SSC | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ১০ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর | PDF : বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পত্রের দশম অধ্যায় হতে গুরুত্বপূর্ণ সব সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পত্রের দশম অধ্যায় হতে গুরুত্বপূর্ণ সব সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
আতিক ‘ক’ দেশের নাগরিক। ঐ দেশে তিনি ব্যক্তিগতভাবে শিল্প কারখানা স্থাপন করে অনেক ব্যক্তিকে তার শিল্প কারখানায় নিয়োগ দিয়েছেন। আবার আরিফ ‘খ’ রাষ্ট্রে বসবাস করেন এবং এ রাষ্ট্রে ব্যক্তিগতভাবে শিল্প কারখানা স্থাপনের কোন সুযোগ নেই। সকল সম্পদের মালিক রাষ্ট্র।
ক. বর্তমানে বাংলাদেশে কোন অর্থব্যবস্থা বিদ্যমান ?
খ. জাতীয় সম্পদ বলতে কী বোঝ ?
গ. ‘ক’ রাষ্ট্রে কোন ধরনের অর্থ ব্যবস্থা বিদ্যমান ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘ক’ রাষ্ট্রের সাথে ‘খ’ রাষ্ট্রের অর্থব্যবস্থার বৈসাদৃশ্যগুলো বিশ্লেষণ করো।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. বর্তমানে বাংলাদেশে মিশ্র অথর্তব্যবস্থা বিদ্যমান।
খ. রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের ব্যক্তিগত সম্পদ এবং সমাজের সমষ্টিগত সম্পদকে একত্রে জাতীয় সম্পদের উৎস হলো প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানবসৃষ্ট সম্পদ। এছাড়াও জাতির কোনো গুণবাচক বৈশিষ্ট্যও জাতীয় সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। যেমন- কর্মদক্ষতা, উদ্ভাবনী শক্তি, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ইত্যাদি।
গ. উদ্দীপকের ‘ক’ দেশে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা বিদ্যমান।
ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় উৎপাদনের উপাদানসমূহ ব্যক্তিমালিকানাধীন। অর্থাৎ ব্যক্তি তার সম্পদ/ আয়ের সাহায্যে ভ‚মির মালিকানা অর্জন করতে পারে, শ্রমিককে নিয়োগ দিতে পারে, মূলধন বা পুঁজি গঠন করতে পারে। সম্পদ ভোগ বা হস্তান্তরসহ সকল বিষয়ে ব্যক্তি নিজেই সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
উদ্দীপকে বর্ণিত আতিক ‘ক’ নামক দেশের নাগরিক। এ দেশে তিনি নিজের উদ্যোগে শিল্পকারখানা স্থাপন করেছেন। নিজেই অনেক লোক কারখানায় নিয়োগ দিয়েছে। ফলে ‘ক’ নামক দেশটি অর্থব্যবস্থায় ব্যক্তিমালিকানার বিষয়টি লক্ষণীয়। অর্থৎ দেশটিতে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ নামক দেশে ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এবং ‘খ’ নামক দেশে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রচলিত। নিচে এ দুই অর্থব্যবস্থার মধ্যে বৈসাদ্রশ্য দেখানো হলো-
প্রথমত, ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় জমি, কলকারখানা ও অন্যান্য সম্পত্তির ব্যক্তিগত মালিকানা বজায় থাকে। কিন্তু সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জমি, কলকারখানা, খনি ও অন্যান্য সম্পদের ওপর রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক মালিকানা বজায় থাকে ।
দ্বিতীয়ত, ধনতান্ত্রিক অর্তব্যবস্থায় সকল ব্যক্তি তাদের ইচ্ছা ও সুবিধা অনুযায়ী উৎপাদন, কলকারখানা স্থাপন, ব্যবসায় বানিজ্য ইত্যাদি কাজকর্ম করে সম্পদ অর্জন করে। অন্যদিকে, সমাজতন্ত্রে সব সম্পদ বা উৎপাদনের উপকরণগুলো রাষ্ট্রের মালেকানা বজায় থাকে।
দ্বিতীয়ত, ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় প্রত্যেক ভোক্তা তার সামর্থ্য, ইচ্ছা ও পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো দ্রব্য অবাধে ভোগ করতে পারে। কিন্তু সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় দেশে কেবল সরকারি উদ্যোগে সমাজের প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন ও আমদানি করা হয়।
উদ্দীপকে লক্ষনীয় যে, ‘ক’ নামক দেশের নাগরিক আতিক সাহেব ব্যক্তিগত উদ্যোগেই শিল্প কারখানা স্থাপন করতে পারে। কিন্তু ‘খ’ দেশের নাগরিক জনাব আরিফ তা পারেন না। কারণ আতিক সাহেবের দেশে ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিদ্যমান। অন্যদিকে, জনাব আরিফ সাহেবের দেশে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিদ্যমান।
পরিশেষে বলা যায়, উৎপাদনের মালিকানার প্রেক্ষাপটে ‘ক’ ও ‘খ’ রাষ্ট্র দুটি ভিন্ন ধাচের। যার একটিতে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা বিদ্যমান থাকলেও অন্যটিতে সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা বিদ্যমান। সঙ্গতকারণেই উপর্যুক্ত আলোচনায় এই অর্থব্যবস্থার বৈসাদৃশ্যগুলোই পরিলক্ষিত হয়।
২নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ
মির্জা সাহেব এক কোটি টাকায় গ্রামের রাস্তার পাশে ২৫ একর জমি ক্রয় করে তাতে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি স্থাপন করেন এবং ২০০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী দিনরাত কাজ করে। উক্ত ফ্যাক্টরি হতে তিনি প্রচুর মুনাফা পান।
ক. বিনিয়োগ কী ?
খ. জাতীয় সম্পদের ব্যাখ্যা দাও।
গ. উক্ত উৎপাদন ব্যবস্থায় মির্জা সাহেব উৎপাদনের কোন উপকরণের অন্তভর্‚ক্ত ? বর্ণনা কর।
ঘ. বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উক্ত শিল্পটির অবদান বিশ্লেষণ করো।
২নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. উৎপাদন কাজে নিয়োজিত অর্থ হচ্ছে বিনিয়োগ।
খ. রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের ব্যক্তিগত সম্পদ এবং সমাজের সমষ্টিগত সম্পদকে একত্রে জাতীয় সম্পদের উৎস হলো প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানবসৃষ্ট সম্পদ। এছাড়াও জাতির কোনো গুণবাচক বৈশিষ্ট্যও জাতীয় সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। যেমন- কর্মদক্ষতা, উদ্ভাবনী শক্তি, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ইত্যাদি।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ধনতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থায় মির্জা সাহেব উৎপাদনের চারটি উপকরণের মধ্যে সংগঠন এর অন্তর্ভুক্ত। উৎপাদনের চারটি উপকরণের মধ্যে অন্যতম একটি হলো সংগঠক। একজন সংগঠক উৎপাদনের অন্যান্য উপকরণসমূহ সমন্বয় করে উপাদন কার্য পরিচালনা করেন।
যেমন- একটি শপিংমল নির্মান করতে ভ‚মির প্রয়োজন হয়। শপিংমল নির্মাণের জন্য শ্রমিক নিয়োগ করতে হয়। শপিংমল নির্মাণের জন্য যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ এবং অর্থ প্রয়োজন, এই অর্থ ও যন্ত্রপাতি মূলধন। আর এই ভ‚মি, মূলধন, শ্রমিকে সমন্বিত করে শপিংমল নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পাদন করবেন সংগঠক বা উদ্যোক্তা।
উদ্দীপকে লক্ষ করি, মির্জা সাহেব জমি ক্রয় করে তাতে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি স্থাপন করে কর্মকর্তা- কর্মচারী নিয়োগ করেন তথা একজন সংগঠক বা উদ্যোক্তার কাজ করেন। সুতরাং উদ্দীপকে উল্লিখিত উৎপাদন ব্যবস্থায় মির্জা সাহেব একজন উদ্যোক্তা এবং উৎপাদনের উপকরণের মধ্যে তিনি সংগঠন এর অন্তর্ভূক্ত।
- আরো পড়ুন:-পৌরনীতি ও নাগরিকতা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর প্রথম অধ্যায়
- আরো পড়ুন:-অনার্স প্লেটো:পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রচিন্তা রচনামূলক প্রশ্নোত্তর PDF
- আরো পড়ুন:- PDF অনার্স প্লেটো:পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রচিন্তা রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-PDF অনার্স প্লেটো:পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রচিন্তা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-PDF অনার্স প্লেটো:পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রচিন্তা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- আরো পড়ুন:-অনার্স প্লেটো:পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রচিন্তা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরPDF
ঘ. বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উক্ত গার্মেন্টস ফ্যাস্টরি তথা পোশাক শিল্পের ব্যাপক অবদান রয়েছে। আশির দশকের রপ্তানি বানিজ্যে গার্মেন্টস শিল্পের অবদান ছিল না। কিন্তু বর্তমানে মোট রপ্তারি আয়ের ৭৫ ভাগ গার্মেন্টস শিল্প থেকে আসে।
বিজিএমই এর গবেষণা সেলের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিগত কয়েক বছরে নতুন বাজেটে রপ্তানি আয় দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। এটি সম্ভবপর হয়েছে বাজার সম্প্রসারণের ফলে। সরকারি পর্যায়ে আলোচনার ফলে আরও নতুন প্রায় ২৫টি দেশকে নতুন বাজার হিসেবে রপ্তানিকারকরা বিবেচনা করছে।
কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশে গার্মেন্ট শিল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার শিল্প উদ্যোক্তার সৃষ্টি হয়েছে। গার্মেন্টস শিল্পের কারণে স্পিনিং, উইভ, সিটিং জাইং, ফিনিশিং, প্রিন্টিং প্রভৃতি শিল্পের বিকাশ ঘটছে। গার্মেন্টস শিল্পের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে যাদের অধিকাংশ নারী।
উপরোক্ত আলোচলার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, উদ্দীপকে উল্লিখিত শিল্পটি নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের নতুন নতুন ক্ষেত্রে প্রস্তুত করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক সুদূরপ্রসারী প্রভাব রেখে চলেছে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।