ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা ২য় | অধ্যায় ১ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-১০ | PDF: ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রের প্রথম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রের প্রথম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
প্রশ্নঃ ৬ নাইন-স্টার গ্র“পের ব্যবস্থাপক সাইফুর রহমান কার্যের প্রকৃতি অনুযায়ী কার্যবিভাজন করেন। তিনি যোগ্য কর্মী নির্বাচন করে উপযুক্ত কর্মে নিয়োজিত করেন। সাইফুর রহমান কর্মীদেরকে কেবল দায়িত্বই প্রদান করেন না সাথে সাথে যথাযথ কর্তৃত্বও প্রদান করেন। প্রতিষ্ঠানের বস্তুগত ও অবস্তুগত উপাদানসমূহ একত্রিত করে একেক কর্মীদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের খোঁজ-খবর নিয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটি সফলতা অর্জনের পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। [ব. বো. ১৭]
ক. আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক কে? ১
খ. উচ্চ স্তরীয় ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. সাইফুর রহমান ব্যবস্থাপনার কোন কার্যের সাথে জড়িত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. নাইন-স্টার গ্র“পের সফলতায় কর্মীদের জবাবদিহিতার ভ‚মিকা কতটুকু তা মূল্যায়ন করো। ৪
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হলেন হেনরি ফেয়ল ।
খ উত্তর: ব্যবস্থাপনার যে স্তরে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণ করা হয় তাকে উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা বলে।
প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদ, কোম্পানির সচিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকের মধ্যে পড়েন।
এক্ষেত্রে নির্বাহীগণ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কৌশল গ্রহণ করেন।
এসব কাজে অধিক মাত্রায় চিন্তা-চেতনার প্রয়োজন হয়। তাই বলা হয়, উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকগণ চিন্তাশীল কাজের সাথে জড়িত থাকেন।
গ উত্তর: সাইফুর রহমান ব্যবস্থাপনার সংগঠন কার্যের সাথে জড়িত।
সংগঠন বলতে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন মানবীয় ও অমানবীয় উপাদান সংগ্রহ, একত্রীকরণ, দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্ধারণ করাকে বোঝায়। এর মাধ্যমে কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্দিষ্ট করা হয়।
উদ্দীপকের সাইফুর রহমান নাইন-স্টার গ্র“পের ব্যবস্থাপক। তিনি প্রতিষ্ঠানে কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী কাজ ভাগ করেন। তিনি কর্মীদের দায়িত্ব প্রদানের সাথে সাথে কর্তৃত্বও প্রদান করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের বস্তুগত ও অবস্তুগত উপাদানসমূহ একত্রিত করে কর্মীদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের খোঁজ-খবরও রাখেন।
এর ফলে লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের কাজ সহজে করতে পারেন। সুতরাং, সাইফুর রহমানের এ কাজের দ্বারা প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের মধ্যে যে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়, তা ব্যবস্থাপনার সংগঠন কাজের আওতাভুক্ত।
ঘ উত্তর: নাইন-স্টার গ্র“পের সফলতায় কর্মীদের জবাবদিহিতার ভ‚মিকা অপরিসীম।
অন্যকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার কৌশলই হলো ব্যবস্থাপনা। উত্তম ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের সফলতা অর্জনে সহায়ক। ব্যবস্থাপনার অন্যতম কাজ হলো সংগঠন।
উদ্দীপকের সাইফুর রহমান সংগঠন কাজটি দ্বারা কর্মীদের কেবল দায়িত্বই প্রদান করেন না, সাথে সাথে যথাযথ কর্তৃত্বও অর্পণ করেন।
তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য সহজে বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানের বস্তুগত ও অবস্তুগত উপাদানসমূহ একত্রিত করেন। পরবর্তীতে এর আলোকে কর্মীদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেন।
সাইফুর রহমানের জবাবদিহিতা কাজটি দ্বারা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা সর্বদা তাদের কাজ সম্পর্কে সচেতন থাকেন। তারা তাদের সর্বোচ্চ দক্ষতা প্রয়োগের মাধ্যমে নাইন-স্টার গ্র“পের সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করেন। তাই বলা যায়, জবাবদিহিতার মাধ্যমে নাইন-স্টার গ্র“পের সফলতা অর্জিত হয়েছে।
প্রশ্নঃ ৭ সৃষ্টির আদি থেকে ব্যবস্থাপনার উৎপত্তি। সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে তা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এজন্য একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও দার্শনিক বলেছেন, ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’। বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা বিশারদ ও মনীষীদের গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আধুনিককালে একজন ব্যবস্থাপনা বিশারদের ১৪টি নীতি ব্যবস্থাপনার প্রয়োগের ক্ষেত্রকে প্রসারিত করেছে। [রা. বো. ১৬]
ক. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনকের নাম কী? ১
খ. চিত্রসহ ব্যবস্থাপনা চক্র ব্যাখ্যা করো। ২
গ. ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’ এ কথাটি কে এবং কেন বলেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. প্রদত্ত ১৪টি নীতি কীভাবে ব্যবস্থাপনার প্রয়োগ ও প্রসারে ভ‚মিকা রাখছে তা বিশ্লেষণ করো। ৪
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনকের নাম ফ্রেডেরিক উইন্সলো ।
খ উত্তর: ব্যবস্থাপনার মৌলিক কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে পরপর চলতে থাকাকে বলে ব্যবস্থাপনা চক্র।
ব্যবস্থাপনার প্রতিটি মৌলিক কার্যই ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া পরিকল্পনার মাধ্যমে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে চলতে চলতে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শেষ হয় এবং পুনরায় পরিকল্পনার মাধ্যমে শুরু হয়।
এ চক্রাকারে আবর্তিত হওয়াকেই ব্যবস্থাপনা চক্র বলে। ব্যবস্থাপনা চক্রে ধারাবাহিকভাবে পরিকল্পনা, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন এবং সর্বশেষ নিয়ন্ত্রণে গিয়ে শেষ হয়।
গ উত্তর: ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’ কথাটি বলেছেন গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস।
ব্যবস্থাপনার সর্বজনীনতা বলতে সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার আবশ্যকতা বা ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের প্রয়োগ যোগ্যতাকে বোঝায়। ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় সম্পাদিত সব কাজ যেমন বড় ধরনের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তেমনি সর্বক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের প্রয়োগ পরিলক্ষিত হয়।
উদ্দীপকে সৃষ্টির আদি থেকে ব্যবস্থাপনার উৎপত্তি। সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে পরিবার, সমাজব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটে। ফলে ব্যবস্থাপনার প্রসার বাড়ে। পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনা তথা সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয় । ছোট-বড় সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার এ ধারা বজায় থাকে। তাই সক্রেটিস বলেন ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন।
ঘ উত্তর: ব্যবস্থাপনার নীতি হলো ব্যবস্থাপকীয় কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে নির্দেশকস্বরূপ।
ব্যবস্থাপনা কার্য সম্পাদনের সাধারণ পথনির্দেশনা হলো ব্যবস্থাপনার নীতি। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্থাপনার কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে ব্যবস্থাপকগণ যেসব নিয়ম-নীতি পালন করছেন, তা-ই নীতি হিসেবে গণ্য।
উদ্দীপকে সৃষ্টির আদি থেকে মানুষ ব্যবস্থাপনার উৎপত্তি লক্ষ করেছেন পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেয়ল ১৪টি মূলনীতি নির্দেশ করেছেন। প্রথমটি হলো কার্য বিভাজন, যা কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব সঠিকভাবে নির্দেশ করে।
এ ১৪টি মূলনীতির আলোকে হেনরি ফেয়ল অধস্তনদের কার্য ভাগ করে দেন, দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্দিষ্ট করেন, প্রয়োজনীয় আদেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান করেন। একই সাথে তিনি শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা, কাজের সমতা, স্থায়িত্ব ও কাজের একতার প্রতি দৃষ্টি রাখেন।
ফলে ব্যবস্থাপনা বা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দায়িত্ব ও কর্তব্য সুশৃঙ্খলভাবে পালিত হয়, যা আধুনিককালে শ্রমিক ও অধস্তনদের মাঝে দূরত্ব কমে। তাই বলা যায়, হেনরি ফেয়লের ১৪টি মূলনীতি সর্বক্ষেত্রে সমান গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্নঃ ৮ মি. জালাল শাহ “জয়হার টেক্সটাইল লি.”-এর একজন কর্মকর্তা। তিনি কোম্পানির নীতি, আদর্শ, কর্মপদ্ধতি, পরিকল্পনা, কর্মউদ্যোগ প্রভৃতি নিয়ে কাজ করেন। মি. আহসান ঐ প্রতিষ্ঠানেরই অন্য একজন কর্মকর্তা। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মীদের পরিচালনা করেন। তাদের উভয়ের কর্মকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানটি একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি। [দি. বো. ১৬]
ক. ব্যবস্থাপনা কী? ১
খ. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. মি. জামাল শাহ ও মি. আহসান প্রতিষ্ঠানটির কোন কোন পর্যায়ে কাজ করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. মি. জালাল শাহ ও মি. আহসান একে অপরের পরিপূরক; তাদের যৌথ কার্যকলাপ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের চাবিকাঠি ব্যাখ্যা করো। ৪
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সম্পদসমূহকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা বলে।
খ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পরিচালিত ব্যবস্থাপনাই মূলত বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা।
এফ. ডব্লিউ. টেলর সাধারণ শিক্ষানবিশ থেকে প্রধান প্রকৌশলী পর্যন্ত বিভিন্ন পদে দীর্ঘ যুগ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তার কাছে শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যা ধরা পড়ে।
তিনি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের পন্থা নিয়ে দীর্ঘ দুই দশক গবেষণা চালান। এভাবে তিনি তার গবেষণাকর্মের ফলাফলকে একটা দর্শনে রূপদান করেন, যা বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা নামে পরিচিত।
গ মি. জালাল শাহ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনার উচ্চপর্যায়ে এবং মি. আহসান মধ্যম পর্যায়ে কাজ করেন।
উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা বলতে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতিনির্ধারণের সাথে ব্যবস্থাপনার যে স্তর জড়িত থাকে, তাকে বোঝায়। অপরদিকে যারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সাথে জড়িত থাকেন, তাদের মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপনা বলে।
জয়হার টেক্সটাইল লি.-এর কর্মকর্তা মি. জালাল শাহ কোম্পানির নীতি, আদর্শ, কর্মপন্থা, পরিকল্পনা, কর্মউদ্যোগ প্রভৃতি নিয়ে কাজ করেন। এক্ষেত্রে মি. জালাল শাহ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরে অবস্থান করেন।
অন্যদিকে ঐ প্রতিষ্ঠানেরই অন্য একজন কর্মকর্তা মি. আহসান প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মীদের পরিচালনা করেন। প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মীদের এরূপ পরিচালনা করা ব্যবস্থাপনার মধ্যস্তরের কাজ। তাই বলা যায়, মি. আহসান মধ্যস্তরের কর্মকর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনার মধ্যম পর্যায়ে কাজ করেন।
ঘ মি. জালাল শাহ এবং মি. আহসান একে অপরের পরিপূরক; তাদের যৌথ কার্যকলাপ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের চাবিকাঠিকথাটি সম্পূর্ণরূপে সমর্থনযোগ্য।
প্রাতিষ্ঠানিক সফলতা অর্জন এবং উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগ, উপবিভাগ এবং ব্যক্তির সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তর এবং এসব স্তরের কর্মকর্তা এসব বিভাগ এবং উপবিভাগে অবস্থান করেন। তাদের সম্মিলিত প্রয়াস প্রতিষ্ঠানের সফলতা অর্জন এবং উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করে।
মি. জালাল শাহ জয়হার টেক্সটাইল লি.-এর একজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা। তিনি কোম্পানির নীতি, আদর্শ, কর্মপদ্ধতি, পরিকল্পনা, কর্মউদ্যোগ প্রভৃতি নিয়ে কাজ করেন। অন্যদিকে মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা মি. আহসান প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মীদের পরিচালনা করেন।
মি. জালাল শাহ প্রণীত নীতি, আদর্শ, কর্মপদ্ধতি, পরিকল্পনা, কর্মউদ্যোগ ইত্যাদির আলোকে মি. আহসান কাজ করেন। তাই মি. জালাল শাহের কাজের যথার্থতার ওপর মি. আহসানের কাজের সফলতা নির্ভর করে।
আবার মি. আহসান তার কাজ যথার্থভাবে সম্পাদন করলেই মি. জালাল শাহ কর্তৃক প্রণীত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হবে। তাদের যেকোনো একজনের কাজ সঠিকভাবে সম্পাদিত না হলে প্রতিষ্ঠান সফলতা অর্জন করতে পারবে না। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের বিবৃতিটি সম্পূর্ণরূপে সমর্থনযোগ্য।
প্রশ্নঃ ৯ জনাব সাকিব ডুয়েল নির্মাণ কোম্পানির টঙ্গী প্রকল্পের একজন সুপারভাইজার। কাজের জন্য তাকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব রহিম ও প্রকৌশলী জনাব সাজ্জাদের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। একই সময়ে দুইজন বসের নিকট জবাবদিহিতার কারণে তার কাজের গতিশীলতা ব্যাহত হয়। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরে আনার কথা ভাবছেন। [কু. বো. ১৬]
ক. ব্যবস্থাপনা চক্র কী? ১
খ. ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’ বুঝিয়ে লেখো। ২
গ. উদ্দীপকে জনাব সাকিব ব্যবস্থাপনার কোন স্তরের দায়িত্ব পালন করছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত সাকিবের কাজে গতিশীলতা আনয়নে করণীয় সম্পর্কে তোমার অভিমত দাও। ৪
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: ব্যবস্থাপনার মৌলিক কাজগুলো (পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণ) পরপর আবর্তিত হওয়াকে ব্যবস্থাপনা চক্র বলে।
খ উত্তর: ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’ উক্তিটি গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের। ব্যবস্থাপনার সর্বজনীনতা বলতে সর্বত্র, সব ক্ষেত্রে, সকলের দ্বারা স্বীকৃত ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের আবশ্যকতা ও প্রয়োগ যোগ্যতাকে বোঝায়।
পরিবার, রাষ্ট্র এবং ব্যবসায় সংগঠনের সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি (পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, নির্দেশনা, প্রেষণা ও নিয়ন্ত্রণ) প্রয়োগ করা হয়।
স্থানীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি, সামাজিক রীতি-নীতি ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে।
তবে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। তাই ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলা হয়।
গ উত্তর: উদ্দীপকে জনাব সাকিব ব্যবস্থাপনার নিস্তরের দায়িত্ব পালন করছেন।
নি পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলতে মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃক গৃহীত পরিকল্পনা ও নীতি কৌশল মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনাকে বোঝায়। এরা সরাসরি শ্রমিক-কর্মীদের সাথে সম্পৃক্ত থাকেন।
জনাব সাকিব ডুয়েল নির্মাণ কোম্পানির নি পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি উক্ত কোম্পানির টঙ্গী প্রকল্পের একজন সুপারভাইজার। কাজের জন্য তাকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও প্রকৌশলী অর্থাৎ মধ্যম পর্যায়ে ব্যবস্থাপকদের নিকট জবাবদিহি করতে হয়।
জনাব সাকিব একজন নিস্তরের ব্যবস্থাপক হওয়ায় তার কাজ হলো মধ্যম স্তরের ব্যবস্থাপকদের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা। তাই নিজের কাজের জন্য তাকে মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপকদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়।
উচ্চপর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ চিন্তা বা কর্মপরিকল্পনার সাথে জড়িত। আর জনাব সাকিবের মতো নি পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ তা বাস্তবায়নের সাথে জড়িত।
ঘ উত্তর: জনাব সাকিবের কাজে গতিশীলতা আনয়নে করণীয় হলো আদেশের ঐক্য নীতির বাস্তবায়ন করা।
একজন কর্মীর আদেশকর্তা হবেন একজন মাত্র ব্যক্তি। এরূপ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতকরণের নীতিকে ব্যবস্থাপনার আদেশের ঐক্য নীতি বলে।
জনাব সাকিবকে তার কাজের জন্য একই সময়ে দুইজন ঊর্ধ্বতনের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। এতে তার কাজের গতিশীলতা ব্যাহত হয়। ফলে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর কথা ভাবছেন।
জনাব সাকিবকে দু’জন আদেশকর্তা দু’ধরনের আদেশ দেন এবং তাকে দু’জনের নিকট কাজের জবাবদিহি করতে হয়। এ কারণেই তার পক্ষে সুষ্ঠুভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তাই তার কাজের গতিশীলতা আনয়নে আদেশের ঐক্য নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (১ম পত্র) ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা ১ম পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(১ম পত্র)১ম: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্ন উত্তরসহ PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্নের উত্তরসহ অধ্যায়-১: PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC অধ্যায়-১: প্রশ্নের উত্তরসহ ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তরPDF
প্রশ্নঃ ১০ মি. আকরাম একজন দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বার্ষিক ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) পিস শার্ট তৈরির জন্য একটি কারখানা স্থাপন করেন। সব উপকরণ ও সরঞ্জামাদি সন্নিবেশিত করার মাধ্যমে শতভাগ সফলতা অর্জন করেন। ব্যাপক সাফল্যে তিনি বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) পিস শার্ট নির্ধারণ করেন এবং সেজন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, জনবল ইত্যাদির ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু বছর শেষে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলেন। [সি. বো. ১৬]
ক. শিল্প বিপ্লব কী? ১
খ. ব্যবস্থাপনা চক্র বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে জনাব আকরামের সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থাপনার সফল প্রয়োগের অভাবই জনাব আকরামের ব্যর্থতার মূল কারণ” বিশ্লেষণ করো। ৪
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: যান্ত্রিক শক্তি আবিষ্কার ও ব্যবহারের ফলে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষে ইউরোপ ও আমেরিকার শিল্পজগতে পণ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। উৎপাদন ব্যবস্থার এ পরিবর্তনই শিল্প বিপ্লব নামে পরিচিত।
খ উত্তর:ব্যবস্থাপনার কার্যসমূহ চক্রাকারে আবর্তিত হওয়াকে ব্যবস্থাপনা চক্র বলে।
ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো পরিকল্পনা করা। পরিকল্পনার আলোকে কর্মীসংস্থান করা হয়, অতঃপর তাদেরকে কাজের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কাজের গতি ও নির্ভুলতা নিশ্চিতের জন্য কর্মীদেরকে প্রেষণা প্রদান করা হয়।
এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজগুলো হচ্ছে কি না তার সমন্বয় ও প্রয়োজনমতো নিয়ন্ত্রণ কার্যসম্পাদন করা হয়।
নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কোনো ত্র“টি-বিচ্যুতি পাওয়া গেলে তা সংশোধনের জন্য আবার পরিকল্পনা করা হয়। এ কাজগুলো একটার পর একটা চক্রাকারে বাস্তবায়িত হয়ে থাকে। তাই একে ব্যবস্থাপনা চক্র বলা হয়।
গ উত্তর:জনাব আকরামের সাফল্যের কারণ সঠিক ব্যবস্থাপনা।
উপকরণাদির কার্যকর ব্যবহার করে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যার্জনের জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কার্যকে ব্যবস্থাপনা বলে। ব্যবস্থাপক সঠিক ব্যবস্থাপনায় উপকরণাদি, প্রক্রিয়া, পদ্ধতি কৌশল ইত্যাদির যথাযথ ব্যবহার করেন। সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়।
মি. আকরাম একজন দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বার্ষিক ১০০.০০০ পিস শার্ট তৈরির জন্য একটি কারখানা স্থাপন করেন। তিনি সব উপকরণ ও সরঞ্জামাদি সন্নিবেশিত করার মাধ্যমে শতভাগ সাফল্য অর্জন করেন।
জনাব আকরাম ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় উপকরণাদির সঠিক প্রয়োগ ও কার্য পরিচালনা করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেন। তিনি দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় সঠিক সময়ে দক্ষতার সাথে ব্যবস্থাপনার কাজ পরিচালনা করেন
। শ্রমিক-কর্মচারীদের সঠিকভাবে পরিচালনার মাধ্যমে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করেছেন। তাই বলা যায়, সঠিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োগের ফলে জনাব আকরাম সফল হয়েছেন।
ঘ উত্তর: বৃহদায়তন উৎপাদনে ব্যবস্থাপনার সফল প্রয়োগের অভাবই জনাব আকরামের ব্যর্থতার মূল কারণ।
ব্যবস্থাপনা হলো মানবীয় ও বস্তুগত উপকরণাদির কার্যকর ব্যবহার করে লক্ষ্যার্জনের প্রচেষ্টা। ব্যবস্থাপনার প্রতিটি কাজ ধারাবাহিকভাবে সম্পাদিত হয়। ব্যবস্থাপনা উৎপাদনের উপকরণ ভ‚মি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠনের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে।
জনাব আকরাম একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ছোট পরিসরে একটি শার্ট তৈরির কারখানা স্থাপন করেন। তিনি সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রথমে শতভাগ সাফল্য অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ব্যবসায় সম্প্রসারণ এবং বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ করেন। সেজন্য প্রয়োজনীয় সব উপকরণ, যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, জনবল ইত্যাদির ব্যবস্থা করেন।
জনাব আকরাম বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় দক্ষ ছিলেন না। ফলে বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় কারখানার সব উপকরণ, জনবল, সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। লক্ষ্য অনুযায়ী কার্যপরিচালনা ও তদারকির ব্যবস্থা রাখার মাধ্যমে কার্যপরিচালনা করতে হয়।
উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ করায় জনাব আকরাম উৎপাদনের উপকরণগুলোর যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন কার্যাবলি সম্পাদন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
সুতরাং বলা যায়, বৃহদায়তন উৎপাদনে ব্যবস্থাপনার সফল প্রয়োগের অভাবই জনাব আকরামের ব্যর্থতার কারণ।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।