ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় | অধ্যায় ১০ | সৃজনশীল প্রশ্ন ১-৫ | PDF: ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্রের দশম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্রের দশম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা ২য় | অধ্যায় ১০ | সৃজনশীল প্রশ্ন ১-৫ | PDF
প্রশ্ন ১: মি. সিহান তার বাবার সাথে একই বাড়িতে থাকেন। বাড়িটি সিহানের বাবার নামে। ভ‚মিকম্প হলে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই কথা চিন্তা করে মি. সিহান বাড়িটি বিমা করতে গেলে বিমা কোম্পানি বাড়িটি বিমা করতে স্বীকৃতি জানায়। তখন মি. সিহানের বাবা নিজেই বাড়িটি বিমা করেন। তারপর মি. সিহান বিমা কোম্পানিকে না জানিয়ে বাড়ির ২য় তলার কাজ শুরু করেন। ২য় তলার কাজ শেষ হওয়ার পরপরই বাড়িটি একপাশে হেলে যায়। মি. সিহানের বাবা বিমা দাবি পেশ করলে বিমা কোম্পানি বিমা দাবি পূরণে স্বীকৃতি জানায়। [ঢা. বো. ১৭]
ক.বিমা কী?১
খ.বিমাযোগ্য স্বাঅর্থ বলতে কী বোঝায়?২
গ.কোন নীতির জঅন্য মি. সিহানের প্রস্তাবে বিমা কোম্পানি বাড়িটি বিমা করতে সম্মত হয়নি? ব্যাখ্যা করো।৩
ঘ.উদ্দীপকের আলোকে সিহানের বাবা কি বিমা দাবি পাওয়ার যোগ্য? বিশ্লেষণ করো।৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বিমা হলো এক ধরনের লিখিত চুক্তি, যেখানে বিমাগ্রহীতা নির্দিষ্ট প্রিমিয়ামের বিনিময়ে তার সম্ভাব্য ঝুঁকি বা বিপদের ভার বিমাকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর র্পণ করে।
খ উত্তর: বিমাকৃত বিষয়বস্তুতে বিমাগ্রহীতার যে আঅর্থিক স্বাঅর্থ থাকে তাকে বিমাযোগ্য স্বাঅর্থ বলে। এ ধরনের স্বাঅর্থ না থাকলে বিমা চুক্তি করা যায় না।
সাধারণত বিমাযোগ্য স্বাঅর্থ বিমাকারী প্রতিষ্ঠান দ্বারা সংরক্ষিত হয়। মূলত বিমার বিষয়বস্তুর ওপর বিমাকারীর আঅর্থিক স্বাঅর্থ থাকে এবং বিমাকারী প্রতিষ্ঠান এ বিমাকৃত বিষয়বস্তুর আঅর্থিক ক্ষতি হলে তা পূরণের দায়িত্ব গ্রহণ করে।
গ উত্তর: উদ্দীপকে বিমাযোগ্য স্বাঅর্থের ভাবে মি. সিহানের বিমা চুক্তির প্রস্তাব বিমা কোম্পানি প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিমাযোগ্য স্বাঅর্থ বলতে মালিকানা স্বত্ব বা আঅর্থিক স্বাঅর্থকে বোঝায়। অর্থাৎ বিমাকৃত বিষয়বস্তুর ক্ষতিতে বিমাগ্রহীতার আঅর্থিক ক্ষতির বিষয়টি জড়িত থাকে।
উদ্দীপকে মি. সিহান যে বাড়িতে বাস করেন তা তার বাবার নামে ছিল। অর্থাৎ বাড়িটির প্রকৃত মালিক মি. সিহানের বাবা। ভ‚মিকম্পজনিত ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে মি. সিহান বাড়িটি বিমা করার প্রস্তাব করলে বিমা কোম্পানি এতে স্বীকৃতি জানায়।
এক্ষেত্রে বিমা কোম্পানি মূলত বিমাযোগ্য স্বাঅর্থের নীতির আলোকে বিমা প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ বাড়িটি ভ‚মিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রকৃতপক্ষে বাড়িটির মালিক মি. সিহানের বাবা আঅর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, যা মি. সিহানের ওপর প্রত্যক্ষভাবে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকের উলেখ্য পরিস্থিতিতে প্রত্যক্ষ কারণে ক্ষতিপূরণ ও সদ্বিশ্বাসের নীতি লঙ্ঘিত হওয়ায় মি. সিহানের বাবা বিমা দাবি আদায়ে যোগ্য হবেন।
বিমা চুক্তি দ্বারা বিমাকারী ও বিমাগ্রহীতার মধ্যে সদ্বিশ্বাসের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। আর তাই উভয় পক্ষ বিমা সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সঠিকভাবে প্রদানে বাধ্য থাকে।
উদ্দীপকে মি. সিহানের বাবা নিজ মালিকানাধীন বাড়িটি বিমা করেন। এক্ষেত্রে বিষয়বস্তুর ক্ষতির সম্ভাব্য ঝুঁকি হিসেবে ভ‚মিকম্পকে উলেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে মি. সিহান বিমা কোম্পানিকে না জানিয়ে বাড়ির ২য় তলার কাজ শুরু করেন। যার প্রেক্ষিতে বাড়িটি একপাশে হেলে পরে, যা বিমা শর্তের ন্তর্ভূক্ত ছিল না।
উলেখ্য পরিস্থিতিতে মি. সিহানের বাবা বিমা দাবি পাওয়ার যোগ্য। কারণ বিমাকৃত বাড়িটির সম্ভব্য ঝুঁকি হিসেবে ভ‚মিকম্পকে উলেখ করা হলেও তা পুনঃনির্মাণ ত্র“টিতে হেলে পড়ে।
এর দ্বারা বিমা চুক্তির প্রত্যক্ষ কারণ নীতির ব্যত্যয় (ঠরড়ষধঃব) ঘটেছে। এছাড়াও মি. সিহান বাড়ির পুনঃনির্মাণের বিষয়টি বিমা কোম্পানির নিকট গোপন করেছেন, যা বিমা চুক্তির সদ্বিশ্বাসের সম্পর্ককে লঙ্ঘন করেছে। তাই মি. সিহানের বাবা বিমা দাবি আদায় করতে পারবেন না।
প্রশ্ন ২: জনাব জমিরের একটি পোশাক তৈরির কারখানা আছে। তিনি তার প্রতিষ্ঠানটি ৫০ লক্ষ টাকায় বিমা করেছিলেন। দুর্ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং জনাব জমির বিমা দাবি পেশ করেন। বিমা কোম্পানি সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। উদ্ধারকৃত সম্পত্তি বিমা কোম্পানি দাবি করায়, জনাব জমির শুরুতে তা হস্তান্তরে স্বীকৃতি জানালেও পরবর্তীতে তা প্রদানে বাধ্য হন। [রা. বো. ১৭]
ক.বিমা কাকে বলে?১
খ.বিমাকে পরম বিশ্বাসের চুক্তি বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।২
গ.উদ্দীপকে উলিখিত সম্পত্তি হস্তান্তর বিমার কোন নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? আলোচনা করো।৩
ঘ. সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পরেও জনাব জমিরের সম্পত্তি হস্তান্তরে স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কি না? তোমার মতামত দাও। ৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বিমা হলো এক ধরনের লিখিত চুক্তি, যেখানে বিমাগ্রহীতা নির্দিষ্ট প্রিমিয়ামের বিনিময়ে তার সম্ভাব্য ঝুঁকি বা বিপদের দায় বিমাকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর র্পণ করেন।
খ উত্তর: বিমাকারী ও বিমাগ্রহীতা উভয়পক্ষই আবশ্যকীয় সব তথ্য একে অন্যকে প্রদানে বাধ্য থাকেন বিধায় বিমা চুক্তিকে পরম বিশ্বাসের চুক্তি বলা হয়।
বিমা চুক্তির মাধ্যমে বিমাকারী ও বিমাগ্রহীতার মধ্যে সদ্বিশ্বাসের (ঋরফঁপরধৎু) সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। সে কারণে চুক্তিবদ্ধ পক্ষসমূহ একে অন্যের কাছে চুক্তির বিষয়ে সব তথ্য সঠিক ও সম্পূর্ণভাবে প্রকাশে বাধ্য থাকেন।
গ উত্তর: উদ্দীপকে উলিখিত সম্পত্তি হস্তান্তর বিমার স্থলাভিষিক্তকরণের (ঝঁনৎড়মধঃরড়হ) নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এই নীতি নুযায়ী, বিমাকৃত সম্পদের সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ করলে বিমা কোম্পানি ঐ সম্পত্তির ভগ্নাবশেষ বা যা কিছু বশিষ্ট থাকে তার মালিকানা পায়। এটি বিমা ব্যবসায়ের একটি অন্যতম মূলনীতি।
উদ্দীপকে জনাব জমিরের একটি পোশাক তৈরির কারখানা আছে। প্রতিষ্ঠানটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি বিমা কোম্পানির কাছে বিমা দাবি পেশ করেন। সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদানের পর বিমা কোম্পানি উদ্ধারকৃত সম্পত্তি হস্তান্তরের দাবি জানায়।
জনাব জমির প্রথমে এতে সম্মতি জানায়। কিন্তু তিনি পরে সম্পত্তি হস্তান্তরে বাধ্য হন। বিমার স্থলাভিষিক্তকরণের নীতিটি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়েছে বলা যায়। কারণ, এখানে বিমা কোম্পানি বিমাকৃত সম্পত্তির ক্ষতির সম্পƒর্ণ ংশের ক্ষতিপূরণ প্রদান করেছে। তাই এ নীতি নুযায়ী এ সম্পত্তির বশিষ্টাংশের মালিকানা পাবে বিমা কোম্পানি।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে জনাব জমিরের বিমাকৃত সম্পত্তি হস্তান্তরে স্বীকৃতির সিদ্ধান্তটি স্থলাভিষিক্তকরণ (ঝঁনৎড়মধঃরড়হ) নীতি নুযায়ী সঠিক ছিল না।
বিমা চুক্তির একটি পরিহার্য উপাদান হলো স্থলাভিষিক্তকরণ। বিমা চুক্তি নুযায়ী, সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করলে বিমা কোম্পানি বিমাকৃত সম্পত্তির বশিষ্ট ংশের মালিক হবে।
উদ্দীপকে জনাব জমির তার প্রতিষ্ঠানের জঅন্য বিমা করেন। দুর্ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হলে বিমা কোম্পানি তাকে সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। তবুও উদ্ধারযোগ্য সম্পত্তি হস্তান্তর করতে জনাব জমির স্বীকৃতি জানান।
এখানে, জনাব জমিরের প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি বিমাকৃত সম্পূর্ণ মূল্যই বিমা কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। অর্থাৎ তিনি তার অন্যায্য পাওনা পেয়েছেন।
স্থলাভিষিক্তকরণ নীতি নুযায়ী ক্ষতিপূরণকৃত সম্পত্তি থেকে যদি কিছু উদ্ধার করা যায়- তার মালিক হবে বিমা কোম্পানি। তাই বলা যায়, উদ্ধারযোগ্য সম্পত্তি হস্তান্তরে জনাব জমিরের স্বীকৃতি জানানো উচিত হয়নি।
প্রশ্ন ৩: মি. চৌধুরী জাহাজ ব্যবসায়ী। বিদেশ থেকে পণ্য আনা-নেয়া তার কাজ। বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লেগে তার একটি জাহাজের দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বিমা কোম্পানির কাছে সম্পূর্ণ জাহাজের ক্ষতিপূরণ চেয়ে বিমা দাবি পেশ করেন। বিমা কোম্পানি প্রথমে দাবি পূরণে পারগতা প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে শর্ত সাপেক্ষে তা পূরণ করতে চায়। [দি. বো. ১৭]
ক.বিমা কী?১
খ.বিমাকে পরম বিশ্বাসের চুক্তি বলা হয় কেন?২
গ.মি. চৌধুরীর দাবি পূরণে বিমা কোম্পানির পারগতা প্রকাশের কারণ কী?৩
ঘ.কি শর্তে বিমা কোম্পানি মি. চৌধুরীর দাবি পূরণ করবে বলে তুমি মনে করো? তোমার মতের সপক্ষে যুক্তি দাও।৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বিমা হলো এক ধরনের লিখিত চুক্তি, যেখানে বিমাগ্রহীতা নির্দিষ্ট প্রিমিয়ামের বিনিময়ে তার সম্ভাব্য ঝুঁকি বা বিপদের ভার বিমাকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর র্পণ করে।
উদাহরণ : জনাব তাহমিদ একটি সুতার কারখানা স্থাপন করেন। তার কারখানার শ্রমিকদের কল্যাণের দায়িত্ব তার। এক্ষেত্রে জনাব তাহমিদ তার কারখানার ঝুঁকি মোকাবিলায় এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রদানে মুনলাইট বিমা কোম্পানি লি.-এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।
খ উত্তর: সৃজনশীল প্রশ্নের ২(খ) নং উত্তর দ্রষ্টব্য।
গ উত্তর: উদ্দীপকে মি. চৌধুরী আংশিক ক্ষতির বিপক্ষে সম্পূর্ণ জাহাজের ক্ষতিপূরণ দাবি করায় বিমা কোম্পানি দাবি পূরণে পারগতা প্রকাশ করে।
বিমা চুক্তি ক্ষতিপূরণের চুক্তি। এক্ষেত্রে বিষয়বস্তুর যতটুকু ক্ষতি হয় ততটুকু ক্ষতিপূরণ করাই বিমা চুক্তির উদ্দেশ্য। ক্ষতি আংশিক বা সম্পূর্ণ যাই হোক না কেন বিমা কোম্পানি বিমা চুক্তির শর্ত নুযায়ী তা পূরণ করে।
উদ্দীপকে মি. চৌধুরী জাহাজ ব্যবসায়ী। জাহাজের মাধ্যমে তিনি বিদেশ থেকে পণ্য আনা-নেয়া করেন। বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লেগে তার একটি জাহাজের দুই তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এক্ষেত্রে ক্ষতি আংশিক হলেও তিনি বিমা কোম্পানির কাছে সম্পূর্ণ জাহাজের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। তবে বিমা চুক্তির আইনগত উপাদান বিবেচনায় ক্ষতিপূরণ বশ্যই ক্ষতির পরিমাণ দ্বারা নির্ধারিত হতে হবে। অর্থাৎ মি. চৌধুরীর জাহাজের আংশিক ক্ষতিতে বিমা কোম্পানি সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণে বাধ্য নয়।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে বিমা কোম্পানি মি. চৌধুরীর দাবি পূরণে সমন্বিত আনুপাতিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে দাবি পরিশোধ করবে।
সমন্বিত আনুপাতিক ক্ষতি মূলত বিমাকৃত বিষয়বস্তুর আংশিক ক্ষতিতে নির্ধারণ করা হয়। এ ধরনের ক্ষতিতে বিমাকারী সর্বোচ্চ নির্ধারিত মূল্য পর্যন্ত বিমাগ্রহীতাকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকে।
উদ্দীপকে মি. চৌধুরী একজন জাহাজ ব্যবসায়ী। তার বিমাকৃত একটি জাহাজ বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুন লেগে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মি. চৌধুরী সম্পূর্ণ জাহাজের ক্ষতিপূরণ দাবি করলে বিমা কোম্পানি তা প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে বিমা কোম্পানি শর্ত সাপেক্ষে বিমা দাবি পরিশোধে সম্মত হয়।
বিমা কোম্পানি শর্ত সাপেক্ষে বিমা দাবি পরিশোধ বলতে বিমা চুক্তির আইনগত শর্তকে নির্দেশ করেছে। অর্থাৎ বিমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ নীতির আলোকে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে সেই পরিমাণ দাবি পরিশোধ করবে। আংশিক ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে বিমা কোম্পানি সমন্বিত আনুপাতিক ক্ষতি নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় ক্ষতির মূল্য নির্ধারণ করবে।
সমন্বিত আনুপাতিক ক্ষতি : বিমাকৃত বিষয়বস্তুর আংশিক ক্ষতি হলে এ পদ্ধতিতে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ সম্পত্তির বিমাকৃত মূল্যকে এর বাজার মূল্য দিয়ে ভাগ করে ক্ষতির পরিমাণ দ্বারা গুণ করা হয়। এর উদ্দেশ্য হলো, ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বাজারমূল্য হিসাবে বিমাগ্রহীতার প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা।
প্রশ্ন ৪: জনাব আশিক তার ব্যক্তিগত গাড়ির জঅন্য ‘চিত্রা বিমা কোম্পানি লি.’ হতে দশ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি বিমাপত্র গ্রহণ করেন। গাড়িটি হঠাৎ দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে তিনি বিমা কোম্পানির নিকট ক্ষতিপূরণের জঅন্য আবেদন করেন। বিমা কোম্পানিটি তার আবেদনের প্রেক্ষিতে যথাযথ নিয়মে ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। অন্যদিকে, বিমা কোম্পানি গাড়িটির ধ্বংসাবশেষ পঞ্চাশ হাজার টাকায় বিক্রয় করার পর জনাব আশিক সেটিও দাবি করেন। কিন্তু বিমা কোম্পানি তার দাবিটি প্রত্যাখ্যান করে। [চ. বো. ১৭]
ক.বিমা চুক্তি কী?১
খ.বিমাকে ‘কেন ঝুঁকি বণ্টনের ব্যবস্থা বলা হয়’? ব্যাখ্যা করো।২
গ.উদ্দীপকে জনাব আশিক কোন ধরনের সম্পত্তি বিমা গ্রহণ করেছেন? ব্যাখ্যা করো।৩
ঘ.উদ্দীপকে বিমা কোম্পানি কর্তৃক জনাব আশিকের সর্বশেষ দাবিটি প্রত্যাখ্যানের যৌক্তিকতা বিমার মূলনীতির আলোকে মূল্যায়ন করো।৪
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: প্রিমিয়ামের বিনিময়ে অন্যের ঝুঁকি নিজের কাঁধে নেয়ার জঅন্য বিমাকারী ও বিমাগ্রহীতার মধ্যে যে চুক্তি সম্পাদিত হয় তাকে বিমা চুক্তি বলে।
খ উত্তর: বিমার মাধ্যমে বিমাগ্রহীতা তার সম্ভাব্য ঝুঁকিকে কয়েকটি পক্ষের মধ্যে বণ্টন করে। তাই বিমাকে ঝুঁকি বণ্টনের যৌথ ব্যবস্থা বলা হয়।
বিমা হলো এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিমাগ্রহীতার ক্ষতিকে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে বণ্টনের ব্যবস্থা করা হয়।
এ ব্যবস্থায় বিমিকারী বিমাগ্রহীতাদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে কোনো বিমাগ্রহীতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাকে উক্ত প্রিমিয়াম থেকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়।
গ উত্তর: উদ্দীপকে জনাব আশিক যানবাহন বা মটর বিমা গ্রহণ করেছেন।
এ ধরনের বিমা মূলত যানবাহন বা মোটরযানকে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জঅন্য করা হয়। মানুষের জীবন ও যানবাহন (সম্পত্তি) উভয়ই এ বিমার মূল বিষয়বস্তু।
উদ্দীপকে জনাব আশিক তার ব্যক্তিগত গাড়ির জঅন্য চিত্রা বিমা কোম্পানি কাছ থেকে দশ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি বিমাপত্র গ্রহণ করেন। গাড়িটি হঠাৎ দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
এতে তিনি বিমা কোম্পানির নিকট ক্ষতিপূরণের জঅন্য আবেদন করেন এবং বিমা কোম্পানিও যথানিয়মে ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। এখানে জনাব আশিকের বিমার বিষয়বস্তু হলো তার ব্যক্তিগত গাড়ি।
মূলত দুর্ঘটনাজনিত কারণে উদ্ভ‚ত ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জঅন্যই তিনি এ বিমা করেন। এ সকল বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় বলা যায়, জনাব আশিকের গৃহীত বিমাপত্রটি হলো যানবাহন বা মটর বিমা।
ঘ উত্তর: উদ্দীপকে বিমা কোম্পানি কর্তৃক জনাব আশিকের সর্বশেষ দাবিটি প্রত্যাখ্যান করা বিমার স্থলাভিষিক্তকরণের নীতি নুযায়ী যৌক্তিক।
বিমা ব্যবসায়ের অন্যতম একটি মূলনীতি হলো স্থলাভিষিক্তকরণের নীতি। এ নীতি নুযায়ী সম্পত্তির সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদানের পর সম্পত্তির বশিষ্টাংশ বা উদ্ধারযোগ্য ংশের মালিকানা পাবে বিমা কোম্পানি।
উদ্দীপকে জনাব আশিক তার ব্যক্তিগত গাড়ির জঅন্য চিত্রা বিমা কোম্পানি হতে যানবাহন বিমাপত্র গ্রহণ করেন। দুর্ঘটনায় তার গাড়িটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে বিমা কোম্পানিটি এর সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করে।
পরবর্তীতে গাড়িটির ধ্বংসাবশেষ বিমা কোম্পানি ৫০ হাজার টাকায় বিক্রয় করে। জনাব আশিক সম্পত্তি বিক্রয়কৃত এ অর্থ দাবি করলে বিমা কোম্পানি তা প্রত্যাখ্যান করে।
উদ্দীপকে উলেখ্য দুর্ঘটনার কারণে আশিকের গাড়ির সম্পূর্ণ ংশই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। বিমা কোম্পানিও চুক্তি নুযায়ী তাকে সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। এক্ষেত্রে বিমার স্থলাভিষিক্তকরণের নীতি অনুযায়ী গাড়ির ধ্বংসাবশেষের মালিক হবে বিমা কোম্পানি।
আর এ কারণেই বিমা কোম্পানি গাড়ির ধ্বংসাবশেষ বিক্রির অর্থ জনাব আশিককে দিতে স্বীকৃতি জানায়, যা বশ্যই যৌক্তিক হয়েছে।
প্রশ্ন ৫: মিস তাসলিমা তার ব্যক্তিগত গাড়ির জঅন্য ত্রিশ লক্ষ টাকার বিমা করেন। দুর্ঘটনায় গাড়িটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মিস তাসলিমা বিমা দাবি পেশ করার কিছুদিনের মধ্যে বিমা প্রতিষ্ঠানটি দাবিকৃত ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটি কুমিলার একজন ব্যবসায়ী বিশ হাজার টাকায় কিনেন। গাড়ি বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ মিস তাসলিমা দাবি করলে বিমা প্রতিষ্ঠানটি উক্ত টাকা দিতে স্বীকৃতি জানায়। [রা. বো. ১৬]
ক. বিমাযোগ্য স্বাঅর্থ কী? ১
খ. নিয়ন্ত্রণ যোগ্য ঝুঁকি বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকের মিস তাসলিমা কোন নীতির আওতায় বিমা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থলাভ করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. বিমা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মিস তাসলিমার সর্বশেষ দাবি পূরণ না করার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো। ৪’
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক উত্তর: বিমাকৃত বিষয়বস্তুতে বিমাগ্রহীতার আঅর্থিক স্বাঅর্থকেই বিমাযোগ্য স্বাঅর্থ বলে।
খ উত্তর: যে ঝুঁকি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ সীমার বাইরের কোনো কারণ থেকে উদ্ভ‚ত হয় তাকে নিয়ন্ত্রণ যোগ্য ঝুঁকি বলে।
নিয়ন্ত্রণ যোগ্যতাকে সংজ্ঞায়িত করা হয় মানুষের সহায়ত্বের ভিত্তিতে।
অর্থাৎ এই ঝুঁকিসমূহ মানুষের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ধরনের ঝুঁকি প্রাকৃতিক বা প্রাকৃতিক উভয় কারণেই সৃষ্টি হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় বঅন্যা, খরা, ভ‚মিকম্প, গ্অন্যুৎপাত, যুদ্ধ, দাঙ্গা ইত্যাদি।
গ উত্তর: উদ্দীপকে মিস তাসলিমা বিমার আঅর্থিক ক্ষতিপূরণ নীতির আওতায় বিমা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থলাভ করেছেন।
আঅর্থিক ক্ষতিপূরণের নীতি হচ্ছে এমন একটি নীতি যার আওতায় বিমাগ্রহীতাকে আঅর্থিক সহায়তা এমনভাবে দেয়া হয় যেন বিমাগ্রহীতা এমন বস্থায় ফিরে যায় যে তার কোনো ক্ষতিই হয়নি।
উদ্দীপকে মিস তাসলিমা তার ব্যক্তিগত গাড়ির জঅন্য ত্রিশ লক্ষ টাকা বিমা করেন। দুর্ঘটনায় গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মিস তাসলিমা বিমাদাবি পেশ করেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই বিমাকারী দাবিকৃত ক্ষতিপূরণ প্রদান করে।
মূলত ক্ষতিপূরণের নীতি নুযায়ী বিমার বিষয়বস্তু ক্ষতিগ্রস্ত হলে এবং বিমাচুক্তির সব শর্ত মেনে চললে বিমাদাবি পেশ করার কিছুদিনের মধ্যেই যত দ্রুত পারা যায় বিমাকারী ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেয়, যা মিস তাসলিমার ক্ষেত্রে হয়েছে। অর্থাৎ মিস তাসলিমা বিমা ব্যবসায়ের ক্ষতিপূরণ নীতির আওতায় ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।
- উত্তর ডাউনলোড করুন> (১ম পত্র) ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা ১ম পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন
- উত্তর ডাউনলোড করুন>(১ম পত্র)১ম: ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্ন উত্তরসহ PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা প্রশ্নের উত্তরসহ অধ্যায়-১: PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> HSC অধ্যায়-১: প্রশ্নের উত্তরসহ ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন>অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর PDF
- উত্তর ডাউনলোড করুন> অধ্যায়৩: SSC ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং‘র জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তরPDF
ঘ উত্তর: বিমা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মিস তাসলিমার সর্বশেষ দাবি পূরণ না করাটা যৌক্তিক। কারণ বিমাদাবি পরিশোধ করার সাথে সাথেই বিমাকারী মিস তাসলিমার স্থলাভিষিক্ত হয়েছে।
সম্পত্তি বিমার ক্ষেত্রে সম্পদের সম্পূর্ণ ক্ষতি হলে এবং বিমাকারী পূর্ণ বিমাদাবি পরিশোধ করলে উক্ত সম্পত্তির বশিষ্ট ংশের ওপর বিমাকারী পূর্ণাঙ্গ ধিকার পায়। বিমাগ্রহীতার কাছ থেকে ধিকারটি বিমাকারীর কাছে চলে যাওয়া সংক্রান্ত নীতিকেই স্থলাভিষিক্তকরণের নীতি বলা হয়।
উদ্দীপকে মিস তাসলিমা গাড়িটি ত্রিশ লক্ষ টাকার বিমা করেন। দ“র্ঘটনায় গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি বিমাদাবি পেশ করেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই বিমাদাবি পেয়ে যান।
পরবর্তীতে তার ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটি কুমিলার একজন ব্যবসায়ী বিশ হাজার টাকায় কেনেন। কিন্তু গাড়ি বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ মিস তাসলিমা দাবি করলেও বিমা প্রতিষ্ঠানটি দিতে স্বীকৃতি জানায়। কারণ স্থলাভিষিক্তকরণের নীতি কার্যকর হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই।
স্থলাভিষিক্তকরণের নীতির মূল কথা নুযায়ী যখনই বিমা প্রতিষ্ঠানটি মিস তাসলিমার বিমাদাবি পরিশোধ করেছে তখনই তার ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটির সকল ধিকার বিমা প্রতিষ্ঠানটির হয়ে গেছে। সুতরাং গাড়িটির বিক্রয়লব্ধ অর্থের মালিক বিমা প্রতিষ্ঠানটি। তাই বিমা প্রতিষ্ঠানটি মিস তাসলিমার এই দাবিটি পূরণ করেন নি।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।