পঞ্চম শ্রেণি | প্রাথমিক বিজ্ঞান | অধ্যায় ২ | বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর | PDF: পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়টির ২য় অধ্যায়টি হতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
অধ্যায় ২ বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর :
প্রশ্ন \ ১ \ পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাবসমূহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষ, জীবজন্তু ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলো হলো :
১. দূষণের কারণে মানুষ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়। যেমন : ক্যান্সার, শ্বাসজনিত রোগ, পানিবাহিত রোগ, ত্বকের রোগ ইত্যাদি।
২. দূষণের ফলে জীবজন্তুর আবাসস্থল নষ্ট হয়, খাদ্যশৃঙ্খল ধ্বংস হয়। ফলে অনেক জীব পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
৩. পরিবেশ দূষণের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। ফলে হিমবাহ গলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। যা সমুদ্র তীরবর্তী দেশগুলোর জন্য হুমকিস্বরূপ।
৪. মাটি দূষণের ফলে জমির উর্বরতা নষ্ট হয় এবং ফসলের পরিমাণ কমে যায়। ৫. শব্দ দূষণের ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেমন- অবসন্নতা, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমে ব্যাঘাত সৃষ্টি, কর্মক্ষমতা হ্রাস ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ২ \ আমরা কীভাবে শব্দ দূষণ প্রতিরোধ করতে পারি?
উত্তর : শব্দ দূষণ মানুষ ও জীবজন্তুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি সাধন করে। আমরা এ দূষণ রোধে কয়েকটি কাজ করতে পারি। যেমন
১. বিনা প্রয়োজনে গাড়ির হর্ন না বাজানো।
২. উচ্চস্বরে গান না বাজানো।
৩. লাউড স্পিকার বা মাইক না বাজানো।
৪. কলকারখানার লোকালয় থেকে দূরে স্থাপন করা।
৫. বাসায়, ক্লাসে, অফিসে উচ্চ স্বরে কথা না বলা।
প্রশ্ন \ ৩ \ পরিবেশ সংরক্ষণ কী?
উত্তর : প্রাকৃতিক সম্পাদের সুরক্ষা ও যথাযথ ব্যবহারই হলো পরিবেশ সংরক্ষণ। পরিবেশ সংরক্ষণ করতে হলে আমাদেরকে পরিবেশের উপাদানগুলোর ব্যবহার সম্বন্ধে সচেতন হতে হবে। যেমন বিদ্যুৎ বা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো, কাজ শেষে বাতি নিভিয়ে রাখা, গাড়ির পরিবর্তে পায়ে হাঁটা ও সাইকেলে চলাচল করা, পানির অপচয় রোধ করা, কারখানার বর্জ্য ও
রাসায়নিক পদার্থ, তেল ইত্যাদি পরিবেশে ফেলার আগে পরিশোধন করা, ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা। এছাড়াও গাছ লাগিয়ে ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে আমরা পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারি।
প্রশ্ন \ ৪ \ মাটি দূষণ কেন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
উত্তর : বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর বস্তু মাটিতে মেশার ফলে মাটি দূষিত হয়। দূষিত মাটি থেকে উৎপন্ন ফসলে দূষক পদার্থ ও জীবাণু থেকে যায়। যা রান্নার পরও খাবারে বিদ্যমান থাকে। এসব খাদ্য গ্রহণের ফলে মানুষের ক্যান্সারসহ অন্যটি জটিল ও দুরারোগ্য রোগ হয়।
মাটি দূষনের ফলে জমির উর্বরতা হ্রাস পায় বলে ফসল উৎপাদন কমে গিয়ে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়। আবার এ দূষণের ফলে গাছপালা, পশুপাখি মরে যায় ও আমরা পুষ্টিকর খাদ্যের উৎস হারিয়ে ফেলি, যা আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।
প্রশ্ন \ ৫ \ জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কেন পরিবেশ দূষিত হয়?
উত্তর : জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পরিবেশ দূষিত হয়। বাড়তি জনসংখ্যার চাহিদা মেটানোর জন্য মানুষ পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করছে। এতে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের পরিবর্তন হচ্ছে। যেমন- মানুষ তার খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য গাছপালা কেটে ফসল চাষ করছে। আসবাবপত্র, কলকারখানা তৈরির জন্য গাছপালা কাটা হচ্ছে।
এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এছাড়া বাড়তি জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য জমিতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। যা মাটিকে দূষিত করছে। এসব রাসায়নিক পদার্থ বৃষ্টির পানি দ্বারা বাহিত হয়ে জলাশয়ের পানি দূষিত করছে।
বাড়তি জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতো অতিরিক্ত যানবাহন ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে এ থেকে নির্গত ধোঁয়া দিয়ে বায়ু দূষণ হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এ ধরনের পরিবেশ দূষণ বাড়তেই থাকবে।
প্রশ্ন \ ৬ \ মাটি এবং পানি দূষণের সাদৃশ্য কোথায়?
উত্তর : পানিতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ মিশ্রিত হয়ে পানি দূষিত হয়। মাটিও বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ দ্বারা দূষিত হয়। কীটনাশক, গৃহস্থালি ও হাসপাতালের বর্জ্য, কল-কারখানার বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও তেল দ্বারা মাটি ও পানি উভয়ই দূষিত হয়। এক্ষেত্রে মাটি এবং পানি দূষণের সাদৃশ্য রয়েছে।
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন :
প্রশ্ন \ ১ \ শব্দ দূষণের একটি কারণ লেখ। হঠাৎ উচ্চ শব্দের কারণে মানবদেহে সৃষ্ট দুইটি প্রভাব লেখ। শব্দ দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার দুইটি উপায় লেখ।
উত্তর : শব্দ দূষণের একটি কারণ গাড়ির হর্ন।
হঠাৎ উচ্চ শব্দের কারণে মানবদেহে সৃষ্ট দুইটি প্রভাব হলো :
১. শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি যেমন- শ্রবণশক্তি হ্রাস, কর্মক্ষমতা হ্রাস ইত্যাদি;
২. মানসিক সমস্যা সৃষ্টি যেমন- ঘুমে ব্যাঘাত সৃষ্টি।
শব্দ দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার দুইটি উপায় হলো :
১. উচ্চ শব্দ সৃষ্টি না করে (যেমন : উচ্চ স্বরে গান, লাউড স্পিকার, মাইক ইত্যাদি না বাজিয়ে) শব্দ দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
২. উচ্চ স্বরে গাড়ির হর্ণ না বাজিয়ে শব্দ দূষণ থেকে রক্ষা পেতে পারি।
প্রশ্ন \ ২ \ পরিবেশ সংরক্ষণের পাঁচটি উপায় লেখ।
উত্তর : পরিবেশ সংরক্ষণের পাঁচটি উপায় হলো :
১. বিদ্যুৎ বা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারি।
২. কাজ শেষে বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে এবং গাড়িতে চড়ার পরিবর্তে হেঁটে বা সাইকেল ব্যবহার করে পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারি।
৩. প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার কমিয়ে, পুনঃব্যবহার করে ও রিসাইকেল করে পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারি।
৪. কারখানার বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ, তেল ইত্যাদি পরিবেশে ফেলার পূর্বে পরিশোধন এবং নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারি।
৫. গাছ লাগিয়ে ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারি।
প্রশ্ন \ ৩ \ মাহফুজদের স্কুলের কাছে হাইওয়ে রাস্তার পাশে কয়েকটি দোকানে সারাদিন উচ্চস্বরে মাইক বাজায়, এতে কোন ধরনের দূষণ ঘটে? এ দূষণ রোধে মাহফুজ ও তার বন্ধুরা মিলে কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে?
উত্তর : উচ্চস্বরে মাইক বাজানোর ফলে শব্দ দূষণ ঘটে।
মাহফুজ ও তার বন্ধুরা মিলে শব্দ দূষণ রোধে যেসব পদক্ষেপ নিতে পারে, তা নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. উচ্চ শব্দে মাইক বাজানো বন্ধ করতে অনুরোধ করতে পারে।
২. নিজে উচ্চ শব্দে সিডি প্লেয়ার, টিভি না বাজিয়ে এবং অন্যকেও না বাজাতে উৎসাহিত করতে পারে।
৩. গাড়ির হর্ন যাতে বিনা প্রয়োজনে না বাজানো হয় তার জন্য পোস্টার লিখতে পারে।
৪. নিজে উচ্চ স্বরে গোলমাল না করে, বন্ধু ও পাড়া প্রতিবেশীদেরকে এসব থেকে বিরত থাকতে বলতে পারে।
প্রশ্ন \ ৪ \ তোমার মতে কী কী কারণে বায়ু দূষিত হচ্ছে?
উত্তর : বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস, ধূলিকণা, ধোঁয়া, দুর্গন্ধ বায়ুতে মিশে বায়ু দূষিত হয়। যানবাহন ও কলকারখানার ধোঁয়া বায়ু দূষণের প্রধান কারণ। গাছপালা ও ময়লা আবর্জনা পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট ধোঁয়ার মাধ্যমেও বায়ু দূষিত হয়। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা এবং মলমূত্র ত্যাগের ফলে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়ায়। আর এভাবেই বায়ু দূষিত হয়।
বৃক্ষ নিধন ও জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এটাও বায়ু দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ।
প্রশ্ন \ ৫ \ কৃষিকাজে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার, কীটনাশক, রাসায়নিক পদার্থ ও তেল ইত্যাদির ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বিঘিœত হচ্ছে। উক্ত পদার্থগুলোর ব্যবহার পরিবেশে কোন ধরনের দূষণ ঘটাচ্ছে? এই দূষণ প্রতিরোধে চারটি উপায় লেখ।
উত্তর : কৃষিকাজে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার, কীটনাশক, রাসায়নিক পদার্থ ও তেল মাটি দূষণ ঘটাচ্ছে। মাটি দূষণ প্রতিরোধে চারটি উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. কলকারখানার ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ যেন মাটিতে মিশে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব বর্জ্য পদার্থকে পরিশোধনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. বাড়িঘরের আবর্জনা, বর্জ্য ইত্যাদি যেখানে সেখানে না ফেলে কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় গর্ত করে পুঁতে রাখতে হবে।
৩. প্লাস্টিক, পলিথিন, কাচ এবং ধাতব জিনিস যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না। এদের পুনরায় প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে মাটি দূষণ অনেক কমে যাবে।
৪. কৃষি কাজে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈবসার ও জৈব পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।
প্রশ্ন \ ৬ \ প্রকৃতিতে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের স্থিতিশীলতা পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। এই স্থিতিশীলতা রক্ষায় কোনটি বিশেষ ভ‚মিকা পালন করে? প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় ইহার চারটি ভ‚মিকা উল্লেখ কর।
উত্তর : প্রকৃতিতে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইাক্সাইডের স্থিতিশীলতা রক্ষায় গাছপালা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।
প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় গাছপালার চারটি ভূমিকা হলো :
১. গাছপালা বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ছাড়ে এবং বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে। এতে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভারসাম্য রক্ষা পায়।
২. গাছপালা শিকড়ের সাহায্যে মাটিকে আটকে রেখে ভূমিক্ষয় রোধে সহায়তা করে।
৩. ঝড়, জলোচ্ছ¡াস, বন্যা, নদীভাঙন, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে গাছপালা জনপদকে রক্ষা করে।
৪. গাছপালা আবহাওয়ার চরমভাব দূর করে।
প্রশ্ন \ ৭ \ আমাদের দেশে কৃষকেরা কৃষিকাজে কেন অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছে? এর ফলে পরিবেশের তিনটি বিপর্যয় লেখ।
উত্তর : আমাদের দেশে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাড়তি জনসংখ্যার চাহিদা পূরণের জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হচ্ছে। অধিক খাদ্য উৎপাদনের জন্য কৃষিজমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার বাড়ছে। এর ফলে পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটছে। নিচে তা বর্ণনা করা হলো :
১. সার ও কীটনাশক উভয়ই রাসায়নিক পদার্থ। এ রাসায়নিক পদার্থ বৃষ্টি ও বন্যার পানির সাথে পুকুর, খাল, বিল ও নদীতে গিয়ে পড়ছে। ফলে পানি দূষিত হচ্ছে।
২. কৃষিকাজে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ জমির উর্বরতা নষ্ট করছে। ফলে ফসল উৎপাদন কমে যায়।
৩. জমিতে কীটনাশক ব্যবহারে অনেক উপকারী জীব মারা যাচ্ছে এবং দিন দিন তাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে কীটনাশকের ব্যবহার পরোক্ষভাবে পরিবেশকে দূষিত হতে সাহায্যে করছে।
আরো পড়তে পারেনঃ
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ১ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ২ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ৩ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ৫ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
সাধারণ প্রশ্ন :
প্রশ্ন \ ৮ \ পরিবেশ দূষণ কী? পরিবেশ দূষণে মানুষ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
উত্তর : পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যথা : বায়ু, পানি, মাটি ইত্যাদিকে দূষিত করে ফেলাকে পরিবেশ দূষণ বলে।
পরিবেশ দূষণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপরে প্রভাব ফেলে। বায়ু দূষণের কারণে বিষাক্ত গ্যাস ফুসফুসে প্রবেশ করে। পানি দূষিত হলে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের বিস্তার ঘটে। জমিতে কীটনাশক এবং রাসায়নিক সার ব্যবহারে মাটি দূষিত হয় এবং খাদ্যে তার প্রভাব থাকে। এছাড়া শব্দ দূষণ শ্রবণশক্তি ও বিভিন্ন মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন \ ৯ \ মাটি দূষণের কারণ ও প্রভাব উল্লেখ কর।
উত্তর : বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর বস্তু মাটিতে মেশার ফলে মাটি দূষিত হয়। কৃষিকাজে ব্যবহৃত সার ও কীটনাশক, গৃহস্থালি ও হাসপাতালের বর্জ্য, কলকারখানার বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও তেল ইত্যাদির মাধ্যমে মাটি দূষিত হয়।
মাটি দূষণের ফলে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়। গাছপালা ও পশুপাশি মারা যায় ও তাদের বাসস্থান ধ্বংস হয়। মাটি দূষণ মানুষের স্বাস্থ্যের উপরও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। দূষিত মাটিতে উৎপন্ন ফসল খাদ্য হিসাবে গ্রহণের ফলে মানুষ ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ পরিবেশ দূষণের কারণ বর্ণনা কর।
উত্তর : পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হলো শিল্পায়ন। শিল্পকারখানা সচল রাখতে বিভিন্ন ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারেই পরিবেশ দূষিত হয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধি দূষণের আরও একটি বড় কারণ। প্রয়োজনীয় খাদ্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য মানুষ পরিবেশ ধ্বংস করছে। পরিবেশের বেশির ভাগ দূষণ মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের ফলেই হয়ে থাকে।
প্রশ্ন \ ১১ \ পরিবেশ দূষণের প্রভাব আলোচনা কর।
উত্তর : পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষ, জীবজন্তু ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। দূষণের কারণে মানুষ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যেমন ক্যান্সার, শ্বাসজনিত রোগ, পানিবাহিত রোগ, ত্বকের রোগ ইত্যাদি। পরিবেশ দূষণের ফলে জীবজন্তুর আবাসস্থল নষ্ট হয়। খাদ্যশৃঙ্খল ধ্বংস হয়।
ফলে অনেক জীব পরিবেশ ক্রমশ হ্রাস পায়। পরিবেশ দূষণের ফলে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে হিমবাহ গলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। যা বাংলাদেশের মতো সমুদ্র উপক‚লবর্তী দেশসমূহের জন্য হুমকিস্বরূপ। শব্দ দূষণের কারণে মানুষের মানসিক ও শারীরিক সমস্যার সৃষ্ট হয়। এর ফলে অবসন্নতা, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমে ব্যাঘাত, কর্মক্ষমতা হ্রাস ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয়।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।