে একচেটিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ।
৮. অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয় : লোকপ্রশাসনের ক্ষেত্রে খাজনা, শুল্ক, ফি, জরিমানা প্রভৃতি সরাসরি জনগণের কাছ থেকে আদায় করা হয় আবার তা জনকল্যাণের কাজেই ব্যয় করা হয়। অপরদিকে, বেসরকারি প্রশাসন তাদের কার্যক্রম চালনা করে নিজেদের মুনাফা অর্জন করার জন্য ।
৯. জনসংযোগ লোকপ্রশাসনে জনসংযোগ মুখ্য বিষয় নয়। অন্যদিকে, বেসরকারি প্রশাসন মুনাফাভিত্তিক হওয়ায় বেসরকারি প্রশাসন জনগণকে পুঁজি করে ব্যবসা করে ।
১০. কর্ম পরিসর : রাষ্ট্রের বিভিন্ন কার্যাবলি বৃদ্ধির ফলে সরকারি প্রশাসনের কর্ম পরিসর বেড়েই চলেছে। বেসরকারি প্রশাসনের কর্মপরিধি অপেক্ষাকৃত সীমিত। তারা একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে সীমিত পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
১১. বেতন কাঠামো : সরকারি প্রশাসনে কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট স্কেলে একই বেতন কাঠামো থাকে কিন্তু বেসরকারি প্রশাসনে এরকম কোনো বেতন কাঠামো থাকে না। কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা বা অনিচ্ছার ওপর বেতন কাঠামো নির্ভর করে।
১২. কর্মদক্ষতা : সরকারি প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তাদের দক্ষতা অনেকাংশেই কম। সনাতন পদ্ধতিতে লোক নিয়োগ দেওয়ার ফলে দক্ষতা নিরূপিত হয় না। যোগ্যতার ভিত্তিতে লোকবল নিয়োগ দেওয়ার ফলে বেসরকারি প্রশাসনের কর্মী অনেক দক্ষ।
১৩. সামাজিক মর্যাদা : একজন সরকারি কর্মকর্তার Social Status বা সামাজিক মর্যাদা যেকোনো বেসরকারি প্রশাসনে কর্মরত কর্মীর তুলনায় অনেক বেশি।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, লোকপ্রশাসন পরিচালিত হয় সরকারি কাঠামোর আলোকে আর সে কারণে একে সরকারি প্রশাসনও বলা হয়। অপরদিকে, বেসরকারি প্রশাসন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে তাদের মধ্যে যতই পার্থক্য থাকুক না কেন সমাজের উন্নয়নে ২টি প্রশাসনিক ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- ১০. লোকপ্রশাসন অধ্যয়ন করার পদ্ধতিসমূহ আলোচনা কর।
- অথবা, লোকপ্রশাসন অধ্যয়নের পদ্ধতিসমূহ আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : অধ্যয়নশাস্ত্র হিসেবে লোকপ্রশাসন একটি নতুন বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের ব্যবহারিক প্রয়োগ সেই আদিম যুগ থেকেই চলে আসছে। সামাজিক বিজ্ঞানে প্রতিটি শাখা অধ্যয়নের নিজস্ব কিছু পদ্ধতি রয়েছে। এসময় পরিবর্তনের সাথে সাথে অধ্যয়ন পদ্ধতিরও পরিবর্তন ঘটেছে। লোকপ্রশাসনও একটি সামাজিক বিজ্ঞান তাই এর পাঠেও বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় ।
লোকপ্রশাসন অধ্যয়নের পদ্ধতি : প্রশাসনিক সংগঠনের প্রকৃতি, উদ্দেশ্য, কাঠামো এবং স্বরূপ সঠিকভাবে অনুধাবন করার জন্য লোকপ্রশাসন পাঠের বিভিন্ন পদ্ধতির জন্ম হয়েছে। লোকপ্রশাসন আলোচনায় বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন গবেষক এর অধ্যয়ন পদ্মতিকে ২ ভাগে ভাগ করেছেন । যথা : ক. সনাতন পদ্ধতি ও খ. আধুনিক পদ্ধতি।
ক. সনাতন পদ্ধতি : সনাতন পদ্ধতির প্রধান দৃষ্টিভঙ্গি হলো আদর্শমুখী। অতি প্রাচীন এ পদ্ধতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত অধিক জনপ্রিয় ছিল কিছু মৌলিক ও চিরায়িত ধারণা যেমন— ন্যায়, সাম্য, স্বাধীনতা, আনুগত্য ইত্যাদি বিষয়গুলো সনাতন পদ্ধতির প্রধান আলোচ্য বিষয়। নিম্নে এর অন্তর্গত বিভিন্ন পদ্ধতি তুলে ধরা হলো—
১. ঐতিহাসিক পদ্ধতি : লোকপ্রশাসন অধ্যয়নে ঐতিহাসিক পদ্ধতি সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। এ পদ্ধতির মাধ্যমেই প্রাচীন কালের প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি উপলব্ধি করা যায়। এ প্রতিষ্ঠানগুলো অতীতে কীভাবে জন্মলাভ করেছে,
কী বিশেষ পরিবেশে তারা গড়ে উঠেছে এবং কী বিশেষ সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থায় তাদের অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তা জানার জন্যই ঐতিহাসিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। সাম্প্রতিককালে ইউরোপ ও আমেরিকার প্রখ্যাত প্রশাসকগণ প্রশাসন ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য ঐতিহাসিক ঘটনাবলির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ।
২. পরীক্ষামূলক পদ্ধতি : লোকপ্রশাসন অধ্যয়নে পরীক্ষামূলক পদ্ধতি বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিটি প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাকে এক একটি পরীক্ষাগার বলে গণ্য করা যেতে পারে। এসব পরীক্ষাগারে বিভিন্ন নীতিমালা প্রবর্তন করা হয়। সুখী ও সমৃদ্ধশালী জীবনযাপনের জন্য এ নীতিমালা পরীক্ষামূলকভাবে গৃহীত হয়ে থাকে।
৩. প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি : লোকপ্রশাসন পঠনের এ পদ্ধতিটি রাজনীতি ও প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করে। তবে এ পদ্ধতির প্রবক্তাগণ নিরপেক্ষ থেকে রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের আশা আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপদানের পক্ষপাতী। প্রশাসনের বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। এল. ডি হোয়াইট এবং লুথার গুলিক এ পদ্ধতির প্রধান প্রবক্তা ।
৪. দার্শনিক পদ্ধতি : সামাজিক বিজ্ঞানের অন্তর্গত সব বিষয়ের পাঠের ক্ষেত্রে দার্শনিক পদ্ধতি অত্যন্ত প্রাচীন পদ্ধতি। এ পদ্ধতির মূল কথা হলো প্রশাসনিক কার্যকলাপের অন্তর্ভুক্ত সব নীতি ও আদর্শ সম্পর্কে স্পষ্ট ব্যাখ্যা করা। প্লেটোর ‘রিপাবলিক’ হবসের ‘লেভিয়াথান’, লকের ‘টু ট্রিটিজ অন সিভিল গভর্নমেন্ট’ গ্রন্থে দার্শনিক পদ্ধতির সন্ধান পাওয়া যায়।
৫. কাঠামোগত পদ্ধতি : প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কাঠামোগত পদ্ধতির প্রচলন ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। মূলত এ পদ্ধতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো সরকারি সংস্থার প্রশাসনিক কাঠামো বর্ণনা করা । লুথার গুলিকের POSDCORB মতবাদের ওপর এ পদ্ধতিটি অধিক গুরুত্বারোপ করে থাকে। এ পদ্ধতিটি প্রশাসনিক সংগঠন, কর্মচারী ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক প্রশাসন নিয়ে আলোচনা করে।
৬. আইনগত পদ্ধতি : লোকপ্রশাসনকে প্রশাসনিক আইনের অংশ বলে মনে করা হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ইউরোপের দেশগুলোতে লোকপ্রশাসনকে প্রশাসনিক সরকারি আইনের শাখা হিসেবে বিবেচনা করা হতো। প্রতিটি প্রশাসনিক সংগঠন আইন অনুযায়ী প্রশাসনের কর্মপ্রক্রিয়াগুলো সম্পাদন করলেই প্রশাসন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে।
৭. অর্থনৈতিক পদ্ধতি : একটি দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি এবং উন্নয়ন অনেকাংশেই সে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর নির্ভরশীল। দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতির দিকদর্শন অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপরই নির্ভরশীল। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং প্রশাসনিক নীতিমালা প্রণয়ন করার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করা হয়।
৮. তুলনামূলক পদ্ধতি : তুলনামূলক পদ্ধতি দ্বারা বিভিন্ন দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য সম্পর্কে বর্ণনা ও গবেষণামূলক আলোচনা করা হয়। এরিস্টটল তার ‘The Politics’ নামক গ্রন্থে এ মতবাদটি প্রয়োগ করেন।
খ. আধুনিক পদ্ধতি লোকপ্রশাসনের আধুনিক পদ্ধতিগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো—
১. আচরণগত পদ্ধতি : সাম্প্রতিক সময়ে লোকপ্রশাসন অধ্যয়নে আচরণগত পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। একে সামাজিক মনস্তাত্ত্বিক পদ্ধতি বলেও অভিহিত করা হয়। সংগঠনের ব্যক্তির আচরণ পর্যবেক্ষণ করে কতকগুলো সাধারণ সূত্রে উপনীত হওয়া এ পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য। এ পদ্ধতির অন্যতম প্রবক্তা হলেন হার্বার্ট এ. সাইমন (Herbert A. Simon ) ।
২. মনস্তাত্ত্বিক পদ্ধতি : মনস্তাত্ত্বিক পদ্ধতি মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ হতে লোকপ্রশাসন অধ্যয়ন করে থাকে । সংগঠনে মানব আচরণ কেমন হবে তা এ পদ্ধতির আলোচ্য বিষয়। মূলত এ দৃষ্টিকোণ থেকে আমলাদের ধ্যানধারণা, অনুভূতি এবং প্রশাসনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সম্পর্ক আলোচনা করা হয়।
৩. গোষ্ঠীগত পদ্ধতি : লোকপ্রশাসন অধ্যয়নে গোষ্ঠীগত পদ্ধতি বর্তমানে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মূলত এ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রশাসনিক নীতি প্রণয়নে সংগঠিত গোষ্ঠীগত ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
৪. ঘটনাসংক্রান্ত পদ্ধতি : লোকপ্রশাসন অধ্যয়নের ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন সংযোজন যা মূলত আমেরিকান ধারণা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। ঘটনা একটি নির্দিষ্ট সমস্যা যেটি সংগঠিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ইউনিটকে সংশোধন করতে হয়। ঘটনাসংক্রান্ত দৃষ্টিকোণের সফলতা নির্ভর করে সংগঠনে কর্মরত প্রশাসকদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ওপর।
৫. সংখ্যাত্মক পদ্ধতি : সংখ্যাত্মক পদ্ধতি প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে বেশি প্রয়োগ হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই এ দৃষ্টিকোণের প্রয়োগ লোকপ্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে । সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে এর প্রয়োগ অত্যন্ত কার্যকরী।
৬. ক্ষমতা বিশ্লেষণ পদ্ধতি : প্রশাসনিক কার্যক্রমে ক্ষমতার প্রয়োজন রয়েছে। ক্ষমতা সুদৃঢ়, ক্ষমতার বৃদ্ধি এবং ক্ষমতার সংরক্ষণসংক্রান্ত বিষয় এ পদ্ধতির মাধ্যমে আলোচিত হয়।
- আরো পড়ুন:-স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৬ষ্ঠ-সংক্ষিপ্ত)
- আরো পড়ুন:- স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৬ষ্ঠ-রচনামূলক)-১
- আরো পড়ুন:- স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৬ষ্ঠ-রচনামূলক)-২
- আরো পড়ুন:-স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস (৬ষ্ঠ-রচনামূলক)-৩
৭. অশান্ত পদ্ধতি : মানবসমাজ নিয়ত পরিবর্তনশীল। এ পরিবর্তন ইতিবাচক বা নেতিবাচক হতে পারে। অশান্ত ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ নতুন আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের জন্ম দেয়। এরকম পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক সংগঠনের আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন পড়ে। আর এমন পরিস্থিতিতে লোকপ্রশাসন আলোচনায় অশান্ত পদ্ধতি সর্বাপেক্ষা কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৮. ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি : সাম্প্রতিক সময়ে লোকপ্রশাসন অধ্যয়নের ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল পদ্ধতির গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরূপ পদ্ধতি মূলত উচ্চতর পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা দেওয়া হয় । যেমন- বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (BPATC), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর মানব গবেষণা কেন্দ্ৰ ইত্যাদি ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, লোকপ্রশাসন অধ্যয়নের নানাবিধ পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলোর আলোচনার মাধ্যমেই লোকপ্রশাসনের পরিধি বিস্তার ঘটেছে।
তবে একথা নিশ্চিত যে লোকপ্রশাসন অধ্যয়নে কোনো একক পদ্ধতি প্রয়োগযোগ্য নয়; বরং এদের সামগ্রিক ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বর্তমানে লোকপ্রশাসনকে অধিকতর সমৃদ্ধশীল করা যেতে পারে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। ফ্রি পিডিএফ ফাইল এখান থেকে ডাউনলোড করে নিন। লোকপ্রশাসন পরিচিতির রচনামূলক প্রশ্নোত্তর (ফ্রি PDF)