ব্যবসা সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম | অধ্যায় ৭ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১১-১৫ : ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্রের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রশ্নঃ ১১ কবির একটি বিদেশি ব্যাংকে অফিসার পদে কাজ করেন। বিদেশি ব্যাংক অফিসারদের উচ্চ বেতন ও বোনাস সুবিধা দিলেও গত দুই বছরে তিনি কোনো প্রশিক্ষণ সুবিধা পাননি, তদুপরি চাকরির কোনো নিরাপত্তা নেই। এমতাবস্থায় ভবিষ্যতের কথা ভেবে কবির ব্যাংকটি ছেড়ে একটি দেশীয় প্রাইভেট ব্যাংকে যোগদান করেন। এখানে বেতন অপেক্ষাকৃত একটু কম হলেও কাজের নিরাপত্তা ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ সুবিধা রয়েছে। [চ. বো. ১৬]
ক. প্রেষণা কী? ১
খ. সামাজিক চাহিদা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. কবির প্রেষণার কোন ধরনের উপাদানের অভাবে বিদেশি ব্যাংক ছেড়ে দেশীয় ব্যাংকে যোগদান করেছেন ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. কবির চাকরিতে শুধু আর্থিক প্রেষণাই পেতে চায় না উদ্দীপকের আলোকে এর যথার্থতা মল্যায়ন করো। ৪
১১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ কর্মীদের কার্যক্ষমতা পর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে তাদেরকে কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত বা উৎসাহী করার প্রক্রিয়াকে প্রেষণা বলে।
খ উত্তরঃ সামাজিক জীব হিসেবে মানুষের ভিতরে যে চাহিদার সৃষ্টি হয় তাকে সামাজিক চাহিদা বলে। মানুষ যখন নিরাপত্তাবোধে তৃপ্ত হয়, তখন সে বন্ধু-বান্ধব ও অন্যদের সাথে মিলেমিশে চলতে চায়। অন্যদের ভালোবাসা পাওয়ার প্রত্যাশা করে। এ পর্যায়ে মানুষ বিভিন্ন সামাজিক কাজে উৎসাহিত হয়। নিজেকে তারা সমাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে ভালোবাসে।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকের কবির অনার্থিক প্রেষণার (চাকরির নিরাপত্তা এবং প্রশিক্ষণ সুবিধা) অভাবে বিদেশি ব্যাংক ছেড়ে দেশীয় ব্যাংকে যোগদান করেছেন। কর্মীকে কাজে উৎসাহিত করার জন্য আর্থিক ও অনার্থিক উভয় ধরনের প্রেষণাই প্রদান করা উচিত।
সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ, চাকরির নিরাপত্তা, আকর্ষণীয় কাজ, প্রশিক্ষণ সুবিধা প্রভৃতি অনার্থিক প্রেষণার উদাহরণ। এসব উপাদানের সাথে সাথে আর্থিক প্রেষণা দিলে কর্মী স্বাচ্ছন্দ্যে দায়িত্ব পালন করেন। উদ্দীপকের কবির একটি বিদেশি ব্যাংকে অফিসার পদে কর্মরত আছেন। ব্যাংকটি কর্মীদেরকে উচ্চ বেতন ও বোনাস সুবিধা প্রদান করে। কিন্তু ব্যাংকটির প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ও চাকরির নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য অনুক‚ল নয়।
প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় কর্মীদের দক্ষতা বাড়ার সুযোগ নেই। আবার চাকরির নিরাপত্তা না থাকায় কর্মীরা নির্বিঘেœ কাজ করতে পারেন না। এ অনিশ্চয়তার কারণেই কবির বিদেশি ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দেশীয় একটি ব্যাংকে যোগদান করেছেন।
ঘ উত্তরঃ উদ্দীপকের কবির প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক ও অনার্থিক উভয় ধরনের প্রেষণাই প্রত্যাশা করেন। প্রতিষ্ঠান কর্মীদেরকে কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত করার জন্য আর্থিক ও অনার্থিক সুযোগ-সুবিধা দেয়। আর্থিক প্রেষণার মাধ্যমে কর্মীর অভাব বা চাহিদা পরণ করা হয়।
আর অনার্থিক (সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ, ভালো কাজের প্রশংসা, প্রশিক্ষণ সুবিধা, চাকরির নিরাপত্তা) প্রেষণার মাধ্যমে কর্মী কাজের প্রতি একাগ্র হয়ে ওঠে। উভয় ধরনের প্রেষণা দেওয়ার মাধ্যমেই কর্মীদেরকে প্রতিষ্ঠানে ধরে রাখা যায়। উদ্দীপকের কবির বিদেশি একটি ব্যাংকে কর্মরত।
ব্যাংকটি তাকে উচ্চ বেতন ও বোনাস দেয়। এতে তার আর্থিক অভাব পরণ হয়। কিন্তু ব্যাংটি তাকে প্রশিক্ষণ সুবিধা ও চাকরির নিরাপত্তা প্রদান করে না। তাই কবির বিদেশি ব্যাংকটি ছেড়ে দেশীয় একটি ব্যাংকে যোগদান করেন। দেশীয় ব্যাংকটিতে আর্থিক সুবিধা একটু কম।
কিন্তু ব্যাংকটিতে চাকরির নিরাপত্তা ও প্রশিক্ষণ সুবিধা রয়েছে। প্রশিক্ষণ পেলে কবির কাজে আরও দক্ষ হয়ে উঠবেন। এতে প্রতিষ্ঠানে তার গুরুত্ব বাড়বে। আবার প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-কানুন যথাযথ পালন করলে তার চাকরির নিরাপত্তা বজায় থাকবে। এতে কবির স্বাচ্ছন্দ্যে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তাই বলা যায়, কবির শুধু আর্থিক নয় অনার্থিক প্রেষণাও পেতে চায়।
প্রশ্নঃ ১২ “জেসা” নামক একটি খেলনা তৈরির কারখানায় ২০০ জন শ্রমিক কাজ করে। কাজের পরিবেশ এবং পর্যাপ্ত পাখার অভাবে শ্রমিকরা কষ্ট করে কাজ করে। পুরো কারখানায় মাত্র ১৫টি পাখা ও ৬টি বাথরুম আছে। অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায়ই শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। গত মাসে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ পার্শ্ববর্তী আর একটি খেলনা তৈরির কারখানা গড়ে ওঠে। নতুন কারখানা কর্তৃপক্ষ আবাসিক সুবিধার পাশাপাশি ১৫% মুনাফার অংশ শ্রমিকদের দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে ৭০ জন শ্রমিক ‘জেসা’ কারখানা থেকে চাকরি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী নতুন কারখানায় যোগ দেয়। [সি. বো. ১৬]
ক. প্রেষণা কী? ১
খ. প্রেষণা চক্র বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে ‘জেসা’ নাক উত্তরঃ প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের অভাব পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে শ্রমিকদের চাকরি ত্যাগের পিছনে আর্থিক ও অনার্থিক উভয় প্রেষণার প্রভাব সমভাবে দায়ী বিশ্লেষণ করো। ৪
১২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ কর্মীদের কার্যক্ষমতা পর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে তাদেরকে কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত বা উৎসাহী করার প্রক্রিয়াকে প্রেষণা বলে।
খ উত্তরঃ প্রেষণা প্রক্রিয়ার ধাপগুলো (অভাব, তাড়না, অভাবপরণ ও সন্তুষ্টি অর্জন) পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হওয়াকে প্রেষণা চক্র বলে।কর্মীর মধ্যে কোনো কিছুর অভাব জাগ্রত হলে তা পরণের জন্য সে অস্থির হয়ে ওঠে। প্রেষণার মাধ্যমে কর্মীর এ অভাব পরণ হয়, যার ফলে কর্মীর সন্তুষ্টি অর্জন হয়।
কর্মীর একটি অভাব পরণ হলে নতুন আরেকটি অভাব সৃষ্টি হয়।এ নতুন অভাব পরণের জন্য আবার প্রেষণার ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে সম্পাদন হয়। এরপ অভাববোধ এবং তা পরণের প্রক্রিয়াটি অবিরামভাবে চলতে থাকে। এটিই হলো প্রেষণা চক্র।
গ উত্তরঃ ‘জেসা’ নাক উত্তরঃ প্রতিষ্ঠানে অনার্থিক প্রেষণার অভাব পরিলক্ষিত হয়।কর্মীকে প্রণোদিত করার জন্য অর্থের বাইরে যেসব উদ্দীপক (গড়ঃরাধঃড়ৎ) ব্যবহৃত হয় তাকে অনার্থিক প্রেষণা বলে। সুষ্ঠু কার্যপরিবেশ, চাকরির নিরাপত্তা, উত্তম ব্যবহার প্রভৃতি অনার্থিক প্রেষণার উপাদান।
এর মাধ্যমে কর্মীর মানসিক আবস্থা ইতিবাচক হয়। উদ্দীপকের ‘জেসা’ নাক উত্তরঃ খেলনা তৈরির কারখানার ২০০ জন শ্রমিক কাজ করে। কারখানাটিতে ১৫টি পাখা ও ৬টি বাথরুম রয়েছে, যা কর্মীর প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
ফলে অস্বস্তিকর পরিবেশে কর্মীরা কাজ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ধরনের পরিবেশের কারণে কর্মীরা কাজের প্রতি মনোযোগ দিতে পারে না। তাই বলা যায়, ‘জেসা’ প্রতিষ্ঠানটিতে অনার্থিক প্রেষণার অভাব পরিলক্ষিত হয়।
ঘ উত্তরঃ উদ্দীপকের শ্রমিকদের চাকরি ত্যাগের পিছনে আর্থিক ও অনার্থিক উভয় প্রেষণার প্রভাব সমভাবে দায়ী- বক্তব্যটি যথার্থ।কর্মীকে কাজে উৎসাহিত করার জন্য আর্থিক (বেতন, বোনাস) ও অনার্থিক (চাকরির নিরাপত্তা, সুষ্ঠু কার্যপরিবেশ) প্রেষণা দেওয়ার প্রয়োজন হয়। উভয় (আর্থিক ও অনার্থিক) ধরনের প্রেষণা না দিলে কর্মীরা মানসিক অসন্তুষ্টিতে থাকে। এজন্য তারা কর্মরত প্রতিষ্ঠান ছেড়ে নতুন প্রতিষ্ঠানে যোগদানের চেষ্টা করে।
উদ্দীপকের ‘জেসা’ কারখানায় কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকার কারণে শ্রমিকরা কাজ করার উৎসাহ ও উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলেছে। কারখানাটির পাশে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে একটি নতুন কারখানা গড়ে উঠেছে। উক্ত কারখানায় উপযুক্ত সুযোগ পাওয়ায় ‘জেসা’র ৭০ জন শ্রমিক চাকরি ত্যাগ করে সেখানে যোগদান করে।
নতুন কারখানাটিতে সুষ্ঠু কার্যপরিবেশের পাশাপাশি কর্মীদের আবাসিক সুবিধাও আছে। এতে কর্মীরা সন্তুষ্ট মনে কাজ করতে পারবে। আবার উক্ত কারখানাটি আর্থিক সুবিধা হিসেবে মুনাফার ১৫% শ্রমিকদের প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে, যা তাদের বাড়তি উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের আর্থিক ও অনার্থিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় ‘জেসা’ কারখানার ৭০ জন শ্রমিক চাকরি ত্যাগ করে নতুন কারখানায় যোগদান করেছে।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (১ম পত্র) ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা ১ম পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(১ম পত্র)১ম: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্ন উত্তরসহ PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্নের উত্তরসহ অধ্যায়-১: PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC অধ্যায়-১: প্রশ্নের উত্তরসহ ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তরPDF
প্রশ্নঃ ১৩ মি. কমল অফিসের পিয়ন। তিনি কখনো অফিস ফাঁকি দেন না; নিজের কাজে যথেষ্ট সচেতন। ইদানিং তিনি অফিসে দেরি করে আসছেন, কাজে উৎসাহ পান না। সবসময় তার মন খারাপ থাকে। তার বস (ইড়ংং) সা¤প্রতিক পরিবর্তন লক্ষ্য করলেন এবং শুনলেন তার মেয়ের ৫০,০০০ টাকার জন্য চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে। তিনি মি. কমলের মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবেন বলে জানালেন। মি. কমল কৃতজ্ঞচিত্তে পুনরায় কাজে আগ্রহ ফিরে পেলেন। [য. বো. ১৬]
ক. দ্বি-উপাদান তত্তের জনক কে? ১
খ. পুরস্কার কি প্রণোদনা? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকের বস যে চিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছেন তা কোন ধরনের প্রেষণা? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. তুমি কি মনে করো, প্রেষণা মনোবলকে বৃদ্ধি করে? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
১৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ফ্রেডারিক হার্জবার্গ প্রেষণার দ্বি-উপাদান তত্তের জনক।
মার্কিন প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ফ্রেডারিক আরভিং হার্জবার্গ ১৯৫৯ সালে প্রেষণা সম্পর্কে একটি তত্ত প্রবর্তন করেন, যা হার্জবার্গের দ্বি-উপাদান তত্ত নামে পরিচিত। এতে মানুষের চাহিদাকে দুই ধরনের উপাদানে বিভক্ত করা হয়েছে।
যথা: ১. প্রেষণা দানকারী উপাদান যেমন: সাফল্য অর্জন, স্বীকৃতি, দায়িত্ব প্রভৃতি; ২. রক্ষণাবেক্ষণকারী উপাদান যেমন: বেতন, পদমর্যাদা, প্রতিষ্ঠানের নীতি ও প্রশাসন, সুষ্ঠু তত্তাবধান, কার্যপরিবেশ প্রভৃতি।
খ উত্তরঃ পুরস্কার প্রদান প্রণোদনামলক উপাদানের অন্তর্ভুক্ত । দক্ষ ও কর্মঠ কর্মীদের কাজের স্বীকৃতিস্বরপ পুরস্কার দেওয়া হয়। এতে কাজের প্রতি তাদের আন্তরিকতা বাড়ে। আবার পুরস্কার প্রাপ্তদের অনুসরণ করে অন্যরাও কাজে অনুপ্রাণিত হয়। এভাবে পুরস্কার দিয়ে কর্মীদের উৎসাহী ও উজ্জীবিত করা যায়।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকের বস যে চিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছেন তা আর্থিক প্রেষণার অন্তর্ভুক্ত। অর্থ বা আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে কর্মীকে কাজের প্রতি উৎসাহিত করাকে আর্থিক প্রেষণা বলে। উপযুক্ত বেতন ও মজুরি, বোনাস, পদোন্নতি, বাসস্থান ভাতা, পরিবহন সুবিধা ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান প্রভৃতি আর্থিক প্রেষণার উপাদান।
উদ্দীপকের মি. কমল কখনো অফিস ফাঁকি দেন না। তিনি নিজের কাজে যথেষ্ট সচেতন। কিন্তু ইদানিং তিনি কাজে উৎসাহ পান না। কেননা তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য ৫০,০০০ টাকা প্রয়োজন। তার বস এ বিষয়টি জানার পর মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। বসের এ আশ্বাসে মি. কমলের আর্থিক সমস্যা দর হবে। তিনি মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারবেন। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের বস আর্থিক প্রেষণা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
ঘ উত্তরঃ আমি মনে করি, প্রেষণা কর্মীর মনোবল বৃদ্ধি করে। কর্মীদের কাজের প্রতি উৎসাহিত করার প্রক্রিয়াই হলো প্রেষণা। আর মনোবল হলো কর্মীর মানসিক শক্তি মত্তার বিষয়। প্রেষণা প্রদানের মাধ্যমে মলত কর্মীকে উৎসাহিত করা হয়
আবার প্রেষণার অনুপস্থিতিতে কর্মীর মনোবল ভেঙে যায় এবং কাজের গতিও কমে যায়। উদ্দীপকের মি. কমল ৫০,০০০ টাকার অভাবে তার মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এজন্য তিনি কাজ করতে আগের মতো উৎসাহ পান না এবং সবসময় মন খারাপ করে থাকেন।
এ পরস্থিতিতে মি. কমলের বস তাকে আর্থিক প্রেষণার আশ্বাস দেন। তাই এখন তার মেয়ের চিকিৎসার খরচের জন্য ভাবতে হয় না। তিনি ব্যবস্থাপনার ওপর এখন সন্তষ্ট। এজন্য তার কাজের প্রতি পুনরায় আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এ থেকে বলা যায়, প্রেষণা দেওয়ার মাধ্যমে কর্মীর মনোবল বাড়ে।
প্রশ্নঃ ১৪ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারিন তার ‘জারিন প্লাস্টিক কারখানা’ পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন উৎপাদন বিভাগের কর্মীরা অত্যন্ত আনন্দ ও মনোযোগের সাথে কাজ করছে। কিন্তু প্যাকেজিং বিভাগে দু’একজন কাজ করছে এবং বাকিরা খোশগল্পে মাতোয়ারা। এ অবস্থা দেখে তিনি বিভিন্ন বিভাগের কর্ক উত্তরঃ র্তাদের ডেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিলেন এবং ভবিষ্যতের জন্য সকলকে সতর্ক করে চলে গেলেন। [ব. বো. ১৬]
ক. প্রেষণা কী? ১
খ. প্রেষণার চক্র বলতে কী বোঝায়? ২
গ. জারিন তার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রেষণার কোন তত্তের সাথে কর্মীদের আচরণের মিল খুঁজে পেলেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটিতে জারিন এর গৃহীত পদক্ষেপের ফলে কর্মীদের মধ্যে কী কী পরিবর্তন হতে পারে বলে তুমি মনে করো? বিশ্লেষণ করো। ৪
১৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ কর্মীদের কার্যক্ষমতা পর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে তাদেরকে কাজের প্রতি অনুপ্রাণিত বা উৎসাহী করার প্রক্রিয়াকে প্রেষণা বলে।
খ উত্তরঃ প্রেষণা প্রক্রিয়ার ধাপগুলো (অভাব, তাড়না, অভাবপরণ ও সন্তুষ্টি অর্জন) পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হওয়াকে প্রেষণা চক্র বলে। কর্মী কোনো কিছুর অভাববোধ করলে তা পরণের জন্য সে অস্থির হয়ে ওঠে। প্রেষণার মাধ্যমে কর্মীর এ অভাব পরণ হয়, যার ফলে কর্মী সন্তুষ্ট হয়।
কর্মীর একটি অভাব পরণ হলে নতুন আরেকটির সৃষ্টি হয়। নতুন অভাব পরণের জন্য আবার প্রেষণার ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে সম্পাদন করা হয়। এরপ অভাববোধ এবং তা পরণের প্রক্রিয়াটি অবিরামভাবে চলতে থাকে। এটিই হলো প্রেষণা চক্র।
গ উত্তরঃ জারিন তার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রেষণার ঢ ও ণ তত্তের সাথে কর্মীদের আচরণের মিল খুঁজে পেলেন। ঢ তত্তে মনে করা হয় যে, কর্মীরা কাজ পছন্দ করে না, তারা অলস ও দায়িত্ব এড়িয়ে চলে এবং তাদেরকে কাজ সম্পাদনে বাধ্য করতে হয়। অন্যদিকে ণ তত্তে মনে করা হয় যে, কর্মীরা সৃজনশীল, তারা দায়িত্ব পেতে চায় এবং স্বেচ্ছায় কাজ করতে পছন্দ করে।
উদ্দীপকের জারিন তার কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে দেখলেন উৎপাদন বিভাগের কর্মীরা আনন্দ ও মনোযোগের সাথে কাজ করছে। তারা স্বেচ্ছায় দায়িত্ব পালন করছে। তাদেরকে দিয়ে কাজ করানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করতে হয় না। কর্মীদের এ ধরনের মনোভাব ণ তত্তের সাথে সংশ্লিষ্ট।
অন্যদিকে প্যাকেজিং বিভাগে জারিন গিয়ে দেখেন দু’একজন কর্মী কাজ করলেও বাকিরা খোশগল্প করছে। এ ধরনের কর্মীরা স্বেচ্ছায় কাজ করতে চায় না। তারা দায়িত্ব এড়িয়ে চলতে চায়। এজন্য তাদের সবসময় চাপ প্রয়োগ করতে হয়। কর্মীদের এ ধরনের মনোভাবের মাধ্যমে ঢ তত্তের বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে। ডগলাস মারে ম্যাকগ্রেগর ‘ঞযব ঐঁসধহ ঝরফব ড়ভ ঊহঃবৎঢ়ৎরুব’ নামক গ্রন্থে কর্মীর মনোভাব সম্পর্কে দুই ধরনের তত্তের উলেখ করেন, যা ঢ ও ণ তত্ত নামে পরিচিত।
ঘ উত্তরঃ জারিনের নির্দেশনার মাধ্যমে উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আমি মনে করি। কর্মীকে দিয়ে কাজ করানোর জন্য প্রয়োজনীয় নিদের্শনা দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সঠিক নির্দেশনা কর্মীদেরকে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যের দিকে পরিচালিত করে। উদ্দীপকের জারিন তার প্লাস্টিক কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে কিছু কর্মীকে মনোযোগের সাথে কাজ করতে দেখেন।
আবার কিছু কর্মীকে কাজে ফাঁকি দিয়ে খোশগল্প করতে দেখেন। এ ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখে তিনি বিভিন্ন বিভাগের কর্ক উত্তরঃ র্তাদের ডেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিলেন এবং ভবিষ্যতের জন্য সকলকে সতর্ক করে চলে গেলেন। জারিনের উক্ত পদক্ষেপে ফাঁকিবাজ কর্মীরা সতর্ক হবে।
তারা উপলদ্ধি করবে যে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে পরবর্তীতে শাস্তি দেওয়া হবে। এতে তাদের চাকরিও চলে যেতে পারে। তাই প্রত্যেক কর্মী নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হবে। এতে প্রত্যেক বিভাগের কাজ সমান তালে এগিয়ে যাবে। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। এভাবে জারিনের পদক্ষেপ প্রতিষ্ঠানটিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রশ্নঃ ১৫ বেক্সিক উত্তরঃ ো ফার্মা লি. ওষুধ প্রস্তুতকারী একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের কার্যদক্ষতার পর্ব ব্যবহারের লক্ষ্যে তাদের শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সুবিধা দেয়। এতে কর্মীরা সন্তুষ্টচিত্তে কাজ করলেও কাজের পরিবেশে তারা নিজেদের নিরাপদ মনে করেন না এবং চাকরির স্থায়িত্ব নিয়েও তারা চিন্তিত থাকেন।
[রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]
ক. বোনাস কী? ১
খ. প্রেষণা মানব মনের সাথে কীভাবে সম্পৃক্ত? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বেক্সিক উত্তরঃ ো ফার্মা কর্মীদের কোন ধরনের প্রেষণা প্রদান করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে সাফল্যের চাহিদা সোপান তত্তের কোন স্তরটি অনুপস্থিত? তোমার মতামত দাও। ৪
১৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তরঃ বেতন-ভাতার অতিরিক্ত যে অর্থ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কর্মীকে দেওয়া হয় তাকে বোনাস বলে। যেমন ঈদ বোনাস ও বৈশাখী বোনাস।
খ উত্তরঃ কর্মীদের কাজের প্রতি উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার প্রক্রিয়া হলো প্রেষণা। আর মনোবল হলো মানসিক শক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয়। প্রেষণা প্রদানের মাধ্যমে মলত কর্মীর মনকে উৎসাহিত করা হয়। এতে কাজের প্রতি কর্মীর সাগ্রহ ও মনোবল বাড়ে।
এর ফলে প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন বেড়ে যায়। আবার প্রেষণার অনুপস্থিতিতে কর্মীর মনোবল ভেঙে যায়। ফলে কর্মীর কাজের প্রতি আগ্রহ কমে যায়। এতে করে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ও কমে যায়। তাই বলা যায়, প্রেষণা নব মনের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকে বর্ণিত বেক্সিকফার্মা কর্মীদের আর্থিক প্রেষণা প্রদান করেন। অর্থ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে কর্মীকে কাজের প্রতি উৎসাহিত করাই হলো আর্থিক প্রেষণা। এ ধরনের প্রেষণার মাধ্যমে কর্মীদের ইতিবাচকভাবে প্রেষিত করা যায়।
বেতন, বোনাস, পদোন্নতি, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা ইত্যাদি আর্থিক প্রেষণার অন্তর্গত। উদ্দীপকে বেক্সিক উত্তরঃ ো ফার্ম লি. একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের কার্যদক্ষতার পর্ণ ব্যবহারের প্রতি সচেতন।
এই লক্ষ্যে তাদের বিভিন্ন (শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত) সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এই উপাদানগুলো কর্মীদের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রতি আন্তরিকতা সৃষ্টি করবে। উপরোক্ত উপাদানগুলো আর্থিক প্রেষণার অন্তর্গত। উদ্দীপকে বর্ণিত বেক্সিক উত্তরঃ ো ফার্মাকর্মীদের আর্থিক প্রেষণা প্রদান করছে।
ঘ উত্তরঃ উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে সাফল্যের চাহিদা সোপান তত্তের নিরাপত্তা স্তরটি অনুপস্থিত। ভয়হীন, ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদে বাঁচতে পারার চাহিদাই হলো নিরাপত্তার চাহিদা। জৈনিক চাহিদা পরণের পর মানুষ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনবোধ করে নিরাপত্তার চাহিদার।
উদ্দীপকে বেক্সিক ফার্মা ও একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের কার্যদক্ষতার পর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে তাদের শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সুবিধা দেয়। এতে কর্মীরা সন্তুষ্টিচিত্তে কাজ করলেও কার্য পরিবেশ ও চাকরির স্থায়িত্ব নিয়ে তারা চিন্তিত থাকেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটিতে সাফল্যের চাহিদা সোপান তত্তের নিরাপত্তা চাহিদার স্তরটি অনুপস্থিত। এর ফলে কর্মীরা কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন দিন দিন কমে যাবে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের শ্রম-ঘর্ণায়মানতার পরিমাণ বাড়বে, যা প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক আব্রাহাম হ্যারল্ড মাসলো প্রেষণার চাহিদা সোপান তত্তে মানুষের চাহিদাকে পাঁচটি স্তরে ভাগ করেছেন। যা দেওয়া হলো
১। জৈবিক চাহিদা : খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা।
২। নিরাপত্তার চাহিদা : চাকরির নিরাপত্তা, বিমা সুবিধা, ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা।
৩। সামাজিক চাহিদা : বন্ধুত্ব, -মমতা, সহানুভ‚তি।
৪। আতৃপ্তির চাহিদা : আমর্যাদা, সম্মান, স্বীকৃতি।
৫। আপর্ণতার চাহিদা : পর্ণ দক্ষতার প্রকাশ, জটিল ও গুরুত্বপর্ণ কাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।