নবম ও দশম শ্রেণীর জীবন সঙ্গীত কবিতার সৃজনশীল ও জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (PDF) গুলো আপনাদের কাছে উপস্থাপন করা হলো । জীবন সঙ্গীত কবিতার যেকোনো ধরনের প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য জীবন সঙ্গীত কবিতা হতে গুরুপূর্ণ কিছু প্রশ্ন উত্তর আলোচনা করতে যাচ্ছি ।সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এসএসসি- SSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
জীবন সঙ্গীত কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন-১. ‘মহিমা’ শব্দটির অর্থ কী?
উত্তর: ‘ মহিমা’ শব্দটির অর্থ-গৌরব।
প্রশ্ন-২. কিসে কোনো মুক্তি নেই?
উত্তর;: বৈরাগে কোনো মুক্তি নেই।
প্রশ্ন-৩. সময় কী থাকনা?
উত্তর: সময় কখোনো স্থীর থাকেনা।
প্রশ্ন-৪. কীসের সাধন করতে হবে?
উত্তর: সংকল্পের সাধন করতে হবে।
প্রশ্ন-৫. কীভাবে সংকল্প সাধন করতে হবে?
উত্তর: নিজ কাজে রত হয়ে সংকল্প সাধন করতে হবে।
জীবন সঙ্গীত কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন-১. এ জীবন নিশার স্বপন নয় কেন?
উত্তর: আমাদের জীবন কেবল নিছক স্বপ্নের মতো নয়, বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় প্রতিনিয়তই।
পৃথিবীকে শুধু স্বপ্ন ও মায়ার জগৎ বলা যায় না। পৃথিবীতে রয়েছে নানা রকম বাধা ও প্রতিবন্ধকতা। অত্যন্ত মূল্যবান মানব-জন্মকে সার্থক করতে হলে এ সকল প্রতিবন্ধকাকে জয় করতে হয়।
প্রশ্ন-২. মহিমাই জগতে দুর্লভ-এ কথা দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: জীবনসংগ্রামে নির্ভীকভাবে যুদ্ধ করে যাওয়ার যে মহিমা তা অতুলনীয়।
জীবন-সংসারে চলার পতে আসে নানা বাধা ও বিপদ। এ সকল প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করেই বাঁচতে হয়। পালিয়ে গিয়ে বা বৈরাগ্যে মুক্তি মেলে না। ভীত না হয়ে সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করার মানসিকতাই মহিমা বা গৌরব বয়ে আনে।
প্রশ্ন-৩. কবি ভবিষ্যতে নির্ভর করতে বারণ করেছেন কেন?
উত্তর: কবি আমাদের জীবনকে শৈবালের শিশির বিন্দুর মতো ক্ষণস্থায়ী বলে তিনি ভবিষ্যতের ওপর নির্ভর করতে বারণ করেছেন।
অতীত ফেলে আসা সময়। অনেকে অতীতকে আকড়ে ধরে বা ভবিষ্যতে নির্ভর করে বসে থাকে। কিন্তু আমাদের ক্ষণস্থায়ী জীবনে বর্তমানের সাথে সাহসী যোদ্ধার মতো যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হবে বলেই কবি ভবিষ্যতে নির্ভর করতে বারণ করেছেন।
প্রশ্ন-৪. কবি সুখের আশা করে দুঃখের ফাঁস পরতে নিষেধ করেছেন কেন?
উত্তর: মিথ্যা সুখের কল্পনা করলে শুধু দু:খই বাড়বে বলে।
মানব জন্ম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান। মানুষের মৃত্যু অনিবার্য কিন্তু তার জন্মও শুধু একবারই সম্ভব। মিথ্যা সুখের কথা কল্পনা করলে একদিকে যেমন হতাশার সৃষ্টি হয় অন্যদিকে তা মানুষকে তার উদ্দ্যেশ্য থেকে সরিয়ে দেয়। মিথ্যা সুখের কল্পনা করলে তাতে যেমন দুঃখ বাড়ে তেমন কোন ফল আসে না।
প্রশ্ন-৫. কবি অতীত সুখের দিন মনে করে চিন্তায় কাতর হতে বারণ করেছেন কেন?
উত্তর: মানুষের মূল্যবান বর্তমানকে নিয়ে না ভেবে অতীতের চিন্তায় শুধু সময়ের অপচয় বলেই কবি অতীতের সুখ চিন্তায় কাতর হতে বারণ করেছেন।
মানুষের জীবন শৈবালের শিশিরবিন্দুর মতো সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। এখানে যেমন ভবিষ্যতে নির্ভর করে বেঁচে থাকার সুযোগ নেই। তেমন অতীতের সুখের কথা ভেবে পুনরায় কাতর হওয়াও যুক্তিহীন।
১. নং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর:
সময় গেলে সাধন হবে না/দিন থাকতে দিনের কেন সাধন করলে না।
জান না মন খালে বিলে/ বীর থাকে না জল শুকালে
কী হয় তার বাঁধন দিলে/শুকনা মোহনা
ক. আয়ু কীসের নীর?
খ. কার মানবকে ভয়ে ভীত না হওয়ার কথা বলেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার কোন বিষয়টি
প্রতিফলিত হয়েছে?
ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত বিষয়টি ছাড়াও ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় উঠে এসছে জীবনকে সমৃদ্ধ করার একাধিক পরামর্শ। মন্তব্যটির প্রসঙ্গিকতা মূল্যায়ন কর।
জুতা আবিষ্কার কবিতার জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর-PDF
উত্তর : (ক)
আয়ু শৈবালের নীর।
উত্তর :(খ)
জীবনে যোদ্ধার মতো সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার জন্য কবি ভীত না হওয়ার কথা বলেছেন।
এানব জীবন যেন একটি যুদ্ধ ক্ষেত্র। এখানে বেঁচে থাকার জন্য ট্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়। এই সংগ্রামের পথ মোটেও সহজ নয় বরং কন্টকাকীর্ণ। তাই ভীত না হওয়ার কথা বলেছেন।
উত্তর : (গ)
উদ্দীপকটিতে ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার সময়কে মূল্যায়ন করার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে।
‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় কবি সময়ের কাজ সময়ে করতে বলেছেন। কেননা সময় কখনো বসে থাকে না। তাই প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিনই করতে হবে। এতে মানুষের উন্নতি নিশ্চিত হবে। এর ব্যতিক্রম হলে ধ্বংস নিশ্চিত।
উদ্দীপকেও সময়ের কাজ সময়ে করার কথা বলা হয়েছে। কেননা সময় কারোর জন্য বসে থাকে না। তাই সময়ের কাজ সময়ে করাটাই শ্রেয়। কবিতায়ও সময়ের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে কবিতায় সময়ের মূল্য দেওয়ার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে।
উত্তর : (ঘ)
উদ্দীপকে বর্ণিত সময়ের সঠিক ব্যবহার ছাড়াও ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় জীবনকে সমৃদ্ধ করার একাধিক পরামর্শ রয়েছে।
‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় কবি জীবনের গান গেয়েছেন। পৃথিবীতে কেউ কারো না এতে হতাশ হওয়া উচিত না। তাই কোন কিছুর বাইরের দৃশ্যে না ভুলে পরিশ্রম ও সাধনা দিয়ে জীবনকে এগিয়ে নিতে হবে। সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে হবে।
এই স্বল্প জীবনে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে নিজেকে এগিয়ে নিতে হবে। ভবিষ্যতের আশায় বসে না থেকে বর্তমানকে সমৃদ্ধ করতে হবে। আর মহাপুরুষদের জীবনকে আদর্শ মেনে চলে নিজে মহৎ করার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
উদ্দীপকে সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে। তবেই জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
উদ্দীপকে জীবনকে এগিয়ে নিতে সময়ের মূল্যায়ন করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কবিতায় এ বিষয়টি ছাড়াও জীবনে সংগ্রামী হওয়া, মহাপুরুষদের জীবনকে আদর্শ মানার কথা বলা হয়েছে। তাই সঙ্গত কারণেই বলা যায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
বঙ্গবাণী কবিতার বহু নির্বাচনী প্রশ্নোত্তর-বাংলা ১ম পত্র (PDF MCQ)
২. নং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর:
ধৈর্য ধর, ধৈর্য ধর,বাঁধ বাঁধ বুক/শতদিকে শত দুঃখ আসে আসুক
এ সংসার কর্মশালা/জ্বলন্ত কালান্ত জ্বালা।
ক. মানুষের আয়ুকে কিসের সাথে তুলনা করা হয়েছে?
খ. কিভাবে ভবের উন্নতি করা যায়?
গ. উদ্দীপকের ভাবনা ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার সাথে কিভাবে সম্পর্কিত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “চেতনাগত সাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকটি ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার সামগ্রিক ভাব বহন করে না”- বিশ্লেষণ কর।
উত্তর : (ক)
মানুষের আয়ুকে শৈবালের নীড়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
উত্তর : (খ)
সংসারের সকল দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে ভবের উন্নতি করা যায়।
আমরা যে পৃথিবীতে বাস করছি, সেখানে শুধু খেয়ে পরে, ভোগ-বিলাসিতায় জীবন কাটালে হবে না। এ জগৎ সংসারে বাস করত হলে প্রত্যেকেরই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। দায়িত্বে অবহেলা করলে সুন্দর এ পৃথীবি ধীরে ধীরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। তাই অলসতায় গা না ভাসিয়ে সংসারের যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজ যথাযথভাবে করার মাধ্যমেই ভবের উন্নতি করা যায়।
উত্তর : (গ)
উদ্দীপকের ভাবনা ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার সাথে সংগ্রামশীল জীবনের দিকটি সম্পর্কিত।
‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় কবি সংগ্রামশীল জীবনের চিত্র তুলে ধরেছেন। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না নিয়েই প্রতিটি মানুষ তার জীবন পরিচালনা করে। তাই দুঃখ-কষ্টকে জয় করতে হবে, ভেঙে পড়লে চলবে না। এক্ষেত্রে প্রয়োজন কঠিন মনোবল ও দৃঢ় মানসিকতার। যে মানুষ এ বিষয়টি ধারণ করতে পারে সে-ই সহজে সফল কাম হয়।
উদ্দীপকে জীবনে ধৈর্য ধারণ করার কথা বলা হয়েছে। জীবনে নানা দিক থেকে দুঃখ আসে। তাই বলে হতাশায় পর্যবেশিত হওয়া চলবে না। ধৈর্য ধরে পরিস্থিতির মোকাবিলা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। যা কবিতায় সুস্পষ্টভাবেই বিদ্যমান রয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ভাবনা এবং কবিতার ভাবনার সাথে সংগ্রামী হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কিত।
উত্তর : (ঘ)
উদ্দীপক ও ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার চেতনাগত সাদৃশ্য থাকলেও সামগ্রিক ভাব এক নয়।
‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় কবি জীবনের গান গেয়েছেন। মানব জীবন নিশার স্বপন নয়। তাই জীবনে হতাশ হলে চলে না। জীবনে দুঃখ-কষ্ট যাই আসুক না কেন তা দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করতে হবে। ভবিষ্যতের ওপর নির্ভরতা পরিহার করে বর্তমানকে সমৃদ্ধ করতে হবে। মহাপুরুষদের জীবনকে আদর্শ মেনে তাঁদের মূল্যবোধকে পাথেয় করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই সফলতা অর্জন সম্ভব হবে।
উদ্দীপকে ধৈর্য ধারণ করার কথা বর্ণিত হয়েছে। জীবনে দুঃখ-কষ্ট আসবেই, তাই বলে দিশেহারা হওয়া ঠিক নয়। জীবনকে এগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি দুঃখকে সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
কবিতায় কবি জীবনে হতাশ না হয়ে সংগ্রাম করার আহবান জানিয়েছেন।এছাড়া সময়ের মূল্য দেওয়া, ব্যক্তিত্ববোধ ও মূল্যবোধ অর্জন করা, মহাপুরুষদের জীবন অনুসরণ কারার কথা বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকে শুধু ধৈর্য ধারণের দিকটি বিদ্যমান। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি কবিতার সামগ্রিক দিক ধারণ করে না।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর:
বেদেরা তাদের বহর নিয়ে দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটে বেড়ায়। কোথাও তারা স্থায়ীভাবে বসবাস করে না। একমাত্র জীবিকার সন্ধানেই তারা যাযবর। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি তাদের মোকাবিলা করতে হয়। তবু তারা হার নাÑমানা সংগ্রাম করে তাদের অস্তিত্ব বজায় রাখে। তারা জানে, সাহসী যোদ্ধার মতো সংগ্রাম করে টিকে থাকাতেই জীবনের প্রকৃত যথার্থতা।
(ক) হেমচন্দ্র কত সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন?
(খ) ‘সকলি ঘুচায় কাল’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
(গ) উদ্দীপকের বেদেদের জীবনে ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় কাদের চিত্র ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
(ঘ) উদ্দীপকের আলোকে ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার ভাববস্তু বিচার কর।
(ক) জ্ঞানমূলক :
১৮৫৯ সালে হেমচন্দ্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
(খ) অনুধাবনমূলক :
মানুষের সহায়Ñসম্পদে, শারীরিক শক্তি, আয়ু, চিরস্থায়ী নয়; কালে গহবরে সবকিছু বিলীন হয়ে যায় এখানে ‘সকলি ঘুচায় কাল’ বলতে এ কথাই বোঝানো হয়েছে।
‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় মানবজীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক আলোকপাত করা হয়েছে। এখানে সংক্ষিপ্ত মানবজীবনকে শৈবালের নীরের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মানবজীবনের সবকিছু একদিন মহাকালের অতল গহবরে হারিয়ে যাবে। ‘সকলি ঘুচায় কাল’ বলতে সময় যে সবকিছুকে নশ্বর করে দেয় তা বোঝানো হয়েছে।
(গ) প্রয়োগ :
উদ্দীপকের বেদেদের জীবন চিত্রে ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় আলোচিত সংগ্রামশীল ও সাহসীযোদ্ধাদের চিত্রই ফুটে উঠেছে।
কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতাটি একটি অনিন্দ্য সুন্দর কবিতা। এ কবিতায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কবি জীবনের সফলতার মূলমন্ত্র তুলে ধরেছেন। বাস্তবিক পক্ষে, পৃথিবীতে জীবনযাপনের জন্য নানা প্রতিকূল পরিবেশকে মোকাবিলা করতে হয়।
সংগ্রামশীল হয়ে, নিজ জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। বৃথা সুখের আশা করে, দু:খের ফাঁস গলায় পরা জীবনের উদ্দেশ্য হতে পারে না। অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজের শৌর্যবির্যের পরিচয় দিয়ে পৃথিবীতে অবিস্মরণীয় হতে পারাটাই জীবনের আসল সার্থকতা।
উদ্দীপকের বেদেরা জীবিকা অর্জনের সন্ধানে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটে বেড়ায়। নিজেদের জীবনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তারা সবসয় সংগ্রামশীল। তাদের পথচলায় যত রকম প্রতিকূলতাই আসুক না কেন, তারা অত্যন্ত পরিশ্রম করে তা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়।
সাহসী যোদ্ধার মতো সংগ্রাম করে টিকে থাকাতেই তারা বিশ্বাসী। তাই এ কথা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলা যায়, উদ্দীপকের বেদেদের জীবনের ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় আলোচিত সংগ্রামশীল জীবনযোদ্ধাদের চিত্রই ফুটে উঠেছে।
(ঘ) উচ্চতর দক্ষতামূলক :
হেমচন্দ্রের ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার ভাব উদ্দীপকে বেদেদের জীবনের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
‘জীবনসঙ্গীত’ কবিতায় মানুষের জীবন সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা করা হয়েছে। জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি মানুষ না বুঝে নিছক স্বপ্নে বিভোর থাকে। তারা তাদের জীবনের আসল উদ্দেশ্যের কথা ভুলে গিয়ে নানা গুরুত্বহীন কাজে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু জীবনের উদ্দেশ্য সেটা নয়। তাই যার যে দায়িত্ব তা সঠিকভাবে পালন করে সভ্যতর বিনির্মাণে অবদান রাখতে হবে। তবেই জীবন সার্থক ও সুন্দর হয়ে উঠবে।
উদ্দীপকের যাযাবর জীবনের সংগ্রামমুখর জীবনকাহিনী ফুটে উঠেছে। এ যাযাবর বেদেরা কোথঅও স্থায়ীভাবে বসবাস করে জীবিকা নির্বাহ করে না। জীবিকার সন্ধানে শুধু এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়ায়। জীবনযুদ্ধে তারা কখনোই পরাজয় বরণ করে না। সাহসী যোদ্ধার মতো সংগ্রাম করে টিকে থাকাকেই তারা জীবনের মূল সার্থকতা মনে করে।
‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার মূল বক্তব্যের সঙ্গে আলোচ্য উদ্দীপকের সারকথা পুরোপুরি মিলে যায়। উভয় স্থানে জীবনকে সংগ্রামমুখর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং পরিশ্রম, চেষ্টা ও সাধনা দিয়ে জীবনকে অমর করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের আবহে ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার ভাবস্তুর সার্থক প্রতিফলন ঘটেছে।
৪. নং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর:
সভ্যতর নির্মল পুষ্পকে আহত করার পূর্বে,
সঙ্গীত ও চিত্রকলাকে ধ্বংস করার পূর্বে
দর্শন ও সাহিত্যকে হত্যার করার পূর্বে
ছাড়পত্রহীন সূর্যকিরণকে বিষাক্ত করার পূর্বে
এসো বারবারা, বজ্র হয়ে বিদ্ধ করি তাকে।
(ক) ‘আশ’ শব্দের অর্থ কী?
(খ) কবি এ জীবন Ñসংসারকে নিশার স্বপন বলতে নিষেধ করেছেন কেন?
(গ) উদ্দীপকের সঙ্গে ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতাটি কীভাবে সম্পর্কিত? ব্যাখ্যা কর।
(ঘ) উদ্দীপকে কবির আহবান আর ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় হেমচন্দ্রের আহবান একই জীবনবোধের পরিচয় বহন করে Ñমন্তব্যটি যাচাই কর।
(ক) জ্ঞানমূলক :
‘আশ’ শব্দের অর্থ আশা।
(খ) অনুধাবনমূলক :
এ জীবনÑসংসারকে কবি নিশার স্বপন বলতে নিষেধ করেছেন। কারণ, আমাদের জীবন কেবল নিছুক স্বপ্ন নয়।
কবি হেমচন্দ্রের মতে, আমাদের জীবন কোনা রাতের স্বপ্ন নয়। পৃথিবীকে শুধু স্বপ্ন ও মায়ার হাতছানি ভেবে স্বপ্নে বিভোর হলে চলবে না। কেননা জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়ে সম্মুখে এগিয়ে যেতে হবে। তাই কবি এ জীবনÑসংসারকে নিশার স্বপ্ন বলতে নিষেধ করেছেন।
(গ) প্রয়োগমূলক :
‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় কবি মানুষকে স্মরণীয়, বরণীয়, হওয়ার চেষ্টা করতে বলেছেন, তেমনিভাবে উদ্দীপকেও এ ধরনের আহবান করা হয়েছে।
কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় মহৎ ব্যক্তিদের পথ অনুসরণ করতে আহবান করেছেন। পৃথিবীর অতীত ঐতিহ্যকে পুণরায় ফিরিয়ে আনার জন্য একমাত্র মহান ব্যক্তিরাই এগিয়ে আসতে পারেন। শত বিপদ সঙ্কুল পথকে তাঁরা মোকাবেলা করতে কুণ্ঠাবোধ করেন না।
এ জন্য তাঁদের আদর্শ অনুসরণকরা কর্তব্য। কেননা তাঁদের সেই আদর্শকে ধারণ করে সামনের দিকে ধাবিত হতে পারলে সাফল্য নিবার্য। পৃথিবীতে নিজেকে স্মরণীয়, বরণীয় করে রাখতে কবি এই আহবান করেছেন।
উদ্দীপকে বর্তমান সভ্যতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন Ñপৃথিবীর বর্তমান দূরবস্থার মাঝে কিছু ভালো দিক আছে, এগুলোকে রক্ষা করার জন্য মানুষকে আহবান করা হয়েছে।
অনেক অশুভ শক্তি নির্মল এই পরিবেশকে ধ্বংস করার চেষ্টা করবে। এ ছাড়া বর্তমানের সঙ্গীত, চিত্রকলা দর্শন ও সাহিত্যকে ধ্বংস করার জন্য অনেক অশুভ শক্তি রয়েছে। এগুলোকে প্রতিরোধ করার জন্য কিছু মহৎ লোক দরকার, উদ্দীপকের এ দিকটিই ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার সাথে সম্পর্কিত।
(ঘ) উচ্চতর দক্ষতামূলক :
কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় যে আহবান করেছেন, তারই প্রতিফলন যেন উদ্দীপকটি।
‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় মানবজীবনের বহুদিক অত্যন্ত স্পষ্টরূপে বর্ণিত হয়েছে। বিশেষ করে বীর্যবানদের অমর কীর্তির কথা ব্যক্ত করা হয়েছে সুললিত কণ্ঠে। পৃথিবীখ্যাত মহান ব্যক্তিত্বই পারে সমাজের অশুভ শৃঙ্খলকে ভেঙ্গে দিতে।
তাইতো কবি হেমচন্দ্র তাঁদের নিয়ে গেছেন সম্মানের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তাঁদের আদর্শকে নিজ জীবনে কাজে লাগানোর জন্য কবি আহবান করেছেন। কেননা এই পথেই স্মরণীয় ও বরণীয় হওয়ার মহান সৌভাগ্য লাভ করা সম্ভব।
উদ্দীপকটিতে মানুষকে ‘বারবারা’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। বর্তমান এ ধরায় বহু অশুভ শক্তি রয়েছে। তারা পৃথিবীর নির্মল, ফুলেÑফলে ভরা পরিবেশকে নষ্ট করতে পারে। শুধু তাই নয়, এস শক্তিসমূহ পৃথিবীর দর্শন ও সাহিত্য, সঙ্গীত ও চিত্রকলা, ছাড়পত্রহীন সূর্যকিরণকে ধ্বংস করতে সিদ্ধহস্ত। তাই এদেরকে প্রতিহত করতে, মানুষকে বারবারা রূপে অশুভ শক্তিকে বজ্র হয়ে বিদ্ধ করার জন্য আহবান করা হয়েছে।
পৃথিবীর বিখ্যাত মহান ব্যক্তিরা যে সাফল্য বয়ে এনেছেন, তা ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। সবরকম অকল্যাণমূলক বিষয়কে বিলুপ্ত করা না গেলে সামনে কঠিন দিন আসবে। উদ্দীপকের এই দিকটিই ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহবানেরই পরিচয় বহন করে।
প্র্যাকটিস অংশ:- সৃজনশীল রচনামূলক প্রশ্নঃ
১। রবার্ট ব্রæস পর পর ছয়বার যুদ্ধে পরাজিত হয়ে এক সময়ে হতাশ হয়ে বনে চলে যান। সেখানে দেখেন একটা মাকড়সা জাল বুনতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। অবশেষে সে সপ্তমবারে সফল হয়। এ ঘটনা রবার্ট ব্রæসের মনে উৎসাহ জাগায়। তিনি বুঝতে পারেন জীবনে সাফল্য ও ব্যর্থতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই তিনি আবার পূর্ণ উদ্যমে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হন।
(ক) কবি কোন দৃশ্য ভুলতে নিষেধ করেছেন?
(খ) কীভাবে ‘ভবের’ উন্নতি করা যায়?
(গ) পরাজয়ের গøানি রবার্ট ব্রæসের মাঝে যে প্রভাব বিস্তার করে সেটি ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার সাথে যেভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ তা তুলে ধর।
(ঘ) ‘হতাশা নয় বরং সহিষ্ণুতা ও ধৈর্যই মানুষের জীবনে চরম সাফল্য বয়ে আনে।’- উদ্দীপক ও ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতা অবলম্বনে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
২। বীরযোদ্ধা তৈমির লং একটি দেশ দখলের জন্য ঐ দেশের রাজধানীতে আক্রমণ করেছিলেন। কিন্ত এ যুদ্ধে তিনি ব্যর্থ হন। এরপর তিনি ফকিরের বেশ ধারণ করেন। বিভিন্ন স্থঅনে ঘোরাঘুরির পর ক্ষুধার্ত অবস্থায় একটি গৃহে প্রবেশ করেন। গৃহকর্তা তাঁকে একটি পাত্রে গরম ভাত দেন।
তৈমির লং ক্ষুধায় অস্থির হয়ে দ্রæত গরম পাত্রের মধ্যে হাত রাখেন। ফলে তাঁর হাত পুড়ে যায়। তখন গৃহকর্তা তাঁকে বলেন এক বীরযোদ্ধা আমাদের দেশের রাজধানীতে আক্রমণ করেছিল। ফলে ব্যর্থ হয়েছে। যদি তিনি দেশের এক পাশ থেকে আক্রমণ করত তবে সফল হতো। তৈমুর লং তার ভুল বুঝতে পারেন।
(ক) ‘ধ্বজা’ শব্দের অর্থ কী?
(খ) কীভাবে ‘ভবের’ উন্নতি করা যায়?
(গ) উদ্দীপকের তৈমুর লংয়ের এর মধ্যে ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার যে বিষয়টি উপস্থিত তা ব্যাখ্যা কর।
(ঘ) উদ্দীপকটি ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার সমগ্র ভাব ধারণে কতটুকু সফল? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
২। আরিফ নবম শ্রেণিতে পড়ে। পড়ালেখার প্রতি তার খুব আগ্রহ। কিন্তু পরিকল্পিত পরিকল্পনার অভাবে সে প্রতিবার পরিক্ষায় খারাপ করে এবং আরিফ হতাশ হয়ে পড়ে। তখন তার শ্রেণিশিক্ষক তাকে পড়ালেখার বিষয়ে পরামর্শ দেন। আরিফ তার পরামর্শকে সাদরে গ্রহণ করে এবং সে অনুযায়ী পড়ালেখা করে। ফলে এবারের পরীক্ষায় সে ভালো ফলাফল অর্জন করে।
(ক) ‘আকিঞ্চন’ Ñশব্দের অর্থ কী?
(খ) ‘সংসারে সংসারী’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
(গ) উদ্দীপকের আরিফের মধ্যে ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার যে বৈশিষ্ট্য উপস্থিতÑতা তুলে ধর।
(ঘ) ‘উক্ত বৈশিষ্ট্যটি উপস্থিত ছিল বলে উদ্দীপকের আরিফ সফল হয়েছে’ Ñমন্তব্যটি ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৩। হারু মিয়া একজন গরিব কৃষক। গত বছর সে তার জমিতে বাদামের চাষ করে। কিন্তু বাদাম চাষে আশানুরূপ ফল পায় না। ফলে হারু মিয়া হতাশ হয়ে পড়ে। অন্যদিকে তার এক প্রতিবেশি রহিম য়িা বাদাম চাষে বাম্পার ফলন পায়। তা দেখে হারু রহিম মিয়ার নিকট পরামর্শ গ্রহণ করে। পরের বছর রহিম মিয়ার পরমর্শ অনুযায়ী চাষ করলে সে সফল হয়।
(ক) মানুষের আয়ু যেন শৈবালের কী?
(খ) ‘ওহে জীব কর আকিঞ্চন’ Ñবলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
(গ) উদ্দীপকের হারু মিয়অর সফলতায় ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত Ñব্যাখ্যা কর।
(ঘ) উদ্দীপকের হারু মিয়ার মতো আমরা যদি গুণীজনের আদর্শ ধারণ করি তবে সফলতা অর্জন সম্ভভ কী? যৌক্তিক বিশ্লেষণ কর।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।