পঞ্চম শ্রেণি | ইসলাম শিক্ষা | অধ্যায় ৫ | বর্ণনামূলক প্রশ্ন উত্তর | PDF: পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়টির ৫ম অধ্যায়টি হতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
পঞ্চম অধ্যায়
মহানবি (স)-এর জীবনাদর্শ ও অন্যান্য নবিগণের পরিচয়
বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর :
প্রশ্ন- ১ \ হযরত মুহাম্মদ (স)-এর জন্ম ও বংশ পরিচয় দাও।
উত্তর : মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২০ এপ্রিল এবং রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ, মাতার নাম আমিনা। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয় মুহাম্মদ এবং আহমাদ। তাঁর জন্মের পূর্বেই পিতা আব্দুল্লাহ মারা যান। ছয় বছর বয়সে মাও ইন্তিকাল করল। তারপর দাদা আব্দুল মুত্তালিবের আদর-স্নেহে লালিতপালিত হতে থাকেন। আট বছর বয়সে দাদা মারা গেলে চাচা আবু তালিবের অধীনে লালিতপালিন হন।
প্রশ্ন- ২ \ হযরত মুহাম্মদ (স)-এর জন্মের সময় আরবের অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর : মহানবি (স)-এর জন্মের সময় আরবের অবস্থা ছিল খুব শোচনীয়। সেখানকার লোকেরা নানা পাপের কাজে লিপ্ত ছিল। বিবাদ, যুদ্ধবিগ্রহ, চুরি ডাকাতি, হত্যা, লুণ্ঠন, মদ, জুয়া ইত্যাদি নিয়েই তারা মেতে ছিল। এক আল্লাহকে ভুলে তারা নানা দেব-দেবীর মূর্তি বানিয়ে পূজা করত। পবিত্র কাবা তারা মূর্তিতে ভরে রেখেছিল। কাবা প্রাঙ্গণে তারা ৩৬০টি মূর্তি স্থাপন করেছিল। তখন বাজারে পণ্যের মতো মানুষ বেচাকেনা হতো।
মনিবরা দাস-দাসীদের প্রতি অমানবিক নির্যাতন করত। পরিবারে ও সমাজে নারীদের কোনো সম্মান বা অধিকার ছিল না। সে সময় কন্যা শিশু জন্মগ্রহণ করা পিতামাতার জন্য খুবই অপমানের বিষয় ছিল। মেয়ে শিশুদেরকে নিষ্ঠুরভাবে জীবন্ত মাটিতে পুঁতে ফেলা হতো। তাদের আচার-আচরণ ছিল বর্বর ও মানবতাবিরোধী।
এ সময় মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। মদ্যপান, জুয়াখেলা, সুদ, ব্যভিচার ছিল তখনকার লোকদের নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। কুসংস্কার ও পাপ-পঙ্কিলতার অতলে নিমজ্জিত ছিল তারা। সে সময়কে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহিলিয়া’ বা মূর্খতার যুগ।
প্রশ্ন- ৩ \ শান্তি সংঘের উদ্দেশ্যগুলো কী কী?
উত্তর : মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) শান্তিকামী উৎসাহী যুবক বন্ধুদের নিয়ে ‘হিলফুল ফুযূল’ নামে একটি শান্তিসংঘ গঠন করেন। এ সংঘের উদ্দেশ্য ছিল-
১. আর্তের সেবা করা।
২. অত্যাচারীকে প্রতিরোধ করা।
৩. অত্যাচারিতকে সাহায্য করা।
৪. শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা এবং গোত্রে গোত্রে স¤প্রীতি বজায় রাখা।
প্রশ্ন- ৪ \ হযরত মুহাম্মদ (স)-এর নবুয়ত লাভের ঘটনা সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর : হযরত মুহাম্মদ (স) সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি। নিচে তার নবুয়ত লাভের ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো :
হযরত মুহাম্মদ (স) শিশু বয়স থেকেই মানুষের মুক্তির জন্য, শান্তির জন্য ভাবতেন। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তাঁর এ ভাবনা আরও গভীর হয়। মূর্তিপূজা ও কুসংস্কারে লিপ্ত এবং নানা দুঃখকষ্টে জর্জরিত মানুষের মুক্তির জন্য তাঁর সব ভাবনা। মানুষ তাঁর স্রষ্টাকে ভুলে যাবে, হাতে বানানো মূর্তির সামনে মাথানত করবে, এটা হয় না।
কী করা যায়, কীভাবে মানুষের হৃদয়ে এক আল্লাহর ভাবনা জাগানো যায়। কী করে কুফর, শিরক থেকে তাদের মুক্ত করা যায়। এ সকল বিষয়ের চিন্তাভাবনায় তিনি মগ্ন। বাড়ি থেকে তিন মাইল দূরে তিনি হেরা পর্বতের গুহায় নির্জনে ধ্যান করতেন। কখনো কখনো একাধারে দুই-তিন দিনও সেখানে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। এভাবে দীর্ঘদিন ধ্যানমগ্ন থাকার পর অবশেষে চলিশ বছর বয়সে রমযান মাসের কদরের রাতে আঁধার গুহা আলোকিত হয়ে উঠল।
আল্লাহর ফেরেশতা জিবরাইল (আ) আল্লাহর মহান বাণী ওহি নিয়ে আসলেন। মহানবি (স)-কে বললেন ‘ইকরা’ পড়–ন। তিনি মহানবি (স)-কে সূরা আলাক-এর প্রথম পাঁচটি আয়াত পাঠ করে শোনালেন। এভাবে মহানবি (স) নবুয়ত লাভ করে ইমানের দাওয়াত দিতে থাকেন।
প্রশ্ন- ৫ \ নবুয়ত লাভের পর মহানবি (স) কী কী শিক্ষা দিলেন?
উত্তর : মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) চল্লিশ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। নবুয়ত লাভের পর হযরত মুহাম্মদ (স) আল্লাহর নির্দেশে প্রথমে নিকট আত্মীয়স্বজনের কাছে গোপনে ইমানের দাওয়াত দিতে থাকেন। এরপর আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ পেয়ে তিনি প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিতে শুরু করেন। তিনি শিক্ষা দিলেন, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। ইবাদত করতে হবে একমাত্র তাঁরই। তিনি এক, অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই।
তিনি আরও বললেন, তোমাদের হাতে বানানো দেব-দেবী ও প্রতিমার কোনো ক্ষমতা নেই। এদের ভালো-মন্দ করার কোনো শক্তিই নেই। আসমান-জমিন, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র সবকিছুর মালিক আল্লাহ। তিনিই সবকিছুর স্রষ্টা, পালনকারী ও রিজিকদাতা। তিনিই আমাদের জীবন-মৃত্যুর মালিক। সুতরাং দাসত্ব, আনুগত্য ও ইবাদত করতে হবে একমাত্র তাঁরই।
প্রশ্ন- ৬ \ মদিনার সনদ কী? এর কয়েকটি ধারা উলেখ কর।
[প্রা. শি. স. প. ’১৩]
উত্তর : পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সনদ হলো মদিনা সনদ। মহানবি (স) মদিনায় হিজরত করে একটি আদর্শ সমাজ ও আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হলেন। এই উদ্দেশে তিনি সকল স¤প্রদায়ের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদন করেন। এটিই মদিনার সনদ নামে খ্যাত এবং পৃথিবীর সর্বপ্রথম লিখিত সনদ। এই সনদে ৪৭টি ধারা ছিল। তার মধ্যে কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন :
১. সকল স¤প্রদায় স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। ধর্মীয় ব্যাপারে কেউ কারো ওপর হস্তক্ষেপ করবে না।
২. সনদে স্বাক্ষরকারী সকল স¤প্রদায়কে নিয়ে একটি সাধারণ জাতি গঠিত হবে এবং সকলে সমান নাগরিক সুবিধা ভোগ করবে।
৩. কেউ অপরাধ করলে তা তার ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে; সেজন্য গোত্র বা স¤প্রদায় দায়ী হবে না।
৪. হত্যা, রক্তারক্তি, ব্যভিচার ইত্যাদি পাপকর্ম নিষিদ্ধ করা হলো, মদিনা শহরকে পবিত্র বলে ঘোষণা করা হলো।
৫. হযরত মুহাম্মদ (স)-এর পূর্ব অনুমতি ব্যতীত কেউ কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না।
প্রশ্ন- ৭ \ বদর যুদ্ধের ফলাফল বর্ণনা কর।
উত্তর : দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমযান মক্কার কাফির-মুশরিক ও মুসলমানদের মধ্যে বদর প্রান্তরে যে ঐতিহাসিক যুদ্ধ সংঘটিত হয় ইসলামের ইতিহাসে তা বদর যুদ্ধ নামে পরিচিত। বদর যুদ্ধের ফলাফল ছিল অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। এ যুদ্ধে কুরাইশ নেতা আবু জাহল, উৎবা, ওলীদ ও শায়বাসহ ৭০ জন মারা যায় এবং ৭০ জন্য বন্দি হয়।
মুসলিম পক্ষে ১৪ জন শহিদ হন, কেউ বন্দি হননি। রাসুল (স) ও মুসলিমগণ যুদ্ধবন্দিদের সাথে উদার ও মানবিক আচরণ করেছিলেন। তিনি বন্দি মুক্তির চমৎকার ব্যবস্থা করেছিলেন। শিক্ষিত বন্দিদের মুক্তিপণ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ জন করে নিরক্ষর মুসলিম বালক-বালিকাদের শিক্ষিত করা। এটি শিক্ষা বিস্তারে রাসুল (স)-এর প্রচেষ্টার অংশ।
এ যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। স্বল্পসংখ্যক মুসলিম বাহিনীর হাতে কাফেরদের বিরাট বাহিনী পরাজিত হয়। এতে কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার হয় এবং মুসলিম বাহিনীর মনোবল ও শক্তি অনেক বেড়ে যায়।
প্রশ্ন- ৮ \ মক্কা বিজয় ও রাসুল (স)-এর অপূর্ব ক্ষমার দৃষ্টান্ত বর্ণনা কর।
উত্তর : মক্কা বিজয় : মহানবি (স) ৮ম হিজরি সনের রমযান মাসে দশ হাজার সাহাবি নিয়ে মক্কা বিজয়ের জন্য যাত্রা করেন। হঠাৎ এত বড় সৈন্যবাহিনী দেখে মক্কার কুরাইশরা যুদ্ধ করতে আর সাহস পেল না। অবস্থা বেগতিক দেখে কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান মহানবি (স)-কে মক্কায় স্বাগত জানায়। মহানবি (স) প্রায় বিনা বাধায় একেবারে বিনা রক্তপাতে মক্কা জয় করেন।
ক্ষমার অপূর্ব দৃষ্টান্ত : মক্কা বিজয়ের ফলে যে মক্কাবাসী একদিন মহানবি (স)-এর জীবননাশ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছিল তারাই তাঁর সামনে অপরাধীর বেশে উপস্থিত হয়। নবিজি তাদের জিজ্ঞাসা করেন, “তোমরা আজ আমার কাছ থেকে কেমন ব্যবহার প্রত্যাশা কর?” তারা বলে, আজ আপনি আমাদের যে কোনো শাস্তি দিতে পারেন, তবে “আপনি তো আমাদের দয়ালু ভাই ও দয়ালু ভাইয়ের পুত্র, আপনার নিকট আমরা দয়াপূর্ণ ব্যবহারই প্রত্যাশা করছি।”
তখন মহানবি (স) বলেন, “আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, যাও তোমরা মুক্ত, স্বাধীন।” মহানবি (স) সবাইকে ক্ষমা করে দিলেন। এমনকি কুরাইশ সর্দার আবু সুফিয়ানকেও। অথচ এ আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে সংঘটিত উহুদ যুদ্ধে মহানবি (স)-এর দাঁত শহিদ হয়েছিল।
এমনকি মহানবি (স)-এর প্রিয় চাচা হযরত হামযা (রা) শহিদ হলে আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর কলিজা চর্বন করেছিল। তিনি তাকেও ক্ষমা করেছিলেন। ক্ষমার এ এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত।
প্রশ্ন- ৯ \ বিদায় হজে মহানবি (স) যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর : মহানবি (স) ১০ম হিজরিতে লক্ষাধিক সাহাবি নিয়ে হজ আদায় করেন। এই হজ নবিজির জীবনের শেষ হজ ছিল বলে একে বিদায় হজ বলে। বিদায় হজে সমবেত লোকদের উদ্দেশ্য মহানবি (স) বলেন
১. সকল মুসলমান পরস্পর ভাই ভাই।
২. আজকের এদিন, এ স্থান, এ মাস যেমন পবিত্র, তেমনি তোমাদের পরস্পরের জানমাল ও ইজ্জত-আবরু পরস্পরের নিকট পবিত্র।
৩. অধীনস্থদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে।
৪. একের অপরাধে অন্যকে শাস্তি দেবেনা।
৫. ঋণ পরিশোধ করতে হবে। সর্বপ্রকার সুদ হারাম করা হলো। সকল সুদের পাওনা বাতিল করা হলো।
৬. নারীর ওপর পুরুষের যেমন অধিকার আছে, পুরুষের ওপর নারীরও তেমন অধিকার আছে।
৭. জাহেলি যুগের সকল কুসংস্কার ও হত্যার প্রতিশোধ বাতিল করা হলো।
৮. আমানতের খিয়ানত করবেনা।
৯. আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর বাণী (আল-কুরআনে) এবং তাঁর রাসুলের আদর্শ রেখে যাচ্ছি, তোমরা এ দুটো যতদিন আঁকড়ে থাকবে, ততদিন তোমরা বিপথগামী হবেনা।
এছাড়া তিনি আরো অনেক মূল্যবান কথা বলেন।
প্রশ্ন- ১০ \ কুরআন মজিদে উলিখিত ১০ জন নবির নাম লেখ।
উত্তর : আল্লাহ তায়ালা মানুষের হিদায়েতের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবি-রাসুল পাঠিয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের নাম আল-কুরআনে নেই। কুরআন মজিদে উল্লিখিত ১০ জন নবির নাম হলো।
১. হযরত আদম (আ) ২. হযরত নূহ (আ)
৩. হযরত সালিহ (আ) ৪. হযরত লূত (আ)
৫. হযরত ইদরীস (আ) ৬. হযরত হূদ (আ)
৭. হযরত ইবরাহীম (আ) ৮. হযরত ইসমাঈল (আ)
৯. হযরত ইসহাক (আ) ১০. হযরত মুহাম্মদ (স)
প্রশ্ন- ১১ \ আল্লাহ ফেরেশতাদের কী আদেশ দিলেন?
উত্তর : আল্লাহ ফেরেশতাদের আদেশ দিলেন, “আদম তোমাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। তোমরা তাঁকে সম্মান জানাও। তাঁর সম্মানে তাঁকে সিজদাহ কর।” সবাই তাঁকে সম্মান দেখাল, সিজদাহ করল। তবে এই ফেরেশতাদের সাথে ছিল এক জিন। নাম তার আজাজিল। সে আদমকে সিজদাহ করল না। সে বলল : “আমি আগুনের তৈরি। আদম মাটির তৈরি। আমি আদম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। আমি তাকে সম্মান করব না। সিজদাহ করব না। সে আদমকে সিজদাহ করল না।”
প্রশ্ন- ১২ \ হযরত নূহ (আ) মানুষকে কী কী বললেন?
উত্তর : হযরত নূহ (আ) আল্লাহর আদেশে দীর্ঘ সাড়ে নয়শ বছর পৃথিবীতে আল্লাহর দীনের দাওয়াত দেন। তিনি মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকলেন। ভালো কাজ করতে বললেন। মন্দ ও খারাপ কাজ বর্জন করার উপদেশ দিলেন। তিনি মানুষকে বললেন : “তোমরা আল্লাহর প্রতি ইমান আন। এক আল্লাহর ইবাদত কর। মূর্তিপূজা ত্যাগ কর। ভালো কাজ কর। মন্দ কাজ থেকে বিরত থাক। আখিরাতের জীবনের ওপর বিশ্বাস রাখ।”
প্রশ্ন- ১৩ \ হযরত ইবরাহীম (আ) অগ্নিকুণ্ডে কীভাবে অক্ষত থাকেন?
উত্তর : নমরূদ হযরত ইবরাহীম (আ)-কে মেরে ফেলার জন্য বিশাল অগ্নিকুণ্ড তৈরি করল। আর সেই জ্বলন্ত আগুনে তাকে ফেলে
দেওয়া হলো। কিন্তু আল্লাহর আদেশে আগুন ঠাণ্ডা হয়ে গেল। হযরত ইবরাহীম (আ) অগ্নিদগ্ধ হওয়া থেকে রেহাই পেলেন। তাঁর কোনো ক্ষতি হলো না। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে বাঁচালেন। রাখে আল্লাহ মারে কে! আল্লাহ বললেন :
“হে আগুন! ইবরাহীমের জন্য তুমি ঠাণ্ডা হয়ে যাও, আরামদায়ক হয়ে যাও।”
প্রশ্ন- ১৪ \ হযরত দাউদ (আ)-এর ন্যায়পরায়ণতা ও সুশাসন সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : হযরত দাউদ (আ) ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ। তিনি ছিলেন সুশাসক ও সুবিচারক। জনগণ সবসময় তাঁর কাছ থেকে ন্যায় ও সুবিচার পেত। তাঁর বিচারব্যবস্থা ছিল নিখুঁত ও নিরপেক্ষ। তিনি ছিলেন অত্যন্ত মানবদরদি। জনগণের অবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্য তিনি ছদ্মবেশে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন।
ঘুরে বেড়াতেন অলিগলিতে ও বাড়িতে বাড়িতে। তিনি রাজকোষ থেকে কোনো অর্থসম্পদ গ্রহণ করতেন না। তিনি আল্লাহর কুদরতে স্বহস্তে ইস্পাতের যেরা বা বর্ম বানাতেন। আর তা বিক্রি করে যা উপার্জন হতো তা দিয়ে নিজের সংসার চালাতেন।
প্রশ্ন- ১৫ \ হযরত ঈসা (আ) সেখানকার লোকদের কী কী উপদেশ দিলেন?
উত্তর : হযরত ঈসা (আ) ছিলেন আসমানি কিতাবপ্রাপ্ত একজন নবি ও রাসুল। আল্লাহ তায়ালা তাঁর ওপর ‘ইনজিল’ কিতাব নাজেল করেন। সে সময়ে সেখানকার লোকেরা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা দেব-দেবীর পূজা করত। হযরত ঈসা (আ) তাদেরকে এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহŸান জানালেন। শিরক থেকে বিরত থাকতে বললেন। সকল দুর্নীতি ও খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে বললেন।
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন- ১ \ হযরত সুলায়মান (আ)-এর ক্ষমতা বিশ্লেষণ কর।
উত্তর : হযরত সুলায়মান (আ) ছিলেন হযরত দাউদ (আ)-এর পুত্র। তিনি নবি ও বাদশাহ ছিলেন এবং প্যালেস্টাইনে তাঁর রাজত্ব ছিল। ইসরাইলি বাদশাহগণের মধ্যে ক্ষমতায় ও শান শওকতে তিনিই ছিলেন শ্রেষ্ঠ। তিনি জিন-পরী, পশুপাখি, গাছপালার ভাষা বুঝতে পারতেন। আল্লাহর আদেশে এসব তাঁর অধীনে ছিল, এমনকি বাতাসও তাঁর অধীনে ছিল। আর আল্লাহর হুকুমে এসব কিছুই তাঁর নির্দেশ মেনে চলত।
প্রশ্ন- ২ \ হযরত আদম (আ) তাঁর সন্তানদের কী বললেন?
উত্তর : হযরত আদম (আ) আল্লাহর তাওহিদে বিশ্বাস করতেন। তিনি তাঁর সন্তানদের বললেন, “তোমাদের ও সারাবিশ্বের স্রষ্টা আল্লাহ। তিনি এক। তাঁর কোনো শরিক নেই। তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত করবে। তাঁরই কাছে মাথা নত করবে। তাঁরই কাছে সাহায্য চাইবে। আর যদি তোমরা আল্লাহকে বিশ্বাস না কর। তাঁকে না মান। তাহলে দুঃখ পাবে। কষ্ট পাবে। আল্লাহ তোমাদের ওপর অসন্তুষ্ট হবেন। তোমরা জাহান্নামের কঠিন শাস্তি ভোগ করবে।”
প্রশ্ন- ৩ \ হযরত ঈসা (আ)-এর পুনরায় দুনিয়ায় আগমন সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর : শেষ জামানায় কিয়ামতের পূর্বে তিনি পুনরায় দুনিয়ায় আগমন করবেন। এসময় তিনি ৪০বছর পৃথিবীতে অবস্থান করবেন। মিথ্যা আল্লাহ দাবিদার দাজ্জালকে তিনি হত্যা করবেন। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী পৃথিবীতে ন্যায়বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করবেন।
হযরত ঈসা (আ) এসময় আমাদের প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর উম্মত হিসেবে দীন প্রচার করবেন। এরপর তিনি স্বাভাবিকভাবে ইন্তিকাল করবেন। তাঁকে আমাদের নবিজি (স)-এর রওজা মুবারকের পাশে দাফন করা হবে। সুতরাং আল্লাহ তাঁর বিশেষ কুদরতের মাধ্যমে ঈসা (আ)-কে আসমানে উঠিয়ে নিয়েছেন এবং আবার দুনিয়ায় প্রেরণ করবেন।
প্রশ্ন- ৪ \ হযরত দাউদ (আ)-এর ইবাদত সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর : রাসুল (স)-এর প্রায় ১ হাজার ৫শ’ ৮৬ বছর আগে হযরত দাউদ (আ) পৃথিবীতে আসেন এবং দীন প্রচার করেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে নবি, রাসুল ও বাদশাহ এই তিনটি পদমর্যাদা দান করেন। এত বিশাল ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার পরও তিনি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য অধিকাংশ সময় ইবাদতে মশগুল থাকতেন।
তিনি রাতে খুব কম ঘুমাতেন। প্রায় সারারাত আল্লাহর ইবাদত করতেন। তিনি সালাত আদায় করতেন। আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করতেন। তিনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে একদিন পর একদিন সাওম পালন করতেন। এভাবে হযরত দাউদ (আ) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত বন্দেগি করতেন।
প্রশ্ন- ৫ \ হযরত নূহ (আ) মানুষকে কী শিক্ষা দিয়েছিলেন পাঁচটি বাক্যে লিখ। [২০১৫]
উত্তর : হযরত নূহ (আ) মানুষকে শিক্ষা দিয়েছিলেন-
১. তোমরা আল্লাহর প্রতি ইমান আন।
২. এক আল্লাহর ইবাদত কর।
৩. ভালো কাজ কর এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাক।
৪. মূর্তি পূজা ত্যাগ কর।
৫. আখিরাতের জীবনের ওপর বিশ্বাস রাখ।
প্রশ্ন- ৬ \ মহানবি (স)-এর হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের ঘটনা লিপিবদ্ধ কর।
উত্তর : বহুদিন পূর্বের নির্মিত পুরাতন কাবাঘর সংস্কারের কাজ হাতে নিল কুরাইশরা। যথারীতি কাবাঘর পুনর্নির্মাণও করল তারা। কিন্তু পবিত্র হাজরে আসওয়াদ বা কালোপাথর স্থাপন নিয়ে বিবাদ লেগে গেল। প্রত্যেক গোত্রই এ পাথর কা’বার দেয়ালে স্থাপনের সম্মান নিতে চাইল।
যুদ্ধের সাজ সাজ রব পড়ে গেল। অবশেষে প্রবীণতম গোত্র প্রধান উমাইয়া বিন মুগীরার প্রস্তাব অনুসারে সিদ্ধান্ত হলো, আগামীকাল প্রত্যুষে যে ব্যক্তি সবার আগে কাবাঘরে আসবেন তাঁর ওপরই বিবাদ মীমাংসার ভার অর্পিত হবে। তাঁর সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নেবে। প্রত্যুষে দেখা গেল- হযরত মুহাম্মদ (স) কাবায় প্রবেশ করছেন।
সবাই আনন্দে চিৎকার করে বলল-‘আল-আমীন’ আসছেন, আমরা তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। সঠিক মীমাংসাই হবে। মুহাম্মদ (স) একখানা চাদর বিছিয়ে দিলেন। তারপর চাদরে নিজ হাতে পাথরখানা রাখলেন। গোত্র সরদারগণকে ডেকে চাদর ধরতে বললেন। তারা ধরে তা যথাস্থানে বহন করে নিয়ে গেল। ‘
আল-আমীন’ নিজের হাতে পাথরখানা কাবার দেয়ালে বসিয়ে দিলেন। একটি অনিবার্য যুদ্ধ থেকে সবাই বেঁচে গেল। পাথর উঠাবার সম্মান পেয়ে সবাই খুশিও হলো।
প্রশ্ন- ৭ \ বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মাণ করেন কে? হযরত সুলায়মান (আ)-এর মৃত্যু সম্পর্কে চারটি বাক্য লিখ।
উত্তর : আল্লাহ তায়ালার হুকুমে হযরত সুলায়মান (আ) বৃদ্ধ বয়সে বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মাণ করেন। হযরত সুলায়মান (আ) তিনি লাঠিতে ভর করে বায়তুল মুকাদ্দাস নির্মাণ কাজ তদারকি অবস্থায় ইন্তিকাল করেন। বায়তুল মুকাদ্দাসের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর মৃতদেহটি জীবিত অবস্থায় যেভাবে ছিল ঠিক সেভাবেই থাকে।
নির্মাণ কাজ শেষ হলে হযরত সুলায়মান (আ)-এর হাতের লাঠিটা ভেঙে যায় এবং তিনি মাটিতে পড়ে যান। এভাবেই মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুমে হযরত সুলায়মান (আ) ইন্তিকাল করেন।
প্রশ্ন- ৮ \ হযরত নূহ (আ)-এর সময় মহাপ্লাবন হয়েছিল কেন? পাঁচটি বাক্যে বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর : হযরত নূহ (আ) আল্লাহর আদেশে দীর্ঘ সাড়ে নয়শ বছর দ্বীনের দাওয়াতের মাধ্যমে মাত্র ৮০জন নারী-পুরুষ সাড়া দেয় এবং ইমান আনে। নূহ (আ) তাদের আচরণে অতিষ্ঠিত হয়ে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন। তাদের ধ্বংস কামনা করেন। আল্লাহ তায়ালা নূহ (আ)-এর প্রার্থনা কবুল করেন এবং এক মহাপ্লাবনে সবকিছু ধ্বংস করে দেন। শুধু নূহ (আ) এবং ইমানদারগণ বেঁচে যান।
প্রশ্ন- ৯ \ বাদশাহ নমরূদ হযরত ইবরাহীম (আ)-কে আগুনে নিক্ষেপ করল কেন?
উত্তর : হযরত ইবরাহীম (আ)-এর দেশ ইরাকের বাবেল শহরে। সেখানে সকলেই মূর্তি পূজায় বিশ্বাসী ছিল। পুরোহিতগণ ভাগ্য গণকদের ওপর নির্ভরশীল গণকের দোহাই দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করত। হযরত ইবরাহীম (আ) তাদের এমন অনাচারের বিরোধিতা করেন এবং তাদেরকে আল্লাহর পথে আহŸান করেন। এতে তাঁর বাবা আজরসহ সকলে মিলে বাদশা নমরূদের কাছে নালিশ করলে। নমরূদ তাকে আগুনে নিক্ষেপ করে।
সাধারণ
প্রশ্ন- ১০ \ সূরা আলাক -এর প্রথম পাঁচ আয়াতের অর্থ লিখ।
উত্তর : মহানবি (স)-এর ওপর প্রথম নাজিল হয় সূরা আলাক-এর প্রথম পাঁচটি আয়াত। পাঁচটি আয়াতের অর্থ হলো :
১. পাঠ করুন আপনার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।
২. যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক (এঁটে থাকা বস্তু) থেকে।
৩. পাঠ করুন, আপনার প্রতিপালক তো মহিমান্বিত।
৪. যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলমের সাহায্যে।
৫. শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে- যা সে জানত না। (সূরা আলাক : ১-৫)
প্রশ্ন- ১১ \ মদিনার সনদ কী? মদিনার সনদের চারটি ধারা লিখ।
উত্তর : পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সনদ হলো মদিনা সনদ। মহানবি (স) মদিনায় হিজরত করে একটি আদর্শ সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হলেন। এ উদ্দেশে তিনি সকল স¤প্রদায়ের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদন করেন। এটিই মদিনার সনদ নামে খ্যাত এ সনদের ৪৭টি ধারা ছিল। তার মধ্যে চারটি নিচে উল্লেখ করা হলো। যেমন :
১. সকল স¤প্রদায় স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। ধর্মীয় ব্যাপারে কেউ কারও ওপর হস্তক্ষেপ করবে না।
২. সনদে স্বাক্ষরকারী সকল স¤প্রদায়কে নিয়ে একটি সাধারণ জাতি গঠিত হবে এবং সকলে সমান নাগরিক সুবিধা ভোগ করবে।
৩. কেউ অপরাধ করলে তা তার ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে; সেজন্য গোত্র বা স¤প্রদায় দায়ী হবে না।
৪. হত্যা, রক্তারক্তি, ব্যভিচার ইত্যাদি পাপকর্ম নিষিদ্ধ করা হলো, মদিনা শহরকে পবিত্র বলে ঘোষণা করা হলো।
প্রশ্ন- ১২ \ মহানবি (স) এর জন্মের সময় আরবের অবস্থা কেমন ছিল পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : মহানবি (স)-এর জন্মের সময় আরবের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। যেমন :
১. মারামারি, যুদ্ধবিগ্রহ সর্বদা লেগেই থাকত।
২. পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে ৩৬০টি মূর্তি ছিল।
৩. পণ্যের মতো মানুষ কেনাবেচা হতো।
৪. কন্যা শিশুকে জীবন্ত কবর দেয়া হতো।
৫. মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা ছিল না।
আরো পড়তে পারেনঃ
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ১ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ২ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ৩ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি | বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | অধ্যায় ৫ | সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন- ১৩ \ বদর যুদ্ধের পাঁচটি ফলাফল উল্লেখ কর।
উত্তর : বদর যুদ্ধের ৫টি ফলাফল :
১. কাফিরদের দম্ভ চুর্ণ : বদর প্রান্তরে মুসলমানদের নিকট পরাজয়ের মাধ্যমে কাফিরদের দম্ভ চুর্ণ হয়।
২. ইসলামের গৌরব বৃদ্ধি : বদর যুদ্ধ জয়ের ফলে ইসলামের গৌরব বৃদ্ধি পায়।
৩. কাফিরদের মনোবল ভেঙে যাওয়া : বদর যুদ্ধে কুরাইশ নেতা আবু জাহল, ওলিদ, উৎবা ও শায়বাসহ শীর্ষস্থানীয় কাফিরদের মৃত্যুর ফলে কাফিরদের মনোবল ভেঙে যায়।
৪. রাসুল (স) -এর অপূর্ব সমরনীতির বিজয় : বদর যুদ্ধে রাসুল (স)- এর অপূর্ব সময়নীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
৫. আল্লাহর ওপর আস্থা বৃদ্ধি : বদর যুদ্ধ জয়ের ফলে মহান আল্লাহর ওপর মুসলমানদের আস্থা ও ভরসা বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন- ১৪ \ হযরত দাউদ (আ)-এর ন্যায়পরায়ণতা ও সুশাসন সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লিখ।
উত্তর : হযরত দাউদ (আ) ছিলেন সুশাসক ও সুবিচারক। তাঁর বিচারব্যবস্থা ছিল নিখুঁত ও নিরপেক্ষ। জনগণ সব সময় তাঁর কাছ থেকে ন্যায় ও সুবিচার পেত। জনগণের অবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্য তিনি ছদ্মবেশে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন। তিনি আল্লাহর কুদরতে স্বহস্তে ইস্পাতের যেরা বা বর্ম বানাতেন।
প্রশ্ন- ১৫ \ নবি-রাসুলগণ কেমন ছিলেন? কুরআন মজিদে উল্লিখিত প্রধান চারজন নবির নাম লিখ।
উত্তর : নবি-রাসুলগণ ছিলেন নিষ্পাপ। কুরআন মজিদে উল্লিখিত প্রধান চারজন নবির নাম হলো :
১. হযরত আদম (আ), ২. হযরত ইবরাহীম (আ); ৩. হযরত নূহ (আ); ৪. হযরত মূসা (আ)।
প্রশ্ন- ১৬ \ হযরত সুলায়মান (আ)-এর বিচারের কাহিনী পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : একদা দুজন স্ত্রীলোকের প্রত্যেকেই একটি শিশুকে নিজের বলে দাবি করেন। হযরত সুলায়মান (আ) সব কথা শুনে বললেন যে, দুজনই যখণ শিশুটিকে তার নিজের বলে দাবি করছে, তখন এই শিশুটিকে দুখন্ড করে উভয়ের মধ্যে ভাগ করে দেয়া উচিত।
অতঃপর তিনি শিশুটিকে মাটিতে শুইয়ে দুখণ্ড করার জন্য তলোয়ারটি উঁচু করলেন। এমন সময় একজন মহিলা চিৎকার দিয়ে বললেন, “আমি শিশুটির মা নই দয়া করে শিশুটিকে কাটবেন না।” তখন সুলায়মান (আ) বিচারের রায়ে বললেন, যে মহিলাটি আমাকে হত্যা করতে বাধা দিয়েছেন, তিনিই শিশুটির মা।
প্রশ্ন- ১৭ \ বিদায় হজের ভাষণের পাঁচটি মূলকথা লিখ।
উত্তর : বিদায় হজের ভাষণের পাঁচটি মূলকথা :
১. সকল মুসলমান পরস্পর ভাই ভাই।
২. অধীনস্থদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে।
৩. একের অপরাধে অপরকে শাস্তি দিবে না।
৪. সকল সুদের পাওনা বাতিল করা হলো।
৫. আমানতের খিয়ানত করবে না।
প্রশ্ন- ১৮ \ মিরাজ কী? পাঁচটি বাক্যে বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর : মক্কায় কাফেরদের সীমাহীন অত্যাচার ও তায়েফবাসীর দুর্ব্যবহারে মহানবি (স) অত্যন্ত মর্মাহত ও ব্যথিত হন। তখন আল্লাহ তায়ালা নবুয়তের একাদশ সনে রজব মাসের ২৭ তারিখে হযরত মুহাম্মদ (স)-কে নিজের সান্নিধ্যে নিয়ে গেলেন। তিনি মহানবি (স)-কে মসজিদে হারাম থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস এবং সেখান থেকে ঊর্ধ্বলোকে ভ্রমণ করিয়ে আনেন। মহানবি (স) আল্লাহ তায়ালার দীদার লাভে ধন্য হলেন। একেই মিরাজ বলে।
প্রশ্ন- ১৯ \ হিজরত কী? মহানবি (স) কোথায় ও কেন হিজরত করেছিলেন?
উত্তর : হিজরত অর্থ ‘দেশ ত্যাগ’। ইসলামের পরিভাষায় মক্কায় ইসলাম প্রচার বাধাগ্রস্ত হলে, মহানবি (স) ও সাহাবিগণের মক্কা ছেড়ে মদিনায় গমন হচ্ছে হিজরত। অর্থাৎ মহানবি (স) মদিনায় হিজরত করেন।
মক্কার কাফিরদের বিরোধিতা ও নির্যাতনের মাত্রা যখন বেড়ে গেল এবং ইসলাম চরমভাবে বাধাপ্রাপ্ত হলে আল্লাহ তায়ালা নবিকে কাফেরদের চক্রান্তের কথা জানিয়ে দিলেন এবং মনিদায় হিজরতের নির্দেশ দিলেন। এ নির্দেশ পালনে মহানবি (স) হিজরত করেছিলেন।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।