HSC | ঐকতান | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ৬-১০ | PDF : বাংলা ১ম পত্রের ঐকতান কবিতাটি হতে যেকোনো ধরনের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আমাদের এই পোস্টে পাবেন ।
প্রিয় ছাত্র ছাত্রী বন্ধুরা আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন । এটা জেনে আপনারা খুশি হবেন যে, আপনাদের জন্য বাংলা ১ম পত্রের ঐকতান কবিতাটি হতে গুরুপূর্ণ কিছু সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি ।
সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আর এইচ এস সি- HSC এর যেকোন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সকল সাজেশন পেতে জাগোরিকের সাথে থাকুন।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
হরিশংকর জলদাস বর্তমান সময়ের একজন উলেখযোগ্য কথাসাহিত্যিক। অদ্বৈত মলবর্মণের উত্তরসূরি এই লেখক উঠে এসেছেন জেলে স¤প্রদায় থেকে। ফলে নদী-তীরবর্তী জেলেদের নিদারুণ জীবন বাস্তবতা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন একেবারে ভেতর থেকে। এই জীবনলব্ধ অভিজ্ঞতাই সঞ্চারিত হয়েছে তাঁর সাহিত্যকর্মে। এজন্য তাঁর সৃষ্টিকর্ম কৃত্রিমতায় আড়ষ্ট না হয়ে জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
ক. জ্ঞানের দীনতা কবি কীসের দ্বারা পূর্ণ করেন?
খ. “এই স্বরসাধনায় পৌঁছিল না বহুতর ডাক” বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের হরিশংকর জলদাস ও ‘ঐকতান’ কবিতার কবির অবস্থানগত বৈসাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. “কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় গানের পসরা”Ñ উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞানের দীনতা কবি ভিক্ষালব্ধ ধন দ্বারা পূর্ণ করেন।
খ. “এই স্বরসাধনায় পৌঁছিল না বহুতর ডাক” পঙ্ক্তিটি দিয়ে কবির সাহিত্যসাধনার সীমাবদ্ধতার প্রসঙ্গটি তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি পৃথিবীর কবি। পৃথিবীর সমূহ কণ্ঠস্বর তার স্বরসাধনায় স্থান পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা হয় নি। এই আক্ষেপই আলোচ্য পঙ্ক্তিটির মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে।
গ. উদ্দীপকের হরিশংকর জলদাস ও কবির অবস্থানগত বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
হরিশংকর উঠে এসেছেন প্রান্তিক জনস্রোত থেকে। তাঁর পূর্বপুরুষ ছিল জেলে স¤প্রদায়ভুক্ত। তিনি নিজেও ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে মাছ ধরেছেন। নদী-তীরবর্তী মানুষের নির্মম জীবন বাস্তবতার তিনি নিজেও শিকার এবং প্রত্যক্ষ সাক্ষী। এই অভিজ্ঞতাই তাঁর সাহিত্যকর্মে সঞ্চারিত হয়েছে।
ফলে তাঁর সাহিত্যকর্ম হয়ে উঠেছে জীবন্ত। ‘ঐকতান’ কবিতার কবি শ্রেণিগত অবস্থানের কারণে সমাজের এসব অপাঙ্ক্তেয় মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ পাননি। ফলে তিনি পাঠলব্ধ অভিজ্ঞতা থেকেই এদের জানার চেষ্টা করেছেন। তাই এই বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রান্তিক জীবনকে তিনি নিখুঁতভাবে আঁকতে পারেন নি।
অন্যদিকে, হরিশংকর জলদাস অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে প্রান্তিক জীবনলগ্ন হওয়ায় তাঁর সাহিত্যকর্ম এই জীবনের স্পন্দনে ঋদ্ধ। এদিক থেকে হরিশংকর জলদাস ও কবির বৈসাদৃশ্য লক্ষ করার মতো।
ঘ. কৃত্রিম পণ্যে গানের পসরা ব্যর্থ হয় ‘ঐকতান’ কবিতায় কবি এ বিষয়ে সচেতন। কারণ জীবনে জীবন যোগ না করলে সাহিত্যের ফসল ফলে না।
উদ্দীপকে আমরা দেখি, হরিশংকর জলদাস বাস্তব অভিজ্ঞতাকেই সাহিত্যকর্মে সঞ্চারিত করেন। তিনি যেহেতু জেলে স¤প্রদায়ভুক্ত, সেহেতু জেলেদের জীবন সংগ্রাম, অস্তিত্বের লড়াই ও শোষণের চিত্র তাঁর হাতে জীবন্তরূপে চিত্রিত হয়।
কবি সমাজের উঁচু শ্রেণিভুক্ত হওয়ায় ব্রাত্যজীবনকে গভীরভাবে জানার সুযোগ পাননি। ফলে এদের জীবনচিত্রকে তিনি তুলে ধরতে পারেননি। কিন্তু তিনি তার অভিজ্ঞতায় মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের জীবনকে সফলভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন।
বাস্তব জীবনলব্ধ অভিজ্ঞতার কারণেই সেটি সম্ভব হয়েছে। সাহিত্যের ক্ষেত্রে কৃত্রিমতা যেহেতু কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, সেহেতু নিবিড় জীবন অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গটি সবসময় গুরুত্বপূর্ণ।
পরিশেষে বলা যায়, যে জীবনের সঙ্গে কোনো নিবিড় সম্পর্ক নেই, সে জীবনকেন্দ্রিক সাহিত্য নিশ্চিতভাবেই ব্যর্থ হবে। উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতা থেকে এটি সহজেই প্রতিভাত।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শিহাবের বাসার খুব কাছেই বস্তি এলাকা। বস্তির নোংরা ও অশিক্ষিত ছেলেমেয়েদের সে প্রতিদিন বিকেলে অক্ষরজ্ঞান শিক্ষা দেয়। শিহাবের ইচ্ছা, এই অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষগুলো যেন নিজেদের বঞ্চনার কথা বলার ভাষা খুঁজে পায়।
ক. কবি কাদের বাণী শুনতে চেয়েছেন?
খ. “মর্মের বেদনা যত করিয়া উদ্ধার”-কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের শিহাব ও ‘ঐকতান’ কবিতার কবির মনোভাবের মিল কোথায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “কাছে থেকে দূরে যারা তাহাদের বাণী যেন শুনি”-উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতার আলোকে পঙ্ক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কাছে থেকে দূরে যারা কবি তাদের বাণী শুনতে চেয়েছেন।
খ. “মর্মের বেদনা যত করিয়া উদ্ধার” পঙ্ক্তিটির মধ্য দিয়ে মূলত অখ্যাতজনের ও নির্বাক মনের অন্তর্নিহিত বেদনাকে ভাষা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
পৃথিবীতে এমন অনেক অবহেলিত ও নিপীড়িত জনতা আছে, যাদের নিজেদের কোনো কণ্ঠস্বর নেই। কিন্তু তাদেরও আছে বলার মতো অনেক কষ্ট ও যন্ত্রণা। এই অনুভূতি রূপায়ণের জন্য একজন কবির আগমন প্রত্যাশা করেন তিনি।
গ. উদ্দীপকের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শিহাব ও কবির মধ্যে যথেষ্ট মিল লক্ষ করা যায়।
শিহাব বস্তির অসহায়, নোংরা, অশিক্ষিত ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তুলতে চায়। কারণ সে জানে এদেরও বলার মতো অনেক কথা আছে; আছে অনেক সুপ্ত বেদনা। কিন্তু শিক্ষিত না হলে ওদের এই অনুভূতি অব্যক্তই থেকে যাবে। অন্য কারো পক্ষে এদের অনুভবের কাছাকাছি পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব। তাই সে এদের মুখে ভাষা দেয়ার কাজ করে যায়।
উদ্দীপকের শিহাবের মতো ‘ঐকতান’ কবিতার কবিও সমাজের অবহেলিত ও নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর শুনতে চেয়েছেন। তিনি নিজে যেহেতু এদের মনোগহনে পৌঁছাতে অক্ষম, তাই তিনি এমন একজন কবির আগমন প্রত্যাশা করেছেন যিনি এদেরই স্বগোত্রীয়। তাঁর পক্ষেই এদের অব্যক্ত মনের অনুভব রূপায়ণ সম্ভব। কবি যা প্রত্যাশা করেছেন তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই শিহাব এগিয়ে যায়।
ঘ. কবির এই অনুভূতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে শিহাব নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে তৎপর হয়ে ওঠে।
শিহাবের বাসার খুব কাছে বস্তি এলাকা। শিহাব শিক্ষিত ছেলে। কিন্তু তার পাশেই বস্তির ছেলেরা নোংরা ও অশিক্ষিত, যা তাকে পীড়া দিয়েছে। ফলে এদের শিক্ষার ভার সে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। কারণ, সে জানে জগতের প্রতিটি মানুষেরই মনোগহনে কিছু গুপ্ত বাণী থাকে। শিক্ষা ও চর্চার দ্বারাই কেবল তার সঠিক রূপ প্রকাশ করা সম্ভব।
অশিক্ষিত মানুষ তার অধিকার ও প্রাপ্যের দাবি সঠিকভাবে জানাতে পারে না। তাই তার কথা শুনতে হলে তার মধ্যে প্রথমে জ্বালাতে হবে শিক্ষার আলো। তাহলেই এদের মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসবে এমন একজন, যিনি তাঁর স্বজাতির বেদনার ভাষ্যকার হবেন।
‘ঐকতান’র কবিও শুনতে চান সেই অব্যক্ত ভাষ্য, নির্বাক মনের নিদারুণ যন্ত্রণার কথা। না হলে পৃথিবীর একটি বড় বাস্তবতা তাঁর কাছে অধরাই থেকে যাবে। শিহাবও এ সম্পর্কে সচেতন হয়ে কাজ করে যায়।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বাদশাহ আকবরের সভায় ‘নবরতœ’ খ্যাত নয়জন ব্যক্তি ছিলেন। এঁদের কেউ কবি, কেউ ইতিহাসবিদ, কেউ বা হাস্যরসিক। বৈচিত্র্যময় জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য বাদশাহ এঁদের রাজসভায় স্থান দিয়েছিলেন।
ক. কবি কী কুড়িয়ে আনেন?
খ. “নানা কবি ঢালে গান নানা দিক হতে”Ñ কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের বাদশাহ আকবর ও ‘ঐকতান’ কবিতার কবির মনোভাবের সাদৃশ্য চিিহ্নত কর।
ঘ. “সঙ্গ পাই সবাকার, লাভ করি আনন্দের ভাগ”-উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবি চিত্রময়ী বর্ণনার বাণী কুড়িয়ে আনেন।
খ. বৈচিত্র্যময় জীবনের বিচিত্র অনুভব নানা কবির নানা গানে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।
নানা কবি স্বকীয় জীবনাভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হয়ে কবিতা রচনা করেন। তাই প্রত্যেকের কবিতাই স্বতন্ত্র ভাব ও ভাষায় সমৃদ্ধ। এসব কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে অজানা ও অদেখা মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন কিছুটা হলেও টের পাওয়া যায়।
গ. উদ্দীপকের বাদশাহ আকবর ও ‘ঐকতান’ কবিতায় কবির মনোভাবের সাদৃশ্য দৃশ্যমান।
বাদশাহ আকবর তাঁর রাজসভায় নয়জন জ্ঞানী ব্যক্তিকে স্থান দিয়েছিলেন, যাদের ‘নবরতœ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এদের কেউ কবি, কেউ ইতিহাসবিদ, কেউ বা হাস্যরসিক। অর্থাৎ, বিচিত্র জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটানোর আকাক্সক্ষা থেকেই মূলত বাদশাহ আকবরের এই প্রচেষ্টা, তা সহজেই অনুমেয় হয়।
বাদশাহ আকবরের পক্ষে একই সঙ্গে কবি, ইতিহাসবিদ কিংবা হাস্যরসিক হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু রাজসভায় বিচিত্র জ্ঞানের অধিকারী এসব ব্যক্তিকে স্থান দিয়ে তিনি নিজের অপূর্ণতাকে পূর্ণ করার চেষ্টা করেন। ‘ঐকতান’ কবিতার কবির পক্ষেও জগতের সব দেশ কিংবা সব মানুষকে জানা অসম্ভব।
তাই তিনি একদিকে যেমন ভ্রমণবৃত্তান্ত পড়েন, অন্যদিকে মাটির কাছাকাছি অবস্থান করেন এবং এমন কবি অর্থাৎ অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষের কবির আগমন প্রত্যাশা করেছেন। যার কাছ থেকে তিনি সেই অজ্ঞাত জীবনের অনুভবকে উপলব্ধি করতে পারবেন। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের বাদশাহ আকবর ও কবির মনোভাব সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ. উদ্দীপকের বাদশাহ আকবর ‘নবরতœ’ খ্যাত নয়জন ব্যক্তিকে তাঁর রাজসভায় স্থান দিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গ তাঁর অতৃপ্ত মনের বাসনাকে তৃপ্ত করেছে এবং জ্ঞানের বিচিত্র শাখা, বৈচিত্র্যময় পরিবেশ থেকে উঠে আসা এসব ব্যক্তির সৃজনশীল কর্ম তাঁর সীমাবদ্ধতাকে অনেকটাই লাঘব করেছে।
‘ঐকতান’ কবিতার কবি নানা কবির নানা গান শুনে তার অচরিতার্থ বাসনাকে চরিতার্থ করেন। কারণ তাঁর পক্ষে এককভাবে জগতে সমস্ত মানুষ, পারিপার্শ্বের সমস্ত কোলাহলকে ধারণ করা সম্ভব নয়। তাই তিনি নির্ভর করেন বিচিত্র পরিবেশ থেকে আসা বিচিত্র বাণীর কবির ওপর, যা তাঁর আনন্দের ভোগে উৎসাহ জোগায়। এদের সঙ্গও তাঁকে অনিঃশেষ আনন্দ দেয়।
উদ্দীপকের বাদশাহ আকবরও তাঁর নবরতেœর সান্নিধ্যে আনন্দিত ও ঋদ্ধ। বিচিত্র প্রতিভার কবি, ইতিহাসবিদ ও হাস্যরসিকের সঙ্গ তাঁর জ্ঞানপিপাসু ও মানবসঙ্গলিপ্সু অভিলাষকে বাস্তব রূপ দিয়েছে।
সুতরাং বলা যায়, এই যে বৈচিত্র্যময় প্রতিভার সঙ্গলাভের বাসনা ও এঁদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের যে আনন্দ তা উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
রায়হান সাহেব একজন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। কিন্তু আর্থিক দুরবস্থার কারণে তিনি কাক্সিক্ষত বহু স্থানে যেতে পারেননি। ফলে তিনি ভ্রমণকাহিনি পড়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর চেষ্টা করেন।
ক. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম কী?
খ. “সেই ক্ষোভে পড়ি গ্রন্থ ভ্রমণবৃত্তান্ত আছে যাহে”Ñ কবি কথাটি কেন বলেছেন?
গ. উদ্দীপকে ‘ঐকতান’ কবিতার বক্তব্যের আংশিক প্রতিফলন ঘটেছেÑ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ লাইনটি ‘ঐকতান’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম ‘বনফুল’।
খ. বই পড়ে দেশ ভ্রমণের অপূর্ণতা দূর করার জন্য কবি প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন।
অজানাকে জানার গভীর আগ্রহ থেকে কবি ভ্রমণবৃত্তান্ত পড়েন অতি উৎসাহে। কারণ, কবির পক্ষে জগতের সমস্ত দেশভ্রমণ সম্ভবপর নয়। কিন্তু এসব দেশ ও জনজীবনকে জানার তৃষ্ণা তাঁর অফুরন্ত। তাই ভ্রমণকাহিনি পড়ে তিনি সেই তৃষ্ণা নিবারণ করেন।
গ. বিশ্বভ্রমণের ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও তা না পারার খেদের দিক থেকে উদ্দীপকের রায়হান সাহেবের সাথে ‘ঐকতান’ কবিতার কবির মিল রয়েছে।
উদ্দীপকে ‘ঐকতান’ কবিতার বক্তব্যের আংশিক প্রতিফলন ঘটেছে। কারণ, ঐকতান কবিতায় কবি শুধু ভ্রমণবৃত্তান্ত পড়েই ক্ষান্ত হন না, কল্পনার অনুমানে জগতের ঐকতান অনুভবের চেষ্টা করেন। পাশাপাশি তিনি সেই মাটি নিকটবর্তী কবির আগমন প্রত্যাশী, যিনি তাঁকে সাধারণ মানুষের জীবনালেখ্য শোনাবেন; জানাবেন তাদের অকৃত্রিম হৃদয় বেদনা।
উদ্দীপকে আমরা দেখি রায়হান সাহেব একজন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। তিনি পৃথিবীর নানা দেশ ও মানুষকে জানতে আগ্রহী কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে খুব বেশি দেশ তিনি ভ্রমণ করতে পারেননি। এজন্য তিনি ভ্রমণকাহিনি পড়ে সেই অপূর্ণতা পূরণের চেষ্টা করেন।
এদিক দিয়ে কবির মনোভাবের সঙ্গে তাঁর মিল রয়েছে। কবিও পৃথিবীর সমস্ত দেশ ভ্রমণে অক্ষম। তাই তিনিও ভ্রমণবৃত্তান্তের ওপর নির্ভর করেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বজনজীবনের অকৃত্রিম উপলব্ধি সম্ভব না হলেও পাঠজনিত অভিজ্ঞতা লাভ সম্ভব। এদিক দিয়ে উদ্দীপকের রায়হান সাহেব ও ‘ঐকতান’ কবিতার কবির মনোভঙ্গির সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকের রায়হান সাহেব ভ্রমণকাহিনি পড়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর চেষ্টা করেন। ‘ঐকতান’ কবিতার কবিও ভ্রমণবৃত্তান্ত পড়ে অদেখাকে দেখার ও অজানাকে জানার চেষ্টা করেন। রায়হান সাহেবের জীবন বাস্তবতা ও কবির অবস্থান এদিক থেকে প্রায় নিকটবর্তী।
বিশ্বের যাবতীয় সৌন্দর্য একজনের পক্ষে অবলোকন করা সম্ভব নয়। তাই এক্ষেত্রে পাঠের মাধ্যমে মনের অপূর্ণ স্বাদ মেটানো সম্ভব।
মহাবিশ্বের বিশাল রহস্য, বৈচিত্র্যময় জীবনের কোলাহল কবি একান্তভাবে উপলব্ধি করতে চান। দেশে দেশে কত নগর রাজধানী, মানুষের অবিনশ্বর কীর্তি, নদী, গিরি, সিন্ধু, মরু তাঁর অগোচরে রয়ে গেল। যেগুলো একজীবনে তিনি দেখার সুযোগ পাবেন না। তাই বলে কবি থেমে যান না।
ভ্রমণবৃত্তান্ত পড়ে তিনি তার কিছুটা হলেও পূরণ করতে চান। রায়হান সাহেবও তার অক্ষমতার কথা জানেন। কিন্তু তিনিও হার মানতে নারাজ। ভ্রমণকাহিনি পড়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর চেষ্টা করেন। এদিক থেকে বলা যায়, ‘ঐকতান’ কবিতার কবিও দুধের স্বাদ ঘোলে মেটান। কারণ তার পক্ষেও সবদেশ ভ্রমণ করা অসম্ভব। রায়হান সাহেব ও কবি এদিক দিয়ে একই বিন্দুতে এসে দাঁড়ান।
সুতরাং উদ্দীপকের শেষ লাইনে ‘ঐকতান’ কবিতার পূর্ণ ছায়াপাত ঘটেছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
‘বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়োছ পর্বতমালা
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশিরবিন্দু।’
ক. কত খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন?
খ. “বিশাল বিশ্বের আয়োজন” বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতার ভাবগত বৈসাদৃশ্য চিিহ্নত কর।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতার মূলভাবে আপাত বৈপরীত্য থাকলেও দুটোতেই প্রাধান্য পেয়েছে দূর ও নিকটকে জানা”-উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
১০ নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন।
খ. “বিশাল বিশ্বের আয়োজন” বলতে কবি বোঝাতে চেয়েছেন বৈচিত্র্যময় পৃথিবী ও জনজীবনের অনিঃশেষ কর্মযজ্ঞকে।
পৃথিবীতে অগুনতি নগর, রাজধানী, নদী, সিন্ধু, তরু ও বহু অজানা জীবনের সন্নিবেশ। এছাড়া বিভিন্ন দেশের মানুষের রয়েছে নানারকমের সংস্কৃতি। জাতিতে জাতিতে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। এটিকে কবির কাছে মনে হয়েছে বিশাল বিশ্বের আয়োজন।
গ. উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতার ভাবগত বৈসাদৃশ্য সহজেই ধরা পড়ে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, দূরকে দেখতে গিয়ে নিকটকে অবহেলার মর্মযাতনা। মানুষ সবসময় সুদূরের প্রতি স্বভাবগত আকর্ষণ বোধ করে। ফলে দূরের পর্বতমালা কিংবা সিন্ধু দেখতে পাড়ি দেয় দূরের দেশে। ব্যয় করে বহু অর্থ ও শ্রম। কিন্তু ঘর থেকে দুপা ফেলে একটি ধানের শিষের ওপর যে অপূর্ব শিশিরবিন্দু ঝলমল করে তা দেখার অবসর হয় না।
অন্যদিকে ‘ঐকতান’ কবিতায় লক্ষ করা যায়, সমগ্র বিশ্বচরাচরকে দেখার ও জানার অফুরন্ত আগ্রহ। কবির অনুভব, দেশে দেশে কত নগর রাজধানী, নদী, গিরি, সিন্ধু ও মরু যেগুলোর কিছুই হয়তো তাঁর দেখা হবে না। আর উদ্দীপকে স্বদেশ ও পারিপার্শ্বকে জানার আগ্রহ প্রকাশিত হয়েছে। এদিক থেকে উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতার ভাবধারা মূলত বিপরীতমুখী।
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | আনিসুজ্জামান | বাংলা ১ম পত্র | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ৬-৯ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | জাদুঘরে কেন যাব | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | বাংলা ১ম | PDF
HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | মাইকেল মধুসূদন দত্ত | PDF
HSC | বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর ১-৫ | PDF
ঘ. উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতার মূলভাবে আপাত-বৈপরীত্য দৃশ্যমান। কিন্তু দুটোতেই প্রাধান্য পেয়েছে দূর ও নিকটকে জানার দুর্মর আগ্রহ।
উদ্দীপকে দেখা যায়, দূরকে জানতে গিয়ে নিকটকে অবহেলার চিত্র। মানুষের দৃষ্টিসীমায় পড়ে থাকা অগুণতি অভূতপূর্ব দৃশ্যও অনেকক্ষেত্রে অবহেলার শিকার হয়, যা সমর্থনযোগ্য নয়।
দূরদেশেও রয়েছে বিচিত্র জনজীবনস্রোত, যাদের বহু কীর্তি ও কর্মের কথা অজানা থেকে যায়। এক জীবনের আয়ুসীমায় হয়তো জগতের বৈচিত্র্যময় উদ্ভাসনকে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। কিন্তু এদের জানার ও বোঝার কৌত‚হল মানুষের স্বভাবগত। উদ্দীপকেও দেখা যায়, বহুদিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে গিয়ে বহু ব্যয় করে পর্বতমালা ও সিন্ধু দর্শনের দৃশ্য। এখানেও আছে দূরকে নিকট করার অভীপ্সা।
কিন্তু নিকটকে অবহেলা কবি নিজের অজান্তেই করেছেন। পরবর্তীকালে সচেতন মনের প্রণোদনায় তিনি স্বদেশমুখী হয়েছেন। ‘ঐকতান’ কবিতায়ও শুধু দূর নয় পারিপার্শ্বকে দেখার প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বলা যায়, উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতায় প্রাধান্য পেয়েছে দূর ও নিকটকে জানার অনিঃশেষ অভিলাষ।
সুতরাং, উদ্দীপক ও ‘ঐকতান’ কবিতার মাঝে যে অতৃপ্তির বেদনা প্রকাশিত হয়েছে তা প্রশ্নোক্ত উক্তিটিকে সমর্থন করে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথে ফেইজবুক পেইজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন। গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।