চতুর্থ শ্রেণীর বাংলা ব্যাকারণ | বচন ও সন্ধি | PDF: চতুর্থ শ্রেণির বাংলা বিষয়টির ব্যাকারণ অংশ হতে বচন ও সন্ধির গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্ন উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ পোস্টটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
বচন
মনে কর, তুমি মাঠে একা দৌড়াচ্ছ। এক্ষেত্রে তুমি বলতে পার ‘আমি মাঠে দৌড়াচ্ছি।’ আবার ধর তুমি তোমার বন্ধুদের সাথে মাঠে দৌড়াচ্ছ। তখন বললে ‘আমরা মাঠে দৌড়াচ্ছি’। সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ‘আমি’ পরিবর্তিত হয়ে ‘আমরা’ হয়ে গেল। এভাবে সংখ্যার ধারণা পাওয়ার নামই বচন।
যা দিয়ে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর সংখ্যা বোঝায় তাকে বচন বলা হয়। যেমন একটি কলম, কলমগুলো ইত্যাদি। এখানে ‘একটি’ ও ‘গুলো’ শব্দ দুটো দিয়ে কলমের সংখ্যা বোঝায়। সুতরাং একটি ও গুলো হচ্ছে বচন।
প্রকারভেদ :
বচন দুই প্রকার। যথা- ১. একবচন ও ২. বহুবচন।
একবচন : যে শব্দ দিয়ে একজন ব্যক্তি বা একটি বস্তু বোঝায় তাকে একবচন বলে। যেমন : কলম, মেয়ে, একখানা ইত্যাদি।
বহুবচন : যে শব্দ দিয়ে একের বেশি ব্যক্তি বা বস্তু বোঝায় তাকে বহুবচন বলে। যেমন : কলমগুলো, আমরা, মেয়েগুলো ইত্যাদি।
একবচন ও বহুবচনের কিছু উদাহরণ :
একবচন ———-বহুবচন
আমি ———-আমরা
কলম ———-কলমগুলো
তুমি ———-তোমরা
মানুষ ———-মানুষগুলো
আমার ———-আমাদের
পাখি ———-পাখিগুলো
সে ———-তারা
ছেলে ———-ছেলেগুলো
যে ———-যারা
শ্রমিক ———-শ্রমিকেরা
পর্বত ———-পর্বতমালা
দর্শক ———-দর্শকবৃন্দ
শিক্ষক ———-শিক্ষকমণ্ডলী
লেখক ———-লেখকগণ
![চতুর্থ শ্রেণীর বাংলা ব্যাকারণ | বচন ও সন্ধি | PDF](https://jagorik.com/wp-content/uploads/2023/12/৪র্থ-শ্রেণি-আমার-বাংলা-বই-28.jpg)
সন্ধি
নিচের বাক্যটি লক্ষ কর :
হেমন্তে নবান্ন উৎসব হয়।
হেমন্ত ঋতুতে কৃষকের ঘরে ঘরে নতুন ধান ওঠে। নতুন ধান দিয়ে যে উৎসব হয় তারই নাম নবান্ন। ‘নবান্ন’ শব্দটিতে দুটি শব্দ যুক্ত অবস্থায় আছে ‘নব’ ও ‘অন্ন’। ‘নব’ অর্থ- নতুন আর ‘অন্ন’ অর্থ – খাবার। লক্ষ কর, আমরা দ্রুত কথা বলার কারণে কখনো কখনো পাশাপাশি অবস্থিত দুটি শব্দের ধ্বনি মিলে এক হয়ে যায়। কখনো কখনো সৃষ্টি হয় নতুন ধ্বনিও।
যেমন :
নব = ন্ + অ + ব্ + অ
অন্ন = অ + ন + অ + ণ্ + অ
দুটি শব্দের শেষ ধ্বনি ‘অ’। এখানে অ + অ = আ হয়ে গেছে। ফলে, নব + অন্ন = নবান্ন হয়েছে। একইভাবে, বিদ্যা + আলয় = বিদ্যালয় হয়েছে।
দ্রুত উচ্চারণের ফলে এভাবে পাশাপাশি ধ্বনির মিলে যাওয়াকেই সন্ধি বলা হয়। সন্ধি শব্দের অর্থ মিলন।
পাশাপাশি অবস্থিত দুটি ধ্বনি মিলে যদি একটি ধ্বনির সৃষ্টি হয় তবে তাকে সন্ধি বলে।
সন্ধি দুটি উপায়ে হতে পারে:
স্বরধ্বনির সঙ্গে স্বরধ্বনি মিলে যে সন্ধি হয় তাকে স্বরসন্ধি বলে। যেমন- বিদ্যা + আলয় = বিদ্যালয়।
ব্যঞ্জনধ্বনির সঙ্গে স্বরধ্বনি বা ব্যঞ্জনধ্বনি মিলে যে সন্ধি হয় তাকে ব্যঞ্জন সন্ধি বলে। যেমন- দিক্ + অন্ত = দিগন্ত।
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | পাঠান মুলুকে | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | কাজলা দিদি | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
- চতুর্থ শ্রেণি | বাংলা | পাখির জগৎ | অনুশীলনী ও অতিরিক্ত প্রশ্ন উত্তর
বাংলা ভাষায় সন্ধির প্রয়োজনীয়তা :
ক. সন্ধি বাক্যকে সুন্দর ও মধুর করে।
খ. উচ্চারণকে সহজ করে।
গ. বাক্যকে সংক্ষিপ্ত করে।
ঘ. নতুন নতুন শব্দের সৃষ্টি করে।
সন্ধি বিচ্ছেদ :
সন্ধির মাধ্যমে দুটি শব্দ একত্রিত হয়ে নতুন একটি শব্দ গঠন করে। সন্ধিযোগে গঠিত এই শব্দটির দুটি অংশ ভাগ করে দেখানোকেই সন্ধি বিচ্ছেদ বলা হয়। নিচে সন্ধি বিচ্ছেদের কিছু উদাহরণ দেখান হলো :
বিদ্যালয় = বিদ্যা + আলয়
পরীক্ষা = পরি + ইক্ষা
সিংহাসন = সিংহ + আসন
অতীত = অতি + ইত
সূর্যোদয় = সূর্য + উদয়
জলাশয় = জল + আশায়
ইত্যাদি = ইতি + আদি
নয়ন = নে + অন
দিগন্ত = দিক্ + অন্ত
নরাধম = নর + অধম
জীবাণু = জীব + অণু
প্রতিচ্ছবি = প্রতি + ছবি
উল্লাস = উৎ + লাস
উজ্জ্বল = উৎ + জ্বল
সংসার = সম্ + সার
সংবাদ = সম্ + বাদ
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।